তুই_আমারই_থাকবি💜 #Esrat_জাহান💜 #part_33

0
221

#তুই_আমারই_থাকবি💜
#Esrat_জাহান💜
#part_33
!
‘দেখো,মেজাজ খারাপ করাবানা।যত্তসব।

আমি কি বলেছি আমাকে কোলে নেন?

না,বলোনি।

তাহলে এত মেজাজ আমাকে দেখাচ্ছেন কেন?

দেখছ না আমার জুতো ভিজে গিয়েছে?আমি হাঁটতে পারছি না।

সারাদিন এইসব সু’জুতো পড়ে রাখেন তার ফল এটা,বুঝলেন?

মানে? আমি কি জুতো ছাড়া খালি পা নিয়ে ঘুরবো নাকি?

এইটাকে বুঝাই কিভাবে? বললাম, সারাদিন জুতা পড়ে রাখার কোনো দরকার আছে? বাইরে গেলে বা কোনো দরকারে পড়তে পারেন।কিন্তু আপনি সারাদিন রাত জুতা পড়ে ঘুরাঘুরি করেন,তাই এটা আপনার বদ অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।

উনি কিছু বলতে যাবে তার আগেই একটা পাথরের উপর উষ্ঠা খেয়ে আমাকে নিয়ে পড়ে গেলেন মাটিতে।

আমি বেশি ব্যথা না পেলেও উনার হাত একটু ছিলে গেলো। উনি আহ করে চেঁচাতে লাগলেন।

এই অবস্থায় আমি হা হা করে হেসে উঠলাম।

উনি চেঁচানো থামিয়ে ধীরেধীরে উঠে দাঁড়ালেন,আমার দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে নিক্ষেপ করে গমগম করে বললেন, খুব হাসি পাচ্ছে তাই না?

হুম,পাচ্ছে তো!

তোমার হাজব্যান্ড এর হাত কেটে রক্তারক্তি হয়ে গেছে।আর তুমি মজা নিচ্ছো?

আমি হতভম্ব হয়ে বললাম, রক্তারক্তি কোথায় হলো?সামান্য হাত ছিলে যাওয়ায় আপনি এটাকে রক্তারক্তি বলছেন?আজব!

উনি মুখ ফুলিয়ে বললেন,ওহহ!এটা সামান্য?হাত দিয়ে রক্ত বের হয়েছে আর তুমি এসব বলছো?কতটা ব্যথা হচ্ছে জানো তুমি?

কেন?এখন কি করবো তাহলে আমি?

তুমি মুভিতে দেখো না?কারো হাত কেটে গেলে ওড়নার আঁচল ছিঁড়ে বেঁধে দিতে হয়?

কি সব যাতা বলছেন?বাংলা সিনেমার কাহিনী যত্তসব!

তুমি আমার সেবা না করে এসব বলছো?থাক লাগবে না….!

আরে আপনি ভুল বুঝছেন।আপনার তেমন কিছুই হয়নি,সামান্য ছিলে গিয়েছে শুধু।

উনি চোখ লাল করে বললো,এখনো এসব বলছো?বলবেই তো…!

ধুর!আপনি শুধু শুধু ভুল বুঝছেন।আর আপনি না জিম করেন,আর এটুকু কষ্ট সহ্য করতে পারছেন না?চলুন বাসায় চলুন।



আমি উঠে দাঁড়িয়ে দেখি,উনি সেই মুখ গোমড়া করে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি জোর করে উনাকে নিয়ে বাসায় ফিরে এলাম।মেহমান থাকায় দরজা খোলা ছিলো,সামনে কেউ না থাকায় আমি চুপিচুপি উনাকে নিয়ে সোজা আমার রুমে চলে এলাম।

দরজা লাগিয়ে উনাকে ফ্রেশ হয়ে আসতে বললাম,উনি চুপচাপ ফ্রেশ হয়ে এসে ব্যলকুনিতে দাঁড়িয়ে রইলো।

আমি ওনার হাতের ছিলে যাওয়া জায়গাটাতে এন্টিসেপটিক লাগিয়ে দিলাম। উনি কিছু বললেন না।মুখ ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।

উনার এইসব ন্যাকামি দেখে আমার খুব হাসি পেলো।তারপর আমি কাপড় নিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।

লম্বা একটা শাওয়ার নিলাম,বেশ ঠান্ডা পড়েছে আজ।একটু আগে বৃষ্টি পড়ায় এমন ঠান্ডা পড়েছে!



শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে দেখি উনি মোবাইল টিপছেন।মুখচোখ আগের মতোই।আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব দেখিয়ে রুম থেকে বাইরে বেরিয়ে এলাম।আম্মু আমাকে দেখে বাংলা সিনেমা টাইপ ভাষণ শুরু করলো, যে আমি নাকি উনার খেয়াল রাখিনা,উনার খাওয়ার খোঁজ নেই না ইত্যাদি ইত্যাদি হ্যান-ত্যান!

একগাদা কথা শুনিয়ে হাতে বিরিয়ানির প্লেট ধরিয়ে দিলেন।উনি নাকি খাননি।তাই আমি যাতে খাবারটা রুমে নিয়ে যাই সেজন্যই।

আমিও বিরক্ত হয়ে গেলাম রুমে।গিয়ে দেখি মোবাইল টিপাটিপিই করছেন।আমি গিয়ে বললাম,নেন খান।

উনি তাকিয়ে বললো, কি?

খাবার।

কিসের?

আজব!রাতের খাবার।

ওহহ!এতক্ষণে মনে পড়লো যে আমি খাইনি?

জ্বি না।আমার মনে পড়ে নাই।আমার আম্মু মানে আপনার ফুপি মনে রেখেছে যে উনার মেয়ের জামাই খায়নি।

তাই নাকি?

জ্বি,খেয়ে নিন।

খাবো না।নিয়ে যাও।

কেন?

ইচ্ছে।

বললেই তো হবে না।খেতে হবেই।আমি কষ্ট করে বয়ে নিয়ে আসলাম আর আপনি খাবেন না, তা হয় না।

উনি ভ্রু কুঁচকে বাঁকা হাসি দিয়ে বললেন,তুমি খাইয়ে দাও।

আমি হতভম্ব হয়ে বললাম,মানে?

মানে সিম্পল। তুমি খাইয়ে দাও।নইলে ভাগো।ডিস্টার্ব করবা না।

ভাবলাম সারারাত না খেয়ে থাকবে!এর চেয়ে ভালো খাইয়েই দেই।

যেই ভাবা সেই কাজ। আমি বিরিয়ানি এক চামচ নিয়ে উনার মুখে পুরে দিলাম।উনি হা করে তাকিয়ে রইলেন। তারপর চিবিয়ে চিবিয়ে খেতে লাগলেন।

আমি বাতাস গিললাম লজ্জায়। উনি মুচকি হেসে সোজা হয়ে বসলেন।আমি যাইহোক, যেমন যেমন করে উনাকে খাইয়ে দিলাম।একপ্লেট শেষ করে আমি হাফ ছাড়লাম।ভাবলাম যাই রেখে আসি প্লেট।

পিছন ঘুরতেই উনি বলে উঠলেন বিরিয়ানিটা জাস্ট ওয়াও।আরো একপ্লেট নিয়ে আসো যাও।

কিহ?আরও? আমি আর পারবো না।

ছিহ খুশবু! তোমার বাসার গেস্ট আমি,আর তুমি এসব কি বলছো?মিনিমাম সেলফ-রেসপেক্ট ও নেই তোমার!ছিহ!ফুপি কিছু শিখাইনি তোমাকে?আমাদের বাসায় তো সারাদিন খাই খাই-ই করো!

উনার গা জ্বালানো কথায় আমি রেগে গেলাম।সাথে লজ্জাও পেলাম।ঠিকই তো, উনি গেস্ট আমাদের বাসার।কিন্তু মোটেও আমি উনাদের বাসায় খাই খাই করি না।যাইহোক, আমি আরও একপ্লেট বিরিয়ানি নিয়ে উনাকে খাইয়ে দিলাম।আর উনি সুযোগ পেয়ে আমাকে জ্বালিয়ে খেলেন।

প্রায় দুইঘন্টা পরিশ্রম করে উনার এসব ন্যাকামি সহ্য করলাম। তারপর সবকিছু গুছিয়ে ফ্রেশ হয়ে শুতে গেলাম।

এখানেও উনার আবালের মতো নাটক আমি সহ্য করলাম।তারপর লম্বা এক ঘুমে রাত কাটিয়ে দিলাম।

পরদিন বেশ বেলা করে ঘুম ভাঙ্গলো।বিয়ে বাড়ির হৈচৈ শেষে ঠিক হলো আমরা সবাই বাইরে ঘুরাঘুরি করে আসি।তাই আমি আনিকা আর সাদাফ ভাইয়াকেও ফোন করে আসতে বললাম।উদ্দেশ্য সবাই মিলে সময় কাটাবো।’



চলবে….

ভালো লাগলে নেক্সট দেবো ইনশাল্লাহ ❤

গল্প পড়তে ভালো না লাগলে এভয়েড করুন। প্লিজ বাজে মন্তব্য হতে দূরে থাকুন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here