#হৃদস্পন্দনের_টানে___
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_2
❤❤
নুরঃ সব শেষ করে দিবো! সব নষ্ট করে দিবো।আমার কলিজাকে নিয়ে দুষ্টু কথা বলা।কাউকে বাঁচিয়ে রাখবো না (চিৎকার করে)
–
জুবিন গিয়ে নুরের রুমে গিয়ে নুরের দিকে তাকিয়ে ভালো করে খেয়াল করে দেখলো! নুর যথেষ্ট সুন্দরী একটা মেয়ে,দুইপাশে বেণী করা চুল! বাট একটা খুলে গেছে আর একটা আছে।একটা গোলাপি কালারের ফ্রক পড়া।সালোয়ারের একটা পা উচু আর আরেক পা নিচু।জুবিন নুরের রুমে ঢুকতেই নুর রাগী চোখে তাকালো জুবিনের দিকে।নুর জুবিনের কাছে যেতেই নুর বলে উঠলো…
–
জুবিনঃ আমি তোমার কলিজাকে চিনি!যাবে তুমি ওর সাথে তোমার কলিজার কাছে।
নুরঃ সত্যি তুই চিনিস আমার কলিজাদেরকে!আমাকে প্লিজ নিয়ে চল না।কতদিন ওদের দেখি নি ( নরম সুরে)
জুবিনঃ আমি নিয়ে যাবো তোমার কলিজার কাছে! বাট ও তো তোমার সাথে দেখা করতে চাই না।
নুরঃ কেন?আমার উপরে রাগ করছে আমার জান রা।
জুবিনঃহুমম খুব রাগ করছে! আর বলছে তোমার সাথে আর কথা বলবে না।
নুরঃকেন?? আমার খুব কষ্ট হয় ওদের ছাড়া তুই বলিস নি। (কাঁদো কাঁদো মুখ করে)
জুবিনঃ বলছি বাট শুনছে না কারন তুমি ঠিকমত মেডিসিন নাও না।নিজের যত্ন নাও না, ঠিকমত খাওয়া -দাওয়াত করো না।
নুরঃ এবার থেকে আমি সব করবো তাও প্লিজ আমাকে নিয়ে চল। আমি শক্ত করে জড়িয়ে ধরবো ওকে শুধু..এত এত আদর দিবো।
জুবিনঃ নিয়ে যাবো বাট আগে আমার সব কথা শুনতে হবে তোমার।তাহলে নিয়ে যেতে পারি…
নুরঃ আচ্ছা আচ্ছা আমি তোর সব কথা শুনবো!
জুবিনঃ তাহলে আজকে থেকে আমরা শুধু বন্ধু কেমন!
নুরঃ হুমম বন্ধু! কিন্তু বন্ধু দিয়ে কি হয়?বন্ধু দিয়ে আমি কি করবো? (মাথা চুলকে)
জুবিনঃ বন্ধু মানে যার কাছে সব মনের কথা বলা যায়!আর যার সব কথা শুনতে হয়..বন্ধু কথা না শুনলে বন্ধু কষ্ট পায়।
–
জুবিন নুরের সাথে গল্প জুড়ে দেয়!জুবিন চাচ্ছে নুরের সাথে মিশে নুরের মনে আর মাথায় কি চলছে এটা জানতে?নুরের সাথে মিশলে খুব সহজে ওর চিকিৎসা শুরু করতে পারবে জুবিন।জুবিন নুরের সাথে কথা বলে বুঝবো নুর কোন কথা মনে রাখতে পারে না।এক
কথা বার বার জানতে চাই!তবে নুর যে ওর জীবনে বড় সড় ধাক্কা খেয়েছে সেটা ওর কথা শুনেই বোঝা যায়।জুবিন গল্প করে নুরকে রুমে রেখে চলে আসে বাট নুর জুবিনের পেছন পেছন এসে ওর কেবিন কোনটা দেখে যায়।
–
পরেরদিন সকালে…
জুবিন পরেরদিন সকালে হসপিটালে এসে দেখে নুর ওর কেবিন আর ডেস্কের উপর বসে আছে।জুবিন মুচকি হেসে নুরকে চেয়ার বসতে বললো আর ওর চেয়ারে নিজেও বসে পড়লো।জুবিনের কথা নুর চেয়ার দুইপা তুলে বসে পড়ে! জুবিন খেয়াল করে দেখে নুর মুচকি মুচকি হাসছে…।নুর কিছু না বলে এক দৌড়ে কেবিন থেকে বের হয়ে গেল!জুবিন নুরের ফাইলটা দেখার জন্য উঠতে গিয়ে বুঝলো উঠতে পারছে না!চেয়ারের সাথে আটকে গেছে।জুবিনের বুঝতে বাকি রইলো না যে নুর এখানে গ্লু ফেলছে।
–
জুবিন শ্রাবনকে ফোন দিয়ে ওর কেবিনের আসতে বললো। শ্রাবণের সাথে আরো দুজন এসে টেনে টুনে জুবিনকে তুললো। জুবিন কে তুলে শ্রাবণরা চলে যায় তখন জুবিন খেয়াল করে দেখে নুর ডেস্কে থাকা একটা একটা কাগজে নুর আকিবুকি করছে হয়তো কিছু বোঝাতে চেয়েছে কিন্তু জুবিন সেটা বুঝতে পারছে না।
–
জুবিন বাইরে থেকে শুনতে পাচ্ছে নুর চিৎকার করে ওকে ডাকছে!জুবিন নুরের কাছে গিয়ে দেখলো নুর ইনজেকশন নিবে না তাই দৌড়াদৌড়ি শুরু করছে!আর নার্স গুলো ওকে ধরার চেষ্টা করছে!নুর জুবিনকে দেখে দৌড়ে এসে জুবিনের পেছনে লুকায়! আর এটা দেখে জুবিন নার্স দের ইশারায় চলে যেতে হবে।জুবিন নুরের আড়ালে বাম হাত দিয়ে ইনজেকশনটা নার্সের হাত থেকে নেয়ে!তারপর নুরের দিকে তাকিয়ে বলে…
–
জুবিনঃআমরা এখন একটা খেলা খেলবো!এই খেলাটা খেলতে খুব মজা..
নুরঃ কি খেলা শুনি??
জুবিনঃ তুমি এখন চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকবে!আর তোমার কলিজার কথা মনে করবে!যদি তোমার হাতে পিঁপড়া কামড়ানোর মত ব্যাথা পাও তো মনে করবে! তোমার কলিজা তোমার কাছে ফিরে আসবে। আর না পেলে মনে করবে আর ও ফিরবে আসবে না।তবে সাথে সাথে চোখ খুললে কিন্তু সারাজীবনের জন্য তুমি তোমার কলিজাকে হারিয়ে ফেলবে।
নুরঃ আচ্ছা! আমি চোখ খুলবো না আমার জান রা আসবে তো আমার কাছে।
জুবিনঃ আসবে তো!তুমি এখন শুয়ে পড়ো আর আমি তোমার পাশে বসে আছি কেমন..
নুরঃহুমমম!তুই চলে যাস না যেন আমার কলিজা রা আসলে আমি তোর সাথে ওদের দেখা করিয়ে দিবো।
জুবিনঃ আচ্ছা! তুমি চোখ বন্ধ করে কলিজাকে মনে করো।আমি তোমার পাশেই বসে আছি কেমন…
–
নুর শুয়ে চোখ বন্ধ করে আছে!আর জুবিন নুরের মাথা হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। একটা সময় জুবিন খেয়াল করলো নুরের ঘুম এসে গেছে চোখে!জুবিন খুব সাবধানে নুরকে ইনজেকশন পুশ করে দিলো।তাতে নুর একটু নড়ে উঠলো বাট আবার ঘুমিয়ে গেল।নুরকে সব সময় মেডিসিন খাওয়ানো যায় না তাই ওকে ইনজেকশন পুশ করতে হয়।জুবিন খুব সাবধানে উঠে চলে গেল….
–
জুবিন নুরের সম্পর্ক কিছু জানার জন্য ফাইল বের করে দেখতে থাকে!এই ফাইলে নুরের সম্পর্ককে অনেক কথা লিখা আছে!জুবিন ফাইল গুলো লিখা গুলো পড়তে থাকে…
নুসাইবা জান্নাত নুর!বাবা বিসনেস ম্যান আর মা গৃহিনী। বাবা-মা আর নুর আর ওর ছোট বোন পরীকে নিয়েই ওর পরিবার।নুর গান পাগল একটা মেয়ে ছিলো আর ওর কলিজা ছিলো ওর বোন আর ওর ভালবাসার মানুষ উৎস চৌধুরী।নুর সব সময় পরী আর উৎস ছাড়া কি বুঝতো না?আর উৎসের সাথে নুরের পরিচয় হয় ওদের কলেজের একটা প্রোগামে।উৎস একজন ফেমাস মিউজিসিয়ান ছিলো…..নুরের সাথে উৎসের প্রথমে বন্ধুত হয় তারপর ভালবাসা।তবে উৎস নুর কে প্রাণ দিয়ে ভালবাসতো! একে অপরের প্রাণ ছিলো ওরা। ওদের রিলেশন ভালো চলছিলো!আর ওদের রিলেশনের কথা সবাই জানতো! আর ওদের বিয়ের ডেটও ঠিক হয়ে গিয়েছিলো….।
–
দুজনে মিলে শপিং থেকে শুরু করে! ওরা দুজন কি করবে না করবে সব দুজনে মিলে ঠিক করছে।উৎস আর নুরের সম্পর্ক ছিলো চোখে পড়ার মত!ওদের দিকে তাকালেই বোঝা যেত ওরা কত সুখী কাপল।নুরের প্রাণ ছিল ওর দুষ্টু বোন পরী। উৎসও পরীকে খুব ভালবাসতো।
কিন্তু বিয়ের চারদিন আগে আশচর্যজনক ভাবে পরী আর উৎসের কোন খোঁজ নাই…..।কেউ ওদের খোঁজ দিতে পারে নি। পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে সব তোলপাড় করছে তাও ওদের খোঁজ মিলেনি।
–
জুবিন এবার বুঝলো নুর কেন বার বার বলে ওর কলিজারা!তবে কেউ জানে না পরী আর উৎস কোথায় আছে? আর ওরা দুজন গেলোই বা কোথায়???
চলবে….