#THE_BOOK
#পর্ব_২
#Ishita_Rahman_Sanjida(Simran)
আকাশের বুকে শত শত মেঘের ভেলা ভাসছে। ইচ্ছে মতো উড়ে বেড়াচ্ছে এদের কোন বাঁধা নেই। এই মেঘেদের বুক চিরে বের হলো হাওয়াইজাহাজ। শত শত মেঘের ভেলাকে সরিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।ছুটে চলছে আপন গতিতে। প্লেনের ভেতর নিজস্ব সিটে ঘুমাচ্ছে সব যাত্রিরা। বিমানবালারা একটু পর পর ঘোরাঘুরি করছে। যাত্রিদের সমস্যা হলে তার সমাধান করছে। এভাবেই সময় কেটে গেল। বিমান ল্যান্ডিং করলো শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। মাইকে এ্যানাউন্সমেন্ট করা হলো। সব যাত্রিরা হাজারো ক্লান্তি নিয়েই উঠে পড়লো। নিজেদের ব্যাগপত্র গুছিয়ে বাইরে চলে এলো।
লাগেজ টেনে ইয়ারপোর্ট থেকে বের হচ্ছে অভিনব,রা’দ,পূর্ণাশা আর লাবন্য। পূর্ণাশা আর লাবন্যর মুখে ভয় নেই। অভিনব তা খেয়াল করে বলল,”কি রে কাল অবধি তো দুজনে ভয়ে কাপছিলি। আজকে কি হলো??ভয় কি পুরো গায়েব হয়ে গেল??”
লাবন্য মুখে বাঁকা হাসি নিয়ে বলল,”নিজের দেশের মাটিতে পা দিয়েছি তো তাই। উফফ কতদিন পর বাংলাদেশের ফ্রেস বাতাসের ছোঁয়া পেলাম।”
অভিনব অবাক হওয়ার ভান করে বলল, “সেকি রে মাত্র তো চারদিন ইংল্যান্ডে ছিলাম।”
পূর্ণাশা অভিনবকে ধাক্কা মেরে বলল,”একজন দেশপ্রেমিকের কাছে এই চারদিন চার মাস মনে হয়। তুই এসবের কি বুঝবি??যতসব ফাউল।”
অভিনব গায়ের শার্টটা টেনে বলল,”এখন পর্যন্ত কারো প্রেমে পরতে পারলাম না আর ইনি বলছে দেশপ্রেমিক হতে দূর হ।”
লাবন্য আর পূর্ণাশা শব্দ করে হাসলো। পূর্ণাশা রা’দকে বলল,”তা বইটি কবে পড়বো আমরা??”
রা’দ সামনের দিকে নজর রেখে বলল, “আজকে ভিষন টায়ার্ড আমি। তার উপর রাতে রেডিও শো আছে। এখন গিয়ে ঘুমাবো।যা করার কালকে করতে হবে।”
আর কেউ কোন কথা বলল না যে যার মত চলে গেল। কারণ এখন অতো কথা বলার মতো কারো সময় নেই। বাড়িতে গিয়ে রা’দ দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়লো। লম্বা ঘুম দিয়ে সন্ধ্যায় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নিলো।রুম থেকে বের হতেই নজরুল ইসলামের সাথে দেখা। নজরুল ইসলাম সোফায় বসে টিভি দেখছিলেন রা’দ পাশে বসতে বসতে বলল,”কেমন আছো বাবা??”
নজরুল ইসলাম এক পলক রা’দের দিকে তাকিয়ে আবার টিভি দেখায় মনোযোগ দিলেন। রা’দ এখনও ওর বাবার জবাবের আশায় তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর নজরুল ইসলাম বললেন,”ভুতে যখন ঘাড় মটকায়নি তখন ভালোই আছি।”
রা’দ জানতো ওর বাবা এরকম কিছুই বলবে। কারণ ওর পেশাটা নজরুল ইসলাম মেনে নিতে পারছেন না। কোথায় ভেবেছিলেন ছেলে পড়াশোনা শেষ করে সরকারি চাকরি করবে??সরকারি না হোক কোন ভালো কম্পানিতে চাকরি করবে। তা না করে ছেলেটা রাত বিরেতে ভুতের গল্পে মজে থাকে। কি দরকার এফ এম রেডিওতে কাজ করার??এসব ভুত প্রেত নিয়ে মজা করা উনি একদম পছন্দ করে না। তাই মুখটা গম্ভীর করে রেখেছেন। নাঈমা বেগম চা নিয়ে এসে টি টেবিলে রেখে বলল,”জাবিনের বাবাকে ও রাজি করিয়ে ফেলেছে এবার একটা দিন ঠিক করে এন্গেজমেন্ট সেরে ফেলাই ভালো।”
চায়ের কাপ হাতে নিয়ে রা’দ অবাক চোখে মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল,”কি বলছো মা??আমি কি একবারও বলেছি যে আমি বিয়ে করবো??প্রায় ছয়দিন পর বাড়িতে ফিরলাম কোথায় আদর যত্ন করবে তা না করে বিয়ের কথা তুলছো কেন??”
নাঈমা বেগম কপোট রাগ দেখিয়ে বলল,”তো কি করবো?? তোকে তো কোনো বাবা মেয়ে দিতে রাজি নয়। রাজি হবেই বা কেন??যে ছেলে ভুত প্রেত নিয়ে আড্ডা করে তার হাতে কেউ মেয়ে দেয়??নেহাৎ জাবিন তোকে পছন্দ করে তাই ওর বাবাকে রাজি করিয়েছে। তোর কথা আর আমি শুনবো না সামনের সপ্তাহে আমি জাবিনকে রিং পরিয়ে নিজের পুত্রবধূ হিসেবে স্বিকৃতি দেব। কি বলো তুমি??”
শেষ কথাটা রা’দের বাবার দিকে তাকিয়ে বললেন তিনি। নজরুল ইসলাম মুখে গম্ভীরতা রেখে বলল,”তোমার যা ইচ্ছা তুমি তাই করো আমি এর মধ্যে নেই। আমার কথা কি ও শুনবে??”
রা’দের মাথা গরম হয়ে গেল এসব শুনে।এক ঝটকায় উঠে দাঁড়ায়। রুমের দিকে অগ্রসর হতেই রাইসা এসে সামনে দাঁড়ালো। মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল,”ভাইয়া আমার জন্য কি এনেছো??”
রাইসার কথা শুনে রা’দ আরো রেগে গেলো।বাবা মায়ের উপর করা রাগ রাইসার উপর ঝেড়ে বলল,”মরা মানুষের কঙ্কাল এনেছি তোর জন্য নিবি??”
রাইসা হতভম্ব হয়ে রা’দের দিকে তাকিয়ে রইল। রা’দ আর দাঁড়ালো না রুমে গিয়ে রেডি হতে লাগলো। রাইসা বুঝলো না যে ওর ভাইয়া এরকম কেন করলো। মুখ ফুলিয়ে রুমে চলে গেল রাইসা। এতক্ষণ রা’দ ঘুমাচ্ছিল বলে রাইসা ওর রুমে যায়নি। আর রা’দ এভাবে বলায় রাইসার ভালো লাগলো না। মুখ গোমড়া করে পড়ায় মন দিলো।
রা’দ রেডি হয়ে হনহনিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। বাইক নিয়ে সোজা রেডিও স্টেশনে চলে আসে। বাইক পার্ক করে গলায় আইডি কার্ড ঝুলিয়ে শার্ট ঠিক করতে করতে ভেতরে ঢুকলো। অভিনব নিজের ডেস্কে বসে আছে। পাশেই রাহুল বসা। দুজনে হেসে হেসে কথা বলতেছে। রা’দ গিয়ে ওদের পাশে চেয়ার টেনে বসে। রা’দের হতাশা মুখ দেখে অভিনব বলল,”কি রে তোর কি হয়েছে??এনিথিং রং??’
“নো এভরিথিং ইজ ফাইন। লাবন্য আর পূর্ণাশা কোথায়??”
“ভেতরে,শো করার জন্য সবকিছু রেডি করছে। এগারোটায় ওদের শো আর আমাদের বারোটায়।”
রা’দ রাহুলের দিকে তাকিয়ে বলল,”কি ব্যাপার রাহুল তোর কি অবস্থা??”
রাহুল মুখটা অন্যদিকে ফিরিয়ে বড় একটা শ্বাস নিলো। অভিনব নিজের ফোন নিয়ে ব্যস্ত। রা’দ রাহুলের দিকে তাকিয়ে আছে। বেশি বয়স না রাহুলের অভিনব আর রা’দের সমবয়সী। গায়ের রং উজ্জল শ্যামলা,পাতলা গড়নের দেহে লাল রঙের টিশার্ট। রাহুল রা’দের দিকে তাকিয়ে বলল,”তোমরা যেমন দেখছো তেমনই আছি।”
রা’দ হেসে রাহুলের কাঁধে হালকা চাপড় মেরে বলল,”এই চাকরি ছাড়ার প্ল্যান করছিস নাকি??”
রা’দের কথায় অভিনব শব্দ করে হেসে উঠলো। হাসতে হাসতে বলল,”ওর মতো ভিতুর ডিম এছাড়া কি আর করবে।”
রাহুল কটাক্ষ করে বলল,”আমি ভিতু??”
“নয়তো কি??শো’তে সামান্য ভয়ংকর মিউজিক দিতেই তো তোর ভয় কাঁপে।”
“আমি কিন্তু ভিতু না। ভুতুড়ে মিউজিক দিতে কি কম সাহস লাগে নাকি?? এতেই বোঝা যায় আমি ঠিক কতটা সাহসী।”
অভিনব আবার হেসে ফেললো বলল,”আচ্ছা তাহলে নেক্সট ইনভেস্টিকেসনে তুই আমাদের সাথে যাবি তাহলেই বোঝা যাবে তুই কতটা সাহসী।”
একথা শুনে রাহুলের মুখ শুকিয়ে গেলো। রাহুল খুব ভালো করেই জানে এসব ওর দারা সম্ভব নয়। কারণ ভুত প্রেত খুব ভয় পায় ও।তাই ওকে শো করার সময় ভুতুড়ে মিউজিক দেওয়ার কাজ দেওয়া হয়েছে। রাহুল আমতা আমতা করতে লাগলো। রা’দ রাহুলকে বলল,”এই তুই যা ওদিকে গিয়ে সব ঠিকঠাক কর। শো শুরু করতে হবে তো??এগারোটা বাজতে চললো। এখন না গেলে লাবন্য পূর্ণাশা এসে তো বারোটা বাজাবে।”
রাহুল উঠে চলে গেল। রা’দ,অভিনব,পূর্ণাশা আর লাবন্য হলো একটা প্রডাকশন টিম, প্যারানরমাল ইনভেস্টিকেটার। যাকে বলে ভুত খোঁজাড়ু। বিভিন্ন জায়গা থেকে ওদের ফোন করা হয় ইনভেস্টিকেশনের জন্য। ওরাও চলে যায় সেখানে বিভিন্ন রহস্যের উদঘাটন করে। এর পাশাপাশি এফএম (FM) রেডিওতে কাজ করে। রাত বারোটার পরেই ওরা শো করে যেখানে নানা রকমের ভুতের গল্প ও সত্যি কাহিনী শোনায়। অনেকে ই-মেইল করে নিজেদের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা পাঠায়। তা ওরা পড়ে শোনায়। এভাবেই নানা ধরনের গল্প শুনিয়ে লোকজনের আনন্দ দেয়। ওদের একটা ইউটিউব চ্যানেলও আছে যেখানে ওরা রেকর্ড করা ভিডিও আপলোড দেয়। জঙ্গল কবরস্থান বা ভুতুড়ে বাড়িতে ইনভেস্টিকেশনে গিয়ে সেখানকার ভিডিও করে পোস্ট করে। যার ফলে ওরা প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। ওদের এই শো এর জন্য সবাই অধির আগ্রহে বসে থাকে। সরাসরি ফোন করেও অনেকে অনেক কিছু জিজ্ঞাসা করে ওরা ও তার উওর দেয়। এই চারজন মিলেই ওদের প্রডাকশন টিম। এই টিম মিলেই ওরা নানারকম হন্টেড প্লেসে ঘুরে বেড়ায়। এটাই ওদের প্যাশন। অনেকের অনেক ধরনের নেশা হয় ওদের হয়েছে ভুতের নেশা। এই নেশায় এমন ভাবে জড়িয়েছে ওরা এই নেশা থেকে বের হতে ব্যর্থ।
রাত এগারোটা বেজে গেছে। লাবন্য আর পূর্ণাশা শো শুরু করলো। দুজনে হেডফোন কানে লাগিয়ে সামনে থাকা মাইকটা চেক করে নিলো। রাহুল পাশে বসে আছে লাবন্য বললেই মিউজিক দেবে। পূর্ণাশা মাইক টেনে বলা শুরু করলো,
“হ্যালো এভরিওয়ান আমি পূর্ণাশা বৌদ্ধ আর আমার সাথে আছে আপনাদের সবার প্রিয় লাবন্য মুখার্জি। প্রায় এক সপ্তাহ পর আপনাদের সামনে আবার হাজির হয়েছি। এতদিন আপনাদের অপেক্ষা করানোর জন্য আমরা দুঃখিত। তো শুরু করা যাক আমাদের আজকের শো।
আজকে আমরা ভুত নিয়ে আলোচনা করবো। কোথায় কখন ভুত থাকে তা আমরা কেউ জানি না। হয়তো আপনার পাশেই ভুতের অবস্থান কিন্তু আপনি দেখতে পারছেন না। আবার অনেক ভুত মানুষদের দেখা দিয়ে থাকে। তো আজকে আমরা সাত ধরনের ভুত সম্পর্কে আলোচনা করবো।
ভুত! শব্দটা শুনলেই শরীরটা কেমন শিউড়ে ওঠে। মনে হয়, এই হয়তো পিছনে কেউ দাঁড়িয়ে রয়েছে বা এই হয়তো ঘাড়টা কেউ মটকে দিল বলে। ভুতদের দেখতে কেমন? তাদের কটা পা, কটা হাত, কটা মাথা বা আদৌ মাথা রয়েছে কিনা? এই সব নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহলের শেষ নেই। মনে ভয় থাকলেও, ভুতের গল্প শুনতে বা ভুতের সিনেমা দেখতে ভালবাসেন অনেকেই। রাতের অন্ধকারে ভূতের গল্প শুনতে যেমন ভালো লাগে, তেমনই সেই অন্ধকারেই একটা ছায়া দেখলে শরীরটা ছ্যাঁৎ করে উঠে বৈকি। আর রাতটা যদি হয় ‘ভূত চতুর্দশী’, তবে বলার অপেক্ষা রাখে না যে এদিন তাদের বাড়বাড়ন্তের সম্ভাবনা প্রবল।
প্রচলিত ধারণায় বা বাংলা মতে বিভিন্ন ধরণের ভুতের নাম চারপাশে কান পাতলেই শোনা যায়। মামদো থেকে শাকচুন্নি, ডাইনি থেকে স্কন্ধকাটা নাম শুনলেও, তাদের দেখার ইচ্ছা রয়েছে এমন মানুষ পাওয়া দুস্কর। কিন্তু অনেকেরই মনে প্রশ্ন রয়েছে, তাদের দেখতে কেমন? তাদের আলাদা আলাদা নামের কারণ কী?
‘পেত্নী’ বাংলা মতে পেত্নী হল নারী ভূত। অতৃপ্ত আশা নিয়ে বা অবিবাহিত অবস্থায় যে নারীরা মৃত্যুবরণ করেন, তাঁদেরই পেত্নী বলে অভিহিত করা হয়। সংস্কৃতের ‘প্রেত্নী’ থেকে উৎপত্তি হয়েছে ‘পেত্নী’ শব্দটির। পেত্নীরা সাধারণত মৃত্যুর পরেও খারাপ অভিসন্ধি পূরণে পৃথিবীতে বিচরণ করে। এরা সাধারণত ভীষণ বদমেজাজি হয় এবং কাউকে আক্রমণের উদ্দেশ্য নিয়েই ঘুরে বেড়ায়।
শাকচুন্নি সংস্কৃত শব্দ ‘শাকচুরনী’ থেকে এসেছে প্রচলিত এই ভুতের নামটি। শোনা যায় যে, বিবাহিত নারীরা মৃত্যুর পর এই ভুতের রূপ নেয়। সাদা শাড়ি, হাতে শাঁখা-পলা পরিহিত অবস্থায় এরা রাতের অন্ধকারে ঘুরে বেড়ায়। অনেক সময় বিবাহিত নারীদের ওপর ভর করে শাকচুন্নীরা। কারণ এদের লক্ষ্যই থাকে সধবা মহিলাদের মতো জীবনযাপন করার এবং স্বামীর সঙ্গে বিবাহিত জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করার।”
এটুকু বলে পূর্ণাশা থামলো। ডেস্কের উপর থাকা কফির মগটা হাতে নিয়ে এক চুমুক খেয়ে আবার রেখে দিয়ে বলল,”খুব আগ্রহ সবার ভুত সম্পর্কে জানার। তবে আমি আর বলবো না। এরপরের ভুত সম্পর্কে ধারণা দেবে লাবন্য মুখার্জি।”
লাবন্য মাইকটা ঠিক করে নিয়ে বলল, “নমস্কার এভরিওয়ান শুভ রাত্রি। পেত্নি আর শাকচুন্নী সম্পর্কে তো জানলেন কিন্তু আরো কিছু ভুত সম্পর্কে জানা বাকি আছে যা শুনে আপনার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠবে। তো পরের
ভুত হলো মেছোভূত।এই ভুত নিয়ে বাংলায় অনেক গল্প প্রচলিত রয়েছে। সাধারণত মাছ খেতে ভালবাসে বলে এই ভুতদের ‘মেছোভুত’ নামে অভিহিত করা হয়। শোনা যায়, গ্রামের পুকুরের পাশের গাছে, যেখানে বেশি মাছ পাওয়া যায় সেখানে এদের বসবাস। গ্রামের অন্ধকার রাস্তা বা নির্জন বাঁশবাগানের মধ্য দিয়ে মাছ কিনে ফিরলে এই মেছোভূতদের উপদ্রবের মুখে পড়তে হয়। বিশেষ করে গ্রামগঞ্জে এদের উৎপাতের গল্প শুনতে পাওয়া যায়।
নিশি ভুত,সমাজে সবচেয়ে ভয়ংকর হিসাবে গণ্য করা হয় নিশিকে। প্রচলিত কথায়, কোনও কুচক্রী তান্ত্রিক তার শত্রুকে শায়েস্তা করার জন্য নিশির সাহায্য নেয়। গভীর রাতে শিকারকে তার প্রিয় মানুষের গলায় নাম ধরে ডাকে নিশি। তাকে বাইরে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর আর বাড়ি ফেরে না সেই ব্যক্তি। লোক কাহিনী মতে, নিশিরা দুই বারের বেশি কাউকে ডাকতে পারে না। ফলে বলা হয়, রাতেরবেলা তিনবার নিজের নামে ডাক শুনলে তবেই আওয়াজ করা উচিত।
মামদো ভুত হিন্দু মতে, মুসলমান ব্যক্তির অতৃপ্ত আত্মাকে ‘মামদো’ নামে ডাকা হয়। অনেকে এদের ‘জিন’ বলেও ডাকেন।
স্কন্ধকাটা,স্কন্ধ মানে ‘মাথা’৷ মাথা থাকেনা বলেই এই ভূতদের ‘স্কন্ধকাটা’ বলা হয়। মাথা কাটা গিয়েছে এমন লোকদের আত্মাই স্কন্ধকাটা ভূতে পরিণত হয়। বিশেষ করে রেল দুর্ঘটনায় কাটা পড়েছে এমন ব্যক্তিরা স্কন্ধকাটা ভূতের রূপ নেয়। প্রচলিত কথা অনুযায়ী, এই ভূতেরা সবসময় তাদের হারানো মাথার খোঁজ করে।
ডাইনি ‘ডাইনি’ কোনও আত্মা নয়, এরা জীবিত নারী। এরা সাধারণত বৃদ্ধ নারী হন। এরা ‘কালো জাদু’র সাহায্য নিয়ে বা ডাকিনী বিদ্যার সাহায্যে প্রতিপক্ষের ক্ষতি করে। বয়স বাড়লেও ডাকিনী বিদ্যার মাধ্যমে এরা নিজেদের যৌবন ধরে রাখতে পারে। ছেলেদের মন ভুলিয়ে নিজেদের ফাঁদে ফেলে। প্রচলিত রয়েছে, গ্রামের ছোট ছেলে মেয়েদের ভুলিয়ে নিয়ে যায় এরা। তারপর হত্যা করে এবং তাদের রক্ত খেয়ে বছরের পর বছর বেঁচে থাকে।
এছাড়াও গেছোভূত, আলেয়া, বেঘোভূত ও কানাভুলোর মতোও নাম শোনা যায় বাংলা পূরাণে।”
ওদের কথার মাঝেই রাহুল হালকা ভুতুড়ে মিউজিক দিয়ে শো টা আরও সুন্দর করে তুলল। শো শেষ করে তিনজনেই বেরিয়ে এলো। এরপর রা’দ আর অভিনবের পালা।লাবন্য পূর্ণাশা এসে রা’দের পাশে সটান হয়ে বসে পড়লো।
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,