#হৃদস্পন্দনের_টানে___
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_8
❤❤
জুবিনঃ আর উনিই তোমার মেডিসিন বার বার বদলে দেয়!যাতে তুমি পাগলই থাকো…
নুরঃ কি!!!!!!! তুমি জানো তুমি কি বলছো??
জুবিনঃ হুমমম! জানি বলেই তো বলছি। হসপিটালে এডমিট থাকা কালানী ওনার পাঠানো লোকই তোমার মেডিসিন বার বার বদলে দিতো।এটা জানার পর থেকে আমি নিজে দেখে তারপর তোমাকে মেডিসিন খাওয়াতাম,,,তোমার বাসাতে গিয়েও সেদিন আমি ভুল মেডিসিন দেখছিলাম এজন্যই খেতে মানা করছি।আর তুমি হয়তো জানো না যে তুমি অসুস্থ থাকা কালীন কেউ একবার তোমার খোঁজ নিতেও যেতো না….
নুরঃ…… (অবাক হয়ে তাকিয়ে)
জুবিনঃ হুমমম আমি যা বলছি সব সত্যি!এমনকি তোমার যাতে ভুল চিকিৎসা করি সেই নিয়েও আমাকে আননোন নাম্বার থেকে টাকার লোভ দেখিয়েছে পরে আমি রাজি না হওয়াতে! সেই লোক আমাকে থ্রেটও দিসে।
নুরঃ এসব আমাকে এতদিন বলো নি কেন??
জুবিনঃ তুমি এসব নিয়ে বেশি টেনশন করবে বলে বলিনি।তবে প্রমান সহ না ধরা পযন্ত তুমি কাউকে কিছু বলবে না এমনকি তোমার মাকেও না।আর আমি এত কিছু জেনিছি তোমার বাবার একজন খুব কাছের লোকের থেকে। তুমি নিজেকে শক্ত রাখো আর এখন কাউকে কিছু বুঝতে দিও না।
নুরঃ জুবিন নিজের আপন মানুষের থেকে এমন প্রতারণা কি করে সহ্য করবো বলো তো।আমার জীবনটা এরকম এলোমেলো হয়ে গেল কেন???আমি তো সবার মত একটু ভাল থাকতে চেয়েছি….
জুবিনঃ যারা মানুষ রুপী জানোয়ার তারা এমনটাই করে নুর!এরা পেছন থেকে ছুরি বসাতে ভালো পারে!
নুরঃ উনাকে আমি বাবা বলে ডাকি! উনার আমার বাবা তারপরেও উনি এমনটা করতে পারলো।টাকা -পয়সা কি সব?? (কেঁদে কেঁদে)
জুবিনঃ ধুর বোকা মেয়ে কাঁদে না!আমি আছি তো তোমার পাশে। নিজেকে শক্ত করো.. (নুরের চোখ মুছে দিয়ে)
নুরঃ আমার আর কত কষ্ট সহ্য করতে হবে জুবিন বলতে পারো!যাদের বেশি ভালবাসি তারা হয় আমাকে রেখে দুরে সরে যায় আর না হয় আমাকে ঠকায়….
জুবিনঃ ধৈর্য ধরো নুর!আল্লাহ সব ধৈর্যশীলদের পাশে থাকে!আর দুঃখের পরেই তো সুখের দেখা মিলে এটা জানো তো…এসব নিয়ে ভেবে আর কষ্ট পেও না!
সব ঠিক হয়ে যাবে।
–
নুর জুবিনের বুকে মাথা দিয়ে থম মেরে বসে আছে আর ভাবছে!রোজ রোজ ওর বাবা ওকে মেডিসিন খেয়েছে কি না জিজ্ঞাসা করতো?নুর মুখে হ্যা বলতো তখন বিশ্বাস করতো না এসে নিজে চেক করে যেত।নুরের সাথে ভাল বিহেব করলেও কেমন একটা রাগ রাগ ভাব করে রাখতো উনার মুখ।জুবিন নুরের কাঁধে হাত রাখতেই নুর জুবিনকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে আর বলে…
–
নুরঃ আমি কি করেছি?কেন বাবা আমাকে দেখতে পারে না।কেন বাবা চাচ্ছে আমি পাগল হয়ে থাকি..?আমাকে বলো না জুবিন কেন??আমি তো এর কারন খুজে পাচ্ছি না??
.
জুবিনঃ কারন তোমাদের সব প্রোপারটি এখন তোমার নামে…
নুরঃ আমি এখন কি করবো জুবিন?আমার মাথায় কিছু আসছে না।কেন আমার সাথে এমন হয়
বার বার.. (উওেজিত হয়ে)
জুবিনঃ কাঁদে না!আমি আছি তো।আর আমি যে জেনে গেছি এজন্য উনার রাগ আমার উপর।আর এজন্য একটা গাড়ি আমাকে চাপা দিতে এসেছিলো।একটা কথা সব সময় মনে রাখবে আল্লাহর রহমত থাকলে কেউ কাউকেই মারতে পারে না। আর না তারা খারাপ কিছু করতে পারবে। সেই যতই,শক্তিশালী বা বুদ্ধিমান, মানুষ হোক না কেন???
–
জুবিনের বুকে চুপটি করে নুর শুয়ে আছে! জুবিন নুরের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। এত কিছুর পরেও জুবিনের মুখে জয়ের হাসি কারন জুবিন চিরদিনের মত তার নুরকে কাছে পেয়েছে আর সেটা বৈধ ভাবে।জুবিন নুরকে উদেশ্য করে বলে…
–
জুবিনঃ নুর এত সহজে ভেঙে পড়লে হবে না!যারা সহজে দূবল হয়ে পড়ে তাদের জন্য এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকা বড্ড বেশি কষ্টকর।নিজেকে শক্ত করো আর আবার বুকে সাহস নিয়ে উঠে দাড়াও।প্রতিটা মেয়ের মাঝে একটা আলাদা শক্তি থাকে,সেই শক্তিকে জাগ্রত করে আনো নিজের মাঝে…নিজের লড়াই নিজে লড়তে শিখো…
নুরঃ আচ্ছা জুবিন আমার পরী সোনা আর উৎসকে কে এত কষ্ট দিয়ে মারলো বলো তো।তাদের কি একটুও বুক কাঁপে নি।আমি পরী আর উৎসকে কেন এত কষ্ট দিয়ে মারলো আমাকেই মেরে ফেলতো।
জুবিনঃ কে করছে এমন কাজ?সেটা তো তোমাকে বের করতে হবে?? তুমি চাও না সেই নিকৃষ্ট জানোয়ারটার শাস্তি হোক…
নুরঃ হুম আমিও চাই!আমি অনেক ভালবাসি উৎসকে, অনেক অনেক বেশি ভালবাসি,আর খুব মিস ওকে।আমি মনে হয় সত্যি ওর মত তোমাকেও ভালবাসতে পারবো না জুবিন (কেঁদে কেঁদে)
জুবিনঃ আরে পাগলি আমাকে উৎসের মত ভালবাসতে হবে না পাগলি শুধু তোমার মনে একটু জায়গা দিও তাহলেই হবে।আর কিছু চাই না আমি…তবে তোমাকে আমি বড্ড বেশি ভালবাসি নুর আর তোমাকে পেয়েছি শুধু আমার#হৃদস্পন্দনের_টানে___। এই বুকে কান পেতে শুনতে থাকো বুঝবে এই হৃদয়ে প্রতিটা স্পন্দন বার বার তোমার নাম জপ করছে। (নুরকে জড়িয়ে ধরে)
তারপর জুবিন মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে থাকে!তারপর দুজনেই ঘুমিয়ে পড়ে…
–
পরেরদিন সকালে বেলা…
নতুন সকালের সৃষ্টি, নতুন করে পথচলা,নতুন করে মনের জোর,নতুন করে আবার সপ্ন দেখা শুরু।নুর ঘুম থেকে উঠে সাওয়ার নিয়ে নামাজ পড়ে নিচে চলে যায় তারপর রান্না ঘরে গিয়ে পরোটা আর মাংস রান্না করে সব খাবার ডায়নিং টেবিলে গুছিয়ে রাখে!আর জুবিনকে ডাকতে যায়।জুবিন উপুর হয়ে আরামসে ঘুমাচ্ছে, চুল গুলো এলোমেলো হয়ে আছে,ঠোঁট দুইটা বাচ্চাদের মত লাল টকটকে, মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি,নুর মুচকি হেসে জুবিনের কপালে আদর দিয়ে উঠতে যাবে তার আগেই জুবিন দুই হাত দিয়ে নুরকে জড়িয়ে ধরে….আর দুই হাত দিয়ে নুরের মুখটা ধরে আর তারপর টিপটিপ করে চোখ খুলে…..
–
জুবিনঃ প্রতিদিন আমার সকালেটা যেন এভাবে শুরু হয়! প্রতিদিন তুমি আমার কপালে আদর দিবে আর আমি দুই হাত দিয়ে তোমার মুখটা ধরে প্রথমে চোখ খুলে যাতে তোমার মুখটি দেখতে পায়। (মুচকি হেসে)
নুরঃ বাহ্ বাহ্ পাগলের ডাক্তারা আবার এত রোমান্টিক হয় জানা ছিলো না তো..(মুখ টিপে হেসে)
জুবিনঃ হুম হয় হয়… সময় মত বুঝে যাবেন। পাগলের ডাক্তার রা ঠিক কতটা রোমান্টিক হয়। আপাতত এতটুকুই বুঝুন ম্যম.. (নুরের নাক কামড় বসিয়ে)
নুরঃআহ্! কামড় দিলে কেন???
জুবিনঃযেই তো বুচু নাক… আর কামড় দিসি বেশ করছি (দুষ্টু হেসে)
নুরঃ ভালো আমার বুচু নাক!ডাঃ নিশির নাকটা তো লম্বা যাও না যাও ওর কাছে যাও।(মুখ ভংচি দিয়ে)
জুবিনঃ তোমরা মেয়েরা এত হিংসুটে কেন?আমরা ছেলেরা তোমাদের খুত ধরলে!যাকে তাকে টানো কেন সময়??
নুরঃ আপনারা ড্যাব ড্যাব করে তাকালে সমস্যা নাই! আমরা বললেই সমস্যা।একটা লুচুর দল… (মুখ ভেংচি দিয়ে)
জুবিনঃ আমাকে বলছো ঠিক আছে মানলাম!বাট আলোমনির পাঠকরা কি করলো? ওদের টানছো কেন?
নুরঃ ওরাও লুচু! কারন পাঠকরা মিষ্টুর আপুরও প্রেমে পড়ছিলো…ওরাও মনে মনে চাই মিষ্টু আপুর মত বউ।আপনি কে সত্যিটা বলছি তো সেটা দেখে দাঁত কেলিয়ে হাসছে…আর মনে মনে ভাবছে এটা নিয়েই কমেন্ট করবে…
জুবিনঃবাট তুমি বুঝলে কি করে?? (ভ্রু কুচকে)
নুরঃ আমি বুঝিনি রাইটার(আলোমনি) বুঝেছে!আর আলোমনিই আমাকে বলছে কারন আলোমনি সাইকোলজির ছাএী….তাই টুকটাক পাঠকদের মনের কথা বুঝতে পারে। (যাহা ঢপবাজ)
জুবিনঃ হয়েছে বউ এবার চুপ করো নয়তো তুমি তো মার খাবেই! আমাকেও খেতে হবে।
নুরঃহুম সত্যি কথা বললেই দোষ… (ভেংচি দিয়ে)
জুবিনঃ হয়েছে আর রাগ দেখাতে হবে না।এবার আদর দাও আরেকটা…. (মুচকি হেসে)
–
নুর মুচকি হেসে জুবিনে কপালে,গালে,থুতনিতে,নাকে আদর দেয়।জুবিন দুষ্টু হেসে ঠোঁট দেখিয়ে দেয় নুর উড়ে দৌড় দিতে যায় আর জুবিন নুরের ওড়ানা ধরে ফেলে! নুরও কম যায় না ওই ওড়নাটা জুবিনের দিকে ছুড়ে মেরে অন্য ওড়না নিয়ে দৌড় দিয়ে বের হয়ে যায়।আর নুর দৌড়ে যাওযার সময় জুবিনকে ফ্রেশ হয়ে নিচে যেতে বলে…জুবিন হ্যাবলার মত তাকিয়ে থেকে একটু জোরেই বলে উঠলো….
–
জুবিনঃ এজন্যই বিয়ের পর মেয়েদের সালোয়ার কামিজ পড়তে দেওয়া উচিত না।আর নুর তোমাকে বলছি না তুমি এবার থেকে শাড়ি পড়বে আর এসব হাজিবাজি পড়বে না…..ধুর মুডটাই নষ্ট করে দিলো…( রাগ রাগ মুডে)
নুরঃ পারবো না আপনার কথা শুনতে!শাড়ি পড়ে হাঁটতে পারি না আমি।আর ঠিকমত শাড়ি সামলাতেও পারি না.. (রুমের পদার্র আড়ালে থেকে)
জুবিনঃ ওরে দুষ্টু দাড়িয়ে দাড়িয়ে আমার কথা শোনা হচ্ছে। দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা…
–
কথাটা বলে জুবিন নুরকে ধরতে যায় আর নুর এবার এক দৌড়ে নিয়ে চলে যায়।জুবিন হাসতে হাসতে ওয়াশরুমে চলে যায় তারপর ফ্রেশ হয়ে নিচে গিয়ে খেতে বসে…জুবিনের কোলে বসে আছে নুর!আর জুবিনের কোলে বসেই নুর জুবিনকে খাইয়ে দিচ্ছে।জুবিন নুরে দিকে তাকিয়ে বলে…
জুবিনঃ উৎস আর পরীর খুনীকে ধরতে পারলে কি করবে তুমি??যদি সেটা তোমার কাছে কেউ হয় তো তাকে শাস্তি দিতে পারবে তো…তখন হাত কাঁপবে না তো তো পিছিয়ে যাবে না তো…।
চলবে…
(রহস্য উদঘাটন হবে খুব তারাতারি…….😊😊)