প্রেম ঘোর #পর্ব_৫১_৫২ 💜💜

0
1816

#প্রেম ঘোর
#পর্ব_৫১_৫২
💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
“সাদাদ প্লিজ উঠো এখন…….”
“পরে…..”
“কি বলো??পরে কেন???দেখো দিনের বেলা অনেক হয়েছে এবার উঠো প্লিজ…..”
সাদাদ নৌশিনের গলা থেকে মুখ তুলে বললো,
“ইশশশশ তুমি না পুরোই……”
“কিইই….”
“না কিছু না…..”
“হয়েছে এখন সরো….এই বিকেল বেলা আবার আমাকে গোসল করতে হবে…….”
“কেন আমি আছি না আমি করিয়ে দিবো……..”
“ইশশশশ আল্লাদে বাঁছে না আমার সুয়ামী…….”
“হা হা হা হা…..এটা কি ছিলো??”
“সরো তো কিছু ছিলো না…….”
“এই ঐ সব নুর্হুর্তের পর তো সব মেয়েদের ই একটু মিষ্টি মিষ্টি ছোট্ট আদর ভালো লাগে……তোমার লাগে না কি?”
“ইইই….সাদাদ!!!”
“ওকে ওকে আর বলবো না তবুও এমন করপ চিমটি দিও না……..দেখো তো পিঠ টা খামচে কি করেছো??মে বি রক্তও পড়ছে…….”
সাদাদ নৌশিনের উপর থেকে সরে নৌশিনের দিকে পিঠ দিয়ে বসে……..নৌশিনও শরীরটা চাদরে পেঁচিয়ে উঠে বসে……সাদাদ পিঠ দেখে নৌশিন অবাক….নৌশিনের হাতের নখ স্বাভাবিক-ও নখ বড় করে না অথচ এমন ভাবে খামচিগুলো লেগেছে যে সাদাদের পিঠের চামড়াগুলো উঠে গেছে জাগায় জাগায়……
নৌশিন সাদাদের পিঠে হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো,
“আম সরি জান……এত দাগ কি করে হলো?আমি বুজতে পারি নি…..আম সরি….প্লিজ কিছু মনে করো না……..”
নৌশিনের চোখে পানি এসে গেছে……….
সাদাদের বুজতে এক মুহুর্তও লাগলো না যে তার নৌশিন কান্না করছে……..সাদাদ পেছন ফিরে নৌশিনকে নিজের বুকে জড়িয়ে নেয়…..”এই পাগলী এর জন্য কান্না করছো তুমি??আমি তো জাস্ট মজা নিচ্ছিলাম জান…..ঐ সময় এমন টায় হয়….. এখানে ব্যাথা হয় না জান তোমার ঐ খামচির দাগগুলো আমার জন্য সুখ ছাড়া আর কিচ্ছু না…..এই খামচিতে জ্বালা করে না জান নিজেকে সুখী মনে হয়……..”
“তবুও আমি কতটা ব্যাথা দিলাম তোমায়…..আমি খুব খারাপ যে কিনা নিজের হাজবেন্ড কে ব্যাথা দেয়….”
“এই বোকা মেয়ে এই ব্যাথাগুলো না নিজের হাজবেন্ড ছাড়া আর কাউকে দিতে নেই……”
“সাদাদদদদদ………”
“হা হা হা হা…..আচ্ছা জান পাখি তুমি আমাকে একটু খামচি দিয়েই কান্না করছো….আর আমি যে তোমায় কত ভাবে ব্যাথা দিলাম….তবে তো আমারও কাঁদা উচিত তাই না??”
“একদম না……আমার তো ব্যাথাগুলো ভালোই লাগে….”
নৌশিন লজ্জায় লাল হয়ে মাথা নিচের দিকে দিয়ে কথাটা বললো।
“ওরে আমার লালপরী রে…….আর লজ্জা পাস না….. ”
“ধ্যাত……”
“উম উম……”
“এই সত্যিই বেশি লেগেছে তোমার তাই না???”
“আরে বোকা না…..তোমার ডেসিং বয়ের এই সামন্য খামচিতে কি এমন হবে???তাছাড়া তুমিই তো বলো আমি নাকি সবচেয়ে স্ট্রং….তাহলে?”
“হুম….তবে আমি কিন্তু ইচ্ছে করে দিই নি……”
সাদাদ নৌশিনের কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে,
“সেক্সি লেডি আমি জানি আপনি ইচ্ছে করে দেন নি….আপনার নরম শরীরে এই শক্ত দেহী পুরুষটা যখন কিস,বিট এন্ড প্রেশার দিয়ে জ্বালা ধরিয়েছিলো তখন আপনি মাতাল হয়ে এগুলো করেছেন……..”
নৌশিন শেষ…কি বলে না বলে সাদাদ……নৌশিন কিছু বলছে না………..সাদাদ নৌশিনের দিকে এগিয়ে গিয়ে নৌশিনের চোখে চোখ রেখে বলছে…..”ম্যাম লজ্জা করছে?????লজ্জা পেয়েও না সুন্দরী…..লোভে পড়ে যাই…..জানো তুমি যখন ভালোবাসার মুহুর্ত টাতে লজ্জা পাও….আমার না তোমাকে কমড়ে শেষ করে দিতে ইচ্ছে হয়…….”
মুখ খুলে নৌশিন……..
“ইচ্ছে হয় কি??তুমি তো অনেক জোড়ে জোড়ে ই কামড় দাও……”
সাদাদ মাথা চুলকে বলে,
“কি করবো বলো তো তুমাকে ঐ অবস্থায় পেলে আমি যে আউট অফ কন্ট্রল…….তাই তো…..”
“হয়েছে……আর বলতে হবে না……”
“ঐ কই যাও…..”
“কি??হাত ছাড়ো….গোসল করতে হবে তো নাকি??”
“পরে….”
“না এখনি….আসরের আযান দিয়ে দিবে তো…..”
“এখন অনেক সময় বাকী…..”
“উফফফ….সাদাদ তুমি না…..”
“আমি জানি আমি খুব খারাপ,খুব বাজে…..তবুও তোমার…..”
নৌশিন মুচকি হেঁসে বলে,
“সাদাদ!!!”
“ইয়াহ কিউটি…….এখন বলো তো আমি যখন তোমার সারা শরীরের ঠোঁটে ছোঁয়া দিই….কমড়ে দিই…..তোমার ঐ নরম বুকে…….”
নৌশিন কথাটা শেষ করতে দিলো না তার আগেই সাদাদের মুখ চেঁপে ধরে,
“চুপ একদম চুপ….আসলেই নির্লজ্জ একটা……..”
সাদাদ নৌশিনের হাত টা নিজের মুখ থেকে সরিয়ে নিয়ে বলছে,
“বা রে….করতে পারি আর বলতে পারবো না??”
ইশশশ কি লজ্জা কি লজ্জা!সাদাদ টা আসলেও পারে বটে……….♥♥♥
“এখন কিন্তু জোড়ে চিমটি দিবো……ছাড়ো….একটু পরে দেখবে অরূপ আসবে আমার কাছে……গোসল টা তো করতে হবে……..”
“গোসল না করলে??”
“এ্যা…..”
“হা হা হা হা…..”
“সাদাদ….তুমি না কি সব বলো….ছিঃ……”
“ওকে ওকে ছাড়লাম……আমিও আসি না???”
“আহা রে…….”
“হেয়…..আমি কিন্তু চাইলে ই ডুকতে পারি আমার পারমিশন লাগবে না……নেহাত আমি ভদ্র তাই……”
“আহা গো কি ভদ্র মানুষ!!”
নৌশিন জামাটা পড়ে নিয়ে বিছানা থেকে নেমে যায়।হাঁটতে গিয়ে,হঠাৎ…
“ও মা…….”
“এই কি হলো??”
“কিছু না……”
সাদাদ নৌশিনকে ধরে মুচকি হাঁসছে……….
সাদাদ বেশ ভালো ই বুঝতে পারছে নৌশিন কেন চিৎকার করলো……
“এই হাসছো কেন তুমি??”
“তুমি হাটতে পারছো না কেন??”
“কে বললো হাটতে পারছি না?ছাড়ো আমি ঠিক পারবো……”
“মেডাম আমি যা করেছি না তাতে আপনার মতো চড়ইপাখির এই অবস্থা হওয়া স্বাভাবিক………”
কথাটা শোনে নৌশিনের বোধহয় একটু খারাপ লাগলো,অভিমান এসে গেছিলো মনের ভেতর এক মুহুর্তের জন্য কিন্তু সেটা আবার কোথায় যেন মলিন হয়ে গেলো………নৌশিন সাদাদের দিকে একটু অন্য রকম ভাবে তাঁকিয়ে আছে…….সেই তাঁকানোর ভাষা বুজতে পারলো সাদাদ,
“না না…আমি সে রকম কিছু বলি নি…..তুমি আমার জন্য পারফেক্ট….আমি তো জাস্ট বললাম আমি একটু বেশি ই…….”
“হয়েছে আর বলতে হবে না…..আমি সে রকম মনে করি নি……আর শোনো আমি চড়ুই পাখি হয় বা উট পাখি…..তুমি বেশি করো বা কম সবটা না শুধু আমার…..আমি ব্যতীত আর কেউ না…..বুজলে??”
“ইয়াহ ইয়াহ…..ম্যাডাম তাহলে আমি পরের বার থেকে আরও একটু বেশি বেশি করবো……নিতে পারবে তো??”
“সাদাদদদদদ…….”
“হা হা হা হা……চলো এবার…..”
“হুম…..”
সাদাদ নৌশিনকে কোলে তুলে নিয়ে বাথরোমের দিকে যেতে থাকে…….
“আরে কি করছো নামাও…..”
“চুপ……আজকে আমি সাওয়ার নেওয়াবো তোমায়…..”
“না না না….এটা সম্ভব না……নামাও তুমি আমায়….”
“চুপ বলছি না হলে কিন্তু ঠান্ডা পানিতে ডুবাবো…..”
ঠান্ডা পানিতে নৌশিন কখনো গোসল তো দূরের কথা হাত পর্যন্ত লাগায় না….ঐ যে একটু তে ই ঠান্ডা লাগে তাই……….
তাই নৌশিন চুপচাপ হয়ে সাদাদের কোলে ই রয়ে গেলো…..আর সাদাদ ওয়াশরোমের দরজা খোলে নৌশিনকে ভেতরে নিয়ে ডিরেক্ট বাথটবে………….
“ওওও……এভাবে কেউ টবে ফেলে ব্যাথা পাই না আমি???”
“ওওও আমি না ভুলপ গেছিলাম যে তুমি ব্যাথা পাও…..”
“মানে???”
“মানে হলো আমি জানি আমার জান টা একটু ব্যাথা পেয়েছে তাই আমি সেই ব্যাথাটা কমানোর জন্য এখন জান টাকে নিজের হাতে সাওয়ার করিয়ে দিবো।।।।।আর তারও আগে যে ভালোবাসার ব্যাথাগুলো দিয়েছি সেটার জন্য জানটাকে আমি সাওয়ার করানোর পর নিজ হাতে শাড়ি পড়িয়ে দিবো……”
নৌশিন কিছু বললো না….সাদাদ সাওয়ার করাবে বলে বাঁধাও দিলো না….কেন দিবে??হাজবেন্ড ওর সাওয়ার করাতেই পারে…..আর তা ছাড়া নৌশিন যদি এখন সাদাদ কে সাওয়ার করাতে না দেয়…..সাদাদের মেজাজ ৩৬০ডিগ্রী হয়ে যাবে….সেটা আমাদের নৌশিন খুব ভালো করেই জানে…..তাই সাদাদের সব বায়না হাঁসি মুখে মেনে নিলো…..অবশ্য নিজের স্বামীর এমন ভালোবাসা কে না চায়!!আর নৌশিনের মনে বিয়ের আগে থেকে এমন একটা চাওয়া ছিলো যে সাদাদ ওকে নিজ হাতে শাড়ি পড়িয়ে দিবে….যেটা আজ পূরণ হবে….নৌশিনের ভেতরে যে অন্য রকম সুখের হাওয়া বইছে…..যে সুখ শুধু নৌশিনের জন্য….হ্যাঁ শুধু নৌশিনের জন্যই একমাত্র নৌশিন ই জানে এ সুখের কোনো মাত্রা হয় না,হয় না কোনো সীমনা,এ যেন অসীম একটা প্রেমঘোরের আবেশ।ভালোবাসার প্রতিটি ছোঁয়া বুঝি এমনি সুখময় হয়………………
সাদাদ নৌশিনকে নিজ হাতে গোসল করিয়ে দিলো অবশ্য ওযু টা নৌশিন নিজে করেছে…..এমন কি কাপড় টাও সাদাদ ই বদলে দিয়েছে………..সাদাদ নৌশিনকে আবার কোলে করে ওয়াশরোম থেকে রোমে এনে বিছানায় বসিয়ে দিলো।টাওয়াল দিয়ে নৌশিন লম্বা চুল মুছতে মুছতে বললো,
একদম উঠবে না জায়গায় থেকে,আমি সাওয়ার নিয়প এসে এই জামা টা আবার চেন্স করিয়ে দিবো……….
নৌশিন বুঝতে পারলো সাদাদ কেন বললো কথাটা…তবুও সাদাদের মুখ থেকে আবারও শুনতে ইচ্ছা করছে……তাই জানতে চাইলো,”কেন??”
“বললাম না শাড়ি পারাবো….”
“ওহ…..”
“হুম…..ফ্যান চালু করে দিচ্ছি…..চুল শুকাতে থাকুক….হিট দেওয়ার দরকার নেই……চুপচাপ বসো……”
“আরে এখানেই বসতে হবে???”
“হ্যাঁ এখানেই বসতে হবে…..”
“আয়নার সামনে বসি না??সাওয়ার নিলাম একটু ক্রিম নিবো….বডি লোশন নিবো…..”
নৌশিনের মুখের দিকে তাকিয়ে সাদাদ একটা ছোট্ট হাঁসি দিয়ে বললো,
“আচ্ছা,ঠিক আছে…..আয়নার সামনেি বসো বাট ক্রিম/লোশনের চেয়ে বেশি কিছু নেবে না…..আমি শাড়ি পড়িয়ে বাকী সাজ কমপ্লিট করে দিবো…..”
“আচ্ছা,আচ্ছা ঠিক আছে….এখন যাও সাওয়ার নিয়ে আসো……”
…………………..
সাদাদ সাওয়ার নিয়ে টাওয়েল পেঁচিয়ে বাথরোমে থেকে বেরিয়ে আসে,নৌশিন যা করার সে সব করে সাদাদের কথামতো আয়নার সামনে বসে আছে….নিজেকে আয়নায় দেখছিলো একটু আগে আর বিশেষ মুহুর্তগুলো কথা ভেবে নিজে নিজেই ব্লাশিং হচ্ছিলো।☺☺☺
সাদাদ বেরিয়ে এলে নৌশিনের নজর এড়ায় না,বরাবরের মতোই সাদাদের উন্মুক্ত লোমাম্ন বুক টাতে আজও নৌশিনের চোক আটকে যায়।সাদাদ বেডে রাখা টি শার্ট আর টাওজার টা পড়ে নেয়…….নৌশিনের জন্য কার্বাড থেকে অনেক ক্ষণ যাবত খুজে একটা শাড়ি বের করে আনে। এরআগ পর্যন্ত এক বারের জন্যও সাদাদ নৌশিনের দিকে তাঁকায় নি………………..
সাদাদ নৌশিনের কাছে এসে নৌশিনের হাতে একটা পেডিকোট আর ব্লাউজ দিয়ে বললো,
“ম্যাডাম এই দুটো আমি পড়িয়ে দিই???”
নৌশিনের মাথায় বাশ,ইশশশ একটু আগে গোসল করালো সাদাদ ওকে,সাদাদ তো সব কিছু ই জানে ওর তাহলে বারবার কেন এমন লজ্জা লাগে??কোনো উত্তর জানা নেই নৌশিনের……….
“না না…. আমও পড়ে নিচ্ছি……”
“উমহু…..তুমি লজ্জা পেয়ে বলছো…..আচ্ছা আমি তো তোমার সব ই দেখে নিয়েছি….শুধু একবার না অনেক বার তবু এতো লজ্জা কিসের?? হুম??”
“জানি না আমি….. ”
“জানো না যখন তো দাও আবার লজ্জা ভাঙি আমি ই পড়িয়ে দিবো…….”বলেই নৌশিনের হাত থেকে ব্লাউজ টা নিয়ে নিলো।
নৌশিনও কম যায় না,সাদাদ কিছু করার আগেই সাদাদের হাত থেকে সেও ব্লাউজ টা কেড়ে নিয়ে এক দৌঁড়ে ওয়াশরোম……..
সাদাদ হেঁসে দিয়ে বলে,”পাগলী একটা…..”
নৌশিন ব্লাউজ আর পেডিকোট পড়ে শরীরে একটা টাওয়েল পেঁচিয়ে বেরিয়ে আসে।সাদাদ মিটমিটি হেঁসে নৌশিনের দিকে তাঁকিয়ে আছে।
নৌশিন সাদাদের সামনে এসে,ভ্রু কু্ঁচকে বলছে,
“হাঁসছো কেন তুমি???”
“কই না তো….”
“আমার চোখ আছে,বুজলে?যদি আর একবার হাঁসো তাহলে আমি শাড়ি ই পরবো না…..”
“আচ্ছা আচ্ছা এই যে একদম চুপ আমি….তবু শাড়ি পড়িয়ে দিবো…..”
“হুম…..তবে কোনো দুষ্টুমি কিন্তু চলবে না….বলে দিলাম….”
সাদাদ নৌশিনের উপর থেকে টাওয়েল সরাতে সরাতে বললো,
“আরে আমি বাচ্চা নাকি যে দুষ্টুমি করবো??ইয়াং,হ্যান্ডসাম একটা ছেলে আমি দুষ্টুমি আমি করতেই পারি না……..”
“সেটা আমার চেয়ে ভালো কেউ জানে না……..”
“কি বলতে চাও???”
“উফফ রাগে যেও না আবার…..প্লিজ……এখন কি আমাকে এভাবেই দাঁড় করিয়ে রাখবে নাকি শাড়ি টা পড়াবে……..”
“দিচ্ছি জান…….”
সাদাদ নৌশিনকে খুব ভালো করেই শাড়িটা পড়িয়ে দিচ্ছে,কুঁচিগুলো গুজার সময় নৌশিন নিজে করতে চাইলেও সাদাদ করতে না দিয়ে নিজেই গুজে দিলো…….সাদাদ ইচ্ছে করেই হাত টা একটু বেশি চেঁপে ধরলো নৌশিনের পেটের দিকে,
“ওহহ…..সাদাদ কি হচ্ছে…”
“কি হচ্ছে মানে শাড়ি পড়াচ্ছি….অমন একটু আধটু হয় শাড়ি পড়ানোর সময়……..”
“হ্যাঁ…..তুমি পড়ালেই হয় অন্য কেউ পড়ালে না…….”
সাদাদ কুঁচি গুজে দিয়ে নৌশিনের আঁচল টা ঠিক করতে করতে বললো,
“ম্যাডাম আমি কিন্তু অন্য কেউ না স্পেশাল মানুষ আমি……সো স্পেশাল কাজ ই হবে……আন্ডারস্ট্যান্ড???”
নৌশিন মুখটা একটু ভেঙিয়ে জবাব দিলো,
“ইয়াহ…….”
আঁচল ঠিক করার সময় যেন সাদাদের দুষ্টুমি টা আরও বেড়ে গেলো……
হাতটা গলায়,ঘাড়ে,আবার গলার নিচেও এদিক সেদিক চলে যাচ্ছে বারবার…….আচ্ছা!শাড়ি পড়ানোর সময় এমন করলে কার না একটু খারাপ লাগে??………
“সাদাদ কি হচ্ছে এসব??এতক্ষণ লাগে শাড়ি পড়াতে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা গেলো…….”
“এই তো শেষ প্রায়……..”
আঁচল টা খুব সুন্দর করে পড়িয়ে দিলো সাদাদ…..
সাদাদের চোখ টা যে নৌশিনের খুলা সদ্য ভেজা ঘাড়ে আটকে গেছে,আর আড় চোখে আয়নায় নৌশিনের মুখ টাও দেখছে মাঝে মাঝে……নৌশিন নিচের দিকে তাঁকিয়ে শাড়ির কুঁচিগুলো আরো একটু ঠিক করছে………..
সাদাদ ড্রেসিং টেবিল থেকে পিন নিয়ে আয়নায় নৌশিনের মুখপর দিকে তাঁকিয়ে আঁচলে পিন আপ করছে……….
“ওওওওও…..আওওও……ও মা…….”
নৌশিনের চিৎকারে ঘোর কাটে সাদাদের……সাথে সাথে সাদাদ নিজের হাতের দিকে তাঁকিয়ে শকড হয়ে যায়………..
সাদাদ অমনোযোগী হয়ে পিন লাগাতে গিয়ে পিন টা আঁচল আর ব্লাউজে না লেগে……ব্লাউজ আর নৌশিনের কাঁধে ঢুকে গেছে………নৌশিন কাঁধে হাত চেপে ধরেছে…..ভালো ভাবেই ঢুকছে পিনটা………
চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেছে মেয়েটার…….”ও ও ও…..ওহ……”
“জান জান…. খেয়াল ছিলো না আমার…..দেখি দেখি…..ইশশশ রক্ত এসে গেছে একটু…..প্লিজ কাঁদবে না……..”সাদাদ আর কিছু না বলে মুখ ডুবিয়ে দেয় নৌশিনের কাঁধে…………আবার পর মুহুর্তেই মুখ টা সরিয়ে নেয়……..যেহেতু ব্লাড বেরিয়েছে একটু….ব্লাড তো আর মুখে ডুকাবে না……….
নৌশিনও কাঁদলো না তবে ব্যাথা পেয়েছিলো তো চোখ দিয়ে একটু পানি বের হয়ে গেছে আর কি……….সাদাদ এক মুহুর্তেই পিন টা লাগিয়ে দিয়ে নৌশিনকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো,দুগালে হাত রেখে দেখে নৌশিনের চোখ ঝাপস হয়ে আছে……
“জান প্লিজ…..আমি খেয়াল করতে পারি নি….ব্যাথা করছে এখনও??”
নৌশিন সাদাদের মুখের দিকে তাঁকিয়েই মাথা নেড়ে না করে………….
সাদাদ নৌশিনকে জড়িয়ে ধরে…..নৌশিনও সাদাদের বুকে মাথা রাখে আকড়ে ধরলো তাঁকে………..
“ব্যাথা করছে এখনও???”
“একটু লেগেছে কি ব্যাথা করবে???”
“আমি জানি একটু ডুকেছে না কি কতটুকু ডুকেছে…….”
“সত্যি বলছি বেশি লাগে নি….বেশি লাগলে তো কেঁদে ই দিতাম……”
“চোখ ঝাপসা ছিলো জান…….”
নৌশিন সাদাদের বুক থেকে মাথা তুলে বললো,
“এই দেখো এখন নেই……
তখন একটু আর কি……….ঐ টুকু ব্যাথা তো ইনজেকশন দিলেও হয়….তুমি শুধু শুধু ঘাবড়ে যাচ্ছো………”
“এই কাজ টা যদি অন্য কোনো হাজবেন্ড ওয়াইফের মাঝে হতো না তাহলে ওয়াইফ নিশ্চয় ওর হাজবেন্ডকে বলতো,”চোখ নেই,কানা নাকি…..”কেঁদে,রেধে,রাগ করে শেষ করতো…..আর তুমি কি না??”
নৌশিন না হেঁসে পারলো না……….”খুব জানো তাই না??”
“সিরিয়াসলি বলছি…….এটাই হতো বেশির ভাগের ক্ষেত্রে…”
“আচ্ছা ঠিক আছে…..তাহলে তুমি যখন একটা ভুল করেই ফেলেছো এটার জন্য তুমিও একটা শাস্তি……..”
নৌশিনের মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে সাদাদ বললো,
“ওকে…..কি শাস্তি বলো…..”
“আ……ফুচকা খাওয়াতে হবে আমায়…….”
“অসম্ভব…..পারবো না……গ্যাস্ট্রিক তুমার কেন বুঝো না বলো তো??”
“ঐ একটু আধটু খালে কিছু হবে না…..প্লিজ প্লিজ সাদাদ অনেক দিন খাই না……”
“নো…..”
“তাহলে তুমি তো শাস্তি মানলেই না…..লাভ কি হলো দিয়ে??”
“আচ্ছা,তোমার তো চটপটি ও পচ্ছন্দ….তাই না??”
নৌশিনের খুশি আর দেখে কে……..আনন্দে আটখানা হয়ে নৌশিন বললো,
“তুমি চটপটি খাওয়াবে?ওয়াও…..আমি রাজি…… সেটাই খাবো……”
“ওকে,তাই হবে কিন্তু বাসায় বানানো টা খেতে হবে……”
নৌশিনের হাঁসি ফিউজ হয়ে গেলো………
“বাসায়!!!বাসার চটপটি আমার ভালো লাগে না তেমন…….খোলা দোকানের চটপটির মজা আলাদা সাদাদ…….”
“নো ওয়ে……আমি যা বলছি তাই হবে……ভাবী করে দিবে দেখবে বেশ লাগবে…….আমি গেরান্টি দিচ্ছি……”
“ভাবী করবে???”
“হ্যাঁ….টেস্ট করে দেখো ভালো লাগবে তোমার…..”
“আচ্ছা আমি রাজি…….”
“ওয়েট ওয়েট কোথায় যাচ্ছো??”
“নিচে যাবো……কোথায় আবার??”
“না ম্যাম….আমার সাজানো শেষ হয় নি এখনও……”
“ও হ…… আমিও তো দেখি নি আমার বর কেমন শাড়ি পড়ালো আমায়……”
নৌশিন আয়নার সামনে এসে নিজেকে দেখছে……
“ভালোই লাগছে বলো???”
সাদাদ নৌশিনকে আয়নার সামনের টুল টা তে বসিয়ে দিয়ে বললো,
“আমার জানপাখি টাকে শুধু ভালোই না সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে দেখতে……”
“ইশশশ বেশি বেশি বলো তুমি,এ বাড়িতে সবাই আমার চেয়ে বেশি সুন্দর….হ্যাঁ আমি মানছি আমি সুন্দর বাট আমার চেয়ে ভাবী,প্রাপ্তি ওরা কত সুন্দর দেখছো তুমি…..আর রিদি আপু তো জাস্ট ওয়াও….কি সুন্দর লম্বা,মাঝারি চুল,আর প্রাপ্তির মতোই ফর্সা….আর আমি তো………..”
আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই সাদাদের দিকে তাঁকিয়ে দেখে সাদাদ রাগী লোক নিয়ে ওর দিকে তাঁকিয়ে আছে……সাদাদ সবার কথা শুনলেও রিদি কথা শুনতে একদম পচ্ছন্দ করে না….নৌশিনকে অনেক বার না ও করেছিলো রিদির নাম মুখে না নিতে….এমন কি সাদাদ নৌশিনকে রিদির বেশি সাথে কথা বলতেও নিষেধ করেছে…..নৌশিন এ ক দিনেই বুজে গেছে সাদাদ নৌশিনের মুখে রিদির নাম শোনতে চায় না……তাই নৌশিন সাদাদের রাগ সামালে নিতে বলা শুরু করে,
“প্রাপ্তি শুধু সাদা দেখতে আমার চেয়ে বেশি কিছু না,ভাবী তো আমার মতোই ফর্সা বেশি মোটা হয়ে গেছে তো ভালো লাগে না(আসলে তেমন মোটা না রাফসা নৌশিন এমনি বললো)….আর রিদি আপু তো মেকাপ সুন্দরী সারা ক্ষণ মেকাপ করে থাকে,বেশি স্টাইল করে প্রকৃত সৌন্দর্য নেই কিন্তু আমার টা তো রিয়েল….আর ওর চুলগুলো তো ঘোড়ার লেজের মতো আর আমার চুল গুলো কি লম্বা,ঘন তার উপর আবার কত্ত সিল্কি….আমার গাল দুটো কি গুলোমুলো আ রিদি আপুর টা তো দেখে মন হয় ছেলেদের মতো শক্ত গাল(মোটেই এরকম মনে হয় না…সাদাদের রাগ কমানোর জন্য বললো নৌশিন)….পোশাকের কি শ্রী,ভাব দেখাতে চায় বেশি….(এগুলো সত্যি)…..আমার সাথে রিদি আপুর তুলনায় চলে না….আর মেয়েদের এতো লম্বা হলে বরের সাথে মানায় না আমি সবচেয়ে পারফেক্ট লম্বা মেয়ে…..ইভেন রিদি আপু তো আমার কাছে কিছুই না……….”
নৌশিন দম না ছেড়েই একটানে কতাগুলো বলে দিলো,সাদাদ নৌশিনের মুখে কথাগুলো শুনে রাগ না কমিয়ে পারলো না,সে ও বুজতে পেরেছে নৌশিন চায় না সাদাদ এমন সময় রাগ করুক তাই সাদাদ আর রাগ টা পুষে না রেখে বললো,
“মনে থাকে যেনো……”
“অবশ্যই থাকবে,আমি ই দুনিয়ার সব চেয়ে বেশি সুন্দরী নারী……”
“ঠিক তাই…….”
নৌশিন মনে মনে খুন ভয় পেয়েছিলো।।।।।”বাপ রে বাপ আজকের মতো বেঁচে গেছি…….আচ্ছা আমি কি আসলেই এতটা সুন্দর সাদাদ যে বলে……রিদি আপু তো আসলেই আমার থেকে সুন্দর দেখতে..হ্যাঁ এটা ঠিক ও সাজে বেশি আর আমি নরমাল থাকি…..আমার চুলগুলো আসলেই এই বাড়ির সবার থেকে সুন্দর তবুও…..সাদাদ বেশিই বলে….”
সাদাদ নৌশিনের চুল আচড়ে দিচ্ছে….আর তখন বলে,
“ম্যাডাম….আয়নায় দেখে লাভ নেই…..আপনি আমার কাছে পৃথিবীর সেরা সুন্দরী….আমি কোনো বেশি কিছু বলি না…..”
নৌশিন মুখে কিছু বললো না…..মনে মনে আবারও বললো,”বাহ্…মনের কথাও জানে দেখি…..”
সাদাদ আাবরও বলে উঠে,
“ভালোবাসি যে তাই মন পড়তে জানি……. ”
নৌশিন সত্যই এবার হেঁসে ফেললো…..”সাদাদ☺☺☺”
“হ্যাঁ মহারানী……”
“হয়েছে….আর কত বসে থাকবো…..আর বাসায় কি সেজে বেড়াবো আমি??”
“চুপচাপ বসো….একটা কথাও বলবে না…….”
সাদাদ নৌশিনের চুলগুলো একপাশে সিঁথি কেটে দিলো…..বাঁধলো না কারণ চুলগুলো ভালো করে শুকায় নি……চোখে হালকা করে কাজল দিয়ে দিলো…….আর ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক……
আর কিচ্ছু না….কোনো মেকাপও না………
“ব্যাস……আমার মহারানীর সাজ কমপ্লিট…….”
নৌশিন আয়নায় নিজের দিকে তাঁকালো,
বেশ লাগছে নিজেকে দেখতে……বাদামী রঙের একটা সিম্পল শাড়ি…খুব সুন্দর করে জড়িয়ে আছে নৌশিনের ফর্সা গড়নের শরীরে…..চুলগুলো একপাশে সিঁথি করে রাখা…..খোলা চুলে চোখে একটু সাজ আর ঠোঁটের এই সামন্য লিপস্টিকেই যেন অপসরীর মতো লাগছে দেখতে………
“সাজ টা তো খুব ই সিম্পল……তাহলে এতটা সুন্দর কি করে লাগছে?”
মনে মনেই বললো…….
“দেখি তোমার আর মনে মনে কথা বলতে হবে না,আমার জান এমনিতেই অপসরী আজ আমি সাজিয়ে দিয়েছি তো তাই আরও বেশি অপরূপ লাগছে……..”…………..
সাদাদ নৌশিনকে টুল থেকে তুলে দাঁড় করিয়ে নিলো নিজের সামনে….
পা থেকে মাথা পর্যন্ত খুটিয়ে খুটিয়ে দেখে নিলো একবার…..নৌশিন ঠোঁটের কোণে হাঁসি নিয়ে লজ্জায় নিচের দিকে তাঁকিয়ে আছে……….
সাদাদ কিছু বলতে যাবে তার আগেই নৌশিন সাদাদকে জড়িয়ে ধরে সাদাদের বুকে মুখ লুকিয়ে নেয়………..
সাদাদ আকড়ে নিলো নৌশিনকে আর কিছু বললো না…..সে ও মুগ্ধ হয়ে গেছে নৌশিনের রূপে……..অনেকটা সময় পাড় করে দিলো দুজনে একে অপরকে নীরব ভাবে জড়িয়ে রেখে………নীরবতা ভাঙে নৌশিন………সাদাদের বুক থেকে মাথা তুলে বললো,
“আমার চটপটি???”
সাদাদ হেঁসে দিয়ে বলে,
“তোমার তো চটপটি….আর আমার যে এই রূপে দেখে……..”
“চুপ….বেশি বেশি সব সময়…..”
“হায়য়য়…..কি আর করার কন্ট্রোল ই করলাম….তবে আমি কিন্তু সুদে আসলে পুষিয়ে নিবো ম্যাডাম……”
“যাও তো…….”
“হা হা হা….লজ্জাবতী রে……….”
মিষ্টি হাঁসে নৌশিন…….
সাদাদ নৌশিনের কপালে ভালোবাসার উষ্মতা দিয়ে বললো,
“আচ্ছা….চলো এবার তোমার চটপটি খাওয়ার ব্যবস্থা করি……..”
হাঁসি মুখ নিয়ে নৌশিনও মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানিয়ে দিলো সাদাদকে……..!!
!
#প্রেমঘোর#৫২#
💜💜

সাদাদ রোমের দরজা খুলতে যাবে আর তখনি,
“এই দাঁড়াও…দাঁড়াও….”
“কি??”
নৌশিন সাদাদকে টেনে রোমে আবার রোমের ভেতরের দিকে নিয়ে যায়।
“কি হলো???যাবে না নিচে???”
“যাবো তো…..”
“তাহলে??”
“এই শোনো না…..”
“বলো……”
“বলছি যে…..”
“হ্যাঁ……”
“………….”
“কি হলো??বলো???”
“বলছি যে আমি পিক নিবো তোমার সাথে…….”
সাদাদ অবাকের সপ্তম আসমানে উঠে গেলো….
নৌশিন নাকি নিবে পিক!!
“এতো অবাক হয়ে কি দেখছো??আমি কিন্তু বলছিলাম বিয়ের পর তোমার সাথে সেলফি নিবো…..এখন তো তুমি আমার বর তাই আমার ইচ্ছে পূরণে আর কোনো বাঁধা নেই……সো আমি নতুন ফোনে পিক নিবো আজ……..প্লিজ প্লিজ….”
“আমার তো খুশিতে…….উমমমমমমম্মা……..”
নৌশিন সাদাদের দেওয়া ফোন টা নিয়ে সাদাদের গা ঘেষে দাঁড়িয়ে বেশ কয়েকটা সেলফি তুলপ নিলো।এক এক করে সব পিক দেখলো তারপর সাদাদের দিকে ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ তাঁকিয়ে থেকে বললো,
“আ……এটা খুলো…..”
“মানে???”
“মানে আবার কি আমি খালি গায়ে ই বেশি লাইক করি তোমায়……..আর,….”
“আর???”
“আর কি আবার কিছু না…..”
“উমহু জান,তোমার মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে কিছু একটা লুকাচ্ছো…….”
“উফফফ সাদাদ তুমি না……”
“হুম হুম….আই নো আমি কতটা খারাপ….এবার তুমি বলো এর আগে কি বলতে চেয়েছিলে………”
“উফফ…..বলতে চেয়েছিলাম যে……”
অনেক সাহস নিয়ে কথাটা বলতে গিয়েও কেমন জানি লজ্জা পেয়ে থেমে গেলো মেয়েটা……………
সাদাদ নৌশিনের কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বললো,
“ম্যাডাম প্লিজ জড়তা ছেড়ে তাড়াতাড়ি বলুন…..”
“…………”
“ওকে!!তোমাকে বলতে হবে না……আমি ই বলছি…..”
নৌশিন সাদাদের মুখের দিকে তাঁকায়……….
“আমি যখন সাওয়ার নিয়ে বের হলাম তখন তুমি আমার সদ্য ভেজা লোমাশ্ন বুকে নজর দিয়েছিলে….আর তুমি একদিন এটাও বলছে যে আমাকে এভাবে দেখলে তোমার………”
নৌশিন সাদাদের মুখে হাত দিয়ে কথাটা আটকে দিলো,চোখে চোখ রেখে বললো,
“বুঝতেই যখন পারছো তো ইচ্ছে টা কেন পূরণ করছো না…….”
সাদাদ কোনো কথা বললো না….একটা ছোট্ট মুখ বাঁকানো হাঁসি দিয়ে একটানে নিজের টি শার্ট টা খুলে ফেললো।নৌশিনের হাত থেকে ফোন টা নিয়ে নৌশিনের পিঠ নিজের বুকের সাথে লাগিয়ে দিয়ে আরও বেশ কয়েকটা পিক তুলে নিলো।নৌশিনও মুহুর্তের মাঝের পরমানন্দে সাদাদের সাথে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন ভাবে পোস দিতে থাকে।একটা পিকে তো নৌশিন নিজের ইচ্ছেতেই সাদাদের বুকে কিস করেছে…….আর সাথে সাথে সেটাও একটা রোমান্টিক পিকে পরিণত হয়েছে………….
“ওয়াও……পিক গুলো কিন্ত সুন্দর হয়েছে…তাই না??”
“আমার জান টা যে কত সুন্দর!!!…….”
“হু…..আমার চেয়ে তুমি বেশি সুন্দর…..ইশশশশ তোমার এই পিকগুলোই বেশি সুন্দর……”
“খালি গায়ে??”
“হুম….এগুলো আমি পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখবো…..”
“কেন???এগুলো কেন??দিলে সব গুলোই দিবে আর এখানে লক করার কি আছে??তোমার ফোনেই তো দেখলে খুব হলে তোমার ফ্রেন্ডস রা দেখবে…..”
“তাই তো লক করতে হবে…..”
“ওয়াট???”
“হুম হুম….আমার সাদাদের এমন ডেসিং বডি দেখে যে কোনো মেয়েই প্রেমে পড়ে যাবে…..আর তাছাড়া সাওয়ার নেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই খালি গায়ে পিক নেওয়ায় এই পিকগুলো মধ্যে একটা বিশাল বিশেষ্সত আছে…..আর আমার বান্ধবীগুলো যে আছে,সে সব কয়টা হান্ডসাম ছেলে দেখলে পাগল হয়ে যায়……যদি তোমার দিকে নজর পড়ে??? ”
“আচ্ছা!!”
“হ্যাঁ…..আমি চাই না আমার বরের দিকে অন্য কারও নজর পড়ুক……..”
নৌশিন তো প্রায় ই সাদাদকে এরকম কথা বলে থাকে কিন্তু আজ নৌশিনের মুখে এসব কথা শোনে সাদাদের ভেতরে আজনা একটা ভয় কাজ করছে।
“আচ্ছা,জান তুমি যদি জানো যে তোমার চেনা কেউ তোমার সাদাদ কে চায় তাহলে??”
এমন একটা প্রশ্নের জন্য নৌশিন মোটেও প্রস্তুত ছিলো না।
“মানে???”
সাদাদ নৌশিনের কাঁধের উপর হাত দিয়ে কাছে এনে বললো,
“ধরো আর কি,তোমার কোনো ফ্রেন্ড ই আমাকে খুব লাইক করলো তাহলে???”
“একটু খারাপ তো লাগবেই…..বাট লাইক করুক বা লাভ যে করবে ওর তো বিবেক থাকা উচিত যে তুমি আমার বর….তবুও যেহেতু মনের উপর কারও হাত নেই,পচ্ছন্দ করলেও সেটাকে কন্ট্রোল করে নেওয়া উচিত……..আ…আ…..তবে….”
“তবে??”
“তবে তোমাকে কে লাইক করলো সেটা আমার কাছে তেমন কিছু না,আমার কাছে তো এটা সব চেয়ে বড় যে তুমি কাকে লাইক করো……….ব্যাস আর কিছু না……….”
“নৌশিন!!!”
“কি??এই আসলেই কেউ আবার লাইক টাইক করে নাকি???হি হি হি……”
সাদাদ নৌশিনকে ভালো করেই চিনে,এই মুহুর্তে যদি নৌশিন জানতে পারে রিদি সাদাদকে ওর আগে থেকেই প্রপোজাল দিয়েছে আর এখনও জ্বালিয়ে যাচ্ছে তাহলে কষ্ট পেতে পারে।আর হয়তো বা এটা ভেবে বেশি কষ্ট পাবে যে ‘সাদাদ আগে কেন বললো না’।তাই সাদাদ এরকম ভাবে বলতে চাইলেও আর বললো না কারণ সাদাদ চায় না এক মুহুর্তের জন্য হলেও নৌশিনের হাঁসি মুখটা মলীন হয়ে যাক।
“এই হ্যালো…..কি ভাবছো??”
“নাহ্ কিছু না…..”
“বললাম যে কেউ লাইক টাইক করে নাকি??এটা কিন্ত মজা করেই বলছি…..কিছু মনে করো নি তো??”
“নৌশিন!!আমি তোমার হাজবেন্ড এইটুকু তুমি বলতেই পারো তরজন্য আবার বলার কি আছে ‘কিছু মনে করেছি কি না’….”
“তাহলে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরো……”
সাদাদ হেঁসে দিয়ে নৌশিনকে নিজের খোলা বুকে আগলে নিলো…..নৌশিন সাদাদের বুকে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে নিয়েছে……একটা চির চেনা ঘ্রাণ পরমসুখে শুকে নিচ্ছে সে………সাদাদও যে একটা মিষ্টি সুভাস পাচ্ছে……আর সেটা হচ্ছে নৌশিনের চুলের যেন মাতাল করা একটা ঘ্রাণ………….
নৌশিন সাদাদের বুকে নাক ঘষে নিচ্ছে অনেকক্ষণ যাবত………”আই লাভ ইউ…..”
সাদাদ নৌশিনের পিঠে স্লাডিং করতে করতে জবাব দিলো,
“আই লাভ ইউ টু সোনা….”
নৌশিন সাদাদের বুকে একের পর এক চুমু খেয়ে যাচ্ছে,সাদাদ কিছু বলছে না….ভালোই লাগছে সাদাদের…..তবে এমন করলে যে সাদাদও আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারবে না……পরে তো সাদাদ ডাবল কেস করে বসবে!!!!😛😛
তাই আগে ভাগেই সাদাদ নিজেকে কন্ট্রোল করে নিয়ে বললো,
“লেডি আমার সাথে এমন করলে আমি কিন্তু পাগল হয়ে যাবো…..তাহলে সন্ধ্যা বেলা আবার সাওয়ার…….”
নৌশিন কোনো একটা অজানায় ডুবে গেছিলো সাদাদ আওয়াজ পেয়ে ফিরে আসে…নিজের কাজ আর সাদাদের কথা শোনে ভীষণ লজ্জা করছে তার…
তাই সাথে সাথে সাদাদকে ছেড়ে দিয়ে দু পা পিছিয়ে দাঁড়ালো………
নৌশিন নিচের দিকে তাঁকিয়ে আছে….খুব লজ্জা করছে তার……ইশশশ সব কিছু হয়ে যায় তারপর যে আবার কেন লজ্জা করে!!ভেবে পায় না নৌশিন………
“ম্যাডাম….লজ্জা পেও না প্লিজ……”
নৌশিন তবুও নিচের দিকে তাঁকিয়ে সাদাদ আর কিছু বললো না….নৌশিনেরর কাছে গিয়ে নৌশিন কিছু বুঝার আগেই এক হাত ওর কমড়ে আর অন্য হাত চুলের পেছনের দিকে ধরে ঠোঁট ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো….
না নৌশিন একবিন্দুও বাঁধা দিলো না……সাথে সাথে তাল মিলাতে শুরু করলে….সাদাদ চুষে নিচ্ছে নৌশিনের ঠোঁট……লিপস্টিক টাও খেয়ে নিচ্ছে পরমসুখে….দুজনেরই চোখ বন্ধ…..দুজন দুজনের ঠোঁটের স্বাদ নিতে ব্যস্ত💜
.
“নতুন বউ….দলজা খোলো…আমি আসবো….”
দরজায় ঠাস ঠাস করে থাপ্পর বসাচ্ছে অরূপ…
“ও নতুন বউ আমি আসবো…..দলজা খোলো….”
দুজনেরই হুশ ফিরে অরূপের ডাকে…….স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়ালো দুজনেই….সাদাদ নিজের মাথার পেছনে চুলকিয়ে মিটমিট করে হাঁসছে…..আর নৌশিন লজ্জা পেয়ে গেছে আবারও সাদাদের এমন হাঁসি দেখে……তবুও নৌশিন ড্রসিং টেবিলের সামনে গিয়ে আয়নায় দেখে নিলো সব ঠিক আছে কি না……হ্যাঁ সব ঠিক ই আছে…..তারপর ও একটা টিস্যু দিয়ে ঠোঁট,ঠোঁটের আশেপাশ টা ভালো করে মুছে নিলো…..আর সাদাদের দিকেও একটা টিস্যু এগিয়ে দিলো…….. সাদাদের ঠোঁট লিপস্টিক আছে যে তাই……….😛😛
অরূপ বেশ কয়েকটা ডাক দিয়ে,কোনো সারা না পেয়ে প্রায় কেঁদেই দিলো………….
“আমি আসবো…..”
অরূপের কান্না জড়িত আওয়াজ পেয়ে নৌশিন দৌঁড়ে গিয়ে তাড়াহুড়ো করে দরজা টা খোলেই অরূপকে কোলে তুলে নেয়…………আর অরূপও নৌশিনকে সাথে সাথে জড়িয়ে ধরে বলে,
“আমি সেই কখন থেকে ডাকছি…….”
“সরি বাবু…….”
“ওকে….তুমি জানো আমাল কান্না পাচ্ছিলো…..আল একটু হলে কেঁদে ই দিতাম…..”
“না আব্বু তুমি না বড় হয়ে যাচ্ছো……কাঁদলে কেমন দেখায় বলো তো……??”
“তাই তো কান্না এলো তালপলেও আমি কাঁদলাম না……”
“ওরে পাকনা বুড়ো……..”
“একটু আদল কলো…….”
“হা হা হা……করছি বাবু করছি…..”
নৌশিন অরূপকে বেশ কয়েকটা চুমু খেলো….. তারপর অরূপও নৌশিনের গালে বেশ কিছুক্ষণ হাত বুলিয়ে দু গালে দুটো চুমু দিয়ে দিলো…….দুজনেই দুজনের দিকে তাঁকিয়ে মিষ্টি করে হাঁসছে………
সাদাদ অপলক দৃষ্টিতে তাদের দিকে তাঁকিয়ে আছে…..যেন মনে হচ্ছে মা ছেলে…..যে কেউ দেখলে তাই মনে করবে……………
“এই যে আপনার আদর হয়ে থাকলে চলুন নিচে যাই…..”
“কেন চাচ্চু???”
“কেন আবার নিচে যাবো……”
“তুমি যাও….আমি আল নতুন বউ গল্প কলবো….”
“ঐ তোর আবার কিসের গল্প…..সারা দিন ই তো তোর মায়ের সাথে গল্প করিস…..কি এতো গল্প তোর??”
“তুমি বুঝবে না….বুজলে??আমার অন্নেক গল্প আছে…..”
“হ্যাঁ তাই তো….”
“ওহ্…..সাদাদ কি করছো বলো তো ওর সাথে…..আমাদের বাবু টার অনেক গল্প আছে তাই না??”
“হুম হুম……জানো নতুন বউ আজকে না স্কুলে আমি একটা মেয়েকে চিমটি কেটেছি…..হাই লে কি কান্না শুলু কলেছিলো পলে ওল না মিস কে বলতে চেয়েছিলো মনে হয়….আমি বলছি যদি মিস কে বলিস আলও জোলে চিমটি দিবো….তাই ভয় পেয়ে আল বলে নি…..হি হি হি হি……”
“এ মা…..বাবু এটা তো ঠিক করো নি একদম……তোমার ফ্রেন্ড হয় না??ফ্রেন্ডকে মারতে নেই তো……..”
“ও তো পঁচা…..খালি নতুন নতুন জামা পলে আসে….কিন্তু পলা পালে না……হি হি হি……টুনইকেল টাও একটু পালে……”
“বাবু…..এগুলো বলতে নেই…..ও তো ছোট তাই পাড়ে না……এগুলে আর বলবে না…..”(একটু কড়া ভাবে)
“আচ্ছা……”
“অরূপ তোর মাকে বলছিস এটা???”
“না চাচ্চু মা কে বলি নি….মা তো পিটুনি দিবে শুনলে…..”
“ওকে….তোর বলতে হবে না…..আমি বলে দিচ্ছি…..”
“না না না…..আমি আল কাউকে চিমটি কাঁটবো না আমিকে দেখে ঐ মেয়ে ল ল ল বলছিলো তাই তো আমি মেলেছি…..আল মালবো না…সত্যি বলছি…..বলো না আম্মুকে প্লিজ……”
“না আমি তো বলবোই……”
“নতুন বউ……!!”
“এই সাদাদ তুমি কাউকে কিচ্ছু বলবে না…….”
“বাপ রে আমাকে শাসন করা হচ্ছে তাই না???”
“হি হি হি…..”
“ওপপপ…..হাঁসি থামা পাঁজি ছেলে…..র কে বলে ল….মেয়েটার তাহলে কি দোষ…..”
“ওহ….সাদাদ তুমি না!!!চলো নিচে চলো…..”
……সিরি দিয়ে নামতে নামতে,
“জানো আব্বু,আজকে আমরা চটপটি খাবো…..”
অরূপ তো মহা খুশি…….
“সত্যি???”
“হ্যাঁ সত্যি…..তোমার আম্মু করে দিবে…….”
“ইয়েেেেে…….নামাও নামাও আমাকে নামাও…..আমি আম্মুকে বলে আসি……”
অরূপ ধরফরিয়ে নৌশিনের কোল থেকে নেমে সোজা রান্না ঘরে ওর মায়ের কাছে চলে গেলো……….
“কি এতো দৌঁড়াচ্ছিস কেন??”
“আম্মু আজকে চটপটি খাবো……”
“শুধু নতুন নতুন বায়না তাই না???”
“চাচ্চুও খাবে….বানিয়ে দাও…..দাও……”
“আরে শাড়ি টানছিস কেন???আরে ছাড়….কাজ করছি তো……”
“না তুমি আগে চলো…..”
“কোথায়??”
“বসাল ঘলে….”
“কাজ করছি না আমি??”
অরূপ ওর মায়ের শাড়ির আঁচল ধরে আরও জোরে জোরে টানতে লাগলো…..
“চলো,চলো,চলো……. ”
“আল্লহ্…..তোর জন্য শান্তি পাবো না আমি…….দাঁড়া একটু….”
“না আম্মু এখনি চলো…..”
“অরূপ….ওয়েট করতে বললাম না তোমায়???দাঁড়াও……”(একটু ধমক দিয়ে)
অরূপও একটু ভয় পেয়ে নরমসুরে বললো,
“ওকে…..”
রাফসা কি যেন রান্না করছিলো সেটা নামিয়ে রেখে…..ওভেনে আবার কিছু বসিয়ে দিয়ে,অরূপের হাত ধরে বললো,
“এবার চলো…….”
অরূপ আবারও মন ভুলানো একটা হাঁসি দিয়ে লাফাতে লাফাতে ওর মায়ের হাত ধরে ড্রয়িং রোমে………..!!!!!
.
অরূপ ড্রয়িং রোমে এসেই সাদাদ আর নৌশিনের মাঝখানে গিয়ে বসে পড়লো……….
“কি হয়েছে তোদের???একে বারে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে এলো…..”
“ওহ্…..ভাবী……আজকে সন্ধ্যায় একটা চটপটি পার্টি হবে বাসায়……”
“কিহ্??”
“ইয়াহ……আমাদের দাবী……এক কাজ করো জলদি করে,করে দাও না গো……”
“তোরা না!!!কত কাজ আমার…….”

ভাবী,আমারও না তোমার হাতের চটপটি টেস্ট করার খুব ইচ্ছা হয়েছে…..প্লিজ ভাবী করে দাও না……”(নৌশিন)
“আচ্ছা…..করে দিবো……তবে সন্ধ্যার পরে খেতে পারবেন….একটু টাইম লাগবে……”
নৌশিন আর অরূপ খুশিতে একে অপরকে জড়িয়ে ধরলো………..
“আস্তে…..সোফা না ভেঙে ফেলো দুজনে…….”(সাদাদ)
“ভাঙবে না….আমরা তোমার মতো এত ভারী না…..হি হি হি…..”(নৌশিন)
আবার একটা হাঁসির রোল পড়ে গেলো ড্রয়িং রোমে…..
এই ফাঁকে নৌশিন একটা সুন্দর সেলফি তুলে নিলো।
অরূপ ওর মা কে জোর করে ওদের পাশে বসিয়ে নিলো…..নৌশিন মাঝখানে তার কোলো অরূপ…এক পাশে সাদাদ আর অন্য পাশে রাফসা…….নৌশিন সাদাদের হাতে ফোন টা দিলে সাদাদ আবারও একটা দারুণ সেলফি নিয়ে নিলো…………..
!
রাফসা রান্না ঘরে চলে গেলে….অরূপ ফোন টা নিয়ে সমানে সেলফি তুলতে লাগলো…..নৌশিনকে আর সাদাদকে পাশাপাশি বসিয়ে দিয়ে ওদের ওপর শুয়ে,বসে নানা ভঙ্গিমায় পিক তুলছে অরূপ সাথে সাদাদ আর নৌশিনও তাল মিলিয়ে যাচ্ছে………..
এমন সময় রিদি অফিস থেকে বাসায় আসে,ড্রয়িং রোমে সাদাদ আর নৌশিনকে পাশাপাশি দেখেই ওর পায়ের রক্ত মাথায় উঠে যায়……তাও আবার সাদাদ নৌশিনের কাঁধের উপর হাত দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরেছে….
রিদি জাস্ট নিতে পারছিলো না দৃশ্য টা,বিশেষ করে নৌশিনের হাঁসি টা তো একদম ই না..
সাদাদ,নৌশিন কেউ খেয়াল করে নি যে রিদি এসেছে কিন্তু অরূপ ঠিকি দেখছে……আর দেখেই রিদির কাছে ছুটে যায়…
রিদি আবার অরূপকে খুব ভালোবাসে……তাই অরূপ যখন জোর করলো একসাথে পিক নেওয়ার জন্য সে আর বাঁধা দিতে পারলো না…….অরূপ রিদিকে নৌশিনের পাশে বসিয়ে ওর হাতটা নৌশিনের কাঁধে দিয়ে বললো,
“তোমলা তিন জন হাঁসো….আমি ছবি তুলে দেই….হাঁসো হাঁসো সবাই….”
কি আর করার রিদির ভেতর টা কষ্টে শেষ হয়ে গেলেও মিথ্যা একটা হাঁসি হাঁসতে হলো।।।।সে সুযোগে অরূপও পিক টা নিয়ে নিলো……….রিদিকে দেখানোর জন্য ফোন নিয়ে রিদওর পাশে বসে বলছে,
“দেখো আন্টি…..নতুন বউ আল তোমাকে সুন্দল লাগে এক সাথে বসলে…….”
“তাই????”(রিদি)
“হ্যাঁ তো…..”
সাদাদ শুধু রিদির মুখটা দেখছে আর মনে মনে মজা নিচ্ছে কারণ আর কেউ না বুঝুক সাদাদ ঠিক বুজতে পারছে যে রিদি কতটা জ্বলছে ভেতরে ভেতরে…..
“তা এই ফোন টা কার রে অরূপ??”
“এটা??”
“হ্যাঁ…..”
“এটা তো নতুন বউয়েল…..চাচ্চু গিফ্ট কলেছে……”
আবারও যেন জলন্ত আগুন কেউ তুষ ছিটিয়ে দিলো।।।।।।রিদি আর কিছু না বলে এক নজর নৌশিনকে দেখে নিয়ে মুঁচকি একটা হাঁসি দিয়ে হনহনিয়ে নিজের রোমে চলে গেলো।
নৌশিন তাঁকানো টাকে স্বাভাবিক ভাবেই নিলেওও সাদাদ মোটেও নিতে স্বাভাবিক ভাবে নিলো না।
আর কারণ টা হচ্ছে সে দিনের ছোট্ট চিরকুট….
!
“অরূপ আব্বু অনেক ছবি হয়েছে আর না…….”
“আচ্ছা….এই নাও…..”
“এই তো গুড বয়…….”
“ঐ দেখ কে এসেছে……”
“ও…..”(নৌশিন)
নৌশিন মাথায় কাপড় টেনে নিয়ে বললো,
“আব্বু…..ওযু করে আসো যাও….হুজুর এসেছে তোমার…..”
“আচ্ছা…..হুজুল….আসসালামু আলাইকুম বসুন আপনি।।।।।আমি ওযু কলে আসি………”
হুজুর সালামেরর জবাব নিয়ে বললো,
“ঠিক আছে যাও……”
একটা চৌদ্দ পনেরো বছরের ছেলে…..হাফেজ মানুষ…..সাদাদের বাড়ির পাশের মাদ্রাসা টাতেই পড়ে……..এতিমখানা বলা হয় আর কি….আর ছেলে টাও এতিম তবে আচার ব্যবহার খুবই নর্ম ভদ্র……..অরূপকে পড়ানোর বদলে ওর পড়ালেখার খরচ টা অরূপের বাবা বহন করেন।
বেশ ভালোই সর্ম্পক এ বাড়ির মানুষের সাথে।
“আসসালামু আলাইকুম কাকা…..”
সাদাদ সালামের উত্তর দিয়ে ছেলে টাকে ভালো মন্দ তার ভালো মন্দ জানতে চাইলো…….
“সে কি রহুল….দাঁড়িয়ে আছো কেন??বসো…..”(নৌশিন)
“জ্বি কাকী….বসি…..”
এর মাঝে অরূপ ওযু করে নিজের ‘কায়দা’ নিয়ে এসে পড়েছে……তাই সাদাদ আর নৌশিন ওঠে গেলো……..
রহুল অরূপকে কায়দা পড়ানো শুরু করলো….
এই বাড়িতে ইসলাম চর্চা টা বেশ ভালো ভাবে ই হয়।তাই তো সাড়ে চার বছরের একটা ছেলেকে আরবি পড়ার জন্য জোড়াজোড়ি করতে হয় না…..হুজু দেখা মাত্রই সুন্দর করে ওযু নিয়ে পড়তে বসে গেলো।
সাদাদ নিজের রোমে চলে যাওয়ার পর…..নৌশিন রান্না ঘরে গিয়ে রহুলেরর জন্য কিছু নাশতা এনে দিলো।কি জানি এতিম খানায় কিছু টাকার বদলে কি খাওয়ানো হয়!!অরূপের মা অনেক জোড় করছে ছেলেটাকে এ বাড়িতে খাওয়ার জন্য কিন্তু ছেলেটা শোনে নি…..তাই ওর খাওয়ার টাকা টা অরূপদের বাড়ি থেকেই দেওয়া হয়…..তার পর ও যখন পড়াতে আসে বাসার সবাই কিছু না কিছু খেতে দেয়।।।।।আর রহুলও জড়তা না করে সবার আবদার পূরণ করে।
…………………………
চলবে…
পুরো গল্পের লিংক
https://www.facebook.com/groups/2837664109643809/permalink/2935151703228382/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here