তৃণশয্যা(সিজন ২) #নিয়াজ_মুকিত #২য়_পর্ব

0
322

#তৃণশয্যা(সিজন ২)
#নিয়াজ_মুকিত
#২য়_পর্ব

নিজের সাজানো ফাঁদে নিজেই পড়েছে আদনান।চারু বেশ উপভোগ করছে এ বিষয়টা। কাজী সাহেব বারবার আদনানকে তাগদা দিয়ে চলেছে। কাজী সাহেবের সাথে তাল মিলিয়েছে আদনানের বাবা-মাও। তারা বারবার নিজের ছেলেকে তাগদা দিয়ে চলেছেন।এই পরিস্থিতে আদনান কি করবে বুঝতে পারছে না? চারু হাসি হাসি মুখ নিয়ে তাকিয়ে আছে আদনানের দিকে।খুব খুশি লাগছে তার।নিজের সাজানো ফাঁদে নিজে পড়লে কেমন লাগে বোঝা উচিত আদনানের।চারুর এই হাসিটা আদনানের রাগকে মুহূর্তের মধ্যেই দ্বিগুণ করে দেয়।সবশেষে আদনান খানিকটা চিল্লিয়ে বলে,
–“তোমরা আমাকে এত তাড়া দিচ্ছে কেন?এভাবে থাকা যায় নাকি?যাও আমি রাজি!”
আদনানের সম্মতি পেয়ে কাজী সাহেবকে সাথে সাথে বিয়ে পড়ানোর আদেশ দেন আদনানের বাবা হালিম সাহেব।কাজী সাহেব মুহূর্ত দেরি না করে বিয়ে পড়াতে শুরু করেন।এক পর্যায়ে বিয়ে পড়ানো শেষ হয়ে যায়।এখন আদনান ও চারু দুইজনে স্বামী-স্ত্রী।চারু খানিকটা লজ্জা নিয়ে তাকায় আদনানের দিকে।চারুর লজ্জিত মুখ দেখে আদনান আরো রেগে যায়।সে ভীষণ রেগে তাকায় চারুর দিকে।এই মুহূর্তে আদনানের বাবা হালিম সাহেব ঘোষণা করেন,

–“এখন এখান থেকে বের হয় আমরা একটা রেস্টুরেন্টে যাবো।সেখান থেকে খাওয়া দাওয়া করে বাসায় যাব।সবার কি মত?”

সবাই হালিম সাহেবের কথায় সায় দেয়।পরিকল্পনা অনুযায়ী সবাই কাজী অফিস থেকে বের হয়। হালিম সাহেব নিজে গাড়িতে উঠে সবাইকে গাড়িতে উঠতে বলেন।সবাই এক এক করে গাড়িতে উঠে বসলে,হালিম সাহেব গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চালাতে শুরু করেন। হালিম সাহেব এর পাশে মুখ গোমরা করে বসে আছে আদনান।বেহায়ার মত তার দিকে তাকিয়ে আছে চারু।সাথে মনে মনে ভাবছে,ইস আমার বরটা কিউট আছে অনেক।ভালোবাসতাম তাকে কিন্তু বলতে পারি নি।আজ বিয়েই হয়ে গেল।একেই বলে কপাল।

একপর্যায়ে গাড়ি এসে থামে একটা রেস্টুরেন্টের সামনে।সবাই নেমে পড়ে গাড়ি থেকে।সবার আগে রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করে আদনান ও চারুর বাবা-মা।মুখ গোমরা করে গাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে থাকে আদনান।তাকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে চারু তার সামনে এসে দাঁড়ায় বেশ ভাব নিয়ে।আদনান টের চোখে তাকায় চারুর দিকে।চারু আদনানের চোখ থেকে সানগ্লাসটা খুলে নিজের চোখে পড়তে পড়তে বলে,
–“মিস্টার বর! আপনার গার্লফ্রেন্ড গুলোর জন্য একটু কষ্ট হচ্ছে আমার।বেচারিরা?কি হবে এখন তাদের?ওহ হো এটা তুই কি করলি চারু?এতগুলো মেয়ের বয়ফ্রেন্ডকে বিয়ে করে ফেললি।”

চারুর কথা শুনে বেশ রেগে তার দিকে তাকায় আদনান।আদনানের রাগ দেখে তাড়াতাড়ি রেস্টুরেন্টের প্রবেশ করে চারু।আদনান চারুর যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে থাকে।এভাবে বেশ কিছুক্ষন দাড়িয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করেন আদনান।আদনান ভিতরে প্রবেশ করে দেখে সবাই অলরেডি খেতে বসেছে। আদনান গিয়ে বসে পড়ে তার বাবার পাশে।আগে থেকে অর্ডার দেওয়া ছিল খাবার।আদনান ঘপঘপ করে খাবার খেতে শুরু করে।আদনানের খাওয়া দেখে বেশ অবাক হন তার মা রাহিনা বেগম।খাওয়া-দাওয়া শেষ করে একটা চিন্তা সবার মাথায় একসঙ্গে প্রবেশ করে?চিন্তাটা হলো,চারু এখন কোথায় থাকবে?তার বাবা-মার বাসায় নাকি আদনান এর সাথে?শেষ পর্যন্ত অনেক ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় আজ তার বাবা-মার বাসায়ই থাকবে চারু।যেহেতু তার কোনো কাপড় চোপড় আদনান দের বাসায় নেই,তাই আজ নিজ বাসায় থাকায়ই তার জন্য ভালো হবে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী চারু তার বাবা-মার সঙ্গে বাসার পথে রওনা হয়।আদনান কে নিয়ে বাসার পথে রওনা হযন হালিম সাহেব।

বাসায় প্রবেশ করে আদনান কারো কোনো কথা না শুনে নিজের রুমের দিকে রওনা হয়।রুমে প্রবেশ করে দরজাটা লাগিয়ে দেয় সে।তারপর ধপ করে বিছানায় বসে পড়ে।পকেট থেকে মোবাইল বের করে হাতে তুলে নেয় নে।মোবাইল অন করতে স্ক্রিনে ভেসে ওঠে একটা মেয়ের ছবি।আদনান ছবিটার দিকে তাকিয়ে থাকে এক দৃষ্টিতে।এদিকে বাবা-মার সাথে বাসায় পৌঁছে যায় চারু।বাসায় পৌছে প্রথমে সাওয়ার নেয় সে।সাওয়ার নেয়া শেষ করে ঘুমানোর প্রস্তুতি নেয় সে।বিছানায় শুতে তার চোখ ঘ্রাস করে নেয় ঘুমরাজ।চারু বালিশ জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে।

এদিকে এখনো মোবাইলের স্কিনের দিকে তাকিয়ে আছে আদনান।চোখের কোণে ফোটা ফোটা পানি জমেছে।চোখের কোণে পানি জমার কারন ভয়।তার এই বিয়ের কথা যদি নিত্তিয়া জানতে পারে তাহলে চারুকে খুন করতে এক সেকেন্ডও সময় নেবে না সে।আদনান ভয়ে চুপসে বসে আছে।কিভাবে সে নিত্তিয়াকে এই কথা বলবে?নিত্তিয়া যদি জানতে পারে তাহলে তার বাবাকে বলবে।ফলে চারুর ফ্যামিলির উপরও অনেক প্রকার সমস্যা দেখা দিবে।কেননা নিত্তিয়ার বাবা একজন বিশাল বড় ক্রিমিনাল সাথে একজন এমপি ও।নিত্তিয়া নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসে আদনানকে,তবে সেটা উপরে উপরে।নিচের কাহিনী আদনান সব জানে।তবুও ভয় করছে তার।

আদনান অনেকক্ষন ভেবে একটা সিদ্ধান্ত নেয়।সিদ্ধান্তটা ঠিক নাকি ভুল বুঝতে পারে না সে।তবে এটা ছাড়া আর কোনো উপায়ও নেই।সেটা হল এখনি বিদেশ চলে যাবে সে।সেখানে গিয়ে নিত্তিয়ার সাথে সব প্রকার কথাবাত্রা বন্ধ করে দেবে আদনান।শেষ পর্যন্ত আদনানের কোনো খোঁজ না পেয়ে বিয়ে করে ফেলবে নিত্তিয়া।তখন দেশে ফিরে আসবে আদনান।এছাড়া আরেকটা পথ উন্নুক্ত রয়েছে।সেটা হলো ডিবোর্স।আদনান সিদ্ধান্ত নেয় চারুর সাথে কথা বলার।সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সে রওনা হয়ে পড়ে চারুর বাসার উদ্দেশ্যে।

গাড়ি চালিয়ে সে এসে পৌঁছায় চারুদের বাসায়।গাড়িটা চারুদের বাসা থেকে খানিক দুরে পার্কিং করে সে যাতে দেখতে না পায় চারুর বাবা-মা।আদনান চুপ করে প্রবেশ চারুর রুমে।রুমে প্রবেশ করে দেখে চারু ঘুমিয়ে আছে।আদনান আস্তে করে দরজাটা লাগিয়ে দেয় রুমের।তারপর ডাকতে শুরু করে চারুকে।সদ্য ঘুমিয়ে যাওয়া চারুকে ঘুম থেকে উঠাতে বেশ বেগ পেতে হয় আদনানের।

চোখ খুলে আদনানকে দেখে বেশ চমকে ওঠে চারু।তারপর বেশ রোমান্টিক ভাব নিয়ে বলে,
–“কি মি‌.জামাই?বিয়ে হতে না হতেই রোমান্স করতে চলে এসেছেন?আসেন আসেন।”

এক ধমকে চারুকে থামিয়ে দেয় আদনান।আদনান চারুর দিকে তাকিয়ে বলে,
–“আমি তোকে ডিবোর্স দিতে চাই।”

কথাটা শুনে খুব জোরে চিল্লিয়ে ওঠে চারু।অজ্ঞান হয়ে যায় সে।আদনান বুঝতে পারে না চারুর অজ্ঞান হওয়ার কারন।কোনো বড় প্রবলেম হলো নাকি চারুর

চলবে..ইনশাআল্লাহ

নামাজ কায়েম করুন।আল্লাহ হাফেজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here