#প্রেমরোগ-১৮,১৯
#তাসনিম_তামান্না
১৮
চৌধুরী বাড়িতে শোকের ছায়া নেমেছে। প্রিয় জন হারানোর হাহাকার চারিদিকে গ্রাস করে আছে। কারোর চোখের পানি শুকাচ্ছে না। একদিনে অনাকাঙ্ক্ষিত চারজনের একসাথে মৃত্যু কেউই মেনে নিতে পারছে না। চোখের সামনে বিভৎস দৃশ্যকল্প ভেসে উঠছে বার বার। মেঘা পাগলামি করছে। কুয়াশা নিরবে অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছে। কে কাকে শান্ত না দিবে? এক এক জন যে ভেঙে গুড়িয়ে গেছে। কেউ নিজেকে সামলাতে পারছে না। বাড়িতে চেনাজানা আত্মীয়স্বজনের সমাগম। ছেলেমেয়েগুলোর অবস্থা দেখে তাদের চোখেও পানি। তারাও আহাজারি করছে। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটা কি না ঘটলে পারতো না? কাল থেকে কারোর মুখে কিছু টি পড়ে নি। মানুষের বিচ্ছেদ হয়। কিন্তু মৃত্যু বিচ্ছেদে মানুষ গুলোকে চাইলেও ছোঁয়া যায় না কথা বলা যায় না। আসরের নামাজের পর মাটি হয়ে গেছে চারজনের। কুয়াশা নিয়ে যাওয়ার সময় পাগলামি করলেও এখন শান্ত হয়ে বসে আছে। একদম থম মেরে যেনো সময়টা থেমে গেছে। পাখির এই শরীরে অজ্ঞান হয়ে গেছে। পাখির মা-বাবা, ভাই এসেছে। পাখিকে সামলাচ্ছে। জোর করে কয়েকবার খাইয়ে দিয়েছে এই অবস্থা না খেয়ে থাকলে আরেকটা বিপদ এসে জুড়বে। কুশান, মেঘ, মেঘা, কুয়াশার মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। মুখ শুকিয়ে একটু খানি হয়ে গেছে। আজ ওদের নামের পাশেও অনার্থ শব্দ টা জুড়ে গেলো। তিন অক্ষরের শব্দ কিন্তু কত ভারি শুনলেই বুকটা হু হু করে উঠে। সন্ধ্যা দিকে আত্মীয় স্বজনরা সকলে চলে গেছে। বাড়িতে গুটিকয়েক মানুষ ছাড়া কেউ নেই। কুয়াশা শান্ত হয়ে বসে চোখের পানি বিসর্জন দিচ্ছে। তিশা এসে কুয়াশার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল
” কাঁদলে হবে? খেতে হবে তো না হলে অসুস্থ হয়ে পড়বি তো চল উঠ খাবি ”
কুয়াশা চুপ করে রইলো। মায়ের কথা মনে পড়ছে খুব মা বকাঝকা করে খাওয়া তো। অভিমান করলে নিজেও না খেয়ে থাকতো কুয়াশা কেও খেতে বলতো না। এই তো সেদিনও তো মা বকলো আদর করলো। আর আজ নেই। জীবন কি এতোটাই অনিশ্চিত? আজ আছে তো কাল নেই। কুয়াশার মনে হলো সে মা’কে অনেক কষ্ট দিয়েছে। মায়ের কথা শুনে নি। অনেক মিথ্যা বলেছে। সব চোখের সামনে ভাসতে লাগলো। বুকের ভিতর হুহু করে উঠলো আর একটিবার কি ফিরে পাওয়া যাবে না? ভুল গুলো ভুল ই থেকে যাবে? শুধরে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই? আর মার কোলে মাথা রাখতে পারবে না? অভিমান করে থাকতে পারবে না? কেউ আর বকবে না? বাবা আর ভুল গুলো ধরিয়ে বুঝাবে না? অভিমান করে থাকলে বাবা আর খাইয়ে দিবে না? মেঘা, মেঘের নামে মামনির কাছে আর নালিশ দেওয়া হবে না। বাবাই এর কাছে আর আবদার করে খাওয়ার এনে দেওয়ার কথা বলা হবে না।কত কিছু হারিয়ে ফেললো এক নিমিশেষে। কুয়াশার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো। বসে থাকতে পারলো না ফুপিয়ে কেঁদে দৌড়ে চলে গেলো নিজের রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে ফ্যামেলি ফটো বুকে জড়িয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদলো। তিশা কয়েকবার দরজা ধাক্কা দিয়ে গেছে। কুয়াশা খুলেনি। কাঁদতে কাঁদতে ক্লান্তিতে দুচোখের পাতা এক হয়ে গেলো। তলিয়ে গেলো নিদ্রাদেশে। কিন্তু ঘুম হলো না ভেঙে গেলো ভাইয়ের আদুরে কন্ঠে বলছে
” বাবুইপাখি কি হয়েছে? দরজা খোল। বাবুইপাখি দরজা খোল। ভাইয়া ডাকছে তোকে ”
কুয়াশার চোখ লাল হয়ে গেছে। সবাইকে উপেক্ষা করতে পারলেও ভাই আর বাবা কে কুয়াশা কখনো উপেক্ষা করতে পারে না। ঢুলুঢুলু পায়ে উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিয়ে ভাইয়ের শুকনো মুখের দিকে তাকালো। কুশানের হাতে খাবারের প্লেট। কুয়াশা ছলছল চোখে তাকিয়ে বলল
” খাবো না আমি এসব কেনো নিয়ে এসেছো? ”
কুশান খাবারের প্লেট নিয়ে বেডে বসে কুয়াশাকে বসিয়ে বলল ” না খেলে শরীর খারাপ করবে যে ”
কুয়াশা বাচ্চাদের মতো জিদ করে বলল ” তাও খাবো না সবাইকে এনে দাও। ”
কুশানের খুব অসহায় লাগছে নিজেকে এতোদিন বাবা নামক বটবৃক্ষের ছায়ায় ছিল কোনো ঝড় তাদের স্পর্শ করতে পারে নি। কিন্তু আজ সে তো সবার বড় সবাই কে সামলাতে পারছে না। বাবার কথা ও রক্ষা করতে পারছে না। কুশান দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলল ” এমন করে না ময়নাপাখিটা। ভাইয়ার যে এনে দেওয়া সাধ্য নাই। পারলে এখনি এনে দিতো ”
কুয়াশা ভাইকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বলল
” এমন কেনো হলো ভাইয়া এমন হওয়ার কি খুব দরকার ছিল। ‘আব্বু-আম্মু নেই’ এই শব্দটা এতো ভারি কেনো ভাইয়া? আমার খুব কষ্ট হচ্ছে ভাইয়া ”
কুশানের চোখেও পানি চলে আসলো নিজেকে সামলিয়ে বলল ” আমরা কাঁদলে তো আব্বু আম্মুর কষ্ট হবে কাঁদে না সোনা। আমরা এভাবে থাকলে আব্বু আম্মু ই তো কষ্ট হবে। খেয়ে নে। না খেলে শরীর খারাপ করবে ”
কুশান অনেক বুঝিয়ে কুয়াশাকে খাইয়ে দিলো কয়েক লোকমা কিন্তু সেটা কুয়াশার পেটে সহ্য হলো না ওয়াসরুমে গিয়ে বমি করে সব বের করে দিলো। কুশান বোনকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। তুষার কুয়াশার রুমে এসে কুয়াশার অবস্থা দেখে বুঝলো গ্যাসটিক হয়েছে এটা না খাওয়ার ফল।
কুয়াশা ক্লান্ত অবশ শরীর নিয়ে বিছানায় শুতেই তুষার বলল ” ভাইয়া তুমি যাও খেয়ে নাও ভাবিপু কে-ও খাইয়ে দাও মেঘা খেয়েছে মেঘ কেও খাইয়ে দিও আমি এখানে আছি কুয়াশার গ্যাসটিক হয়েছে আমি মেডিসিন দিচ্ছি ”
কুশান মাথা দুলিয়ে চলে গেলো ও ও আর পারছে না শরীরটা বড্ড ক্লান্ত লাগছে। কুয়াশার বন্ধ চোখের পাতা দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। তুষার কুয়াশার পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল
” মাথা ব্যথা করছে? ”
কুয়াশা উত্তর না দিয়ে ছলছল চোখে তুষারের দিকে তাকিয়ে বলল ” আব্বু আম্মুর কাছে নিয়ে যাবেন প্লিজ ”
তুষার চুপ থেকে বলল
” কাল নিয়ে যাবো। উঠে মেডিসিন গুলো খেয়ে নাও
কুয়াশা চুপচাপ খেয়ে নিলো। তুষার ইচ্ছে করে একটা ঘুমের ঔষধ ও দিয়ে ছিল। না হলে কুয়াশা না ঘুমিয়ে কান্নাকাটি করতো। কুয়াশা ঘুমালে তুষার নিচে আসলো। কুশান মেঘ কে বোঝাচ্ছে
” না খেয়ে তুই কি চাইছিস অসুস্থ হতে? চুপচাপ খেয়ে উঠবি আমি কোনো কথা শুনতে চাইছি না। তারা কখনোই আমাদের এভাবে দেখতে চাই নি আর এখনো চাই না ”
মেঘ কুশানের গলা দিয়ে খাবার নামছে না তবুও একটু জোর করে খেলো। না খেলে তো জীবন চলবে না আর এভাবে থাকলে একে একে সকলে অসুস্থ হয়ে পড়বে তখন কে কাকে দেখবে। সবাই রাতে ঘুমালেও কুশানের নির্ঘুম রাত কাটলো। মেঘ ঘুমালেনও একটু পর পর জেগে উঠছে।
চলবে ইনশাআল্লাহ
#প্রেমরোগ-১৯
#তাসনিম_তামান্না
নতুন একটি দিন কারোর জন্য খুশির আবার কারোর জন্য দুঃখের। চৌধুরী বাড়ির সকলের ছন্ন ছাড়া অবস্থা। নাওয়া খাওয়া সব ভুলে বসে আছে। ড্রাইংরুম সকলে মনমরা হয়ে বসে ছিল। তিশা বলল
” এভাবে হলে চলবে কি ভাবে? তোরা তো ম রে যাবি। বাঁচতে হবে তো তোদের। ওরা কি ওদেরকে এভাবে দেখে খুব ভালো আছে? খাওয়া দাওয়া না চল সকালে কেউ খাস নি ”
কুশান তিশার কথায় কুয়াশা, মেঘা, মেঘ, পাখি কে ধ ম কে খাওয়াতে বসালো। খেতে বসে কারোরই গলা দিয়ে খাবার নামছে না। কুশান দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলল ” মৃ ত্যু অনিবার্য। আমাদের সবাইকে একদিন না একদিন ছেড়ে চলে যেতে হবে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে। তাই বলে কি এভাবে থেমে ভেঙে পড়লে চলবে? আব্বু আম্মু মামনি বাবাই আমাদের এভাবে কখনো দেখতে চাইতো না। তারা আমাদের কে এভাবে দেখে কষ্ট পাচ্ছে। আমরা তারা ভালো থাকবে। আমরা এভাবে থাকলে তারা কিভাবে থাকবে? আমাদের ভাগ্যে এমন ছিল তাই এমনটা হয়েছে। তাই ভাগ্যকে মেনে নিতে হবে আমাদের এভাবে বসে থাকলে চলবে না। ”
কেউ একটা কথাও বলল না কুশান সবার শুকনো মুখের দিকে তাকিয়ে আবার বলতে লাগলো
” কাল থেকে যে যার কাজে যাবি কাউ বাসায় থাকবি না কাজের মধ্যে থাকলে ভালো লাগবে। মেঘ কাল থেকে অফিসে যাবি। কুয়াশা মেঘা কাল থেকে ইউনিভার্সিটিতে যাবি সামনে এক্সাম ভালো ভাবে দিতে হবে না হলে খুব খারাপ হবে বলে দিলাম আব্বু বাবাই কষ্ট পাবে কথাটা মাথায় রাখিস ”
মেঘা বলল ” আমার খুব কষ্ট হচ্ছে ভাইয়া সবাইকে খুব মিস করছি। আম্মু বকা দিকে রাগ হতো এখন খুব কষ্ট হচ্ছে ভাইয়া ”
কুশান মেঘার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল
” সবটা মেনে নিতে হবে বোনু ”
তুষার রা নিজেদের বাড়িতে চলে গেছে। দিন যায় নতুন একটি দিন আসে…এই মাস শেষে রোজা শুরু পাখি আর তুতুল কাজে হাত লাগিয়েছে। আগের রোজা গুলোই সবটা শাশুড়িরা গুছিয়ে রাখতো বাসার বা রান্নার কাজ তেমন করতো না পাখি। তুতুল শাশুড়ীদের তেমন কাছে পেলো না। এখন তুতুল আর পাখির ই সংসার ওরা না গোছালে কে করবে। কুয়াশা মেঘা নিজেদের ঘরবন্দী করে রাখেছে। কেউ তেমন কারোর সাথে কথা বলে না। আগের মতো হাসি মাজ হয় না আর এ বাড়িতে। মানুষগুলোর সাথে যেনো সব কিছু হারিয়ে গেছে।
পাখির মা পাখিকে কাজ করতে দেখে বলল
” এই তুই কাজ করছিস কেনো? এই অবস্থায় ”
পাখি মোলায়েম কন্ঠে বলল ” কিছু হবে না তুমি গিয়ে রেস্ট নাও ”
” তুই এই অবস্থায় কাজ করবি কেনো? তোর ধিং গি ননদ দুইটা কর। নবাবের বেটির মতো ঘরে পায়ের ওপর পা তুলে বসে আছে? আর আমার মেয়ে এই অবস্থায় খেটে ম র বে? এসে তো কাজ করে দিতে পারে না-কি? ”
পাখি রেগে গেলো ” কি বলছ এগুলা? ওরা ছোট্ট কি করবে? আর আমি কেনো ওরা কাজ করবে? ”
” ছোট্ট ওরা? কুয়াশার বিয়ে হয়ে গেছে তবুও কেনো ও এখানে থাকে? আমার মেয়ের হাড় মাস জ্বালাতে? মেঘার ও বিয়ের বয়স হয়ে গেছে এতোদিনে বিয়ে হলে ওদের বাচ্চা কাচ্চা হয়ে যেতো! আর তুই কি না ওদের ছোট বলছিস ”
পাখি তার মায়ের কথায় বিরক্ত হচ্ছে খুব বিরক্তি নিয়ে বলল
” তুমি আমার সংসারে নাক গলাতে এসো না মা। আমার টা আমাকে বুঝতে দাও। আর তুমি এসেছ ঘুরবে, খাবে, চলে যাবে তুমি কেনো এসব নিয়ে কথা বলবে? ”
কুয়াশা সিরিতে দাড়িয়ে পাখির মায়ের বলা প্রতিটা কথা শুনলো। চোখ ছলছল করে উঠলো। নিজেকে সামলিয়ে কিচেনে এসে। একটা কথাও প্রতি উত্তর করলো না বলল
” ভাবিপু তুমি গিয়ে রেস্ট করো আমি দেখছি তুতুল ভাবিপু তো আছেই ”
পাখি রেগে মায়ের দিকে একবার তাকালো পাখির মা মুখ বেকিয়ে মুখ ঘুরিয়ে রাখলো। পাখি বলল
” তুই তুতুল তো কিছু ই পারিস না আমি করছি তো ”
পাখির মা বলে উঠলো ” পারে না তো শিখবে না? ওরা কি সংসার করবে না? তুই সারাজীবন এভাবে সবার জন্য গাধার খাটুনি খাটে যাবি? ”
” আহ মা তুমি যাও তো আমাদের মধ্যে কেনো কথা বলছো তুমি ”
” আমি তোর ভালোর জন্যই বলছি। এভাবে করতে থাকলে সকলে মাথায় উঠে বসবে ”
” তোমাকে আমার ভালো করতে বলছি আমি। উল্টো তুমি আমার সংসার ভেঙে দিচ্ছো। আমার সংসারে আ গু ন লাগাচ্ছো! ”
পাখির মা রেগে বলল ” তুই আমাকে এভাবে বলতে পারলি? মা’রা কখনো ছেলেমেয়েদের খারাপ চাই? আমি তোর ভালোর জন্য ব… ”
পাখি তার মাকে থামিয়ে বলল
” ব্যাস বললাম না আমার ভালো খারাপ নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না আমাকে আমারটা বুঝতে দাও ”
পাখির মা রাগে গজগজ করতে করতে চলে গেলো। পাখি বলল ” মার কথায় কিছু মনে করিস না আসলে মা একটু… আমি মার হয়ে ক্ষমা চাইছি ”
তুতুল এতোক্ষণ চুপ ছিল। পাখির কথায় তুতুল কুয়াশা একসাথে বলল ” এমন ভাবে বলো না ভাবিপু ”
কুয়াশা বলল ” তুমি গিয়ে রেস্ট করো আমরা সামলাচ্ছি ”
পাখি বলল ” মার কথায় রাগ করেছিস? ”
তুতুল বলল ” রাগ করবো কেনো? ওনি তো ঠিকি বলেছেন। আমাদের ও তো শিখতে হবে না-কি সব কি তুমি করবে না-কি? ”
” আমি করে নিবো। তোদের হাত কে টে বা পু ড়ে গেলে ব্যথা পাবি ”
কুয়াশা বলল ” কিছু হবে না তুমি যাও তো আমরা আজ তিনজন মিলে রান্না করবো ভালো না হলেও খেতে হবে বলে দিলাম ”
পাখিকে একপ্রকার জোর করে রুমে পাঠিয়ে দিলো। তুতুল কুয়াশাকে বলল
” কুয়াশা মন খারাপ করো না। আন্টি একটু অন্য রকম ”
” আরে ওসব বাদ দাও তো কি রান্না করবে সেটা বলো দাঁড়াও মেঘা কেও ডাকি ”
তুতুল, কুয়াশা, আর মেঘা মিলে ইউটিউব দেখে একপ্রকার যুদ্ধ করে আলুভাজি, বেগুন, গরুর মাংস রান্না করলো। পাখি রুমে বেশিক্ষণ থাকতে পারলো না। বার বার রান্নাঘরে এসে দেখে যাচ্ছে। ওরা সকলে মানা করলেও শুনলো না। দুপুরে সকলে খেতে বাসায় আসলে পাখি বলল
” খেয়ে বলো কেমন হয়েছে আজ কিন্তু তুতুল, কুয়শা, মেঘা মিলে রান্না করেছে ”
মেঘ বলল ” তাই না-কি বাহ! তাহলে তো এ খাবার খাওয়ায় যাবে না ”
কুয়াশা মেঘা বা তুতুল কেউ কোনো প্রতিউত্তর করলো না। কুশান খেয়ে বলল ” ভালো হয়েছে। কিন্তু তোদের রান্না করার দরকার নাই আমি কাল থেকে বুয়া আসতে বলেছি ”
কুয়াশা বলল
” তার কোনো দরকার নেই ভাইয়া আমরাই করে নিবো ”
” সেটা আমাকে বুঝতে দে ”
পাখির মা বলল ” কুশান বাবা তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিল ”
কুশান বলল ” জী বলুন ”
” আমি পাখি কে আমার কাছে নিয়ে যেতে চাই সামনে রোজার পড়ছে। আমি থাকতে পারবো না আর এই সময় মেয়েদের মায়ের দরকার হয় ”
ঘরভর্তি সকলের মুখে বিস্ময়। পাখি প্রতিবাদ করে বলল ” আমি আমার সংসার ছেড়ে যাচ্ছি না মা তোমার যাওয়ার হলে তুমি যাও ”
” তোকে নিয়ে যাবো আমি ”
” বললাম না যাবো না ”
” কুশান বাবা তুমি কিছু বলো ”
” পাখি যেহেতু যেতে চাইছে না জোর না করায় ভালো। তাছাড়া বাসার সবাই আছে ওকে দেখে রাখবো। আপনি চিন্তা করবেন না ”
পাখির মা রাগে মনে মনে গজগজ করতে লাগলো।
চলবে ইনশাআল্লাহ