বসন্তের_ফুল🌺 #তারিন_জান্নাত #পার্ট০৭

0
642

🌺#বসন্তের_ফুল🌺
#তারিন_জান্নাত
#পার্ট০৭

বাইক থেকে নেমে প্রেমার আর অভ্র দু’জনে মুখোমুখি হয়ে দাঁড়াল। ব্ল্যাক শার্টে অসাধারন লাগছে অভ্রকে।প্রেমা অভ্রের দিকে এক পলক চেয়ে আবার গেইটের দিকে উঁকি দিচ্ছে।গাড়িটির উপস্থিতি দেখার জন্য। কিন্তু দেখতে পায়নি।

তাই একটা স্বস্তির শ্বাস ছাড়ে। অভ্র বরাবরেই প্রেমার দৃষ্টিগুলো লক্ষ্য করছে। এবং মনে মনে হাসছে..

-“আমি প্রিন্সিপ্যাল স্যার মানে আমার ফুফার সাথে কথা বলেছি কাল। এখন শুধু আপনি স্যারের সাথে গিয়ে কথা বলবেন।তারপর নিজের ক্লাসে চলে যাবেন ওকে??”(অভ্র)

প্রেমা মাথা নাড়িয়ে একবার গেইটের দিকে দৃষ্টি ছুঁড়ে চুপচাপ চলে যায় অভ্রের কথা মতো। অভ্র প্রেমার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে একমনে।

ব্ল্যাক কারটি সেই মুহুর্ত গেইট দিয়ে প্রবেশ করল। সেখান থেকে কেউ একজন বের হয়ে অভ্রের পেঁছনে এসে দাঁড়াল। এবং খুবই জোরে একটা তাপ্পর লাগালো অভ্রের পিঠে।

অভ্র পেঁছন ফিয়ে সাথে সাথে বলে উঠে,

–“শালা…(অভ্র)”

–আমার বোনকে তুই বিয়ে করবি??(ভ্রু কোঁচকে জিজ্ঞেস করে)

–“ওই বিচুটিপাতাকে কে বিয়ে করবে!!?(অভ্র)

–” না তা করবি কেন?? তোর টেস্ট তো আবার আলাদা!! (খোঁচা মেরে)

–” শালা!! (অভ্র)

–তুই শালা!

–“আমার বোন নাই। একটা ভাই আছে সে ও এ বয়সে তোর বোনের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে! ”

বলেই দু’জনে হাসতে লাগলো।

–“আচ্ছা এখানে বেশিক্ষন থাকা ভালো হবে না
চল…(অভ্র)”

–” ক্লাস করবি না?? ”

“নাহ” বলেই অভ্র সেই ব্ল্যাক কারটির দিকে হাঁটা ধরল। অভ্র ড্রাইভিং সিটে বসে এবং তার পাশের সিটে সাইকান এসে বসে। তারপর গাড়ি স্টার্ট দিয়ে তাঁরা চলে যায়।

সাইকান হলো অভ্রের ফুফাতো ভাই। সেম এজের দু’জনে। ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে।

নদীর পাশে এসে গাড়িটা থামায় অভ্র। সাইকান একটা বিয়ার এগিয়ে দেয় অভ্রকে। বিয়ারের বোতল নিয়ে চুমুক দিয়ে কয়েক ঢোক গিলে ফেলল। প্রচন্ড গরমে ঠান্ডা বিয়ার বা অন্য সব কুল ড্রিংকস বেশ তৃপ্তি দেয়।

–“আজকে হঠাৎ তোদের ফলো করতে বললি কেন??”[সাইকানের প্রশ্ন]

–“কারন আছে তাই তো বললাম! ”

–” কারনটা বল ভাই! তিন বছর ধরে কম কাটাস নাই আমারে দিয়ে। এইবার বল ক্যান তোগোরে ফলো করতে কইছিলি!!??[সাইকান]

–” আরে বলছি।আসলে আমি উনার রিয়েক্টটা দেখতে চায়ছিলাম! যেহেতু ফ্রেন্ডশীফ করছে সেহেতু ফ্রেন্ড হিসেবে আমার সাথে সব কথা বা সমস্যা সেয়ার করবে! ব্যাস আমিও সেই অপেক্ষায় আছি!!

–ভাইরে ভাই সোজাভাবে গিয়ে বলে দিতে পারিস প্রেমাপু থুক্কু প্রেমা ভাবি আরে না না “প্রেমা আমি তোমাকে ভালোবাসি” তাহলেই তো হলো!! [সাইকান]

কথাটা বলেই অভ্রের দিকে তাঁকাল। তখন দেখলো অভ্র চোখ-মুখ লাল করে তাঁর দিকেই তাঁকিয়ে আছে। সেটা দেখেই সাইকান ভয়ে চুপসে যায়। অভ্র বেশ ভয়ংকর একটা গালি*** দেয় সাইকানকে।

–“আমার ফিলিংসটাকে তুই প্রেম ভালোবাসা বলে ইনসাল্ট করছিস। এই নাম তুই আমার গাড়ি থেকে নাহলে এখন আমার একটা লাত্তি খাবি তুই শালা।[প্রচন্ড রেগে কথাটা বলে অভ্র]

–” আমি কখন ইনসাল্ট করলাম! আমি তো সত্যিটা বললাম।আর এভাবে ক্ষেপে যাচ্ছিস কেন?? আমি কিন্তু প্রেমা ভাবিরে সব বলে দিমু তুই যা যা করেছিস সব। “[সাইকান]

–” যা বল গিয়ে আমিও তোর বাপরে বলমু জরিনার সাথে যে তুই ইটিসপিটিস করস সে কথা। [অভ্র]

–” ওর নাম জেরিন জরিনা না!!….. (কিছুক্ষণ থেমে) আচ্ছা ভাই বাদ দে এমনি তোর লগে মজা করছিলাম। কিন্তু আমি এখনো কনফিউজড!

“–কি কারনে??”

–“প্রেম ও না ভালোবাসা না তাহলে কিসের টানে এমন করস??(সাইকান)

এবার অভ্র নড়চড়ে বসে সিটে গা এলিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে।তারপর চোখ খুলে সাইকানের দিকে দৃষ্টি রাখলো,

–” এটা খুব হার্ড একটা ফিলিংস আমার জন্য। ফিলিংসটার নাম আমি প্রেম ভালোবাসা দিতে চায় না। কারন উনার প্রতি আমার ফিলিংসটা প্রেম ভালোবাসার উর্ধে। প্রেম ভালোবাসা এসব একদিন হয়তো ফুরিয়ে যায় পরিস্থিতির কারনে সেটা আমার বিশ্বাস। কিন্তু চাওয়া কখনোই শেষ হবে না না বরং সময়ের তালে তালে সেটা বাড়তে থাকবে।

তাই আমি উনাকে চাই,এখন আমার একটাই চাওয়া উনি আমার এই চাওয়া নামক ফিলিংসটা বুঝে আমার কাছে আসেন।আর যদি তাতে কাজ না হয় তো আমি বাধ্য করবো।
কথাগুলো বলেই সাইকানের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দেয়। সাইকান তো অবাক হয়ে তাঁকিয়ে আছে অভ্রের দিকে।

–সেলিউট ব্রো! বড় বড় প্রেমিক পুরুষরাও আজ তোর যুক্তিতে হার মানবে।আচ্ছা প্রেমা ভাবি যদি বাই চান্স জানতে পারে তোর সব কীর্তির কথা তখন কি করবি??(সাইকান)

–” সে পরে দেখা যাবে…!

দুজনে আর কিছুক্ষন কথা বলে এরপর নদীর পাড়ে হাঁটে। কলেজ ছুটির টাইম হলেই দুজনে কলেজে ফিরে যায়। অভ্র যাওয়ার পর পরেই সব ক্লাসে ছুটি হয়ে যায়।

প্রেমা বের হয়ে দেখে অভ্র বাইকের উপর বসে আছে।তাই অভ্রের সামনে গিয়ে দাঁড়াল। অভ্র প্রেমার দিকে এক পলক তাকিয়ে বাইকে বসার জন্য ইশারা করে।
বাইকে বসতেই অভ্রের প্রশ্ন,

–“ফার্স্ট ক্লাস কেমন লেগেছে??” (অভ্র)

–“ভালো! তুমি ক্লাস করেছিলে??(প্রেমা)

অভ্র থমথম খেয়ে যায়।কী বলবে এখন?? মিথ্যা বলা অভ্রের পছন্দ নয়।তাই সত্যিটাই বলে দেয়।

–“ক্লাস করিনি আজ!! একটা ফ্রেন্ডের সাথে একটু বাইরে গিয়েছিলাম!(অভ্র)

–“দেখেছিলাম! (প্রেমা)

তারপর দুজনে চুপ হয়ে যায়। অভ্র বাইক স্টার্ট দেয়। আর ভাবছে প্রেমা কিছু জানতে পারলো না তো??
~
~
~

বাইক থেকে নেমে প্রেমা আগে হেঁটে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলো তখনি দেখে অাদ্র দাড়িয়ে আছে সাথে তার সমবয়সী একটা মেয়ে দাড়িয় আছে। প্রেমা তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়াল।

আদ্র আরেকটু এগিয়ে আসে প্রেমার সামনে…

–“এতক্ষনে আসছো! আমার গার্লফ্রেন্ডকে তোমার সাথে দেখা করানোর জন্য অপেক্ষা করছিলাম!

এবার প্রেমা আবারো একটা ঝাটকা খায়। কী বলে ছেলেটা?? এমন সময়ে কী বলবে সেটাই ভেবে পাচ্ছে প্রেমা।

(চলবে)

Tarin Jannat

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here