‘লোডশেডিং’
পর্ব ২৭.
তাবিনা মাহনূর
____________________
উৎসবের বাড়িটা এখন শ্মশানের মতো সুনসান নীরব। কিছুক্ষণ পরপর দিলারার হেঁচকি তুলে কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। শিমুলের হাতে একটা চিরকুট যেটা সে সারাফের কাছ থেকে পেয়েছে। সেখানে লেখা,
‘ভালোবাসা নামের অনুভূতির পুরো সংজ্ঞাটাই তুমি, আমার শিমুপু। আজ তোমাকে না বলে চলে যাচ্ছি তাই রাগ করো না। তুমি আমাকে ভালোবাসো জানি। রাগ অভিমান যা-ই করো না কেন ঠিক আমার একটা খোঁজ তুমি নিবেই। ভালোবাসার মানুষটার সাথে যেন আজীবন তোমার এই হালাল সম্পর্ক অটুট থাকে আল্লাহর দেয়া রহমতে। দুআ করি।
আরেকটা কথা, আমি তোমাকে ভালোবাসি শিমুপু।’
জেবিন হাতের চিরকুট নিয়ে নিজের ঘরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছেন। চিরকুটে লেখা,
‘উম্মি, উম্মি অর্থ মা। সরাসরি মা বললে গর্ভধারিনী মা আবার রাগ করতে পারেন। মামণি বলতেও ইচ্ছে করে না। কেমন যেন পর পর লাগে। তাই আজ থেকে তুমি আমার উম্মি। একেবারে আরবি ভাষায় মা ডাকছি! আমি জানি, আমার চলে যাওয়ায় তুমি যতটা কষ্ট পেয়েছো, তা প্রকাশ করলে কেউ বিশ্বাস করবে না। আমি বিশ্বাস করি তোমাকে, যেমনটা ভালোবাসি। অপেক্ষায় থাকবো তোমার একটা ফোনকলের। যেখানে তুমি বলবে, আমাকে জানালে কি খুব ক্ষতি হতো?
আমি তোমার অভিমান ভাঙার অপেক্ষায়…’
সাদিয়া আর সাদিক নিঃশব্দে কাঁদছে। সাদিয়া প্রায়ই বলেছে, ‘আপু দূরে যেতে চেয়েছিল। আপু দূরে কেন গেল? আমাকে নিয়ে গেল না কেন?’
সারাফ তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে বড় এক বাক্সভর্তি চকলেট আর কালারপেন দিয়ে বললেন, ‘তোদের আপু বলেছে, কেউ যদি কাঁদিস তাহলে তোদের আপু দূর থেকেই কষ্ট পাবে।’
বাক্সটা সাদিয়া ঠেলা মেরে সরিয়ে আবার কেঁদে উঠলো, ‘আমার এগুলা চাই না। আপুকে এনে দাও। আমি আপু চাই।’
সাদিক কান্না মুছে বললো, ‘সবাইকে চিঠি দিলো। আর আমাদের এগুলো? আমার আপুর হাতের লেখা লাগবে। এসব না।’
সারাফ পকেট থেকে একটা চিরকুট বের করলেন। সাথে সাথে তারা সেটা নিয়ে পড়তে শুরু করলো,
‘হুঁশ! একদম কাঁদে না। আমি জানি এতক্ষণে চিঠিটা ভিজে একাকার। এবার একটু থাম তোরা। নাহলে পরের অক্ষরগুলো পড়তে কষ্ট হবে। আমি লিখতে গিয়েই কেঁদে ফেলছি রে! তোদের আর কি থামতে বলবো? আচ্ছা শোন, তুরস্ক খুব একটা দূরে না মৃত্যু যতটা দূরে। তাই সবসময় আলহামদুলিল্লাহ পড়বি। ভাববি, আমার আপু বেঁচে আছে! আলহামদুলিল্লাহ!
বেঁচে আছে- শব্দ দুটো খুবই স্বস্তি দেয় জানিস? যতদিন না কাউকে হারাবি, ততদিন এই দুটো শব্দের মানে বুঝতে পারবি না। আর তাই, এখনই এই শব্দ দুটো বুঝে আশেপাশের সবাইকে আগলে রাখ। আমি দুআ করি, তোদের আপনজনের কথা চিন্তা করে সবসময় যেন তোরা সেই দুটো শব্দ নিয়ে স্বস্তিতে থাকিস।
আমি তোদের খুব ভালোবাসি। আরো একবার মনে করিয়ে দিই, আমি কিন্তু বেঁচে আছি!’
মাইমুনা চিঠিটা হাতে নিয়ে স্তব্ধ হয়ে বসে আছে। সে ভাবতেও পারেনি, চৈতি তাকেও মনে রেখে একটা চিঠি লিখেছে। যেখানে লেখা, ‘তুমি খুব ভালো মেয়ে। কিন্তু তোমার জীবনটা এতো মলিন! আমার আর তোমার জীবনের গল্প ভিন্ন হলেও, দুজনই তাওয়াক্কুল মেনে চলতে চাই আলহামদুলিল্লাহ। এটা মনের মিল হয়তো, মুমিন বলে মিলটা গাঢ়। আঙ্কেলের মৃত্যুর পর আমি চেয়েছিলাম তোমাকে শক্ত মনের ধৈর্যশীল মুসলিমাহ হিসেবে দেখতে। আমার আশা পূরণ হয়েছে। দুআ করি, তোমার জীবনসঙ্গী হিসেবে পছন্দের মানুষ এবং সৎ কাউকে পাও। ভালো থেকো। আমার জন্য দুআ করো।’
জয়নাব বেগমের চিঠিটা আনাস পড়ে শোনালো, ‘মিষ্টি দাদি, আমি তোমার থেকে দূরে চলে যাচ্ছি এটা ভেবো না। শুনেছি দূরে গেলে ভালোবাসা নাকি বাড়ে। জানি না তা কতটুকু সত্য যেহেতু কেবল মাত্র তুরস্কের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছি। তাই দিন যেতে থাক, তুমি আমি মিলে নাহয় সেই গভীর ভালোবাসাটা উপলব্ধি করবো? দাদি আমার, আমি আবার ফিরে আসবো ইন শা আল্লাহ। তোমার কোলে মাথা রাখবো। শুনবো তোমার কণ্ঠে মধুর ডাক, ছুডু কুহু!’
সারাফ সাহেব ছাদের দোলনায় বসে পাশে হাত রাখলেন। সেখানে নিজের চিঠিটা রেখে তিনি কল্পনা করলেন, মেয়েটা পাশেই বসে আছে। তিনি অপলক সেদিকে তাকিয়ে থাকলেন। দেখলেন, চৈতি দাঁত বের করে হাসছে। তাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে চৈতি চিঠির কথাগুলো বলতে শুরু করলো।
‘বাবা? তুমি তো সবই জানো। বিদেশ পড়ার ইচ্ছেটা আমার কোনোকালেই ছিল না। মাহরাম ছাড়া বিদেশে থাকবো, এটা যেন অসম্ভব কল্পনা ছিল। কিন্তু যেদিন আমার জীবনে সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় ঘটে গেল সেদিনই ঠিক করেছি আমি কঠিন মানুষে রূপ নিব। আমি অনেকটাই সফল আলহামদুলিল্লাহ। যখন জানলাম তুরস্কে মামা থাকেন, তখন খুশিতে মনটা বাকবাকুম করে উঠেছিল। মামা আমার মাহরাম। তাও আবার দুটো মামা। একজনেরও ছেলে সন্তান নেই। আল্লাহ যেন সুযোগ হাতের মুঠোয় এনে দিলেন। এইসব তো তুমি জানোই। তবু কি মনে করে লিখলাম কে জানে!
আসলে, ভালোবাসি তোমাকে- এই কথাটা বলতে বেশ সংকোচ লাগছিল। এজন্যই এত ভান ভনিতা। বাবাকে কেউ সরাসরি ভালোবাসি বলতে পারে? কেন পারে না? এর উত্তর খুঁজেছি। পাইনি। তবে আমি নিজেই একটা উত্তর বানিয়ে নিয়েছি। বাবা নিশ্চয়ই জানেন সন্তান কতটা ভালোবাসতে পারে তাকে? সন্তানও জানে তার ভালোবাসার কথা। আর তাই এসব বলাবলির প্রয়োজন পড়ে না। না বললেও ভালোবাসায় একটুও ভাটা পড়ে না। এটা আমার হিজিবিজি চিন্তাভাবনা, তোমার কাছে প্রকাশ করলাম তুমি আমার অনুভূতির রাজ্য বলে।
ভালোবাসি বাবা, ভালোবাসি বাবা, ভালোবাসি বাবা, লিখেই যাবো। পৃথিবীর সবগুলো কলমের কালি দিয়ে সবগুলো স্থানে লিখেই যাবো, ভালোবাসি বাবা! লিখেই যাচ্ছি, লিখেই যাচ্ছি…’
হাওয়ায় মিলিয়ে গেল চৈতি। সারাফ সাহেবের দুই চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। তিনি দোলনার উপর শুয়ে চোখ বন্ধ করলেন। অনুভব করলেন, চৈতি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
চৈতি পার্লার থেকে ফিরে আসছে না দেখে সবাই ধারণা করেছিল সে পালিয়েছে। তবে সারাফ যখন বললেন, চৈতিকে তিনি এয়ারপোর্ট রেখে এসেছেন তখন এক নিমিষেই পুরো বাড়ির সাজ সাজ রব নিস্তব্ধতায় ছেয়ে গেল। সারাফের পাঞ্জাবির কলার চেপে ধরে সজীব সাহেব অনেক আজেবাজে বকেছেন। তার নামে মানহানির মামলা দেয়ার হুমকি দিয়েছেন। এর পৃষ্ঠে সারাফ ধর্ষণের মামলা করার হুমকি দিয়েছেন। এই নিয়ে দুই ভাইয়ের মাঝে ঝামেলা লেগে গেলে বাড়ির লোকজন সেটা সামলে নিয়েছে।
তবে সম্পূর্ণ সময় সৌরভ ছিল শান্ত। তাকেও চিরকুট দেয়া হয়েছে যেটা শিমুলের স্বামী মাহতাবের মাধ্যমে সে পেয়েছে। সারাফ নিজে হাতে দিতে চাননি। মাহতাবকে দিয়ে পাঠিয়েছেন। চৈতি লিখেছে, ‘বেত্রাঘাত করা হয়নি আপনাকে। আবার ক্ষমা করতেও কষ্ট হয়। তাই বিয়ে না করে ছোটখাটো শাস্তি দিলাম। কিন্তু এতে আমানতের খিয়ানতও করে ফেলেছি। আপনি ক্ষমা করবেন আশা করছি।’
সৌরভ শুধু বিড়বিড় করে বলেছে, ‘ক্ষমা করেছি। ক্ষমা করেছি…’
__________
আজ সাড়ে চার বছর ধরে চৈতি তুরস্কে আছে। এরই মাঝে বদলে গিয়েছে অনেককিছু।
সারাফ সাহেব নিজেকে বেশ ব্যস্ত রাখেন ব্যবসার কাজে। অবসর পেলে চৈতির কষ্ট তাকে কুড়ে কুড়ে খায়। তাই নিজেকে ব্যস্ততায় রাখেন সবসময়।
জেবিন প্রায়ই মন খারাপ করে বসে থাকেন। কারণটা সাদিয়া। সাদিয়া কিশোরী রূপ পেয়ে যেন আরো বখে গিয়েছে। মায়ের মুখের উপর তর্ক করে। বাবাকে খুব ভালোবাসলেও পরোয়া করে না তেমন। সাদিকের বারণ শুনতে চায় না। আজকাল সে পড়াশোনা ও ইবাদতের চেয়ে ফুটবল টিম আর ব্যাডমিন্টনে বেশি মনোযোগ রাখছে। জেবিন চৈতিকে নিজ চোখে বড় হতে দেখেছেন। চৈতি একসময় বাস্কেটবল দলের নেত্রী ছিল। সেই চৈতি সব ছেড়ে দিয়েছিল কেননা খেলতে গেলে থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট পরতে হয়। বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে খেলতে হয় যেখানে পুরুষ স্যারও থাকে। সৌরভের মানা নয়, সে নিজেই এসব থেকে দূরে সরে গিয়েছিল। অথচ সাদিয়া উল্টোপথে হাঁটছে। সারাফ মানা করলে সাদিয়া চুপ করে থাকে। কিন্তু নিজের কাজ থেকে এক পা নড়ে না।
সাদিক চুপচাপ ভদ্র স্বভাবের ছেলে। বোনকে ভালো মন্দের পার্থক্য বুঝিয়ে পর্দার গুরুত্ব তুলে ধরেছে। সাদিয়া সেসব কানে নেয়নি। তবে সাদিক সদ্য কিশোর বয়সে পা রাখায় দ্বীন সম্পর্কে বেশ আগ্রহী। তার খুব ইচ্ছে তাড়াতাড়ি দাড়ি গজানোর। এই বয়সেই সে দাড়ি চায়!
শিমুলের তিন বছরের এক মেয়ে আছে। মেয়েটা তার মতোই মিষ্টি। শিমুলের উসিলায় সারাফ সাহেবের বাড়ির প্রায় প্রত্যেক মহিলা দ্বীন নিয়ে আগ্রহী হয়েছে। শিমুলের শ্বশুরবাড়ির সবাই প্রায় দ্বীন মেনে চলার কারণে সেখানে তার খুব বেশি দাওয়াহ দিতে হয় না। নিজের বাড়িতে যেদিনই আসে, সেদিনই তালিম করে সে। প্রতিবেশীরাও মনোযোগ দিয়ে তার কথা শোনে। তবে সে ফিকহি বিষয়গুলোর উত্তর দিতে পারে না। তাই মাঝে মাঝে তার ননদকে সাথে নিয়ে আসে যিনি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছেন এবং ফিকহ সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখেন।
আজও শিমুল ও তার একমাত্র ননদ মারইয়াম তালিমে বসেছে। মহিলাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে এক ঘন্টার আসরের সমাপ্তি ঘটালো শিমুল। তার মেয়েটা বাবার কাছে যাওয়ার জন্য কাঁদছে। গত এক সপ্তাহ ধরে জয়নব বেগমের শরীর খুব খারাপ হওয়ায় শিমুল এখানে বেশ কদিন ধরে থাকছে। মাহতাব আজ বোনকে রেখে নিজের কাজে চলে গিয়েছে, তাই বাবাকে এক ঝলক দেখতে পেয়েই মেয়েটার জেদ শুরু হয়েছে।
শিমুল মাহতাবকে ফোন করে মেয়ের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘মেহজাবিন, বাবাকে আসতে বলছি ফোন করে। তুমি এবার থামো।’
মায়ের ঠান্ডা কণ্ঠের পেছনের রাগটা ছোট্ট মেহজাবিন ভালোভাবে চিনে। তাই সে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলো। তবে মনে তার আনন্দের ঝর্ণা বইছে। অন্তত তার কান্নার কারণে সে আজ বাবার কাছে যেতে পারছে।
মাহতাব ফোন ধরলো, ‘হ্যাঁ বলো।’
– কখন আসবে তুমি? তোমার মেয়ে কান ঝালাপালা করে দিচ্ছে।
হেসে উঠলো মাহতাব, ‘আরে চলেই এসেছি। গলির মোড়ে হঠাৎ নিবরাসের সাথে দেখা হলো।’
শিমুল ভ্রু কুঁচকে মনে করলো নিবরাস কে হতে পারে। মনে পড়লো তার, মাহতাবের ছোট ফুপির ছেলে নিবরাস। বেশ উচ্চবংশ আর সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছেলে। কিন্তু ধর্মের দিক থেকে তার কোনো ছাড় নেই। নিজেকে মুমিন হিসেবে তৈরি করতে আপ্রাণ চেষ্টা তার। এমনটাই শুনেছিল শিমুল মাহতাবের কাছ থেকে।
– তো রাস্তায় কেন তোমরা? বাসায় এসো।
– দাঁড়াও নিবরাসকে বলে দেখি।
– বলে দেখি আবার কি? উনাকে নিয়ে এসো তুমি। এভাবে বাসার নিচ থেকে চলে গেলে কেমন দেখায়?
নিবরাস সহ মাহতাব এসে উপস্থিত দোতলায়। নিবরাসের খুবই অস্বস্তি হচ্ছে। সে একদম আসতে চায়নি, অনেকবার মানা করার পরও যখন মাহতাব ছাড়তে চাইলো না তখন আবারও ‘না’ বলে দেয়াটা তার কাছে বেয়াদবি মনে হয়েছে। তাই এখানে অনিচ্ছা সত্ত্বেও আসতে হলো তাকে। মামাতো ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি, তার কাছে মোটেও রসের হাঁড়ি নয়। মাহতাব অবশ্য বিরাট হাসি মুখে ঝুলিয়ে রেখেছে। শিমুলকে দেখা যাচ্ছে না। নিবরাস জানে, মাহতাবের বউ খাস পর্দা মেনে চলে। সে নিজেও দৃষ্টির হেফাজত করতে হিমশিম খেয়ে যায়। নিজের দৃষ্টি মেঝেতে রেখেছে সে। তাই সামনে যদি এখন কোনো নারী হেটে যায়, তাহলে সে টের পাবে না।
– আসসালামু আলাইকুম বাবা, ভালো আছেন?
সাজিদ সাহেব মেয়ের জামাইয়ের সাথে করমর্দন করলেন। তারপর নিবরাসের সাথে হাত মিলিয়ে ভালো মন্দ জিজ্ঞাসা করলেন। রাতের খাবার খেয়ে সবাই একসাথে বেরোনোর সময় সারাফের সাথে দেখা হলো মাহতাবের।
– কেমন আছো বাবা? তোমাকে অনেকদিন পর দেখলাম।
– আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি ছোট কাকা। আপনার শরীর ভালো তো?
কিছুক্ষণ পর নিবরাসও পরিচিত হলো সারাফের সাথে। সারাফের চোখ আটকে গেল ছেলেটার দিকে। কি সুন্দর মুচকি হাসি। অনেকটা স্বাধীনের মতোই নির্মল। চৈতির পাশে দারুন মানাবে ছেলেটাকে।
ইদানিং সারাফের একটা মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। যেকোনো আপাতদৃষ্টিতে দ্বীনদার ছেলে দেখলেই চৈতির পাশে মানাবে কিনা চিন্তা করে বসেন। এইতো আর দুটো মাস। চৈতি ঢাকায় আসবে। সারাফ আর জেবিন ঠিক করেছেন, এবার চৈতিকে বাংলাদেশে আটকে ফেলবেন নবজীবনে বেঁধে। সারাফ জানেন চৈতি সহজে রাজি হবে না। তবু তিনি মনে মনে অনেক পাত্র খুঁজছেন। আজকের ছেলেটা এ পর্যন্ত দেখা সব ছেলের মাঝে সর্বোত্তম।
সারাফ নিজের মতো ভেবেই চলেছেন আর অদ্ভুত সব প্রশ্ন সিঁড়িতে দাঁড়িয়েই করতে লাগলেন। ‘তুমি কোথায় পড়াশোনা করেছো? এখন কি করছো? ভাইবোন কয়টা? বাবা মা আছেন? তোমার বাবার সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিও।’ এ ধরণের কথাবার্তা শেষে সারাফ হাসিমুখে বিদায় জানালেন। কিন্তু নিবরাস স্তব্ধ চিত্তে সিঁড়ি বেয়ে নামলো। তার কাছে লোকটাকে অন্যরকম লেগেছে। প্রথম সাক্ষাতে এতো প্রশ্ন কেউ তাকে করেনি।
দুই মাস পর…
_________
চলবে ইন শা আল্লাহ….
[চৈতির চলে যাওয়া আর নতুন চরিত্র নিবরাস নিয়ে মতামত জানিয়ে যাবেন ; ) ]