প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
#সিজন_২
#পর্ব_৪৮
#Writer_Afnan_Lara
🌸
আমার কি মানে?যেটা জিজ্ঞেস করেছি সেটার উত্তর দাও সোজাসুজি,কথা ঘুরাতে হবে না এতো
.
রতন একদিন জোরাজুরি করতে চেয়েছিলো তো আমি দৌড়াতে গিয়ে পড়ে হাতের এমন অবস্থা হয়েছে
.
কত বছর ধরে জ্বালিয়েছে তোমাকে?
.
অনেক বছর ধরেই
.
এই জন্যই তোমাকে বিয়ে করে বাঁচিয়ে দিয়েছি আমি তুমি তো সেটা বুঝতেই চাও না
.
হুহ!চলুন এখন একটু ওদিকটাই যাই
.
ঘুরবা?এই শরীর নিয়ে?
.
কেন?আমি তো বেশ আছি,জ্বর টর নেই,আই এম ফাইন
.
ফাইন হলেই ফাইন,চলুন তাহলে
.
শান্ত আহানার হাত ধরে হাঁটতেছে
আহানাও চুপচাপ শান্তর দিকে গম্ভীর একটা লুক নিয়ে তালে তাল মিলিয়ে হাঁটতেছে,দুজনেই নিরব,কারও মুখে কোনো কথা নেই
আহানা এবার মুখ খুললো তাও পনেরো-ষোলো মিনিট পর
সে বললো”আমার হাত ধরা হাঁটা কি জরুরি?”
.
শান্ত হাতটা না ছেড়েই হাঁটতে হাঁটতে বললো”ধরাটা জরুরি নয় তবে অসুস্থ তো তাই ধরতে হয়,না জানি আবার গড়াইয়া গড়াইয়া পাহাড়ের নিচে না পড়ে যায় এই ভেবে”
.
আহানা মুখ বাঁকিয়ে বললো”আর কোনো কারণ নেই আমার হাত ধরার?”
.
শান্ত থেমে গেলো এবার তারপর মুখটা শক্ত করে বললো”তুমি আসলে কি শুনতে চাও?এটাই তো যে আমি তোমাকে ভালোবাসি?কথাটা ভুল আহানা!
আমি তোমাকে ভালোবাসি না,পছন্দও করি না
তবে!
তুমি আমার স্ত্রী,লিগালি ওয়াইফ যাকে বলে
তোমার প্রতি করা এসব কেয়ার আমার থেকে প্রাপ্য তোমার অধিকার,এর বাইরে কিছু নয়
আর ভালোবাসাটা এমন জিনিস না যে বিয়ে হলে একসাথে থাকতে থাকতে উতলায়ে পড়লো
ভালোবাসাটা এমন একটা জিনিস আমাদের মধ্যে যেখানে আমি বলতেও পারবো না আদৌ আমি তোমাকে ভালোবাসি কিনা,আর তুমিও বলতে পারবা না বাসো কিনা
মুখে বললেই সেটা ভালোবাসা হয় না
.
আমার আপনার ভালোবাসা চাই ও না,থাকুন আপনি!
.
আহানা হনহনিয়ে উল্টো পথ ধরে ফুফুদের বাসার দিকে চলে গেলো
শান্ত রোবটের মতন ঐ জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকে আহানার চলে যাওয়া দেখে যাচ্ছে
এই মেয়েরা একটা ক্লিয়ার কথা কেন বুঝতে চায় না?
কেন এত প্যাঁচ বের করে কে জানে!
কোনোকিছু সোজাসুজি নেওয়া যায় না নাকি?নিলে কি ওকে টাকা দিতে হবে আমাকে?
.
আহানার কান্না আসতেছে তাও কোনোরকম নিজেকে সামলিয়ে সে রুমে এসে খাটের এক কোণায় গিয়ে বসে পড়লো
শান্ত ভাইয়া কি বুঝে না?আমি চাই সে আমাকে ভালোবাসুক
তবে আমি বাসি না,কেন বাসি না জানি না,তবে তার ভালোবাসা আমার দরকার,সে আমার স্বামী আমি তার স্ত্রী
স্ত্রী হিসেবে এটাও তো আমার অধিকার তাই না?
তাহলে সে কেন আমাকে ভালোবাসে না?কি দোষ করেছি?
কোমড়ে হাত দিছে বলে জাস্ট ঝাড়িই তো দিসিলাম, চড় তো আর মারি নাই
তাই বলে জোর করতে পারে না?সব শিখিয় পড়িয়ে নিতে হয়?
এক মিনিট!আমি এসব কি ভাবছি ধুর,আহানা তোর মাথা গেছে,যে ছেলেটা তোর জন্মের শত্রু তুই কিনা তার থেকে ভালোবাসা পাওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগে আছিস?হোয়াই?
এখন থেকে ভাব নিয়ে থাকবি!ঐ শয়তানটার ভালোবাসা তোর দরকার নেই ওকে?
হুম!লাগবে না লাভটাভ!আমি এরকমই ঠিক আছি
♣
শান্ত ল্যাপটপ নিয়ে একটা জামরুল গাছে উঠে বসে অফিসের কাজ করতেছে
ওর ফুফাতো বোন সেজোটা মানে রেশমি সে পিক তুলতেছে আহানাকে আর বাকিদের দেখাবে বলে
অফিসের কাজের জন্য মানুষ কি না করে তা শান্তকে না দেখলে বিশ্বাসই করা যাবে না
শান্ত গাছে উঠেছে কারণ সেখানে একটু নেট আসে
আহানা মুখ গোমড়া করে জানালার কাছে এসে দাঁড়িয়ে আছে,রেশমি আর রিমু হাসতে হাসতে এসে আহানাকে ছবিটা দেখালো
আহানা প্রথমে চিনতেই পারলো না এটা যে শান্ত
যখন মুখটা ভালো করে দেখলো তখন তার বিশ্বাস হলো
.
রেশমি আর রিমুর সাথে সেও হেসে ফেললো
রেশমি বললো এটা লাইভ দেখতে হলে আহানা যেন বাড়ির পিছনের জামরুল গাছটার কাছে গিয়ে দেখে আসে
আহানাও এই সুযোগ হাতছাড়া করলো না
সেদিকে ছুটলো,কিছুদূর যেতেই হুডি পরা ছেলেটা মানে শান্তকে দেখলো সে
শান্ত আরামসে গাছে বসে পা গুটিয়ে তার উপর ল্যাপটপ রেখে কাজ করতেছে,সে আহানাকে এখনও দেখেনি
আহানা হাসি থামিয়ে আরেকটু সামনে গিয়ে দেখতে লাগলো ওকে
ওদিকে বিচ্ছুবাহিনী আসতেছে এদিকেই,বিচ্ছুবাহিনী মানে হলো ওরা ফুফুর ছোট জা এর ছেলে ৪টা,একটার বয়স ৪,একটার বয়স ৬ একটার বয়স ৮ আরেকটার বয়স ১০
মেয়ের আশায় ৪টা ছেলে হয়ে গেলো তাদের,এদের জ্বালাপোড়ায় অতিষ্ঠ হয়ে ছোট জা প্রতিজ্ঞা করেছে আর বেবি নিবে না জীবনে
তো ওরা গাছটার নিচে এসে শান্তকে দেখতেছে আহানার সাথে
তারপর আহানাকেও দেখে নিলো একবার
এরপর ৪জনে মিলে গাছটাকে নাড়াতে শুরু করলো,গাছটাতে উঠতেও চাইলো
.
হঠাৎ ভূমিকম্প আসলো কই থেকে?অবশ্য পাহাড়ী অঞ্চলে এমন ভূমিকম্প হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার
বাট গাছের নড়াচড়া তো আমার কাছে অস্বাভাবিক লাগছে,এরকম বেশি নড়তেছে কেন
শান্ত ল্যাপটপ থেকে চোখ সরিয়ে নিচে তাকালো
আহানা দাঁত কেলিয়ে চেয়ে আছে আর ওর সামনে ৪টা বাবু,এদেরকে সে চেনে এবং চেনে বলেই তার কিছুটা ভয় লাগলো কারন এদেরকে একসাথ করে সবাই নাম দিয়েছে “বিচ্ছুবাহিনী”
যেখানে যাবে তুলকালাম বাঁধাবে
শান্ত ভাবলো জীবন ঠিক থাকতে গাছ থেকে নেমে যাবে,কিন্তু সেই কষ্ট করতে দিলো না ছেলেগুলো,গাছ এত এত নাড়লো যে শান্ত ল্যাপটপ নিয়ে নিচে পড়লো একদম আহানার গায়ে গিয়ে
এদিকে শান্ত যে আহানার গায়ে গিয়ে পড়েছে সেদিকে ভ্রুক্ষেপ ও না করে বিচ্ছু পোলাপান গুলা ল্যাপটপটা হাতিয়ে নিয়ে দৌড় মেরেছে
আহানা চোখ বন্ধ করে হাত দুটো শক্ত করে রেখেছে
শান্ত চুপ করে আহানার বন্ধ চোখগুলোর দিকে চেয়ে আছে
দূর থেকে ফুফুর ছোট দেবর দৌড়ে আসতে আসতে বললেন”মাফ করবা শান্ত,আমার বিচ্ছুবাহিনী বুঝি তোমাদের খুব জ্বালাচ্ছে”
উনার কথা শুনে শান্ত উঠে দাঁড়িয়ে পড়লো
আহানা ও বসে গায়ের থেকে মাটি ঝাড়তে ঝাড়তে বললো”পড়ার সময় লোক দেখেন না নাকি?”
.
শান্ত চুল থেকে জামরুলের পাতা একটা নিয়ে ফেলতে ফেলতে বললো”অন্য কোনো মেয়ের গায়ে পড়লে বুঝি খুশি হতা?”
.
কথাটা শুনে আহানা ব্রু কুঁচকিয়ে উঠে দাঁড়ালো,আর কিছু বলবে না সে,একদম দূর্বল জায়গায় কথাটা লেগেছে,আরও কিছু বললে আরও দূর্বল কিছু বলে বসবে এই লোকটা
.
সে চলে যেতো নিতেই ওপাশ থেকে শান্ত আরেকটা লাইন বলে ফেললো
আর সেটা হলো”এই যে মাত্র তোমার গায়ে পড়লাম আমার ঠোঁটটা তোমার নাক ছুঁলো,অন্য কোনো মেয়ের নাক ছুঁলে ভালো হতো বুঝি?”
.
আহানা রাগি রাগি চোখে চেয়ে রইলো কিছুক্ষন তারপর চলে গেলো
.
শান্তর তার ল্যাপটপের কথা মাথায় আসতেই এক দৌড় দিলো
দৌড়ে গিয়ে সে বিচ্ছুবাহিনীকে দেখতে পেলো,ওরা ল্যাপটপটা খোলার সব চেষ্টা চালাচ্ছে কিন্তু শান্ত ছাড়া তার ল্যাপটপ খোলার সাধ্য কারও নেই
শান্ত এক ধমক দিয়ে ওদের হাত থেকে ল্যাপটপটা ছিনিয়ে নিয়ে চলে আসলো
রুমে এসে আহানাকে পেলো না সে,চিন্তায় আবারও বের হলো রুম থেকে
কোথায় গেলো মেয়েটা??
হেঁটে অনেকটা পথ এসে শান্ত আহানার দেখা পেলো
মহারানী রোডের মাঝখানে দাঁড়িয়ে সাজেকের রিসোর্ট গুলোর দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে
শান্ত মাথায় হাত দিয়ে আহানার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললো”কি?কাউকে না বলে এতটা পথ এসেছো কেন?এখানে যদি রতন বা সাইমন এসে পড়ে তখন কি করবা?”
.
হাসালেন!ওরা এখানে কেন আসবে?রিসোর্ট গুলো দেখলো মন জুড়িয়ে যায় তাই একটু দেখছিলাম এই আর কি!
রুমে আর কতক্ষণ থাকা যায়?
.
ফুফুরা মাছ মাংস কাটে ওসব দেখো তাহলেই হয়
.
আঁশটে গন্ধে বমি আসে বলেই বাইরে হাঁটাহাঁটি করছি
.
এটাতেও সমস্যা ওটাতেও সমস্যা!
.
শান্ত আহানার হাত ধরে টানতে টানতে ফুফুদের বাসায় নিয়ে আসলো আবার
আহানা কোনো উপায় না পেয়ে ফুফুদের কাছে গিয়ে একটা চেয়ার টেনে বসেছে
রান্না শেষ হতে প্রায় ঘণ্টাখানেক লেগেছে,ততক্ষণ আহানা সবার সাথে চুপচাপ বসে ছিলো,ওদের গল্পগুজব শুনছিলো আনমনে
তারপর রুমে আসতেই আহানার চোখ কপালে,তার ব্যাগ নেই,এমনকি শান্তর ব্যাগ ও নেই,চোর টোর এলো নাকি
এই ভয়ে সে রুম থেকে বেরিয়ে সোজা ফুফুর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো “তার ব্যাগ কোথায়”
ফুফু খাবার বাড়তে বাড়তে বললেন”শান্ত নিয়েছে”
.
নিয়েছে মানে?কোথায় নিয়েছে?
.
শান্তর অফিসের অনেক কাজে বিফল ঘটতেছে বলে ও চাইছে তাড়াতাড়ি চলে যেতে আর তাই আজই সাজেকের একটা রিসোর্টে উঠবে তোমাকে নিয়ে,তোমাকে মেঘ দেখাবে, ঘুরবে তারপর সেখান থেকে চলে যাবে,মনে হয় এখন সে বুকিং দিতেই গেছে
.
আহানা মনে মনে অনেক খুশি হলো তারপর আবার ফেরত গেলো তাদের রুমের দিকে
যেতে যেতে দেখলো শান্ত আসতেছে,আহানা ওর কাছে গিয়ে বললো”বুকিং দিতে পেরেছেন?শুনেছি এখানে নাকি আগে থেকে বুকিং দিয়ে রাখতে হয় তা না হলে ভালো ভিউ পাওয়া রিসোর্ট গুলোয় রুম পাওয়া যায় না
.
ঠিক!আর ওরা আমাকে চিনে ফেলেছে,আর আমি যে তাদের বিরাট বড় একটা স্পন্সার তা তারা বুঝতে পেরে আমাকে আমার পছন্দমত রুম খালি করে দিয়েছে
.
স্পন্সার মানে?আপনি আবার কি প্রোমোট করেছেন?
.
আরে করি নাই বাট করবো,একটা সাজেক ব্লগ বানাবো তাও তাদের রিসোর্ট নিয়ে ব্যাস হয়ে গেলো তাদের প্রোমোট
এই হলো ইউটিউবারদের সুবিধা
.
এহহহহ!
.
জি,তা না হলে তুমি গিয়ে দেখো,এই সিজনে মানুষ ২/৩দিন আগে থেকে বুকিং দিয়ে রাখে আর সেখানে আমি গিয়ে ১০/২০মিনিটেই পেয়ে গেলাম,সেলিব্রেটি বলে কথা
এখন তাড়াতাড়ি করে লাঞ্চ করে নাও,আমরা গিয়ে হোটেলে উঠবো,ওখানে ব্যাগ রেখে এসেছি আমি
.
আচ্ছা,যাই হোক এটা ভালো করেছেন
.
যা করেছি আমার অফিসের কাজের জন্য করেছি তা ছাড়া আর কিছু না বুঝেছো?
.
আহানা চলে গেলো যেন সে কথাটা শুনেই নাই
.
লাঞ্চ শেষে দুজনে সবাইকে বিদায় জানিয়ে এবার ছুটলো রিসোর্টটার দিকে
তারা যে রিসোর্টে উঠেছে তার নাম ” মেঘ মাচাং”
সাজেকের বাকি রিসোর্ট গুলোর মধ্যে এই রিসোর্টটা নাম করা কারণ এটাতে ভিউ ভালো আসে
আর আহানা মেঘ দেখবে তাই শান্ত ভেবে এই রিসোর্টটাই বুক করেছে
রিসিপশানে এসে শান্ত কিছু ফরমালিটি পূরণ করে আহানাকে নিয়ে রুমে আসলো
আহানা তো অনেজ এক্সাইটেড,দরজা খুলতেই ওর মুখটা নিমিষেই ফ্যাকাসে হয়ে গেলো,দুপাশে দুটো সিঙ্গেল বেড
আহানার মুখের ওমন হাল দেখে শান্ত জানালা থেকে পর্দা সরাতে সরাতে বললো”তোমার তো খুশি হওয়ার কথা!রাতে আমার সাথে টাচ লাগলে তোমার ঘুম হয় না,তাই তো আলাদা বেডের রুম নিলাম”তুমি যে বেডে ইচ্ছা সেই বেডে শোও,এবার শান্তি???
.
আহানা মুখটা ছোট করে একটা বেডে এসে বসলো
শান্ত তার ব্যাগ থেকে একটা জ্যাকেট,টিশার্ট আর প্যান্ট নিয়ে বাইরে রাখলো তারপর আহানার দিকে চেয়ে বললো”তৈরি হয়ে নাও,আমরা এখন ঘুরতে যাবো”
.
কোথায়?
.
মেঘপুঞ্জি রিসোর্টটা দেখতে যাব,আর কিছু পাহাড় আছে এখানে ওগুলাও দেখে আসা যাবা,কংলাক পাহাড়টাও
.
ওকে
.
আহানা চুলটা আঁচড়িয়ে নিয়ে বললো”চলুন”
.
শান্ত আর কিছু বললো না,কারণ আহানাকে এমনিতেই ভালো লাগছে নতুন করে সাজার প্রয়োজন নেই তার
.
দুজনেই রিসোর্ট থেকে বের হতেই কোথা থেকে বাইকে করে একটা কাপল এসে থামলো ওদের সামনে
আহানা ব্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে,ওদের মাথায় হেলমেট থাকায় ঠিক চিনতে পারলো না আহানা আর শান্ত
.
মাথা থেকে হেলমেট সরাতেই শান্ত ওকে দেখে হেসে ফেললো তারপর বললো”রিয়াজ??? তুই এখানে?”
.
দেখলি!!ঠিকই তোর দেখা পেয়ে গেলাম,নওমি বললো দেখা পাবো না
.
একদম ভালো হয়েছে,তা বাইক পেলি কই?
.
ভাড়ায় নিয়েছি,কংলাক পাহাড়ে যাব তাই,তোরাও নিয়ে নে
.
ওকে ডান
.
আহানা নওমির দিকে চেয়ে আছে,নওমি একটা ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরেছে,সাথে জিন্স আর আহানা একটা সুতির শাড়ী পরে দাঁড়িয়ে আছে
রিয়াজ আহানাকে জিজ্ঞেস করলো “সে কেমন আছে”
আহানা উত্তরে “ভালো “বললো,ততক্ষণে শান্ত ও বাইক নিয়ে হাজির
আহানার বাইকে চড়ার অভ্যাস নেই তাও শান্তকে কোনোরকম ঝাপটে ধরে বসলো সে
শান্ত হেলমেটটা পরতে পরতে বললো”ভুলেও আমাকে ছাড়বে না,পথ আঁকাবাঁকা,কখন কি হয়ে যায়,শক্ত করে ধরে রাখবা ঠিক আছে?”
.
আচ্ছা
.
সামনে দিয়ে রিয়াজ নওমিকে নিয়ে যাচ্ছে আর পিছন দিয়ে শান্ত আর আহানা
আহানা ভয় পাচ্ছে বলে শান্ত বাইক আস্তে আস্তে চালাচ্ছে,ওদিকে রিয়াজ হাসতেছে শান্তর বাইক চালানোর
স্পীড নিয়ে
শান্ত রেগে আহানাকে বললো মজবুত হয়ে বসতে,এবার রিয়াজকে ছাড়িয়ে যাবে সে
আহানা বাইকের আয়নায় তাকিয়ে শান্তর দিকে মিষ্টি করে চেয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে
এভাবে আজ শান্তকে খুব ভালো লাগছে
আহানা যে এতটা মুগ্ধ হয়ে ওর দিকে চেয়ে আছে সেদিকে তার খবর নেই,সে এখন রিয়াজকে হারাতে ব্যস্ত
আহানা শান্তর পিঠে মাথাটা রেখে পাশে চেয়ে রইলো,চলমান গাছগাছালি সাথে আপন মানুষকে আঁকড়ে ধরে রাখা
আর কি চাই??পাহাড়গুলোও মনে হচ্ছে চলমান
রিয়াজকে হারানো শেষে শান্ত এবার খেয়াল করলো আহানাকে ওকে আবেশে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে ধরে রেখেছে যেন তাদের মাঝে কোনো দেয়াল নেই,ছিলো ও না
শান্ত রীতিমত অবাক,আহানার হয়েছে টা কি??এমন করছে কেন ও??
শান্ত বাইকটা থামিয়ে ফেললো,অথচ আহানা এখনও ওর পিঠে মাথা রেখে দূরের একটি পাহাড়ের দিকে চেয়ে মিটমিট করে হাসতেছে
শান্ত হেলমেটটা খুলে পিঠ ঝাঁকুনি দিতেই আহানার হুস আসলো,থতমত খেয়ে বললো”সরি”
চলবে♥