😏 #মেঘের_আড়ালে_রোদের_লুকোচুরি ❤️
🌈💙🎨😏❤️🥳🐦💐🍫🏩💒
Part-20
হিয়াকে নিয়ে উজান নিচে নেমে আসে,যথারীতি সময় মতো হলুদ মাখানোর পর্ব শুরু হয়,,হাসি মজা সব মিলিয়ে হলুদের অনুষ্ঠান টা অনেক সুন্দর ভাবেই সম্পূর্ণ হয়ে আসে,
তুষারঃ শোন না বলছি কি হলুদ তো দুপুরের আগে আগেই শেষ হয়ে আসলো,বিয়ে তো কাল,এখন একটু ঝিনুকদের গ্রাম টা যদি ঘুরে আসা যায় কেমন হয় ব্যাপারটা
উজানঃ আইডিয়াটা তো তোর জোস,ওয়েট, শ্রাবণ___এই শ্রাবণ____শ্রাবণ
শ্রাবণ দৌড়ে এসে উজানের কোলে ঘপ করে উঠে বসে,,উজান শ্রাবণকে আগলে শ্রাবণের চুলে বিলি কেটে দিয়ে
শ্রাবণঃ বলো,,ডাকছো কেনো এতো জোরে জোরে
উজানঃ আমাদের সাথে ঘুরতে যাবি
শ্রাবণঃ কোথায় যাবা ঘুরতে,,বুবুকে বলি আগে
উজানঃ তোর বুবুকেও নিয়ে যাবো সাথে
সন্ধিঃ হিয়া যেনো বসে আছে কখন তুই আসবি কখন ওকে নিয়ে ঘুরতে যাবি
উজানঃ আরেএএ তোরাও তো যাবি সাথে,,তোরা গেলে আবার ও এখানে একা একা বসে কি করবে
সন্ধিঃ হ্যা তাহলে ঠিক আছে,,আচ্ছা থাম ডেকে বলি সবাইকে
সন্ধি ডাক পাঠালে সবাই এসে উপস্থিত হয় এক জায়গায়,,প্লান অনুযায়ী অনেকে গ্রাম ঘুরতে রাজি হয়,,কারণ কাল বিয়ের আগে তো আর তেমন সবার কোনো কাজ নেই,,হিয়াও তাই রাজি হয়ে যায় সবার সাথে ঘুরতে যেতে,,কিন্তু এদিকে উজানের মাথায় তো ঘুরছে দুষ্ট বুদ্ধি সে সবাইকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছে ঠিকই কিন্তু সুযোগ বুঝে ঠিক হিয়াকে আর শ্রাবণকে একলা করে নিজের কাছে আলাদা করে নিয়ে আসে
হিয়াঃ এটা কি হলো
উজানঃ কিছু না ম্যাডাম
হিয়াঃ ওদের সবাইকে পাঠিয়ে দিয়ে আপনি এখন এই কড়া রোদের মধ্যে আমাকে আর শ্রাবণকে দাঁড় করিয়ে রেখে ঠিক কি আনন্দ টা পাচ্ছেন শুনি
উজানঃ হেব্বি আনন্দ পাচ্ছি হাঁস পাখি ,,ইসস ফর্সা ফর্সা গাল দুটো তোমার রাগে একদম লাল হয়ে আছে দেখো,,শ্রাবণ তোর বুবুকে তো পুরো স্ট্রবেরির মতো দেখাচ্ছে দেখ
শ্রাবণঃ হে হে তাহলে তুমি বুবুকে এসটবেরি(স্ট্রবেরি) মনে করে গপ গপ করে গিলে খাও
হিয়াঃ এসব কি কথা শ্রাবণ,,ভাইয়া কেনো আমাকে গিলে খেতে যাবে
উজানঃ আমার সমস্যা নেই যদি তুমি পারমিশন দেও তাহলে আমি
উজানের প্রশ্নে হিয়া চোখ বড় বড় করে তাকালে উজান ভেতর থেকে আঁতকে উঠে পুরো সাইলেন্ট হয়ে শ্রাবণকে কোলে নিয়ে সামনে হাঁটতে শুরু করে,,হিয়া রাগে কটমট করতে করতে উজানের পেছন পেছন হাঁটতে শুরু করে
উজানঃ তুই এতো কিউট আর তোর বোন টা,,একটা ধানিলঙ্কা,,আরে তুই ভাই হয়ে তাকে গিলে খাবার পারমিশন দিচ্ছিস আর তোর বুবুকে দেখ,,ভাব দেখলে যেনো মনে হয় মাটিতে পা পড়ে না
হিয়াঃ এই যে শুনছেন,,আরে শুনুন না কোথায় যাচ্ছি আমরা সেটা তো বলুন___আরে একটু আস্তে হাঁটুন না___ভাইয়া___কি হলো কি আমার জন্য একটু দাঁড়ান
উজানঃ ভাইয়া বলছো আবার তুমি,,এবার তো আমি আরো জোরে পা চালাবো,,ওলয়েজ এই ভাইয়া ভাইয়া ডাক,,মাথা পুরো ধরে আসে আমার
শ্রাবণঃ দাঁড়াও না ভাইয়া,,বুবু কেমন দৌড়ে আসছে দেখো,,পড়ে যাবে তো
উজানঃ পড়ুক,পড়ে গিয়ে ব্যাথা পাক,,তুই সত্যি করে বল তো তোর এই বোন কে তুই কোথা থেকে কুঁড়ে আনছিস,,একে দেখে তো আমার কোনোভাবেই তোর বোন বলে মনে হয় না,,উমহুম
শ্রাবণঃ হে হে,,ওটা আমারি বুবু,,আমার বুবু আমার সব বুবু আমার বাবা বুবু আমার মা,,বুবু আমার সব সব সব
উজানঃ ও তোর বুবু তোর সব আর আমি আমি বুঝি তোর কেউ না
শ্রাবণঃ কে তুমি??বুবু যে বলে তুমি আমাদের কেউ না,,তুমি শুদু(শুধু) ঝিনুক আপুর ভাই,,আমাদের কেউ হও না
উজানঃ তোর বুবু এসব বলে
শ্রাবণঃ হ্যা তো,,আর সেদিন তো আমাকে মারতে গিয়ে আমাকে এটাও বলেচে (বলেছে)আমি জেনো আর কখনো তোমাকে ভালো ভাইয়া বলে না ডাকি
শ্রাবণের কাছ থেকে কথা গুলো শুনে উজানের পুরো মন টা খারাপ হয়ে আসে,হিয়া শ্রাবণকে এসব কথা বলেছে, সে জেনো কিছুতেই এই কথা গুলো বিশ্বাস করতে পারছে না,,সত্যি কি হিয়া উজানকে নিজের কেউ ভাবতে পারে নি এতোদিনে!!
শ্রাবণঃ কি ভাবছো তুমি,,,তামলে(থামলে) কেনো
উজানঃ না কিছু না,,তোর বুবু কোথায় আসছে আমাদের পেছনে
উজানের প্রশ্নে শ্রাবণ ঘুরে পেছনের দিকে তাকাতে দেখে হিয়া নেই,,শ্রাবণ ঘাবড়ে উঠে,,উজান শ্রাবণকে অনুসরণ করে পেছনে তাকাতে দেখে হিয়া নেই,,আজব,,হিয়া আবার এর মধ্যে কোথায় গেলো,,উজান দৌড়ে শ্রাবণকে নিয়ে ব্যাক করে হিয়াকে খুঁজতে শুরু করে,,কিন্তু ফাঁকা রাস্তায়,,দুপাশের বড় বড় গাছের আশেপাশে কোথাও হিয়ার কোনো সাড়াশব্দ নেই
উজানঃ হিয়া আমার ভীষণ ভয় করছে,,হিয়া কোথায় তুমি___আমি আমি আর তোমাকে রেখে একা একা জোরে হাঁটবো না বিশ্বাস করো হিয়া___হিয়া তুমি শুনছো আমার কথা হিয়াআআ
উজান আর শ্রাবণ হয়রান হয়ে এ পাশ ও পাশ হিয়াকে খুঁজতে শুরু করে কিন্তু কোথাও হিয়া নেই,,একটা সময় ভয় টা আরো বেশি গভীর হতে শুরু করলে হিয়া দুম করে একটা গাছের আড়াল থেকে বেড়িয়ে এসে ভাউউউ বলে চিৎকার করে খিলখিল করে হাসতে শুরু করে,,উজান অবাক হয় প্রথমে পরে রেগে গিয়ে হিয়ার কাছে গিয়ে হিয়ার হাতের একটা বাহু মচকে ধরে
উজানঃ তুমি,তুমি এতো এতক্ষণ হাইডআন্ডসিক খেলছিলে আমার সাথে
হিয়াঃ তো আপনি কি ভাবলেন আমাকে এই এতোটুকু রাস্তায় কেউ কিডন্যাপ করে নিয়ে চলে যাবে
উজানঃ তুমি হাসছো হিয়া,,তুমি জানো এই কয়েকটা সেকেন্ড কি যাচ্ছিলো আমার মনের উপর দিয়ে
হিয়াঃ তাই বুঝি,,আমি কে যে আমার অনুপস্থিতি আপনাকে এতো ব্যাকুল করে তোলে??বলুন কে আমি আপনার
উজানঃ যদি বুঝতা তুমি আমার কে তাহলে এইভাবে লুকিয়ে পড়বার আগে একবার হলেও অনন্ত ভাবতা কাজ টা তুমি ঠিক করছো না বেঠিক
বলেই উজান রাগে আবার শ্রাবণকে কোলে নিয়ে গটগট করে সামনে হাঁটতে শুরু করে,,হিয়া আসে উজানের সাথে সাথে কিন্তু উজান হিয়ার দিকে ঘুরেও তাকায় না
হিয়াঃ আচ্ছা লোক তো আপনি,,আমি হারিয়ে গিয়েছি তাতে আপনার কি,,যদি বলি ভালোবাসেন কি না তখন তো খুব Attitude নিয়ে বলেন আমি হবো আপনার চয়েজ নেভার,,তা আমার জন্য কিসের এতো চিন্তা আপনার শুনি
উজানঃ ঔ যে বললাম তুমি একটা মাথা মোটা,,মাথায় গবর ছাড়া পুরোটাই ফাঁপা তোমার,,বুঝবা কেমন করে কিসের জন্য আমি তোমার
উজান আর কিছু বলতে যাবে ওমনি শ্রাবণ সামন থেকে আসা একটা গরুর গাড়ি দেখতে পেয়ে লাফিয়ে উঠে,,তার বুবুকে বলে তো তার কোনো লাভ নেই কারণ হিয়া তো তাকে এসবে উঠার জন্য কোনোদিন হ্যা বলবে না তাই শ্রাবণ তার ভালো ভাইয়া কে বাগিয়ে বুগিয়ে রাজি করাতে থাকে সে গরু গাড়ি উঠবে
শ্রাবণঃ ভালো ভাইয়া চলো না আমি আর তুমি
হিয়াঃ তোমার বায়না ইদানীং একটু বেশি বাড়ছে শ্রাবণ,,গরু গাড়িতে উঠতে টাকা লাগবে আর আমি টাকা নিয়ে আসি নি
উজানঃ শ্রাবণ কে আমি গরু গাড়ি তে ওঠাবো তোমার সমস্যা
হিয়াঃ হ্যা সমস্যা,,অনেক সমস্যা__আর তুমি কি হ্যা তখন থেকে ভাইয়ার কোলে,,ওনার কষ্ট হয় না__নামো বলছি
উজানঃ আমি একবারো বলেছি আমার কষ্ট হচ্ছে,,বেশি বেশি___শ্রাবণ গরু গাড়িতে উঠবি
শ্রাবণঃ বুবু!!
উজানঃ রাখ তো তোর বুবু,,আমি আর তুই চড়বো আর তোর বুবু না চড়লে নাই একা একা কি করে হেঁটে বাড়ি ফেরে আমি তাই দেখবো
হিয়াঃ এটা কি ধরনের ব্লাকমেইল,,আমি এখানকার কোনো রাস্তা চিনি না,,আপনি আমাকে নিয়ে এসেছেন এখন আপনি আমাকে ঠিক ভাবে ঝিনুকদের বাড়ি পৌঁছে দেবেন
উজানঃ তাহলে আমাদের সাথে গরু গাড়িতে উঠো
হিয়াঃ এটা কিন্তু খুব খারাপ হচ্ছে,,আমি কিন্তু আর কখনো আপনার সাথে তাহলে কোথাও আসবো না
উজানঃ তুমি আসবা না তোমার ভূত আসবে হু
উজান হিয়াকে একটা ভেংচি কেটে গরুর গাড়ির লোক টাকে ডেকে পাঠায়,,লোকটা প্রথমে যেতে চায় না কারণ সে এখন এই গাড়ি নিয়ে বাড়ি ফিরছে কিন্তু উজান অনেক রিকুয়েষ্ট করলে লোকটা আর না করতে পারে না,,উজান বলে সামনে একটা সরিষা ক্ষেত আছে ওখান অবধি এগিয়ে দিলেই হবে,,যথারীতি উজান শ্রাবণকে নিয়ে গরু গাড়িতে উঠে বসে আর হিয়া নিচে দাঁড়িয়ে কোমড়ে হাত দিয়ে চোখ মুখ খিঁচতে থাকে
উজানঃ ওরকম চোখ মুখ পাকিয়ে লাভ নেই,,উঠতে চাইলে উঠে আসো নয়তো একা একা রাস্তা চিনে বাড়ি ফেরো
হিয়াঃ আপনি আমার সাথে যা করেছেন আপনার কি মনে হয় আমি আপনাকে এতো সহজে ছেড়ে দেবো
উজানঃ আমি তো চাই ই তুমি আমাকে না ছেড়ে সারাজীবন ধরে রাখো হাঁস পাখি
বলেই উজান হিয়াকে একটা চোখ টিপে ডেভিল হাসি হাসতে থাকে,,উজানের মুখের ঔ হাসি দেখে হিয়ার গা পিওি আরো জ্বলে উঠে,,শেষে বাধ্য হয়ে হিয়া ওদের সাথে গরু গাড়িতে উঠে বসে,,গরু গাড়ি টার উপরে একদম খুব সুন্দর মতো ছাউনি দেওয়া,,নিচে পোয়াল বিছিয়ে রাখা,হিয়া গিয়ে উজানের মুখ পাশে বসে পড়লে উজান উঠে এসে শ্রাবণ সহ হিয়ার পাশে গিয়ে বসে পড়ে,,হিয়া একটু সরে যেতে চাইলেও উজান আঁটকে দেয়
উজানঃ পড়ে যাবা,,রাস্তা উঁচু নিচু আছে,,দূরে না গিয়ে আমার হাত টা ধরো
হিয়া উজানকে একটা ভেংচি কাটে,আর সামনে সরে না গিয়ে উজানের পাশেই গায়ে গা লাগিয়ে বসে যায় কিন্তু উজানের হাত ধরে না,,এদিকে শ্রাবণের মনে আজ খুব আনন্দ হচ্ছে সে গরু দুটো কে পেয়ে যে কি খুশি হয়েছে সেটা শুধু তার শিশুমনই ভালো বলতে পারবে,,গরু গুলোর হাম্বা হাম্বা ডাক সাথে মাঝে মধ্যে পোয়াল তুলে গরু গুলোকে হাত বাড়িয়ে খাইয়ে দেওয়া তার চঞ্চল মনটাকে আরো আনন্দে ভরিয়ে তুলছে
শ্রাবণঃ ভাইয়া গরু গুলো দেকো(দেখো) কি রকম হাম্বা হাম্বা করে ডাকছে
উজানঃ হুম,,আর সামনে যাস না,,এখানে বসে থাক
শ্রাবণঃ এই গরু গুলোর নাম কি
উজানঃ কি যে,,ঔ আঙ্কেল টাকে জিজ্ঞেস কর
শ্রাবণঃ না আমার ভয় করে তুমি জিজ্ঞেস করো
উজানঃ ধুর ঔ আঙ্কেল টা ভূত না ভাল্লুক যে তোর ভয় করবে
হিয়াঃ নাম জিজ্ঞেস করার কি আছে ওটা একটা তুই আর একটা তোর ভাইয়া
উজানঃ কি আমরা গরু
হিয়াঃ গাধা যে বলি নি এটাই ভাগ্য আপনাদের দু’জনের
উজানঃ আমরা গরু হলে, তুমি কি,ছাগল একটা
হিয়াঃ আমি আমি ছাগল
উজানঃ ছাগলই তো ছাগল যেমন ওলয়েজ ভ্যা ভ্যা করে তুমিও ওলয়েজ ভাইয়া ভাইয়া করো,,তোমার আর ছাগলের মধ্যে পার্থক্য কি আছে আর হু
হিয়াঃ আপনি না
উজানঃ আর কি প্রমাণ আছে ওখানে যে দুটো গরু আছে দুটোই ছেলে,একটা তো মেয়েও হতে পারে
হিয়াঃ ঔ দুটো গরুই ছেলে আমি সিউর,,একটা শ্রাবণ আর একটা আপনি
উজানঃ ওকে ওয়েট
উজান হুযুগের বসে গরু দুইটার দিকে তাকায়,,আর খেয়াল করে গরু দুইটার দুইটাই মেয়ে,,
উজানঃ See ঔ দুটোই মেয়ে গরু একটা তুমি আর আর,আর একটা ঝিনুক না না ঝিনুক অনেক স্মার্ট আর ইন্টেলিজেন্ট,,আর একটা আর একটা হু আর একটা হলো সন্ধি,,বোকার হাঁড়ি একটা ঔটা
হিয়াঃ তাই না,,আপনি কি করে বুঝলেন ঔ দুটো মেয়ে গরু,,আমি সিউর ঔ দুটো ছেলে,,দাঁড়ান আমি জিজ্ঞেস করছি ঔ আঙ্কেল টাকে
উজানঃ আরে জিজ্ঞেস করার কি আছে দেখেই তো বুঝা যাচ্ছে
হিয়াঃ দেখে বুঝা যাচ্ছে মানে
উজানঃ ইয়ে মানে
উজান যে হুজুগের বশে একটা বেফাঁস কথা বলে ফেলেছে এটা তার খেয়াল ছিলো না,,উজান ওর জিহ্বে কামড় বসিয়ে আমতা আমতা করতে শুরু করে,এদিকে হিয়ার ব্যাপারটা বুঝে আসতেই হিয়া একদম রাগে আগুন চোখে উজানের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে উঠে
হিয়াঃ ছিঃ___সন্ধি আপু ঠিকই বলে সব পুরুষজাতির নজর একই রকম,,অসভ্য একটা লোক
উজানঃ আরে আমি তো জাস্ট
হিয়াঃ একদম মুখ বন্ধ করে রাখবেন,,আমি একটু হলেও আপনাকে আলাদা ভেবেছিলাম কিন্তু আপনিও ঠিক__বেহায়া একটা
হিয়া মুখ ফুলিয়ে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলে উজান চুপ হয়ে যায়,,উজান বুঝে হিয়া ক্ষেপে আছে এখন কিছু বললেই আরো বকা খাওয়া লাগবে,তার চেয়ে চুপ হয়ে থাকা বেস্ট
হিয়াঃ আর কখনো যদি আমি এনার সাথে কোথাও বেরিয়েছি,,লুচু ছেলে একটা সব সময় খারাপ নজর,,বিয়ে টা শেষ হয়ে বাড়ি ফিরি একবার তারপর যদি আর এনার সাথে আমি কোনো যোগাযোগ রাখি তাহলে আমার নামো হিয়া মুনতাসীর না,আর শ্রাবণ বাড়ি ফিরি আগে কি করে মেরে মেরে ওর পিঠের চামড়া আমি তুলি তাই দেখার পালা,ভালো ভাইয়াকে পেয়ে যেনো পাখা গজায় গেছে দুটো,, সব কিছু তে আবদার,,বাড়ি যাই একবার
হিয়া রাগে গটগট করে নিজে মনে কথা বলছিলো তখনি গাড়ি টা একটা উঁচু নিচু রাস্তা বেয়ে সামনে আগাতে থাকলে হিয়া ব্যালেন্স হারিয়ে পড়ে যেতে ধরে আর ওমনি উজান হিয়াকে গপ করে ধরে নেয়,আর শ্রাবণ সহ হিয়াকে সামলাতে গিয়েই উজানের হাত স্পর্শ করে ফেলে হিয়ার কোমড়!!
উজানঃ Sorryyyyyy আমি ইচ্ছে করে
হিয়াঃ হাত সরান সরান বলছি
উজানঃ আরে হাঁস পাখি আমি কি ইচ্ছে করে তুমি একটু বুঝো
হিয়াঃ আপনাকে না আমার যা বোঝার তা বোঝা শেষ,,লুচু ছেলে একটা ছিঃ
উজানঃ হোয়াট!!হোয়াট ডিড ইউ সে আমি আমি লুচু ছেলে তুমি তুমি কি হ্যা,,আর এসব কি ওয়ার্ড লুচু__তুমি না একটা সভ্য মেয়ে আর তুমি আমাকে এসব ওয়ার্ড বলে গালি দিচ্ছ
হিয়াঃ হ্যা দিচ্ছি যে অসভ্য আমি তাকে ওসব ব’লেই গালি দিচ্ছি সমস্যা
উজানঃ ইঁচড়েপাকা,তুমি না অল্প বয়সে অনেক পেকে গেছো হিয়া বুঝলা,,ওলয়েজ শুধু পাকা পাকা কথা,,লাইন মারা,,লুচু ছেলে,প্রেম ভালোবাসা,,মানে সবসময়,,এসব ছাড়া তো কোনো ওয়ার্ড যেনো নেই তোমার ডিকশিনারির তে
হিয়াঃ নেই তো,,আপনি আমার সাথে অসভ্যতামি করলে সমস্যা নেই আর আমি শুধু বললেই সমস্যা
উজানঃ আমি আমি অসভ্যতামি করি,আমি
হিয়াঃ আকাশ থেকে পড়ছেন মনে হচ্ছে যেনো,,সেদিন আমার গালে চুমু কে খেলো হ্যা,,খুব তো টুক করে একটা চুমু এঁকে দিলেন আমার গালে আর আজ আজ কি করলেন আমাকে বোকা বানিয়ে আমার শাড়ি পড়া আপনি দেখে নিলেন
উজানঃ বেশ করেছি এখন থেকে আরো বেশি করে এসব করবো,,যেভাবে ইচ্ছে তোমাকে দেখবো যতোক্ষণ খুশি দেখবো সমস্যা কোনো
হিয়াঃ আপনার চোখে না আমি মরিচ লাগিয়ে দেবো,,অসহ্য লোক একটা,,মামা আপনি দাঁড়ান তো দাঁড়ান আর আপনাকে যেতে হবে না,,দাঁড়ান আপনি
উজানঃ আরে আমার হিয়া পাখি কি করছো,,আর একটু সামনে যাবো তারপর আমরা
হিয়াঃ মামা আপনাকে আমি গাড়ি টা থামাতে বললাম না,,আপনি এক্ষুনি গাড়ি টা এক পাশে সাইড করুন,,কি হলো কি মামা কথা বুঝতে পারেননি আপনি
হিয়ার গম্ভীর গলা শুনে গরুর গাড়ি লোকটা গাড়ি থামিয়ে দেয়,হিয়া রাগে গটগট করে নেমে শ্রাবণের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকাতেই শ্রাবণ ভয়ে মুখ কালো করে নিচে নেমে আসে,,উজানের তো মেজাজ পুরো বিগড়ে উঠে,,সে নেমে গরুর গাড়ি লোকটাকে কিছু টাকা দিয়ে হিয়ার সাথে সামনে হাটতে শুরু করে
উজানঃ আমার গরুর গাড়ি তে বউ সাজিয়ে তুরতুর তুরতুর হুমমম হুমম সানাই বাজিয়ে (হিয়ার মাথায় একটা গাট্টা মেরে) যাবো তোমায় শ্বশুর বাড়ি নিয়ে,,
হিয়াঃ আআহ,,লাগে না আমার
উজানঃ সরি সরি
হিয়াঃ কোথায় যে যাচ্ছি কিচ্ছু বুঝতে পারছি না,,আর কতোদূর আমরা হাঁটবো এভাবে বলতে পারেন
উজানঃ গাড়ি থেকে নামতে কে বললো তোমাকে, আমি,,আসো বেশিদূর যাবো না সামনে একটা সরিষা ক্ষেত আছে ওখানে গিয়ে আমি আর শ্রাবণ কয়েকটা পোজ দেবো তুমি আমার আর শ্রাবণের কয়েকটা ছবি তুলে দিবা
হিয়াঃ ঠেকা
উজানঃ ঠেকাই তো,পেত্নী একটা আসো
উজান হিয়াকে হাঁটতে হাঁটতে নিয়ে আসে একটা সরিষা ক্ষেএে,,যার চারদিকে শুধু হলুদের ছড়াছড়ি,,যেদিকে দু চোখ যায় সরিষা ফুলের সৌন্দর্য মন কে নাড়া দিয়ে তুলে,,কি এক অদ্ভুত মায়া প্রকৃতির!!
হিয়াঃ বাহ জায়গা টা তো কি সুন্দর,সেই কবে ছোট তে গ্রামে সরিষার এরকম ক্ষেএ দেখেছি,শহরে আসার পর থেকে তো এসব সৌন্দর্য চোখেই দেখা যায় না,ব্যস্ততার কলহে সব কিছু কেমন পিষে গিয়ে আনন্দ টাকে
হিয়া আর কিছু ভাবার আগে উজান এসে হিয়ার হাত টা বাড়িয়ে ধরে
উজানঃ দেখি হাঁস পাখি আমি আর শ্রাবণ এখন ঔ দূরে কাকতাড়ুয়া টার ওখানে গিয়ে দাঁড়াবো আর তুমি আমাদের ছবি তুলবে,,কি হলো ধরো___এটা ক্লিক করলেই ছবি উঠবে দেখো
হিয়াঃ জানি আমি,,ওটুকু সেন্স আছে আমার
উজানঃ ওহ তুমি তো আবার সবজান্তা আমি ভুলে গিয়েছিলাম,,নেও
উজান হিয়ার হাতে ফোন ধরিয়ে দিয়ে ঔ দূরে দাঁড়িয়ে থাকা কাকতাড়ুয়া টার কাছে গিয়ে শ্রাবণ সহ নানা ধরনের পোজ দিতে থাকে,,কখনো বাঁকা হয়ে কখনো সোজা হয়ে কখনো বসে কখনো বা শ্রাবণকে পিঠে তুলে নিয়ে,আর ভালো ভাইয়া কে এভাবে কাছে পেয়ে শ্রাবণের হাসি আজ কে দেখে,হিয়া ব্যস্ত এক দৃষ্টিতে শ্রাবণ আর উজানকে দেখতে
হিয়াঃ জীবনের টানাপোড়েনে আনন্দ করে বেঁচে থাকাটাই একটা সময় ভুলে গেছি আমি,শুধু বাঁচতে হবে নিজের প্রিয় এই ভাই টাকে মানুষ করতে হবে,তাকে দু বেলা খেতে দিতে হবে নিজেকে হাজার ভেঙে যাওয়ার মধ্যে সোজা করে দাঁড়িয়ে রাখতে গিয়ে বাস্তবতার জাতা কলে পিষে সুখ নামক শব্দ টাকেই জীবন থেকে হারিয়ে ফেলছি,,কিন্তু যবে থেকে এই আপনি মানুষ টা জীবনে এসেছেন খারাপ হোক ভালো হোক যেই পরিস্থিতি তে আপনাকে পেয়েছি,জীবন টা সত্যি অনেকটা রঙিননতার মুখ দেখেছে আমার,,মাঝে মাঝে তো মন চায় আপনার প্রশ্বস্ত বুকে মাথা রেখে জীবনের ক্লান্তি টুকু ভাগ করে নেই কিন্তু আপনি যে বলেন আপনি আমাকে ভালোবাসেন না তাহলে আমি কেনো অহেতুক আপনার জন্য মনের মধ্যে অনুভব পুষে রাখছি,,এই অনুভবের টিপি টা তো দিনদিন আরো উঁচু হয়ে উঠছে!!