প্রেমরোগ-১৬,১৭

0
622

#প্রেমরোগ-১৬,১৭
#তাসনিম_তামান্না
১৬

দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষ করে কুয়াশা মেঘা পাশাপাশি শুয়ে ফোন দেখছে। মেঘা ফোন রেখে শব্দ করে শ্বাস নিতে নিতে বলল
” কুয়াশা আমার না দম বন্ধ হয়ে আসছে ”
কুয়াশা ফোন রেখে ভয়ার্ত চোখে বসে তাকিয়ে বলল
” এই তো এখন ভালো ছিলি। কি হলো? খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে? দাড়া সবাইকে ডাকি ডক্টরের কাছে নিয়ে যেতে হবে তোকে ”
কুয়াশা কেঁদে দিবে এমন অবস্থা। কুয়াশা যেতে নিলে মেঘা কুয়াশার হাত ধরে থামিয়ে। বলল
” এটা হচ্ছে প্রেমরোগ বুঝলি এরোগের একমাত্র ঔষধ রিদ ”
কুয়াশা রেগে গেলো। সে এতোক্ষণ ভয়ে ম র তে ছিল। আর মেঘা কি না মজা করছে। কুয়াশা রেগে বালিশ দিয়ে মেঘাকে মে রে বলল
” দূর হ তুই আমার চোখের সামনে থেকে জানিস কত ভয় পেয়েছিলাম সবসময় মজা না? ”
মেঘার হাসি যেনো থামছেই না।
” একদম হাসবি না মুডটাই নষ্ট করে দিলি।
মেঘা ভাব নিয়ে বলল
” আমার মুড নষ্ট করতে খুব ভালো লাগে ”
কুয়াশার বিরক্ত চোখে তাকালো কিছু বলল না
মেঘা উঠে বসে কুয়াশাকে জড়িয়ে ধরে বলল
” তুই যে আমাকে এতো ভালোবাসিস এ্যাকটিং টা না করলে তো জানতেই পারতাম না ”
কুয়াশা ভেংচি কেটে বলল ” কে বলেছে আমি তোকে ভালোবাসি? আমি বলেছি? ”
” না বলিস নি কিন্তু এই যে উতলা হলি এটাই ভালোবাসা ”
” এহ আইছে ভালোবাসা নিয়ে পিএইচডি করে ফেলছিস যেনো ”
” ইয়েস। ভালোবাসলেই পিএইচডি করা হয়ে যায় ”
” তুই কিভাবে সিউর তুই রিদ ভাইয়া কে ভালোবাসিস এটা প্রেম ও হতে পারে ”
” প্রেম সহজে ভুলে যাওয়া যায় কিন্তু ভালোবাসা ভোলা যায় না। ভালোবাসায় অনুভূতিরা কাজ করে
” তোর কাজ করে? ”
” ওয়াভিয়েসলি ”
” বাহ! ভালো তো তাহলে বিয়ে করে ফেল ”
” করবো তো রিদ কে আমার ভালোবাসার জা লে ফেলি ”
” এটা ওয়ান সাইড লাভ। তোর কি মনে হয় তুই যেটা বলছিস সেটা পারবি? দেখ জোর করে কিছু হয় না ”
” হুম দেখা যাক কি হয় ”
” আর সারাক্ষণ রিদ রিদ করে আমার মাথা খা স না ”
” তা হয় তো কি করিস? ”
” জাস্ট ফিলিংস টা বোঝানোর চেষ্টা করি তোকে ”
” যাকে নিয়ে ফিলিংস তাকে বোঝালেই হবে আমাকে বুঝিয়ে কি করবি ”
” তুই জানিস তুই আনরোমান্টিক তুষার ভাইয়া যে তোকে নিয়ে কি করবে ”
কুয়াশা রেগে বলল ” সবসময় আজাইরা কথা বলিস কেন? থাক তুই তোর সাথে থাকলে মেজাজ ঠিক থাকবে না আমার ”
” হ্যা হ্যা যা দূর হ হার্ডলেস মেয়ে একটা ”
মেঘার কথাটা শুনেও কুয়াশা কোনো রিয়াক্ট করলো না মাথায় ঘুর ঘুর করতে লাগলো মেঘার কথা গুলো। কুয়াশা ড্রাইংরুমের সোফায় বসে ভাবনায় মশগুল হয়ে গেলো ” আসলেই কি আমি হার্ডলেস? তুষারকে নিয়ে কি কোনো অনুভূতিরা কাজ করে না আমার। কিন্তু ওনি দূরে গেলে আমি মিস করি এটা কি ভালোবাসা? ওনার হাসি, রাগ সব কিছু ভালো লাগে এটা ভালোবাসা? উহুম এটা ভালোলাগা তাহলে সত্যি আমি হার্ডলেস? আমার মনে কি ভালোবাসা নাই। কিন্তু আমি যে ভালোবাসি সবাইকে ওগুলো কি? দূর এসব ভেবে মাথা গুলিয়ে ফেলছি ”
দুপুরে যে যার রুমে রেস্ট নিচ্ছে কুয়াশা বসে রইলো একা। কিছুক্ষণ পর তুষার নিচে এসে কুয়াশা কে দেখে বলল
” চা বানিয়ে খাওয়াও তো ”
” এই দুপুরে চা খাবেন? ”
” হুম মাথা ধরেছে ”
কুয়াশা চলে গেলো কিচেনে। এখানে কোথায় কি আছে কুয়াশা জানে না খুঁজে পেতে একটু বেগ পেতে হলো। তুষার রান্নাঘরে দরজায় হেলান দিয়ে বুকে হাত বেঁধে দাড়িয়ে কুয়াশার দিকে তাকিয়ে আছে। কুয়াশা আনইজি লাগছে কুয়াশা মৃদুস্বরে বলল ” আপনি গিয়ে বসুন আমি চা দিচ্ছি ”
তুষার তীক্ষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল
” তুমি আদেও চা বানাতে পারো তো? ”
কুয়াশা ভ্রু কুঁচকে বলল ” আমি এতোটাও অপকর্মা নয় যে চা বানাতে পারবো না ”
” তাহলে আমি থাকলে সমস্যা কি? ”
কুয়াশা রাগ সামলিয়ে বলল ” থাকুন। আপনার ভালোর জন্য ই বলছিলাম ”
কুয়াশা চুপচাপ চা বানানোয় মনোযোগ দিলো। তুষার কুয়াশার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। কুয়াশা সেটা দেখে বলল ” এখানে এসে দাড়িয়েছেন কেনো আবার ”
তুষার ত্যাড়া ভাবে উত্তর দিলো ” কিচেন-রোমাঞ্চ করতে এসেছি বউয়ের সাথে কোনো সমস্যা? ”
কুয়াশা ফ্যালফ্যাল করে তুষারের দিকে তাকিয়ে বলল ” মানে ”
” মানে বুঝো না প্রাক্টিকালি করে দেখিয়ে দিতে হবে”
কুয়াশা চোখ বড়বড় করে বলল ” না না সেটা বলি নি… ”
তুষার বিরক্ত হয়ে কুয়াশাকে থামিয়ে বলল ” তুমি কি বলতে চাইছিলে বা বলতে চাইছ আপাততঃ শুনতে চাইছি না। চা নিয়ে রুমে আসো তোমার সাথে ইনপ্টেন কথা আছে ”
কুয়াশা শুকনো ঢোক গিলে বলল ” রুমে কেনো? এখানেই বলুন। ”
তুষার এবার তীক্ষ দৃষ্টিতে শান্ত কন্ঠে বলল
” কেনো রুমে গেলে কি সমস্যা তোমাকে আমি খে য়ে ফেলবো? ”
কুয়াশা তুষারের দৃষ্টি দেখে মনে হলো এখনি ও ভ্যানিস হয়ে যাবে। দ্রুত কন্ঠে বলল ” না না কোনো সমস্যা নাই আপনি যান আমি আসছি ”
তুষার গটগট করে চলে গেলো। কুয়াশা যেনো এতোক্ষণে জমিয়ে রাখা শ্বাস ফেলে হাফ ছেড়ে বাচলো। এতোক্ষণে ঠিক মতো শ্বাস নিতেও পারছিল না। চা কাপে ঢেলে তুষারের রুমে নক করে বলল ” আসবো? ”
” হুম ”
তুষার চোখ বন্ধ করে সোফায় শুয়ে ছিলো কুয়াশা সোফারা সামনে টি-টেবিলে চা রেখে বলল
” নিন খেয়ে দেখুন আমি চা বানাতে পারি কি না ”
তুষার উঠে বসে বলল ” তোমার চা তুমি আগে টেস্ট করে বলো কেমন হয়েছে ”
” আমি কেনো খাবো? ”
” আমি চলে আসার পর তুমি কোনো কারসাজি করেছো কি না? বি ষ টিষ ও মিশিয়ে দিতে পারো ”
কুয়াশার মন কেঁদে উঠলো ‘ সবাই এতোটাই খারাপ ভাবে তাকে ‘
কুয়াশা তুষারের কাপ থেকে একচুমুক চা খেয়ে দৃষ্টি নত রেখে বলল ” আমি এতোটাও খারাপ নই যে মানুষকে মে রে ফেলবো ”
তুষার কুয়াশার দিকে তাকিয়ে কাপে চুমুক দিয়ে বলল
” জানি তো তা বলো তোমার বানানো চা তোমার কেমন লাগলো ”
কুয়াশা মুখ ঘুরিয়ে বলল
” জানি না ”
” আমার পাশে এসে বসো ”
” না আমি এখানেই ঠিক আছি ”
” ভয় পাচ্ছো আমাকে? ”
কুয়াশা জেদ করে তুষারের পাশে বসে বলল
” ভয় পাবো কেনো? আপনি বাঘ নাকি ভাল্লুক? ”
তুষার চা-টা শেষ করে কুয়াশার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো। কুয়াশা চমকে বলল
” কি করছেন? ”
” মাথা টিপে দাও ”
কুয়াশার কেমন লাগছে। নার্ভাস? তবুও কাপা হাতে তুষারের মাথা টিপে দিতে লাগলো।
” আপনি কিছু বলতে চাইছিলেন ”
” হুম। মেঘা আর রিদের মধ্যে কি চলে? আমি জানি তুমি জানো তাই লুকিয়ে লাভ নেই ”
কুয়াশা ভয় পেলো।

চলবে ইনশাআল্লাহ

#প্রেমরোগ-১৭
#তাসনিম_তামান্না

বিকালের দিকে খবর পেলো গ্রামে মেলা হচ্ছে। মেলার কথা শুনেই কুয়াশা, মেঘা, তুতুল লাফিয়ে উঠে যাবে বলে। পাখির ও যেতে ইচ্ছে করছিল কিন্তু বাদ সাধে কুশান এই অবস্থায় মেলায় যাওয়া ঠিক না অঘটন ঘটতে সময় লাগবে না। পাখির মন খারাপ হলেও নিজেকে নিজে বুঝালো। তুষার, মেঘ, মেঘা, কুয়াশা, তুতুল মেলায় গেলো। তখন সন্ধ্যা নামছে ধরনিতে। রংবেরঙের কৃত্রিম আলো জ্বালিয়ে দিচ্ছে। মরিচবাতিগুলো বিভিন্ন সেডের হচ্ছে। কুয়াশার মেলায় ডুকতেই রেশমি চুড়িগুলোর দিকে মন টানলো। নেড়েচেড়ে চুড়ি দেখলো হাতে পড়লো না। তুষার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো।
” নাও লালটা তোমার হাতে ভালো লাগবে ”
তুষার নিজের হাতে কুয়াশাকে লাল রঙের চুড়ি পড়িয়ে দিলো। ফর্সা হাতে লাল ফুটে উঠেছে। হাত নেড়ে চুড়ির ঝনঝন শব্দ শুনে কুয়াশার মুখে হাসি ফুটে উঠলো। মেঘা নীল রংয়ের চুড়ি নিলো। তুতুলও ওদের দেখাদেখি করে সবুজ রঙের চুড়ি নিলো। কুয়াশা পাখির জন্যও চুড়ি নিলো। রাতের মেলায় লোকজনের সমাগম বাড়তে লাগলো। টুকটাক আরো অনেক কিছু কিনলো ওরা। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো বেবিদের খেলনাও কিনলো বেশ কয়েকটা। মেঘ বলল
” পাগল হয়ে গেছিস? বেবিদের খেলনা আমরা দোকান থেকেও কিনতে পারবো শুধু শুধু এতো পথ বয়ে নিয়ে যাওয়া ”
তুতুল বলল ” তুমি চুপ করো তুমি এসব বুঝবে না ”
” হ্যাঁ তোমরা তো বুঝদার কমিটির লিডার ”
মেঘা বলল
” ভাইয়া আমরা এখন ঝগড়া করার মুডে নাই তোকে পড়ে দেখে নিবো ”
মেলায় নাগরদোলা, আর নৌকাদোলা উঠেছে। মেঘ বলল ” চল নাগরদোলায় উঠবো ”
কিন্তু মেঘা, কুয়াশা যেতে রাজি হলো না। মেঘ বলল ” মেঘা কে যেতে হবে না আগের দিনের মতো অসুস্থ হয়ে যাবে কুয়াশা তুই যাবি ”
কুয়াশা যেতে না রাজ তবুও মেঘের জোড়াজুড়ি তে বাদ্ধ্য হয়ে যেতে হলো। নাগরদোলা উপরে উঠতেই কুয়াশা নিচের দিকে তাকালো মাথা ভনভন করে ঘুরে উঠলো। তুষার পাশে বসে ছিল। তুষারের হাত খামছে ধরলো নাগরদোলা উপরে নিচ উঠানামা করতে লাগলে কুয়াশা, তুতুল ভয়ে চিৎকার দিলো। কুয়াশা ভয়ে হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে তুষারের বুকে মাথা রাখে চোখ বন্ধ করে রইলো। তুষারও কুয়াশা কে দুহাতে আগলে নিলো। নাগরদোলায় চেচামেচি করছে কেউবা ভয়ে কেউবা আনন্দে এক্সাইটমেন্টে। নাগরদোলা থেকে নেমে কুয়াশা টলমল পায়ে হাঁটতে লাগলো। তুষার এসে ধরলো কুয়াশাকে বলল
” কি হচ্ছে? মাথা ঘুরছে ”
” হুম একটু ”
লেবুর পানির দোকানের একটা চেয়ারে কুয়াশাকে বসালো। মেঘা মজা করে বলল
” কি রে কেমন মজা করলি? যঘন্য এটা ফ্যান্টান্সটি কিংডমের রাইডের মতো ভ য়া নক ”
মেঘা হেসে বলল ” তোর চেচানো দেখেই বুঝেছি ”
” শ য় তা ন হাসবি না একদম ”
সবাই লেবুর শরবত খেলো। বাসায় ফেলার সময় সকলের জন্য বেশ অনেকগুলোই কদবেল কিনলো।
বাসা ক্লান্ত হয়ে ফিরে ফ্রেশ হয়ে কদবেল খেতে বসলো। পাখিও টক কদবেল দেখে জ্বিবে পানি চলে এলো। কুশান এবারও বাদ সাধলো
” এগুলো বাইরে থেকে মাখানো কি না কি দিয়েছে তোমাকে খেতে হবে না ”
পাখি এবার রেগে বলল ” সব কিছুতেই তোমার না তুমি চুপ থাকো এটা আমার ফেবারিট এটা আমি খাবোই কোনো বারণ শুনবো না ”
কুশান চোখ মুখ অন্ধকার করে বসে রইলো। কুয়াশা ভাইয়ের অবস্থা দেখে বলল ” এটা আমাদের সামনেই মাখিয়েছে ওনার হাতে গ্লাফস ও ছিল। তুমি এতো চিন্তা করো না কিছু হবে না ”
কুশান কিছু বলল না পাখির দিকে তাকিয়ে রইলো পাখি বাচ্চাদের মতো মজা করে খাচ্ছে আর খিলখিল করে হাসছে ওদের আনা খেলনা গুলো দেখে। কুশান ও হাসলো। ভালোবাসা মানুষের খুশির জন্য কিছু জিনিস মেনে নিতে হয়। তাকে তার মুখের প্রাণ খোলা হাসিটা দেখে মনপ্রাণ জুড়িয়ে যায়।
কুশান পাখির প্রেমের বিয়ে প্রথমে সকলে অমত জানেও পরে ছেলেমেয়ে মুখ দেখে মেনে নিয়েছে। পাখিও লক্ষি মেয়ে বিয়ে তিন বছরেও না শাশুড়ী ননদদের সাথে কোনো রকম খারাপ ব্যবহার বা ঝগড়াঝাটি রেকর্ড নেই। খারাপ পরিস্থিতি সবসময় সামলিয়ে এসেছে। শাশুড়ী রাগের মাথায় বকলেও পাখি কখনো মুখের ওপরে কথা বলে নি। রাগ কমে গেলে শাশুড়ীই এসে আমার নিজের ভুলের জন্য মাফ চেয়ে নেই অথবা পাখির নিজের ভুলের জন্য শাশুড়ী কাছে মাফ চেয়ে নেয়। রাগ, অভিমান, সব ভালো খারাপ মিলেই সম্পর্ক পরিবার। পাখি যখন প্রেগন্যান্ট এর পর থেকে যখন মোটা হতে লাগলো তখন বড্ড মন খারাপ করে কুশান কে বলে ছিল
” শোনো আমি দেখতে খারাপ হয়ে যাচ্ছি বলে কি তুমি আমাকে ভালোবাসা ও কমিয়ে দিবে? ”
কুশান মজা করে বলে ছিল ” ভালোবাসা কমিয়ে দিবো না আরেকটা বিয়ে করবো ”
সে কথা শুনে পাখি কাঁদতে কাঁদতে নাজেহাল অবস্থা পাখির অবস্থা দেখে প্রথমে কুশান হাসলেও পরবর্তীতে ভাবে এই মেয়েটা তাকে এতো ভালোবাসে? কুশান পাখির কান্না থামানোর জন্য বলেছিল ” তুমি পাগল হলে না-কি? দ্বিতীয় বার বিয়ে করলে তোমাকে করবো। তৃতীয় বার বিয়ে করলেও তোমাকেই করবো। এবার কান্না থামাও শরীর খারাপ করবে তো ”
পাখি কান্নারত ছলছল চোখে কুশানের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বলেছিল ” সত্যি তো? ”
” হুম তিন সত্যি ”
” আমি মরে গেলেও অন্য কেউকে তোমার পাশে সহয় করতে পারবো না ”
” হুঁশশ এসব কথা কেউ বলে? ”
কুশান বোঝে এই মেয়ের মধ্যে তার শত ভালোবাসা লুকিয়ে আছে।
সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনলো তুষারের বাবা আজ সন্ধ্যায় ইনপ্টেন মিটিং আছে এখনি যেতে হবে। তুষারের বাবা-মা বেরিয়ে পড়লো।
আরও দুদিন পর সকলের ঘোরাঘুরি শেষ করে আজ বাসার দিকে রওনা হবে সকলে। যে যার সিটে বসে গেলো। ছোটরা একগাড়িতে বড়রা একগাড়িতে। ছোটদের গাড়ি আগেই চলছিল সকলে হাসিমজা করছিলো। বড়দের বাড়ি স্প্রিডে বেসামাল ভাবে আগে উঠে গেলো। কুশান বলল
” আচর্য্য এভাবে কেউ চালায়? ড্রাইভার কি পা গ ল হলো না-কি? ”
মেঘ বলল ” এভাবে চালালে তো অঘটন ঘটতে সময় লাগবে না ”
কুশান ফোন দিলো কৌশলের কাছে।
” হ্যালো আব্বু? ”
” হ্যাঁ ”
” এভাবে গাড়ি চালাছে কেনো? ভালো ভানে নরমাল ভাবে চালাতে বলো ”
” গাড়ি ব্রেকফেল করেছে। কিছু কাজ দিচ্ছে না নিজের মতো চলছে ”
কুশানের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো হতভম্ব হয়ে গেলো চিল্লিয়ে বলল ” হোয়াট? ”
” কি করবো বুঝতেছি না ”
কুশান কাতর গলায় বলল ” আব্বু। কি হবে এখান ”
কৌশল বলল ” আমাদের কিছু হয়ে গেলে সবার খেয়াল তুমি রাখবে আব্বু কোনো কিছুতেই ভেঙে পড়বে না। কুয়াশা, পাখি, মেঘ, মেঘা ওদের সব দায়িত্ব তোমার দেখে রেখ ওদের ”
কুশান কেঁদে ফেললো বলল
” আব্বু এখন কি এসব বলার সময়? এভাবে বলো না প্লিজ ”
কৌশল দম ছেড়ে বলল ” বললাম না ভেঙে না পড়তে সবার দায়িত্ব তোমার। তুমি ওদের বট গাছ ”
কুয়াশা ভয়ার্ত গলায় বলল ” কি হয়েছে ভাইয়া কাঁদছো কেনো? ”
” ও গাড়ি ব্রেকফেল করেছে ”
সকলের মধ্যে কান্নাকাটি লেগে গেলো। একপ্রকার তুষার বড়দের গাড়ির পিছনে পিছনে বেশস্প্রিতেই যাচ্ছে।

চলবে ইনশাআল্লাহ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here