11-15 #প্রেমঘোর#১১

0
1559

11-15

#প্রেমঘোর#১১#
💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
“Listen,আমাদের দুজনকে বেশ মানিয়েছে..লোকে সেটাই বলবে আজ”(সাদাদ)
“ইশ….দেখবো কেমন বলে??”(নৌশিন)
…সাদাদ নৌশনের কমড়টা আরও একটু ঝাকিয়ে নিজের সাথে একদম মিশিয়ে দাঁড় করায়….”দেখো….”(সাদাদ)
“আচ্ছা…মেইন পোগ্রাম তো সন্ধ্যায় তাহলে আমাকে এতো আগে কেনো রেডি হতে হলো??এখন তো ৪.৩০ কেবল??আরও ২.৩০ ঘন্টা আমি কি এই সাজে বসে থাকবো নাকি??”(নৌশিন)
“গুড কোয়েশ্চেন…..তুমি এমনি এমনি রেডি হও নি…মেইন পোগ্রাম তো বাবা কাকার গেস্টদের জন্য সন্ধ্যায়…বাট তোমার আমার অলরেডি শুরু হয়ে গেছে..”(সাদাদ)
“মানে???এইভাবে ধরে রাখবে বলে সাজানো হয়েছে আমায়??”
“নারে বোকা…আমি তো সাজ ছাড়াই তোকে কত ধরতে পারি বল….বাট তোর যে বিচ্ছু ফ্রেন্ডগুলো আছে ওরা সবাই এখন সেন্টারে গান গাইতেছে তোর জন্য ত্রিশ মিনিট যাবত ওয়েট করছে ওরা…কিন্তু তোর তো সাজতেই কত্ত টাইম লাগলো…আর আমার কলিগরা কেউ সন্ধ্যার পর থাকছে না ওয়ার্কিং ডে আজ এবং সন্ধ্যায় অফিসে কাজের লোড পড়েছে আজ বেশি সো কেউ ছুটি পায় নি একমাত্র আমি ছাড়া….বস সহ সবাই আসবে কিন্তু ওরা সবাই ডিনার না করেই চলে যাবে আট টার আগে…তাই বুঝলি??”(সাদাদ)
“ও….আচ্ছা….বুঝলাম”
“হুম বোকা…বুঝালে বুজো না বুজালে না…”(সাদাদ)
“আর আমার খুব খুশি খুশি লাগছে তুমি ফ্রেন্ডসদের এতো আগে আসতে বলেছো বলে….তোমার ফ্রেন্ডরা কেউ আসবে না?”(নৌশিন)
“তোমার ডিপার্টমেন্টেরর সবাই এসেছে….আসবে কিন্তু সবাই আসতে পারবে না জবে ডুকে গেছে না সবাই..আর মেয়েগুলোর তো বিয়ে হয় বর+বেবিও হয়ে গেছে তাই কেউ কেউ আসবে আবার কেউ কেউ না…..সিউর নই আমিও কে আসবে আর কে আসবে না-সবাই কে বলা হয়েছে অবশ্য”(সাদাদ)
“আর তোমার বস আর কলিগ রা ডিনার না করেই চলে যাবে….কেমন বাজে দেখায় না??”(নৌশিন)
“আমি কি ওদের না করেছি ডিনার করতে নাকি…বাট ওরা করতে পারবে না বস শুধু পনেরো মিনিট সময় নিয়ে আসবে ওনার ডিল করতে হবে আজ একটা-অনলি তোমাকে একটু দেখবে বলে আসছেন….আর বাকীরাও কম সময় নিয়ে আসবে….তাই ডিনার করা হবে না ওদের….তবে না খেয়ে তো যাচ্ছে না-আলাদা করে সন্ধ্যার সেন্কসের আয়োজন করা আছে ওদের জন্য..”(সাদাদ)
“তাহলে ঠিক আছে….তবে তুমি কিন্তু ওদের অন্য কোনো দিন ডিনার করিয়ে নিবে”(নৌশিন)
“কিহ্..??”(সাদাদ)
“হুম…সন্ধ্যায় সবাই খাবে সাদাদ শুধু ওরা তো না??”(নৌশিন)
“হুম।।।খাবে যারা আসবে তারা….বাবা কাকার গেস্টরা সন্ধ্যার পরে আসবে তো ওরা তো এইসব মিস করবে।।।।ওরা তো মেইনলি ডিনার করবে…”(সাদাদ)
“হুম সে যাই হোক….অফিসের সবাই তো ডিনার টা মিস করবে…তুমি ওদের এই সপ্তাহে না হলেও পরের সপ্তাহে ডিনার ব্রাউন্জ করবে”(নৌশিন)
“কতগুলো লোক অফিসে…ওদের ডিনার করাতে গেলে আমার কত টাকা লাগবে তুমি জানো?”(সাদাদ)
“সে যাই লাগুক….তোমার কি টাকার অভাব নাকি??”(নৌশিন)
“ইশ-যেমন ভাবে বললা….মনে হয় কোটিপতি বিয়ে করছো”(সাদাদ)
“তা নয় তো কি??”(নৌশিন)
“এইগুলো আপনার শশুড়ের টাকা-আপনার বরের এত টাকা নাই রে…একটা চাকরি শুরু করলাম কেবল ছয় মাস হলো..☺☺”(সাদাদ)
“তুমি এতো কিপটুশ কবে থেকে হলে.???এই যে বিয়ের এতো কিছু সেটা কার খরচে???নিশ্চয় তোমার না বাবার???তো তোমার কলিগদের টাকা টাও বাবার কিছে নিয়ে নিবে”(নৌশিন)
“কিসের কিপটুশ….এক বিয়ে করে দু বার খাওয়াবো নাকি???যখন আর একটা বিয়ে করবো তখন না হয় আবার কলিগদের তিন বেলা খাইয়ে দিবো….যদিও তখন জব ছেড়ে ইনভেস্টমেন্টের দিকে চলে আসবো….”(সাদাদ)
“কিহ্…..আর একটা বিয়ে করবে মানে.???😡😡তাহলে আমায় এভাবে ধরে আছো কেন???ছাড়ো আমায়(সাদাদের বুকে ঘুসি দেওয়া শুরু করলো যেন সাদাদ ছেড়ে দেয় ওকে)….ছাড়ো যাও এখনি আর একটা কর….আমি চলে যাই বাবার বাড়ি”(নৌশিন)
….সাদাদ মুচকি হেঁসে আরও শক্ত করে ধরে রাখে নৌশিনকে….
“এখনি এতো রাগ করলে হবে??যখন বিয়ে করে আনবো তখন কি হবে তাহলে??☺”(সাদাদ)
…..নৌশিন এবার জুড়ে একটা ঘুসি বসিয়ে দিলো সাদাদের বুকে….কিন্তু সাদাদের তাতে কোনো ভ্রুক্ষেপ হলো না বরং নৌশিনকে আরও চেপে ধরলো….
“ছাড়ো না কেন???বিয়ে করবা না???যাও আজকে ই করে আনো…..😞😞😡😡…..বউ দেখবো তোমার….আমার সামনে বউ নিয়ে আসবে তাই না???….সেটা কেন??যদি অন্য কোনো মেয়ের সাথে তোমাকে নেগিটিভ ভাবে দেখি না তবে আমি ঐ দিন ই এই বাড়ি ছেড়ে তো যাবো ই দুনিয়াও ত্যাগ করবো”(নৌশিন)
….ইশ কি বলে পাগলী মেয়েটা….সাদাদ তো মজা করছিলো সেটা কি বুঝে না…রাগ করলো ঠিক আছে তাই বলে সাদাদের সামনে এমন কথা বলবে….সাদাদ নিশ্চয় রাগ করবে…..ভালোবাসার মানুষের মুখে এমন কথা শুনতে কার ভালো লাগে!….
….কথাটা শোনে সাদাদ ভিমরি খায়…এটা আশা করে নি….
…..সাদাদ নৌশিনকে ছেড়ে দেয়….কমড় থেকে হাত সরিয়ে নৌশিনের দু গালে দু হাত দিয়ে….”কি বললে??!এমন কথা যদি দ্বিতীয় দিন শুনি খবর খারাপ আছে তোমার???কম ভালোবাসি নাকি যে পালাবা আমায় ফেলে?”(সাদাদ)(চোখগুলো নিমিষেই লাল হয়ে গেলো সাদাদের…নৌশিন চোখের দিকে তাকিয়ে সেটা বুঝতে পারলো…বাট রাগ নাকি কষ্টতে এমন হলো বুজলো না নৌশিন…তাই ভয় পেয়ে যায়..যদি সাদাদ রাগ করে সেটা ভেবে)
“সরি😒।।।আর বলবো না…আমার কি দোষ তুমি ই তো বললা বিয়ের কথা…😞”(নৌশিন)
“হুম করবো তো…তোকে ই প্রতি বছর বিয়ে করবো তোর আপত্তি আছে কোথায়??”(সাদাদ)(রেগে আছে সাদাদ…নৌশিন বুঝে গেলো এবার ওর চোখ মুখ দেখে..)
“না…”(মাথা নাড়িয়ে না করলো নৌশিন)
সাদাদ নৌশিনের মুখ থেকে হাত সরিয়ে দূরে চলে যায় একটু…খুব রাগ হচ্ছে নৌশিনের উপর…নৌশিনও বুঝে গেছে কথাটা বলা ঠিক হয় নি কারণ সাদাদ আর যাই করুক এমন কথা মোটেও সহ্য করবে না…আগেও একদিন বলেছিলো নৌশিন যখন সাদাদ ওর উপর রাগ করে দুদিন কথা বলে নি…বাট যখন নৌশিন মরে যাওয়ার কথা বলেছিলো সাদাদ পাগলামি করেছিলো সেই লেভেলের….সাদাদ সরে যাওয়ায় আজ সেই দিনটার কথা মনে পড়লো নৌশিনের….
সাত-আট মাস আগের কাহিনী সেটা….সাদাদের লাস্ট ক্লাস ছিলো ভার্সিটিতে সেদিন…তার আগের দু দিন থেকে সাদাদ নৌশিনের সাথে রাগ করে কথা বলে নি……নৌশিনের পুরো পাগল অবস্থা-সাদাদের সাথে কথা না বলে ওর দুনিয়াটাই কেমন হয়ে গিয়েছিলো…সাদাদ দু দিন আগে রাতের বেলা টানা দুঘন্টা ওয়েট পেয়ে এমন রাগ করেছিলো…….নৌশিন সাদাদকে পড়ে অনেক বার কল করেছে বাট সাদাদ ধরে নাই….উল্টে সাদাদ একটা এসএমএস দিয়েছে”Don’t cl me….এতক্ষণ যার সাথে কথা হচ্ছিলো তার কাছে কল করা হোক…আমি এই টাইমে রোজ ফোন দেই সেটা মাথায় রাখা উচিত ছিলো”….তারপর নৌশিন আরও কতবার ফোন করলো বাট সাদাদ ধরে নি…পরের দিন ভার্সিটিতে গিয়ে সাদাদকে পায় নি…তাই পরের দিন বিকেল বেলা-সাদাদের ডিপার্টমেন্টেরর সামনে বসে আছে-সাদাদ আসলেই কথা বলবে….
ঠিক এক ঘন্টা পরে সাদাদ ক্লাস শেষে বের হয়…নৌশিন পিছু ডাকে সাদাদ শোনেও শোনে নি…তাই নৌশিন পিছু নেয় সাদাদের…ভাসানী চত্বর পর্যন্ত দৌড়ে আসে সাদাদের পেছন পেছন..তবু সাদাদ যখন থামছিলো না…তখন নৌশিন পেছন থেকে বলে উঠছিলো….
“তুমি যদি আর এক পা ও সামনে আাগও তবে আমার মরা মুখ দেখবে…যদি কথা না বলো এখন আমি আর কোনো দিন ট্রাই করবো না কথা বলার…বাসায় যাব সরাসরি গলায় দড়ি দিবো…তোমায় ছাড়া জীবন চাই না আমার…”
…সাদাদ তো এমনি রেগে ছিলো কথাটা শুনে আরও রেগে যায়….পেছনে ফিরে নৌশিনের কাছে এসে…
“কি বললি??”(সাদাদ)
“হুম…যা বলছি ঠিক বলছি…তুমি আমার সাথে দুদিন হলো কথা বলো না।।।আমি কি করেছি??ফোন ওয়েটিং ছিলো আমার কি দোষ কেউ বার বার কল করলে ওপর পাশে বিজি দেখাবে না?সেটাই হয়েছে ঐ দিন রাফিন ভাইয়া বার বার কল করেছে আমি ধরি নি…সে সময় তুমি দিয়ে ওয়েটিং পেয়েছো…তাই এতো রাগ…এখনও যদি রাগ করে থাকো না আমি সত্যি সত্যিই মরবো…দু দিনে আমার মরার মতোই অবস্থা করে ফেলছো তুমি”(নৌশিন)
…কথা বলা শেষ হলো বাট সাদাদের চড় বসাতে দেরি হলো না….সেখানে যারা ছিল সবাই ওদের কথা গুলো শুনছিলো…সাদাদ এমন থাপ্পর দেওয়াতে সবাই হা করে তাঁকিয়ে ছিলো….কিন্তু তাতে ওদের দুজনের কিছু আসে যায় নি…
“থাপ্পর দিয়ে না দাঁত সব কয়টা ফেলে দিবো ফাজিল মেয়ে…😡😡”(সাদাদ)
“(নৌশিন গালে হাত দিয়ে কান্না শুরু করে দেয়)…এখন রাগ দেখায়😰😰😰।।।কথা বলো না কেন তাহলে??”(নৌশিন)
….সাদাদ নৌশিনের কান্না সহ্য করতে পারে না….নৌশিন ঐ দিন যেভাবে কান্না শুরু করেছিলো সাদাদ সেটা দেখে ঠিক থাকতে পারে নি…সহ্য হচ্ছিলো না ওর….পরে সাদাদ খেয়াল করলো সবাই ওদের দেখছে তাই নৌশিনকে হাত ধরে টেনে সেখান থেকে জাবি কনটেসের পেছনে নিয়ে যায়…
“চোখ মুছো”(সাদাদ)
“😭😭😭😭😭😭”(নৌশিন)
“চোখ মুছতে বলছি আমি…”(সাদাদ)
“😭😭😭😭😭”(নৌশিন)
….সাদাদ তখন আবার রেগে যায়….
“এভাবে কান্না করার কি আছে???কথা তো বলতেই আসছি…আর রাগ করে নেই…কান্না থামাও”(সাদাদ)
…নৌশিন দৌড়ে এসে সাদাদকে জড়িয়ে ধরে খুব শক্ত করে….
“আই লাভ ইউ😰”(নৌশিন)
“হুম…আই এম সরি”(সাদাদ)
“আর কোনো দিন এমন করলে না…😰😰”(নৌশিন)
“করবো না।।।সরি….আর তুমি যদি এমন কথা বলছো তো ভালো হবে না”(সাদাদ)
“রাফিন ভাইয়া আবার জ্বালানো শুরু করেছে…ঐ দিন বিকেলে তুমি আমি একসাথে বের হলাম না ভার্সিটি থেকে তো রাতে বার বার ফোন দিচ্ছিলো ওর নাম্বার থেকে তো দিয়েছেই অন্যনম্বর থেকেও… তাই ওয়েটিং পেয়েছো হয়তো…আমি কার সাথে কথা বলবো???বলো??”(নৌশিন)
“কার সাথে কথা বলবে এর জন্য রাগ হয় নি…রাগ হয়েছিল কারণ তোমাকে তো আমি কল করি রোজ তো ঐ সময় ওয়েটিং পেয়েছি তাই মাথা গরম হয়ে গিয়েছিলো”(সাদাদ)
“বিশ্বাস করো তো আমায়?”(নৌশিন)
“তোকে বিশ্বাস না করলে যে দুনিয়াটা অন্ধকার হয়ে যাবে আমার।।।আমি জানি তুই শুধু আমার বাট ঐ সময় টা তো শুধু তোর আর আমার ছিলো তাই রাগ ওঠে গেছে”(সাদাদ)
“হুম…তোমার ক্লাসমেট এমন করলে আমি কি করতাম?”(নৌশিন)
“হুম…সরি।।।কষ্ট দেওয়ার জন্য..আমারও কিন্তু অনেক কষ্ট হয়েছে আর কোন সাহসে মরে যাওয়ার কথা বলো?”(সাদাদ)
“আর বলবো না…”(নৌশিন)
“ব্যাথা বেশি লাগছে??”(সাদাদ)
“তোমার কি শক্ত হাত লাগবে না…আর আমায় এতো জোড়ে কেউ মেরেছে কিনা মনে পড়ে না আমার…”(নৌশিন)
…দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে কথাগুলো বলে চলেছিল……
।।।সাদাদ নৌশিনকে বুক থেকে সরিয়ে…দু গালে হাত দিয়ে…”সরি…এমন কথা শোনে ঠিক থাকতে পারি নি”।।
“সরি বলতে হবে না…এখন তো মারলে বিয়ের পরপ আদর করে দিবা…শুধবোধ হয়ে যাবে…”(নৌশিন)
“এখন কি করবো তবে??”(সাদাদ)
“আজকে তোমার লাস্ট ক্লাস তো..এর পর তো এক্সাম-আমায় ফুচকা খাওয়াও…”(নৌশিন)
“এই আমাকে ফুচকার দোকানের সামনে নিয়ে দাঁড় করাতে খুব মজা লাগে তোমার তাই না?”সাদাদ)
“আচ্ছা খাওয়াতে হবে না”(বলে-নৌশিন হাটা শুরু করে রাগে)
….সাদাদ পেছন পেছন দৌড়ে এসে হাত টা ধরে ফেলে…”কি হলো?”(সাদাদ)
“কিছু না..আমার ক্লাস নেই বাসায় যাব।”(নৌশিন)
“ফুচকা??”(সাদাদ)
“লাগবে না..”(নৌশিন)
….”লাগবে”(সাদাদ নৌশিনেরর হাত ধরে টেনে ফুচকার স্টলের সামনে নিয়ে যায়)…..নৌশিন এতক্ষণ মুখ ঘুমড়া করে রাখলেও এখন একটা হাঁসি দিয়ে দেয়……
“বাপ রে…মুখে হাঁসি আসছে☺☺”(সাদাদ)
“আমার চেয়ে দেখি ফুচকার প্রতি প্রেম বেশি”(সাদাদ)
“একটু বেশি…অল্প”(মজা করে)
“কিহ্???”(সাদাদ)
“না না…(সাদাদের কানের কাছে মুখটা নিয়ে)…আপনার প্রেম তো আমার অস্তিত্ব-আর ফুচকা তো আমার পেটের অস্তিত্ব কারণ আমার পেটে যে পরিমাণ ফুচকা আছে সে পরিমাণ ভাত/পানিও নেই”(নৌশিন)
“😃😃😃😃😃”(সাদাদ)
“মামা…দু প্লেট দাও…”(নৌশিন)
“এই মেয়ে..আমি এই কুখাদ্য খাই না-তুই খা..”(সাদাদ)
“তোমাকে কে খেতে বলছে??”(নৌশিন)
“তাহলে..দু প্লেট আর একটা কার??”(সাদাদ)
“কেন??আমি খাবো…মামা ঝাল বেশি করে দাও…”(নৌশিন)
“হায় রে….”(সাদাদ)
“চুপ….আমি খাই আর তুমি দেখো”
“মামা ঝাল কম দিও”(সাদাদ)
“এই মামা না ঝাল বেশি দাও”(নৌশিন)
“ঐ গ্যাস্ট্রিক কিন্তু তোমার এতো ঝাল খাওয়া ঠিক না”(সাদাদ)
“প্লিজ একটু ঝাল খেলে কিছু হবে না..প্লিজ প্লিজ”(নৌশিন)
“যা খুশি কর…”(সাদাদ)
..”থ্যাঙ্ক ইউ…☺☺”(নৌশিন)
“আজকেই লাস্ট”(সাদাদ)
“মামা তাড়াতাড়ি দাও”(নৌশিন)
….নৌশিন দু প্লেট ফুচকা খুব দ্রুত খেয়ে ফেলেছিল……যে ভাবে খাচ্ছিলো সাদাদ হা করে চেয়েছিল….খাওয়া শেষে….
“আহ্….প্রাণটা জুড়িয়ে গেলো…”(নৌশিন)
“পারোও বটে☺☺☺…আর কিছু না খেতে পারো ফুচকা টা খাওয়া শিখছো একদম 😃😃😃”(সাদাদ)….সাদাদ বিল পে করে….”গাড়ী কই তোমার??দেখছি না তো”(আশে পাশে তাকিয়ে)
“সকালেই পাঠিয়ে দিয়েছি…কারণ মনে মনে এটা ভেবেই এসছি তোমার সাথে যাবো…আর যদি তুমি রেগে থাকো তবে বাস😞😞…বাট আশা টা পূরণ হয়ে গেলো☺☺”(নৌশিন)
“বাহ্…সরাসরি বাসায় যাবা নাকি অন্য কোথাও বসবে??লান্স করো নি তো চলো রেস্টুরেন্টে ডুকা যাক…”(সাদাদ)
“না না।।।আমি আর খাবো না…তুমি করো নি লান্স??”(নৌশিন)
“হুম..লাস্ট ক্লাস না লাইভের তো ডিপার্টমেন্টেই করতে হয়েছে যদিও ইচ্ছা ছিলো না-তোমার জন্য মোড টা অফ ছিলো তারপরও ফ্রেন্ডসদের কথা ভেবে করেছি আর তো করা হবে না..”(সাদাদ)
“তাহলে।।ঠিক আছে☺☺..বাসায় দিয়ে আসো আমায়”(নৌশিন)
…”ওকে চলো”(সাদাদ)….
……গাড়িতে বসেই নৌশিন কাঁচ উঠিয়ে দিলো….
“কি হলো তুমি তো গাড়িতে জানালা খোলা রাখো..আজ বন্ধ করলে?? “(সাদাদ)
“ড্রাইভ করো..☺”(নৌশিন)
…সাদাদ ড্রাইভ করা শুরু করে…
“একটা প্রশ্ন করেছিলাম উত্তর পায় নি এখনও”(সামনের দিকে তাকিয়ে)
…..নৌশিন তখনও কিছু বলে নি..শুধু মুচকি হেসেছিলো…
…সাদাদও আর কথা বলে নি…
কিছুক্ষণ পর নৌশিন গাড়ির আয়নাটা নিজের দিকে ঘুরায়…সাদাদ দেখেও কোনো প্রশ্ন করে নি এবার-কেন আয়না ঘুরালো?? কারণ আগের প্রশ্নটার উত্তর পায় নি সে,তাই আর কোনো প্রশ্ন করবে না(এটাই সাদাদের স্বভাব)….নৌশিন আয়নাটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে হিজাবের পিন গুলো এক এক করে খুলতে থাকে(সাদাদ খেলায় করে নি)….হিজাবটা খুলে চুলের ব্যানটাও খুলে দেয়….চুল গুলো মাথা নাড়িয়ে মেলে দেয়….কমড় ছাড়িয়ে যায় নৌশিনের চুল…আর যেমন ঘন তেমন শাইনি…চুল গুলো ওর সৌর্ন্দয দশগুণ বাড়ায়…চুলগুলো পেছনে ভাজ হয়ে থাকবে বেসে আছে বলে…তাই চুলগুলো সামনে আনে একদম হাটু পর্যন্ত হয়ে যায়…সাদাদ এবার খেয়াল করে আর নিজের করা প্রশ্নটার উত্তর পেয়ে যায়…..সাদাদ নৌশিনের কান্ডে মুচকি হাঁসে…
“এবার বুঝলে কেন জানালা লাগালাম…আমার চুল যার দেখার তাঁকে দেখানোর জন্য…বাইরের মানুষকে দেখাবো না তাই..উত্তর পেয়েছো??”(নৌশিন)
“হুম….☺☺☺”(নৌশিনের দিকে তাঁকিয়ে)
…সাদাদ ড্রাইভ করছে…নৌশিনের বাসা উত্তরাতে…সেখান থেকে রোজ আসে…হলে উঠে নি ওর নাকি ভয় লাগে তাই গাড়ি নিয়ে রোজ আসা যাওয়া করে….প্রায় দু ঘন্টার পথ(সাভার টু উত্তরা)-ঢাকার দু প্রান্ত…..
….নৌশিন চুলগুলো সাদাদ যে সাইডে সেদিকেই রেখেছিলো…চুলগুলো পেছনের খোলা বাতাসে সাদাদের উরুতে যাচ্ছে বারবার..আর নৌশিন বারবার সরাচ্ছে….”থাক বার বার সরিয়ো না…সবার গার্ল ফেন্ডের চুল ওদের মুখে পড়ে আর আমার টার চুল আমার উরুতে☺☺☺”(সাদাদ)
“কেন??তুমি কি চাও মুখে পড়ুক??আমার চুলগুলো ভালো লাগে না??”(নৌশিন)
“হপপপ…তোমার চুলের জন্য তোমার প্রেমে বার বার পড়ি আমি…আর এই যে উরুতে তোমার চুল এটার যে কি ফিলিংস তুমি ছেলে হতে বুঝতে”(সাদাদ)
…সে দিনের কথা ভাবতে ভাবতে নৌশিন কোথায় হারিয়ে যায়….ঘোর কাটে সাদাদের কথায়…
“কি হলো??বের হও…”(সাদাদ)
নৌশিন চমকে ওঠে…কোথায় হারিয়ে গেছিলো ও……
…সাদাদের দিকে তাঁকাতেই দেখে সাদাদ অলরেডি রেডি হয়ে গেছে………………………

#প্রেমঘোর#১২#
💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
নৌশিন সাদাদকে দেখে পুরো হা………
জোশ লাগছে সাদাদকে…কালো জিন্স-সাদা শার্ট তার উপর কালো বেল্স কোর্ট-ব্ল্যাক শো….পুরো হিরো হিরো লাগছে….কিন্তু সাদাদের মোড অফ দেখেই বুঝা যাচ্ছে….
“কি হলো??যাবে না নাকি পাঁচ টা বাজে…”(সাদাদ)
“হু…”(নৌশিন)
“কি হলো?”(সাদাদ)(নৌশিনের সামনে হাত নাড়িয়ে)
“কি বললে???”(নৌশিন)
“যাবে না??কি ভাবছো এতো??”(সাদাদ)
“তুমি কখন রেডি হলে??”
“তোমার সামনেই তো রেডি হলাম…মন-চোখ কোথায় ছিলো??”(সাদাদ)
“চলো এবার যাওয়া যাক না হলে লেট হয়ে যাবে..”(সাদাদ)
….সাদাদ দরজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে কথাটা বলে…নৌশিন খুব ভালোভাবে বুঝতে পারছে সাদাদ ওর কথাটার জন্য রেগে আছে সেই লেভেলে বাট আজ শুধু রিসেপশন থাকায় নৌশিনকে কিছু বললো না…নৌশিন আর কিছু না ভেবে দৌড়ে গিয়ে সাদাদকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো……
“সরি…আর বলবো না…প্লিজ আই এম সো সরি…”(নৌশিন)
“থাক..চলো”(সাদাদ)..এখনো রাগ ভাঙে নি ছেলেটার…
“না…আগে আমার সাথে ভালো ভাবে কথা কনটিনিউ করো..তারপর যাব”(নৌশিন)
“লেট হচ্ছে…ছাড়ো..”(সাদাদ)
“না…ছাড়বো না…বললাম তো সরি আর বললো না কোনো দিন”(নৌশিন)
…সাদাদ নৌশিনকে ছাড়িয়ে নৌশিনের দিকে ফিরে তাঁকায়….স্বাভাবিক গলায় বলে”আরেক দিনও বলা হয়েছিলো কথাটা…এবং পরে এটাও বলা হয়েছে আর বলবে না… রাখছো কথা???”(সাদাদ)
“আমার কি দোষ-আমার মুখ থেকে বেরিয়ে গেছে….আর যাই হোক তোমাকে কারো সাথে শেয়ার করা আমার দ্বাড়া সম্ভব না…তাই…”(নিচের দিকে তাঁকিয়ে কথাগুলো বললো নৌশিন)
“এতো দিনে এই চিনলে? বাহ্….আমি জাস্ট মজা করছিলাম”(সাদাদ)
“সরি…আমি জানি তো মজা করছিলে বাট কেন জানি আমার খারাপ লাগছিলো তাই বলে ফেলছি….আমি আর বলবো না এমন কথা”(নৌশিন)
“ওকে…চলো”(সাদাদ)…সাদাদ মুখ গোমড়া করেই কথাটা বললো….তাই নৌশিন আবারও সাদাদের কাছে দৌড়ে যায় আর সাদাদ কিছু বুঝার আগেই সাদাদের পায়ের উপর দাড়িয়ে উঁচু হয়ে সাদাদের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবায়….এক হাতে সাদাদের মাথার পেছনের চুল গুলো শক্ত করে ধরে অন্য হাতে সাদাদের ঘারে ব্লাসিং করে অনবরত লিপ কিস করে যাচ্ছে….সাদাদ প্রথমে নৌশিনকে ধরেই নি…নৌশিন সেটা বুঝতে পেরে সাদাদেরর ঠোঁটে লাভ বিট দিতে থাকে….সাদাদ শেষ পর্যন্ত হার মানে নৌশিনের কাছে…আর পারছিলো না-না সারা দিয়ে…হাতের ফোনটা খাটে ছুড়ে মারে আর তারপর দুহাতে নৌশিনের মুখ টা ধরে চুষে নিতে শুরু করে নৌশিনের ঠোঁট…নৌশিন এখন আর সাদাদকে কিস করার সুযোগই পাচ্ছে না…সাদাদ নিজই নৌশিনের ঠোঁটে পাগলের মতো কিস করছে-কামড় দিচ্ছে-চুষে নিচ্ছে নৌশিনের ঠো্ট দুটো….প্রায় দশ মিনিটের মতো নৌশিনের ঠোঁটে ডুবে থাকে সাদাদ তার পর ঠোঁট থেকে মুখ সরিয়ে নৌশিনের গলার ফাঁকা অংশে(মানে যেখানে গহনা নেই)কিস করতে থাকে…..বিট দিতে থাকে…নৌশিন সাদাদের মাথায় চুলগুলো যেন ছিড়ে ফেলছে সব…সাদাদ পুরো গলায় কিস করছে পাগলের মতো কমড়ে হাত বুলাচ্ছে…নৌশিনের শ্বাস ঘন হয়ে আসছে….সাদাদ বুঝতে পারে নৌশিন মাতাল হয়ে গেছে ওর মতো…সাদাদ নৌশিনের গলায় একটা লম্বা কিস করে আবার ঐ জায়গায় আটকে যায়-জিহ্বা দিয়ে লেহন দেয় একই জায়গায়-নৌশিন সহ্য করতে না পেরে সাদাদের চুলগুলো আরও শক্ত করে ধরে ঘারে খাচমি দিতে থাকে…সাদাদ গলার একই অংশে আটকে যায়-চুষতে থাকে অংশটা-এক জায়গাতেই লাভ বিট দিয়ে যাচ্ছে……দুজনে যেন হারিয়ে গেছে আজনায়…কোনো এক সুখে মাতোয়ারা দুজনে…তলিয়ে যাচ্ছে বিশাল প্রেমঘোরে….
…সেই ঘোর কাটে যখন সাদাদের ফোনটা বেজে ওঠে…দুজনেই ধমকে যায়-কি করছিলো ওরা…দুজনেই ছেড়ে দেয় দুজনকে সাথে সাথে…নৌশিন লজ্জায় রাঙা হয়ে আছে একদম-কি শুরু করেছিলো ও-ভাবতেই লজ্জা লাগছে…তাি সাদাদের উল্টো দিকে মুখ দিয়ে দাঁড়ায়….সাদাদ নৌশিনকে দেখে মুচকি হাঁসে….তার মাঝেই ফোনটা রিং হয়ে থেমে যায়….. “বাহ্…রাগ ভাঙানোর ভালো উপায় জানো দেখছি☺☺…..আজকে থেকে বেশি বেশি মোড অফ আর রাগ করবো তাহলে বিনা খাটনিতেই এতো কিছু পাবো”(সাদাদ)
….”ধ্যাত…”….বলেই নৌশিন ওয়াশরোমে ছোটে যায়….সাদাদের ফোনটা আবারও বেজে উঠে….
“একি ভাবী???”(সাদাদ)
“ভাবী বাসায় তবু ফোন করছে….”(সাদাদ মনে মনে কথা গুলো ভেবে-ফোনটা রিসিভ করলো)
“হ্যালো…”(সাদাদ)
“তোদের রোমান্স শেষ হলো.??”(ভাবী)
“মানে???কোথায় তুমি??বাসা থেকেই ফোন দিচ্ছো আমি তো রোমেই আছি….”(সাদাদ)
“জ্বি না আমি বাসায় না…আমি সবাই কে নিয়ে পনেরো মিনিট আগেই সেন্টারে চলে আসেছি-বাসায় শুধু তুই আর তোর বউ..”(ভাবী)
“কি বলো??আমাদের রেখে সবাই চলা গেলে??ডাকবা তো একবার নাকি??”(সাদাদ)
“প্রাপ্তিকে ডাকতে পাঠিয়েছিলাম-এসে বললো তোদের দরজা ভেতর থেকে লক…নৌশিনকে নাকি পরী পরী লাগছে তাই তুই ওর সাথে রোমান্স করছিস সিউর-এটা ভেবে ও তোদের নক করে নি আর….আমায় এসে বললো যেন আমরা সবাই চলে আসি আর তোরা একটু রোমান্স করে চলে আসিস পড়ে।।।।প্রাপ্তির কথা শোনে আমি সবাইকে নিয়ে চলে আসলাম…বাট তোদের এখনও খবর নেই…আরে সারা রাত পড়ে আছে পরে করিস সব-এখন আয় অনেক লোক এসে গেছে এতক্ষণে….আমি তোদের জন্য গেটের ভেতরেই একটা গাড়ী রেখে এসেছি…জলদি আয় ভাই প্লিজ”(ভাবী)
“হায় আল্লাহ কি কাহিনী…ডাকলেই কিন্তু হতো…এতো কাহিনী হতো না….”(সাদাদ)
“তোর প্যাচাল ওফ করে জলদি আয়…আমি বাবা কে বলেছি নৌশিনের রেডি হতে একটু টাইম লাগছে পার্লারের লোক আসতে দেরি করছে তাই….এরপরে বাবা কিন্তু রেগে যাবে…”(ভাবী)
“আচ্ছা আসছি….রাখো…”(সাদাদ)
“আর শোন…সবার রোম লক করা আছে…আসার সময় নৌশিনকে আলমারিটা ভালো করে লক করে আসতে বলিস আর তোদের রোমটাও লক করে দিস…মেইন ডোর লক করতে হবে না টেক কেয়ার আছে…শুধু আলমারি আর রোমটা করিস-আলমারির ড্রয়ার ভর্তি নৌশিনের কালকের সব গহনা রেখে আসছি আমি-মায়ের লকারে রাখবো মনেই ছিলো না”(ভাবী)
“আচ্ছা…ঠিক আছে….রাখছি”(সাদাদ)
“হুম…বাই”(ভাবী)
…..নৌশিন ওয়াশরোমের আয়নায় নিজেকে দেখছে আর হাসছে☺☺…….
“নৌশিন বের হও…পড়ে লজ্জা পেও…৫.২০ বাজে বাসার সবাই আমাদের রেখেই চলে গেছে…এখনি যেতে হবে আমাদের”(সাদাদ)
….নৌশিন সাদাদের কথায় তাড়াতাড়ি বের হয়ে আসে…আসার আগে একটা টিস্যু ভিজিয়ে আনে ঠোঁট আর গলাটা মুছার জন্য…..
“সবাই চলে গেছে???”(নৌশিন)(ওয়াশরোম থেকে বের হয়ে)
“হুম…সাড়ে পাঁচটা বেজে গেছে প্রায়…তুমি আর আমি তো প্রেমঘোরে চলে গেছিলাম….আমাদরে দরজা বন্ধ দেখে ডাকে নি আমাদের… ভাবী ফোন করেছিলো-চলো এখন হারি আপ….”(সাদাদ)
“ও তার আগে আলমারিটা ভালো করে লক করো…তোমার সব গহনা নাকি এখানে-লক করো তাড়াতাড়ি”(সাদাদ)
“ও।।।করছি”
“তুমি লক টা করো আমি চোখে মুখে একটু পানি দিয়ে আসি যা করলাম দুজনে-মুখ ওয়াশ না করলে সব বুঝা যাবে….বাই দ্যা ওয়ে,তোমার লিপস্টিক তো এক রকম ই আছে-ঠোঁটে ঝড় বইয়ে দিলাম আর লিপস্টিক কিচ্ছু হলো না??”(সাদাদ)
“আরে বারো ঘন্টার আগে এটা সাবান দিয়ে ঘষলেও উঠবে না তাই….”(নৌশিন)
“বাহ্….আগে জানলে ফার্স্টেই শুরু করতাম…নষ্ট হওয়ার ভয়ে কিছু করি নি..বাট তুমি শুরু করার পর হারিয়ে গেছি”(সাদাদ)
“হয়েছে…যাও চোখে মুখে পানি দিয়ে আসবা নাকি আসো যাও জলদি”(নৌশিন)
.. সাদাদ ওয়াশরোমে ডুকে…নৌশিন আলমারি লক করে…
..সাদাদ ওয়াশ রোম থেকে বেরিয়ে…”নৌশিন টাওয়েল টা দাও আমার…”(সাদাদ)
“ওয়েট…”(নৌশিন)
…নৌশিন সারা রোমে তাঁকায় কোথাও সাদাদের টাওয়েল নেই…
“কোথায় তোমার টাওয়েল??”(নৌশিন)
“খাটেই তো রাখলাম…..কোথায় গেলো…”(সাদাদ)
“আচ্ছা…আমার টা ইউজ করবে??”(নৌশিন)
“আরে দাও…”(সাদাদ)
…নৌশিন ড্রয়িং টেবিলের সামনে থেকে নিজের টাওয়েল টা সাদাদের হাতে দেয়…সাদাদ মুখ মুছছে…নৌশিন হাতের ভেজা টিস্যুটা নিয়ে ড্রয়িং টেবিলের সামনে যায়….যদিও কিছু বুঝা যাচ্ছে না তবু না একটু না মুছলে আনইজি লাগবে..তাই ঠোঁট টা মুছলো প্রথমে…গলা মুছতে যাবে এক পাশে মুছে অন্য পাশে হাতটা নিয়েই আয়নার দিকে তাঁকিয়ে চিৎকার দেয়…”আ…..সাদাদ”(নৌশন)
“কি হলো আবার???”(সাদাদ)
“এই দিকে এসো…”(নৌশিন)
…সাদাদ গেলো কাছে…”কি হয়েছে….লেট হচ্ছে তো বাবা রাগা রাগী করবে এরপর…আর তোমার বাড়ীর লোকও চলে এসেছে মে বি এতক্ষনে”(সাদাদ)
“আরে আসুক…আগে দেখো এটা কি(গলায় হাত দিয়ে)”(নৌশিন)
…সাদাদ নৌশিনের গলার দিকে তাঁকিয়ে ভ্যাবাচেকা হয়ে গেছে….সাদাদ অনেকক্ষণ যাবাত গলার এক জায়গাতে কিস+লাভ বিট+চুষে নেওয়ার কারণে সে জায়গাটা কালো হয়ে গেছে….বিবাহিত যে কেউ দেখলে বুঝে যাবে এটা কিসের দাগ…তাছাড়া পুরো সাদা গলায় এই কালো দাগ টাতেই সবার নজর যাবে আগে….গহনা গুলো দেখতেও যদি কেউ আগে নৌশিনের দিকে তাঁকায় তো ওর আগে নৌশিনের গলার দাগ টা দেখতে হবে….(ফর্সা কম হলে এতোটা কালো হতো না জায়গাটা…বুঝো এবার ফর্সা বেশি হওয়ার জ্বালা)
“বোকার মতো দাড়িয়ে না থেকে বলো কি করবো??”(নৌশিন)
…সাদাদ হা করে বোকার মতো তাঁকিয়ে আছে এখনও..নৌশিন আবার বলে..”এই সাদাদ…আমার মান সম্মান সব শেষ হবে আজকে😞😞😞”
…সাদাদ এবার কথা বলে…
“ফর্সা হওয়ার শাস্তি তোমার”(সাদাদ)
“এখন ফর্সা হওয়ার দোষ নাকি???এক জায়গায় এত কিছু করলে এমনি হবে…”(নৌশিন)
“আচ্ছা..বাদ দাও…এখন কথা বাড়িয়ে লাভ নেই…কি করা যায়…শুধু যে তোমার মান সম্মান যাবে তা না আমার টা পুরো ধুলার সাথে গড়াগড়ি খাবে-যে পরিমাণ লোক আসবে… আল্লাহ “(সাদাদ)
…নৌশিন মেকাপ বক্সটা খুলে জায়গাটায় মেকাপ করা শুরু করে বাট তবু বুঝা যাচ্ছে…”সাদাদ তোমার জন্য😡😡….আস্তে করতে পারো না কিছু সব সময় শক্তি বেশি দেখাতে হবে ওনার😡😡”(নৌশিন)
“শক্তি থাকলেই দেখানো যায় না থাকলে নয়”(সাদাদ)
.. আবার ফোন বেজে উঠলো সাদাদের…নৌশিন কথা না বাড়িয়ে এবার পেনকেট লাগাতে শুরু করে…
“হ্যালো..”(সাদাদ)
“কই তোরা…পাঁচ মিনিট লাগে না আসতে…কি করতেছিস তোরা…বাবা বারবার প্রশ্ন করতেছে আমাকে…নৌশিনের বাসার সবাই এসে গেছে অলরেডি”(ভাবী)
“ও…জাস্ট ফাইভ মিনিট ভাবী…আসছি”(সাদাদ)
“তাড়াতাড়ি প্লিজ”(ভাবী)
…………..”নৌশিন হলো??”(সাদাদ)……..
“নাহ😞😞😞…”(নৌশিন)
….দুজনে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে কি করা যায় ভাবছে….কিছুক্ষণ পর…
“সাদাদ তোমার সেভিং ক্রিম আছে না???☺☺”(নৌশিন)(মুখে হাঁসি নিয়ে)
“হুম আছে..কি হবে ওটা দিয়ে…?”(সাদাদ)
“আগে বলো কোথায়??”(নৌশিন)
“ওয়েট….তোমার আনতে হবে না আমিই এনে দিচ্ছি”(সাদাদ)
..সাদাদ ওয়াশরোম থেকে সেভিং ক্রিম টা এনে নৌশিনের হাতে দিলো…
“থ্যাঙ্ক ইউ..একটু পানি প্লিজ”(নৌশিন)
…সাদাদ টি টেবিলে রাখা গ্লাসটা নৌশিনের কাছে দিলো…নৌশিন দ্রুতগতিতে যে মেকাপটা করেছিলো জায়গায়টায় সেটা একটা টিস্যু ভিজিয়ে তুলে নিলো-মেকাপ করার কালো টা আরও বেশি বুঝা যাচ্ছিলো-তাই তুলে ফেলে…এরপর ডে ক্রিম+সেভিং ক্রিম একসাথে মেশায় হাতের তালুতে নিয়ে…কটনে আরও একটু সেভিং ক্রিম নিয়ে প্রথমে জায়গা টায় লাগায় পরে মিশ্রন করা ডে+সেভিং ক্রিমটা পুরো গলায়….এবার গলাটা সব জায়গা সমান ফর্সা দেখাচ্ছে-কিন্তু কালো দাগটা তবুও একটু বুঝা যাচ্ছে…তাই আবার একটু পানি+এক ফোঁটা সেভিং ক্রিম+পেনকেট হাতে নিয়ে গুলায় তারপর কটন দিয়ে কালো জায়গাটাতে লাগিয়ে নেয়…..এবার আর কিচ্ছু বুঝা যাচ্ছে না….
“সাদাদ কমপ্লিট ☺☺”(নৌশিন)
“আল্লাহ্….বাঁচালে তুমি আমায়…এবার তাড়ি তাড়ি যাই এসো..”(সাদাদ)
“হুম…দাঁড়ান…এটা একঘন্টা পর্যন্ত থাকবে মাত্র কিন্তু আমায় দশটা পর্যন্ত থাকতে হবে সেখানে..”(নৌশিন)
“তাহলে উপায়.??”(সাদাদ)
….নৌশিন সাদাদের কাবার্ড টা খুলে কিছু একটা খুছজে…”কি খুজো??”(সাদাদ)
…নৌশিন কথা না বলে খুঁজে চলেছে…
“এই নাও…”(নৌশিন)
“গরমে মাফলার??আর এতো ছোট টা??”(সাদাদ)
“হুম।।আমি এক ঘন্টা নরমালি সবার সাথে হাই হ্যালো করে যাবো কিছুক্ষণ পরে আমি একটা কোল্ড ড্রিংস খাবো তারপর গলা ব্যাথা হবে যেটা আমি তোমায় জানাবো তুমি এই মাফলারটা আমাকে দিবে পরার জন্য,আন্ডারসেন্ড”নৌশন)
“এতো কিছুর কি দরকার,চলো পাশেই তে কত হসপিটাল একজন ডক্টর দেখিয়ে আনি এমন কিছু মেডিসিন দিবে লাগানোর জন্য যাতে দাগটা ওঠে যায় কিছু সময়ের মাঝেই”(সাদাদ)
“কিহ্…আমি ডক্টরের কাছে যাবো??তোমার মাথা খারাপ.. শোনো ডক্টররা বুঝে কিসে দাগ হয়….আর এখানে তোমার ঠোঁটের ছাপটাও বুঝা যাচ্ছে আমার কাছে তো ডক্টর আস্ক করলে আমি কি বলবো?আমার হাজবেন্ড কিস করেছে??তারচেয়ে আমি যেটা বলেছি সেই আইডিয়াটা মোর বেটার-প্লিজ সাদাদ আমি কিন্তু লজ্জায় পড়ে যাবো কেউ বুঝলে তুমি কিন্তু খেয়াল রাখবা দাগটা বুঝা যাচ্ছে কিনা…আমার মনে হয় না এক ঘন্টার আগে বুঝা যাবে তবুও তুমি কিন্তু লক্ষ্য রাখবা,সেখানে তো আর আয়না পাবো না সবার সামনে যে দেখবো-প্লিজ”(নৌশিন)
“ওকে…চলো”(সাদাদ)
“আরে মাফলার টা ডুকাও পকেটে…”(নৌশিন)
“ও।।।যেন পকেটে ডুকে আমার সেই মাপে নিয়েছো দেখছি…তা লোকে কি এটা বলবে না আমি মাফলার নিয়ে ঘুরি??”(সাদাদ)
..নোশিন সাদাদের পকেটে মাফলার টা ডুকিয়ে…”আরে..আমাদের দেরি হচ্ছে কারণ আমার গলাটা একটু একটু ব্যাথা করছে তুমি আমায় মেডিসিন এনে খাওয়াতে খাপয়াতে লেট হয়ে গেছে তো ডক্টরের পরামর্শ মেনেই তুমি মাফলার টা সাথে করে এনেছো যেন ব্যাথা বেশি হলে পড়াতে পারো”(নৌশিন)
…দুজনে রোম থেকপ বের হয়, সাদাদ রোমে লক করেছে”এতোগুলো মিথ্যা বলবে তুমি??আমি না হয় পারবো??তুমি তো মিথ্যা সহ্য কম করো…”(সাদাদ)
“আরে…এই টুকু মিথ্যা অভিনয় না করলে আমার মান সম্মান থাকবে না যে…আর আমার কাছে আমার পেরটিস টা খুব দামী…আর এটা বুঝা গেলে তোমারও প্রেসটিসের বারো টা বাজবে…তার চেয়ে এই মিথ্যাটা বলে বাঁচতে হবে….আল্লাহ তুমি আমায় মাফ করো প্লিজ”(নৌশিন)(উপরের দিকে তাকিয়ে)
“ওকে…কি আর করার”(সাদাদ)
“হুম..আর সবাই জানপ আমার একটু ঠান্ডা পানি ধরলেই ঠান্ডা লাগে সো এটা সহজেই বিশ্বাসযোগ্য হবে যে আমার টনসেলে ব্যাথা হচ্ছে”(নৌশিন)
“বুদ্ধি আছে☺☺☺”(সাদাদ)
…কথা বলতে বলতে দুজন খুব দ্রুত সিড়ি দিয়ে নামছে..রিদি ড্রয়িং রোমপ বসে টিভি দেখছে-সাদাদের সেটা চোখে পড়ে নি বাট নৌশিন দেখেছে…
“এ মা..সাদাদ রিদি যায় নি??”(নৌশিন)
..এবার সাদাদও খেয়াল করলো..মনে মনে সাদাদ খুশিই হয়েছে এই বদমাইশ মেয়ে টা যায় নি বলে…
“ওহ্…থাক…ইচ্ছে হয় নি যায় নি…তুমি দ্রুত হাঁটো..আর তুমি ওকে রিদি রিদি করে কেন ডাকো…??আপু বলবা…এই মাইয়া বুড়ি মাইয়া তোমার বয়সের তুলনায়…দেখবা তুমি আপু ডাকলে রাগে জ্বলবে☺☺”(সাদাদ)
“কি বলো?আমি তো মনে করেছি প্রাপ্তির এজের হবে..তাই তো নাম ধরে ডেকেছি..আচ্ছা তাহলে আপুই বলবো এখন থেকে”(নৌশিন)
“হুম…আমার সেইম এজ…”(সাদাদ)
“ও…দেখে বুঝা যায় না…অনেক সুন্দর দেখতে ওনি☺☺”(নৌশিন)
“আজাইরা একটা…”(সাদাদ)
“চুপ।।কি বলো…থামো-শোনবে তো”(নৌশিন)
…দুজনে ড্রয়িং রোমে এসে-সাদাদ মেইন গেটের দিকে যেতে থাকে আর নৌশিন সোফার দিকে রিদির কাছে….রিদির মেজাজ টা চটে আছে বাট নৌশিন সেটা বুঝে নি….
“আপু…তুমি যাবে না?”(নৌশিন)
…সাদাদ এবার পেছনে তাঁকায়…নৌশিন যে রিদি কে ডাকতে গেছে এটা বুঝতে পারে…রিদি কি রকম বিহেভ করবে নৌশিনের সাথে সেটা দেখার জন্য সাদাদও এগিয়ে যায়….
“কি হলো…আপু??যাবে না?”(নৌশিন)
..রিদি কোনো কথা বলছে না রাগে গিজগিজ করছে…নৌশিন ওর কাছে গিয়ে হাতটা ধরে ফেলে”আপু চলো না-রেডি হয়ে নাও আমরা ওয়েট করছি তোমার জন্য,এক সাথে যাই চলো..”(নৌশিন)
…এবার রিদি ক্ষেপে যায়….নৌশিনের হাতটা ছিকটে ফেলে দেয়….নৌশিন পুরো অবাক কিছুই বুঝতে পারলো না কি হলো…সাদাদ দেখতে পেলো রিদি কেমন করে নৌশিনের হাতটা ছিটকে ফেলেছে তবুও মাথা ঠান্ডা রেখে কিছু বলে নি….কিন্তু এরপরে রিদি যা করেছে সাদাদ সেটা মেনে নেয় নি…
“তোমার সাহস কি করে হয় আমার হাত ধরার???”(রিদি)
…নৌশিন কি বলবে বুঝতে পারছে না-একটা মেয়ে আরেকটা মেয়ের হাত ধরলে কি এমন হয়??আর তার উপর। রিলেটিভ…মাথায় ডুকছে না নৌশিনের বিষয় টা তাই চুপ করে দাড়িয়ে আছে…
“কি হলো…পুতুলের মতো দাঁড়িয়ে আছো কেন???আমার প্রশ্নের উত্তর দাও…”(রিদি)
“সরি…”(নৌশিন নিচের দিকে চেয়ে কথাটা বলে)
“ফাজিল মেয়ে….তোমার সেই ফালতু রঙ তামাসার অনুষ্ঠানে যাওয়ার মতো আজাইরা সময় আমার নেই….যেতে পারো তোমরা…আর আমার সাথে এর পর থেকে এইরকম হাত ধরাধরি করে কথা বলতে আসবে না-আমি জাস্ট নিতে পারি না”(রিদি)
….সাদাদ অনেকক্ষণ দাঁতে দাঁত চেপে সব সহ্য করছে বাট রিদি নৌশিনকে ফাজিল মেয়ে বলায় ওর মাথায় যেন রক্ত উঠে গেছে…নৌশিন মাথা নিচু করে চলে আসছিলো সেখান থেকে আসলে ওর খুব খারাপ লাগছিলো-এমন একটা বিহেভ আশা করে নি ও….সাদাদ নৌশিনের হাত ধরে রিদি সামনে যায়….রিদিও বসা থেকে ওঠে দাঁড়ায়…
“শোনো…আমার বউ নৌশিন…তোমার সাহস কি করে হয় ওর সাথে এমন করে কথা বলার?”(সাদাদ)
“ড্যাম ইউর বউ…একটা পুচকে পুতুল ও…”(রিদি)
…নৌশিন হা হয়ে ওদের কথা শুনছে…একটা সিম্পল বিষয়ে এতো কিছু হবে সেটা ওর জানা ছিলো না….
“রিদি জাস্ট শ্যাট আপ…ওর সাথে নেক্স টাইম এমন করে কথা বললে তোমার কি অবস্থা হবে তুমি ভাবতে পারবে না।।।আর কি যেন বললে ওর আজাইরা অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় নাই তোমার??তুমি কি পরিমাণ আজাইরা সেটা তো বুঝায় যাচ্ছে…দেখছো তো স্টার জলসা…”(সাদাদ)
…সাদাদ রেগে জোরে জোরে কথা গুলো বলছে…আরও কিছু বলবপ তার আগেই নৌশিন থামিয়ে দেয়…
“সাদাদ থামো প্লিজ…বাদ দাও না…লেট হচ্ছে চলো..”(নৌশিন)
…নৌশিন সাদাদকে এক রকম টেনেই সরিয়ে নিয়ে আসে রিদির সামনে থেকে যেনো ওর মাথাটা আরও গরম না হয়….
“চলো…লেট হচ্ছে”(নৌশিন)
….সাদাদ আর কোনো কথা বাড়ায় না নৌশিনকে নিয়ে গাড়ীতে ওঠে যায়…আর রিদি রাগে ফুলছে সাদাদের কথা গুলো…
ইশ বউ…আমার পায়ের নখেরও অযোগ্য মেয়ে একটা”(রিদি)(মনে মনে এইসব ভাবছে আর ফুলছে)
…এদিকে সাদাদ নৌশিনকে নিয়ে ড্রাইভ করা শুরু করে……………………..
!

#প্রেমঘোর#১৩#
💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
…..সাদাদ ড্রাইভ করছে…কোনো কথা বলছে না…মেজাজ টা যে এখনও চটে আছে নৌশিনের বুজতে বাকী রইলো না…তাই নৌশিন নিজে থেকে কথা বললো…”আচ্ছা,এখনো তোমার রাগ কমে নি??ব্যাপার টা তো সিম্পল ছিলো”
…সাদাদ নিশ্চুপ…
“ওকে…রিদি আপু আমার সাথে একটু খারাপ বিহেভ করেছে বাট তুমি তো সেটার প্রতিবাদ করেছো…তাহলে এখনো কেন মুখটা বাংলার পাঁচ করে রেখছো??আমি কিন্তু তোমার এমন চেহারা দেখতে রাজি নই….”
….সাদাদ এখনও চুপ…ড্রাইভ করে চলেছে…নৌশিনের এবার রাগ হচ্ছে সাদাদের উপর….
“আজব তো…একটা মানুষ হতেই পারে তোমার আমার থেকে আলাদা…সেটা মেনে নিতে হবে…এটাই স্বাভাবিক যে সবাই সেইম মোডের হবে না…এই যে তুমি আর আমি আমাদের মাঝেও তো কত তফাত…তো রিদি আপু তোমার আমার মাঝের কেউ না ওর জন্য আমরা কেন আমাদের ভালোলাগার সময় টা নষ্ট করবো??”
…সাদাদ কোনো কথা বললো না..কিন্তু মনে মনে ঠিকই বললো”তোমায় আমি কি করে বলবো,ও যে তোমার আমার মাঝে ডুকে পড়তে চাইছে”…কিন্তু সেটা তো আর নৌশিন শোনতে পেলো না…তাই বিরক্ত হয়ে নৌশিনও আর কোনো কথা বললো না…জানালার দিকে মুখ করে বসে রইলো….
….সাদাদের বাসা থেকে সেন্টারটা খুব বেশি দূরে নয়…এবার ওরা সিগনালে আটকে পড়লো….সাদাদ গাড়ি থামিয়ে নৌশিনের দিকে তাঁকালো-মেয়েটা মুখ ভার করে বাইরের দিকে তাঁকিয়ে…..
“তুমি আবার মোড অফ করে রাখলে কেন?”(সাদাদ)
…নৌশিন সাদাদের দিকে ফিরে তাঁকালো….
“না আমার কি মোড আছে??যে সেটা অফ হবে??”
“রাগ করলে??”(সাদাদ)
“তোমার কি মনে হয়???সেই কখন থেকে আমি তোমার সাথে কথা বলছি তুমি কোনো কথাই বলছো না..এট লিস্ট হু বা না তো করতে পারতে…?”
“এখন তো বলছি….মোড ঠিক করো..”(সাদাদ)
“বললাম আর মোড ঠিক হয়ে গেলো…ভেতর থেকে ঠিক হতে হয়….যেমন তুমি রাগ করলে পা থেকে মাথা সবটায় রাগে গিজগিজ করে…কেন বলো তো??ফার্স্টে আমার সাথে রাগ করলে সেটা ঠিক হলো কত ভালো লাগছিলো তখন আমার তুমি জানো??বাট এরপরে রিদি আপুর উপর রাগ করে তুমি আমার সাথে কথা বলছিলে না…যেটা সব চেয়ে বেশি কষ্ট দেয় আমায়…আমার কি মনে হয় বলো তো??তোমার মতো রাগী হওয়া উচিত ছিলো আমার…আমি তো আর তোমার মতো রাগ দেখাতে পারি না…কথা না বলে থাকতে পারি না বাট তুমি পারো…”(নৌশিন)
“হালকা হয়েছে মন??”(সাদাদ)
“মানে???”(নৌশিন)
“এই যে মনের সব কথাগুলো আমার উপর ঝাড়লে মনটা তো হালকা হলো নাকি??”(সাদাদ)
“সাদাদ আমি রাগে কথা গুলো বলি নি…আমি জাস্ট এটা বুঝতে চেয়েছি তুমি যখন রাগ বা মন খারাপ করে আমার সাথে কথা না বলো আমার খুব কষ্ট হয়…ইভেন শুধু আজ কেন?টানা চার বছরে কম বুজিয়েছি তোমায় আমি-যে তুমি রাগ করে বা মন খারাপ করে আমাকে মারো-বকো আমার কোনো আপত্তি নেই বাট কথা বলো আমার সাথে,আমি সহ্য করতে পারি না যদি তুমি আমার সাথে কথা না বলো…কিন্তু তুমি একটা কাজ ই করে আমার সাথে”(নৌশিন মন খারাপ করে কথাগুলো বললে ফেললো)
…আসলেই সাদাদ যখনি যার সাথে রাগ হোক না কেন সেটার প্রভাব এই মেয়েটার উপর ফেলে…কথা বললে জবাবও দেয় না…যেন ওর সব কিছুর দায় এই মেয়েটার…আসলে যাকে খুব বেশি ভালোবাসা যায়-সে মানুষটার উপর নিজের রাগ/অভিমান/কষ্ট/সুখ সবটা কিভাবে জানি এমনি ই চলে যায়…হুম না চাইলেও প্রভাব টা পড়ে….
“মনে থাকে না তো…মনে হয় তুই এসে সব ঠিক করে দিবি তাই….অভ্যাস হয়ে গেছে সবটা তোকে দিতে দিতে…একটু মানিয়ে নে না??”(সাদাদ)
“ধুর….মানিয়েই তো নিচ্ছি…বাট কথা না বললে কান্না পায় আমার…এট লিস্ট হু হা কিছু করো তাহলেই হবে…রাগ করলে তো মুখটা ঢেড়সের মতো হয়ে যায়…ভালো লাগে না দেখতে…আমার কপালেই যে কোথা আসলে তুমি!আল্লাহ ই ভালো জানেন”(নৌশিন)
“আল্লাহ না শুধু আমিও জানি…”(সাদাদ)
“তুই আমার টেডি বেয়ার… আমার সব রাগ,মন খারাপ ঠিক করা তোর কাজ তাই আমি তোর কপালে জুটেছি….দেখ তোর তো রাগ দেখলাম না কোনো দিন বাট আমার রাগ ভাঙাতে তোর একটু কষ্ট হলেও কিন্তু একমাত্র তুই রাগ টা ভাঙাতে পারিস বা কনট্রোল করতে পারিস তাই তো তোকে আমার করে পাঠানো হয়েছে…এই যে আজ রিদির উপর আমি চটে গেলাম তুই ছাড়া অন্য কেউ কিন্তু আমাকে সে সময় থামাতে পারতো না…আর আমি কেন জানি না তোর উপর সব টা দিতে পারি…”(সাদাদ)
“ওহ্…☺☺☺তুমি না আস্ত পাগল…”(নৌশিন)
“আচ্ছা শোন না…”(সাদাদ)
“তোর রাগ হয় না আমার উপর.??”(সাদাদ)
“তোমার মতো নিম মুখু নাকি আমি যে অল্পতেই রাগ হবে…তবে আমারও কিন্তু রাগ হয় দেখবা যে দিন রাগ করবো তোমাকেই ভাঙাতে হবে হিমসিম খেয়ে যাবে তখন…আমি তো তোমার টা অনায়াসে ভাঙাতে পারবো কষ্ট করে হলেও আমার অভ্যাস আছে বাট তোমার সেটা নেই…তাই এমন কিছু করে বসো না যেন আমার রাগ হয়-হয়তো এমন হয়ে গেলো আমি রাগ টা ভাঙানোর সুযোগ ই দিলাম না তোমায়….কথাগুলো অবশ্য আমার না বাবা বলে আর কি…আমি নাকি ছোট সময় খুব শান্ত ছিলাম..আমি তো ভাইয়ার নয় বছরের ছোট বাট ভাইয়া নাকি তবু সারাক্ষণ আমায় জ্বালাতো আর আমি সব হাঁসি মুখে সহ্য করে নিতাম..কিন্তু মাঝে মাঝে ভাইয়া এমন কিছু করতো আমি নাকি ভাইয়াকে সারা দিন মুখ ই দেখাতাম না যেন ভাইয়া আমার রাগ ভাঙানোর সুযোগ না পায়….তাই তোমাকে বললাম”(নৌশিন)
“এই…না প্লিজ….আমাকে এতো বড় শাস্তি দিলে আমি নিতে পারবো না…”(সাদাদ)
“ওকে।।।তার চেয়ে শাস্তি স্বরূপ তোমায় ফুচকা খায়িয়ে দিবো সে দিন..”
“তবুও হাজার গুণ ভালো শাস্তি হবে সেটা☺”(সাদাদ)
“আর শোনো রিদি আপুর উপর আর রাগ করে থেকো না…সবাই তো একরকম হয় না…আমারও বুজা উচিত ছিলো-যে সবার হাত ধরা মে বি ঠিক না…তাই তুমি আর রাগ করে থেকো না…তুমি তো প্রতিবাদ করেই এসোছো ততটুকুই যথেষ্ঠ”(নৌশিন)
…..সাদাদ কিছু বলতে যাবে তখনি সিগনাল ছেড়ে দিলো তাই আর কিছু না বলে তাড়াতাড়ি ড্রাইভ করে পৌঁছে গেলো সেন্টারে…
……সেন্টারে গাড়ি পার্ক করতেই সাদাদের ভাবীর প্ল্যানিং মতো-রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু কিশোরী ওদের ফুল ছিটিয়ে ভেতরে নিয়ে গেলো…..
…..ওরা ভেতরে ডুকতেই সবাই পুরো হা হয়ে তাঁকিয়ে আছে…যদিও সেই মুহুর্তে যারা উপস্থিত ছিলো সবাই সাদাদ আর নৌশিনের পরিচিত বাট ওদের দুজনকে পাশাপাশি যে এতটা ভালো লাগছে কেউ চোখ সরাতে পারছে না…বিশেষ করে নৌশিনকে আসলেই আজকে অন্য রকম অপূর্ব সুন্দর লাগছে….সাদাদের মা দৌঁড়ে এসে ছেলের বৌকে জড়িয়ে ধরে…”বড় বৌ মা…এই মেয়ে কি আমার ছেলের বউ নাকি পরী??”
“না মা…আপনার ছোট ছেলেরই বউ…কিন্তু একটা ছোট্ট পরীর মতো দেখতে”(সাদাদের ভাবী)
“মাম্মি…নতুন বউ কাকি মনি কে দেখতে বারবি ডলের মতো তাই না??”(অরূপ)….সাদাদের ভাইয়ের ছেলে পাঁচ বছর বয়স-ওর মায়ের অাঁচল ধরে এমন একটা প্রশ্ন করলো……অরূপের কথা শোনে সবাই হেঁসে ওঠলো….
…একটু দূরে বসে থাকা নৌশিনের বাবা মা এতক্ষনে সবার ব্যবহার দেখে এটা বুঝে গেছে ওদের মেয়ের কোনো দিন সুখের অভাব হবে না এই পরিবারে…..নৌশিন সবার ভিড়ে ওর বাবা মা কে দেখতে পায় নি…..
“মাম্মাম বলো না…বউ টা বারবি ডল না???”(অরূপ তখন কোনো উত্তর পায় নি তাই আবার ওর মাকে প্রশ্নটা করে)
…”হুম বাবু…এটা একটা বারবি ডল☺☺…তোমার কাকি মনি..কেমন!”….
“হি হি পুতুল কাকি মনি☺☺☺”(অরূপ)
“আচ্ছা তোমরা কি ওদের এখানেই দাঁড় করিয়ে রাখবে নাকি??স্টেজে চেয়ার দুটো খালি থাকবে???বসুক ওরা পরে কথা বলো তোমরা..”(সাদাদের দোলাভাই)
….সবাই মিলে সাদাদ আর নৌশিনকে স্টেজে নিয়ে যায়…নৌশিন কোনো কিছু না ভেবেই ধপাস করে বসে পড়ে নিজের চেয়ারে…এটা দেখে উপস্থিত সবাই হেঁসে ফেলে…নতুন বউ কোনো কিছু না বলেই বরের আগে এভাবে হুড়হুড়িয়ে বসে পড়বে এটা কেউ ভাবে নি…তাই হাঁসা টাই স্বাভাবিক….
নৌশিন বোকার মতো আবার জোড়ে বলে উঠে”প্লিজ হেঁসো না তোমরা…আমি এতো গহনা আর এই ভারী শাড়ী টা নিয়ে আর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলাম না…তাই বসে পড়লাম…”
…সাদাদের দিকে তাঁকিয়ে আবার বলে ওঠে”সাদাদ প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড তোমার আগেই বসলাম…যদিও আমি জানি তোমার আগে বসার কথা…বাট শাড়ী টা আমার থেকেও ওজন লাগছিলো”….
।।।”আরে ঠিক আছে…বর আগে বসবে সেটা জাস্ট প্রচলিত এটা তো আর রোল টোল না রে”।।।(সাদাদের কাকি)
….”হুম…তবে শাড়ী আর গহনার দোষ দিয়ে কোনো লাভ নেই-শরীর টাও একবার খেয়াল করা উচিত”(সাদাদ)…
“সাদাদ..আজ একটু চিকন আর তোমার চেয়ে খাটো বলে এই কথা টা বললে…..এই অপমান কই রাখবো??”(নৌশিন)
“অপমানের কি আছে যা সত্যি তাই বলেছি ম্যাম…আমারও তো এটাই মনে হয় তোমার চেয়ে তোমার শাড়ীর ওজন টা বেশি হবে”(সাদাদ)….
…..সাদাদের মা নৌশিনের বাবা আর মাকে স্টেজে নিয়ে আসে…নৌশিন ওর বাবা মাকে দেখে ওঠে গিয়ে ওর মাকে জড়িয়ে ধরে…”মা..☺☺আমি না বললে আসবে না???”
“তোর বাবা জোর করে আনলো কি আর করার তাই আসলাম..না আসলে আমার সোনা মেয়েটাকে যে এতো সুন্দর লাগছে দেখেতেই পেতাম না”
“আমাকে ভুলে গেলি??”(নৌশিনের বাবা)
…নৌশিন এবার ওর বাবাকে জড়িয়ে ধরে”ইশ একদম না..তুমি আমার একটা মাত্র বাবা তোমাকে কি ভুলা যায় নাকি..☺☺”(নৌশিন)
….এটা কোনো কথা???…বাবা তো একটাই থাকে সবার… নৌশিন আবার ঘটা করে সবার সামনে বলে একটা মাত্র বাবা…হায় আল্লাহ মানুষের হাঁসি কি এতো সহজে থামবে নাকি….হলোও ঠিক তাই….
“হয়েছে পাগলী…যা বস এখন নিজের জায়গায়…”(নৌশিনের বাবা)
“মা…ভাইয়া,ভাবী কোথায়??”(নৌশিন)
“ওরা আসছে…ফোন আসছে সবাইকে নিয়ে…আমি আর তোর বাবা আর দেরি করতে পারছিলাম না তাই সবাইকে রেখেই বেরিয়ে পড়েছি…ওরা এসে গেলো বলে-মিরপুর এসে গেছে..শ্যামলী আসতে আর কতক্ষণই বা লাগবে…তুই গিয়ে বস জামাইয়ের পাশে….যা…”(নৌশিনের মা)…………………
!
!

#প্রেমঘোর#১৪#
💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
….সাদাদ আর নৌশিন পাশাপাশি চেয়ারে বসে….সাদাদ আড় চোখে নৌশিনের দিকে তাঁকিয়ে….এমন সময় নৌশিনের ভাবী এসে পড়লো….সাদাদের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসে বলে”কি ব্যাপার জামাইবাবু?রাতে কি দেখতে দেয় নি?যে এখন দেখছো এভাবে তবুও আবার সবার সামনে??”
“আরে ভাবী তুমি কখন এলে?”(সাদাদ)(কথা শোনার আগে খেয়াল করে নি)
“এই তো সবে মাত্র…”(নৌশিনের ভাবী)
“কি রে নৌশিন???দেখতে দিস নি রাতে??”
“ভাবী..তুমিও…তুমি তো এগুলো বলতে না কখনো আগে….আজ কি বলো এসব??”(নৌশিন)
“আগে কি তোর বাসার হয়েছিলো আরও যে আমি বলবো”(নৌশিনের কানের কাছে মুখ এনে)
“ভাবী!!!”(নৌশিন)
“হয়েছে ব্লাশিং হতে হবে না এতো…আমি যাই ঐ দিকটাতে…তোরা থাক…”
…..সাদাদ মুচকি হেঁসে বিদায় জানায়…..
“সাদাদ তুমি বললে আমার ডিপার্টমেন্টেরর সবাই নাকি এসে গেছে…বাট আমরা তো কখন থেকে বসে কোথায় কেউ তো নেই…এখানে তো সব তোমার আমার বাড়ির লোকজন”(নৌশিন)
“হুম এসেছে মে বি খাচ্ছে বা আশে পাশে কোথাও”(সাদাদ)
“রাক্ষসেরর দল…আগে দেখা তো করবে….খাবার কি ওবে যাবে নাকি…”
“তোমার মতো তো না…রিসেপশনে এসে পেট পুরে খাওয়া টাই আসল মজা…যদিও তুমি সেটা বুঝবে না….”(সাদাদ)
“হুম…তুমি বুজো তাহলেই আমার হবে”(নৌশিন)
“এই বিয়ে বাড়ির কিন্তু আরও একটার দারুণ দিক আছে…”(সাদাদ)
“কি??”(নোশিন)
“তোমার বাড়িতে যে মেয়ে গুলো এসেছিলো সেগুলোকে আস্ক করে দেখো কালকে আমার সাথে যাওয়া ছেলেগুলোর থেকে কে কয়টা প্রপোজ পেয়েছে বা কে কে ফোন নম্বর বিলি করছে…আমি তো শিউর কালকে সব মেয়েরা তোমার বাসায় গিয়ে বিপদে পড়ে গিয়েছিলো ঠিক যেমন তুমি লাবণ্যের বিয়েতে পড়েছিলে,আর তোমার বাসার মেয়েদেরও সেইম অবস্থাই হয়েছিলো ছেলেদের জ্বালায়(লাবণ্য সাদাদের ক্লোজ ফ্রেন্ড)…আমি আগে জানলে তোমাকে সেখানে(লাবণ্যের বিয়ে)নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবতাম ই না…”(সাদাদ)
“ও।।।এই মজার কথা বললা….এটা সবাই জানে…শুধু কাল কেন??আজ দেখো কি হয়….আমার ডিপার্টমেন্টেরর ছেলেগুলো তো কাল আমার বাসার সব মেয়েকে জ্বালাইছে নাকি…আজও তো কম সুন্দরী মেয়ে রা আসে নি আর ছেলেও অনেক…হবে সে রকম অনেক কিছু…(নৌশিন)
….সাদাদ আর নৌশিন কথা বলে চলেছে….অপরদিকে ওদের পরিবারের লোকেরাও একে অপরের সাথে কথা বার্তা চালিয়ে যাচ্ছে….হঠাৎ করে একদল ছেলে মেয়ে দৌঁড়ে আসে সাদাদ আর নৌশিনের কাছে……
“আরে..ভাবী…..কিয়্যা বাদ হ্যা….কিতনে মোলাকাদ হয়ি???😃😃”(সবাই এক সাথে চিল্লিয়ে ওঠে)…..সবগুলো নৌশিনের বন্ধু…এতক্ষণ ওপরে ইনজয় করছিলো সাদাদ আর নৌশিনের আসার খবর পেয়ে দৌঁড়ে এসেছে…এরা সবাই যেমন নৌশিনের ক্লোজ তেমনি সাদাদের….সাদাদ ভাই বলতে অঙ্গান সবাই আর মারুফ তো নিজের বড় ভাইয়ের মতো সম্মান করে সাদাদকে…..
“এই কে তোদের ভাবী??”(নৌশিন)
“কেন??আপনি??”(বন্ধুরা)
“কি হচ্ছে কি???কিসের আপনি??কিসের ভাবী???”(নৌশিন)
…..আরে আপনি আমাদের ক্যাম্পাসের সবার প্রিয় বড় ভাই…সাদাদ ভাইয়ের ওয়ান এন্ড ওনলি ওয়াইভ….তো আপনকে অবশ্যই ভাবী বলে সম্মান দেওয়া উচিত….
…সাদাদ ওদের কথায় মুচকি হাঁসতে থাকে….
“হ্যাঁ হ্যাঁ…ঠিক বলেছিস তোরা”(সাদাদ)
“সাদাদ….কি বলো??তার মানপ তুমি ই ওদের নাটের গুরু??”(নৌশিন)
“নাটের গুরুর কি আছে…ওরা সবাই আমার আদরের ছোট ভাই বোন তো আমার বউকে ভবী আর আপনি বলেই তো ডাকবে নাকি???”(সাদাদ)
“এই…ভালো হবে না কিন্তু…তাই বলে সবাই আমায় ভাবী বলে ডাকবে নাকি….নেভার…এটা হবে না….”(নৌশিন)
“এটাই চলবে…”(সাদাদ)(নৌশিনকে ক্ষেপানোর জন্য)
….বাট এই নৌশিনটা এতো সহজে ক্ষেপে না…কি করে যে ওর মাথায় সব কিছু থেকে বাঁচার জন্য একটা বিকল্প বুদ্ধি সব সময় তৈরী থাকে তা একমাত্র উপর ওয়ালা ই ডাকে…
“ওকে…ডাক তোরা ভাবী…নো প্রবলেম…বাট শুধু ছেলেরা ডাকবি…ছেলেরা তোদের প্রিয় সাদাদ ভাইয়ের দলে গিয়ে আমায় ভাবী বলে ডাক…বাট শোন এতো দিনের ফ্রেন্ড তোরা আমার তো আমার পক্ষেও কেউ থাক….সো মেয়েরা আমার দিক থেকে সাদাদকে জিজু/দোলাভাই বল ডাকবি….ওকে???”(নৌশিন)
“এই না না…কিসের দোলাভাই…আমি শুধু ভাই..”(সাদাদ)
“না না সাদাদ ভাই…আমি কিন্তু নৌশিনের দলেই আছি…”(আশা)
“দেখছিস সবাই….বেস্টি আসলেই বেস্টি হয়….আর তোরা নিজের স্বার্থে সব কয়টা সাদাদ ভাইয়ের দলে….”(নৌশিন)
“এই একদম না…আমিও কিন্ত তোকে ভাবী ডাকি নি…”(সোহান)
“যা… আমি তো তোদের দুজনের কাছ থেকেই বেশি আশা করেছিলাম রে…”(সাদাদ)
“হু হুম….সব আশা পূরণ হয় না…এখন তোরা ডিসাইড কর কি বলে ডাকবি আমায়???”(নৌশিন)
“এই না আমি তো দোলাভাই/জিজু ডাকবোই না…”(নেহা)
..নেহার সাথে তাল মিলিয়ে সব মেয়েই ‘না’জানিয়ে দেয়…
“তবে???? “(নৌশিন)
“ওকে… ডান তুই আমাদের ই রইলি…ভাবী ক্যান্সেল…আর সাদাদ ভাই-ভাই হয়েই থাকুক..”(মেয়েরা)
“আমারও একটা মতামত আছে সাদাদ ভাই…”(হৃদয়)
“তোর আবার কি হলো??”(সাদাদ)
“এই মেয়েটা তো(নৌশিনের মাথায় চড় মেরে)…ডিপার্টমেন্টের সব চেয়ে পিচ্চি একে কি ভাবী ডাকা ঠিক হবে??আমার তো কেমন জানি লাগে….”(হৃদয়)
“বাদর,আমি পিচ্চি…এই সবাই ভাবী বলে ডাকবি আমায়…তোরা সবাই আন মেরিড শুধু আমি মেরিড সো আমি সবার সিনিয়ার…ভাবী বলো ডাকবি সবাই-সম্মান দিয়ে কথা বলবি”(নৌশিন)
“হুপ…মেরিড তো কি…বিয়ে করে কি পাঁচ ফুট ছয় হয়ে গেছিস নাকি???সেই তো পাঁচ ফোট দুই ই আছিস…আর দেখতে তো ঠিক চড়ই পাখির বাচ্চা”(মুগ্ধ)
“তোর কি রে…এই তুমি দেখছো না??তোমার সামনে তোমার বউকে কেউ এভাবে ইনস্টাল করছে চোখে পড়ে না তোমার???”(নৌশিন)
“আহ্…মুগ্ধ ছাড় না…এভাবে বলিস না বউ হয় আমার☺”(সাদাদ)
….এভাবেই সবাই মজা করতে থাকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে…….
.
.
ধীরে ধীরে গেস্টরা আসতে শুরু করে…সবার নজর যেন নৌশিনের দিকে…এমন ছেলের বৌ আনায় পাড়া পড়শি রা সাদাদের মায়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ…….দুই ছেলের এমন বৌ পেয়ে সাদাদের মা যেন আজ একটি পরিপূর্ণ আত্না………………………………..

#প্রেমঘোর#১৫#
💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
এদিকে সাদাদের কলিগরা আসতে শুরু করেছে…..
তাই নৌশিনের ফ্রেন্ডরা সাদাদ আর নৌশিনের কাছ থেকে সরে অন্য দিকে চলে যায়….সবাই আড্ড-মাস্তি-খাওয়া দাওয়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে…..
সাদাদ ওর এক এক করে ওর সব কলিগদের সাথে নৌশিনের পরিচয় করিয়ে দেয়….
সাদাদের ফ্রেন্ডরা কেউ এখনো আসে নি…..আর সাদাদের বসও এখনো এসে পৌঁছায় নি….
কলিগদের তাড়া থাকায় সবাই খাওয়া দাওয়া সেরে নিয়ে তাড়াতাড়ি ই সাদাদ আর নৌশিনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায়…..
এইসবের মাঝখানে একটু দূরের দুটো চোখ নিরবে শুধু নৌশিনকে দেখে যাচ্ছে…না ঠিক নৌশিনকে না-নৌশিনের হাঁসোজ্জল মুখটা দেখে যাচ্ছে…….
হুম আর কারও নয় চোখ দুটো নৌশিনের জন্মদাত্রী মা…মেয়ের সুখে মাতোয়ারা হয়ে পলকহীন দৃষ্টিতে চেয়ে আছে মেয়ের দিকে…কারও সাথে কোনো কথা বলছে না এখন তিনি শুধু মেয়ের হাঁসিমাখা মুখ টাই দেখছে…সব মা ই এটা চায়….নৌশিনের বাবা ডেকে গেছে অনেকবার কিন্তু যান নি নৌশিনের মা…এমন একটা জায়গায় বসেছেন যেখান থেকে মেয়ের মুখটা স্পষ্ট বোজা যায়……
সাদাদের বস চলে আসে…নৌশিনের হাতে উপহার দেয়…নৌশিনকে প্যাকেট টা খুলতে বলে…
প্যাকেট খুলে ই নৌশিন একটা গহনার বক্স পায়…সাদাদের মুখের দিকে তাঁকিয়ে চোখ দিয়ে সাদাদের কাছে জানতে চায় খুলবে কি না বাক্স টা…
“আরে সাদাদের অনুমতি নিতে হবে না…খুলে ফেলো তুমি…”(বস)
…বাক্স টা খুলে নৌশিন পুরো হা…একটা খুব দামী হিরার নেকলেস….নৌশিন একরকম অবাক হয়ে লোকটার দিকে তাঁকিয়ে রইলো..কারণ সাধারণত অফিসের কর্মচারী সে যতই উচ্চ পদস্থ হোক না কেন-কোনো বস এমন উপহার দেন না…বাট সাদাদকে দেখে মনে হচ্ছে না ও একটুও অবাক হয়েছে,সেটা দেখে নৌশিন যেন আরও একটু বেশিই অবাক হলো….কারণ এই চার বছরে সাদাদকে নৌশিন যতটা চিনেছে তাতে সাদাদের এতো দামী গিফ্টে খুশি হওয়ার কথা না…এক বার নৌশিন ভালবাসা দিবসে সাদাদকে একটা দামী হীরার রিং দিয়েছিলো তাই রাগারাগী করেছিলো……”এতো দামী রিং এর কি মানে আছে নৌশিন??”(সাদাদ)
“আরে..তুমি তো আমাকে কত কিছুই দাও..আমি তো সে হিসেবে কোনো কিছুই দেই না…আজকে দিলাম একটু সমস্যা কোথায় তাতে??”(নৌশিন)
“দিতে পারে বাট এতো দামী জিনিসের কোনো মানে নেয়…”
“ওহ…সাদাদ…প্লিজ শান্ত হও…আমি তোমার জন্য নরমাল উপহার কিনতেই বের হয়েছিলাম…বাট আমি তোমাকে অনেক বার ঘরি দিয়েছি তাই আজকে রিং টা দিলাম…”
“তো..??তাই বলে ডায়মন্ড…নৌশিন এটা ঠিক করো নি তুমি….”
“আচ্ছা…আমি যখন এনেই পড়েছি তো সেটা কি ফেরত দিয়ে দিবে তুমি?”
“গোল্ড হলেও কথা ছিলো…আর আমি ই এখন অবদি তোমায় এতো দামী কিছু দিই নি…”
“গোল্ড কি করে দিবো…ইসলামে ছেলেদের গোল্ড পড়ার অনুমতি নাই…আগে যদি জানতামম তুমি এতোটা রেগে যাবে তাহলে রূপার রিং আনতাম তোমার জন্য”
“অনেক খুশি হতাম..বাট এটাতে একদম হয় নি”
“প্লিজ ফিরিয়ে দিও না…দেখো তুমি তো বিয়েতে কত দামী দামী গহনা দিবে আমায়…আমি তো আর দিবো না কিছু তোমায়…তোমরা ছেলেরা তো খুব বেশি হলে একটা দুটো রিং ই পরো আর তো কিছু না…আমি যখন এনেই পড়েছি প্লিজ নাও না…ধরো আমি তোমাকে আমার ভাবী স্বামীরূপে আজ স্বীকৃতি দিয়ে দিলাম..”
“কি???”
“কেন??মানবে না আমায় বউ হিসেবে???”(চোখে বিনা কারণেই যেন নৌশিনের পানি এসে গিয়েছিলো)
…সাদাদ নৌশিনের চোখে পানি দেখে ওকে জড়িয়ে ধরেছিলো নিজের বুকে খুব শক্ত করে….
“এই মেয়ে…কাঁদবি না একদম….মানবো না তোকে বউ হিসেবে-কি বলছিস এটা আমি তো তোকে অনেক আগে থেকেই নিজের বউ বলেই মানি…তুই শুধু আমার…”
“তাহলে নাও এটা…”
….সাদাদ নৌশিনকে ছেড়ে দেয়…
“ওকে…”
…নৌশিন সাদাদের হাতে রিং টা পড়িয়ে দিতে যায়…সাদাদ বলে ওঠে”দাঁড়া”….পকেটে হাত দেয় সাদাদ কি একটা বের করে বসে পড়ে মাটিতে….খুলা একটা মাঠে ছিলো দুজনে সেদিন……সন্ধ্যার আবছা আলোয় দুজনে দুজনকে দেখছিলো…সাদাদকে এভাবে নিচে বসতে দেখে নৌশিন অবাক হয়ে গিয়েছিলো…সাদাদ নিজের মুখটা উঁচু করে নৌশিনকে দেখছিলো…হঠাৎ নৌশিনের মুখের দিক থেকে নজর সরিয়ে-নৌশিনের পায়ে হাত দেয়….নৌশিন এক লাফে সরে দাঁড়ায়”এই কি করছো???পাগল হয়ে গেলপ নাকি??পায়ে কেন হাত দিচ্ছো….?”
সাদাদ কোনো কথা না বলে বসা অবস্থাতেই নৌশিনের কাছে যায় আবার…পায়ে হাত লাগায়…নৌশিন সরে যেতে চাইলে সাদাদ বাঁধা দেয়…নৌশিন চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকে….পায়ে সাদাদের ছোঁয়া পায় আর সাথে শীতল একটা কিসের ভর অনুভব করলো…..চোখ খুলে পায়ের দিকে তাঁকিয়ে নৌশিন পুরো হা…..এতো সুন্দর একটা পায়েলে…..নৌশিন নুপুর পড়ে না বাট এক পায়ে পায়েল পড়তে ওর বেস লাগে…তাই সাদাদ এনেছিলো সে দিন….”এই তোকে স্কীকৃতি দিলাম আমার বউ হিসেবে…রিং পড়িয়ে নয়…পায়েল পড়িয়ে আমার করে নিলাম…”….নৌশিন খুশিতে দিশেহারা হয়ে গিয়েছিলো-সুখ যেন কান্নায় পরিণত হয়ে গিয়েছিলো মেয়েটার…তাই সাদাদ ওঠে আবার জড়িয়ে ধরে নৌশিনকে..নৌশিনের সুখ কান্না এতে আরও বেড়ে যায়…”কি রে…কেঁদেই যাবি??পড়াবি না আমায়…?কি আনছিস তো দেখলাম পড়িয়ে দে..”
…নৌশিন চোখ মুছে মুখে হাঁসি নিয়ে সাদাদের হাতে রিং টা পড়িয়ে দেয়…..
দু বছর পার হয়ে গেছে সে সে দিনটা থেকে…আজ বিয়ের পরও নৌশিনের পায়ে সেই পায়েল টাই আছে…আর সাদাদের হাতে নৌশিনের দেওয়া রিং টা…সাদাদ কখনো রিং পড়ে না বাট নৌশিনের উপহার হওয়ায় খুলে নি আর…..
….যে সাদাদ নৌশিনের দামী উপহারে রাগ করতো তার বউকে তার বস এতো দামী উপহার দেওয়াতে কিছুই মনে করলো না…নৌশিন অবাক দৃষ্টিতে সাদাদের দিকে তাঁকিয়ে…
“কি রে মা?কি ভাবছিস???দিতে পারি না ছেলের বউকে একটু??…নৌশিন যেন আরও অবাক হলো…কি বলছে লোকটা…
…সাদাদ চোখের ইসারায় নৌশিনকে পড়তে বলে নেকলেসটা..এতে নৌশিন আরও অবাক হয়…সাদাদ আবার ইশারা করায় নৌশিন নেকলেস টা পড়ে নেয়…সাদাদ নৌশিন আবার ইশারা করে সালাম করতে বলে…নৌশিন তাই করলো…পায়ে হাত দিয়ে সালাম করলো সাদাদের বসকে….
লোকটা নৌশিনের মুখে হাত দিয়ে ডুকরে কেঁদে ওঠলো….নৌশিনের কিছুই ডুকছে না মাথায়….একটা লোক তার অফিসের একটা কর্মকতা আর তার বৌ এর সাথে এতটা অমায়িক কি করে হতে পারে…যদিও সাদাদ ওনার চেয়ে বড় লোকের ছেলে তবুও সাদাদ তো ওনার অধীনস্ত……এইসব ভাবতে থাকে নৌশিন…কোনো উত্তর খুঁজে পাওয়ার আগেই লোকটা সাদাদ আর নৌশিনকে একসাথে নিজের বুকে নিয়ে হাওমাও করে কাঁদতে থাকে….নৌশিনেরও চোখে পানি এসে যায় লোকটার এমন কান্নায়….পুরো পরিবেশ যেন মুহুর্তেই নীরব হয়ে যায় মানুষটার এমন আহাজারিতে……”বাবা বলে ডাকবি আমায়??একবার ডাকবি?”(নৌশিনকে লোকটা বললো)
..নৌশিন নিশ্চুপ থাকায় লোকটা আবার বলে ওঠে”একবার শুধু একবার ডাক…”
…নৌশিন কিছু বলার আগেই সাদাদ বলে ওঠে”ও…এখন ছেলের বউ পেয়ে আমাকে ভুলে যাওয়া তাই তো…আমার একার ডাকে হয় না তোমার?”
…নৌশিন তো পুরোই থ…সাদাদ ওর বসকে বাবা বলে ডাকে!!!(মনে মনে)
….”বল মা…একবার ডাক বাবা বলে..”
….নৌশিন আর সহ্য করতে পারছে না লোকটার এমন আর্তনাদ…কেন লোকটা এমন করছে কিছু জানে না ও…কিন্তু এক মুহুর্তে লোকটার কান্না যেন নৌশিনের হৃদয় ছেদ করে দিলো….তাই নৌশিন আর কোনো কিছু না ভেবেই লোকটাকে বাবা বলে ডেকে ফেলে….লোকটা আবার সাদাদ আর নৌশিনকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করলো….এ যেন সারা জীবনের জমে থাকা কষ্টের আহাজারি….লোকটা ওদের বুকে নিয়ে-উপরের দিকে তাঁকিয়ে”দেখো…তোমরা চলে গেছো…এই যে আমার নতুন ছেলে আর ছেলের বউ….”…..উপস্থিত সবাই যেন হতবাক…..লোকটা ডুকড়ে কাঁদতে থাকে…”বাবা আর কাঁদবে না প্লিজ…এবার কিন্তু আমার খারাপ লাগবে…তুমি বউ দেখবে বলে তাড়াতাড়ি বিয়ে করলাম আর তুমি এমন করছো.?”(সাদাদ)
…সাদাদ বসের চোখটা মুছিয়ে দেয়..”এই ওয়েটার এই দিকে মিষ্টি দাও…”(সাদাদ)
“তোমার তো মিষ্টি খাওয়ার খুব ইচ্ছে তাই না???ডায়বেটিসের জন্য খাও না… আজ আমি নিজে খাইয়ে দিবো….”(সাদাদ)….ওয়েটার মিষ্টি নিয়ে এলো…যে সাদাদ ভাত টা পর্যন্ত চামচ দিয়ে খায় সে সাদাদকে আজ চামচ ছাড়া মিষ্টি খাইয়ে দিতে দেখলো নৌশিন…মনের অজান্তেই নৌশিনের চোখের পানির বেগটা আরও বেড়ে গেলো….লোকটাও চামচ ছাড়াই একটা মিষ্টি প্রথমে নৌশিনকে পড়ে সেটাই আবার সাদাদকে খাইয়ে দেয়….অবাক করা আরও একটা বিষয় হলো নৌশিন কোনো দিন মিষ্টি খায় না…মিষ্টি মুখে দিলেই ওর বমি হয়…আর আজ নৌশিন কোনো কথা ছাড়াই লোকটার হাত থেকে অর্ধেক মিষ্টি অনায়াসেই খেয়ে নিলো….
“বাবা…..আর কোনো দিন এভাবে কাঁদতে দেখলে ঠিক হবে না কিন্তু”(সাদাদ)
“আরে কি শুরু করলি তুই??আমাদের ছেলের বিয়ে আর তুই কান্না শুরু করলি!!চল খাই দাই ফর্তি করি…”(সাদাদের বাবা)
…..”ওহ…সিউর সিউর চল…ছেলে মেয়েরা কি একাই সব মজা করবে নাকি😃😃আমাদেরও মজার বয়স আছে-জোর আছে….দেখুক ছেলে-মেয়েরা আমরাও পারি….”
(বস)
“তোমার তো ডিল আছে আজ একটা একটু পরে…”(সাদাদ)
“আরে…পরশু দিন ডেট দিয়ে দিছি…তুই গিয়ে করে নিস…পারবো না আমি…আজকে আনন্দ করি একটু”(বস)
…সাদাদের বাবা আর বস ওদের কাছ থেকে চলে এসে আনন্দ উল্লাসে মেতো উঠে…এক সময় নৌশিনের বাবাকেও জোড় করে এনে সামিল করে নেয় সাদাদের বাবা…ওদের খুশি যেন আর ধরে না…..
…প্রায় ঘন্টা খানেক হলো…নৌশিনের হঠাৎ করেই গলার দাগ টার কথা মনে পড়ে যায়….
সাদাদকে কথাটা বলবে…..
তখনি!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here