বাঁক ( ৮ম পর্ব )
____________
– ‘মাঝ রাস্তায় বমি শুরু করছো কেন? রাস্তার পাশে চলো।’
মানহা বমি করতে করতে রাস্তার পাশে যায়। মৃদুল পেছন থেকে তাকে ধরে রেখেছে। খানিক পরেই নেতিয়ে পড়ে মানহা।
মৃদুল তাকে টেনে ধরে রেখে বললো,
– ‘কী হলো পড়ে যাচ্ছ কেন?’
– ‘শরীর কেমন জানি করছে। আমি এখানে কিছু সময় শুয়ে থাকি।’ কথাটি গোঙানোর মতো শোনাল।
– ‘আরে না এখনে ধুলোবালি আছে তো। আচ্ছা আমি তোমাকে কোলে করে নিচ্ছি। মাঠে গিয়ে শুয়ে থাকবে।’
মানহা কোনো জবাব দিলো না। মৃদুল ওর নেতিয়ে পড়া দেহখানি টেনে তুলে পাঁজাকোলা করে হাঁটতে থাকে। ইটের রাস্তা পেরিয়ে কুঁড়েঘরের সামনে এসে পুকুর পাড়ে থামে। পুকুরের পানিতে চাঁদ ডুবে গেছে। জলে একটু নাড়া দিলেই কাঁপবে। কিন্তু এই মুহূর্তে দৃশ্যটি দেখা থেকে প্রয়োজন হচ্ছে মানহার বমি লেগে থাকা মুখটা ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা।
মৃদুল তাকে নারিকেল গাছের নিচে রেখে ফিসফিস করে বলে,
– ‘তুমি হেলান দিয়ে এখানে বসো, আমি ঘাট থেকে আঁজলা ভরে জল আনি।’
মানহা দূর্বল গলায় বললো,
– ‘আচ্ছা।’
তাকে বসিয়ে রেখে মৃদুল মাথা তুলে তাকায়। গাছের টুকরো ফেলে ঘাট বানানো। ধীরে ধীরে যায় সেদিকে। চাঁদের আলোয় সবকিছু স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। সে একটা কাঠ দেখে পা দিতেই কীভাবে যেন বাঁ পাশ দিয়ে সরে গেল। ছিটকে গিয়ে তার কোমর পর্যন্ত পড়লো ডান পাশের জলে। বাকিটা গাছের টুকরোতে। প্রচন্ড ব্যথা পায় হাঁটুতে। হাত দিয়ে ভর দিয়ে উঠতে গিয়ে কাদায় গেড়ে গেল দু-হাত। তাড়াতাড়ি পুরো শরীর টেনে পানিতে নেমে পায়ে ভর দিয়ে আবার উঠে এলো কিনারে। কুঁড়েঘর থেকে বুড়ো লোকটি কাকে যেন ডাকছে। মৃদুল মানহাকে পাঁজাকোলা করে নেয়ার জন্য নুইয়ে হাত বাড়াতেই মানহা অস্ফুটে বললো,
– ‘তুমি পড়ে গেলে কীভাবে?’
সে কোনো জবাব দিলো না। দ্রুত কোলে করে তুলতে গেয়ে দেখে পানিতে এখনও ঢেউ রয়ে গেছে। পূব পাড়ের বাঁশঝাড়ের উপর দিয়ে চাঁদ পুকুরে ডুব দিয়ে জলের ভেতর কাঁপছে।
মৃদুল ফিসফিস করে বললো,
– ‘মানহা পুকুরের দিকে চোখ মেলে তাকাও।’
মানহা চোখ মেলে তাকায়। তখনই কুঁড়েঘরের দরজার খিল খোলার শব্দ শুনেই মৃদুল তাড়াতাড়ি উঠোন পেরিয়ে বাড়ির পেছনে চলে গেল। বুড়ো প্রথমে গেল পুকুরের দিকে। তারপর রাস্তায়। এই সময়ে মৃদুল আহত পা টেনে টেনে দ্রুত নেমে গেল হাওরে। খানিক হেঁটে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে ঘাসের ওপর রাখে মানহাকে। সেও মাঠে শুয়ে হাঁপাতে থাকে।
– ‘মানহা এখন কেমন লাগছে?’
– ‘জলের পিপাসায় গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।’
– ‘এখানে তো জল পাওয়া যাবে না। তবে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিলে তুমি পুরোপুরি ঠিক হয়ে যাবে। জর্দা দিয়ে সুপারি খেলে এরকম একটু হয়ই।’
– ‘হু, কিন্তু আমার ঘুম পাচ্ছে।’
– ‘ঘুমালে হবে না মানহা। হাওরটা তোমার হেঁটেই যেতে হবে। আমাকে ধরে ধরে তুমি হাঁটবে।’
– ‘আচ্ছা।’
মৃদুল আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়ায়। ডান পায়ের হাঁটুতে প্রচণ্ড আঘাত টের পাচ্ছে।
ধীরে ধীরে শার্টের বোতামগুলো খুলে চিপা দেয়। তারপর ঝেড়ে-ঝুড়ে শার্ট পিঠে ফেলে হাতা দু’টা গলার সঙ্গে বাঁধে।
– ‘মানহা আমার হাত ধরে ধীরে ধীরে উঠো। রাত অনেক হয়ে গেছে যেতে হবে তো।’
মানহা উঠে বসে। মৃদুল তাকে ধরে দাঁড় করায়।
– ‘আমার হাত ধরে হাঁটতে পারবে না?’
– ‘না, তুমি আমার পিঠের দিকে হাত নিয়ে প্যাঁচিয়ে ধরে রাখলে পারবো।’
মৃদুল পিঠের দিকে হাত নিয়ে ধরে বললো,
– ‘এভাবে?’
– ‘হু।’
– ‘ঠিকাছে এবার যাই।’
চাঁদের মিহি আলোয় দু’জন শ্লথ গতিতে হাঁটতে থাকে৷ ধীরে ধীরে মানহার শরীর পুরোপুরি ঠিক হয়ে আসলেও মৃদুলের পা ব্যথা বাড়ছে। তার হাঁটার ভঙ্গি দেখে মানহাও সেটা বুঝতে পারে।
– ‘পুকুরে পড়ে কি পায়ে ব্যথা পাইছো?’
– ‘হ্যাঁ, গাছের টুকরোতে হাঁটু লেগেছে।’
– ‘ইশ, হাঁটুতে দেখো কী হয়েছে।’
– ‘না, একেবারে গিয়ে দেখবো এখন থাক।’
– ‘আমার পাগলামির কারণে এগুলো হলো।’
– ‘তা ঠিক।’
মানহা আহত নয়নে ওর দিকে তাকিয়ে বললো,
– ‘ঠিক হলেও এভাবে বুঝি মুখের উপর বলে কেউ?’
মৃদুল মুচকি হাসে। মানহা বাঁ হাত মৃদুলের নগ্ন পিঠের দিকে নিয়ে প্যাঁচিয়ে ধরে বললো,
– ‘শুধু তুমি না, আমিও তোমাকে ধরেছি, এবার হাঁটো।’
– ‘আমি তো তোমাকে কোলে নিয়েছি তুমি আমাকে নাও।’
মানহা ফিক করে হেঁসে বললো,
– ‘বাবারে বাবা, এতো বড়ো ব্যাটা মানুষ আমি জীবনেও কোলে নিতে পারবো না।’
মৃদুল খানিক হেঁসে বললো,
– ‘এখন তুমি পুরোপুরি ঠিক হয়ে গেছো।’
– ‘হু।’
– ‘জর্দা চুন দিয়ে ঠোঁট লাল করে আর কখনও পান খাবে?’
– ‘জীবনেও না৷ কিন্তু কিসের জন্য এরকম হলো? সিগারেট না-কি পান?’
– ‘দু’টাই। হঠাৎ সিগারেট খেলেও একটু একটু মাথা ধরে। তাও আবার তুমি মেয়ে মানুষ।’
– ‘তাহলে পানের জন্য না। পঁচা সিগারেটের জন্য।’
– ‘তোমারে বলছে, সিগারেট থেকেও জর্দা আর চুন দিয়ে পান খাওয়া মারাত্মক। মাথা ঘুরে শরীর ঘেমে যায়।’
– ‘তা জানি, কিন্তু এতটাও ভাবিনি।’
– ‘এবার শিক্ষা হইছে তাহলে।’
– ‘আচ্ছা তুমি এতো পাগল কেন?’
– ‘কেন আমি আবার কী করলাম?’
– ‘এমনিতেই পানিতে পড়ার প্রচণ্ড শব্দ হইছে। তখন তাড়াতাড়ি চলে আসবে তা না করে আমাকে আবার পুকুরে চাঁদ দেখাচ্ছ। ওদিকে বুড়ো এসে যদি ধরে ফেলতো।’
– ‘তুমি সবকিছু বুঝতে পারছিলে? আমি তো দেখলাম তুমি অজ্ঞানের মতো।’
– ‘মাথা ঘুরলে সেটা বেশিক্ষণ থাকে না। হুট করে মাথা ঘুরে পড়ে ঘেমে-নেয়ে খানিক পরে মানুষ ঠিক হয়ে যায়। আমি মনে হয় বমি করায় বেশি দূর্বল হয়ে পড়েছিলাম। আর পানি খাইনি এখনও।’
– ‘বেশি পানির পিপাসা?’
– ‘হ্যাঁ, কিন্তু এখানে তো পাওয়া যাবে না৷ তাছাড়া আর বেশিদূর না। চেম্বারে গিয়েই এক চুমুকে এক বোতল পানি খাব দেখে নিয়ো।’
– ‘এক বোতল শিওর?’
– ‘হ্যাঁ।’
– ‘এক গ্লাসও খেতে পারবা না।’
তারা গল্প করতে করতে বাজারের রাস্তায় এসে উঠে। বাজারে মানুষ নেই। দোকানগুলোর স্যাটার বন্ধ হয়ে গেছে। পাহারাদার অন্যকোনো গলিতে আছে হয়তো। তারা দ্রুত রাস্তা পেরিয়ে ফুটপাত ধরে হেঁটে মামণি ফার্মেসির সামনে চলে আসে।
– ‘আমি কী চলে যাব?’
– ‘আরে না উপরে আসো।’
– ‘কেউ দেখলে সমস্যা হবে তো।’
– ‘এখানে দাঁড়িয়ে কথা না বলে তাড়াতাড়ি উপরে চলো।’
দু’জন সিঁড়ি দিয়ে উপরে এলো। মানহা ফুলের টবের নিচ থেকে চাবি নিয়ে তালা খুলে বললো,
– ‘ভেতরে যাও।’
মৃদুল ইতিউতি করে ভেতরে গেল। মানহা গ্লাস লাগিয়ে নিয়ে বললো,
– ‘তুমি আগে বাথরুমে গিয়ে গোসল করো। সকালের গামছা আর যে কাপড় পরে এসেছিলে সেগুলো তো আছেই।’
– ‘হ্যাঁ, আর তুমি ততক্ষণে কিছু খাও।’
– ‘আচ্ছা চলো।’
মৃদুল জানালায় রাখা সকালের গামছা নিয়ে বাথরুমে ঢুকে গেল। মানহা টি-টেবিল থেকে জগ নিয়ে প্রথমে মুখ ধুয়ে ভালো করে কুলি করে ফ্রিজ থেকে পানি বের করে টি-টেবিলে রেখে সোফায় বসে রইল। যতই পিপাসা থাকুক সে এখন একফোঁটাও জল খাবে না৷ মৃদুলের চোখের সামনে পুরো বোতল খেয়ে দেখাবে।
মৃদুল বাথরুম থেকে মাথা মুছতে মুছতে খালি গায়ে বের হলো।
– ‘ভেজা কাপড় কী করবো?’
– ‘রান্না ঘরের ওদিকে বেলকনিতে দড়ি আছে, সেখানে দিয়ে দাও।’
– ‘আচ্ছা।’
– ‘এই দাঁড়াও, আমার প্রচণ্ড পানির পিপাসা আর অপেক্ষা করতে পারবো না৷’
– ‘তুমি অপেক্ষা করছো কেন?’
– ‘পুরো এক বোতল খেয়ে দেখাবো।’
– ‘তুমি দেখছি পুরাই উন্মাদিনী, আচ্ছা খেতে শুরু করো আমি কাপড় নিয়ে আসছি।’
– ‘না পরে বলবা পানি বাইরে ফেলে দিছি এখানে দাঁড়াও।’
– ‘আচ্ছা ঠিকাছে।’
মানহা গ্লাসে পানি ঢেলে প্রথম গ্লাস এক টানে খেয়ে নিল। তারপর আরেক গ্লাস। এভাবে পর পর তিন গ্লাস খেয়ে সে টের পেল পানি কেমন বাজে লাগছে৷ আমতা-আমতা করে বললো,
– ‘ফ্রিজের পানি থাকে ঠাণ্ডা, তাই বেশি খাওয়া যায় না।’
মৃদুল তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বাথরুমে গিয়ে নিজের কাপড় নিয়ে এসে বললো,
– ‘তুমিও গোসল করো।’
– ‘হ্যাঁ, তা তো করতেই হবে। কিন্তু তোমার হাঁটুর অবস্থা কী?’
– ‘অল্প কিছু জায়গা ফুলে গেছে, ও কিছু না তুমি যাও।’
মানহা সবকিছু নিয়ে বাথরুমে চলে গেল। মৃদুল বেলকনির দড়িতে কাপড় মেলে এসে সোফায় বসে রইল। খানিক পরে মানহা সকালের শাড়ি পরেই পুনরায় বের হয়। মৃদুলকে দেখে চুল ভালো করে মুছতে মুছতে বললো,
– ‘গোসল করে ফ্রেশ হয়ে এসে আবার ময়লা কাপড় না পরলেই হতো।’
মৃদুল নিজের গেঞ্জির দিকে তাকিয়ে বললো,
– ‘এটা পরেই রাতে ঘুমিয়েছিলাম। ভোরে তো এভাবেই এসে এখানে গোসল করলাম।’
– ‘হু বুঝেছি, এখন ময়লা গেঞ্জি খুলে ফেলতে পারো, এখানে তো আর কেউ নেই।’
– ‘তুমি তো আছো।’
মানহা ফিক করে হেঁসে বললো,
– ‘হ্যাঁ তাও ঠিক।’
মৃদুল খানিক ভেবে অবাক হয়ে বললো,
– ‘আমি আজই তোমার এখানে সহকারী হিসেবে এলাম৷ কিন্তু এতো দ্রুত কীভাবে আপনি থেকে তুমিতে এসে একেবারে ফ্রেন্ডদের মতো হয়ে গেলাম?’
– ‘যাদু করেছি, আমি যাদু জানি।’
– ‘আসলেই মনে হয় জানো। তা তুমি ডাইনি, রাক্ষসী না-কি পেত্নী?’
– ‘তুমি এতো আনরোমান্টিক কেন?’
– ‘এটা কেন বলছো?’
– ‘ডাইনি, পেত্নী না বলে কি পরি বলতে পারতে না?’
মৃদুল হেঁসে বললো,
– ‘আসলেই পরি বলা উচিত ছিল।’
– ‘কেন?’
– ‘শাড়িতে পরির মতো সুন্দর লাগছে?’
মানহা ফিক করে হেঁসে বললো,
– ‘মাঝ রাতে কোনো বদ মতলবে পটাতে চাচ্ছ না তো আবার?’
– ‘তার সুযোগ তো নেই, কারণ আমি একটু পরেই চলে যাব গুদামঘরে ঘুমোতে।’
– ‘আরে ধুরো থাকবে এখানে, যেতে হবে কেন?’
– ‘তোমার কী মাথা খারাপ? লোকে জানলে কী হবে ভেবে দেখেছো? তাছাড়া তুমি এখানে একা থাকবে কীভাবে? চলো বাসায় দিয়ে আসি।’
মানহা এসে মৃদুলের পাশে সোফায় বসে, তারপর তার দিকে এক অদ্ভুত ঘোর লাগা চাহনিতে তাকিয়ে বললো,
– ‘তোমার কী স্মৃতি শক্তি এতটাই দূর্বল?’
মৃদুল অবাক হয়ে বলে,
– ‘মানে?’
– ‘পরে বলছি, তার আগে বলো তোমার কী প্রেমিকা আছে?’
– ‘না।’
– ‘আমার মতোই অবিবাহিত, প্রেমিকাও নেই। তাহলে মানুষ জানা নিয়ে চিন্তার কিছু দেখছি না।’
‘আমি বিবাহিত’ বলতে গিয়েও মৃদুল আঁটকে গেল। এই মেয়েকে তার বড্ড প্রয়োজন৷
মানহা পুনরায় বললো,
– ‘তুমি গেঞ্জিটা খুলে বিছানায় যাও, গেঞ্জি থেকে গন্ধ আসছে।’
– ‘বিছানায় কেন যাব?’
– ‘আমি বলছি তাই।’
মৃদুল কিছু না বলে বিছানায় গিয়ে বসে। মানহা কোত্থেকে ভিক্স নিয়ে এসে বললো
– ‘ট্রাউজার তুলো, দেখি হাঁটুতে বেশি ফোলা কি-না।’
– ‘আরে ও কিছু না, ভিক্স দিতে হবে না।’
– ‘আমি তুলতে বলছি।’
মৃদুল ধীরে ধীরে ট্রাউজার হাঁটু অবধি টেনে তুলে।
– ‘বালিশে গিয়ে শান্তিমতো শুয়ে থাকলে কী জাত যাবে?’
মৃদুলের কাছে কেমন রহস্যময় লাগছে মানহাকে। সে ধীরে ধীরে বালিশে গিয়ে মাথা রাখে। মানহা তর্জনীর আগায় অল্প ভিক্স নিয়ে ফোলা জায়গায় আলগোছে লাগিয়ে দেয়। মৃদুলের চাহনিতে শত শত প্রশ্ন, বিস্ময়।
মানহা জলে ঝাপসা চোখ তুলে তার দিকে তাকায়। তারপর ধরা গলায় বলে,
– ‘মৃদুল কারও সঙ্গে একযুগ থেকেও বেশিদিন পরে দেখা হলে কী জড়িয়ে ধরে না?’
মৃদুল অবাক হয়ে বিছানা থেকে উঠে বললো,
– ‘হ্যাঁ ধরে, তো কী হয়েছে?’
– ‘তাহলে আমি কী মানুষ না?’
– ‘মানে কী? প্লিজ রহস্য না করে তাড়াতাড়ি বলো কে তুমি?’
— চলবে —