প্রেমরোগ-১,০২

0
1689

#প্রেমরোগ-১,০২
#তাসনিম_তামান্না
০১

বিয়ে বাড়ি ভর্তি মেহমানরা। তার মধ্যে অন্ধকার রুমটায় কুয়াশার গলা চে’পে ধরে আছে এক পুরুষালি হাত। কুয়াশার দম নিতেও কষ্ট হচ্ছে। কুয়াশা কিছুক্ষন ধ-স্তা-ধ-স্তি-র পর বৃথা হয়ে। ক্লান্ত হয়ে থেমে গেলো। লোকটা ছেড়ে দিলো কুয়াশা কেশে উঠলো। আগন্তুকটা অন্ধকারে কুয়াশার কোমড় চেপে ধরলো। ঠান্ডা হাতের স্পর্শ পেয়ে কুয়াশা কেপে উঠলো তার কোমড় চেপে ধরলো। হাত পা অসর হয়ে আসছে। মাথায় কিছু আসছে না। আগন্তুকটার শ্বাস-প্রশ্বাস কুয়াশার গলায় আঁচড়ে পড়ছে। ধীরে ধীরে লোকটা কুয়াশার গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো। আগন্তুকের খোঁচা খোঁচা দাঁড়িতে কুয়াশার অদ্ভুত ভাবে ব্যথা পেলো। লোকটা তার ঠিক লাল তিলটায় চু!মু খেলো। কুয়াশা অদ্ভুত ভাবে কেঁপে উঠল। মাথায় টিভির মতো ঝিরঝির করে নীল হয়ে গেলো। লোকটা তার উষ্ণ ঠোঁট বুলিয়ে গলা থেকে ঘাড়ে নেমে আসলো। লেহেঙ্গার হাতা কিছুটা আগলা হতেই। কুয়াশা চমকে হতভম্ব! হতবিহ্বল হয়ে যায়। দূর্বল হাতে লোকটাকে সরানোর প্রায়শ চালায়। লোকটা সরলো না। বরং আরো শক্ত হাতে কুয়াশাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো। কুয়াশা ভয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলো। এই বুঝি সব শেষ হয়ে গেলো। সে কান্নায় শব্দ হলো না দু-চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরতে লাগলো। অন্ধকারে বাইরে থেকে আসা অল্প আলোয় কুয়াশায় কান্নারত মুখশ্রী দেখে লোকটা থেমে গেলো।
কুয়াশার মুখ থেকে হাত সরিয়ে ঠোঁটের নিচে থাকা লাল তিল টায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে ফিসফিসে ভরাট গলায় বলল
” তুমি যখন স্ট্রেজে অন্য ছেলের সাথে ডান্স করছিলে না তখন আমার এর চেয়ে কষ্ট হচ্ছিল আমার ভিতর টা জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছিল। দম নিতেও কষ্ট হচ্ছিল ”
কুয়াশা ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো। ও ভয়ে জমে গেছে মুখ দিয়ে কোনো টু শব্দ বের করতে পারছে না। কাঁদতে কাঁদতে ফর্সা মুখ লাল হয়ে গেছে। গোলাপি পাতলা ঠোঁট জোড়া তির তির করে কাঁপছে। আগন্তুকটা কুয়াশার ঠোঁটের আঙ্গুল বুলিয়ে দিয়ে বলল ” একদিন এখানে ছোঁয়ার অধিকার হবে আমার ”
লোকটা কুয়াশার কপালে কপাল ঠেকিয়ে দাড়ায়। কুয়াশা এমনিতেই ভীতু প্রকৃতির মেয়ে একটুতেই ভয় পেয়ে যায়। তার ওপরে এই আগন্তুকের আগমন। নতুন অনুভূতির সাথে পরিচয়। আগে কখনো এমন হয় নি। কুয়াশা এসব নিতে না পেরে জ্ঞান হারিয়ে ঢলে পড়ে আগন্তুকের কাঁধে।
আগন্তুক হতভম্ব হয়ে গেলো। তারাতাড়ি করে কুয়াশাকে বিছানায় শুয়ে দিয়ে কুয়াশাকে বার কয়েক ডাকলো কুয়াশা উঠলো না।
” শিট! ড্যামিট! আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাই নি। আ’ম সরি কুয়াশা। জাস্ট নিজের রাগটাকে কন্ট্রোল করতে পারি নি। কিভাবে কন্ট্রোল করবো বলো তুমি অন্য ছেলের সাথে আমি কল্পনাতে ও ভাবতে পারি না। সেখানে তুমি… এর শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে আমি তোমাকে কঠিন শাস্তি দিবো ”
আগন্তুকটা অন্ধকার রুমটায় রেখে চলে গেলো। সিরির দিকটায় কেউ নাই। নিচে বড়রা বসে গল্প করছে। হলুদের অনুষ্ঠান ছাদে আয়োজন করা হয়েছে। ছাদে পা রেখেই চারিদিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিলো তুষার। সকলে ছাদে মজা করছে লাউডস্পিকারে জোরে গান বাঝচ্ছে। বাচ্চারা হইচই বাধিয়ে দিয়েছে। স্ট্রেজে বর-কনে কাপল ডান্স করছে।
বড়রা হলুদ মাখিয়ে ড্রাইংরুমে বসে গল্প জুড়ে দিয়েছে। কুয়াশার মা চাচী রান্নাঘরের দিকটা সামলাচ্ছে।
তুষার কে নিচ থেকে ওপরে আসতে দেখে মেঘা এগিয়ে এসে বলল
” তুষার ভাইয়া আপনি তো নিচ থেকে আসলেন কুয়াশা কে দেখেছেন? ”
তুষার গম্ভীর কন্ঠে বলল ” না ”
মেঘা চিন্তিত হয়ে বলল ” কোথায় যে গেলো মেয়েটা? এদিকে ওর আর আমার ডান্স পারফর্ম আছে। কি করি বলুন তো? ”
” খুঁজে আসো নিচে থেকে। আমি আসার সময় ওতোটা খেয়াল করি নাই। ”
” আচ্ছা আপনি একটু এদিকটা ম্যানেজ করেন ভাইয়া আমি ওকে খুঁজে আনছি ”
তুষার ছোট করে বলল ” হুম ”
মেঘা লেহেঙ্গা উঁচু করে এক ছুটে নিচে চলে গেলো কুয়াশা কে খুঁজতে। খুঁজতে খুঁজতে কুয়াশার রুম অন্ধকার দেখে লাইট জ্বালিয়ে দেখলো কুয়াশা সম্ভবত ঘুমিয়ে গেছে। মেঘা রেগে গেলো। কুয়াশাকে কয়েক বার ডাকলো কুয়াশা উঠলো না। মেঘার কপাল কুঁচকে গেলো। এতো তারাতাড়ি কিভাবে এতো গাঢ় ঘুম হতে পারে। মেঘা কুয়াশার মাথায় হাত দিলো না জ্বর আসে নি। আরো কয়েকবার ডাক দিতেই কুয়াশা পিটপিট করে চোখ খুললো। মেঘাকে দেখে হন্তদন্ত হয়ে উঠে বসে হাঁপালো। মেঘা রেগে বলল
” তুই না বললি এখনই ওয়াসরুম থেকে আসছিস এসে ঘুমিয়ে পরলি? আমাদের যে ডান্স পারফরম্যান্স আছে সেটা কিভাবে ভুলে গেলি? ”
কুয়াশা ভয়ার্ত চোখে মেঘার দিকে তাকিয়ে বলল
” কি বলছিস? আমি কখন ঘুমালাম? আমি তো… ”
” তুই কি? ”
কুয়াশা মেঘাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলে বলল
” ঔ লোকটা ঔ লোকটা অন্ধকারে এসে আমার মুখ চেপে ধরেছিল। ”
কুয়াশার এমন আচমকা কান্নায় মেঘা অবাক না হয়ে পারলো না। কান্নার জন্য কুয়াশার কথা বুঝতে পারলো না। মেঘা অবাক গলায় বলল
” কি হয়েছে এভাবে কাঁদছিস কেনো? আগে পানি খেয়ে শান্ত হয়ে বল ”
কুয়াশা এক নিঃশ্বাসে গ্লাসের পানি টুকু শেষ করে।
” এবার বল কি হয়েছে? ”
” আমি ওয়াসরুম থেকে বের হতেই দেখলাম পুরো রুম অন্ধকার লাইট জ্বালিয়ে গিয়েছিলাম। তারপর কেউ এসে আচমকা আমার গলা চে’পে ধরে। তারপর কি সব বলল আমাকে স্ট্রেজে অন্য ছেলের সাথে ডান্স করতে দেখে তার খুব কষ্ট হয়েছে। তারপর কি যেন হলো জ্ঞান হারালাম ”
মেঘা চিন্তিত হলেও কুয়াশাকে বুঝতে না দিয়ে হেসে বলল
” তুই ও না পাগল হয়ে গেছিস দেখ ক্লান্ত হয়ে হয়তো ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখেছিস এসব আজগুবি চিন্তাভাবনা বাদ দিয়ে চল ডান্স করবো ”
” আমি ডান্স করবো না রে ভালো লাগছে না ”
” তুই স্বপ্নটা দেখে ভয় পেয়ে গেলি না-কি? ”
” ওটা স্বপ্ন নয় সত্যি ছিল আমি স্পষ্ট দেখেছি বিশ্বাস কর ”
” আচ্ছা বিশ্বাস করলাম এবার চল ”
” বললাম না ভালো লাগছে না ”
” তুই তো ডান্স নিয়ে এক্সাইটেড ছিলি এখন ভালো লাগছে না বললে হবে? আচ্ছা চল ডান্স করতে হবে না বসে থাকিস। বরের বোন এভাবে রুম বন্ধ হয়ে থাকলে লোকে তো সন্দেহ করবে ”
কুয়াশা ছাদে এসে পিছনে সিটে একা একা চুপ করে বসে রইলো। মাথায় তখনকার কথাটা কিছুতেই মাথা থেকে সরছে না। তার ওপরে গান আর কান্না করার ফলে মাথা ব্যথায় যেনো ছিঁড়ে যাবে মনে হচ্ছে।
” তুই ডান্স করলি না কেনো? ”
কুয়াশা চমকে পাশ ফিরে ঈশানকে প্রশ্নাতক চোখে তাকিয়ে থাকতে আবিষ্কার করলো। কুয়াশা বলল
” এমনি মাথা ব্যথা করছিল তাই ”
ঈশান কুয়াশার পাশে বসে বলল
” ওহ। মেডিসিন নে। আমি চলে যাবো এখন ”
” আর রাহুল, অনু ঔ দুইটা কই? ”
” চলে গেছে ”
” আচ্ছা সাবধানে যা তাহলে আর কাল তারাতাড়ি রেডি হয়ে আসিস আর শোন উমা কে নিয়ে আছিস ”
ঈশান রেগে কুয়াশার দিকে তাকালো। কিছু বলতে যাবে তার আগে পিছন থেকে কুয়াশার নাম ধরে কেউ ডেকে উঠলো। ঈশান সহ কুয়াশা পিছনে ফিরে দেখলো তুষার গম্ভীর হয়ে তাকিয়ে আছে। কুয়াশা বলল ” জি ”
” নিচে বড় মনি ডাকছে ”
” আচ্ছা ”
কুয়াশা ঈশানের দিকে তাকিয়ে বলল
” তুই তাকিয়ে আছিস কেনো? চল। আর যেটা বলছি সেটা মাথায় রাখবি ”
” আমার এক্সকে নিয়ে টানাটানি করছিস কেনো বুঝলাম? ”
” তোর ওতো বোঝা লাগবে না ”

[চলবে ইনশাআল্লাহ…]

#প্রেমরোগ-২
#তাসনিম_তামান্না

কুয়াশা থ হয়ে তুষারের দিকে তাকিয়ে আছে। কাকতালীয় ভাবে কুয়াশা ও তুষার কালো রঙের ড্রেস পড়েছে। পাশাপাশি দাঁড়ালে যে কেউ-ই কাপল ভেবে বসবে। কুয়াশার এতে নিজেই অস্বস্তি বোধ করছে। ভেবেছিল বিয়ে বাড়িতে সকলে লাল রঙের পড়ে ভেবেই কুয়াশা কালো রঙের গর্জিয়াস থ্রি পিচ টা চুস করছিল। এভাবে যে তুষারের কালো পাঞ্জাবির সাথে মিলে যাবে জানলে কস্মিনকালেও পড়তো না। এদিকে অনু কুয়াশার কানে কানে ফাইজলামি করে বলল
” তুই কি কনের ভাইয়ের সাথে প্রেম শুরু করলি না-কি রে এভাবে মিলিয়ে কাপল ড্রেস পড়েছিস মনে হচ্ছে ব্যপার কি বলতো? ”
ঈশান, রাহুল ও মজা নিতে লাগলো। কুয়াশা অস্বস্তিতে গাঁট হয়ে গেলো। এসব কথা তুষারের কানে গেলে আরো অস্বস্তিতে পড়বে ভেবে রাগী চোখে সকলের দিকে তাকালো। মেঘার দিকে চোখ যেতেই দেখলো মেঘা মিটমিট করে হাসছে। মুহুর্তেই বুঝে গেলো এটা মেঘার কারসাজি। মনে মনে রাগে ফেটে পড়লো। কুয়াশা মনে মনে বলল
” একবার জাস্ট একবার তোকে একা পায় তার পর তোকে মজা বুঝাবো শ-য়-তা-ন মেয়ে ”
মেঘার হাসি দেখে কুয়াশার গা জ্বলে যাচ্ছে। নিজেকে দমাতে না পেরে কুয়াশা বলল
” মেঘা একটু সাইডে আয় তো ”
মেঘা চোখ বড়বড় হয়ে গেলো বলল
” সাইডে যাবো কেনো এখানেই বল ”
কুয়াশা চোখ রাঙালো। সাইডে এসে বলল
” তুই এসব করছিস না আমি ভালো মতো বুঝতে পারছি ”
মেঘা অবাক হওয়ার ভান করে বলল
” ওমা আমি আবার কি করলাম? ”
” তুই তুষার ভাইয়া কে বলছিস কালো ড্রেস পড়ে আসতে ”
” পাগল তুই? আমি বলবো ভাইয়ারও পড়ে আসবে? আর তুষার ভাইয়া কে তুই ভাইয়া ডাকছিস কেনো? আজব! ”
” চুপ। ভাইয়া ডাকবো না তো কি ডাকবো?
” কেনো ওগো, হ্যাগো বলে ডাকবি। বাই দ্যা ওয়ে তুই আর ভাইয়া কি কালো রঙের ড্রেস পড়ে একসাথে শোক দিবস পালন করছিস”
” দেখ মেজাজটা গরম করে দিয়েছিস। আর একদম শাক দিয়ে মাছ ডাকবি না। তুই বাসাই চল তারপর তোকে দেখে নিচ্ছি ”
মেঘা শুকনো ঢোক। কথাটা বলে কুয়াশা তুতুলের পাশে গিয়ে বসলো।
কুয়াশা বাবারা দুই ভাই। কুয়াশার বাবা কৌশল চৌধুরী। কৌশল চৌধুরী দুই ছেলেমেয়ে কুশান চৌধুরী আর কুয়াশা জাহান। কুশানের বিয়ে হয়ে গেছে পাখি সাথে বিয়ের তিন বছর হতে চলল পাখি প্রেগন্যান্ট। প্রেগন্যান্সির ৫ মাস চলছে। চাচা মনির চৌধুরী। মনির চৌধুরীর ও দুই ছেলেমেয়ে মেঘ চৌধুরী আর মেঘা জাহান। মেঘ একজন পুলিস ইস্পেক্টর। কুয়াশার মা কেয়া গৃহীনি মেঘার মা মুন্নি ও গৃহীনি। মেঘের-ই আজ বিয়ে তুতুলের সাথে। তুতুল আর তুষার ভাই বোন। কুয়াশার বাবা আর তুষারের বাবার বন্ধুত্বর জন্য আজ দুই পরিবার আত্মীয় সম্পর্কে আবদ্ধ হলো।
” অনু তুই কি জানিস আজ তোকে পেত্নীর মতে লাগতেছে? ”
অনু রেগে যেতে গিয়েও দাঁতে দাঁত চেপে বলল
” আমার জানার দরকার নাই তুই জানলেই চলবে ”
রাহুল ঈশানকে টেনে বলল
” ঈশান তুই-ই বল আমি কি কোনো ভুল বলছি? ”
” ঠিক কইছিস আমার দুপাশের দুই ভুতনি ”
উমা চুপচাপ বসেছিল। ঈশানের খোঁচা মারা কথায় ভ্রু কুঁচকে বলল
” তোমাদের তো চোখ না চুলা তাই ভালো কিছু তোমাদের সহ্য হয় না ভালো জিনিস ও তোমরা খারাপ দেখ ”
অনু বলল ” ঠিক বলেছ উমা। চলো তো অন্য দিকে যায় এখানে বসে থাকলে শুধু মেজাজ গরম ছাড়া কিছুই হবে না ”
মেঘ আর তুতুলের বিয়ে পড়ানো শেষ হতে। মেঘ, তুতুল, কুশান, মেঘা, কুয়াশা, তুষার এক টেবিলে খেতে বসলো। পাখি প্রেগন্যান্টসির জন্য আগে খেয়ে নিয়েছে। কুয়াশার একপাশে মেঘা আর অন্য পাশে তুষার বসেছে। কুয়াশা তুষারের সামনে কেমন লজ্জা অস্বস্তি বোধ করছে। খাবার নিয়ে নাড়াচাড়া করতে দেখে কুশান বলল
” কি হয়েছে বাবুইপাখি খাচ্ছিস না কেনো? ”
” এই তো ভাইয়া খাচ্ছি ”
তুষার নিজের মতো খেয়ে যাচ্ছে। তুষার খেয়ে উঠে গেলো সবার আগে। তুষার চলে যেতেই কুয়াশা যেনো হাফ ছেড়ে বাচলো এতোক্ষণ যেনো দমটাও ঠিক মতো নিতে পারছিল না। তুষার চলে যেতেই কুয়াশা ভেবেছিল তুষার চলে গেছে এভাব ভালো ভাবে খাবে কিন্তু হলো না কিছু-ই খেতে পারলো না একটু খেতেই কেমন বমি বমি ভাব চলে এলো। আর খেতে না পেরে উঠে ওয়াশরুমে চলে গেলো। ওয়াশরুম থেকে এসে ওয়ারেন্স জুস খেলো। জুস খেতে মেঘার লজ্জা মাখা রক্তিম মুখের হাসি দেখে ভ্রু কুঁচকে গেলো। মেঘার দৃষ্টিটি লক্ষ করে তাকাতেই মেঘের ফ্রেন্ড রিদ ভাইয়া কে দেখতে পেলো। ব্যপারটা বুঝতে পেরে কুয়াশার মুখে হাসি ফুটে উঠলো। বিরবির করে বলল ” আমাকে না জানিয়ে এসব হচ্ছে? তোর ব্যবস্থা করছি দাড়া ”
মেঘার দিকে এগোতে যাবে তখনই একটা ছেলে কুয়াশার সামনে এসে বলল
” হাই! আমি সোহেল ”
কুয়াশা ছেলেটাকে চিনে না। কমিউনিটি সেন্টারে অনেক আত্নীয় স্বজনকেই চেনে না। তবুও ভদ্রতার জন্য মুখে হাসি এনে বলল
” হ্যালো! ”
” আপনার নাম কি মিস. ”
” কুয়াশা জাহান ”
” নাইস। আপনি আর আপনার নাম ”
কুয়াশার সোহেলের দিকে কোনো মন নেই তার দৃষ্টি মেঘার দিকে
” থ্যাংকিউ ”
” বাই দ্যা ওয়ে আপনি বর – কোণের কি হন? ”
কুয়াশার হাতে টান পড়লো। কুয়াশা চমকে তাকালো। তুষার শান্ত চোখে তাকিয়ে আছে। কুয়াশা শুকনো ঢোক গিলে বলল
” হাত ধরে টানাটানি করছেন কেনো? ”
” এখানে একা কি করছো? ”
” একা কোথায়? সবাই ই তো আছে ”
” হ্যা তাছাড়া আমিও আছি তুষার ভাই ”
” হ্যাঁ সেটা তো দেখতেই পারছি। চল আমার সাথে ”
” ওনি থাকুক না এখানে। প্রবলেম কোথায়? ”
” সেটা তোমারকে নিশ্চয়ই জবাবদিহি করতে হবে না সোহেল ”
সোহেল চুপসে গেলো। তুষার কুয়াশাকে নিয়ে সেন্টারের বাইরে দিকে হাঁটা দিলো। কুয়াশা চোখ বুলিয়ে দেখলো কারোরই তাদের দিকে খেয়াল নাই।
” হাতে ব্যথা পাচ্ছি ”
” যায় আসে না ”
” যায় আসে না তো হাত ধরেছেন কেনো? ”
” সেটার রাইট নিশ্চয়ই আমার আছে ”
কুয়াশা দমে গেলো।
কুয়াশা তুষারের দিকে কেউ খেয়াল বা করলেও কুশান আর পাখি ঠিকি খেয়াল করেছে। কুশান যেতে নিলেই। পাখি কুশানকে আটকে দিয়ে বলল
” কোথায় যাচ্ছো? ”
” আসছি ”
” কেথাও যেতে হবে না এখানে বসো ওদের ব্যপারটা ওদে বুঝতে দাও ওদের মধ্যে না ঢোকায় শ্রেয় ”

চলবে ইনশাআল্লাহ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here