‘লোডশেডিং’ পর্ব ১.

0
994

‘লোডশেডিং’
পর্ব ১.

তাবিনা মাহনূর

__________

উপন্যাসের বইটা বন্ধ করলো সে। তার মনে হলো, এই কথাগুলো কেউ তার সামনে বসে তাকে বলেছে। মনে পড়লো তার, বাসন্তী রঙের শাড়ি পরা মেয়েটা এখন কালো আবরণে জড়িয়ে রাখে নিজেকে। আশ্চর্য তো! মেয়েটার চেহেরা মনে করতে পারছে না সে। একদম না! একটুও মনে পড়ছে না। না চেহারা, না কন্ঠ। কোনোটাই মনে আসছে না তার। মনে করতে হলে মস্তিষ্কে প্রচন্ড চাপ পরছে। সে আর মনে করার চেষ্টা করলো না। দরকার কি অন্যের হককে মনে ধারণ করার….

__________

অতীতের উপাখ্যান…

ক্রোধান্বিত কণ্ঠস্বর। মুখশ্রীতে ছড়িয়ে আছে দাম্ভিকতা, কর্তৃত্ব ও ক্রোধের রক্তিম বর্ণ। সৌরভের এমন চেহারার সাথে পরিচিত চৈতি। কিছুক্ষণ আগের ধমক সম্পর্কে অবগত সে। তবু বুক কেঁপে ওঠে সেই ধমকে।

সৌরভ ধৈর্য ধারণে বেশ অপটু, ‘কিরে? কথা বলিস না কেন? হাফ প্যান্ট পরে খেলাধুলা করার কারণ কি? কানের নীচে একটা চড় দিলেই এসব বাস্কেটবলের ভুত ছুটে যাবে। এরপর যদি আরেকদিন দেখছি এমন উলঙ্গ হয়ে খেলাধুলার নামে বে*গিরি করতে তাহলে তোর খবর আছে।’

চাচাতো ভাইয়ের অহমে দগ্ধ হয়ে যায় চৈতির জীবন।মুখ ফুটে প্রতিবাদ করার সাহস নেই তার। সাহসের জন্য একজন খুঁটির প্রয়োজন। খুঁটি ধরে রেখে নিজ সীমানায় কর্তৃত্ব ফলানো সম্ভব যেখানে অন্য কারো দম্ভের প্রকাশ ঘটে না। খুঁটি যদি নড়বড়ে হয় কিংবা খুঁটি বলতে যদি কিছু না থাকে তবে নিজ সীমানায় কর্তৃত্ব ফলানোর কোনো উপায় থাকে না। চৈতির মা জেবিন বেগম নিজে তার বড় ভাসুরের ছেলেকে প্রশ্রয় দেন। এখানেও কিছু রাজনীতি কাজ করে। পারিবারিক রাজনীতি।

সারাফ মোজাম্মেল বিয়ে করলেন মধ্যবিত্ত পরিবারের ভদ্র স্বভাবের স্বল্পভাষী মেয়ে কুহু শামসুনকে। সারাফ সাহেবের মা জয়নাব বেগমের ইচ্ছে ছিল বোনের মেয়েকে বিয়ে দিবেন ছোট ছেলের সাথে। কথা পাকাপাকি করেও ফেলেছিলেন ছেলের মত না নিয়ে। একদিন জানলেন তার আদরের ছোট ছেলে তাদের পারিবারিক অবস্থানের কথা চিন্তা না করে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন মেয়ের প্রেমে উন্মাদ প্রায়। ছেলেকে বিভিন্নভাবে বোঝানোর চেষ্টা করলেও ছেলে হারানোর ভয়ে মেনে নিতে বাধ্য হলেন জয়নাব। সারাফের বিয়ের তিন বছরের মাথায় মেয়ের জন্ম হলো। ভালো নাম সাফওয়ানা বিনতে সারাফ, ডাকনাম চৈতি।

চৈতির ষষ্ঠ জন্মদিনে পরিবারে বিষাদের ছায়া নেমে এলো। তার মায়ের ইউটেরাস ক্যান্সার অর্থাৎ জরায়ুতে ক্যান্সার কোষ আছে যা সারা শরীরে ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে প্রবলভাবে। এই কথা তিনি জানতেন আরো তিনমাস আগে। চিকিৎসা করিয়েও লাভ নেই বলে কাউকে জানতে দেননি। কেননা জানিয়ে শুধু শুধু অর্থকড়ি অপচয় আর কেমো থ্যারাপির কষ্ট। কিন্তু মেয়ের জন্মদিনে আল্লাহ যেন সকলকে বুঝিয়ে দিলেন, খুশির দিনে দুঃখের ঝড় নেমে আসতে এক মুহূর্তই যথেষ্ট। তিনি প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়লেন, মুখ থেকে রক্তের ফোয়ারা বয়ে চলছিল। সেদিন হাসপাতালে ভর্তি করা হলো, তার দুদিন পর মৃত্যুর দূত এসে হাজির। এখন চৈতির বয়স আঠারো বছর। সপ্তম জন্মদিন পালন করা হয়নি তবে অষ্টম জন্মদিন জোর করে পালন করতে হয়েছিল। এরও ইতিহাস রয়েছে।

কুহুর মৃত্যুর পর ভঙ্গুর হয়ে পড়ে রইলেন সারাফ। প্রিয়তমা স্ত্রীকে ভুলে থাকা অসম্ভব, তাই মস্তিষ্কে বসবাস শুরু হলো বিশৃঙ্খল নিউরনের। ফলে দিন গড়িয়ে গেলে তার পাগলের প্রলাপ বেড়েই চললো। এমতাবস্থায় কোনো মা নিজের সন্তানকে মৃত্যুর দুয়ারে রেখে যেতে পারেন না। তাই জয়নাব সিদ্ধান্ত নিলেন বোনের তালাকপ্রাপ্ত মেয়েটিকেই এবার ছোট বউ করে বাড়িতে নিয়ে আসবেন। জেবিন তখনও ভালোবাসতেন সারাফকে। সারাফ সাহেব যখন কুহুতে মত্ত, তখন জেবিনের সাথে বিয়েতে না করে দিয়েছিলেন। আর তাই জেবিন আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন। তারপর তাকে বাঁচাতে বিয়ে দেয়া হয় এমন একজনের সাথে যার সন্তান জন্ম দানের ক্ষমতা নেই। বিয়ের পাঁচ মাসের মাথায় তালাক ঘটে গেল। এরপর থেকে তিনি একাকী জীবন কাটিয়েছেন। দ্বিতীয়বারের মতো প্রিয় মানুষের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ পেলে হাতছাড়া করতে চাননি।

বিয়ের পর জেবিনের সাথে দুই ভাসুর যারা কিনা তার খালাতো ভাই ও দুই জা-এর বেশ খাতির হয়ে গেল। সারাফের একমাত্র বোন শিল্পী, জেবিনের সমবয়সী হওয়ায় সম্পর্ক আরো মজবুত হলো। সবার সাথে তার কুহুর তুলনায় বেশ ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠলো। বিশেষ করে শিল্পী খুব খুশি ছিলেন খালাতো বোনকে শেষমেষ কাছে পাওয়ায়। তার সাংসারিক জীবন পাশের গলিতে। তাই প্রতিদিন এসে আলাপ জমাতেন জেবিনের সাথে। সবই ঠিকঠাক। শুধুমাত্র চৈতির উপস্থিতি যেন কেউ সহ্য করতে পারলো না।

চৈতির অষ্টম জন্মদিনের ঘটনা। ইতিমধ্যে সারাফ সাহেব সুস্থ হয়েছেন জেবিনের ভালোবাসায়। কিন্তু আগের চেয়ে অনেক চুপচাপ হয়ে গেছেন। তার যে একটা মেয়ে আছে সেটা যেন মনেই থাকে না তার। ব্যবসা দেখেন, বাহিরে যান, খাওয়া-দাওয়া, ঘুম, সবই ঠিক চলছিল। এমনকি বৈবাহিক জীবনও ভালো চলছিল, জেবিন তখন অন্তঃসত্ত্বা। জেবিনের ঈর্ষাপরায়ণ মানসিকতা ছোট্ট চৈতির মনে বিরূপ প্রভাব ফেললো। তার জন্মদিন করা হলো অনেক জোর করে। উদ্দেশ্য, কুহুর সকল স্মৃতি ভুলিয়ে দেয়া। দুদিন পরে কুহুর মৃত্যুবার্ষিকী, তা যেন কারো মনে না থাকে সেই নিষ্ঠুর প্রয়াস চলছিল। নবম জন্মদিন পালনের সময় চৈতি চিৎকার করে কেঁদে বলেছিল, তার মাকে সে ভুলতে চায় না। সেদিনই যেন হুঁশ ফিরে আসে সারাফ সাহেবের। জেবিনকে বলেন, এই বাড়িতে কোনোদিন চৈতির জন্মদিন পালন করা হবে না।

কল থেকে পানি পড়ছে না। নিশ্চয়ই পানির ট্যাঙ্কি খালি হয়ে গিয়েছে। মাথায় শ্যাম্পু মেখে হাতে পানির মগ নিয়ে দাঁড়িয়ে চৈতি। কলের পানির শব্দের তালে তালে তার পুরোনো দিনের কথা মনে পড়ে গিয়েছিল। ঝাপসা মনে পড়ে তার, কলের পানির নীচে দাঁড়িয়ে ইচ্ছেমতো ভিজতো সে। মা এসে যখন দেখতেন মেয়েটা জামা কাপড় ভিজিয়ে মহা আনন্দে পানি নিয়ে খেলছে তখন বকা দিবেন নাকি হাসবেন বুঝতে পারতেন না। মায়ের অপ্রস্তুত মুখের কথা মনে আছে তার। ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠলো তার। কল দিয়ে আবার পানি পড়ছে। ভাবনার সুতো ছিঁড়ে গেল আবারো।

গোসল করে বেরিয়ে এলো সে। ঘরে ঢুকতেই দেখলো সাদিয়া বসে আছে তার বিছানায়। মেয়েটা বোনের ভক্ত অনেক। দশ বছর বয়সে অনেক পেকে গেছে মেয়েটা। সাদিয়া বোনকে ভেজা অবস্থায় দেখে বললো, ‘আপি! তাড়াতাড়ি মাথা মুছে নাও। আম্মু এমন অবস্থায় দেখলে বকবে।’

চৈতি মুচকি হেসে বললো, ‘মামণি শুধু তোকে আর সাদিককে বকা দেয়।’

– আমিও এটা খেয়াল করেছি। তোমাকে দেয় না কেন?
– আমি যে অনেক বড় হয়ে গিয়েছি।
– কত বড়?

চৈতি তার এক হাত অনেকটা উঁচু করে বললো, ‘এত্ত বড়। পারবি এতো বড় হতে?’

দুই হাত কোমরে রেখে সাদিয়া বললো, ‘তুমি কি আমাকে বোকা পেয়েছো? দুষ্টুপি!’

দুষ্টু আপিকে সংক্ষেপে দুষ্টুপি বলে সাদিয়া ও সাদিক। দুজনে যমজ তবে স্বভাবে অনেকটা আলাদা। সাদিয়া বোনের আশেপাশে ঘুরঘুর করে আর মায়ের বকা খায়। অনেক চঞ্চল এবং সচেতন মেয়ে। চারিপাশের সবকিছু সম্পর্কে তার খেয়াল আছে। সাদিক চুপচাপ ও চতুর স্বভাবের। চৈতিকে ভালোবাসে কিন্তু মায়ের চোখে সেটা ধরা দেয় না।

চৈতি চুল মুছতে মুছতে প্রশ্ন করলো, ‘দুষ্টুপির কাছে কেন এসেছিস তাহলে?’

– তোমার কাছে আজকে হোমওয়ার্ক নিয়ে এসেছি। বাবা বলেছে প্রতিদিন তোমার কাছে অঙ্ক করতে। তুমি নাকি খুব ভালো পারো এগুলো?
– খুব ভালো পারি কিনা জানি না তবে চেষ্টা করতে পারি। এখন আমি বিশ্রাম নিব গলুমলু, তুই বিকেলে আয়।

সাদিয়া চলে গেল। চৈতি তার ভেজা কাপড় সহ বালতি নিয়ে ছাদে চলে গেল। ছাদের সিঁড়ির দরজায় এসে মাথায় ওড়না দিয়ে নিলো। পাশের বাড়ির ছাদের চিলেকোঠায় যার বসবাস তাকে আড়চোখে দেখার কৌশল এটাই।

স্বাধীন এখন ছাদে নেই। চিলেকোঠার দরজায় তালা ঝুলছে। তার মানে তিন তলায় আছে নিশ্চয়ই দুপুরের আহার সম্পন্ন করতে। স্বাধীনের এই বিষয়টা খুব ভালো লাগে চৈতির। সাততলা ভবনটি পুরোটা স্বাধীনের পরিবারের। তিন তলায় থাকে তার পরিবার অথচ সে থাকে চিলেকোঠার ঘরে। তার নাকি বিশেষ শখ এটি। স্বাধীন সৌরভের বাল্যকালের বন্ধু। একই এলাকায় পাশাপাশি বাসায় বসবাস তাদের, সেই সাথে একই স্কুলে একসাথে পড়াশোনা করেছে তারা। জানের জান দোস্ত যাকে বলে। চৈতির বয়স যখন মাত্র বারো বছর তখন থেকেই সৌরভ চৈতির উপর খবরদারি করে আসছে। পাঁচ বছরের বড় হওয়া সত্ত্বেও ভাইয়ের মতো আচরণ কখনোই করেনি সে। বড় হতে হতে জানতে পারলো, তার জীবনটা কিছুটা বাবার মতোই। সৌরভ নাকি তার মাকে আগেই বলে রেখেছে চৈতিকে তার চাই। কিন্তু ছোট্ট চৈতি শুরু থেকেই ভরসা খুঁজে নিয়েছিল স্বাধীন নামক মুক্ত পাখির ডানার মাঝে।

কাপড় নেড়ে দেয়া হয়ে গেল অথচ স্বাধীন এলো না। মনে একরাশ কালো মেঘ জমা হয়ে নিমিষেই তা সুখের বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়লো। ঐতো ঘন চুলের আন্দোলন মাথায় নিয়ে হেঁটে আসছে স্বাধীন। পাশে আরো একজন যাকে দেখেই মুখ নামিয়ে উল্টো পথে হাঁটতে লাগলো চৈতি। চট করে পেছন থেকে কণ্ঠস্বর ভেসে উঠলো, ‘এই চৈতি, তুই এখানে কেন?’

পেছন ঘুরে দেখলো, স্বাধীন নেই। সে ঘরে ঢুকে গিয়েছে কিন্তু সৌরভ ছাদের কার্নিশ ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে বিরক্ত ভরা চাহনি দিয়ে।

– কথা বলিস না কেন? আমি কথা বললে তোর মুখে কি সুপার গ্লু এঁটে যায়?
– কাপড় নাড়তে এসেছিলাম।
– হয়েছে কাজ?
– হ্যাঁ।
– সোজা নীচে নেমে বাসায় যাবি। অন্য দিকে গেলে লাত্থি মেরে ছাদ থেকে ফেলে দিব। যা!

চৈতি অপমানে ধূলিসাৎ হয়ে গেল ছাদে থাকা ধুলোর মাঝে। মুখ নামিয়ে যেই না পা বাড়াবে অমনি আবারো শুনতে পেল সেই কন্ঠ।

– এই দাঁড়া, তুই তোর জার্সি ধুঁয়েছিস কেন? বেয়াদব! তোকে বলিনি আর কোনোদিন বাস্কেটবল খেলতে পারবি না? এগুলো পুড়িয়ে ফেলবি নাহলে কাউকে দিয়ে দিবি। তা না করে তুই সুন্দর করে ধুয়ে রেখেছিস!

কান্না এসে গেল চৈতির। বাস্কেটবল টিমের নেত্রী সে। খেলা বাদ দিলেও জার্সি পুড়িয়ে ফেলার কথা ভাবা অসম্ভব। ছলছল চোখে তাকিয়ে বললো, ‘আমি তো খেলবো না বলেছি। কিন্তু জার্সিটা রেখে দিতে চাই।’

ক্রোধে ফেটে পড়লো সৌরভ। তার কথার নড়চড় হয়েছে মানেই সর্বনাশ।

– তুই কীভাবে এই কথা বলিস বেয়াদব? ছোট কাকী ঠিক কথা বলেন। তুই আসলে ঘাড়ত্যাড়া স্বভাবের মেয়ে। থাপ্পড় দিয়ে সোজা করে দিব একদম। জার্সি হাতে নিয়ে ঘরে যা, আমি আসছি।

ঠিক তখনই বেরিয়ে এলো স্বাধীন। বেরিয়ে বন্ধুর হাত ধরে নিজের ঘরের দিকে নিয়ে যেতে লাগলো। তবে তার কন্ঠ শুনতে পাচ্ছে চৈতি।

– দোস্ত, তুই অশিক্ষিত লোকের চেয়েও অধম আচরণ করছিস। সামনের ছাদে আরো কিছু মেয়ে দাঁড়িয়ে তোর কান্ড কারখানা দেখে গালমন্দ করছে। তুই কি আমার প্রেস্টিজ খাবি? সামান্য জার্সি নিয়ে এতো জোরে জোরে চিৎকার করার মানে কি? ও তো খেলবে না বলেছে।

বাকিটা শোনা গেল না। ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছে স্বাধীন। বন্ধুকে শান্ত করা তার অল্প সময়ের কাজ। আর বিভিন্ন সময়ে সে হাজির হয়েছে চৈতির রক্ষাকর্তা হিসেবে। তাই চৈতি আজও এই মানুষটির কাছে ভরসা খুঁজে পায়। অজান্তেই তার মনে হয়, মানুষটি তার জন্যই এমন ঝগড়ার মাঝে যেচে বিচারক হিসেবে নিজের অবস্থান জানান দেয়। ঠিক বিচারক নয়, আসামি পক্ষের উকিল হিসেবে।

চৈতি ছাদ থেকে নেমে শুনতে পেল মায়ের গলা।

– কুহুর মেয়েটা ছাদে গিয়ে লাপাত্তা! সাদিয়ার বাবা, শুনছেন? আপনার মেয়ে ভাত না খেয়ে ছাদে গিয়ে বসে আছে। পরে আমার নামে নালিশ দিবে আর আপনি আমার উপর চড়াও হবেন।

তিনি কখনো সরাসরি ধমক দেননি কিংবা রাগ দেখাননি। অন্য জনের উপর রাগ দেখিয়ে, বিরক্ত প্রকাশ করে মানসিক যন্ত্রনা দেন চৈতিকে। মাঝে মাঝে চৈতির মনে হয়, কোনো এক বসন্তে অপ্রত্যাশিত বৃষ্টির মাঝে হাজারো ঝরে যাওয়া ফুলের উপর দাঁড়িয়ে থাকা মনপুরুষের দিকে দৌড়ে গিয়ে বলবে, ‘আমি সুখে নেই। মুক্ত পাখির ডানায় আমাকে উড়িয়ে নিয়ে চলুন।’ তখন হয়তো জীবনে রঙিন সময়ের রূপকথা সৃষ্টি হবে।

__________

চলবে ইন শা আল্লাহ…..

[‘লোডশেডিং’ গল্পটা যিনা সম্পর্কিত, থ্রিলার নয়। চৈতিই প্রধান চরিত্র যাকে ঘিরে বর্তমান যুগের ভালোবাসা বিষয়ক জটিলতা তুলে ধরা হয়েছে এবং এর পরিণতি তুলে ধরা হয়েছে। তাই আগামী চৌদ্দটা পর্ব পড়ে আপনারা বুঝতে পারবেন না গল্পটা কোনদিকে এগিয়ে যাচ্ছে। পনেরো নম্বর পর্ব পড়ার পর থেকে ইন শা আল্লাহ বুঝতে পারবেন। ‘ধূম্রজাল’ এর মতো পাশে চাই আপনাদের।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here