অপূর্ণ_প্রেমগাঁথা #The_Mysterious_Love #আনিশা_সাবিহা পর্ব ১৪

0
660

#অপূর্ণ_প্রেমগাঁথা
#The_Mysterious_Love
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ১৪
কম্পিউটারের মনিটরের সামনে বসে আছে মাধুর্য। তার মন নেই মোটেও কাজে। বার বার নিজে লাগা আঘাতগুলো নেড়েচেড়ে দেখছে সে। ব্যাপারটা না ভাবার খুব একটা সময় না পেলেও ওর আবছা কিছু মনে পড়ছে। ও কাউকে আঘাত করেছে। সেও তাকে আঘাত করেছে। কিন্তু ঠিকঠাক ভাবে তার কিছুই মাথায় আসছে না। ঠিক সেই সময় তার কেবিনে ঢুকে পড়ে নীলিমা। মাধুর্য নীলিমার হঠাৎ আগমনে কিছুটা আঁতকে উঠে নীলিমার দিকে তাকায়। দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে নীলিমা তার হাতে ধরিয়ে দেয় আরো কিছু ফাইল। কম্পিউটারে চোখ বুলিয়ে নীলিমা ঝাঁঝালো গলায় বলে ওঠে….
–“প্রথম দিন বেশ ভালোই কাজ করেছিলে। কিন্তু দ্বিতীয় দিনেই দেখছি অলস হয়ে পড়েছো। কাজ করছিলে নাকি ফাঁকিবাজি? স্যার কিন্তু হিসেব-নিকেশ এর ব্যাপারে খুবই সতর্ক থাকতে বলেছে।”
মাধুর্য ফাইল নিয়ে ঠিকঠাক চোখ বুলিয়ে বলে…
–“আসলে ম্যাম সরি। আমি কিছুটা বেখেয়ালি হয়ে পড়েছি। আর হবে না।”

নীলিমা আরো কিছু বলবার আগেই দরজার খটখট শব্দ হয়। মাধুর্য ও নীলিমা দরজার দিকে তাকায়। র্নিলিপ্ত হয়ে ঢুকে পড়ে অনুভব। কাজের ভীড়ে নিজের চুলগুলো মনে হয় ঠিক করতে পারেনি সে। তাই ডান হাত দিয়ে চুলগুলো এদিক ওদিক করতে। তাতে চুল গোছালো হওয়ার বদলে আরো আশেপাশে মেলে যায়। চোখ তুলে তাকাতেই প্রথমে নীলিমাকে দেখে কপাল কুঁচকে তাকায় সে।
–“মাধুর্যের কেবিনে অসময় কি করছো?”
–“অসময় কোথায় অনুভব স্যার? এখন তো কাজের সময়। আর মাধুর্যকে কাজ দিতেই এসেছি।”
নীলিমা বেশ জবুথবু হয়ে জবাব দেয়। অনুভব কিছুক্ষণ চুপ থেকে চেয়ার টেনে নিয়ে বসে আয়েশ করে জবাব দেয়…..
–“নাউ ইউ মে গো।”
নীলিমা চুপচাপ কেটে পড়ে সেখান থেকে। মাধুর্য ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকে অনুভবের দিকে। অনুভব মাধুর্যের দৃষ্টি দেখে টেবিলে হাত রেখে একটু মাথা ঝুঁকিয়ে বলে….
–“আজ কি আমায় বেশি হ্যান্ডসাম দেখাচ্ছে?”

মাধুর্য চোখের পলক ফেলে অন্যদিকে তাকিয়ে বিরক্তির সুরে বলে….
–“আমি জানি না। আপনি কি কোনো কাজ দিতে এসেছেন?”
–“তা তো অবশ্যই। তা তো অবশ্যই।”
নিজের সেই অদ্ভুত হাসিটি দিয়ে আরো চেয়ার টেনে নিয়ে বসে অনুভব। মাধুর্য ইশারা করে বলে….
–“কি কাজ বলুন?”
–“দুপুরে খেয়েছো কিছু?”
–“না।”
ছোট্ট করে জবাব দিয়ে উৎসাহ নিয়ে তাকায় মাধুর্য। হঠাৎ লোকটি এসব জানতে চাইছে কেন? মাধুর্য নিজের কাজেও মন দিতে পারছে না। অনুভব ওর আশেপাশে থাকলে অদ্ভুত এক অনুভূতি ঘিরে ধরে রাখে তাকে। অন্য কোনো কাজে মন দিতে ইচ্ছে করে। এইটা যেন শুধু অনুভূতি নয় আস্ত একটা অনুভূতির জাল। যেই জালে অনুভূতির সংমিশ্রণে রয়েছে মোহ, মায়া, কাছে চাওয়ার আকাঙ্ক্ষার ও অসম্ভব ভালো লাগা।

কল্পনা থেকে বেরিয়ে অনুভবকে গভীরভাবে লক্ষ্য করে সে। অনুভব টেবিলে থুঁতনি রেখে কি ফোনে কি যেন একটা করছে। এই অবস্থাতেও সুন্দর দেখাচ্ছে তাকে। এতোটা নিখুঁত ভাবে সুন্দর কোনো পুরুষ হয়? এলিনা ঠিকই বলে এতো কোনো রাজ্যের রাজকুমার। মিনিট দুয়েক পড়েই ফোনটা পকেটে ঢুকিয়ে সোজা হয়ে বসে দৃষ্টিপাত করে অনুভব। মাধুর্য হালকা নড়েচড়ে উঠে বলে….
–“আপনার নাকি কোনো কাজ আছে? কোন কাজ বললেন না তো!”
অনুভব ডান হাত তুলে সব আঙ্গুল গুটিয়ে নিয়ে বৃদ্ধ আঙ্গুল দিয়ে বাইরের দিকে ইশারা করে বলে….
–“কাজ আসছে বাইরে থেকে।”
–“কাজের কি পা রয়েছে? তারা হেঁটে হেঁটে আসবে?”
–“থাকতেই পারে। নাথিং ইজ ইম্পসিবল ইন দ্যা ওয়ার্ল্ড।”
কথাটি বলতে বলতেই একটি লোক অনেকগুলো খাবার নিয়ে প্রবেশ করে। চোখ বড় বড় করে তাকায় মাধুর্য। অনুভবের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করে অনুভবে বর্তমানে কি করতে চাইছে। মানুষটির মতিগতি বোঝায় দায়।

খাবারগুলো রেখে লোকটিকে অনুভব ইশারা করতেই চলে যায়। একটা খাবারের প্লেট মাধুর্যের দিকে ঠেলে দিয়ে একটু চাপা সুরে বলে….
–“হা করে তাকিয়ে আছো কেন? শুরু করো।”
–“এসব আমার জন্য? কিন্তু কেন?”
আহাম্মকের মতো মুখটি করে প্রশ্ন করে মাধুর্য। অনুভব কপালের চামড়া জড়িয়ে কপালে হাত বুলিয়ে বলতে থাকে….
–“কিন্তু কেন মানে কি? খাবার তো খেতেই হবে। খাবার না খেলে কাজ করতে কি করে? অসুস্থ হয়ে পড়বে। তারপর দোষ হবে কার? আমার নয়ত আমার ড্যাডের। আমি এসব ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করি বুঝলে? এখন শুরু করো।”
কিছুক্ষণ থ মেরে তাকিয়ে থেকে মনে মনে হাজারটা গালি দিয়ে প্লেটের দিকে তাকায় মাধুর্য। ধীর গলায় প্রশ্ন করে…..
–“আপনার সামনে খাবো?”
–“কেন খাওয়া যাবে না? তোমার লজ্জা দেখে মনে হচ্ছে আজকে আমাদের বাসর রাত। তাই লজ্জায় মুখটা ফুলের মতো নেতিয়ে গিয়েছে।”

মুখটা আরো লাল হয়ে যায় মাধুর্যের। কি নির্লজ্জ কথাবার্তা অনুভবের। রাগে কয়েকটা বড় বড় শ্বাস নিয়ে খাবার মুখে দেয় মাধুর্য। অনুভব মাধুর্যের অগোচরে মুখ টিপে হেসে এমনি কাগজ হাতে নিয়ে দেখতে থাকে যাতে মাধুর্যের খাওয়ার অসুবিধে না হয়।
খাওয়া শেষ পানি মুখে দিয়ে শান্ত হয়ে থাকে সে। অনুভবকে দেখে বোঝার চেষ্টা করে সে কি আজ যাবে না এখান থেকে। কোনোমতে খাবার টুকু খেতে পেরেছে সে। খাবার নিয়ে আসা লোকটিই আবার খালি প্লেট নিয়ে যেতেই গা টানা দিয়ে উঠে দাঁড়ায় অনুভব। দুই পা এগিয়ে এসে মাধুর্যের চেয়ারের হ্যান্ডেল ধরে চোখে চোখ রাখে সে। হুট করে ঘটনা ঘটনায় নড়েচড়ে কেঁপে ওঠে মাধুর্য। শুকিয়ে আসে তার গলা। অনুভব ডান হাতটি মাধুর্যের ঠোঁটের দুইপাশে এগিয়ে এনে আঙ্গুল দিয়ে মুছিয়ে দেয় তার ঠোঁটের আশেপাশে লেগে থাকা পানির ফোঁটা। এই আলতো ছোঁয়ায় যে এতোটা শিহরণ জাগাবে তা মাধুর্যের ভাবনার বাইরে ছিল। আবেশে চোখজোড়া বন্ধ হয়ে আসে তার। যখন চোখ খোলে ততক্ষণে অনুভব তার আশেপাশেও নেই। কোথাও নেই। বাইরে বেরিয়ে গেছে। লজ্জায় মিইয়ে পড়ে মুচকি হাসে মাধুর্য।

–“বাবা, বাবা, বাবা! আমি এখন অবাকের চরম সীমায়। মস্তিষ্ক খালি খালি লাগছে। বুঝতে পারছি না কি করব। কেন আমার সম্মোহনী কালো জাদুর প্রভাব পড়লো না ওদের ওপর? কেন পড়ল না?”
অরুণ রাগে গজরাতে গজরাতে কথাটি বলে ওঠে। তার মনে টান টান উত্তেজনা। এতো অবাক করার বিষয়। অরুণের জাদুর প্রভাব পড়েনি এমনটা খুব কমই হয়েছে। তার বাবাকে চুপ দেখে সে আবারও বলে ওঠে….
–“এটা শুধু ভ্যাম্পায়ারের ক্ষেত্রেই সম্ভব হতে পারে। আর সেই ভ্যাম্পায়ারকেও খুব শক্তিশালী হতে হবে।”
এবার মুখ খোলেন অরুণের বাবা। দাঁতে দাঁত চেপে বলে ওঠেন….
–“তোকে বলেছিলাম যার তার প্রেমে পড়িস না। আমিও জানি না এখন কি করা উচিত। একে তো ভ্যাম্পায়ার রাজ্য নতুন করে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে আর তার ওপর তোর পছন্দ করে ওই মেয়েটা কে, আমাদের কোন নতুন শত্রু সেটাও জানতে পারছি না। মনে হচ্ছে সবকিছু ধ্বংস করে দিই।”
অরুণ মুখটি বিষন্ন করে বলে উঠল….
–“বাবা, যদি মেনে নিই মাধুর্য ভ্যাম্পায়ার তাহলে কবিতার ক্ষেত্রেও আমার সব পরিশ্রম বৃথা গেল কেন? কবিতার ওপরেও কোনো প্রভাব পড়েনি বাবা। তাহলে কি সেও ভ্যাম্পায়ার?”

–“হতে পারে। আর আমি নিশ্চিত ওদের মধ্যেই কেউ একজন ভাবনা। আর কে ভাবনা সেটা তোকেই খুঁজে বের করতে হবে। আর ওই অনুভবের কিছু একটা ব্যবস্থা করতে হবে। ভ্যাম্পায়ার রাজ্যের প্রদীপ নিভিয়ে দিতে হবে।”
অরুণ কিছুক্ষণ চুপ থেকে ভাবুক হয়ে কিছু একটা ভাবতে শুরু করে। তাৎক্ষণিক বলে ওঠে…..
–“খুব দ্রুত প্রমাণ হবে। কে ভ্যাম্পায়ার আর কে নয়। ভ্যাম্পায়ারদের সব থেকে বড় দুর্বলতা হচ্ছে রক্ত। আর সেই রক্ত দিয়েই প্রমাণ হবে মাধুর্য আর কবিতা দুজন কে? আর সেদিন তো আমাদের একজন মেয়েটাকে ভ্যাম্পায়ার রুপে দেখেছিল। সে বলতে পারবে কে আসল ভ্যাম্পায়ার।
–“বেশ ভালো পরিকল্পনা। শুধু সুযোগমতো কাজে লাগাতে পারলে হয়।”
জানালা দিয়ে বাইরে তাকায় অরুণ। ভাবতে থাকে মাধুর্যের কথা আর চেয়ে থাকে বাইরে। তাদের রাজ্যের আকাশ ঘন কালো। সবসময় এমনটাই থাকে। বাইরের গাছপালা শুকনো, শুকনো। যেন নিষ্প্রাণ একটি জায়গা। অরুণ মনে মনে চাইছে মাধুর্য যেন একজন সাধারণ মানুষই হয়।

রাতে…..
মাঝে মাঝে বাতাস বইছে বাইরে। ঘড়িতে প্রায় আটটা বাজে। বাইরের আবহাওয়া তেমন ভালো নয়। যখন তখন বৃষ্টি আসতে পারে। মাধুর্য মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করছে বইয়ের পাতায়। কিন্তু মন বসলে তো? বইয়ের দিকে তাকালেও যেন ভেসে উঠছে অনুভবের প্রতিচ্ছবি বইয়ের প্রত্যেকটা পাতায়। এই ‘অনুভব সিনহা’ নামক মানুষটির প্রতি ধীরে ধীরে হলেও বেশ নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে মাধুর্য। কলমের ঠোঁটের সঙ্গে ঠেকিয়ে সে ভাবতে থাকে, তার প্রতি অনুভবের ফিলিংস কি? অনুভব কি তাকে নিয়ে একই রকম ভাবে? তাকে নিয়ে অনুভবও কি একই অনুভূতির মেলায় মাতে? দমকা হাওয়ায় টেবিল থেকে মাধুর্যের ইম্পরট্যান্ট নোটস পড়ে যেতেই নিজের সুন্দরতম কল্পনার জগত থেকে বেরিয়ে আসে। ইশশ….কত সুন্দর ভাবনায় মেতে ছিল সে। বিরক্তির শব্দ করে একটু নিচু হয়ে নোটস তুলে জোরে টেবিলে রাখে। কলম কামড়াতে কামড়াতে আবার ভাবে অনুভবের অসম্ভব সুন্দর এবং অদ্ভুত হাসির কথা। তার জন্য অনুভব যেমন কেয়ার করে অন্য কারোর জন্য তেমন করে না। সেটাও খেয়াল করেছে মাধুর্য। তাহলে কি মাধুর্য যা ভাবছে তাই? অনুভব তাকে ভালোবাসে?

লজ্জায় দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলে মাধুর্য। মাথা এপাশ-ওপাশ ঝাঁকাতে থাকে। বিরবির করে বলে….
–“যদি তাই হয়। তাহলে উনার এই অদ্ভুত ভালোবাসার কি নাম দেওয়া যায়? #The_Mysterious_Love?
ফোনের টিংটং রিংটোন বেজে ওঠায় চমকে ওঠে মাধুর্য। দ্রুত হাত বাড়িয়ে ফোন ধরে দেখে ‘স্যার’ নামটি ভাসছে। এটা অনুভবের বাবার নম্বর। মাধুর্য দরকারের জন্য সেইভ করে রেখেছে। যদিও এই নম্বর থেকে ফোন আসবে তা কল্পনাতীত ছিল। ফোনটা রিসিভ করে কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনটা কানে ধরে সে।
–“হ্যালো, মাধুর্য চৌধুরী বলছো?”
–“ইয়েস স্যার।”
–“আমাকে চিনতে পেরেছো?”
–“জ্বি।”
–“আজকে এক্ষুনি আমার বাড়িতে এসো কিছু কাজ আছে। হিসেবে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে তোমাকে সমাধান করতে হবে?”
মাধুর্য কিছুটা অবাক হয়।
–“এখনি যেতে হবে? কিন্তু আপনার বাড়ি তো আমি চিনি না স্যার।” (ঘড়ির দিকে তাকিয়ে)
ওপাশ থেকে গম্ভীর গলায় প্রলয় সিনহা বলে ওঠেন…
–“হ্যাঁ বেশ আর্জেন্ট। আমি তোমাকে মেসেজ করে দিচ্ছি ঠিকানা। যে কাউকে বললে চিনিয়ে দেবে।”

মাধুর্য বাধ্য মেয়ের মতো বলে….
–“ওকে স্যার। আমি আসছি।”
ফোনটা কেটে দেন প্রলয়। দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বড় বেলকনিতে নরম চেয়ারে ঠেস লাগিয়ে বসে পড়ে সে। হাতে তুলে নেয় একটা বেশ বড়সড় পেইন্টিং। পেইন্টিং এ পড়ে অর্ধচাঁদের আলো। আলোকিত হয়ে ওঠে সেটা। চকচক করে ওঠে একটা সুন্দর মেয়ের মুখ। মিষ্টি হাসি দিয়ে যেন সবার মন জয় করে নিতে পারে মেয়েটি।
–“একটা সময় ছিল যখন তোমাকে আমি আমার পুত্রবধূ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু একটা ঝড় সব ওলটপালট করে দিল। জানি আবারও ফিরে এসেছো। কিন্তু এবার আমাকে ক্ষমা করো। আমি বাবা হয়ে আমার ছেলের সঙ্গে তোমার মিল হতে দিতে পারব না। কারণ হয়ত তুমি এবার আমার ছেলের ক্ষতি করে দিতে পারো। কারণ ও তোমাকে মেরেছে। আমি আমার ছেলেকে তো মরতে দিতে পারি না। তাই তুমি যেন কখনো আমার ছেলের সামনে না আসো সেটাই কামনা করি।”
কথাটা বলে চোখ বন্ধ করেন প্রলয়। মাধুর্যকে উনি কোনো কাজের জন্য ডাকেন নি। বরণ উনি মাধুর্যকে পরখ করতে ডেকেছেন। এতোদিন রাজ্যের কাজে ডুব দিয়ে ছিলেন। রাত ছাড়া উনার সময় হয় না। তাই রাতেই ডেকেছেন। উনি একবার দেখতে চান সামনাসামনি মাধুর্যকে।

এক ধ্যানে বসে আছে অনুভব। ওর সামনে বসে আছেন এক অভিজ্ঞ মানুষ। যিনি ভ্যাম্পায়ার রাজ্যের সব থেকে বয়স্ক একজন। উনার কথা সবসময় সঠিক হয় বলেই মানা হয়।
–“তুমি কি নিশ্চিত তুমি যাকে ভাবছো সে তোমার ভাবনা?”
–“হ্যাঁ আমি নিশ্চিত। কিন্তু আমি ওকে না নিজের পরিচয় বলতে পারব আর না ওর অতীত। এতে ও ভুল বুঝবে। আমি চাই না ও আমার থেকে দূরে সরে যাক। আমি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চাই প্রথমে।”
মাথা নতজানু করে শান্ত সুরে বলে অনুভব। বর্তমানে সে এখন মুডি অনুভব নেই বড্ড শান্ত হয়ে গিয়েছে। সব ভ্যাম্পায়ারদের নাকি ধৈর্য ধরতে হয়। শান্ত থাকায় তাদের ধর্মের একটা অংশ। কিন্তু অনুভব অন্যরকম হয়ে গিয়েছে। কখনো শান্ত নয়ত কখনো অতিরিক্ত উত্তেজিত বা রাগান্বিত। অনুভবের সামনের মানুষটি কিছু একটা ভাবছেন। কিছু ভেবেই উনি বলেন….
–“শুনেছি প্রকৃতি সব কিছু দুই বার করে ঘটায়। যেমন তার প্রতি তোমার অনুভূতি জন্মাচ্ছে। হয়ত তারও তোমার প্রতি অনুভূতি জন্মাচ্ছে। কারণ ভাবনাও তোমাকে অসম্ভব ভালোবেসেছিল একসময়। সেই একই অনুভূতি আবারও যে অনুভব করবে। ৪৯ বছর আগের ভাবনা আর এখনকার ভাবনার চেহারার মাঝে যে বদল আছে তার কেন জানো? কারণ এটাই তোমার শাস্তি। ও তোমার আশেপাশে থাকবে কিন্তু তুমি ওকে খুঁজে বেরাবে সব জায়গায়, সবখানে। অথচ সে তোমার কাছেই থাকবে।”

চলবে…..🍀🍀
বি.দ্র. দুঃখিত দেরিতে গল্প দেওয়ার জন্য। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আর গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক। বাস্তবতার সঙ্গে কেউ মিলাতে যাবেন না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here