#তোমার_আমার_প্রণয়
#israt_jahan_arina
#part_17
রাতের ঝি ঝি পোকা গুলো আলোর মেলা বসিয়েছে।সুদুরেই তাদের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে।দৃশ্য জানালার ধারে বিছানায় বসে সেই আলোর মিছিল দেখছে।ফোনটা তার কানে।দুই পাশেই কঠোর নিরবতা চলছে।আসলে জীবনে এমন কিছু মুহূর্ত থাকে যখন নিজের অনুভূতি গুলি মুখে প্রকাশ করা জয় না।শুধু দীর্ঘশ্বাস সেই অনুভূতির গভীরতা প্রকাশ করে।দৃশ্য কিছুই বলছে না।কারণ তার দু চোখে অশ্রু ঝরছে।কথা বলতে গেলেই কেঁদে দিবে।
অপর দিকে ও একই অবস্থা।প্রিয় মানুষটার কাছ থেকে দূরে থাকার কষ্টটা আজ মাহাদ হারে হারে টের পাচ্ছে।শুধু ছেলে বলে হাউমাউ করে কাদতে পারছে না।বার বার চোখ ভিজে যাচ্ছে।নিজেকে কেমন উন্মাদ প্রেমিক মনে হচ্ছে।
এই নীরবতার মাঝে দৃশ্য অপর পাশে গিটারের সুর শুনতে পারলো।
Tum mere ho iss pal mere ho
Kal shayad yeh aalam na rahe
Kuch aisa ho tum tum na raho
Kuch aisa ho hum, hum na rahein…
Yeh raaste alag ho jaaye
Chalte chalte hum kho jaayein…
Main phir bhi tumko chahunga…
Main phir bhi tumko chahunga…
Main phir bhi tumko chahunga…
Main phir bhi tumko chahunga…
Iss chahat mein marr jaaunga
Main phir bhi tumko chahunga
Meri jaan mein har khamoshi mein
Tere pyaar ke naghme gaaunga
Mmm…
Main phir bhi tumko chahunga
Main phir bhi tumko chahunga
Iss chahat mein marr jaaunga
Main phir bhi tumko chahunga
Aise zaroori ho mujhko tum
Jaise hawayein saanson ko
Aise talashun main tumko
Jaise ki per zameeno ko
Hansna ya rona ho mujhe
Paagal sa dhoondu main tumhe
Kal mujhse mohabbat ho na ho
Kal mujhko ijazat ho na ho
Toote dil ke tukde lekar
Tere darr pe hi reh jaaunga
Mmm…
Main phir bhi tumko chahunga
Main phir bhi tumko chahunga
Iss chahat mein marr jaaunga
Main phir bhi tumko chahunga
__________________
বিকেলে দৃশ্য আর মাহাদ বসে আছে নদীর তীরে।আজ কোচিং বাংক দিয়ে মাহাদের সাথে বেরিয়েছে।দৃশ্য দূরের ছোট ছোট নৌকা গুলো দেখছে।আর মাহাদ দেখছে তার প্রিয়তমাকে।এই মেয়েটার মধ্যে নিশ্চয়ই কোনো জাদু আছে।নাহলে সে কি করে এই বাচ্চাটার মায়ায় আটকে গেলো।দৃশ্যর চোখ কেমন ফুলে আছে।রাতে কান্না করেছে নিশ্চয়ই।দৃশ্যর এই নিরবতা তার মনটাকে ক্ষত বিক্ষত করে দিচ্ছে।এই মেয়েটা সারক্ষণ বাঁদরামি করে বেড়ায় সেটাই ভালো লাগে।নিরবতা কাটাতে মাহাদ বলতে শুরু করলো
-“এই পিচ্ছি,আমি এখন যা যা বলবো মনোযোগ দিয়ে শুনবে।প্রথমে নিজের খেয়াল রাখতে হবে।পড়াশোনায় যেনো কোনো ফাঁকিবাজি দিতে না শুনি।ভদ্র মেয়ের মতো স্কুলে যাবে আর আসবে।কোনো দুষ্টুমি করা যাবে না।মোস্ট ইম্পর্টেন্ট কোনো ছেলের সাথে কথা বলবে না।তাহলে আমার চাইতে খারাপ কেউ হবে না।কেউ ডিস্টার্ব করলে সাথে সাথে আমাকে জানাবে।”
এতটুকু বলে মাহাদ কয়েকটা ঢোক গিলে নিলো।গলা কেমন কাপছে।একটু পানি পান করতে পারলে ভালো হতো।আবার বলতে লাগলো
-“ফোন সারাক্ষণ নিজের পাশে রাখবে। একবারের জায়গায় দুইবার যেনো কল দেওয়া না লাগে।”
কথাগুলো বলে দৃশ্যর দিকে তাকালো।দৃশ্য ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদঁছে।ইসস! এই মেয়েটা এত কিউট করে কাঁদছে কেনো? কিন্তু কারো কিউট কান্না অন্য কারো মনে কি আসলেই প্রবল ঝড় তুলে দিতে পারে?তাহলে তার সাথে এমন কেনো হচ্ছে? মন চাইছে দৃশ্যকে বুকের সাথে মিশিয়ে ফেলতে। মাহাদ দৃশ্যর চিবুকে দু হাতে স্পর্শ করে বললো
-“আর এইভাবে কাঁদতে পারবেনা।”
দৃশ্যর চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে ‘তুমি কোথাও যেওনা মাহাদ। আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না। তোমাকে প্রতিদিন না দেখলে আমি দম বন্ধ হয়ে মারা যাবো। প্লিজ তুমি যেওনা। যদি যেতে হয় তবে আমায় সঙ্গে নিয়ে যাও। তোমার বুকের মাঝে লুকিয়ে থাকতে চাই।’
কিন্তু দৃশ্য এমন কিছুই বললো না।
দৃশ্য কাঁদতে কাঁদতে বললো
-“আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।”
কথাটা বলে দৃশ্য মাথা নিচু করে নিলো। মাহাদ তার মুখ তুলে বললো
-“তুমি এমন করে কাঁদলে আমিতো যেতে পারবো না। প্লিজ কাদে না পাখিটা।”
দৃশ্য অনেক কষ্টে নিজেকে সামলালো। মাহাদ দৃশ্যকে দার করালো আর নিজের পকেট থেকে একটা পায়েল বের করে দৃশ্য পা নিজের উরুতে নিয়ে তা পরিয়ে দিলো।দৃশ্য কেঁপে উঠলো। অদ্ভুত অনুভুতি হচ্ছে।এতো বিষাদের মাঝে কিছুটা শুভ্রতা ছড়িয়ে পড়লো তার মনে।
দুজনে বেশ কিছুক্ষন নদীর তীরে হাঁটলো।আজ রাতেই মাহাদ ঢাকায় যাবে।তাই প্রিয়তমাকে মন ভরে দেখে নিচ্ছে।যাওয়ার সময় চলে আসলে মাহাদ হঠাৎ দৃশ্যকে জড়িয়ে ধরে।আর বাচ্চাদের মতো কাঁদতে শুরু করে।সে তার অনুভূতির সাথে আর যুদ্ধ করতে পারছে না।এই মেয়েটা তাকে দুর্বল করে দিয়েছে।ভীষণ দুর্বল।
এমন ঘটনায় দৃশ্যও অনেকটা অবাক।কারণ এই প্রথম সে এই সুদর্শন যুবকটিকে বাচ্চাদের মত কাঁদতে দেখছে। দৃশ্যও নিজের সংকোচ ভুলে তাকে জড়িয়ে ধরলো।কিছুক্ষণ পর মাহাদ কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠলো
-“আই লাভ ইউ দৃশ্য পাখি।ভীষণ ভালোবাসি তোমাকে।”
দৃশ্যর মনে অন্যরকম প্রশান্তি বয়ে গেলো।এই ছেলেটা তাকে অনুভূতির জালে আটকে মেরেই ফেলবে।আজ প্রথম সে এই মেজিকাল ওয়ার্ড মাহাদের মুখ থেকে শুনলো।সে জানে এই মানুষটা তাকে পাগলের মতো ভালবাসে।তবুও আজ তার মুখে শুনে ভালো লাগছে।অসম্ভব ভালো।দৃশ্য মুচকি হেসে মাহাদ কে আরো গভীর ভাবে জড়িয়ে ধরে বললো
-“আই লাভ ইউ টু।”
মাহাদের মুখে হাসি ফুটে উঠলো।এই পিচ্চির মুখে এই শব্দটা এতো মধুর শুনাবে জানলে আরো আগেই এই কথাটা বলে দিতো। এখন থেকে দিনে একশো বার দৃশ্যর মুখে এই শব্দ না শুনলে তার কলিজা ঠান্ডা হবে না।
__________________________
ফাহিম কয়েকদিন ধরে খেয়াল করছে তমা আর তেমন একটা বারান্দায় আসে না।এই মেয়ে তো প্রতিদিন তার রুমে উকিঝুকি দেয়।তার বাসায় আসা যাওয়ার টাইম মনে হয় এই মেয়ের মুখস্ত।তবে সেদিনের পর থেকে সে তমাকে আর দেখতে পায়নি।সে কি খুব বেশি খারাপ ব্যাবহার করে ফেলেছে?এই হলো তার সমস্যা।হুট হাট তার মাথা গরম হয়ে যায়।তবে সে তমাকে মোটেও সরি বলবে না।এটা তার ধাতে নেই।ভীষণ ইগো প্রবলেম আছে। এ কারণেই প্রায় দিন সে যার তার সাথে মারামারি করে বাসায় ফেরে।তাদের বংশে ছেলেদের দাপট বরাবর বেশি।তবে সে মেয়ে সংক্রান্ত বিষয় থেকে দূরে থাকতে পছন্দ করে।তাই রকির মেয়েবাজ সভাব তার পছন্দ না। এর আগেও রকির এই সভাবের জন্য বেশ ঝামেলায় পড়তে হয়েছে।রকি তার ছোট বেলার বন্ধু।তাই তাকে ইগনোর করতে পরে না।তাছাড়া বন্ধুদের জন্য সে জীবন দিতেও প্রস্তুত।
পানি খেতে ডাইনিংয়ে এসে ফাহিমের চোখ পড়লো দৃশ্যর রুমের দিকে।এতো রাতেও দৃশ্যর রুমের লাইট অন।ফাহিম দৃশ্যর রুমের দরজায় নক করলো।কিছু সময় পর দৃশ্য দরজা খুলে দিল।বোনকে দেখে তার আজকাল চিন্তা হচ্ছে।মেয়েটা বেশ কয়দিন ধরে কেমন চুপ হয়ে গেছে।সে চিন্তিত হয়ে বলো
-“দৃশ্য কিছু হয়েছে? তোকে অনেক আপসেট মনে হচ্ছে।বাবা কিছু বলেছে?”
দৃশ্য মলিন হেসে বললো
-“না ভাইয়া।আমি ঠিক আছি।”
-“রাস্তায় কি কোনো ছেলে ডিস্টার্ব করেছে?”
-“তেমন কিছু না।এমনই শরীর ভালো লাগছে না।”
-“কাল ঘুরতে যাবি?”
-“না ভাইয়া।অন্য কোনো দিন।”
-“আচ্ছা তুই ঘুমিয়ে পর।রাত জাগিস না।”
কথাটা বলে ফাহিম চলে যেতে নিলে দৃশ্য বলে উঠলো
-“তমা আপুর গায়ে হাত তোলা তোমার ঠিক হয়নি।মেয়েটা তোমাকে ভীষণ ভালোবাসে।আর তুমি তাকে শুধু কষ্ট দাও।যেদিন এই ভালোবাসা দূরে হারিয়ে যাবে তখন বুঁজবে।”
ফাহিম অবাক হয়ে দৃশ্যর দিকে তাকিয়ে আছে।হঠাৎ করেই দৃশ্যকে অনেকে বড়ো মনে হচ্ছে।আসলেই তার ছোটো বোন টা বড়ো হয়ে যাচ্ছে।
মাহাদ ঢাকা চলে গেছে আজ সপ্তাহ খানেক হলো।দৃশ্যর মনটা অস্থির হয়ে থাকে তাকে একটা বার দেখার জন্য।বুকে কেমন চিনচিন ব্যাথা অনুভব হয়।কোচিং এর সেই গলিতে আর কেউ তার জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করেনা।কেমন শূন্য শূন্য লাগে। মাহাদের সাথে তার প্রতিদিন কথা হয়।ভিডিও কলে দেখা হয়।কিন্তু এতে তার মন ভরে না।
রাতে মাহাদ কল করেছে।দৃশ্য যেনো সেই অপেক্ষাতেই ছিলো।সাথে সাথে কল রিসিভ করে নিলো।মাহাদ বলে উঠলো
-“দৃশ্য পাখি একটু বাসার নিচে আসো।”
দৃশ্য বুঝতে না পেরে বললো
-“মাথা খারাপ?রাত বারোটা বাজে এতো রাতে নিচে যেয়ে কি করবো?”
-“মাথা আমার আসলেই খারাপ হয়ে গেছে।এখন জলদি আসো নাহলে আমি ওপরে চলে আসবো।”
দৃশ্য যেনো আকাশ থেকে পড়লো।মাহাদ রাজশাহী কখন আসলো।আর তার বাসার নিচে মানে? দৃশ্য বললো
-“তুমি আমার বাসা কি ভাবে চিনো?”
-“তোমার কি মনে হয় আমি কোনো দিন তোমায় ফলো করিনি?”
দৃশ্য খুশিতে কি করবে বুঝতে পারলো না।সে রুমের দরজা খুলে দেখলো সবাই যার যার রুমে আছে।আর রুমের লাইট বন্ধ।তার মানে সবাই ঘুমিয়ে গেছে।দৃশ্য এক ছুটে নিচে আসলো।আসলে প্রেমে পড়লে ভয়,লজ্জা অনুভব হয়না।প্রিয় মানুষটাকে একটা বার দেখার জন্য সব ভয়কে জয় করা যায়।দৃশ্যর সাথেও তাই হচ্ছে।
সাবধানে সে গেট খুললো।তার কাছে চাবি থাকে তাই অসুবিধা হয়নি।গেট খুলে কাউকে দেখতে পেলনা।মুহূর্তে তার মন খারাপ হয়ে গেলো।মাহাদ কি তার সাথে মজা করলো?যদি এটা মজা হয় তবে সে এই লোকের সাথে আর কোনো দিন কথা বলবে না।তার চোখ জোড়া ভিজে উঠলো।
দৃশ্য ফিরে আসতে গেলে কেউ তার হাত ধরে হেছকা টান মারে।আর দৃশ্য সোজা মানুষটার বুকে যেয়ে পড়ে।ভয়ে তার কলিজা অব্দি শুকিয়ে গেছে।এই রাতে কে এমন করতে পারে?আবার ভুত নয়তো?ভয়ে আর আতঙ্কে তার পুরো শরীর কাপতে শুরু করলো। ভয়ে সে চোখজোড়া খোলার সাহস পাচ্ছে না। চোখ খুললেই মনে হয় কোন বিচ্ছিরি আর ভয়ঙ্কর চেহারা দেখতে হবে। তবুও সাহস নিয়ে মাথা উঁচু করলো।মাথা তুলে দেখতে পেলো কাঙ্ক্ষিত মানুষটাকে।মাহাদ মুচকি মুচকি হাসছে।কাধে তার ব্যাগ।দৃশ্য অভিমানে মাহাদের বুকে কয়েকটা কিল বসিয়ে দিলো।মাহাদ বললো
-“আরে আস্তে।মেরে ফেলবে নাকি?”
এতক্ষণে দৃশ্যর হিছকি উঠে গেছে।সে বললো
-“হে মেরে ফেলবো।একদম মেরে ফেলবো।আমাকে ভয় দেখানো?”
-“আরে বাবা সরি।আর এমন করবো না।”
কথাটা বলেই সে এক হাতে নিজের কানে ধরলো। মাহাদকে এই অবস্থায় ভীষণ কিউট লাগছে। ল্যাম্পোষ্টের সবুজ আলোতে মাহাদের ধূসর চোখজোড়া ঝলঝল করছে। আসলেই এই মানুষটার কাছ থেকে দূরে থাকা দৃশ্যের জন্য প্রায় অসম্ভব।
-“তুমি এখন রাজশাহীতে কি করো?আর কখন এসেছো?”
-“মাত্র আসলাম পিচ্ছি।আর একদিন তোমাকে না দেখলে দম আটকে মারা যেতাম।নিজেকে কেমন পাগল পাগল লাগছিলো।এই তুমি কোনো ব্ল্যাক মেজিক করনি তো?”
-“ফালতু কথা বলবেনা। তাই বলে এতো রাতে কেনো আসলে?যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটতো?”
দৃশ্যর কপালে একটা চুমু খেয়ে বললো
-“কিছু হতোনা পাগলী।তোমাকে না দেখে আর থাকতে পারছিলাম না তাই চলে এসেছি।”
দৃশ্য মাহাদের বুকে মাথা রেখে বললো
-“আই মিস ইউ মাহাদ।”
-“আই মিস ইউ টু পাগলী।তুমিতো দিন দিন সুন্দর হয়ে যাচ্ছ।আমার ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে।এতো সুন্দরী পিচ্চিকে রেখে সেখানে শান্তি পাচ্ছিনা।”
দৃশ্য লজ্জায় মিয়ে গেলো। মাহাদ কেন তার চিন্তা করে? চিন্তা তো দৃশ্যর করার কথা। সুদর্শন যুবকটি নিশ্চয়ই সেখানেও মেয়েদের হার্টবিট বন্ধ করে রেখেছে। দৃশ্যের মাঝে মাঝে ভীষণ ভয় হয়। মাহাদ কে হারিয়ে ফেলার ভয়।
এর পর থেকে প্রতি সপ্তাহেই মাহাদ চলে আসতো প্রিয়তমাকে দেখতে।সেই দিন তারা কোচিং ফাঁকি দিয়ে ঘুরে বেড়াতো।
মৌ বিকেলে বের হয়েছে কোচিংয়ের জন্য।বাসার গেট থেকে বের হতেই তার চোখ চড়গাছ।এই ছেলে এইখানে কি করে?
মৌ অবাক হয়ে বললো
-“আপনি আমার বাসার সামনে কি করছেন?”
-“এটা তোমার বাসা জানতাম না তো?আর তোমাদের বাসার সামনে এই ফালতু কুত্তা কে রেখেছে?আমাকে দেখেই ঘেউ ঘেউ শুরু করেছে।”
-“আপনি না ঢাকায় চলে গিয়েছেন? তাহলে এখানে কি করছেন?”
-“আরে আমার শ্বশুরবাড়ি খুজছিলাম।”
-“আপনার শ্বশুর বাড়ি?”
-“আরে মাহাদ আর দৃশ্যর বাচ্চাদের একটাই ডিমান্ড তার এই গলি থেকেই মামী আনতে হবে। তাইতো এই গলিতে শ্বশুরবাড়ি খুঁজছি।”
মৌ বিরক্ত হয়ে ভাবতে লাগলো
‘ এই ছেলের মাথার তার নির্ঘাত ছিড়ে গেছে। শহরের বাতাস লেগে মাথাটা পুরাই গেছে। না হলে এমন উল্টাপাল্টা কথা বলছে কেনো?’
এর মধ্যে মাহাদের রেজাল্ট বের হয়েছে। মাহাদ জিপিএ 5 পেয়েছে।কিছুদিন পর মাহাদ ডি ইউ তে চান্স পেয়ে যায়। এতে আমজাদ রহমান ভীষণ খুশি।দুই বাপ ছেলে মিলে ফ্ল্যাটে থাকে। ঢাকায় একটি বিশাল জায়গা কিনে রেখেছেন তিনি।ভবিষ্যতে একটা সুন্দর বাড়ি করতে চান।মাহাদ লেখা পড়ার পাশাপাশি গানের প্র্যাকটিস করে চলছে।আর নিজের প্রচেষ্টায় একটা বিজনেস দাঁড় করাতে চাচ্ছে।
গানের সুবাদে ভার্সিটির সকলের কাছেই সে পরিচিত মুখ।আর মেয়েদের হার্টবিট।কিন্তু তার হার্টবিট তো রাজশাহীতে পরে আছে। জয়ও ঢাকাতে জাহাঙ্গীর নগরে ভর্তি হয়েছে।রাফসান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আছে।আর তানিম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।চার বন্ধু ছিটকে পড়লেও নিয়মিত তাদের যোগাযোগ হয়। তানিমকে সে দৃশ্যর খেয়াল রাখার দায়িত্ব দিয়েছে।
ছেলেকে ঘন ঘন রাজশাহীতে আসতে দেখে আমজাদ রহমান মাহাদ কে উদ্দেশ্য করে বললো
-“বাবাজান আপনি এত ঘন ঘন বাসায় কেনো জান?”
বাবার কথায় মাহাদ কিছুটা লজ্জা পেলো।ছেলেকে তিনি আবার বললেন
-“এতো লজ্জা পেতে হবে না। তা মেয়েটা কে?”
মাহাদ এবার কিছুটা চমকালো।তিনি আবার বললেন
-“তোর বাইকে গতকাল একটা মেয়েকে দেখলাম।আমাদের বৌমা নাকি?”
মাহাদ ভীষণ লজ্জা পেয়ে বললো
-“আসলে বাবা তোমাকে আগেই বলতে চেয়েছিলাম।কিন্তু…
আমজাদ রহমান আর বলতে না দিয়ে বললেন
-“সেটা সমস্যা না।মেয়ের ঠিকানা দে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাই।”
-“বাবা তুমি কি যে বলো না।আমি এখনো স্টাডি শেষ করিনি।আর তা ছাড়া তোমাদের বৌমা অনেক ছোট।আর একটু বড় হোক।”
-“আমার কিন্তু মেয়েটাকে ভীষণ পছন্দ হয়েছে।যে করেই হোক এই মেয়েকেই আমার বৌমা বানাবি।”
মাহাদ মুচকি হেসে বললো
-“ইনশাআল্লাহ।”