‘লোডশেডিং’ পর্ব ৪.

0
310

‘লোডশেডিং’
পর্ব ৪.

তাবিনা মাহনূর

_____________

জেবিন ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছেন সাদিকের দিকে। সাদিক নির্বিকার থাকার চেষ্টায় আছে। চৈতি জেবিনের মুখ দেখে বুঝে নিয়েছে সামনের ঘটনা সম্পর্কে। এখন তার আর কোনো অশান্তির বোঝা নেয়ার মতো ক্ষমতা নেই। দুর্বল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে মেঝের দিকে।

জেবিন সাদিকের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলেন, ‘সাদিক, তুই শিমুলের কাছে না গিয়ে এখানে এলি কেন?’

– তোমাদের মার্কেটে যাওয়ার কথা ছিল। ভাবলাম এখন সেখানে গিয়ে যেহেতু লাভ নেই, আপির কাছে অংকটা শেষ করে নিই।
– একটা অংকর জন্য অপেক্ষা করা যেতো না? এখানে আসতে বারণ করেছি তোকে। তুই জানিস না তোর ব্রিলিয়ান্ট রেজাল্ট কতজনের হিংসার কারণ হতে পারে? তখন যদি ভুলভাল শিখিয়ে দেয়, তোর ক্ষতি হবে না?
– কার কথা বলছো মা?

সাদিক খুব অবুঝ নয় যে এই কথার মানে বুঝবে না। কিন্তু মাকে সে সরাসরি প্রশ্ন করেছে নিজের অবস্থান পরিষ্কার রাখতে। জেবিন কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, ‘ঘরে যা। এখানে আর আসবি না।’

সাদিক ঘরে চলে গেল। চৈতি ভেবেছিল জেবিন তাকেও কিছু বলবে। কিন্তু প্রতিবারের মতো এবারও অন্য মানুষের সাথে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলে চৈতির উপর ক্ষোভ ঝেড়ে গেলেন। তবু চৈতির সাথে কথা বললেন না।

দুপুরে গোসল সেরে ছাদে কাপড় মেলে দিতে গেল চৈতি। নভেম্বর মাস, অথচ বৃষ্টি বৃষ্টি ভাব সারাদিন ধরে। আজকাল আবহাওয়া অনেক পরিবর্তন হয়েছে। শীতকাল আসতে চলেছে অথচ বৃষ্টি কমার লক্ষণ নেই। মেঘলা আকাশ, তবু কাপড় মেলে দিলো চৈতি। স্বাধীন ছাদে নেই। হতাশ মনে সিঁড়ি বেয়ে নেমে ঘরে এলো সে। ততক্ষণে বাড়ির কিছু মেয়ে সদস্য শপিং শেষে বাড়িতে ফিরেছে। ঘরে ঢুকেই শিমুলকে দেখতে পেলো চৈতি। শিমুল আজ এখানে দুপুরের খাবার খাবে। যাক, একটু গল্প করার সাথী মিললো।

দুপুরের খাওয়া শেষে শিমুল আর চৈতি তার ঘরের বারান্দায় থাকা দোলনায় বসে গল্প করছে। গল্পের ফাঁকে চৈতি দুই কাপ চা নিয়ে হাজির হলো। ঠান্ডা বাতাস বইছে, কিছুক্ষণের মধ্যে বৃষ্টি শুরু হবে। গল্পের তালে তালে আছরের আজানের সুর ভেসে আসলো।

চৈতি ওড়না মাথায় পেঁচিয়ে নিলো। এটা আমাদের দেশে অদ্ভুত এক রীতি। পর্দা করি আর না করি, আজানের সময় মাথায় ওড়না দিতেই হবে! ঘোমটা মাথায় দেয়ায় চৈতিকে দেখতে ছোট্ট পুতুল বউ মনে হচ্ছে। শিমুল মিষ্টি হেসে বললো, ‘তোকে বাবু বউ মনে হচ্ছে।’

চৈতিও মুচকি হেসে উঠলো। তারপর প্রশ্ন করলো, ‘শিমুল আপু, তোমার কাছে একটা প্রশ্ন আছে আমার। তুমি রাগ করবে না শুনে, প্রমিস করো?’

– এতো ভনিতা না করে বলে ফেল।
– আসলে, তুমি অনেক পরিবর্তন হয়েছো। কি পরিবর্তন আমি বোঝাতে পেরেছি নিশ্চয়ই? এই হঠাৎ পরিবর্তনের কারণ কী?

শিমুল কিছুটা সংকুচিত হয়ে বললো, ‘পরিবর্তন আর হতে পারলাম কই? এখনো ঠিকমতো মাথায় ওড়না দিতে পারলাম না!’

– এই যে তুমি এখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ো। প্রতিদিন ক্বুরআন তিলাওয়াত করো। এগুলো পরিবর্তনের অংশ। তুমি আগে এমন ছিলে না।
– সেকি! নামাজ প্রত্যেক মুমিনের জন্য ফরজ। এটা বাদ দিয়ে এতদিন নিজেকে প্রায় অমুসলিমদের কাতারে ফেলে দিয়েছিলাম। যখন এর গুরুত্ব সম্পর্কে জানলাম তখন বাদ দেয়ার কথা ভাবলেই কষ্ট লাগে।

চৈতি মলিন মুখে বললো, ‘সেটাই আপু। আমরা কত কত নিয়ম ভঙ্গ করি!’

– আমি পরিবর্তন হতে পারছি নারে। আমার পরিবেশ, পরিবার আর সমাজের মানুষের কারণে পরিবর্তন হওয়াটা দায় হয়ে পড়েছে। আমি পর পুরুষের সামনে মাথায় ওড়না দিয়ে থাকি, এতে অনেকেই রেগে যায়। বলে, বিয়ের আগেই নাকি মহিলাদের মতো হয়ে যাচ্ছি। ক্ষ্যাত হয়ে যাচ্ছি। অথচ আমার পর্দা করার কথা। শুধু মাথা কেন? শরীরের সর্বাঙ্গ ঢেকে চলার কথা।

– আমাদের পরিবার তেমন ধার্মিক না আপু।
– সেটাই তো সমস্যা রে। তারা যদি ইসলামের পথে আসে তাহলে আমার থেকে খুশি কেউ হবে না। কিন্তু তারা তো আসছেই না উল্টো আমাকে সেই পথে যেতে বাধাগ্রস্ত করছে। এমন অবস্থায় একবার আমার কথাটা চিন্তা কর?

চৈতির কিছু বলার নেই। সে নিজেও ধর্মের সকল নিয়ম মানে না। পরীক্ষার আগের কয়েকদিন নামাজ পড়ে। এরপর রেজাল্টের আগে একটু নামাজ পড়ে। আর রমজান মাসে চেষ্টা করে প্রতি ওয়াক্ত নামাজ পড়ার। এছাড়া সারা বছর নামাজের খোঁজ রাখে না সে। ক্বুরআন শরীফের আরবি হরফগুলোর উচ্চারণ ভুলেই গেছে হয়তো। পর্দার কথা নাই বা বলা হলো!

– আমার এই পরিবর্তন হয়েছে খুবই সাধারণ ভাবে। আমার বান্ধবী আয়েশা ধার্মিক মেয়ে। সে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে আসছে বহুদিন ধরে। তাকে বলেছিলাম আমাকেও একটু সাহায্য করতে। সেসময় তাহমিদের সাথে আমার ব্রেক আপ হওয়ার কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে গিয়েছিল আমার মধ্যে। আমি জানি যে আত্মহত্যা করা মহাপাপ আর এর শাস্তি জাহান্নাম। তাই আয়েশার কাছ থেকে মনে শান্তি আনার মতো কিছু শুনতে চেয়েছিলাম যেটা আমাকে আত্মহত্যা থেকে রক্ষা করবে। আর সেই শান্তির পথ হলো যথাযথ ভাবে ইসলামকে মেনে চলা।

শিমুল ইসলামের বিধি নিষেধ সম্পর্কে আলোচনা করলো চৈতির সাথে। চৈতি সেসব শুনে মনে মনে ঠিক করলো, আজ থেকে নিয়মিত নামাজ আদায়ের চেষ্টা করবে।

বৃষ্টি পড়া শুরু হয়েছে। শিমুল আর চৈতি একসাথে আছরের নামাজ আদায় করলো। শিমুল চৈতির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে জেবিনের সাথে দেখা করতে গেল। তারপর নিজের বাসায় চলে গেল ক্বুরআন তিলাওয়াত করতে। সে গোপনে নিজের ঘরে দরজা বন্ধ করে ধীরে ধীরে ক্বুরআন তিলাওয়াত করে। কেননা ছোট কাকী নীরা বেগম আধুনিক মনের মানুষ। তিনি তার মেয়ের পরিবর্তনে মোটেও খুশি নন। তাই মাঝে মাঝে কটু কথা বলে ফেলেন যার কারণে শিমুল মানসিক অশান্তিতে ভোগে। সেই অশান্তি কমানোর চেষ্টায় নিজের ঘরে গোপনে ইবাদত করে সে।

বৃষ্টি শুরু হওয়ার সাথে সাথে চৈতির মনে পড়লো, ছাদে কাপড় নেড়ে দেয়া আছে। দ্রুত সিঁড়ি বেয়ে উঠে ছাদের দরজা খুললো সে। ছাদে যাওয়ার আগে আলতো করে মাথায় ওড়না পেঁচিয়ে নিলো। শিমুল তাকে বলেছে, হাশরের ময়দানে প্রতিটি নারী যাদের চুল পুরুষের নজরে আসতো, তাদের চুলগুলো সাপের আকার ধারণ করবে।

ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি পড়া শুরু করেছে। চৈতি ছাদে এসে দেখলো তার কাপড়গুলো নেই। তারমানে কাজের মেয়ে কাজল সেগুলো নিয়ে গিয়েছে। মেয়েটা তিনদিনের জন্য বাড়িতে গিয়েছিল। আজ ফিরেছে যদিও সে চৈতির কোনো কাজ করে দেয় না। যেখানে বাড়ির কর্ত্রী চৈতিকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে সেখানে বাড়ির কর্মী কীভাবে সম্মান করবে তাকে? তবে আজ মনে হয় মেয়েটার দয়া হয়েছে চৈতির উপর। তাই সবগুলো কাপড়ের সাথে তার কাপড়গুলো নিয়ে গেছে।

চৈতি সম্পূর্ণ ভিজে গিয়েছে। ভিজতে ভালো লাগছে। ঠান্ডা বাতাসে গায়ে শিহরণ জাগ্রত হয় আর বৃষ্টির স্পর্শ অনন্য অনুভূতির সাথে সাক্ষাৎ করিয়ে দেয়। চৈতি চোখ বন্ধ করে উপভোগ করছে প্রতিটি বারিধারা। চোখ খুলে দেখলো সে, সামনেই তার মনচোরা। ধূসর রঙের শার্ট ভিজে গায়ের সাথে লেপ্টে আছে। ঝাঁকড়া চুলগুলো ভিজে কপালের সাথে লেগে অদ্ভুত সৌন্দর্য প্রকাশ করছে। সেও দৃষ্টির পর্দা বন্ধ করে রেখেছে। চৈতি নিষ্পলক তাকিয়ে রইলো।

চৈতির ঘোমটা খুলে গেল বাতাসের তোড়ে। তার কোমর সমান চুল ভিজে বৃষ্টির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে নতুন করে শোভামণ্ডিত করে তুলেছে। চৈতি হাত রাখলো ছাদের রেলিংয়ের উপর, ডাকলো আলতো স্বরে, ‘মনচোরা!’

শুনতে পায়নি স্বাধীন। তবে চোখ খুলে অন্যদিকে হাঁটতে শুরু করেছে সে। চৈতি চুপ করে দাঁড়িয়ে। স্বাধীন কিছুক্ষণ অপর পাশে দাঁড়িয়ে থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে হাঁটতে গেলেই চৈতিকে দেখতে পেলো। বলে উঠলো সে, ‘ভিজে যাচ্ছো তো!’

চৈতি চুপ করে দেখলো স্বাধীন নিজের কপালে আলতো বাড়ি মেরে বলছে, ‘তুমি নিশ্চয়ই ভেজার জন্য এসেছো। আমিই উল্টাপাল্টা বলি।’

চৈতি হেসে উঠলো। স্বাধীন সেদিকে একবার তাকিয়ে চোখ নামিয়ে অন্যদিকে হাঁটতে শুরু করলো। চৈতি ডেকে উঠলো, ‘ভাইয়া!’

স্বাধীন পেছন ফিরে তাকালো। চৈতি তার ঠোঁটের কোণে হাসি ধরে রেখে বললো, ‘ধন্যবাদ।’

স্বাধীনের প্রশ্ন, ‘ধন্যবাদ কেন?’

– সৌরভ ভাইয়াকে সেই রাতের ঘটনা না বলার জন্য।
– ও জিজ্ঞেস করেনি তাই বলিনি। যদি তোমার কথা জিজ্ঞেস করে তবে বলবো।
– না না! দয়া করে বলবেন না। অতো রাতে ছাদে এসেছিলাম শুনলে অনেক রেগে যাবে।
– কেন এসেছিলে তবে?

চৈতি চুপ করে থাকলো। সে মিথ্যে বলতে চায় না। কিন্তু এই কথার উত্তরে কিছু বলা সম্ভব নয়। প্রসঙ্গ বদলে সে বললো, ‘আপনার হারমনিকা কোথায়? ওটা বাজাবেন না?’

মুচকি হাসলো স্বাধীন। তার হাসির কোনো আলাদা বিশেষত্ব নেই। তবুও সেই হাসি মায়াবী, যেখানে ভালোবাসার আন্তরিকতা দেখা দেয়। সেই হাসিতে নির্মল হয়ে ওঠে অপর মানুষের মন। সৌরভ হাসলে তার বাম গালে ক্ষুদ্র গর্তের সৃষ্টি হয় যেটা মেয়েদের মন কেড়ে নিতে সক্ষম। অথচ সেই হাসি মায়াবী মনে হয় না। মনে হয় না সেই হাসিতে কোনো ভালোবাসা লুকিয়ে আছে।

– হারমনিকার সুর শুনতে রাতে আর এসো না।

থমকে গেল চৈতি। তার মনের অবস্থা বুঝে গেল কি করে এই মানুষটা! স্বাধীন চলে যাচ্ছে। চিলেকোঠায় নয়, ছাদের দরজা খুলে সে চলে গেল নিচে। চৈতি ধীরে ধীরে হাঁটলো সিঁড়ির কাছে। মন পড়ে রইলো চিলেকোঠায় থাকা মানুষটির কাছে।

সন্ধ্যায় সৌরভ এলো পড়াতে। চৈতি মাগরিবের নামাজ শেষে উঠে দাঁড়াতেই দেখলো সৌরভ তার দরজার কাছে অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

– তুই নামাজ পড়ছিস!

চৈতি সংকুচিত হয়ে মাথার ওড়না টেনে নিলো আরো সামনের দিকে। সৌরভ তা দেখে দ্রুত ঘোমটা খুলে দিলো। চৈতির গালে হাত রেখে সে বললো, ‘আমার সামনে এগুলো করার দরকার নেই। অন্য ছেলেদের সামনে ওড়না মাথায় দিস।’

টানা দুই ঘন্টা সৌরভের কাছে পড়তে হলো চৈতিকে। এর মাঝে এক ঘন্টা বকা খেলো নিত্য কর্মকান্ড নিয়ে। তবে সৌরভ খুব ভালো পড়ায়। আর পড়ার সময় অন্য কোনো আলাপে জড়ায় না। পড়া শেষে বাড়ির কাজ দিলো সে। কিছুক্ষণ পড়াশোনা নিয়ে শাসিয়ে চৈতির কপালে ঠোঁট রেখে আলতো স্পর্শ করে চলে গেল সৌরভ। চৈতি হাত দিয়ে কপাল ঘষতে লাগলো। এই স্পর্শ সে খুব ঘৃণা করে।

রাতের আঁধারে হারমনিকার সুর শোনা গেল না। চৈতির হাতে যেই মেহেদী লেপ্টে ছিল তা লাল রঙে রেঙে আছে। এখন সেটা গোবরের মতো লাগছে না। তার ইচ্ছে করছে হাত দুটো স্বাধীনের সামনে রেখে বলতে, ‘এখন কি আলতা পরা মনে হচ্ছে? নাকি এখনো পঁচা গোবর মনে হচ্ছে?’ স্বাধীন তার নকশা বিহীন হাতকে সুন্দর বলেছে। এটাই যথেষ্ট তার মনকে নতুন স্বপ্ন দেখানোর জন্য। মাঝে মাঝে তার মনে হয়, স্বাধীনকে নিয়ে সে এতো কল্পনা করে, স্বাধীন কি তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে না?

ফোনে ম্যাসেজ এসেছে। চৈতি ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো শিমুলের ম্যাসেজ।

‘তোকে গোপনে একটা আনন্দের কথা বলি। ফজরের নামাজের আগে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে যা চাইবি তাই পাবি। এই নামাজ আল্লাহ খুব পছন্দ করেন। আরো মজার বিষয় কি জানিস? এই গোপন কথাটা আমি সবাইকে ম্যাসেজে জানিয়ে দিচ্ছি!’

শেষের বাক্যটি পড়ে হাসি পেলো চৈতির। গোপন অথচ সবাইকে জানিয়ে বেড়াচ্ছে শিমুল। চৈতি ঠিক করলো, তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে সে স্বাধীনকে পাওয়ার আশা করবে। যতদিন না পাবে, ততদিন চেয়েই যাবে। চৈতির জানা হলো না এতে কল্যাণ আছে? নাকি পাপের সমুদ্র!

___________

চলবে ইন শা আল্লাহ….

[আপনাদের ‘লোডশেডিং’ নিয়ে আগ্রহ নেই দেখে আমারও আগ্রহ কমে আসছে। তবে আমি দিয়ে যাবো, সেই দুই একজন শুভাকাঙ্ক্ষীদের জন্য।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here