#প্রিয়তমা♥️
#writer- সালসাবিল সারা
#সিজন_১
পর্ব-৯
*
*
সারারাত একটুও ঘুম হয়নি অতিরিক্ত কান্নার ফলে..!!উফফ আমি এতো রোগা কেন আল্লাহ্ই জানেন!আচ্ছা বাবার জন্যে কি একটু কান্নাও করতে পারবো না এই মাথা ব্যাথার জন্যে!!আমার অস্থিরতা দেখে ইতি আপু আমার মাথায় ম্যাসাজ করে দিচ্ছিলেন যেনো আমার ঘুম আসে..!!কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম মনে নেই..!!মায়ের ডাকে ঘুম থেকে উঠে গেলাম..!!চোখ খুলে দেখি
খালামণি আর মা আমার পাশে বসে আছে..!খালামণি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে লাগলেন…
“কিরে শেফা রাতে নাকি তোর শরীর খারাপ করছিলো??..একটা নাপা খেয়ে নিতি তাহলে মাথা ব্যথা অনেকটাই কমতো”..!!
“কি বলছো আপা এ মেয়েকে নিয়ে আমার কত কষ্ট করতে হয়…সে তার জান গেলেও ওষুধ আর খাবার নিজ থেকে খায় নাকি..!?আমি যতক্ষণ বকে বকে না খাওয়ায় এই মেয়ে কখনোই খায় না”..!!
“হ্যাঁ জানি তো..!!ওষুধ ভাত না খেলে সাদিফকে কল দিবি..এরপর সাদিফ এসেই ওকে মেরে মেরে খাওয়াবে”!!!
এসব বলেই মা আর খালামণি হাহাহা করে হাসতে লাগলো…!!
“উফফ কি সুন্দর হাসি তোমাদের মা আর বড়খালা..!!আর খালামণি তোমার ছেলেকে কি আমি ভয় পাই নাকি!!??তোমার ঐ দৈত্য ছেলেকে দেখলে ভালো মানুষই আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে যায়!!!..হাহাহা..সো আমি ভয় পাই না!!.হি ইজ অ্যা আতঙ্ক নাথিং এলস”!!…
বলেই খালামণি আর মাকে জড়িয়ে ধরে চুমু দিলাম..!!
“আচ্ছা তাই!! আমার ছেলে আতঙ্ক!!আজকে দেখি এই কথাটা সাদিফের সামনে বলে দেখা”..!!
“উফফ পারবো না..!!তোমার ছেলেকে তুমি বলো গিয়ে!তবে আমার নাম দিতে পারবে না..!! হু!!বাই দা ওয়ে!!আপুরা কই”..??
মা বলে উঠলেন..”ইতি আর জুমান আজকে ব্রেকফাস্ট রেডি করছে..!!উঠ মা..ফ্রেশ হয়ে হেল্প কর যা”..!!
আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে কিচেনে চলে গেলাম..আপুরা নাস্তা প্রায় বানিয়ে ফেলেছে..!!আর আমি ওদের সাথে আমার সিগনেচার ডিশ পুরি আর আলুর দম বানিয়ে নিলাম..!!আর আপুরা আমার আসার আগেই চিকেন স্যান্ডউইচ, ফ্রুট কাস্টার্ড,আর কফি বানিয়ে নিলো…!!
*
*
আমি আর আপুরা মিলে টেবিলে সব নাস্তা সাজাচ্ছিলাম তখন দেখলাম সাদিফ ভাইয়া এক হাত দিয়ে চুল মুচ্ছে আর অন্য হাতে মোবাইল কানে ধরে কার সাথে যেন কথা বলছে…!! ডাইনিং এ না বসে উনি সোফায় বসে পেপার পড়তে লাগলেন!!আজব সবাই এখন নাস্তা করবেন আর উনি!!আলাদা ভাবে ডাকতে হবে..!!! হাহহহ!! আসছে একেবারে নবাবজাদা..!!
অনেকদিন পর আজকে ডাইনিং এ এত্ত মানুষ..!!খালা খালু,মামা মামী,দাদী,মা আপুরা..আর ড্রয়িং রুমে জারাভি.. ও নাকি কার্টুন দেখে দেখে খাবে..!!আমি একটু আগেই গেস্ট্রিকের ওষুধ খেলাম…তাই আমি আপাতত জুরাইন কে কোলে নিয়ে নাস্তা সার্ভ করছি…!
আর সাদিফ ভাইয়া মহারাজা এখন গেলেন রেডি হতে অফিসে নাকি ইমার্জেন্সী কাজ আছে!!!
🌸
“মা আমি আজ ফিরবো না আজকে ইয়ামিনের ব্যাচেলার পার্টিতে যাবো অফিসের পরে..!!আজকে পড়াইতে পারবো না তোকে শেফা..!!ইতি আর জুমান তোরা থেকে যা আজকে এখানে আর ওকেও একটু পড়িয়ে নিস”..!!
সাদিফ ভাইয়া কথাগুলা বলতে বলতে নাস্তা করতে বসলেন.!!!আর আমি জুরাইন কে খাওয়াচ্ছি আর নিজেও একটু খাচ্ছি..!! খালামণির কথাশুনে একবার উনার দিকে আরেকবার খালামণির দিকে তাকালাম..
“সাদিফ তোর যেকোনো ফ্রেন্ড বা অন্য কাউকে হোম টিউটর হিসেবে মেয়েটার জন্যে ঠিক করে দে না..!! তোরও সময় বাঁচবে আর মেয়েটাও সময়মত পড়াগুলা শিখে নিতে পারবে”…!!
খালামনির কথা শুনে সাদিফ ভাইয়া খাওয়া অফ করে রাগী গলায় বলে উঠলেন…
“কেনো..!?আমার পড়ানোয় কি ক্ষতি হচ্ছে..??বাইরের ছেলে কেন এই ঘরে আসবে?!!আমি বেঁচে থাকতে এটা কখনোই পসিবল না…!!আর তাও শেফার জন্যে..??
“না এমনিই বলছিলাম তোদের সুবিধার জন্যে”..!!
খালামনির কথায় উনি উত্তর দিলেন “হুম” তবে আমাকে ঝাঁটকি দিয়ে বললেন….
“এই অসভ্য তোর কি সমস্যা ??কখন থেকে দেখছি জুরাইনকে নিয়ে খাবারের সাথে রং তামাশা করছিস..! না নিজে খাচ্ছিস না ওকে খেতে দিচ্ছিস??জুরাইন কাম হেয়ার ব্রো..!!ভাইয়া নাস্তা খাইয়ে দিবে তোমাকে”..!!
আমি বেকুব হয়ে গেলাম..!!খালামনির রাগ আমার উপর কেন ঝাড়ছেন!!আজব..!! সাদিফ ভাইয়া উঠে এসে আমার কোল থেকে জুরাইন কে নিয়ে নেওয়ার সময় উনার নখ দিয়ে হাতে খোঁচা দিলেন..!!উফফ জ্বলে উঠলো..!!রাগী চোখে উনার দিকে তাকালাম তবে উনি এখন জুরাইনকে নিয়ে বিজি!!!আমার দিকে একবারও তাকালেন না!!যেন উনি কিছুই করেননি!!!
হাউ রুড!!!
🌸
সন্ধ্যায় খালামণি আর মামারা একসাথেই বের হলেন..!!জুরাইন অনেক চেয়েছিল আমার কাছে থেকে যেতে কিন্তু মামী রেখে যাননি..!!রাখবেই বা কেমনে জুরু তো এখনো অনেকটাই ছোট!!!আমি ইতি আপু আর জুমান আপু আমার রুমে বসে অনেক আড্ডা দিচ্ছিলাম.!!!!যদিও সাদিফ ভাইয়ার আদেশে উনারা আমাকে পড়াতে চেয়েছিলেন কিন্তু আমি অনেক বাহানা দিয়ে তাদেরকে মানিয়ে নিলাম যে আজকে পড়বো না!!….
কথা বলার মাঝেই হঠাৎ সাদিফ ভাইয়া ফোন করলেন জুমান আপুকে…!!
উনার বোনদের সাথে কথা বলেই রেখে দিলেন!!!আমি ভেবেছিলাম আমার সাথেও কথা বলবে..!!আর না পড়ার জন্যে বকাও দিবেন..!!কিন্তু না!! উনি আমার সাথে কথাই বললেন না..!!কেন জানি একটু খারাপ লাগলেও মন কে সান্ত্বনা দিচ্ছি এই ভেবে যে উনার বকা থেকে তো বেঁচে গেলাম..!!
*
*
রাতের খাবার খেয়ে আমি আর আপুরা মিলে ছাদে গেলাম আর সাথে নিলাম মায়ের বানানো আচার..!!
আহহ কি মজা…!!চাঁদ দেখে দেখে আড্ডা দিচ্ছি আর আচার খাচ্ছি..!!যদিও আচার খেলে তলপেটে একটু পেইন উঠে তারপরও খাচ্ছি…!!মা থেকে পারমিশন নিয়ে তারপরেই আচার মুখে দিলাম..!!ফুচকা খেলে অনেক ভয়াবহ অবস্থা হয় পেটের তবে আচার খেলে অতটা ব্যথা করে না..!!
আবারও আড্ডার মাঝে সাদিফ ভাইয়ার ফোন আসলো জুমান আপুর কাছে..!!সেম প্রসেসে উনি আবারো আমার সাথে কথা না বলে ফোন রেখে দিলেন!!..এত্ত ইগনোর!!!..কই এতদিন ত আমার সাথে দিনে একবার হলেও ফোনে কথা বলতেন ওষুধ খেতে বলতেন..!! তবে আজকে উনার কি হলো??!!
ওহহ বুঝলাম..!! হয়ত উনি কোনো সুন্দরী মেয়েদের সাথে ভালো টাইম স্পেন্ড করছে পার্টিতে তাই এই রোগা মেয়েটার কথা উনার গণার টাইম নেই..!!ভাবতেই একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিলাম…!!
“আচ্ছা আপু ব্যাচেলার পার্টিতে কি কি হয়!!??ঐখানে কি অনেক সুন্দর সুন্দর মেয়েরা আসেন”??!!
শেফালীর কথা শুনে ইতি আর জুমান হাসতে হাসতে কাত!!!তারপরেও হাসি সামলে বললো…
“আরে না শেফা ঐখানে জাস্ট ছেলের ব্যাচেলার পার্টি হলে ছেলের ফ্রেন্ডরা বা কাজিনরা মিলে নিজেরাই এনজয় করে আর মেয়েদের হলে মেয়ের ফ্রেন্ডরা বা মেয়ের কাজিনরা মিলে এনজয় করে!এই পার্টির মানে বর বা কনে তাদের বিয়ের আগ মুহূর্তের সিঙ্গেল লাইফটা তাদের কাছের ফ্রেন্ড-কাজিনদের সাথে কাটানো!!.. আবার মাঝে মাঝে কেউ ড্রিংকস ও করে এই এতটুকুই..!!তবে ফরেইনে এই পার্টির রূপ একটু ভিন্ন”…!!
“ওহ আচ্ছা!!!মাথায় আসে না এইসব ব্যাচেলার না কি সব পার্টি..!!?? সবই বাইক্কা”..!!
আর কিছুক্ষণ ছাদে থেকেই নিচে নেমে এলাম.. এরপর ওষুধ খেয়ে আপুদের সাথে পিক তুললাম অনেক!!..
শুয়ে শুয়ে এফবিতে নিউজফিড দেখছিলাম.!!হঠাৎ দেখলাম সাদিফ ভাইয়ার পিক অনেকগুলা..!! ওয়াউ কি সুন্দর ডেকোরেশন..!! উনাকেও তো অনেক হ্যান্ডসাম লাগছে..!!উনার সব ফ্রেন্ডরাও অনেক স্মার্ট!! বাহ বাহ..!!যাক এই কথাগুলা মনে মনে বললাম উনার কানে গেলেই তো আমাকে এই সুন্দর দুনিয়া থেকে আউট করে দিবেন..!!
তবে উনাকে আজ বেশ লাগছে..!! ব্রাউন কালার জ্যাকেট ভিতরে হোয়াইট গেঞ্জি তার উপরে সুন্দর ডিজাইন..!!চুলের স্টাইল টাও তো অনেক সুন্দর.!!আর উনার স্নিকার্সগুলো এত্ত সুন্দর!!!সব মিলিয়ে উনাকে জাস্ট মাশাল্লাহ লাগছে..!আর কত সুন্দর করে হাসছেন!!তবে আমার মনে হচ্ছে হাসিটা উনি মন থেকে হাসছেন না!! আর চোখগুলো ও একটু লাল লাল লাগছে..!!কিন্তু তাও উনাকে দেখে যে কেউ পটে যাবে..!!আমার মন বলছে সাদিফ ভাইয়া অনেক সুন্দর বউ পাবে..!! উনি কত্ত স্টাইলিশ..!! নিশ্চয় উনার জন্যে একটা পরী উনি সার্চ করে নিবেন নাকি অলরেডি সার্চ করে নিয়েছেন!!??আল্লাহ্ই জানেন…!!
এমনি তো আমি এফবি তে আসলেই আমাকে নক দিয়ে আমার সাথে চ্যাট করেন সাদিফ ভাইয়া তবে আজকে উনার কি হলো..!?? সিরিয়াসলি এটা খুবই ভাবার বিষয়..!!!
আর কিছু না ভেবে মোবাইল রেখে শুয়ে পড়লাম আর দেখছি আপুরা আজকের ছবিগুলো আপলোড দিচ্ছে..!!
আপুদেরকে জড়িয়ে ধরে কথা বলছিলাম আর আপুরা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছিলো..!! তখনই আবার মোবাইলের রিংটোন শোনা গেলো…আমরা ভেবেছিলাম খালামণি বা খালু!!..কিন্তু এটা সাদিফ ভাইয়ার কল..!! এত রাতে সাদিফ ভাইয়ার কল!!.. জুমান আপু ভয়ে ভয়ে রিসিভ করলো আর ইতি আপু বললো স্পিকার অন করতে..!!.স্পিকার অন করতেই সাদিফ ভাইয়ার গর্জন শুনে আমরা তিনজনই লাফ দিয়ে উঠে বসে গেলাম শোয়া থেকে..!!
“ইচ্ছা করছে এখনই ঐখানে গিয়ে থাপ্পর দিয়ে তোর গাল লাল করে ফেলি জুমান..!!তোদের সাহস কি করে হয় এমনি ওড়না গলায় ঝুলিয়ে ফেসবুকে ছবি আপলোড দেওয়ার..!!তোরা দিয়েছিস তাই বলে ঐ অসভ্যকে ট্যাগ দিয়েছিস কেনো..!??শেফার কি আক্কেল বেঁচে খেয়েছে..!!??ওর সাহস কি করে হয় মাথায় কাপড় ছাড়া ছবি উঠিয়ে এফবিতে মানুষকে দেখানোর..!!ওকে বলে দে অনেক ছেলেই দেখেছে ওর রূপ..!! প্রথমেই ট্যাগ সরা শেফা থেকে..!!এরপর নে ওর ফোন..!! ওর এফবি মেসেঞ্জার সব অফ কর অ্যান্ড ডু ইট রাইট নাও..!!!জাস্ট হোয়াটস অ্যাপ টা রাখ আর কোনো ছেলের নাম্বার পেলে আমাকে জানা”..!!
“ভাইয়া আসলে তুমি ভুল বুঝছো..!!শেফা আসলে জানে” …
জুমান আপুকে বলতে না দিয়ে উনি আবার রেগে বললেন…
“ওর হয়ে সাফায় একদম গাবি না..!! যত বড় হচ্ছে ও ততো অসভ্য হচ্ছে…এখন সামনে পেলে না ওর গলা চেপে একদম মেরে ফেলতাম”..!!
আমার এত্ত রাগ লাগছিলো বলার মত না..!কিন্তু আমি তো মুখে কিছুই বলতে পারি না উনার ভয়ে!!চুপচাপ কান্না করছি..!! সাদিফ ভাইয়া আমার কথা না শুনেই আমাকে যা না তা বলেই যাচ্ছেন..!! জুমান আপু ইতি আপু আমাকে ইশারায় কান ধরে সরি বলছিলো..!!উনাদেরও বা কি দোষ.!!উনারা কি জানতো নাকি এই জল্লাদটা এমন করবে..?? আপুরা ইজিলিই আমাকে ট্যাগ দিয়েছেন আর…. ছবিগুলাতে আমার গায়ে সুন্দর করেই ওড়না প্যাঁচানো ছিলো..!!
🌸
মোবাইল সার্চ করে জুমান আপু বললো..
” কোনো ছেলেরই নাম্বার নেই”..!!আর ভাইয়া তুমি কি জানোনা ও কেমন মেয়ে..!!আমি তো কখনোই ওকে বাহিরের কোনো ছেলের সাথে কথা বলতে দেখলাম না..!! তুমি শুধু শুধু ওকে ভুল বুঝছো..!! স্পিকারে ছিল কল.. তোমার কথা সব শুনেছে শেফা!!..কান্না করছে ছোট মেয়েটা!! ভাই তুমি ভালো করো নি”!!..
সাদিফ ভাইয়াকে কিছু বলতে না দিয়েই আপু কল কেটে দিলো…!!!
“উফফ দেখেছিস কি অসভ্য আমার ভাইটা..!! বড় ভাই বলে বেঁচে গেলো!!..আর ওর মতো রাক্ষসকে কিছু বলার সাহস কার ই বা আছে..!!সরি শেফা আমাদের জন্যে বকা শুনেছিস.!!. সাদিফ ভাইয়াকে সামনে পেলে আমরা বুঝিয়ে বলবো কাল”!!… বলেই আপুরা আমাকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে লাগলো..!!
আর এইদিকে শেফা কান্না করছে শুনে সাদিফের মন একদম খারাপ হয়ে গেলো!!.তাই সে একটু পরে জুমানকে একটা মেসেজ পাঠালো “এখনো কি কান্না করছে বাবুটা”??
“হ্যাঁ.. ওর দোষ ছিলো না ভাইয়া..!! ও জানেই না যে ছবিগুলো আমি ওকে ট্যাগ দিলাম..!! ও তো আমার মোবাইলে একটু দেখেই নিজের মোবাইলে গেমস খেলছিলো..!!হুদাই বকা দিলা ওরে”..!!(জুমান)
মেসেজ দেখে অনেক কষ্ট লাগলো সাদিফের..!!কিন্তু ও চেয়েও পারছে না নিজের রাগ কে কন্ট্রল করতে..!! সাদিফ শুধু কালকের অপেক্ষায় আছে..!! কালকে শেফালীর কি হাল করবে সেটাই ভাবছে..!!
ফোন বের করে শেফালী নিজের আর জুরাইনের ছবিগুলা কন্টিনিয়াসলি দেখছে আর বলতে লাগলো…
“কেনো আমাকে এত কষ্ট দিচ্ছিস তুই..??! আমার থেকে ব্যাপারটা লুকিয়ে মোটেও ভালো করিস নি…!!কালকে আমার আসল রূপ দেখতে পাবি তুই..!!এই সাদিফ যে কত ভয়ঙ্কর আর পসেসিভ নিজের জিনিসকে নিয়ে!!… কাল তুই হাড়ে হাড়ে টের পাবি”..!!
কথাগুলো বলে ছবিটাতে একটা চুমু দিয়ে একনাগাড়ে ড্রিংক করতেই লাগলো সাদিফ….!!
বিডি তে আসার পর থেকে সাদিফ একদমই ড্রিংক করতো না তবে আজকে কি এমন হলো যে সাদিফের ড্রিঙ্কসের প্রয়োজন হচ্ছে??..!!!
*
*
ঘুম থেকে উঠেই দেখলাম আপুরা আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে…!!উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলাম আর মার সাথে নাস্তা বানিয়ে আপুদের ডাকলাম.!!
সবাই একসাথে নাস্তার টেবিলে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম আর নাস্তা করছিলাম…যদিও হাসি মুখে আছি তারপরও আমি কাল রাতের ব্যাপারটা এখনো ভুলতে পারছিনা…আমি বুঝি না..উনি কেন আমাকে এত হেইট করেন?? হুয়ায়..??!!..এরপর টিভি দেখতে লাগলাম আমরা তিনজন আর দাদী মিলে!!…
মা এসে আমাদের পাশে বসলেন আর তখনই বড় খালা কল দিলেন..ওহমা সাথে মামীও আছেন!! তিনজনই ভিডিও কলে কথা বলছেন…!!
হঠাৎ বড় খালার কথায় মোবাইলের দিকে তাকালাম.!!
খালা বলছেন…..
” দেখ তোদের বোনের ছেলেকে!!সকাল থেকেই বমি করছে..!!কালকে নাকি পার্টিতে ড্রিংক করেছে!সকালে আসলো বাসায়..!!
আটটার দিকে ফোন করে বললো তাকে নিতে যেতে!!..সে রাতে ড্রিংক করেছে তাই এখন ড্রাইভ করা সেইভ না..!!
কত বড় সাহস তার!! মাকে ফোন করে বললো সে মদ খেয়েছে!!! ভাবা যায় তোর বোনের ছেলের সাহস?!!
আজকেও ইতিকে পড়িয়ে নিতে বলিস শেফাকে!!আজকে মনে হয় সাদিফ যেতে পারবে না”… বলেই খালা মুখ টিপে হাসলেন..!!
“কেন পারবো না?? !!রাত হতে হতে আমি ফিট হয়ে যাবো!!ইনফ্যাক্ট আমি আজ বিকেলেই যাচ্ছি ওকে পড়াতে!!আজকে ওর কপালে দুঃখ আছে!!!আমার থেকে কথা লুকানোর শাস্তি সে আজ পাবেই”!!!(রাগী গলায়)
অনেক অবাক হলাম উনার কথা শুনে..!!
উনার থেকে কিই বা লুকালাম!!!??আর সাদিফ ভাইয়া ড্রিংক করেছেন???
এটা আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না!!
উনি তো নামাজ পড়েন আলোয়েজ..!!
তবে কাল কি এমন হলো যে উনি একেবারে ড্রিংক করেছেন!!??
চলবে….♥️
কেমন হয়েছে গল্প অবশ্যই আমাকে জানাবেন কমেন্টস করে..হ্যাপি রিডিং♥️