বসন্তের_ফুল🌺🌺 #তারিন_জান্নাত #পার্ট০১

0
1681

#বসন্তের_ফুল🌺🌺
#তারিন_জান্নাত
#পার্ট০১

–“দেখ দেখ তিন-তিনডা জ্যান্ত জামাই ঘিলে খাইয়া এখন নাকি ভেরসিটি যাইতাছে হেতি’ অপয়া, (একমহিলা)

–“হ আপা,এক্কেরে হাসা কথা কইলেন।লাজ-লজ্জা আছে নি হেতির।আঁর মাইয়া হলে শুআইয়া জবাই কইরা নদীতে ভাসায় দিতাম”।(২য় মহিলাটি)

–“পুরো গ্রামের মাইয়াগোরেও হেতি অভিশপ্ত করবো দেখিস,,বুড়ি হইয়া যাইতেছে কেডায় করবো বিয়া এমন অপয়ারে”!!

গ্রামের রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে প্রেমা ভার্সিটিতে এডমিশন নিতে যাচ্ছিলো।সেখানেই মহিলা গুলোর কথার আক্রমন। তারা শুধু মানুষদের নানা ভাবে অপদস্থ করার জন্য উঁত পেতে থাকে। আর তাদের আজকের শিকার ছিলো প্রেমা। চোখ-মুখ খিঁচে মহিলাগুলোর কথা হজম করে নেয়।কারন এখানে মহিলাগুলোর সাথে গলা তুলে কথা বলাটা প্রেমার কামনীয়তা নয়। তারা তো সত্যিটায় বলেছে।

আচমকা মুখে রুমাল বাঁধা দুটো ছেলে দুইবালতি গোবর আর গোবরের পানি সহ এনে মহিলাগুলোর মুখে ছুড়ে মেরে চলে যায়। গোবরের পানি ছুড়ে মারার গতি এতোটাই বলিষ্ঠ ছিলো যে তারা ভুলক্রমে পানি কিছুটা খেয়ে ফেলে।

তারপরেই শুরু হয় তাদের গলা ফাটানো আত্মচিৎকার এবং অসভ্য ভাষায় গালিগালাজ।চেঁচামেচির শব্দে প্রেমা ঘাড় হালকা বাঁকা করে দেখে মহিলাগুলো গোবরে গোসল করা। পেট ফেটে হাসি চলে আসে প্রেমার। এতক্ষন যে তাকে কথা শুনালো সেটা মনে আসতেই আরো জোরে তাদের শুনিয়ে হাসতে লাগলো।প্রেমার হাসিতে তারা তেলে বেগুনে ভেজে উঠে।

–“স্যার কাজ হয়ে গেছে”..(ছেলেগুলোর মধ্যে থেকে একজন বলে উঠে)

–“গুড!’তোমাদের পেমেন্ট পেয়ে যাবে”!!…(অজ্ঞাত ব্যাক্তি)

কথাটা বলেই ফোনটা কেটে স্বস্তির শ্বাস ফেলে অচেনা ছেলেটা। গাড়ির গ্লাস অল্প করে নামিয়ে হাতে ক্যামরাটা নিয়ে নেয়। হাত বের করে প্রেমার কয়েকটা ছবি ক্যামরায় ক্যাপচার করে নেয়।এটা তার দৈনন্দিন কাজ গুলোর মধ্যে থেকে একটা। তারপর প্রেমার ছবিগুলো গভীরভাবে মন দিয়ে দেখতে লাগলো। কিছুসময় অতিক্রম করার পর দেখে প্রেমা আবারো ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য হাঁটা ধরেছে।তাই ক্যামরা রেখেই গাড়ি স্টার্ট দিয়ে প্রেমার পিছু নেয় সে।

আরো বেশ কিছুক্ষন হাঁটার পর প্রেমা বড় রাস্তায় উঠে দাঁড়ায় । এখন বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।এখানে আরেক মুশকিল স্টেশন বাদে এই জায়গায় বাস,রিক্সা,সিএনজি পাওয়া অসম্ভভ। হয় একগাধা সময় নিয়ে দাড়িয়ে থাকতে হবে নয়তো স্টেশন থেকে গিয়ে আবার পূনরায় এ পথে আসতে হবে।যা বেশ বিরক্তিকর ব্যাপার। প্রেমা দাড়ানোর পাঁচ মিনিট পরেই একটা সিনএনজি এসে প্রেমার সামনে দাড়ায়। এভাবে সিএনজ আসায় একটুও হতচকিত হয় নি।

এটা ওর সাথে রোজকার ব্যাপার।কিন্তু আড়াল থেকে ওকে যে এভাবে সাহায্য করছে তার অনুসন্ধান এখনো করতে পারেনি। প্রেমা দেরী না করেই সিএনজিতে উঠে যায়।মাথা বের করে পেছনে তাকাতেই দেখে সেই ব্ল্যাক কালারের কারটা ওর পিছুন পিছুন আসছে।

প্রেমা মাথা ডুকিয়ে ফেলে আর তাকায়নি পেছনের দিকে।একসময় ভার্সিটির গেইটের কাছে চলে আসে।ভাড়াটা মিটিয়ে পাশে তাকাতেই দেখে কারটা একসাইডে এসে থেমেছে। প্রেমা আর না তাকিয়ে গেইট দিয়ে ভেতরে চলে যায়।

প্রেমা ভেতরে গেলেই অচেনা ছেলেটি নিজের হাতের ফোনটা বের করে একজনকে কল দেয়।

–‘আমি একটু কাজে যাচ্ছি,আমার ফুলরানীর খেয়াল রাখিস কেউ যেনো বিরক্ত করতে না পারে’ বুঝেছিস??

–“জ্বি স্যার!

(চলবে)🌺🌺

Tarin Jannat

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here