#প্রেম ঘোর#৪১#৪২
💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
“দেখছো সবাই যার যার রোমে চলে গেছে,এখন একা একা খেতে হবে…..”
“একা কিসের…???তোমার বর আছে না??”
“তা আছো…..তবুও সবার সাথে মজা টাই আলাদা……”
“আর আমার সাথের টা আরও আলাদা…..”
…….”কি আলাদা রে????”(রাফসা)
“ভাবী???”(নৌশিন)
“জ্বি আমি……বাবু খায় নাই….ওরে খাইয়ে শুইয়ে আসলাম কেবল….”
“আজ ডাকো নাই কেন???”
ভাবী নৌশিন কাছে এসে নৌশিনের দুগাল টেনে আদর করে বললো,
“কারণ….আমার দেবর টা আমার এই ছোট্ট বোন টা কে আদর করছিলো…..সে জন্য কাউকে ডাকতে দিই নি…..বুজলে??”
“ভাবী☺☺☺☺…..”
“হয়েছে আর লজ্জা পেতে হবে না….এমনি হয়…..”
দ্বাড়া তোদের খাবার আনছি রান্না ঘর থেকে,এখানে শুধু পড়টাই আছে……..
“☺☺☺…..”
“হেয়।।।ভাবী তুমি কেমনে জানলা গো???”
“মাইর খাবি সাদাদ….”
“বা রে জানতে চাইলাম শুধু….”
“তোর বউ যেমনে জানতেছে আমিও ওমনে……”
“কিহ্……খারাপ রে দুটো।।।।….”(নৌশিন)
ভাবী রান্না ঘর থেকে এসে,
“বদমাইশ খা তোর বউ নিয়ে……আমি থাকলে তোর ডির্স্টাব হবে….”
“আরে বুজি বুজি….কার কোনে কি হয় আমার জানা আছে??”
“এই কেমন করে কথা বলছো তুমি??? ”
“আরে….ভাবী রে জিগাও….ও কি আমার জন্য যায় নাকি ওর জন্য???”
ভাবী সাদাদের কান ধরে টেনে,”ঐ কি বলিস তুই??”
“ওহহহ…..কান ধরে না ভাবী….বিয়ে হয়ে গেছে আমার বড় হয়ে গেছি না…আর তুমি সত্যিই তোমার জন্য তাড়াতাড়ি যাচ্ছো কারণ তোমার জন্য আমার ভাই ওয়েটিং আছে…”
“সাদাদ।।।। থামবি তুই….”
“☺☺☺☺”(নৌশিন)
“ওকে সরি সরি….যাও যাও।।।।।”
“বদের দল।।।।।খা…..”
“হুম…আমরা আছি তুমি তার কাছে যাও……”
“তোরে তো……”
“আরে ঐ যে ডাকে যাও……”
“ধূর।।।শয়তান।।তোর সাথে থাকলে……! মর তুই…..”
“😆😆😆😆😆”
!
ভাবী চলে যাওয়ার পর,
“কি ব্যাপার খাও……”(সাদাদ)
“এই তো……..”
নৌশিন এক লোকমা ভাত মুখে নিয়ে আবার প্লেটেই ফেলে দিলো……
“আহহ।।।।ও মা গো…….”
“কি হলো???”
নৌশিন তাড়াতাড়ি পানি খেয়ে নেয়……
“কি হলো মানে???এত্ত ঝাল……”
“ওহ😆😃😃 ।।।।।।।”
“এই তুমি হাঁসছো তাই না।।।এর পেছনে তোমার হাত আছে…..বদ একটা।।।।”
“আমি কি করলাম আবার??”
“কি করলাম আবার!!!ইইই কেমন করে কামড় দিছো আমার কেঁটে গেছে তাই এমন ঝাল লাগছে…..হু হু খেতে পারতেছি না…খাবার দিলেই ঠোঁটে ঝাল লাগে….”
“সরি সরি।।।আর হাঁসবো না….তাহলে ভাত খাবা না নাকি???”
“না…..”
“আচ্ছা,বাবু পড়টা খাও প্লিজ…..”
“পড়টা ভাল লাগে না…..”
সাদাদ নৌশিনের কাছে এসে বসে,
“বাবু,ওকে পড়টা খেতে হবে না,আমিই ভাত খাইয়ে দিচ্ছি….”
“ঝাল তো…..”
“আমি খাইয়ে দিচ্ছি তো…..”
“ওকে…..”
“বড় করে হা করো নাহলে ঝাল লাগবে….. ”
“হুম….”
সাদাদ নৌশিনকে এমনভাবে খাইয়ে দিচ্ছি যেন তরকারী ঠোঁটে না লাগে,,,,,,কিন্তু ভুল তো হবেই সাদাদ নৌশিনের চোখের দিকে তাঁকিয়ে থাকতে থাকতে বেশি রমক তরকারী নিয়ে ওর মুখে দিতে গিয়ে ঠোঁটে লেপ্টে দেয়………
“ওহ মা।।।।।ঝাল।। আ হ হু আ হ হু হা…….”
সাদাদ নৌশিনের ঠোঁট দেখে ভালোই বুজতে পারছে কাহিনীটা…….তাই আর এক মুহুর্তও দেরী না করে নৌশুনের ঘাড়ে হাত রেখে নিজের দিকে আরও একটু আগিয়ে নিলো-আরও কাছে গিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিয়েছে…..ঘটনা টা এতো টাই তাড়াতাড়ি হয়েছে নৌশিনের হয়তো বুঝতে একটু সময় লেগেছে…….
সাদাদ শুষে নিচ্ছে নৌশিনের সমস্ত ঝাল,
দুজনেরই চোখ বন্ধ,
ঝাল-মিষ্টি ভালোবাসায় হারিয়ে গেছে দুজনে,সাদাদ এমন ভাবে নৌশিনের ঠোঁট আর ঠোঁটের আশেপাশে জিহ্বার লেহন দিচ্ছে ঝাল না কমে উপায় নাকি!!!!!এতো মিষ্টির কাছে এই একটু ঝাল যে ঠুনকো একটা ব্যাপার…………
সাদাদ ছেড়ে দেয় নৌশিনকে,অনেকটা সময় পাড় হয়ে গিয়েছিলো,দুজনেই হাপাচ্ছে,নৌশিন সাদাদের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাঁকাতেই সাদাদ নিজের ঠোঁটে একটা কামড় বসিয়ে নৌশিনকে একটা চোখ মেরে দেয়,,,,
লজ্জা পেয়ে যায় নৌশিন।।
“ধ্যাত…..”মুখে লাজুক একটা হাঁসি টেনে দৌঁড়ে নিজের রোমে চলে যায়।
সাদাদ নিজেও ব্লাশিং হয়ে হাঁসতে থাকে,সে ও আর দেরী না করে রোমে চলে গেলো।……………
!
সাদাদ গিয়ে দেখে নৌশিন অলরেডি শুয়ে আছে,সে নৌশিনের পাশে শুয়ে পড়ে….এক হাতে মাথা রেখে একটু উঁচু হয়ে নৌশিনের মুখের দিকে তাঁকিয়ে মুচকি হাঁসছে সে,
“কি ব্যাপার ম্যাডাম,ঘুমিয়ে গেলেন নাকি???”
নৌশিন ফিরে তাঁকায় সাদাদের দিকে,মাথা নেড়ে না জানায়………
“তাহলে???”
“কি???”
এতো লজ্জা পেলে যে,এতো পেলে নিজেকে ধরে রাখতে কষ্ট হয় তো…
নৌশিন একটা ভেঙচি কেঁটে বলে,
“ইশশশশ….ঢং…..”
সাদাদ নৌশিনের কাছে গিয়ে বলে,
“ঢং মানে??”
“কিছু না….সরো আমি ঘুমাবো…..তুমি একটা লুচু,খুব খারাপ,আমার সারা শরীর ব্যাথা করছে,উরুতে কি ব্যাথা দিছো এখন খুব ব্যাথা করছে,আমার কাছে আসবে না একদম…..”
সাদাদ নৌশিনকে জড়িয়ে ধরে বলছে,
“সোনামনি,ব্যাথা যে আমায় ভুলতে দিবে না তোমাকে…….”
“আমি তোমায় এমনিই মনে রাখি আর রাখবো…….”
“তারপরও আমার এতো সুন্দরী বউ টাকে আদর না করলে যে আমার ভালো লাগে না…….”
“হুম হয়েছে….থাক…আর বলতে হবে না……”
“আচ্ছা!থাক আর কিছু বলছি না…..আয় আমার বুকে আয়………”
সাদাদ নৌশিনকে ছেড়ে দিয়ে স্বাভাবিকে শুয়ে পড়ে,
সাদাদের ডাকে নৌশিনও এক মুহুর্ত দেরী না করে সাদাদের বুকে মাথা রাখে,
সাদাদ নৌশিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,
“বেশি ব্যাথা লাগছে?”
“নাহ্……”
“তাহলে চলো নামায টা পড়ে ঘুমাই??..হুম??”
“সত্যিই তো আমার খেয়াল ই ছিলো না যে আমি নামায পড়ি নি…..”
“আচ্ছা!ব্যাপার না ১১.০৪ এখনো পড়া যাবে….চলো দুজনে এক সাথে পড়ি….”
“হুম….সিউর……”
দুজনে উঠে একসাথে উযু করে এশার নামায টা আদায় করে নিলো।
!
এরপর সাদাদ শুয়ে পড়ে আর নৌশিন আয়নার সামনে বসে কি যেন দেখছে,
“এই রাতের বেলা এখন আয়না সামনে কি করো তুমি??”
“হু…..?”
“বললাম,আয়নার সামনে কি??”
“সাদাদ আমার মুখে ব্রণ উঠবে মে বি….কেমন একটু ফুসকো ফুসকো দেখা যাচ্ছে…….”
“ব্যাপার না হলে হোক……”
“মানে???পঁচা দেখা যাবে তো……”
“আরে লাগুক না…..তোমার তো বিয়ে হয়ে গেছে এখন পঁচা/সুন্দর এগুলো যায় আসে না,আমিই তো দেখবো….”
“কিহ্???পঁচা দেখা গেলে তুমিই আর কাছে আসবে না…….বুজলা?যদিও আমি সুন্দর না তারপরও তোমার মতো ছেলে আমার হাসবেন্ড আর এরপর যদি ব্রণ উঠে মুখ টা নষ্ট হয় তাহলে তো??”
সাদাদ এতক্ষণে উঠে নৌশিনের পাশে গিয়ে বসে,”থাপ্পর চিনো??”
“মানে??আমি আবার কি করলাম??”
“এই যে বললা…পঁচা দেখতে হলে কাছে আসবো না….”
“তাই তো…..”
“মেজাজ টা গরম করবে না একদম…..আমি তোমার রূপে মাতাল না তোমাতে মাতাল….মাইন্ড ইট।।।।আর ব্রণ উঠলে আমারি সুবিধা……সো আমি দোয়া করি ব্রণ উঠুক…….”
“এ মা।।।।।কি বর তুমি???বউয়ের মুখে ব্রণ উঠার জন্য দোয়া করছো!!!”
“আরে ব্রণ উঠলে প্রতিটা ব্রণে আমি কিস করবো….ভাবতে পারছে কি ফিলিং!!”
“ছিঃ…..ব্রণে কিস!!!এই তোমার এগুলো ঘৃণা লাগে না??”
“না…লাগে না…..আর শোনো তোমার এখন সেই রকম কোনো ব্রণ হবে না মুখে কারণ যে বয়সে ব্রণ হয় সেটা পাড় হয়ে গেছে এখন হলেও দু একটা সো টেনশনের কিছু নেই……..
হাহ্(একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে)আফসোস!!”
“আফসোস????তুমি পাগল হয়ে গেছো???”
“ইয়াহ্….আফসোস…..আর আমি অল টাইম তোমার জন্য পাগল……”
“তা বুজলাম….বাট আফসোস টা কিসের জন্য শুনি?”
“এই যে যদি সারা মুখে ছোট ছোট ব্রণ হতো তো আমি প্রতিটা ব্রণে চুমু দিয়ে ভরিয়ে দিতাম….অবশ্য তোমার ব্রণগুলো লজ্জা পেতো খুব…..তা ছাড়া যদি সারা মুখে ব্রণ হয় আমার বউটার দিকে লোকে নজর দিবে কম….আমার জিনিস টাকে আমি ই নজর দিতাম শুধু……কিন্তু সেটা আর সম্ভব না পনেরো গেলো,ষোল গেলো ব্রণ উঠে নি এখন বাইশে এসে হবে না………তাই আফসোস লাগতেছে আমার…….”
নৌশিন হেঁসে ফেলে সাদাদের কথায়!কেমন পাগল ছেলে টা বলে কি না,উঠুক ব্রণ……..!!হায় রে ভালোবাসা…..💜💜….আপনারাও দোয়া করুন যেন সাদাদ এমনি করেই সারা জীবন নৌশিনকে ভালোবেসে যায়।
!
নৌশিন সাদাদের উরুতে একটা ঘুষি দিয়ে বলে,
“সাদাদ!তুমি না পারোও বটে বুজলা……..”
“হয়েছে,চলো এবার আয়নার সামনে থেকে,ব্রণ হয়ে হোক……আমার সুবিধা হবে….চলো….. ”
“আরে দাঁড়াও…..চুল টা ভেজা ঠিক করি একটু….”
“তাড়াতাড়ি করো না রে,আমার ঘুম পাচ্ছে….”
“তো??ঘুমাও গিয়ে…..আমি আসছি।।।।”
“আজাইরা…..”
“মানে কি???কিসব বলো??”
“আরে বুকে মাথা না রাখলে বুকটা খালি খালি লাগে বাল।।।।চল তো…..”
“উফফফ…দু মিনিট দাও…..”
“লাগে না আমার দু মিনিট তুই চল……”
সাদাদ নৌশিনকে আয়নার সামনে থেকে টেনে নিয়ে খাটে নিয়ে জোর করে শুইয়ে দেয়………
“কি হলো এটা???চুল টাও ঠিক করতে দিলা না…..ভাবলাম একটু ক্রিম লাগাবো সেটাও হলো না তোমার জন্য……”
“আরে লাগবে না এতো কিছু।।।চুল তো ভেজাই মেলে দিলেই হলো….আর ক্রমি ট্রিমের দরকার নেই….আমি তো চেয়েছিলাম একটা কালো বউ…..”
“মানে???কালো বউ চেয়েছিলে??তার মানে কি আমাকে পেয়ে হ্যাপী হও নি??আমি তো শ্যামা একটু আবার একটু ফর্সাও…..”
“আরে তা না।।।।।কালো বউয়ের সুবিধা অনেক….”
“যেমন??”
“ফার্স্ট অফ অল….লোকের নজর লাগে কম,আর আমার কাছে কি মনে হয় জানো?”
“কি??”
সাদাদ নৌশিনের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলছে,
“বেশি আদর করলে যে দাগ টা হয় কালো বউয়ের শরীরে সেটা বুজা যায় না…..”
নৌশিন সাদাদের কথায় হাঁসবে নাকি রাগ করবে বুজতে পারছে না।বরাবরের মতোই হাঁসি টাকেই বেছে নিলো।
“সাদাদ তুমি না আসলেই….”
“হুম…..তাই তুমি আর একটু কালো হলে,বেশি বেশি আদর করতাম তাহলে দাগ হলেও কেউ দেখতো না….দেখলে না বউ ভাতের দিন গলায়!মেজাজ টাই চটে গিয়েছিলো,কোথায় বউকে একটু নিজের মতো আদর করবো তার উপর নেই….কারণ বউ সুন্দরী-দাগ হয়ে যায়….লাল,কালো রং লেগে যায়…….. ”
নৌশিনের হাঁসি থামছে না সাদাদের কথা গুলো শুনে….
“ঔ মাইয়া হাঁসবি না…..কালো হইতে পারিস নাই??ফর্সা হইতে কে বলছে তোরে???”
নৌশিনের নিজের হাঁসি থামাতে পারছে,শুয়া থেকে উঠে বসে বেচারী হাঁসতে হাঁসতে…………
“ও…. মা গো…..আর হাঁসিও না প্লিজ।।ওহ….😃😃😃😃পেট ব্যাথা হয়ে যাচ্ছে হাঁসতে হাঁসতে…….”
সাদাদও উঠে নৌশিনের পাশে বসলো,একটু রাগ দেখিয়ে বলে,
“এখানে হাঁসার কি আছে??আসলেই মাইয়া মানুষ না!!!তাই এই অবস্থা……”
নৌশিন হাঁসি জাস্ট দেখার মতো……..”মাইয়া মানুষ আবার কি করলো তোমাকে??”
“হাঁসতে না বলছি কিন্তু…..”
“ওকে ওকে হাঁসবো না…..”
“গুড….তুমি যদি কালো হতে বলো তো কি সুন্দর লাগতো তোমায়…… ইশশশ জাস্ট কালো পরী…..”
“কি????পরী আবার কালোও হয়??ভাই তোমার পায়ে পড়ি,আর হাঁসির কথা বইলো না…….”
“ঐ আমার কথা হাঁসির মনে হচ্ছে তোমার….???”
“না না,,,তা না তবে তুমিই ভাবো কি বলছো তুমি……”
“আচ্ছা বাদ দাও…..”
“ওকে দিলাম…..”
“না রে জান,তুমি একটু কালো হলেই বেশি সুন্দর হতো-‘কেশবতী কালানী’টাকে বেশ লাগতো…….আর আমি জোরে কিস করলেও লাল,কালো ছাপ পড়তো না এমনি তো আমাকে তোমার মুখে কিস করতে গেলে একটু কন্ট্রোল নিয়ে করতে হয় যদি দাগ হয়ে যায় তাহলে তো আবার লজ্জা পাবে তুমি,অবশ্য আমিও হাঁসির পাত্র হবো…..আর গলাতে কিস করতে গেলেও এই ভয় নিয়েই করতে হয়…….”
নৌশিন সাদাদের দিকে হা করে তাঁকিয়ে আছে,হাঁসি আসছে খুব তবুও আটকে রেখেছে………সাদাদের মাঝ রাতে এই উল্টা পাল্টা বকবক বন্ধ করতে বলে ফেললো,
“আচ্ছা,ঠিক আছে এখন তো আর কালো হওয়া সম্ভব না…..আর আমি তো ফুল ব্যান দিয়েই বেশি জামা পড়ি….তাহলে কাল থেকে না হয় সব জামা ই ফুল ব্যান গলার পড়বো তোমার যত খুশি আদর করো তাহলে দাগ পড়লেও কেউ দেখবে না……..হয়েছে এবার????”
“এই সত্যি????”
“সাদাদ এবার কিন্তু খামচি খাবে তুমি….কি শুরু করছো এতো রাতে….এতোই কালো মেয়ের শখ তো আমাকে বিয়ে করলে কেন কালো মেয়ের কি অভাব ছিলো???”
“কালো ই খুঁজতেছিলাম মাঝখানে তুমি এসে মন চুরি করলে…….চুন্নী একটা….”
“কি তুমি…..বাচ্চাদের মতো কিসের চুন্নী চুন্নী শুরু করছো…..আজব!!”
“বেশ করেছি!চুন্নী কোথাকার।।।। ”
“আমি চুন্নী হলে তুমি চুর…..”
“হপপপপ……”
“কি খারাপ রে……”
“এই শোনো না……”
“কি বলো…এই বললা ঘুম পাইছে জোর করে টেনে আনলা এখন কি শুরু করছো…..”
“ওকে বলবো না…..”
“আজব তো…..!!”
“বলো শুনছি তো….”
“না তুমি বিরক্ত হচ্ছো…..”
“না আমি বিরক্ত কেন হবো….তুমি বলো…”
“ওকে,…..”
“হুম…বলো….”
“বলছি যে শুধু ফুল ব্যান গলাই ইউজ করবে কেন,মুখে এটকু কালো মেকাপ করো আমি দেখতাম আর কি আমার ‘কেশবতী কালানী’কে কতটা মিষ্টি লাগে……যদিও এমনিতেও দেখতে হুর পরী।।।।।আমি একটু কালো হুর দেখবো….. ”
নৌশিন একটু বিরক্ত হয়ে পড়ে….কি শুরু করছে কখন থেকে আপনারাই বলুন,বিরক্ত হওয়ার ই তো কথা???।।।।।।।।
“সাদাদ……!!!তুমি না…..আসলেই….”
“এই বিরক্ত হয় না জান……শুনো না প্রতিদিন কালো সাজতে হবে না,কাল সেজো,দেখবো জাস্ট…….”
“কি????মানুষ মেকাপ করে সুন্দর হওয়ার জন্য আর আমি কালো সাজবো???”
“ভুল বললে তুমি…..মানুষ সুন্দর হওয়ার জন্য মেকাপ করে না,করে ফর্সা হওয়ার জন্য…….ফর্সা হলেই সুন্দর হয় না…….কালো ও সুন্দর…..আর সত্য মহা সুন্দর-হোক সে সত্য কালো বা সাদাদ….এই যে তুমি ফর্সা রং এর তোমাকে সবচেয়ে এভাবেই সুন্দর লাগে কারণ এটা তোমার সত্যরূপ,সাজলে সেটা অন্য রকম বাট নেচারাল টা বেশি সুন্দর।।।।তেমনি কালো যাদের গায়ের রং বা বেশি সাদা প্রাপ্তির মতো ওরাও ঔভাবেই সুন্দর।।।।কিন্তু আমি আমার বউ টাকে কালো করে দেখতে চাই….তাতে আমার বউকে অনেক টা মিষ্টি লাগবে আমি কল্পনা করতে পারছি…..”
“কালোও সুন্দর হয় আমি জানি……বাট কালো সাজবো কি করে আমি?…”
“কেন মানুষ ফর্সা সাজে যে ভাবে…..”
“ওফপ,,সাদাদ নরমাল মেকাপগুলোতে সাদা ফ্যাস প্যাক থাকে,কালো যে রং টা থাকে সেটা চোখে দেওয়ার জন্য সেটা মুখে কি করে মাখবো আমি…..”
“ওকে,আমি কাল ই এক্সটা একটা মেকাপ এনে দিবো যেখানে কালো ফ্যাস প্যাক থাকবে……তাহলে সাজবে তো??”
“কি বাচ্চামি শুরু করছো এতো রাতে??”
“ও তারমানে সাজবে না তাই তো??ওকে বাদ দাও সাজতে হবে না….”
“আরে রাগ করার কি হলো!আমি কখন না করলাম য সাজবো না??”
“সাজতে হবে না……”
“আমি সাজবো……”
“না বললাম না…….”
নৌশিন সাদাদের দিকে ফিরে বুকে আস্তে করে দুটো কিল দিয়ে বলে,
“আমি বললাম না আমি সাজবো…….”
“কি বেয়াদপ বউ……”
“আমি বেয়াদপ????এটা বলতে পারলে তুমি??”
“ইয়েস লেডি…..হাসবেন্ডের গায়ে হাত দিলে তাকে বেয়াদপ ই বলা হয়……”
“আচ্ছা!তাই না…..তাহলে আমি বেয়াদপ ই থাকবো সারা জীবন……..” আবারও সাদাদকে ঘুষি দিতে থাকে………..
“আরে থামো….বুক টা কি সরকারী নাকি???মাথা রাখবে,শুবে আবার যখন খুশি মারবে???”
“আমার হাসবেন্ডের বুকে আমি যা খুশি করবো আমার ইচ্ছা…..দরকার পরলে সারা দিন ঘুষি দিবো….”
সাদাদ নৌশিনের হাত দুটো ধরে কাছে এনে বলে,
“আচ্ছা!তাহলে তো আমিও আমার বউয়ের বুকে যা খুশি করতে পারি……..”
নৌশিন এক ঝাটকায় সাদাদের থেকে হাত ছাড়িয়ে একটু দূরে গিয়ে বসে,
“উম হু উম হু…….আমি এমনিই ব্যাথা পাই…….আর তোমার যা লোহার মতো হাত এক ঘুষি দিলে আমার হার্ট বিট বন্ধ হয়ে যাবে-আর আমি তো ডিরেক্ট আমার দাদুর কাছে চলে যাবো…..”
সাদাদ নৌশিনের গায়ে হেলান দিয়ে বসে,
“জান,আমি ঘুষি দিবো না তো……আমি তো….”
“চুপপ,,,খারাপ…..লজ্জা নাই একদম তোমার কও সব করো তুমি….ছিঃ……”
“তাই???কি সব করি আমি??”
“যাও….তো…..বেশি বেশি…..”
“এই প্লিজ লজ্জা পেও না তাহলে আাবর কিন্তু…….”
“ইশশশশ,আবার কিন্তু….হবে না কিছু ঘুমাও তো……”
“জান রিয়েলি বলছি ইউ আর সো সফ্ট আর তোমার সে জায়গার কথা তো বাদ ই দিলাম।।।।।তোমার যৌবন জ্বলে পুড়ে মরছে এই যুবক টা।।।।।”
নৌশিন ভ্রু কুঁচকে বলে,
“সে জায়গা মানে??”
“সব বলতে হয় নাকি??”
“বলো শুনি….”
“মহারানী আমার বাচ্চারা যা খাবে…….হা হা হা হা”
নৌশিন সাদাদের হাতে জোরে একটা খামচি দিয়ে,
“কি খারাপ…..বেশরম একটা……”
“ঠিক তাই……”
“ছিঃ…….সরো তো……”
নৌশিন উঠে যেতে নিলে সাদাদ ওকে টান দিয়ে বুকে নিয়ে সাথে সাথে শুয়ে পরে,
নৌশিনের মাথা বুকে চেপে ধরে গান শুরু করে,
“যৌবন জ্বালা বাড়াইয়ো না শখী,বাইধা রাখতে পারবা না……….”
“কিহ…..সাদাদ কি সব খারাপ গান এগুলো??”
“আরে আমি আমার বউকে বলছি…….আমার বউয়ের সব সৌন্দর্যের প্রশংসা করার অধিকার আছে আমার…….”
“হুম…..ছাই আছে……”
“আছেই তো…….আমার ছুয়াতে যেমন তোমার সবকিছুতে আগুন ধরে যায় আবার আমার কারণেই সব আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়…….”
“ওফফ….কার পাল্লায় পরলাম আমি???পাগল না অন্য কিছু…..কখন থেকে কি বকবল করছো..???এখনি এতো উল্টা পাল্টা পেঁচাল তোমার না জানি বুড়ো হলে কি হাল করো আমার কানের।।”
“আরে টেনশন নিও না…..বুড়ো আর হবো না আমি দাদার মতো পঁয়ত্রিশেই পরপারে…….”
কথা টা শেষ করতে দিলো না নৌশিন সাথে সাথে সাদাদের মুখে হাত চেঁপে ধরে,নৌশিনের চোখ দুটো ছলছল করছে,মনে হয় পলক পড়লেই নোনা জল গড়িয়ে পড়বে……………
“চুপ,অনেকক্ষণ ধরে সহ্য করছি……তাই বলে সব কথা সহ্য করবো না কিন্তু……”
সাদাদ নৌশিনের হাত টা মুখ থেকে সরিয়ে দিয়ে,নৌশিনকে ভালোভাবে আকড়ে নিয়ে বলছে,
“শোনো গল্পটা,দাদা মারা গেছে পঁচত্রিশে আমারও মনে হয় আমি সে সময়ে…..”
নৌশিন এমনভাবে কান্না শুরু করে দিলো সাদাদ আর ঐ অলক্ষ্মী মার্কা কথাটা বলতে পারলো না…………নৌশিন সাদাদের বুকে শুয়ে থেকে ওকে এমনভাবে আকড়ে ধরেছে মন হয় ছেড়ে দিলেই পালাবে এমন একটা ভাব………….
“সাদাদ প্লিজ,,,,আই কান্ট টোলারেট দিস………”
সাদাদ আসলে একটু মজা নেওয়ার জন্যই বলছিলো এসব কথা,কিন্তু ভালোবাসার মানুষগুলোর যে সব মজা সহ্য হলেও এগুলো সহ্য হয় না…….
সাদাদ নৌশিনের কান্না থামাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে,
“আমি মজা করছিলাম জান…….দেখি মুখ তুলো দেখি……এই পাগলী আমি কি সত্যিই মারা গেছি নাকি যে এভাবে কান্না করতেছো??….”
নৌশিন সাদাদের বুক থেকে মাথা তুলে সাদাদের দিকে কান্না মিশ্রিত চোখে তাঁকিয়ে বলে,
“কি ভেবেছো কি তুমি???না করছি না আমি……কানে যায় না আমার কথা???মরার খুব শখ তোমার তাই না???ও হবেই না কেন আমি তো খুব খারাপ মেয়ে তাই আমাকে যেন সহ্য করতে না হয় তাই এইসব চিন্তা আসে তোমার মাথায়…..”কাঁন্নার চোটে হিঁচকি পাড়তে পাড়তে এলটানে শুনিয়ে দিলো সাদাদকে………….
সাদাদ নৌশিনকে আবারও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,
“জান,উমমম্মা…..সরি,আর হবে না…….”
নৌশিন সাদাদের বুকে মুখ রেখে যেন কান্নার মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিলো….
“সরি তো….আর বলবো না…..আর কি বল তো বুড়ো টা তো কলেরায় মারা গেছে আমাকে কি তুমি নরমাল কলেরায় মরতে দিবে নাকি!!তা ছাড়া বাবার বয়স এখন সত্তরের কাছাকাছি বাবা এখনও দিব্বি ঘুরে বেড়ায়…..আমি মনে হয় আশিতেও তোমাকে নিয়ে ঘুরে বেড়াবো……”
“মজা তাই না খুব মজা তোমার???কাঁদাতে ভালো লাগে তো আমায়……”
“একদম না জান…….তা ছাড়া আমি মরলে আমার জান টাকে আদর করবে কে??আর এভাবে জ্বালাবেই বা কে???”
“সাদাদ আবার এক কথা???”(কান্না করতে করতে)
“ওকে,আর বলছি না……কান্না থামাও প্লিজ…..”
“খুব খারাপ তুমি।।।।।সত্যিই খুব খারাপ…….”
সাদাদ নৌশিনের চোখের পানি মুছে দিয়ে-অরূপের মতো করে নৌশিনের গাল দুটো জোরে টেনে টেনে বলে,
“আসলেই সত্যিই তুমি এই খারাপটার কিউট,মিষ্টি,অনেক ভালো একটা বউ…….আই লাভ ইউ সোনা বউ…..”
সাদাদ বাচ্চাদের মতো গাল টানাতে নৌশুন চোখে পানি রেখেই মুখে একটা হাঁসি ফুটিয়ে তুলে,”বদমাইশ…”
সাদাদও হেঁসে দিয়ে নৌশিনকে নিজের বুকের উপর নিয়ে জড়িয়ে ধরে কপালে ভালবাসার পর এঁকে দেয়……”বদমাইশের বউ”
দুজনেই জোরে হাঁসি দিয়ে একে অপরকে শক্ত আকড়ে নিয়ে কখন ঘুমিয়ে গেলো ওরাও মনে হয় বলতে পারবে না।
…………….
এতটাই শান্তির ঘুম হয়েছে ওদের এক ঘুমেই ভোর।
নৌশিনের রোজ মাঝ রাতে ঘুম ভাঙলেও আজ একবারও ভাঙে নি,আর নৌশিন তো রাতে ঘুমের মধ্যে সেই রকম নাচানাচি করে কিন্তু আজ ও নিজেকে সে ভাবেই পেয়েছে যে ভাবে রাতে সাদাদের বুকের উপর শুয়ে ছিলো………….সাদাদের ঘুম তখনও ভাঙে নি,নৌশিন আযানের শব্দে জেগে গেছে অবশ্য মুখ তুলে দেখে সাদাদ ওকে খুব শক্ত করে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে রেখেছে মূলত সাদাদের এমনভাবে জড়িয়ে ধরাতেই নৌশিন ঘুমের মধ্যে নাচানাচি করতে পারে নি আজ….
সাদাদের মুখের দিকে তাঁকিয়ে নৌশিন মিষ্টি একটা হাঁসি দিয়ে…সাদাদ উপর থেকে ওর এলোমলো সব চুল সরিয়ে নিলো……..
তারপর সাদাদ চুলগুলো আতলো করে ছুয়ে দিলো,
দাঁড়িগুলোতে স্লাডিং করে মুচকি একটা হাঁসি দিয়ে একপাশে আলতো করে চুমু এঁকে দিয়ে উঠে পড়তে চাইলে পারে না,সাদাদ ঘুমের মাঝেও ওকে শক্ত দু হাতে শক্ত করে জড়িয়ে রেখেছে………..
“এই…….ঘুম পাগল…..”
সাদাদ ঘুমে…..ফজরের নামায পড়ার জন্য কত এলার্ম দিয়ে রাখতো বেচারা তবুও সকাল বেলা উঠতে পারতো না আর সেই মানুষ কি না এই একটু ডাকে ভোর পাঁচটায় উঠে যাবে??।।।।।।।!!!!!নৌশিন আবার ডাকে,
“সাদাদ উঠো,আযান দিয়ে দিয়েছে….নামায পড়বে না?”
সাদাদ বিভোরে ঘুমাচ্ছে এখনও……..
নৌশিন জানে এতো সকালে সাদাদের ঘুম ভাঙানো একটু খাটাখাটনির ব্যাপার তাই কি করার ডাকতে থাকে সাদাদকে……..এট লিস্ট নামাযের জন্য তো উঠাতে হবে না হলে বরাবরের মতো সাড়ে সাত টায় ই ওর ঘুম ভাঙবে………..”সাদাদ,আর কত ঘুমাবে???উঠো……”
নৌশিন সাদাদের গালে হাত দিয়ে নাড়িয়ে ওকে বারবার,তবুও উঠার নাম নেই….আর উঠবেই বা কি করে নৌশিন যেভাবে গালে নাড়া দিচ্ছে মনে হয় জোরে দিলে ওর সাদাদ ব্যাথা পাবে……….
!হু এভাবে দিলে ঘুম আরও গভীর হবে আরও জোরে ডাকতে হবে গো….জোরে ধাক্কা দিতে হবে……!
নৌশিন নিজের গলার সাউন্ড টা আর একটু বাড়িয়ে ডাক দিলো,
“সাহেব,শুনছেন????….উঠুন……ওরে….বুজেছি এভাবে ডাকলে হবে না……”
নৌশিন একটু শক্তি খাটিয়ে জোরে সোরে নড়ে উঠতে চাইলো সাদাদের থেকে,
সাদাদ এবার নড়ে উঠে নৌশিনকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,ঘুমেরর মাঝেই বলে,”কোথায় যাবে এতো রাতে??ঘুমাও…..”
এই সুযোগে নৌশিন সাদাদকে উঠাতে জোরে জোরে কথা বলতে শুরু করে,ঘুমন্ত মানুষকে আসলে এতো জোরে ডাকতেও হয় না তাই নৌশিন আস্তে করেই ডাকছিলো….অনেকে ঘুম ভাঙানোর জন্য চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে ডাকে এটা ঠিক না এতে মস্তিকের ক্ষতি হয়….
যেহেতু সাদাদ কথা বলেছে তার মানে ওর ঘুম একটু হলেও ভেঙেছে তাই এখন জোরে আওয়াজ করাই যায়…..”সাদাদ রাত না,সকাল এটা….কখন থেকে ডাকছি তোমায়…….”
“উহমমমম…..”
“কি বলো বুজছি না তো…..”
“কত বাজে????”……ঘুমস্বরে বলায় নৌশিন সাদাদের এই কথাটাও বুজতে পারলো না……..
“কি বলো??ভালোভাবে বলো…….”
সাদাদ চোখ মেলে তাঁকায়,
একটু গলা টা ঠিক করে বলে, “কত বাজে???”
“ও…….পাঁচটার বেশি হয়তো….আযান তো পাঁচটার দিকেই দেয় এখন…..”
“ও……”
“হুম….উঠো….নামাযে যাবে না??”
“যাই……”
“তাহলে উঠো……..”
“উমমমমম”বলেই সাদাদ নৌশিনকে চেপে ধরে নিজের বুকে আর একটুর জন্য নৌশিন সাদাদের ভেতরে যাওয়া বাকী…..
“ওহু…এতো জোরে ধরে নাকি মানুষ???দম আটকে যাবে তো আমার…..”
“তাই!আর আমি যে সারা রাত বুকের উপর রাখলাম তার বেলা??রাতে তো ফুটবল খেলো তুমি!কোনো রকমে ঠিক ঠাক করে বুকে আটকে রেখেছিলাম আর কি…..”
“আচ্ছা,সারা রাত এভাবে বুকের উপর ছিলাম ভার লাগে নি তোমার?আই মিন কষ্ট হয় নি….?”
“ভালোবাসার মানুষকে বুকে রাখতে কষ্ট হয় না জান…….তাছাড়া তুমি খুব হলে চল্লিশ কেজি হবে তাই মনে হয়েছে এক টুকরা তুলো পড়ে আছে আমার উপর…….বাট লাফালাফি করছো সেই লেভেলের…..হা হা হা আমার কিউট বউটা রাতের বেলার ফুটবলার হয়ে যায়……”
নৌশিন কিছু না বলে হঠাৎ সাদাদের গায়ে হাত দিয়ে সালাম করে………সাদাদ অবাক হয়ে বলেে,”আরে???”
“লাথি লাগছে নিশ্চয় তোমার গায়ে??তাই সালাম করলাম…..”
“ধুর,লাগতেই পারে,তুমি যদি ভালোবাসতে পারো তাহলে কিছু লাথিও দিতো পারো…..”
“না না আমি আর ঘুমাবো না তোমার উপর,পাশে ঘুমালেই লাথি দিই আর উপরে ঘুমালে মে বি আরও বেশি দিই……..কাল থেকে পাশেই শুবো শুধু ঘুমানোর আগে বুকে মাথা রাখবো…..”
“সোনা বউ আমার,ঘুমের মাঝে লাথি কোনো ব্যাপার না সো আমি চাই তুমি আমার উপর ঘুমাও…..আমার ঘুম টা আজকে বেস্ট হয়েছে কারণ আমার প্রাণপাখিটা আমার বুকে ঘুমিয়েছিলো…..”
“ইশ…।রোজ রোজ বুকে এভাবে ঘুমালে তোমার কষ্ট হবে….তার চেয়ে আমি বুকে মাথা রেখে ঘুমাবো তাই ভালো…..”
“আচ্ছা!সেটা পরে দেখা যাবে…….”
“হুম এখন উঠো….তা না হলে মসজিদে জামায়াত পাবে না……..”
“হুম….উঠছি…..তার আগে একটু আদর করে নিই……”
নৌশিনকে কোনো কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সাদাদ উল্টো হয়ে যায় যার ফলে নৌশিন নিচে আর সাদাদ উপরে……….
“ও মা গো……কি তুমি???এভাবে কেউ হঠাৎ করে……”
কথাটা শেষ না হতেই সাদাদ নৌশিনের ঠোঁটে আতলো করে একটা চুমু খায়……ভালোই লাগে নৌশিনের…….সাদাদ নৌশিনের দুগালে,কপালে আতলো করে চুমু দিয়ে দিলো…….নৌশিনের মুখের দিকে তাঁকাতেই মুচকি হাঁসে সে…………
“জান,শুধু হাঁসলে চলবে আমাকেও একটা কিছু দাও…….!!”
নৌশিন একবারও আপত্তি জানালে না,জানানোর প্রয়োজনও মনে করে না সে……তার ভালো লাগে নিজের স্বামীকে ভালোবাসতে তাই সাদাদের গালে একটু স্লাইড করে গভীর ভাবে একটা চুমু দিয়ে দেয়………
“আহহহ…..সো সোইট….আচ্ছা!তুমি এতো সফ্ট কেন???”
“তুমি এতো হার্ড তাই……”
“আচ্ছা???”
“হুম….”
“তা সফ্ট কুইন….এই হার্ড মানুষের এখানে(ঠোঁটে)একটু ছুঁয়া দিন না……দিলে দিন টা ভালো যেতে বোধহয়…..আ কষ্ট করতে হবে না জাস্ট ছুঁইয়ে দিলেই হতো!!যদি মহারাণীর একটু মায়া হয়….তাহলে…..”
নৌশিন চুমু বসিয়ে দিয়েছে সাদাদের ঠোঁটে,আলতো করে একটা দিয়ে দিতেই আবার নিজেই গভীর ভাবে একটা চুমু খেলো………
“ও আল্লাহ্……অনেক শুকরিয়া তোমার দরবারে…আমার গোলাপীপাপড়ী দুটো চুমু দিলো লিপে……রোজ যেন দেয়……”
“ধ্যাত উঠো এখন…..”
“হুম…এবার উঠতেই হবে…..”
……দুজনেই উঠে হাত মুখ ধুয়ে নিলো…..নৌশিন সাদাদকে নামাযের জন্য পাঠিয়ে দিয়ে ওযু করে নিজেও নামায টা পড়ে নেয়……অভ্যাসবসত ই নামাযের পর গভীর ঘুম আসে মেয়েটার চোখে আজও তার ব্যতিক্রম হলো না……তাই নামায পড়ে সাদাদের জন্য দরজা টা খুলা রেখে ঘুমিয়ে যায় সে………………………..!
!
#প্রেমঘোর#৪২#
💜💜
সাদাদ মসজিদ থেকে ফিরে এসে দেখে নৌশিন ঘুমাচ্ছে। নৌশিনকে না ডেকে সাদাদ ওর পাশে শুয়ে পড়ে,আবার কি ভেবে উঠে যায়……………..
লেপটপ আর কিছু ফাইল নিয়ে নৌশিনের পাশে বসে,
একা একাই বলছে,”উঠেই পড়েছি যখন না ঘুমানোই বেটার,অলরেডি ছয়টার কাছাকাছি সো কাজ করলে অনেক এগুনো যাবে……”…..লেপটপ খুলে কাজে মন দেয়……………….
!
সকাল আট টা…………
সাদাদ ফাইল চেক করছে আর নৌশিন পাশে শুয়েই এখনো ঘুমাচ্ছে সাধারণ ফজরের নামায পড়ে নৌশিন যে ঘুমটা দেয় সেটা খগব গভীর ভাবেই ঘুমায়,আর দশটার আগে উঠে না সহজে…………….
এমন সময় প্রাপ্তি আসে নৌশিনকে ডাকতে,দরজা খুলা দেখে ভেতরে ডুকে।
“গুড মর্নিং ভাইয়া…….”
সাদাদ লেপটপে চোখ রেখেই বলে,”গুড মর্নিং মাই লিটল সিস্টার……”
“আরে ভাইয়া,তুমি উঠেছো আর ভাবী এখনো ঘুমাচ্ছে??ডাকো নি কেন??”
সাদাদ কাজে ব্যস্ত……তাই এবারও প্রাপ্তির দিকে না তাঁকিয়েই বলে,”উঠেছিলো তো,নামায পড়ে আবার শুয়ে পড়ছে……”
“ও….তুমি এই সময় তো জিমে থাকো আজ কি কাজ করছো.?”
“কিছু কাজ পেন্ডিং আছে তাই…….”
“ও…..”
সাদাদকে আর কিছু না বলে নৌশিনের গায়ে হাত দিয়ে ডাকতে থাকে,
“ভাবী,ও ভাবী……উঠো…..”
সাদাদ এবার ফিরে তাঁকায় প্রাপ্তির দিকে……..
“কি রে বোন……???ডাকেছে ওকে কেউ??”
“নাহ….বাট বড় ভাবী বললো ডেকে দিতে……কি খাবে জানতে?ভাবী তো পড়টা খুব একটা খায় না তাই…….”
“ওহ্…..তাহলে থাক ওকে ডাকিস না আর একটু পড়ে আমি ডেকে দিবো….আর ভাবীকে বলিস ওর জন্য রুটি করে দিতে যেন তেলে না ভাজে………..”
“ওকে……..তাহলে তুমিই ডেকো……..”
“আচ্ছা তুই যা,কথাটা বলে এসে পড়তে বস আর কাকি কে বলিস কাউকে দিয়ে আমার জন্য চা পাঠাতে…..”
“ওকে ব্রো…….বাই…..”
“বাই মাই মিষ্টি বোনো……”
!
প্রাপ্তি নিজের সব অর্ডারি কাজ করে পড়তে বসে যায়।বাসার ছোট হলে যা হয় আর কি!যদিও কোনো কাজ হাতে করতে হয় না প্রাপ্তির তবে ওর পা টার সারাদিন খুব কষ্ট হয়……
ক্লাস টা করে এসে বেচারী একটু বসার ঘরে বসলেই ওর মা বলবে,
“আম্মু,তোর বাবাকে বল তোর জেঠা কল করতে বললো বা তোর আব্বুকে নিচে আসতে বল…..”
অসহায়ের মতো বসা থেকে বাবার রোম থেকে বাবাকে ডাকতে যেতে হয়……ফিরে এসে একটু বসলে,অরূপের মা ডাক দিয়ে বলে,
“প্রাপ্তি বোনো আমার অরূপকে একটু বাগান থেকে ডেকে নিয়ায় সেই কখন থেকে খেলছে….”
আবারও পা টা কে কষ্ট করতে হয়……কাজটা করে এসে একটু খেয়ে পড়তে বসে…..পড়া শেষ করে রাতে ডিনার করতে যাবে…
বেচারীরর আবার ক্ষুদা পায় বেশি তাই পাঁচ দশ মিনিট আগেই যায়…..খাবার দেওয়ার আগে বাটি থেকে একটু একটু করে খাওয়া শুরু করে,তখন জেঠি বলে,
“সোনা মা,মাছ ভাজা টা খেতে খেতে যাও আর তোমার রিদি আপুকে খাওয়ার জন্য আসতে বলো……”
কি আর করার হাতে একটা মাছ ভাজা/বেগুন ভাজা/এক টকুরা গোস্ত নিয়ে খেতে খেতে যায় যারা আসে নি তাদের ডাকতে…..
তারপর খেয়ে আবার সবাই বলে,”প্রাপ্তি ফোন চালাবে না গিয়ে একটা পর্যন্ত পড়ে ঘুমাবে রাতে এফ বি ডুকে সময় নষ্ট করবে না।……”
সারা দিন পড়া,ক্লাস আর সবার এমন অর্ডারী কাজ করে ক্লান্ত হয়ে পড়ে মেয়েটা তবে অর্ডার যেমন বেশী খায় সবার ছোট হওয়ায় আদরের ভাগ টাও বেশি পায়……………
নয়টায় সাদাদ কাজ এক পর্যায়ে থামিয়ে নিয়ে নৌশিনকে ডাকতে শুরু করে,যদিও নৌশিন উঠতে চায় নি পরক্ষণেই ওর মায়ের বলা কথা মনে পড়ে যায়………তাই এক লাফে উঠে পড়ে…..”আগে ডাকে নি কেন??”
“নয়টা বাজে তাই উঠো না….আরও আহে ডাকলে তো….”
“ডেকে দিলেই উঠতাম….ইশশশশ সবাই কি ভাববে বলো তো নতুন বউ বেলা নয়টা অবদি ঘুমায়……মা আমাকে বার বার বলে দিয়েছিলো সকালে না ঘুমাতে!ভাবী আর কাকীকে হেল্প করতে বলে দিয়েছিলো বারবার করে,দরকার পড়লে বিকালে ঘুমাতে বলছিলো…..এখন একটু পড়েই মা ফোন দিয়ে যদি শোনে আমি নয়টায় উঠলাম,মা আমাকে খুব বকবে……”
“কাহিনী!তোমাকে আসছিলো প্রাপ্তি ডাকতে আমিই না করেছি…..আর মা কি বলেছে?ভাবী আর কাকিকে হেল্প করতে??”
“হুম….বউরা তো তাই করে…..”
“একটা চড় দিয়ে না দাঁত সব ফেলে দিবো….আমি কাল ভাইয়াকে ফোন দিয়ে বলছি তোমার সব বই দিয়ে আরফানকে পাঠিয়ে দিতে আজ থেকে স্টাডি শুরু করবে কাজের জন্য বাসায় অনেক সার্ভেন্ট আছে,তোমাকে আমি কাজ করার জন্য নিয়ে আসি নাই…..আর সকাল বেলা তো কখনই রান্না ঘরে যাবা না তুমি,ভাবী আছে কাকি আছে ওরা দেখবে……..মন চাইলে ঘুমাবা না চাইলে পড়বে……”
“কি বলো??তাই বলে একটু হাতে হাতে সাহায্য করবো না???”
“না করবে না……প্রাপ্তি,রিদি যেমন থাকে তুমিও তেমন থাকবে……বাড়তি কিছুর চাপ মাথায় নিবে না…….জাস্ট স্টাডি নিয়ে থাকবে যেমন তোমার সেই বাড়িতে থাকতে তেমন…..”
“আচ্ছা দেখা যাবে সেটা…..”
“দেখা যাবে না…..আমি যেমন তোমাকে তোমার ডিপার্টমেন্টের ফার্স্ট গার্ল দেখেছি এই লাস্ট সেমিস্টারেও তাই দেখতে চাই…..বিয়ে হয়ে গেছে বলে রেজাল্টের কোনো নড়চড় যেন না হয়…….মাথায় রাখবে??”
“ওকে ওকে……হইছে……সকাল বেলাই শুরু হইছে ওনার…..”
“সকাল বেলাই শুরু হয়…….এখন খাবে চলো…..”
!
খাওয়ার টেবিলে,
“কি রে মা,কোনো সমস্যা হচ্ছে না তো??? ”
“না বাবা……”
“গুড….নিজের বাড়ি এটা বুজচ্ছো???শশুড় শাশড়ি আছে বলে কোনো রকম ফর্মালিটির দরকার নেই……পিচ্চি মেয়ে পিচ্চির মতোই থাকবে,সারা বাড়ি হেঁসে খেলে বেড়াবে…….জাস্ট লাইকস আওয়ার প্রাপ্তিমণি…….”
“জ্বি বাবা…..”
নৌশিন শশুড়ের কথা শোনে খুব খুশি হয় আবার মনে মনে ভাবে “বাইশ বছরেী একটা মেয়ে নাকি পিচ্চি!!!যদিও বাবা মায়ের কাছে চল্লিশ হলেও পিচ্চি…..আল্লাহ তোমার কাছে অনেক শুকরিয়া এমন মা বাবার মতে শশুড় শাশড়ি দেওয়ার জন্য….নিজের লোকের মতো আপন লোক দেওয়াী জন্য……..”
এ বাড়িতে তিন বেলায় সবাই এক সাথে খাবার খায়…..আসলে এটাই করা উচিত এতে পরিবারের সবার মধ্যকার বাঁধন টা আরও জোরালো হয়।।
হঠাৎ রিদি নৌশিনের নাম ধরে ডাকে,”নৌশিন….”
নৌশিনও সাথে সাথে সারা দেয়…..”জ্বি আপু…..”
নৌশিনের অপজিট সাইডে বসেছে রিদি…..যদিও একবারের জন্যও নৌশিনের দিকে তাঁকায় নি এমন কি ডাকার সময়ও না কিন্তু নৌশিন ডাকার সাথে সাথে সারা দিয়েছে আর তাঁকিয়েছেও………….
“বলছি হানিমুনে যাবে না তুমি??”
নৌশিন একটু ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়……শশুড়,চাচা শশুড়দের সামনে হঠাৎ হানিমুনের কথা শুনলে যে কারও ই এমন অবস্থা হবে…তারপর আবার রিদির প্রশ্ন করার কি ধরণ……..!”তুমি যাবে না???”….যদি সবার সামনে বলার ই ছিলো তাহলে এট লিস্ট এটা বলতো….”তোমরা যাবে না” ‘তুমি’ বলাটা আমার কাছে একটু না বেশ খানিক টা অন্য রকম লাগছে………
নৌশিন খেয়াল করলো বড়রা সবাই চুপচাপ খাচ্ছে,এই বাড়িতে সবাই ফ্রি কিন্তু তাই বলে শশুড় শাশুড়ির সম্মুখে নতুন বর-বউয়ের হানিমুনের কথা বলা চলে না কারণ এটা স্টার জলসার কোনো নাটকীয় পরিবার না যেখানে কাকি শাশড়ি ভাতিজার বাসর রাত জাগে!!এটা বাংলাদেশী ভদ্র আর শালীন একটা পরিবার….তার উপর মুসলিম……..
এখানে ননদ/ভাবী বাসর রাত জাগে কাকি/শাশড়ি না…….নৌশিন কি বলবে বুজতে পারছে না………
সাদাদ ভালো করেই বুজতে পারে রিদি প্রশ্নটা নৌশিনকে কেন করেছে,
তাই নৌশিনের হয়ে সে ই উত্তর টা দেয়……………..
“না এখন কোথায় যাচ্ছি না আমরা…..ওর ক্লাস চালু হবে নেক্সট উইকে আর দেড় মাস পর সেমিস্টার ফাইনাল সো ও পড়ায় ব্যস্ত থাকবে এই কয়েকদিন,এমনিতেই বিয়ের ঝামেলায় তিন চার দিন যাবত পড়তেই পারছে না…..যদি যাওয়ার হয় ওর সেমিস্টার এক্সামের পর…..”
অরূপের মাও তাল মিলিয়ে বলেন, “হ্যাঁ,সেটাই বেটার…..”
রিদি আর কিছু বললো না চুপচাপ খেয়ে চলে গেলো…
সবার খাওয়া শেষ হলে যে যার রোমে চলে যায়………..
!
রিদি অফিসে যাওয়ার রেডি হয়ে বের হচ্ছে,এমন সময় সাদাদও রেডি হয়ে বের হয় সাথে অবশ্য নৌশিনও আছে…….
সাদাদ রিদিকে দেখেই নৌশিনের হাত ধরে রিদির আগে সিরি দিয়ে নামতে থাকে………….সাদাদের সব কিছু সহ্য হলেও মেয়েদের ছেলেধারী পোশাক আর ছেলেদের মেয়েধারী পোশাক জাস্ট অসহ্য লাগে!….আর রিদি ঠিক সেই টাইপ একটা মেয়ে উনত্রিশ বছরের একটা মেয়ে টাইট পেন্ট আর শার্ট পড়ে অফিসে যায় সাদাদের ঠিক সহ্য হয় না,যদিও এ বাড়ির সবাই প্রথম প্রথম না বলতো রিদিকে কিন্তু না শোনায় কেউ আর বলে নি কিছু!ও তো আর ছোট না যে ওকে শাসন করতে হবে!যথেষ্ঠ মেচিউর সে……. সো নিজের ভালো বুজার ক্ষমতাটা ওর আছে।
!
সাদাদ বাসার সবাইকে বলে বেরিয়ে যায়…..আবার কি ভেবে ফিরে আসে……………রিদি তখন ড্রয়িং রোমে বসে কিছু ফাইল চেক করছিলো,
এই মেয়ের যত দোষ ই থাক না কেন!এর সব চেয়ে বড় একটা গুণ হচ্ছে ওর ‘কাজ’ যাই হোক না কেন ওর সাথে,কাজের সাথে কোনো সর্ম্পকও টানবে না সে…..তার কাছে নিজের কাজ টা ই সবার আগে আর সব থেকে বড় কথা সাদাদ নৌশিনের সাথে যেমন আচরণ করুক,যতই খারাপ ড্রেস পড়ুক কাজে একশ ভাগ সৎ….. বড় একটা মাল্টি ন্যাশনাল কম্পানিতে জব করে অল্প সময়েই বসের মন জয় করে নিয়েছে কাজ দিয়ে,
নিজের টাকার গাড়িও করে নিয়েছে একটা শুধু মনের সুখ টাই খুজে পাচ্ছে না।
কারণ মনে যারে ধরেছে সে যে অন্য খাঁচায় বন্ধি……..!!!
যাই হোক আল্লাহ ভালো জানেন কার কপালে কি আছে!!!অথবা কারও কর্ম ফল।।।।।।রিদি সাদাদের মনের মতো না কোনো দিনও,নৌশিন আর রিদির অনেক মিল থাকলেও দুজনের চিন্তা ভাবনা আর চলাফেরায় বিশাল তফাত যে তফাতের ফাঁকে সাদাদ নৌশিনের তফাতগুলোতে মিশে গেছে…………..
বাদ দেই সব…..নৌশিন আর সাদাদ ই পারফেক্ট….
সাদাদ ভেতরে এসে দেখে নৌশিন ভাবীর সাথে বসে আছে…..সাদাদ নৌশিনকে বলে,”নৌশিন দরকার আছে একটা….একটু উপরপ চল……”
“যা…..দেখ কি বলে….”(ভাবী)
“হম…..আসছি……”
“তাড়াতাড়ি পা চালা…..লেট হচ্ছে আমার…….”
সাদাদ উপরে গেলে নৌশিনও যায় ওর পিছু পিছু,
“কি কিছু ফেলে গেছো???”
“না রে….একটা কাজ করতে ভুলে গেছিলাম….”
“কি???”
সাদাদ নৌশিনের কাছে এসে নৌশিনের দুগালে হাত রেখে বলে,
“আমার জান পাখি টাকে তো বলা হয় নি আলাদা ভাবে তাই এসেছি……..”
নৌশিন মুঁচকি হেঁসে বলে,
“সাদাদ!!!তুমি এরজন্য আবার এসেছো????তুমি যে কি না…..!একটা ফোন করলেই তো হতো…….”
“আরে ম্যাম তোমার ফোন তো আমার কাছে……”
“ও সরি,খেয়াল ছিলো না……”
“তাছাড়া ফোনে কি তোর কপালে চুমু দিতে পারতাম আমি??”
নৌশিন ঠোঁটের কোণে হাঁসি এনে বলে “পাগল একটা!”
“উমমমমমমমমম্মা…..”সাদাদ নৌশিনের কপালে একটা চুমু এঁকে দিলো….
“এবার আসছি…..কেমন???”
“ওকে।।।।।।।আল্লাহ হাফেজ……”
“হুম….ঠিক টাইমে গোসল করে নিও আর আমি তো লান্সে আসবোই এল সাথে করে নিবো……”
“ওকে…….”
সাদাদ বাইরের দিকে বেরুতেই নৌশিন পেছন ডাকতে চেয়েও চাইলো না,
সরাসরি সাদাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়…….সাদাদ ভ্রু কুঁচকে জানতে চায় “কি??”
নৌশিন কিছু না বলে সাদাদের সো য়ের পা রেখে বুড়ো আঙুলে ভর করে উঁচু হয়ে সাদাদের গালে আলতে করে একটা চুমু খায়।……”এবারও যাও…”
সাদাদ নৌশিনের মাথার চুল এলোমেলো করে দিয়ে বললো,”সো সুইট একটা বউ…….”
“তোমারর বউ তো তাই….!!!!”
“আচ্ছা????”(মুঁচকি হেঁসে)
“হুম…..শোনো আস্তে ড্রাইভ করবে…..”
“যো হুকুম মহারানী…….আসি আসসালামু আলাইকুম…..”
নৌশিন ছোট্ট একটা হাঁসি দিলো………..বললো,
“জ্বি মেরী মহারাজ….ওয়ালাইকুম আসসালাম…..”
সাদাদ চলে গেলো অফিসে……………
নৌশিন আবারও নিচে গিয়ে অরূপের মায়ের সাথে বসে গল্প করে…..বাসার সবাই কেমন!কে কি করে না করে,কার কি ভালো লাগে না লাগে এইসব নিয়েই গল্প চলছে দু জা য়ের মাঝে…………………
!
এগারো বাজলে অরূপ স্কুল থেকে বাসায় আসে,
নৌশিন অরূপকে ফ্রেস করিয়ে নিজের হাতে খাইয়ে দিলো……………
খাবার পর,অরূপ বলছে,
“নতুন বউ খেলবে আমাল সাথে??”
“কি খেলা বাবু???”
“উমমম….চলো কাল কে যে বল বাস টা দিলো আম্মু সেটা দিয়ে খেলি…….”
“বাস দিয়ে কি করে খেলবেো বাবু??”
“দাঁলাও আমি শিখিয়ে দিবো……আগে নিয়ে আসি…….”
!
“নতুন বউ,নতুন বউ…..এই যে……..”
“এখন কিভাবে খেলবো এটা দিয়ে?”
“আমি এখানে বসে এমনি কলে ধাক্কা দিবো তুমি ঐখানে বসে জোলে ধাক্কা দিবে…….পালবা তো???জোলে দিতে????”
“হ্যাঁ বাবু পারবো……”
নৌশিন আর অরূপ খেলছে,এক বার অরূপ বাস টাকে ঢেলে নৌশিনের কাছে পাঠাচ্ছে তো আরেকবার নৌশিন ঢেলছে অরূপের কাছে পাঠানোর জন্য…………….
ওদের খেলা দেখে নৌশিনের শাশুড়ি মনে মনে হেঁসে চলেছেন।হাঁসার ই তো নতন বউ ড্রয়িং রোমে বসে একটা বাচ্চার সাথে খেলছে!!!একটু তো হাঁসি পাবেই,তবে ওনি এতে অনেকক খুশি হয়েছেন……
হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠে,নৌশিন ভাবছে ও কি যাবে নাকি অন্য কেউ?ঠিক বুজতে পারছে না কি করবে?নতুন মানুষ হয়ে দরজা খুলতে যাবো!কাকে না কাে চায়?বা এমনও তো হতে পারে পাশের বাড়ির কেউ আমায় দেখতে এলো….থাক আমি আর না যাই…….নৌশিন ভাবতে ভাবতেই একজন সার্ভেন্ট গিয়ে দরজা টা খুলে দিলো।…………………………..
!
চলবে..