আরহাম🍁#The_Innocent_Boy #Writer-ফারহানা আক্তার রুপকথা #পর্ব(৫৩)& অন্তিম পর্ব

0
1257

🍁আরহাম🍁#The_Innocent_Boy

#Writer-ফারহানা আক্তার রুপকথা

#পর্ব(৫৩)& অন্তিম পর্ব
____________________
খুব ভোরেই ঘুম ভাঙে রোহানের।আসলে ঘুমাতেই পারে নি সে। গত দু’সপ্তাহে যা কিছু ঘটছে এতে করে আর যাই হোক দু’চোখের পাতায় কারোই ঘুম ভর করবে না। রোহানের সাথে তাই হচ্ছে। বুকে জ্বলন, মনে চাপা কষ্ট আর ঠোঁটের কোণে প্লাস্টিকের হাসি। আদৌও কি এভাবে বেঁচে থাকা যায়? হয়তো যায় তাইতো সে বেঁচে আছে। আর তারা একে অপরকে ভালো না বেসেও একসাথে জীবন কাটানোর পথ পেয়েছে।আরহাম কেন আটকাচ্ছে না বিয়েটা সে তো বলেছিলো ডিভোর্স দিয়ে দিবে মৃত্তি কে। তাহলে এখন কেন মেনে নিচ্ছে সব।সে তো ভালোবাসে না মৃত্তিকে কিন্তু আমি তো বাসি। আমি কেন পাবো না তাকে ভালোবেসেও! রোহান বিছানা ছেড়ে ওয়াশরুমে ঢুকলো।মুখ-হাত ধুয়ে তৈরি হয়ে নিলো, যে করেই হোক আরহামকে এক্ষুনি বলে দিবে সে মৃত্তিকে ভালেবাসে। আর মৃত্তির বিয়ে তো মিরও তার পরিবার আমার সাথেই ঠিক করে রেখেছে। তাদের বিয়েটা একটা এক্সিডেন্ট মাত্র এটাকে এত প্রায়োরিটি দেওয়ার দরকার নেই। তিন মাসের মধ্যে তো ডিভোর্স হয়েই যাবে তারপর আমি মৃত্তি কে বিয়ে করে নিবো। হ্যা,এটাই করবো যাই আরহামকে বলি সবটা ও নিশ্চয়ই আমার কষ্ট বুঝবে, আমাকে বুঝবে,আমার ভালোবাসাটা বুঝবে। আরহাম কখনোই এমন কিছু করবে না যাতে আমি কষ্ট পাই। রোহান মনে মনে নিজেকে প্রস্তুত করে নিলো। সে আরহামকে বিয়েটা ভাঙতে বলবে। মির এখনো ঘুমুচ্ছে রোহান একবার তার দিকে দেখে নিলো। এরপর রুম থেকে বেরিয়ে সোজা আরহামের রুমের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো কড়া নাড়বে ঠিক তখনি মৃত্তির মা’কে দেখা গেল সেখানে।

– এত সকালেই ঘুম ভেঙে গেছে তোমার?(মৃত্তির মা)

-জ্বি আন্টি, এখনই ঘুম ভেঙেছে।(রোহান)

–তুমি মনে হয় আরহামের কাছে এসেছিলে। এখনও ঘুম ভাঙেনি ওদের।

–হ্যা,না মানে একটু কাজ ছিলো আরহামের সাথে।

–তোমাকে এখন পেয়ে ভালোই হলো আমিও ক’দিন ধরে ভাবছি তোমার সাথে একটু কথা বলবো। কিন্তু সুযোগ হয়ে উঠছে না। ওরা উঠতে আরো দেরি হতে পারে তুমি যদি ফ্রী থাকো একটু কথা বলতাম।

রোহান মাথা নেড়ে জানালো ঠিক আছে কথা বলুক। তারপর তারা করিডোরে এক পাশে দাঁড়ালো। এত সকালে তেমন কেউ ঘুম থেকে উঠেনি এখনও। মৃত্তির মা কিছুটা ইতস্তত করতে লাগলেন কিভাবে শুরু করবে কথা। রোহান নিজেই বলল “আন্টি,ইতস্তত কেন করছেন আমি তো আপনার মিরের মতোই তাই না!”

-হ্যা বাবা সেজন্যই একটু খারাপ লাগছে। মৃত্তির আর তোমার বিয়ের কথা আমরাই তো শুরু করেছিলাম। কিন্তু কি থেকে কি হয়ে গেলো কিছু বুঝে উঠার আগেই সব এলোমেলো হয়ে গেলো।তোমার হয়তো মন থেকেই খারাপ লাগছে, হয়তো তুমি আমাদের ওপর রেগে…..

-“কি বলছেন আন্টি এসব যা হওয়ার ছিলো তাই হয়েছে। এতে রাগ করবো কেন আপনারা তো ইচ্ছে করে কিছু করেন নি। আর যা হয়েছে সেটা একটা এক্সিডেন্ট মাত্র। তবে বিয়েটা সত্যি হয়েছে তাই আমাদের এটা নিয়ে ক্ষোভ রাখার কোন মানে হয় না।” মুখে এ কথাগুলো বললেও মন বলছে অন্যকিছু। (রোহান)

মৃত্তির মা এবার রোহান এর হাত ধরে কেঁদেই দিলেন।” তুমি জানো না বাবা কত বড় একটা বোঝা মন থেকে সরিয়ে দিয়েছো তুমি। আমি প্রত্যেক মুহুর্তে ভয় পেতাম তোমার মন থেকে কোন কষ্ট যদি বেরিয়ে আসে মৃত্তির জন্য সেই কষ্টটা তার জীবনে অভিশাপ হয়ে দাঁড়াতো। আমার মেয়েটা সুখে থাকতে পারতো না। আমি যে তোমাকে কি বলে ধন্য…..”

-“আন্টি প্লিজ এভাবে বলবেন না।এভাবে কথা বলে আমাকে পর করে দিয়েন না।” মৃত্তির মা এবার চোখের পানি মুছে রোহানের মাথা টেনে কপালে একটা চুমু খেলেন। আর মৃদু হেসে বললেন সত্যিই আমার একটা না তিনটা ছেলে । মিরহাদ,রোহান,আরহাম।

জিনিয়া ঘুম থেকে উঠেই কেমন উসখুস করছে রুম থেকে বের হতে চাইছে না। সাদনান ঘুম থেকে উঠেই জিনিয়াকে কল করেছিলো আর পাশেই ছিলো মির। প্রথমে সে ঘুমে থাকলেও সাদের কথা শুনে ঘুম ভেঙে যায় তার। তবে চুপচাপ শুনে যায় সব কথা কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তার চুপচাপ মস্তিষ্কে আগুন লেগে যায় যখন, সাদ জিনিয়াকে লাভ ইউ বলে। ওপাশ থেকেও এই কথাটাই শুনতে জোর করে। মির তৎক্ষনাৎ বিছানা ছেড়ে কোন দিক খেয়াল না করে বেরিয়ে যায় রুম থেকে আর সোজা গিয়ে ঢোকে জিনিয়ার রুমে।দরজাটা বেজানোই ছিলো সে জোরে ধাক্কা দিয়ে ঢুকেই জিনিয়ার হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে ছুঁড়ে মারে। মুহুর্তেই মোবাইলটা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। জিনিয়া মিরের চোখ মুখ দেখে ভয়ে থরথর করো কাঁপতে থাকে। অগ্নিবর্ণ চোখ দুটো যেন তাকে জ্বালিয়ে ভষ্ম করে দিবে। কিছু বলার আগেই মির জিনিয়ার হাত ধরে হ্যাচকা টান লাগায় আর জিনিয়া একদম বুকে এসে লাগে মিরের। আচমকা মির জিনিয়ার চুলের মুঠি ধরে জিজ্ঞেস করে “ভালোবাসিস ওকে “?
জিনিয়ার ঠোঁট কাঁপছে কিন্তু কিছু বলতে পারছে না। সে আবারও একই প্রশ্ন করে। এবার জিনিয়া মাথা নাড়ায় ” না সে ভালোবাসে না” মির আলগোছে হাত সরিয়ে নেয় জিনিয়ার চুল থেকে।
জিনিয়া হতবাক কি হয়েছে মিরের এতোটা রাগ!

“ওই বা** এর সাদ এর সাথে তোর বিয়ে কক্ষনো হবে না কথাটা মনে রাখিস। আমি নিজে তোর বাড়িতে বলবো আমি তোকে বিয়ে করবো। তোর ফ্যামিলি খুশি মনে মানলে ভালো নয়তো উঠিয়ে এনে করবো মনে রাখিস”বলেই মির রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।

আরহামের ঘুম ভাঙলে দেখতে পায় মৃত্তি বিছানায় নেই। দরজা লাগানো ভেতর থেকেই মানে সে ওয়াশরুমে। চোখে পড়লো মৃত্তির সেই কোমরবন্দ খাটেই পড়ে আছে। আরহাম সেটা হাতে নিতেই মনে পড়লো কাল রাতের সেই মুহুর্ত।ভালোবাসার সেই ক্ষণ, ভেসে ওঠে চোখে ল্যাম্পের আলোয় মৃত্তির লাজুক সেই মুখটা। আরহামের ঠোঁট জোড়ায় হাসির বন্যা বইছে। তবে বেশিক্ষণ টিকলো না সেই হাসি। মৃত্তির সেলফোনে পরপর আসা আট-দশটা মেসেজ কেঁড়ে নেয় সেই হাসি। চোখ মুখ জুড়ে নামে অন্ধকার চোখের তারা রক্তিম হয়ে গেছে। হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে আরহাম হাত থেকে মৃত্তির মোবাইলটা রেখে দরজা খুলে দেয়। দরজায় দাঁড়িয়ে আছে তুবা আর জিনিয়া।

-মৃত্তি কই তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে ম্যাডামকে নিয়ে আসো বড় মা হলুদ লাগাবে তোমাদের দুজনকে। হারি আপ,, (তুবা)

-“ভাবী বড় মাকে বলে দিও হলুদ লাগবে না। আমি যাচ্ছি না নিচে” বলেই সামনে দেখলো বড় মা আর মৃত্তির মা দাঁড়িয়ে আছে। আরহাম মাথা নিচু করে আবার বললো “আমি কোন হলুদ মেহেদী লাগাচ্ছি না।” তখনি মৃত্তি বের হয়ে আসে ওয়াশরুম থেকে।পায়ে এখনও ব্যাথা আছে অনেক তাই একটু খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটছে। বড় মা একবার মৃত্তি আরেকবার আরহামের দিকে তাকিয়ে বলল “উঠোনে সব সাজিয়ে এসেছি দশ মিনিটের মধ্যে বউ মা’কে কোলে করে সেখানে উপস্থিত থাকবে । চলো তুবা, জিনিয়া” বলেই ওনি পা বাড়ালেন । আরহাম থমকে আছে ভেতরটা রাগে ফেটে যাচ্ছে। ঘৃণা হচ্ছে মৃত্তির দিকে তাকাতেও। মৃত্তি হাতে থাকা তোয়ালেটা রেখে আরহামের একটু সামনে এসে দাঁড়ালো। “কি স্যার দাঁড়িয়েই থাকবেন না ফ্রেশ হয়ে আসবেন”?

আরহাম মৃত্তির দিকে একবার তাকিয়ে চলে গেলো ওয়াশরুমে।মৃত্তি চমকে গেছে সেই চাহনি দেখে।কি এমন বলে ফেললাম এভাবে কেন তাকালেন উনি! রাতে তো সব ঠিকই ছিলো এখন আবার কি হলো! মৃত্তি যখন অতশত ভাবনায় বিভোর তখন মনে হলো সে শূন্যে ভাসছে। একবার ভালো করে খেয়াল করলো হ্যা,সে ভাসছে তবে শূন্যে নয় আরহামের কোলে। মৃত্তির পায়ে ব্যাথা বলে আরহাম কোলে তুলে নিয়েছে তাকে নিচে তো যেতে হবে। মৃত্তি অপলক তাকিয়ে আছে আরহামের দিকে কেন যেন মুখটা গম্ভীর করে রেখেছে আরহাম। মৃত্তি অনেক খুঁজেও কোন কারণ বের করতে পারলো না।যথাসময়ে হলুদ এর অনুষ্ঠান শুরু হলো। বর, কনে দুজনকেই পাশাপাশি বসিয়ে বাড়ির সকল মেয়ে,মহিলারা হলুদ লাগিয়ে দিচ্ছে।পুরুষরা অনেকেই আছেন সেখানে তবে কেউ হলুদ লাগাতে এগুচ্ছে না। অনেক বলে কয়ে বড় বাবা আর মৃত্তির বাবা হলুদ লাগিয়েছেন। মৃত্তির বাবার চোখে অশ্রুকণা ভিড় করেছে। এই তো একটু হলেই গড়াবে। হয়তো মনে পড়ছে বাবা মেয়ের পুরনো সব আবেগময় দিন গুলো।মৃত্তিরও কে জানে কি হলো হঠাৎই চোখ ছলছল হয়ে উপচে পরলো জল।আরহাম বসে আছে তার কোন হেলদোল নেই। এখানে কোন হলুদ চলছে, কোন অনুষ্ঠান হচ্ছে তার সেদিকে নজর নেই। রোহান দূর থেকে দাঁড়িয়ে মৃত্তিকে দেখে চলছে। মির জিনিয়াকে দেখে চলছে জিনিয়ার পাশে সাদ দাঁড়ানো। বিয়ে বাড়ি হৈ হুল্লোড় সাথে গান না হলে কি চলে?আহনাফ জারিফ কে ইশারা করলো গান প্লে করতে তারপর সে চলে গেলো বন্ধুদের নিয়ে ফুল কিনতে। আজ ভাইয়ের বাসর বলে কথা সাজাতে তো হবেই। গান বাজতে বাজতে হঠাৎ প্লে লিস্ট থেকে বেজে উঠলো হিন্দি একটা গান।

“Dil ka naseeb tha bura,, jo socha tha wo na hua”

“Dur se jo laga samnder tha wo manjhar reit ka”

লাইনটুকু বাজতেই যেন সবার মনে বিষন্নতার ছায়া ঘেরে গেল।ছলছল পাঁচ জোরা চোখ।
__________________

দুপুর দুইটা, সকল আত্মীয়-স্বজন,সবার খাওয়া পর্ব শেষ করতেই বড় বাবা তাড়া দিলেন বিয়ের কাজ সম্পন্ন করতে। বর,কণে কে সোফার রুমে পাশাপাশি বসিয়ে দেওয়া হলো। সব মেহমান খেয়ে দেয়ে বউ দেখেই চলে গেছে। বাড়িতে এই মুহুর্তে শুধু আরহামের পরিবার,মৃত্তির পরিবার আর কয়েকজন বন্ধু রয়ে গেছে।কাজী সাহেব বিয়ে পড়ানোর কাজ আরম্ভ করতেই আরহাম থামিয়ে দিলো কাজী সাহেবকে।ঘর শুদ্ধ সবাই অবাক হয় বড় বাবা রেগেই যায়।মৃত্তির বুক দুরুদুরু। কি হচ্ছে এসব সকাল থেকেই আরহাম এমন আচরণ কেন করছে? রোহান এর মুখ উজ্জ্বল হয়ে আছে। আরহাম পাঁচ মিনিট এর সময় চেয়ে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে। ছাঁদে দাঁড়িয়ে সিগারেট ধরালো সে। এক টান দিতেই চোখের সামনে ভেসে উঠলো সকালে দেখা সেই মেসেজ মৃত্তির মোবাইলের।

“কেন করছো আরহামকে বিয়ে কি আছে তার মধ্যে বলো?”

“মরে যাবো তোমায় ছাড়া আমি তুমি কেনো বোঝো না”?

“তোমার ভালোবাসা তো আমিই ছিলাম মৃত্তি এ’কয়দিনে আরহামকে কি করে ভালোবাসতে পারো? ”

“ভেঙে দাও বিয়ে আমি খুব শিগ্রই তোমাকে আমার করবো আমি…আই লাভ ইউ মৃত্তিকা,,,”

মেসেজ গুলো মনে হতেই আরহামের রক্ত টগবগ করতে লাগলো। সে সিগারেট ফেলে মুখ হাত ধুয়ে আবার ফিরে গেলো ড্রয়িংরুমে।

কাজী সাহেব বিয়ে পড়ান।সবার নজর আরহামের দিকে। কাজী সাহেবও সকল নিয়ম কানুন মত করে প্রথমে মৃত্তিকে কবুল বলতে বললেন।আরহাম সময়, ক্ষণ ব্যায় না করেই তিনবার কবুল বলে ফেলল।এরপর মৃত্তিকে বলা হলো “কবুল” বলতে। সে বলতে গিয়েও বলতে পারছে না যেন গলা ধরে আসছে তার।সবাই পাশ থেকে বলে চলছে মৃত্তিকে কবুল বলতে। কিন্তু কোন অদৃশ্য কান্নায় তার গলা আটকে আছে। আরহাম চোখ তুলে তাকিয়ে আছে মৃত্তির দিকে আর মনে মনে ভাবছে “বলবে না এই ধোঁকাবাজটা কবুল” ঠিক তখনি কানে এলো মৃদুস্বরে “কবুল”।

সবাই আলহামদুলিল্লাহ বলে মিষ্টিমুখ করছিলো বাইরে থেকে একজন বড় বাবার নাম ধরে জিজ্ঞেস করলো ” এটা কি আশিকুর রহমান এর বাড়ি”। সবার চোখে বিষ্ময় কারণ যিনি ডেকেছেন তিনি একজন স্থানীয় এস.আই অফিসার।খাকি পোশাক পরিহিত কয়েকজন পুলিশও এসে দাঁড়ালো দরজার সামনে।

-আপনারা এখানে?(আশিকুর রহমান)

“আমরা ইনফরমেশন নিয়ে এসেছি সাদনান শেখ উরুফে সাহেদ শেখ এখানে আছে।”

সাদনান নামটা শুনতেই সবার নজর সাদনানকে খুঁজতে লাগলো।কিন্তু সে তো পুলিশ দেখেই ভেতরের দরজা দিয়ে সিঁড়ির দিক থেকে কিচেনে ঢুকে সেদিক দিয়েই পালিয়ে গেছে।হতভম্ব সবাই কি হচ্ছে এসব এই ভরা মজলিশে পুলিশ কেন। মিরহাদ এবার এগিয়ে এসে জানতে চাইলো তাকে কেন খুঁজছে?পুলিশ জানায় সে ঘুষ খেয়ে অনেক অবৈধ কাজে সহযোগিতা করে ইভেন সে নিজেও অবৈধ কাজ করে। এর আগেও সে কয়েকবার পুলিশকে ঘুষ দিয়ে পালিয়েছে। পুলিশ এবার বাড়ি ত্যাগ করতে নেয় হঠাৎ একজন কনস্টেবল এস আই এর কানের কাছে কিছু বলে।তৎক্ষনাৎ উনি কাউকে কল করেন। বলেন যে টনি চাঁদাবাজ এর খুনীর একটা ছবি থাকলে উনাকে যেন হোয়াটসঅ্যাপ করে। মিনিট দু’এর মাথায় ছবি পায় এস আই আর সাথে সাথেই আরহামের কাছে এগিয়ে যায়।অফিসার এরেস্ট করুন এনাকে। ঘরভর্তি সবার পিলে চমকে উঠলো কি বলছে এস,আই?

-এরেস্ট করবে মানে?

মিরহাদ,রোহান, বড় বাবা,ছোট বাবা,আহনাফ সবাই এস.আই কে ঘিরে দাঁড়ালেন। কি দোষ তার কেন করবে এরেস্ট!

-“খুনের আসামি সে টনি চাঁদাবাজ কে সে ঢাকায় তার কেনা নতুন জমিতেই খুন করে এসেছে গত দু’সপ্তাহ আগে।ভাগ্য ভালো আমার এই অফিসার সেই কেসটায় কর্মরত ছিলো তাই এত সহজেই চিনতে পেরেছে।” মুহুর্তেই পুরো বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে গেলো।সবার মাথা গরম আরহাম কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। কি করবে কি বলবে আর যা সত্যি সেটাও এই মুহুর্তে সবাইকে বলা সম্ভব নয়।আরহামের মা অপলক চেয়ে আছেন ছেলের দিকে যেন কান্না ভুলে গেলেন তিনি। হঠাৎ মনে পড়লো সেই রাতের কথা আরহাম সারাদিন বাড়ির বাইরে ছিলো। যখন ফিরে ছিলো তার পড়নের সাদা শার্ট এর নিচের অংশে রক্তের দাগ লেগেছিলো। আয়শা বেগম আর কোন সাড়াশব্দ করলেন না চুপচাপ উঠে নিজের রুমে গিয়ে খিল দিলেন। আরহাম মা’কে কয়েকবার ডেকেছে তিনি যেন শুনেও শুনতে পান নি। বড় বাবা অনেক করে বলছেন পুলিশদের কোথাও কোন ভুল হয়েছে। কিন্তু তারা তা মানতে নারাজ।আরহাম এবার নিজেই বলল “সে তৈরি পুলিশদের সাথে যেতে।মির আর রোহান কে ডেকে সে পাঁচ মিনিট সময় চাইলো অফিসারের কাছ থেকে। তারপর সে মির আর রোহানকে সত্যিটা খুলে বললো। মিরহাদ কাঁধে হাত রেখে ভরসা দিলো “কিছু হবে না দোস্ত তুই টেনশন করবি না”। আরহাম চলে গেলো পুলিশদের সাথে।মৃত্তি ঠায় বসে আছে আগের জায়গায়।বাকরুদ্ধ ঘরশুদ্ধ সবাই। এমনটা কেন হলো অজানা সবার।গল্পটা একটু অন্যরকম হলেও পারতো। একটু আলাদা একটু প্রাণোচ্ছল। মৃত্তির জীবনে ইনোসেন্ট মানুষটাই আজ সবচেয়ে কানিং হয়ে গেলো সবার নজরে। মৃত্তির ভরসা,বিশ্বাস তার ভালোবাসা এতোটাও ভুল নয় মানুষটা আর যাই হোক খুনি হতে পারে না। সে জোর গলায় বলে উঠলো ” কিচ্ছু হবে না স্যারের ফিরে আসবেন উনি খুব শিগ্রই”।

________________সমাপ্তি __________________

(দুঃখিত, এন্ডিংটা সবার মন মত করতে না পারার জন্য। গল্পটা নিয়ে অনেক কিছুই লেখার ছিলো সেগুলো ভুলে গেছি। আর এই গল্পটা লেখা শুরু করার পর থেকে প্রায় পাঁচ বার লেখাটা বন্ধ করে দিতে হয়েছিলো বিভিন্ন সমস্যার কারণে।#সিজন-২ তে সব ঝামেলার সমাপ্তি ঘটবে আশা করি পাশে থাকবেন সবাই।আর আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পাশে এ পর্যন্ত থাকার জন্য, সাপোর্ট করার জন্য। 💞💞।ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন সবাই )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here