স্পর্শানুভূতি #writer:Nurzahan akter (allo) #part:2 🍁🍁

0
711

#স্পর্শানুভূতি
#writer:Nurzahan akter (allo)
#part:2
🍁🍁

রাএিঃআরে বোকা এটাও একটা বড় গুন যেটা সবাই পারে না।আর তুই তো নোবেল পাওয়ার মত ঝগড়ুটে সমস্যা নাই বোন তুই চালিয়ে যা।ইনশাআল্লাহ দেখবি খুব তারাতারি সেই নোবেলটা তুই পেয়ে যাবি।(পাম দিয়ে)

মিষ্টুঃএকদম ঠিক বলছিস আপু!একমাএ তুই আর ভাইয়া ছাড়া কেউ আমার কথা কেউ বুঝে না।এজন্য আমি চিন্তা করছি চাচ্চু তোর বিয়ে দিয়ে দিলে , তোর বর কে আমি খুন করবো।

রাএিঃকেন?আমার বরকে খুন করবি কেন?(অবাক হয়ে)

মিষ্টুঃতোর বর বেঁচে থাকলে তো আমার কাছে থাকতে দিবে না তোকে,আর আমাকেও তুই সব কাজে সাপোর্ট করতে পারবি না এজন্য ওই উগান্ডার দুলাভাইকেই মেরে ফেলবো।ব্যাস ল্যাটা চুকে গেল।( বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে)

রাএিঃওহহহ্ (অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো মিষ্টু দিকে)

মিষ্টু কানে ইয়ারফোন দিয়ে বসে বসে মটু-পাটলু দেখছে।আর কিছুক্ষন পর পর হো হো করে হাসছে।মিষ্টুর হাসি দেখে আশ-পাশে লোকজন গুলো বার বার ভ্রু কুচকে তাকাচ্ছে।মিষ্টু মটু-পাটলু দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে যায়।রাএি মিষ্টুর কান থেকে হেডফোন খুলে নেয়,আর ফোনটা ব্যাগে রেখে রাএিও ঘুমিয়ে যায়।

প্রায় ১ ঘন্টা ঘুমানোর পর মিষ্টুর ঘুম ভাঙ্গে,তার কিছুক্ষন পরে মিষ্টুর চিৎকারে রাএির ঘুম ভাঙে।রাএি চোখ বড় বড় মিষ্টুর দিকে তাকিয়ে আছে আর মিষ্টু ট্রেনের জানালার দিয়ে বাইরে মাথা বের করে দিয়ে…আমার পেয়ারা অামার পেয়ারা… করে চিৎকার করছে,,,

মিষ্টুঃওই টাকলা কাকু!আমার পেয়ারাটা দিন না ছাতার মাথা।ট্রেন ছেড়ে দিচ্ছে তো।(দাঁতে দাঁত চেপে)

রাএিঃ মিষ্টু ট্রেন ছেড়ে দিচ্ছে বোন,, মাথা ভেতরে ঢুকিয়ে নে তোর কিছুর সাথে ধাক্কা লেগে যাবে।(মিষ্টু হাত ধরে টেনে)

মিষ্টুঃআমার পেয়ারা…ওই টাকলা কাকু! আমার পেয়ারা যদি আমি না পায়, আর পেয়ারা আফসোসে যদি মারা যায়।পেয়ারা কাকু আমি তখন ভূত হয়ে এসে আপনার ঘাড়ে চেপে বসবো।আর আপনাকে ঘুন্নির মত করে ঘুরাবো,,,(রেগে চিৎকার করে)

পেয়ারা ওয়ালাঃনা মা! এই নাও তোমার পেয়ারা।তোমার পেয়ারা তুমি লইয়া যাও।আর দোয়া করি তোমার সাথে আর কোনদিন আমার না দেখা না হয়।তিন মিনিটে আমার কান মনে হয়তাছে কম শুনতাছি তোমার চিৎকুরের ঠেলায়।

মিষ্টুঃআসল চিৎকুর তো এখনো দেয় নি!

পেয়ারা ওয়ালাঃআর আসল চিৎকুর দিও না মাগো!আমার কান এমনিতেই প্রতিবনধী হইয়া গেছে তোমার কোকিলা সুর শুনবার পরে।আর শুনতে চাই না(দৌড়ে এসে পেয়ারা দিয়ে)

মিষ্টুঃওহহহ ধন্যবাদ টাকলা কাকু!আমার হয়ে তোমার বউকে বলবে যেন তোমার টাক মাথাতে একটা উমমা দিয়ে দেয়।(হাত নাড়িয়ে বলছে আর খিলখিল হাসছে)

পেয়ালা ওয়ালাঃএমন ফাজিল মাইয়া আমার জীবনেও দেখিনাই।(চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে)

তারপর পেয়ারা ওয়ালা দৌড়ে মিষ্টুর হাতে পেয়ারা দিল আর মিষ্টি বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে সিটে বসে পেয়ারাতে কামড় দিলো।আশে পাশের লোক গুলো যে ওর দিকে তাকিয়ে আছে মিষ্টুর সেটা খেয়ালই নেই।মিষ্টু রাএির দিকে একটা পেয়ারা এগিয়ে দিলো,আর বললো।

মিষ্টঃ খেলে খা!না খেলে ফেরত দে।যদিও তোকে মন থেকে দিচ্ছি না!ভদ্রতা দেখাচ্ছি আর কি (শয়তানি হাসি দিয়ে)

রাএিঃআমি খাবো না!তুই বেশি করে খা।আর এই লোভ লাগানো পেয়ারা খেলে আমার এমনিতেই ইয়ো ইয়ো হয়ে যাবে।বোন আমার!তোকে এমন ভদ্রতা দেখাতে হবে না কেমন!শুধু একটা রিকুয়েস্ট ফুপির বাসায় গিয়ে কোন অঘটন ঘটাস না।(গ্যাড়াকলে পড়ার মত হাসি দিয়ে)

মিষ্ঠুঃআরে না!আপু তুই এসব নিয়ে চিন্তা করিস না?আমি একদম ভদ্র হয়ে যাবো।ভবিষ্যত জিজুর নাকের কসম।

রাএিঃনাআআআাআা কসম করিস না বোন!মুখেই বল তোর সব কথা আমি মেনে নিবো তাও!আমার বরের নাক ছুয়ে কসম করিস না।তখন দেখা যাচ্ছে আমার বরের নাকটাই খসে ঠুস করে মাটিতে পড়ে গেল। (কান্না কান্না ভাব নিয়ে)

মিষ্টুঃআমিও তো সেটাই চাই!তখন ইতিহাসের পাতায় আমাদের নামও লিখা থাকবে!আমার জিজুই হবে নাক ছাড়া মানুষ! উফফ দারুন ব্যাপার হবে(অনেক খুশি হয়ে)

রাএিঃ মিষ্টু (কান্না কান্না ভাবে নিয়ে)

মিষ্টুঃ আচ্ছা আচ্ছা আমি আর কিছু বলছি না তুই কাঁদিস না।আর ফুপির বাসায় আমি দুষ্টুমি করবো না।একবারে ভদ্র হয়ে থাকবো।

রাএিঃতুই ভদ্র হয়ে থাকবি!ভালো হয়ে থাকবি এসব শুনলে তো আমি আরো বেশি কনফিউজড হয়ে যায়।

মিষ্টুঃউমমা! চিন্তা করিস না। যা আছে কপালে দেখা যাবে অঘটন ঘটানোর পরের দিন সকালে(রাএিকে হামি দিয়ে)

রাএিঃহুমম রে বইন!তোর মাথায় কি চলছে সেটা শুধু তুইই জানিস

ওরা দুইবোন গল্প করছিলো হঠাৎ একটা ছেলে এসে মিষ্টুকে একটা চিপ্স দিয়ে বললো।

ছেলেটিঃকিউটি তোমাকে আমার খুব ভালো লাগছে!তোমারে আমি বিয়ে করুম।

মিষ্টুঃতাই নাকি! বিয়ে করুম কেমনে কও! তুমি তো তোমার বউয়ের সম্পত্তি ঠিক রাখতে পারো না।আমারে কেমনে সামলাবে শুনি।(মুখ ভেংচি দিয়ে)

ছেলেটাঃমানে বুঝলাম না( ভ্রু কুচকে)

মিষ্টুঃতোমার প্যান্টের চেন খোলা!আগে নিজেকে ইয়ে সামলাও তারপর বিয়ে করার কথা ভাববে কেমন।

ছেলেটিঃকই চেন খোলা না তো (সাথে সাথে চেক করে)

মিষ্টুঃওই উগান্ডা! নিজের প্যান্টের চেন খোলা আছে কি না?যে ছেলে নিজেই সিওর থাকে না। তাকে আমি বর হিসেবে মানবো। হাউ ফানি ইয়ার(হেসে হেসে)

ছেলেটিঃ আচ্ছা এসব মানলাম!অন্য কোন অপশন দাও।সত্যি তোমাকে আমার খুব ভালো লাগছে!তোমাকে আমি ভালবেসে ফেলছি।

মিষ্টুঃআমি একটা question করবো!যদি সঠিক দাও তো মেসেঞ্জারেই এখুনি তোমাকে বিয়ে করবো।কথা দিলাম

ছেলেটিঃ আচ্ছা তাও রাজি! শুধু বলো তুমি কি জানতে চাও?

মিষ্টুঃযদি না পারো তাহলে তোমার বাম(পেছন সাইড)লাথি দিয়া চ্যাকা কইরা দিমু।রাজি থাকলে ১ চাপো,তা না হলে এখনই কেটে পড়ো( দুষ্টু হাসি দিয়ে)

ছেলেটিঃ ওকে ১ চাপলাম!তুমি শুধু বলো(কনফিডেন্সের সাথে)

মিষ্টুঃতিতুমীর দাদু!মারা যাওয়ার ৪৬ দিন ৩ ঘন্টা ১৭ মিনিট ৩২ সেকেন্ড আগে! তিতুমীর দাদু কি কালারের জামা পড়ে ছিলো।( দুষ্টু হেসে)

রাএিঃ (অবাক হয়ে দুজনের দিকে তাকিয়ে ওদের কথা শুনছি)

ছেলেটিঃআমি কি করে বলবো?সেখানে তো আর আমি ছিলাম না।আর তখন তো আমার জন্মও হয়নি(মুখ কাচুমাচু করে)

মিষ্টুঃ এজন্য তো তোমাকে জিজ্ঞাসা করলাম বাচ্চু!ভালোই ভালোই এবার উল্টো ঘুরে দাড়াও তো।(উঠে দাড়িয়ে)

ছেলেটিঃনাআআআআআ ( উল্টো ঘুরে দৌড় দিয়ে)

মিষ্টু আর রাএিঃ হো হো করে হাসতে শুরু করে।

যারা মিষ্টুর কথা শুনছিলো তারাও হাসতে শুরু করে।এভাবেই মজা করতে করতে ওরা এসে ফেনী রেলস্টেশনে চলে আসে! মিষ্টু আর রাএি ওদের ব্যাগগুলো ঠিকমত নিলো আর ট্রেন থেকে নেমে দাঁড়ালো তারপর হাঁটা শুরু করলো।হাঁটতে হাটতে মিষ্টুর ওড়নাতে টান লাগে! আর পেছনে তাকিয়ে দেখে একটা বাচ্চা ওর ওড়না ধরে আছে।মিষ্টু বাচ্চাটার সামনে হাটু গেড়ে বসে ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে?বাচ্চাটা ইশারা বুঝতে পেরে মিষ্টুর দিকে একটা খাম বাড়িয়ে দেয়। মিষ্টু খামটা নিয়ে বাচ্চার হাতে অনেক গুলো চকলেট দেয়! বাচ্চাটা চকলেট পেয়ে তিরিং বিরিং করে লাফাতে লাফাতে চলে যায় মিষ্টু কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই।মিষ্টু খামটা খুলতে যাবে তার আগেই রাএি ওকে তাড়া দেয় আর তাড়াহুড়ো করে খামটা ব্যাগে ভরে নিয়ে মিষ্টুরা ওখান থেকে চলে যায়।

ওদিকে…..
রাসেল ট্রেন থেকে নেমে আস্তে আস্তে হেটে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো। বাট একটা বাচ্চার ছেলের কথা শুনে থমকে দাড়িয়ে পড়ে….

বাচ্চাটাঃ হ্যালু হ্যালু! আব্বা তুমি কবে আইবা!আর হুনো আসার সময় আমার লাইয়া গোশত লইয়া আসবা!অামি অনেকদিন গোশত দিয়া ভাত খাই নাই!আসার সময় আমার লাইগা একটা লাল জামাও লইয়া আসবা।তোমারে কতদিন দেখি নাই কা তুমি তারাতারি আইসো কেমন!তোমারে দেখবার মন চায়।আর অবশ্যই গোশত লইয়া আসবা!গোশত দিয়া আমি মেলা ভাত খামু!পেট ভইরা ভাত খামু।আচ্ছা রাখি। ( নিজের হাত কানে টেকিয়ে)

রাসেল বাচ্চাটির কাছে গিয়ে বাবু হয়ে বসে পড়ে।বাচ্চাটি রাসেলের দিকে তাকায়,রাসেল বাচ্চাটির কাধে হাত রেখে বলে

রাসেলঃজানো আমিও না মেলা দিন গোশত দিয়া ভাত খায়নি! তবে এহন আমার কাছে ট্যাহা আছে। চলো তুমি আর আমি গিয়া পেট ভইরা ভাত খায়।

(বাচ্চাটিকে খাওয়ানোর জন্য)

বাচ্চাটাঃতোমার কাছে একশত টাকা আছে তো?একশত টাকা ছাড়া ওরা কিন্তু আমাগো ভেতরে ঢুকতে দিবে না।আর আপনি আমারে খাওয়াইবেন ক্যান?

রাসেলঃহুমম আমার কাছে একশত টাকা আছে!আর
আমি তোমার বড় ভাইয়ের মত এজন্য তোমারে খাওয়ামু!চলো যায়গা খইয়া আসি আমারও মেলা খুধা লাগছে।

বাচ্চাটিঃ আচ্ছা (অনেক খুশি হয়ে)

– চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here