প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
#সিজন_২
#পর্ব_৫৪
#Writer_Afnan_Lara
🌸
মা খবর দেখা শেষে উঠে নিজের রুমে চলে গেছেন,আহানাও সাথে সাথে টিভিটা অফ করে রুমের দিকে চলে গেলো
রুমে এসে চুপ করে বিছানার মাঝখানে বসে পড়েছে সে
পা টা নিচে ঝুলিয়ে
শান্ত ও চুইংগামের মতন ওর পিছু পিছু এসে হাজির
আহানা চুপ করে ওর দিকে চেয়ে আছে,শান্ত যখনই দরজাটা লাগালো
সাথেসাথে আহানা হনহনিয়ে এসে ওর সামনে দাঁড়ালো তারপর কোমড়ে হাত দিয়ে বললো”আপনি আমাকে তখন এত ডিস্টার্ব করতেছিলেন কেন বলুন তো?”
.
শান্ত মুখটা নিচু করে আহানার বরাবর নিয়ে বললো’কেন?আমার বউকে ডিস্টার্ব করেছি তোমার গায়ে লাগছে কেন?”
.
কারণ বউটা তো আমি তাই
.
তো তুমি যে সারাদিন আমাকে ডিস্টার্ব করো সেটার কি হবে?
.
আমি অন্তত এমন করে ডিস্টার্ব করি না
.
যাই হোক,বিয়ের ১৪দিনের বাসরে দুষ্টামি করলাম একটু এখন ঘুমাও যাও
.
আহানা বিছানায় এসে কাঁথাটা টেনে শুয়ে পড়েছে
শান্ত ওয়াসরুম থেকে মুখটা ধুয়ে এসে দেখলো তার বউ তার কথামতন খাটের এক কোণায় শুয়েছে এবং ঘুমিয়েও গেছে
শান্ত পা টিপে টিপে বিছানায় উঠে বসলো তারপর মনযোগ দিয়ে আহানার মুখের দিকে চেয়ে থাকলো
.
মেয়েটা আমার অত্যন্ত কিউট একটা বউ,এরে হাত ছাড়া করা যাবে না,এরে আগলে রাখতে হবে সবসময়
কথাটা বলে শান্ত আহনার পাশে শুয়ে পড়লো সাথে আহানাকে কাছে টেনে নিলো
পরেরদিন সকাল সকাল আহানা যখন চোখ খুললো সে দেখতে পেলো টিশার্টের ৩টে বোতাম,তার নাকের সাথে বিধে আছে,আর ভেতর থেকে হার্টবিট শোনা যাচ্ছে,কিন্তু আসলে সে কোথায় সে এখনও বুঝছে না
নড়েচড়ে একটু পিছোতেই বুঝতে পারলো সে শান্তর বুকে,এতক্ষন এভাবে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ঘুমাচ্ছিলাম নাকি?
ইস রে!কি লজ্জাকর!
আহানা কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে বিছানা থেকে উঠতে নিতেই টান খেলো তার শাড়ীর আঁচলে
পিছন ফিরে শান্তর দিকে চেয়ে দেখতে পেলো শান্তর বাম হাতে ওর আঁচলটা গিট্টু দেওয়া
আহানা কিছুটা অবাক হলো সাথে কনফিউশনে পড়ে গেলো এই গিট্টু দেওয়ার কারণ কি সেটা ভাবতে গিয়ে
তারপর একটু এগিয়ে এসে গিট্টুটা খুলতে যেতেই শান্ত তার চোখজোড়া খুলে ড্যাবড্যাব করে তাকালো
আহানাও ব্রু কুঁচকালো তারপর বললো”কি ব্যাপার?সকাল সকাল ওমন আমার আঁচল নিয়ে আপনার হাতের সাথে বাঁধলেন কেন?”
.
ওহ আচ্ছা সেটা?আমি তো সকালে বাঁধি নাই,কাল রাতেই বেঁধেছিলাম
.
কিন্তু কেন?
.
কারণ একটা কথা জানাতে,যাতে ভুলে না যাই তাই সিস্টেম করা
.
কি জানতাম?
.
রাতে শোয়ার সময় আমিই তোমাকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে ঘুমিয়েছিলাম সেটা
তুমি তো বলো আমি নাকি কেয়ার করি না,কিছু করি না
.
জড়িয়ে ধরা কেয়ার?
.
সেটার মধ্যে পড়ে আরকি,সমাস,ব্যাকরণ,সংজ্ঞা,এরকম
.
আপনি থাকেন আপনার লজিক নিয়ে
কথা ভুলে যাবে করে উনি আমার আঁচল বেঁধে রেখেছেন যেন আমি সকাল সকাল কই চলে যাব,আর ফিরবো না
আহানা শান্তকে বকতে বকতে ফ্রেশ হতে চলে গেলো
♣
হ্যালো তাহসিন?আমার অফিসে যাওয়ার কারটা চেক করেছো?আমি এখননই নাস্তা করে বের হবো
.
স্যার কারটা সম্পূর্ণ চেক করেছি বাট একটা প্রব্লেম পেলাম,আর সেটা হলো একটা টায়ার পাঞ্চার করা,আশেপাশে এমন কিছু পেলাম না যেটা দিয়ে এটা পাঞ্চার হতে পারে
.
পাঞ্চার??আমি তো কাল যখন কার থামিয়েছিলাম তার আগ পর্যন্ত ও কার ঠিক ছিলো তাহলে পাঞ্চার হলো কি করে
.
জানি না স্যার,আমি নিউ একটা টায়ার লাগিয়ে দিয়েছি
.
ওকে ডান
.
আহানা শান্তর জন্য নাস্তা রেডি করে টেবিলে রেখে মুখ ফসকে বললো”আপনার তো গাড়ী নষ্ট,ক্যাব ডাকবেন না?”
.
শান্ত পাউরুটি মুখে দিয়ে সন্দেহের চোখে আহানার দিকে তাকালো
তারপর বললো”তুমি জানো কি করে আমার গাড়ী নষ্ট?”
.
আহানা ঢোক গিলে বললো”ইয়ে আসলে তাহসিন ভাইয়াকে দেখছিলাম আপনার কার চেক করতেছে তাই গেস করলাম”
.
ওহ!নষ্ট না জাস্ট টায়ার পাঞ্চার হয়েছে এই আর কি,তাহসিন চেঞ্জ করে দিয়েছে,আমি এখন কারে করে যেতে পারবো আলাদা ক্যাব ডাকার প্রয়োজন পড়বে না
.
কথাগুলো শুনে আহানার মনে হলো পায়ের তলার মাটি সরে গেছে,সে কিছুক্ষন চুপ করে থাকলো হাতে ভাজির বাটি নিয়ে তারপর বাটিটা শান্তর সামনে রেখে নিচু স্বরে বললো”প্লিস!ক্যাবে করে যান,কারে করে যাইয়েন না”
.
শান্ত উঠে দাঁড়িয়ে টাইটা টানতে টানতে বললো”তাহসিন কারটা সম্পূর্ণ চেক করেছে,আই এম আউট অফ ডেঞ্জার”
.
আহানা অনেক মানা করার পরেও শান্ত অফিস চলে গেলো
তাও সেই কারে করে
আহানা তো অনেক টেনশনে আছে, কাল এত কষ্ট করে টায়ারটা পাঞ্চার করলো কিন্তু তাও কোন লাভ হল না আহানা বাসার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আনমনে শান্তর জন্য চিন্তা করতে লাগলো
বুকের ভেতরে একটা ভয় কাজ করতেছে যে শান্তর যদি কিছু হয়ে যায়?
শান্ত যে তার সব কথার অবাধ্য এটা সে জানে তাই তো সেই টায়ার পাঞ্চার করে রেখেছিল কিন্তু তাতেও লাভ হলো না
এত টেনসান নিতে না পেরে আহানা শান্তি রহমানের রুমে এসে হাজির হয়েছে
শান্তি রহমান একটি সাদা কাপড় নিয়ে বসে বসে সেটাতে সুই সুতা দিয়ে ফুলকারি কাজ করছেন, এটা দিয়ে একটা জামা তৈরি করবেন নিতুর জন্য
.
আহানা এসব ব্যাপারে উনাকে জানাতে চায়নি কিন্তু তারপরও এখন এত টেনশন এ থাকতে না পেরে উনাকে জানাতেই হবে এই ভেবে আহানা শান্তর মায়ের রুমে এলো
চুপচাপ মায়ের পাশে বসে উনার হাতটা শক্ত করে ধরে সে কিছুক্ষন চেয়ে রইলো উনার দিকে
♣
মা আমি তোমাকে কিছু একটা বলতে চাই এ কথাটা বলার কারণ হচ্ছে শান্ত তোমার কথা শুনে সবসময়
কখনো অবাধ্য হয় না, আশা করি তুমি ব্যাপারটা বুঝে যদি উনাকে একটু বোঝাও তাহলে উনি তোমার কথাটা বোঝার চেষ্টা করবে
.
শান্তি রহমান হাত নাড়িয়ে জিজ্ঞেস করছেন কি হয়েছে??
.
আসলে বাবার আর রিয়াদ আংকেলের এক্সিডেন্ট এর পেছনে আমার আর শান্ত মনে হচ্ছে আমার চাচা মজনুর হাত আছে
উনি কালকে আমাকে ফোন করে হুমকি দিয়েছেন যে উনি শান্তর কোন ক্ষতি করতে পারেন সেটা কারের দ্বারায় বা অন্য কিছু ও হতে পারে
তারপর থেকে আমি শান্তকে অনেক মানা করেছি কিন্তু সে আমার কোন মানা শুনেনি
শেষে সেই কারটাতে করেই অফিসে চলে গেছে
তুমি আজকে উনি অফিস থেকে আসলে ভালো করে বুঝিয়ে দিবে যাতে আর কারে করে অফিসে না যায় দরকার হলে অন্য কোন যানবাহনে করে যাবে কিন্তু তাও এই কারে করে যেন আর না যায়,তুমি একটু বুঝিয়ে দিও উনাকে
.
আহানার মুখে সব কথা শুনে শান্তি রহমান চোখ বড় করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন আহানার দিকে
সাত বছর আগের ঘটনা চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগলো তার
তিনি ভেবে উঠতে পারছেন না তিনি ঠিক এই সময়ে কি বলবে নাকি কি করবে
এদিকে আহানা কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছে
কোন দিশা না পেয়ে উনি আহানার হাতটা ধরে চুপ করে থাকলেন তারপর ওর মাথায় হাত বুলিয়ে ওর চোখের পানি মুছে দিলেন
এমন একটা সময়ে তার কথা বলার অনেক জরুরী কিন্তু তার কথা যে বের হবে না এটাই হচ্ছে তার সবচেয়ে বড় দূর্ভাগ্য
শুধু চোখের পানি দিয়েই তিনি বুঝিয়ে দিলেন ব্যাপারটা বড়ই কষ্ট দায়ক এবং তিনি মুখ দিয়ে কিছু বলতেও পারছেন না
শান্তি রহমানের কোন উত্তর না পেয়ে আহানা চুপচাপ উঠে গিয়ে নিজের রুমে চলে আসলো
খুব জোরে মেঘ ডাকা শুরু হয়ে গেছে
শান্তকে নিয়ে সেই ভাবনায় পড়ে গিয়ে শান্তর রুমের বারান্দায় এসে দাঁড়ালো আহানা
আকাশ কালো হয়ে এসেছে
থেমে থেমে মেঘ ডাকছে,এবার যে বৃষ্টিটা হবে এটাকে মনে হয় নভেম্বর রেইন বলা যেতে পারে, এ বছরের শেষ বৃষ্টি মনে হয়
এই বৃষ্টি টা কিন্তু খুব ধুমধাম করে হয় অনেক জোরে আসে সবকিছু ভাসিয়ে তারপর চলে যায়,২/৩দিন টানা থাকে
আর এখন আহানার মনে হচ্ছে আহানার জীবনটা ভাসিয়ে দিয়ে না চলে যায় এই বৃষ্টিটা
সে একটু কোণায় গিয়ে দাঁড়ালো বারান্দাটার
খুব জোরে মেঘ ডেকে উঠতেই আহানা আর একমুহূর্ত ও বারান্দায় দাঁড়ালো না
তাড়াতাড়ি রুমে চলে এসে ফোনটা খুঁজে বের করলো সে তারপর শান্ত কে ফোন করলো, শান্ত সবেমাত্র অফিস রুমে এসে বসেছে,ঊষার সাথে কথা বলার আগেই দেখলো তার ফোনে আহানার কল আসছে
তাই অফিসের কাজ শুরু করার আগে কল রিসিভ করলো শান্ত
.
আপনি কি ঠিকঠাকভাবে পৌঁছে গেছেন??
.
শান্ত কিছুটা হেসে বললো “কেনো?? সবে মাত্র বাসা থেকে বের হলাম আর এখন আমি অফিসে ঢুকেছি মাত্র তুমি এটা কেনো জিজ্ঞেস করছো??
আর তোমাকে তো বলেছিলাম যে আমি কারটা ভালো করে চেক করে তারপর রওনা হয়েছি,তাও তুমি কেন এখনো একই কথা ধরে বসে আছো?
এত টেনশন না করে চুপচাপ বসে থাকো, যদি বসে থাকতে ভালো না লাগে তাহলে আম্মুর কাছে গিয়ে বসে থাকো,গল্প করো
রিপার সাথে কথা বলো, কত কাজ আছে বাসায় ওসব করো তাহলে আর এই চিন্তা মাথায় আসবে না
আর আমাকে প্লিজ কাজটা করতে দাও, আমি এতদিনে অনেক কাজ ঠিকমত করতে পারিনি এখন আমি চাই না কোন কিছু উল্টাপাল্টা চিন্তা ধারা মাথায় এনে আমি আমার অফিসের কাজটা বন্ধ রাখতে
.
আহানা মুখটা ফ্যাকাসে করে “ওকে বাই “বলে ফোনটা রেখে দিলো
মেঘ ডেকেছিলো এতক্ষণ কিন্তু হঠাৎ করে আবার সূর্যের আলো দেখা যাচ্ছে তাই হাসিমুখে ফোনটা রেখে দিয়ে নিজের কাজে চলে গেলো আহানা
.
শান্তর জন্য রান্না করবো!!! বিরিয়ানি তৈরি করবো
শান্ত আমার হাতের বিরিয়ানি অনেক পছন্দ করে
.
বিরিয়ানি রান্না করতে করতে দুপুর 2 টার বেশি বেজে গেছে
আহানা এবার সব কাজ শেষ করে হাত ধুয়ে -মুছে নিজের রুমে আসলো তারপর ফোনটা খুঁজে হাতে নিয়ে আবারও ফোন করলো শান্তকে,ঠিক গুনে গুনে পাঁচবার কিন্তু শান্ত রিসিভ করল না
আহানার একটু চিন্তা হলো পরে ভাবলো হয়ত অনেক কাজের চাপে ব্যস্ত আছে, কিছুক্ষণ পর শান্ত যখন দেখবে আহানা ফোন করেছে তখন সে ফোনটা কলব্যাক করবে নিশ্চয়
কালকে রিপার সাজানো বাসর ঘরটার ফুলগুলো সব শুকিয়ে অবস্থা খারাপ হয়ে আছে
আহানা তাই রুম পরিষ্কার করায় ব্যস্ত এখন
পরিষ্কার করতে করতে প্রায় তিনটা বেজে গেছে
আহানা যখন দেখলো শান্ত কল ব্যাক করছে না এখনও তখন সে ফোনটা নিয়ে শান্ত কে আবার ফোন করলো কিন্তু এবারও শান্ত রিসিভ করলো না
এবার আহানার প্রচুর ভয় করছে, আকাশে মেঘ আবারও কালো হয়ে গেছে এমনকি টপটপ করে বৃষ্টি পড়তেও শুরু হয়ে গেছে
আহানা এবার বাধ্য হয়ে শান্তর অফিসের মেইন নাম্বারে ফোন করলো
কিছুক্ষণ পর ঊষা রিসিভ করলো,আহানা ওকে জিজ্ঞেস করলো যে শান্ত কোথায় ফোন ধরছে না কেন??
ঊষা জানালো” শান্ত এতক্ষণ মিটিংয়ে ছিল, প্রায় 5 মিনিট হয়েছে সে অফিস থেকে বেরিয়েও গেছে”
.
আহানা খুশি হয়ে ফোনটা রেখে দিয়ে নিশ্চিন্তভাবে রান্নাঘরে গিয়ে বিরিয়ানি প্লেটে নিচ্ছে শান্তর জন্য
কিছুক্ষণ বাদেই শান্ত এসে পড়বে তাই সে জলদি তার কাজ শেষ করছে
3:30 বাজে অথচ শান্তর এখনো বাসায় ফেরার নাম নেই আজ সকাল থেকেই কেন জানিনা তার প্রতি কদমে কদমে ভয় হচ্ছে
বারবার মনে হয় শান্তর কিছু বিপদ হয়নি তো?
অপেক্ষা করতে করতে আর শান্তকে অনবরত ফোন করতে করতে এখন বাজে বিকেল 4:30 অথচ শান্তর কোন খবর নেই, না অফিসে কোন খবর আছে না তার ফোনের কোন খবর আছে
এমন কি এখন ফোনটাও অফ দেখাচ্ছে
আহানা কাঁদতে কাঁদতে বাসার গেটের কাছে এসে একবার বামে তাকাচ্ছে আবার ডানে তাকাচ্ছে
অথচ শান্তর কোনো হদিস মিলছে না
এদিকে বৃষ্টি এখন টুপটাপ করে পড়া শেষ হয়ে মুষলধারায় বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে
আহানা ভিজতে ভিজতে এখনো সেই একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে
সে বাসায় ফিরবে না,যতক্ষণ না শান্তকে সে নিজের চোখে দেখবে ততক্ষণ সে বাসায় যাবে না
শান্তি রহমান জানেন না আহানা সেই এক ঘন্টা ধরে বাসার গেটে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজতেছে, তিনি নিজের রুমে আছেন এমনকি এখন তিনি ঘুমাচ্ছেন
তিনি এই খবর সম্পর্কে অবগত নন
নিতু দুপুর বেলায় স্কুল থেকে ফিরে লাঞ্চ করে তার রুমে শুয়ে ও পড়েছে
রিপা তার কাজ সেরে তার বাসায় ফিরে গেছে
আহানা বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে তার মাথাটা প্রচন্ড ব্যাথা হওয়া শুরু হয়ে গেলো
অথচ তার সেদিকে খেয়াল নেই সে মাথা ধরে বাউন্ডারির দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে শান্তর জন্য অপেক্ষা করছে মাগরিবের আজান দিয়ে দিয়েছে
আযান দেওয়া শেষ হয়ে গেছে অথচ শান্ত এখনও অফিসের থেকে ফিরছে না
এর আগে এমন সময় শান্ত সবসময় বাড়ি থাকে
আর আজ কিনা সে এখনো ফিরছে না, ফোনও ধরছে না চিন্তার বিষয় বটে
আহানা শান্তি রহমানের রুমের দিকে দৌড় দিবে তখনই সে শান্তর কারের আওয়াজ পেলো
একগাল হাসি নিয়ে পিছন ফিরে তাকালো আহানা
শান্তর কার বাসার ভিতরে ঢুকছে দেখতে পেয়ে আহানার মনে হলো সে তার প্রাণ ফিরে পেয়েছে
এমন বৃষ্টিতে আহানাকে খালি ময়দানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে শান্ত কিছুটা অবাক হল তারপর তাড়াতাড়ি করে কার থেকে বেরিয়ে এসে মাথার উপর হাত দিয়ে দৌড়ে আহানার কাছে এসে বললো”” কি ব্যাপার তুমি এমন বৃষ্টিতে ভিজতেছো কেন? এরকম বৃষ্টি হচ্ছে তুমি বাইরে কি করে দাঁড়িয়ে আছো??
তোমার জ্বর হতে পারে তুমি জানো না? এভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেন, আমার প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছো না কেন?
.
আহানা রোবটের মতন দাঁড়িয়ে শান্তর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে তারপর শান্তর পা থেকে মাথা পর্যন্ত একবার দেখে নিয়ে ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো সে
বৃষ্টির মধ্যে কাঁদতে কাঁদতে বললো” আমি আপনাকে কতবার ফোন করেছি আপনি একবারও আমার ফোন ধরেননি,অফিস থেকে বেরিয়েছেন সেই ৩টার টার সময় আর আপনার কোন খোঁজ পাইনি আমি আমার চিন্তা হয় না? আপনি কেন বুঝেন না আমি আপনাকে কতটা ভালোবাসি? বুঝলাম আপনার কাছে আমার ভালবাসার দাম নেই তাই বলে কি আপনি আমার ভালোবাসাকে এভাবে হেনস্থা করবেন?? এমনভাবে আমাকে কষ্ট দেবেন?আমার কষ্ট পাওয়া আমার ভালোলাগা আমার খারাপ লাগাতে কি আপনার কিছু যায় আসে না? আপনার কি একবারও উচিত ছিল না আমাকে ফোন করে জানানো? আমি কতটা ভয় পেয়ে গেছিলাম সেই ধারণা কি আছে আপনার?
চলবে♥