#বৃষ্টির_রাতে
#রূবাইবা_মেহউইশ
(২৯)
ক্যাম্পাস জুড়ে রঙ বাহারি শাড়িতে সুন্দরী ললনাদের মেলা বসেছে। ছেলেরাও তাতে পিছিয়ে নেই বেশিরভাগের গায়েই পাঞ্জাবী আজ। সুপ্রভা শাড়ি পরবে না পরবে না করেও পরে নিলো। হোস্টেলে তার কোন শাড়ি আনা হয়নি তাই কাল সন্ধ্যের দিকে মার্কেটে গিয়েছিলো। সেদিন তাসিনের সাথে দেখা হওয়ার পর আবারও দুদিন কেটে গিয়েছিলো যোগাযোগবিহীন। মনের ব্যকুলতা থাকলেও বিভিন্ন কারণেই সুযোগ হয়নি কথা বলার। সুপ্রভা রাতের বেলায় সুযোগ পেত কিন্তু কোথা হতে ঝুপ করে এক পশলা সংকোচ এসে বসতো তার মনে। মন বলতো, একটা ছেলেকে যেচে পড়ে কল দেওয়াটা বিশ্রী লাগে। আবার মনটাই বড্ড জ্বালিয়ে বলল, সে তো তোকে কখনোই যেচে কল দেবে না। তার প্রেমে পাগল তুই হয়েছিস বেহায়া তো একটু হতেই হবে!
মনের যুক্তি মস্তিষ্কে খাটে না। তবুও তিনদিন পার করে মনের সংকোচ দূর করে সন্ধ্যা বেলায় সুপ্রভা কলটা দিয়েই ফেলল। তাসিন সবে অফিস থেকে বেরিয়েছিল। সুপ্রভার কল দেখে সারাদিনের ক্লান্তিমাখা মুখটাতে এক ঝলক শান্তি দেখা দিলো। মনে মনে দুটোদিন সেও বড় দ্বিধায় পড়ে ভেবেছিলো সুপ্রভাকে একটা কল করবে। আজ তো চমৎকার একটা প্ল্যানও সাজিয়েছিলো কল করার এবং সুযোগমতো দেখা করার। কিন্তু তার মনে হলো ওপরওয়ালা তাকে এতোটাও পরিশ্রম করাতে চান না তাইতো মিথ্যে বাহানা ছাড়াই কথা বলার সুযোগ দিলো।
কল রিসিভ করে সাধারণ কথাই হলো প্রথমে তারপরই তাসিন জিজ্ঞেস করলো, “কি করছো তোমার আশপাশে গাড়ির শব্দ শোনা যাচ্ছে।”
তাসিনের এই প্রশ্নটাতে কি একটু অধিকারসূচক সাউন্ড ছিলো! সুপ্রভার মনে হলো কেমন যেন একটু অধিকার মিশ্রিত ছিলো কথাটা। সেও জবাবে কেমন কৈফিয়ত দেওয়ার মত করে বলল, “আসলে কাল ইউনিভার্সিটিতে সিনিয়রদের একটা অনুষ্ঠান আছে। কিছুটা মেলার মতও হবে আয়োজনটা। ক্যাম্পাসের অনেকেই ছোট খাটো স্টল খুলবে আবার অনেকে মিলে দুয়েকটা নাটক আর গানেরও আয়োজন করেছে। তো আমার ডিপার্টমেন্টের মেয়েরা সবাই শাড়ি পরবে কিন্তু আমার তো শাড়ি নেই তাই বেরিয়েছিলাম।”
ওপাশ থেকে তাসিন শুধু বলল, “ওহ আচ্ছা।”
রাত নামছে ভুবন জুড়ে সেই সাথে নামছে শহুরে কোলাহলের এক ভিন্ন নিস্তব্ধতা। তাসিন কি অজান্তেই পা বাড়িয়েছে সুপ্রভার হোস্টেলের গলিতে! হবে হয়তো তার এপার্টমেন্ট অফিস পথের সোজাসুজি অথচ সে হাটছে দক্ষিণ দিকের পথে। সুপ্রভা রিকশা ডেকে তাতে উঠে পড়লো। তাসিনকেও অকপটে জিজ্ঞেস করলো, “আপনি কি করছেন?”
এটা কি প্রশ্ন ছিলো নাকি দেখা হওয়ার একটা সুযোগ! তাসিন চমকে ওঠে বলে বসলো, ভাবছিলাম মার্কেটে যাব দুয়েকটা টিশার্ট কেনা দরকার। কিন্তু এদিকটায় তো ঠিকঠাক চিনি না সব।
তাসিনের এই কথাটা কি খুব হাস্যকর ছিলো! এমনই তো মনে হচ্ছে তাইতো সুপ্রভা শোনামাত্র খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো।
“হাসছো কেন?”
“হাসার মত কথা বললে হাসবো না! আপনি কি নিজেকে হারিয়ে ফেলার ভয় পাচ্ছেন নাকি? বেশিই ভয় পেলে বলুন আমি নিয়ে যাচ্ছি মার্কেটে। ছোট বাচ্চা বলে কথা হারিয়ে গেলে আবার আন্টি কান্না করবেন তাঁর বাবুটা হারিয়ে গেল বলে।”
হাসি একটুও কমেনি সুপ্রভার তেমনি হেসে চলছে৷ রিকশাওয়ালা অবশ্য বার দুয়েক পেছন ফিরে দেখেছে তাকে। হয়ত ভাবছে এ কোন পাগল উঠেছে রিকশায়!
তাসিন কয়েক সেকেন্ড চুপচাপ হাসিটা শুনে বলে বসলো, “রাক্ষসী হাসিটা শেষ হলে লোকেশনটা বোলো আমিও আসছি মার্কেটে।”
“সেও আসবে!” এই একটা কথাতেই আবার ঝিরিঝিরি হাওয়ায় পাতার কেঁপে উঠার মত মনটাও কেঁপে উঠলো। এ কি অবস্থা তার! তাসিনকে তো এই প্রথম দেখছে না সে। আগেও দেখেছে বরং কাকতালীয় ভাবেই প্রথম দিককার দেখাগুলো হয়েছিলো তখন তো সব স্বাভাবিক ছিলো। এখন কেন এমন লাগে তার! তাসিনের সাথে কথা বলার সুযোগ খোঁজা আবার দেখা হলেই মন নেচে ওঠে, লজ্জায় রাঙা হয় এ কেমন অস্বস্তি! মনের লজ্জা আড়াল করে লোকেশনটা বলে দিলো সুপ্রভা। মিনিট পনেরো না গড়াতেই তাসিন এসে হাজির সুপ্রভার বলা জায়গায়। সুপ্রভা অবশ্য আরো মিনিট সাতেক আগেই এসে মার্কেটের সামনে এসে অপেক্ষা করেছিলো। তারপরই দুজনে প্রথমেই শাড়ির দোকান গুলোতে ঢুকেছে। সুপ্রভা বলেছিলো আগে আপনার কেনাকাটা হোক। তাসিন বাঁধ সাধলো, আমারটা খুব বেশি জরুরি না সো লেডিস ফার্স্ট।
চার, পাঁচটা দোকান ঘুরেও সুপ্রভা একটা শাড়িও চুজ করতে পারেনি দেখে তাসিন জানতে চাইলো অনুষ্ঠানের জন্য স্পেসিফিক কোন রঙটা দেওয়া হয়েছে। সুপ্রভা জানালো তাদের তেমন কোন ডিসকাসন হয়নি যার যা পছন্দ তাই পরবে। এতেই সহজ হয়ে গেল যেন ব্যপারটা। তাসিন বলে উঠলো, “তবে তো নীল, সাদা, আকাশী অথবা লেবুরঙা একটা নিলেই হয়। না মানে মেয়েরা সাধারণত এসব রঙই বেশি পরে আমার ধারণা।”
“মেয়েদের ব্যপারে আপনিএকটু বেশিই অভিজ্ঞ মনে হচ্ছে।”
কথাটায় সুক্ষ্ম একটা টিপ্পনী ছিলো তাসিন তা বুঝতে পেরে বাঁকা হাসলো। সেও দুয়েকটা জবাব দিতে ছাড়লো না। আর এরই মাঝে একটা দোকানে ঢুকে একটা শাড়ি তাসিনেরই খুব পছন্দ হয়ে গেল। একদম সুতি গাঢ় নীল শাড়িতে লেবুরঙা ছোট ছোট ফুল। আর দুপাশের পাড় জুড়ে সম্পূর্ণ লেবুরঙা। তাসিন শাড়িটা দেখেই বলল, “এটা নিতে পারো দারুণ লাগছে দেখতে।”
সুপ্রভা আঁড়চোখে তাসিনকে একবার দেখে শাড়িটা হাতে নিলো। সত্যি বলতে তারও খুব পছন্দ হলো শাড়িটা তাই আর কথা না বাড়িয়ে দাম জিজ্ঞেস করলো। কি মনে করে তাসিন দাম মিটাতে চাইলো। কিন্তু এভাবে সরাসরি শাড়ি কিনে দেওয়ার মত সম্পর্ক তো তাদের মাঝে নেই তা ভেবেই আবার বলল, “তোমার তো একটা ট্রিট পাওনা ছিলো। তা দেওয়া হচ্ছে না তাই এভাবেই ট্রিট উসুল করে দিচ্ছি।”
সুপ্রভা রাজী হলো না। সে বলল তার ট্রিট ডিনারেই চাই। তাসিন আর জোর করলো না বাড়াবাড়ি হবে বলে। সুপ্রভা শাড়ির সাথে মিলিয়ে কিছু নীল আর লেবুরঙা চুড়িও কিনলো। গলা আর কানের জন্য অনেক খুঁজেও কিছু পছন্দ করতে পারলো না বলে বাদ দিলো কেনা। তাসিনকে যখন বলল তার টি শার্ট দেখতে সে মাথা চুলকে বলল, “আজ অনেক দেরি হয়ে গেছে কাল বরং আসি।”
সুপ্রভারও বুঝি মাথায় কোন দুষ্ট কিংবা লাজুক এক বুদ্ধি খেলেছিলো তাই তৎক্ষনাৎ সম্মত হয়ে বলল ঠিক আছে চলুন ফিরি। সাড়ে আটটার মধ্যে ফিরে এসেছিলো তারা আপন গন্তব্যে। আর রাতভর চমৎকার কিছু আইডিয়া সাজিয়ে সকালে তৈরি হয়ে চলে এসেছে ক্যাম্পাসে। আর এখন অপেক্ষা সন্ধ্যে নামার। মেহরিনের সাথে দেখা হয়েছে ক্যাম্পাসে আসতেই কিন্তু মেয়েটা তাকে এড়িয়ে চলছে। সৌহার্দ্যও এসেছে কিন্তু সুপ্রভা তাকে পাত্তা না দিয়ে নিজের ডিপার্টমেন্টের কয়েকজনের সাথে আড্ডা আর ঘুরাঘুরি করছে। মনের ভেতর রঙিন প্রজাপতিরা ওড়ে ওড়ে সন্ধ্যে নামার অপেক্ষায় তাকে অস্থির করে তুলছে।
আজও এহসান চোরের মতন কলেজের গেইটের আশপাশে দুয়েক রাউন্ড চক্কর লাগিয়েছিলো। কিন্তু তার একজন মধ্যবয়স্ক কনস্টেবল আজ কিছুটা সরাসরিই বলে ফেলেছে, “এভাবে মেয়ের পেছনে ঘুরাঘুরি করাটা বোধহয় ঠিক যায় না স্যার আপনার চরিত্রে। রাগ করবেন না স্যার প্লিজ এলাকায় একটু আধটু এই নিয়ে কানাঘুষা হতে শুনেছি।”
এহসান কথাটা শুনে সত্যিই রাগ করেনি বরং একটু আহত হলো। নিজের কাছেই নিজেকে কেমন অসহ্য ঠেকলো। সত্যিই তো পদমর্যাদার কথা ভেবে অন্তত তার এমন করা উচিত নয়। এমনিতেই আমাদের দেশে পুলিশ আর আর্মিদের নিয়ে জনসাধারণের ধারণা বেশ তরল। পু’লিশ মানেই ঘু”ষখোর, জো’চ্চোর আর আ’র্মি মানেই বউ পে”টায়। নিজের প্রতি একটু রাগও হলো এহসানের। সে তো এখন আর সেই বিশ, বাইশ বছরের তরুণ নয়। এখন তো তার নিজের আবেগ, অনুভূতির ওপর প্রবল নিয়ন্ত্রণ আনতে পারে সে তবে কেন ওই পুঁচকে আর কপাল কুঁচকে রাখা মেয়েটার প্রতি এত দূর্বল হচ্ছে! সে খোঁজ নিয়ে জেনেছিলো মেয়েটি মোটামুটি ভালো অবস্থাপন্ন পরিবারের একমাত্র মেয়ে। এবং মেয়েটির বাবা যথেষ্ট শিক্ষিত সে হিসেবে মেয়েকে নিশ্চয়ই একটা বয়স পর্যন্ত পড়াশোনা করিয়ে তবেই পাত্রস্থ করবেন। ততদিনে তো এহসানের দু একটা ছেলেমেয়েও হয়ে যাবে। এমনিতেই মা সেই কবে থেকে পাত্রী দেখার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ সপ্তাহেও দুজন পাত্রীর ফটোসহ বায়ো পাঠিয়েছেন। কি যে হবে তার এই মন নিয়ে! মাকে বলে দিতে ইচ্ছে করে মেয়েটির কথা কিন্তু মা তাহলে সরাসরি প্রস্তাব নিয়ে হাজির হবেন। আর মেয়ের পরিবার হয় ‘হ্যাঁ’ বলবে অথবা ‘না’। যদি উত্তর ‘না’ হয়! নাহ, আর ভাবা যায় না এসব। কষ্ট লাগে এহসানের তার মনে হয় একটু চান্স কি নিয়ে দেখা ভুল হবে! কয়েকটা দিন যাক চোখে চোখে মেয়েটা যদি তাকে নিয়ে একটু ভাবে তাহলে ক্ষতি কি? বরং এটাই ঠিক নিজ থেকেই চেষ্টা করে দেখুক কোন পজিটিভ সাইন পাওয়া যায় কিনা। ভাগ্য ভালো হলে হতেও তো পারে৷
সারাটাদিন ক্যাম্পাসের ভেতরই এটা সেটা কেনা, গান শোনা, সিনিয়রদের করা মঞ্চ নাটক দেখা আবার লান্চের জন্য ফ্রেন্ডরা মিলে ক্যাম্পাসের সামনের ডিলাইট ফুড কর্ণারে গিয়ে মজার মজার খাবার খাওয়া এসবেই কেটে গেছে। সারাদিনের হুল্লোড়ে সুপ্রভার সাথে আরো একটা ভালো ঘটনা ঘটলো মেহরিনের ‘স্যরি’ বলা। সৌহার্দ্য আর সুপ্রভা দুজনকেই স্যরি বলেছে সে। এবং সেই খুশিতে সুপ্রভা আইসক্রিম ট্রিট দিয়েছিলো সৌহার্দ্য আর মেহরিনকে। এদিকে সৌহার্দ্যও পুরনো বন্ধুত্ব ফিরে পাওয়ার আনন্দে দুই বান্ধবীকে একটি করে দারুণ দুটো চিরুণি গিফট করেছে৷ কাঠের চিরুনি দুটোতে মেহরিন আর সুপ্রভার নাম খোদাই করার সুযোগ থাকায় তাই করে দিয়েছে। আজকের দিনের আনন্দ অনুষ্ঠান চরম আনন্দে কেটে গিয়ে সন্ধ্যে মুহূর্তে সুপ্রভার চেহারার অবস্থা লাগছিল ভীষণ বিধ্বস্ত। মেহরিন তার এক আত্মীয়ের বাড়ি থাকে বলে আগেই চলে গেছে। সৌহার্দ্য গাড়ি এনেছে বলে সুপ্রভাকে বলল, “চলো তোমায় হোস্টেলে পৌঁছে দেই।”
সুপ্রভা আঁতকে উঠে বলল, না না তুমি চলে যাও আমার একটু কাজ আছে।
সৌহার্দ্য জানতে চাইলো কি কাজ৷ সুপ্রভা তা এড়িয়ে গিয়ে বলল সৌহার্দ্য যেন চলে যায়। ব্যাপারটা সৌহার্দ্যের ভালো লাগলো না কিন্তু জোর জবরদস্তিও করলো না। আজই তো সব স্বাভাবিক হলো আজই তাকে চটিয়ে দিতে চায় না। সুপ্রভা ফোন স্ক্রীণে সময় দেখলো পাঁচটা বাজে সবে। তাসিন বলেছিলো তার অফিস টাইম পাঁচটা পর্যন্ত। কিন্তু একদম এ সময়টাতেই কি ফোন দেওয়া ঠিক হবে! লোকটা আবার কিছু ভেবে বসবে না তো! দ্বিধার পাহাড় বুকে নিয়েই কলটা করে বসলো সুপ্রভা। মাত্রই কম্পিউটার শাট ডাউন করে এলোমেলো ফাইলগুলো গোছাতে হাত দিলো ফাইলে। আর সেই মুহূর্তেই ফোনটা ভাইব্রেট করলো পকেটে৷ বা হাতে ফাইলগুলো সামনে টেনে ডান হাতে ফোনটা বের করলো। কলারের নাম দেখেই ঠোঁটে চওড়া হাসি টানলো। এমন কিছুই তো চাচ্ছিলো মনে মনে। অগোছালো ফাইল অগোছালোই রয়ে গেল ডেস্ক জুড়ে৷ জরুরি কিছু কাগজপত্রও আছে সেগুলোতে৷ কি ভেবে ফোনটা কানে ধরে সবগুলো ফাইলো এলোমেলো অবস্থাতেই তার লকওয়ালা ড্রয়ারে রেখে লক করে দিলো। ওপাশ থেকে ভেসে এলো রিনরিনে কণ্ঠ, “টি শার্ট কিনবেন বলেছিলেন না রিকশা নিয়ে সেই লোকেশনেই চলে আসুন।”
ঠোঁটের হাসি বোধহয় এবার চোখেও ভাসলো তাসিনের। সুপ্রভার এমন কথাগুলো শুনলে কেমন যেন আপন আপন অনুভূতি গাঢ় হয়। মেয়েটা কি বোঝে তার এমন আদেশ, আজ্ঞা শুনলে মনে হয় ঘরের ঘরণী কিংবা বহুদিনের প্রেম করা প্রেমিকা বলছে কথাগুলো! গুনে গুনে পঁচিশ মিনিট সময় লাগলো তাসিনের পৌঁছুতে। মনের ভেতর যে উত্তেজনা তাকে অস্থির করে তুলছিলো তা দ্বিগুণ হলো সুপ্রভাকে প্রথম পলক দেখতেই। কালকের কেনা নীল শাড়িটা পরনে দু হাত ভর্তি গাছি গাছি চুড়ি, চোখের কোলে লেপ্টে আছে কাজল , নাকের ওপর আর আশপাশটা চিটচিটে তেল, কপালেও ঘাম আর তৈলাক্ততায় লেগে আছে এলোমেলো কিছু চুল। ঠোঁটের মাঝে আবছা আবছা লিপস্টিকের ছাপ। গভীর দৃষ্টিতে লক্ষ্য করতেই তাসিনের মনে হলো কপালের মাঝে একটা টিপের কমতি রয়ে গেছে। অথচ সুপ্রভা কিন্তু কানে, গলায় কিছুই পরেনি। তার সকল সজ্জা হাত আর চোখেই ছিলো। চুলগুলো অবশ্য খোলাই রেখেছিলো। কখন যে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে হাত খোঁপা করেছিলো মনে নেই।
তাসিন অবাক চোখে চেয়ে থেকে স্বগোতক্তির মত বলে উঠলো, “তুমি খুব সুন্দর মেয়ে!”
“কিহ!”
“Tu eres belissima chica” (spanish)
“এটা আবার কি?”
চলবে
(গত পর্ব ঘুমঘুমে চোখে লিখেই পোস্ট করে দিয়েছিলাম। আজ একটু খেয়াল করতেই দেখি ভুল বানানের সাগর বানিয়ে ফেলছি 😑)