#এলোকেশী_কন্যা২__
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_16
🍁🍁
________হঠাৎ মেঘ রোদের উপর হামলে পড়লো!কিল,ঘূষি,কামড় সাথে রোদের শার্ট ধরে টানতে শুরু করলো…..!!!
রোদ তারাতারি গাড়ি ব্রেক করে!মেঘ ইচ্ছে মত রোদকে মারতে আছে!আর আলো হা করে তাকিয়ে আছে!রোদ বার বার মেঘকে থামতে বলছে বাট মেঘ থামছেই না।মেঘ রোদকে মারছে আর বলছে…
মেঘঃ তুমি আবার আমার বউমনিকে বকা দিয়েছো তাই না!আমার বউমনি আবার কেন কান্না করলো?তোমাকে না সেদিন বলছি আমাকে বকা দিবে তাও বউমনিকে কিছু বলবে না (চিৎকার করে)
রোদঃআমি তোর বউমনিকে কখন বকা দিলাম।?
মেঘঃ তুমি বকা না দিলে বউমনি কেঁদেছে কেন?বউমনির চোখ মুখ ফুলে আছে কেন??(মারতে মারতে)
আলোঃ মেঘবাবু শোনো আমার কথাটা..
মেঘঃ না না আমি কোন কথা শুনবো না! কেন তোমাকে দাভাই বকবে কেন? কেন? কেন??
রোদঃ আমি তোর বউমনিকে বকা দেইনি!তোর বউমনি পড়ে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছে তাই কেঁদেছে।
মেঘঃ ওহহ!তাহলে ঠিক আছে।
রোদঃ এখন এখন তোকে তুলে আছাড় মারি!না জেনে শুধু শুদু কেন আমাকে এতগুলো মারলি তাই বল..!!(দাঁতে দাঁত চেপে)
মেঘঃ সরি সরি!আমার ভুল হয়ে গেছে।আমি না তোমার আদরে ছোট ভাই। এবারের মত মাফ করে দাও কেমন। তুমি তো আমার ভালো দাভাই।পৃথিবীর সবচেয়ে বেস্ট দাভাই তুমি (রোদের গালে আদর দিয়ে)
রোদঃ পাম মারা শেষ! এবার থাম…
তারপর রোদ ওর চুল গুলো ঠিক করে আবার গাড়ি স্টাট দেয়!মেঘ আর আলো বকবক করছে আর রোদ ড্রাইভ করছে আর ওদের বকবক শুনছে।তারপর ওরা একটা রেস্টুরেন্ট যায়!মেঘ আর আলো বিরিয়ানী খাবে তাই রোদও বিরিয়ানী আর চিকেন ফ্রাই, সালাড,আইসক্রিম আর তিনটা ডিউ অর্ডার করে!খাবার আসলে রোদ আর মেঘ স্পুন দিয়ে খেতে শুরু করে বাট আলো স্পুন দিয়ে খেতে পারে না।রোদ ব্যাপারটা বুঝতে পেরে রোদ ওর স্পুনটা রেখে হাত ধুয়ে হাত দিয়ে খেতে শুরু করলো!রোদের দেখে মেঘও স্পুনটা ফেলে দিলো!এমন ভাবে ফেললো মনে হচ্ছে স্পুনে একটা পোকা বসেছিলো…
রোদঃ আস্তে রাখলেই তো হয় তাই না।এত জোরে রাখার কি আছে??
মেঘঃআসলে দাভাই আস্তে রাখতে গিয়ে জোরে হয়ে গেছে।
তারপর তিনজন খেতে শুরু করলো!তিনজনে খুব মজা করে খাচ্ছে! তখন হঠাৎ করে মেঘ পাশে তাকিয়ে বললো…
মেঘঃ এই যে টাকলা আংকেল আপনি কি খাবেন?খেতে চাইলে আসুন। আর না খেতে চাইলে এদিকে আর তাকাবেন না! কারন কেউ তাকিয়ে থাকলে আমার আর আমার বউমনির খেতে সমস্যা হয়।আর বড় কথা আমার ওয়াশরুমে বেশি সময় ধরে থাকতে বিরক্ত লাগে।
আলোঃএখানে ওয়াশরুমের কথা আসলো কোথা থেকে…!! (ফিসফিস করে)
মেঘঃ বউমনি আসলে ওই আংকেলটা যেভাবে তাকিয়ে আছে আমার দিকে! আমার ইয়ো ইয়ো হবে সিওর।আর ইয়ো ইয়ো হলে ওয়াশরুমে দৌড়াদৌড়ি করতে হবে এজন্য আগেই বলে দিলাম।
রোদঃকতদিন বলবো! বড়দের সাথে এভাবে কথা বলতে নেই!এক্ষুনি ওই আংকেলটাকে সরি বলো।(দাঁতে দাঁত চেপে)
মেঘঃ ওই টাকলা আংকেল সরি..!!
রোদঃ টাকলা আংকেল এটা কেমন ডাক।সুন্দর করে ডাকো। (দাঁতে দাঁত চেপে)
মেঘঃ ওই চুল ছাড়া আংকেল। আমি সরি
লোকটিঃ ইটস্ ওকে
আলো মুখ চেপে হাসছে কারন আলো মেঘের কথা শুনে আর হাসি থামাতে পারছে না।আলোর দেখে মেঘও হো হো হাসতে শুরু করে দিলো!এবার আলোও শব্দ করে হেসে দিলো।আর রোদ ওদের দু’জনের দিকে তাকিয়ে আছে।তারপর তিনজন খাওয়া শেষ করলো!আলো আর মেঘ উঠে একপাশে দাড়ালো আর রোদ বিল পেমেন্ট করতে গেল।তখন একটা মেয়ে এসে আলোকে বললো…
মেয়েটিঃ ড্রেসআপ দেখে তো মনে হচ্ছে ভালো ফ্যামিলি বাট কোন রেস্টুরেন্ট গিয়ে যে হাত দিয়ে খাওয়া বেমানান এটা জানেন না বুঝি।কোন গাইয়া গ্রাম থেকে উঠে এসেছেন…(ত্যাচ্ছিলের সুরে)
রোদঃ এক্সকিউজ মি ম্যম!কি যেন বললেন??আমি আপনার কথাটার উওর টা দেই..(পেছনে থেকে)
মেয়েটিঃমানে
রোদঃ আপনি একটু আগে যে কথাটি বললেন তার আনসারটা আমি দেই কেমন।আচ্ছা ম্যম আমরা যে খাবারটা খেলাম! তার বিল কি আপনি দিয়ে দিবেন প্লিজ??
মেয়েটিঃ কেন আপনাদের বিল আমরা কেন দিবো??
রোদঃ আপনি যেহেতু বিলটা দিবেন না! সেহেতু আমরা কিভাবে খাবো না খাবো আপনি বলার কে?আমাদের টাকা দিয়ে আমরা খাচ্ছি তাহলে আপনি মধ্যখান থেকে বাম ডান ঢুকাচ্ছেন কেন?আমার যতদূর মনে পড়ছে আমি আপনাকে চাকর রাখিনি তাহলে…. (শান্ত সুরে মুচকি হেসে)
মেয়েটিঃ আম আমি আসলে
রোদঃ আসলে আর নকলে দেখার আপাতত সময় আমাদের হাতে নেই!তবে হ্যা আমরা হাতে দিয়ে খাবো নাকি পা দিয়ে এটা আপনার না ভাবলেও চলতো!বাট আপনি গায়ে পড়া মেয়েদের মধ্যে একজন তাই হয়তো অন্যদের বিষয়ে দুমদকম করে ঢুকে পড়েন তাই না।আর কে গাইয়া এই কথাটা কাকে বললেন??যাকেই বলেন মুখ সামলে কথা বলবেন আর নিজের চড়কায় তেল দেন। আর অন্যের ব্যাপার আপনার এই নোংরা বাম হাত ঢুকানোর হ্যাবিট টা যত দ্রুত সম্ভব বদলে ফেলবেন। আচ্ছা আপুনি ভালো থাকবেন…. বাই
রোদ মেয়েটি কে শান্ত সুরে আছিলা বাঁশ দিয়ে মেঘের হাত ধরে হাটতে শুরু করলো!আলোও রোদের পেছন পেছনে হাটছে।আর আমি মেয়েটি হা করে তাকিয়ে থাকলো।কারন এরকম ভাবে বাঁশ এর আগে মেয়েটি খায়নি! তাই হজম করতে একটু কষ্টই হচ্ছে আর কি! মেঘ ফট করে বলে উঠলো….
মেঘঃ দাভাই তুমি তো পুরাই হিরোগিরি করে চলে আসলে…!আমার দাভাই বলে কথা।
রোদঃ এই মেয়ে তুমি কি বোবা নাকি?কেউ কিছু বললে তার জবাব দিতে পারো না।গাধী একটা (আলোর দিকে তাকিয়ে)
আলোঃ আসলে ভ ভ ভাইয়া আম
রোদঃ থাক আর কিছু বলতে হবে!তোমার মুখে ভাইয়া ডাক শুনে আমার জান পরাণ জুড়িয়ে গেছে। তোমাকে আর কিছু বলতে হবে না।
তারপর তিনজন বাসায় ফিরলো!রোদ ওর রুমে গিয়ে দেখলে বেডের উপরেই ওর ফোনটা রাখা।
(আজকে সকালে রোদ পার্কে বসে আলোর ফোনে ওর নাম্বার সেভ করে দিচ্ছিলো!এখন যদি বলেন আলো ফোন পেলো কোথায়। তাহলে বলবো রোদের আম্মু আলোকে ফোন কিনে দিসে।আপনাদের জানানো হয়নি…!!তাই আমি সরি।কালকে
একজন পাঠিকা আমাকে জিজ্ঞাসা করছে রোদ তো ফোন বাসায় রেখে গেছে! তাহলে রোদ পার্কে ফোন কোথায় পেলো?তাই আজকের পার্টে জানিয়ে দিলাম।রোদ আলোর ফোন টিপছিলো…)
রোদ সাওয়ার নিয়ে গুনগুন করতে করতে রুম এসে বসলো।তারপর কি মনে করে ফোনটা হাতে নিতেই রোদের চোখ চড়ক গাছ কারন আকাশ, সিয়া,আবৃতি মিলে রোদকে ৪৮+কল দিয়েছে।রোদ সাথে আকাশকে ফোন দিলো! আকাশ ফোনটা রিসিভ করলো….
রোদঃ কি রে এতবার ফোন দিয়েছিলি কেন?
আকাশঃ আগে বল আলো এখন কোথায়??
রোদঃআলো তো বাসায়! কেন হঠাৎ আলোর খোঁজ করছিস যে…!!(ভ্রু কুচকে)
আকাশঃ বিকাল ৫ টায় লেকের পাড়ে আয়।তোর সাথে আমার কথা আছে।
রোদঃ সিরিয়াস কিছু..!!
আকাশঃ হুমমম
রোদঃ ওকে বাই
আকাশঃ বাই
রোদ ওর ফোনে এলাম দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো!আলো সাওয়ার নিয়ে নামাজ পড়ে নিচে আসে।মেঘ ড্রয়িং রুমে বসে বসে রকির শরীরে চিরুণী করে দিচ্ছে। মেঘের কান্ড দেখে আলো খিলখিল করে হেসে উঠলো।তারপর আলো আর মেঘ মিলে রকির সাথে দুষ্টুমিতে মেতে উঠলো।
বিকাল ৪ঃ৫০ মিঃ রোদ রেডি হয়ে নিচে নামছিলো!তখন রোদের আম্মু আলোর চুলে তেল দিয়ে দিচ্ছিলো।আর মেঘ আলোর চুল গুলো ধরে কি যেন গবেষণা করছিলো।রোদ একবার আলোর তাকিয়ে ওর আম্মুকে বলে চলে গেল!রোদ ওর বাইক নিয়ে লেকের পাড়ে গেল!রোদ লেকের গিয়ে দেখে সবাই বসে আছে!রোদ হাসতে হাসতে আকাশের পিঠ চামড়ে জিজ্ঞাসা করলো কি হয়েছে??আকাশে, রোদকে আজকের সকালের ঘটনাটা সব বললো!রোদ সব শুনে দাঁতে দাঁত চেপে উঠে দাঁড়ালো……..!!
তারপর…..!!!
রাত ৯ টার দিকে রোদ বাসায় ফিরলো!হাতে ব্যান্ডেজ নিয়ে!আলো মেঘকে তখন শব্দার্থ আর অনুবাদ পড়াচ্ছিলো!
I=আমি..
You =তুমি..
Have= আছে..
রোদ রাগে হনহন করতে করতে আলোর রুমে ঢুকলো!তারপর রোদ আলোর হাত ধরে টেনে দাঁড় করিয়ে চোখ লাল করে বললো।
রোদঃ কেউ যদি কিছু বলে অপমান করে তাহলে তুমি তাকে কিছু বলো না কেন?কেন চুপ করে থাকো?এই মেয়ে আজকে সকালে এত কিছু হয়ে গেল তুমি আমাকে কিছু বললে না কেন??নিজেকে কি ভাবো তুমি??(গাল চেপে ধরে)
মেঘঃ দাভাই তুমি বউমনি ক
রোদঃ চুপ একদম চুপ!তুই যদি একটা কথা বলিস আজকে তোকে পিটিয়ে সোজা করে দিবো।আর এই মেয়ে তুমি নিজেকে কি ভাবো হ্যা?এটা তোমার গ্রাম না বুঝলে এটা ঢাকা। এখানে টিকতে গেলে হাতের আর গলায় জোর থাকতে হয়।নিজেকে সব সময় সেভ করার জন্য রুখে দাড়াতে শিখো! (ধাক্কা দিয়ে)
আলোঃ….
রোদঃ এই মেয়ে তোমাকে এতবার জিজ্ঞাসা করার পরেও তুমি কিছু বললে না কেন??আর এমন হবে?কি হলো বলো!!!! (জোরে চিৎকার করে)
আলোঃ নননন না আর এম এমন হবে না।(ভয় পেয়ে)
রোদঃ এবার থেকে কোথাও কোন সমস্যা হলে আগে আমাকে তুমি নিজে জানাবে!যদি আজকের মত অন্য কারো থেকে আমার জানতে হয় তো! সেদিনই মেরে পুঁতে দিবো। মনে থাকে যেন (রেগে গিয়ে)
আলোঃ উমমমমম হুম হুম ম ম মনে থাকবে(ভয়ে তোতলাতে তোতলাতে)
তারপর রোদ পাশের সেন্টার টেবিলটা জোরে লাথি দিয়ে হনহন করতে করতে ওর রুমে চলে গেল।রোদ ওর রুমের দরজা অনেক শব্দ করে লাগালো!এত জোরে দরজা লাগিয়েছে যে পুরো বাড়ি কেঁপে উঠছে!রোদের আব্বু আর আম্মু দৌড় রুম বের হয়ে আসে।বাট কেউ রোদের রুমে নক করে না কারন রোদের আব্বু আম্মু জানে তাদের বড়পুত্র রেগে গেলে এমনই করে…
ওইদিকে আলো আর মেঘ দুজনে বকা খেয়ে ভীতু বিড়ালছানা মত বসে একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে!কারো মুখে কথা নেই দুইজনের মুখটা চুপসে যাওয়ার বেলুনের মত হয়ে গেছে….!!
To be continue…..
(এর থেকে বড় পার্ট দেওয়া সম্ভব না….তাই আপনারা বড় পার্ট চেয়ে লজ্জা দিবেন না।)