Ex গার্লফ্রেন্ড যখন বাড়ীওয়ালি পর্ব,,,২

0
442

Ex গার্লফ্রেন্ড যখন বাড়ীওয়ালি

পর্ব,,,২

লেখক,,,junior

কিছুক্ষণ পর আঙ্কেল কাকে যেন ডাকতে লাগল,,,,

আমি তাকিয়ে বাড়িটা দেখছিলাম,,, বাড়িটা পুরো রাজপ্রাসাদের মত,,,, মনে মনে ভাবলাম,,,, খোদা তায়া লার খেলা বোঝা বড়ই কঠিন,,,, কিছু মানুষের টাকার অভাব নেই,,, আর কিছু মানুষ ভালোমতো খাওয়ার টাকা পায়না,,,,

তারপর একজন মহিলা আসলো,,,, বয়স্ক মনে হলো,,,

কি হলো এত ডাকছো কেন,,,,, মহিলাটি

কোথায় থাকো,,, এতক্ষণ ধরে ডাকতে ছিলাম,,, কোন খোঁজ খবরই নাই,,,,, আঙ্কেল

তারপর মহিলাটি আমার দিকে তাকালো,,,, আমি একবার তাকিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলাম,,,,

এটা কে,,,, হঠাৎ কাকে ধরে নিয়ে আসছো,,,, মহিলাটি

আরে বলোনা,,,, ওকে হাসপাতালে পেয়েছি,,, আজ গাড়ি নিয়ে অফিসে যাওয়ার সময়, দেখলাম,,, রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে,,,, তারপরে হাসপাতালে নিয়ে গেছিলাম,,,, ছেলেটার সাথে কথা বলে,, ভালই লাগলো,,, তাই বাড়িতে নিয়ে এলাম,,,, আঙ্কেল

ওহহহ,,,, ভালোই করেছো,,,, আমাদেরও কোন ছেলে নাই,,,, তারপর আন্টি আমার উদ্দেশ্যে বলল,,,

তা বাবা তোমার নাম কি,,,, আন্টি

আমার নাম রাশেদ,,,, আমি

খুব সুন্দর নাম,,, তোমার বাড়িতে কে কে আছে,,,, আন্টি

বাড়িতে মা আর,, ছোট একটা ভাই আছে আন্টি,,, আমি

কেন তোমার বাবা,,,, আন্টি

বাবা মারা গেছে,,, চার বছর আগে রোড এক্সিডেন্টে,,,, আমি
সরি বাবা,,,, বুঝতে পারিনি,,, হঠাৎ তোমাকে কষ্ট দিলাম,,,, আন্টি

না সরি বলার কি আছে আন্টি,,, যা সত্যি তাই তো বলেছেন,,, মনে করে না দিলেও কি,,,, এটা ভোলার বিষয়,,, আমি

হুম বাবা,, ঠিক বলেছ,,, বাবা সত্যি মহান,,,, আন্টি

আরে তোমরা কি শুরু করেছো,,,, ছেলেটা হাসপাতাল থেকে আসলো,,,, আর তুমি তাকে তার বাবার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছো,,,, আঙ্কেল

আচ্ছা বাবা তুমি উপরে চলো,,,, তোমার রুমটা দেখিয়ে দেই,,,, আন্টি

তারপর আন্টির সাথে উপরে গেলাম,,,, বাড়িতে অনেকগুলো ঘর আছে,,, আন্টি আমাকে উপরতলায় একটা কোনার ঘরে নিয়ে গেল,,, ঘরটা দেখতে খুব সুন্দর ছিল,,, অনেক সাজানো-গোছানো,,,

বাবা এটা হল তোমার ঘর,,,, আজ থেকে তুমি এখানে থাকবে,,,, আন্টি

ঠিক আছে আন্টি,,,, আপনারা সত্যি মহান,,, কাউকে না জেনে না চিনেই থাকতে দিচ্ছেন,,, আমি

এখানে মহানের কিছু নিই বাবা,,,, মানুষকে সাহায্য করাই তো মানুষের ধর্ম,,, আর তাছাড়া তোমাকে আমারো ভালো লেগেছে,,, আর খুব ভালো ছেলে মনে হয়েছে,,,, আন্টি

দোয়া করবেন আন্টি,,, আপনাদের বিশ্বাসটুকু যেন রাখতে পারি,,,, আমি

হুম অবশ্যই,,,, এখন ফ্রেশ হয়ে নিচে আস,,,, আমি তোমার জন্য খাবার রেডি করছি,,,, আন্টি

তারপর আন্টি চলে গেল,,, আমি খাটের উপর গিয়ে বসলাম,,, আর ভাবতে লাগলাম গত ৭ দিনের কথাগুলো,,,,,, কেমন ছিলাম,,, আর কি হয়ে গেলাম,,,,
কত স্বপ্ন দেখতাম,,, একজন বড় ডাক্তার হব,,, মানুষকে সাহায্য করবো,,,, কিন্তু মধ্যবিত্তদের আসলে স্বপ্ন মানায় না,,,, সেটা এখন ভালোই বুঝতে পারি,,,,,

হঠাৎ আন্টি নিচ থেকে ডাকতে লাগলো,,,, খাওয়ার জন্য,,,

তারপর ফ্রেশ হয়ে নিজে খেতে গেলাম,,, দেখলাম আঙ্কেল বসে আছে,,,, একটু পর খাওয়া শুরু করলাম,,,

তখন আঙ্কেল বলল,,,,
আচ্ছা রাশেদ,,,, তুমি কবে থেকে কাজে যয়েন করতে চাচ্ছ,,, আঙ্কেল

আপনি যেদিন থেকে বলবেন,,,, আমার কোন প্রবলেম নেই,,,, আমি

আচ্ছা তাহলে,, তুমি কাল দিন পর থেকে কাজে যাবে,,, এই দুদিন রেস্ট নাও,,,, আঙ্কেল

ঠিক আছে,,,, আমি

তারপর খাওয়া শেষ করে রুমে চলে আসলাম,,,, অনেক ক্লান্ত লাগছিল,,,, সাত দিন হল ভালোভাবে ঘুমাতে পারিনি,,,, হঠাৎ সেই রাস্তার মানুষ গুলোর কথা মনে পড়লো,,, আমিতো সাত দিন হল ঘুমাতে পারি না,,,
আর তারা তো সারা জীবনই ঘুমাতে পারে,,,, এভাবে জীবনটা কাটিয়ে দে,,,, সেদিন রাতে সিদ্ধান্ত নিলাম,,, জীবনে যদি বড় কিছু হতে পারি,,, এই রাস্তার মানুষগুলোর জন্য কিছু করব,,,,,,

এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম,,,,, সন্ধ্যায় আন্টির ডাকে ঘুম ভাঙ্গে,,,,,

ঘড়িতে তাকিয়ে দেখলাম,,,, পাঁচটা বেজে গেছে,,,,
এতক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম,,,,,,
তারপর ফ্রেশ হয়ে,,,, বাইরে আসলাম,,,, দেখলাম আন্টি রান্না করতেছে,,,, আমাকে দেখে আন্টি বলল,,,,

রাশেদ ছাদে যাও,,,, ওখানে ভালো লাগবে,,,, আন্টি

আচ্ছা আন্টি,,,, আমি,
একটু পর ছাদে গেলাম,,,, দেখলাম একটা মেয়ে কার সাথে যেন ফোনে কথা বলছে হেসে হেসে,,,, আমাকে দেখে কথা বলা বন্ধ করে দিলো,,, আর বলল,,,

আপনি কে,,,, আর আমাদের সাথে কি করছেন,,,, মেয়েটা
আমি রাশেদ,,, আপনাদের বাড়িতে,,,, আর কিছু বলতে যাব তার আগে মেয়েটা বলে উঠলো,,,

ও চিনেছি,,, আপনি তাহলে সেই ছেলে,,, যাকে বাবা,, আমাদের বাড়িতে থাকতে দিয়েছে,,,, আর শুনলাম আপনি বলে আমাকে পড়াবেন,,,, মেয়েটা

হুম ঠিকই শুনেছো,,,, কোন ক্লাসে পড়ো,,, আমি

নাইনে পড়ি,,,, আচ্ছা আপনি এখন যান,,, আমি একটু ব্যাস্ত আছি,,, মেয়েটা,,,

তারপর মেয়েটা আবার ফোনে কথা বলতে শুরু করে দিল,,, আমি কোন উপায় না দেখে চলে আসলাম,,,,

তারপর মাগরিবের নামাজ পড়ে,,, বাড়িতে ফোন দিলাম,,, দুইদিন হল মার সাথে কথা হয়নি,,, অনেক চিন্তা করছে মনে হয় ,,,,

তারপর মার সাথে অনেকক্ষণ কথা বললাম,,, ছোট ভাইটার সাথে কথা বললাম,,,কথা বলার পর মনটা ভালো গেল,,,,,

কিছুক্ষণ পর,,, আন্টি রাতের খাওয়ার জন্য ডাক দিলো,,,,,

ফ্রেশ হয়ে খেতে গেলাম,,,, দেখলাম আঙ্কেল আর তার মেয়েটাও আছে,,,,

খাওয়া শুরু করলাম,,, তখন আঙ্কেল বললো,,,

এটা আমার মেয়ে নিশিতা,,,, একেই তোমাকে পড়াতে বলেছিলাম,,,, আঙ্কেল

ওহহহ,,, আমি

আচ্ছা রাশেদ,,, তাহলে কাল সকাল থেকে পড়াবে আমার মেয়ে কে,,, যদি তোমার কোন সমস্যা না থাকে,,,, আঙ্কেল

না আমার আবার কি সমস্যা থাকবে,,,, তারপর নিশিতার উদ্দেশ্য করে বললাম,,,

তুমি কি সাইন্সে পরো,,,, আমি

হুম ,,,,সাইন্স এ পরি,,,, নিশিতা

আর কিছু বললাম না,,, খাওয়া-দাওয়া শেষ করে,,, রুমে চলে গেলাম,,,,

তারপর নামাজ পড়ে শুয়ে পড়লাম,,,,, সকালে ফজরের নামাজের আগে উঠলাম,,,, কাউকে ডাকতে হয় না,,, আগে থেকে অভ্যাস হয়ে গেছে,,, গ্রামে থাকতে মা প্রতিদিনই ডাক দিত,,,,

নামাজ পড়ে সকালে সাথে গেলাম,,,, সকালের মুক্ত হাওয়া গায়ে লাগাতে গেলাম,,,, গুণীজন রা বলে,,, সকালের সূর্যের আলো নাকি,,, ওষুধের চেয়ে বেশি কার্যকর,,,,

তারপর আবার রুমে চলে আসলাম,,,, একটু পর আন্টি চা নিয়ে আসলো,,,,
সকাল থেকে তো তুমি নিশিতা কে পড়াবেতাই না,,,,, আন্টি

হুম কেন,,,, আমি
নাহহ,,,, ও একটু জেদি,,, তোমাকে কিছু বললে যেন কিছু মনে করেোনা,,, আমাকে এসে বলো,,, আন্টি

আচ্ছা,,,, আমি
চা খাওয়া শেষ করে,,, নিশি তার রুমে গেলাম,,,, দেখলাম মেয়েটা ফোনে কথা বলছে,,,, আমাকে আসা দেখে ফোনটা রেখে দিল,,,,

স্যার আপনি এসেছেন,,,, আপনার জন্য অপেক্ষা করেছিলাম,,, নিশিতা
কথা শুনে অবাক হয়ে গেলাম

কি বজ্জাত মেয়ে‌রে বাবা,,,, দেখলাম ফোনে কথা বলছিল,,, আর ও নাকি আমার জন্য অপেক্ষা করতেছে,,,, মনে মনে বলছিলাম,,

কি হলো স্যার,,,, কি ভাবছেন,,, আমি আপনাকে স্যার বলেছি জন্য রাগ করেছেন নাকি,,, নিশিতা

আরে নাহ,,, রাগ করবো কেন,,, আমিতো তোমার স্যার ই,,, আমি

আপনি আমার বালের স্যার,,,, কি সুন্দর কথা বলছিলাম,,, আর এসে ডিস্টার্ব করে বলতেছে,,, আমি তোমার স্যার,,,, নিশিতা কথা গুলো ধীরে ধীরে বললো,,,

কি বললে তুমি,,, আমি

কই কি,,, কিছু নাতো স্যার,,,, নিশিতা

না কি যেন বললে,,, ভালোভাবে শুনতে পাইনি,,, আমি

আরে স্যার বাদ দেন,,,, এখন পরিচয় হয়ে নেই আপনার সাথে,,,,, নিশিতা

হুম,, আমি

আচ্ছা স্যার ,,, আপনি কি প্রেম করেন,,,, নিশিতা

আরে কি বলছো এসব,,,, আমি কিন্তু তোমার স্যার,,,, আমি
তাই কি,,, স্যার হলে কি বলা যাবে না,,,, নিশিতা

না ওসব আমি করি না,,,,, আমি

কি বলেন স্যার,,, আপনি এত বড় হয়েওপ্রেম করেন না,, আমার তো তিনটা হতে চলল,,,, নিশিতা

ওর কথা শুনে,, কি বলবো ভেবে পাচ্ছিনা,,,,

কি বলছ 😱😱😱😱 তিনটা হয়ে গেছে তোমার,,,, তোমার বয়সে,,, প্রেম কি জিনিস বুঝতাম ই না,,, আমি

সেটা আপনাদের ব্যর্থতা স্যার,,,, যুগের সাথে ও তাল মিলাতে হবে তাই না স্যার,,, নিশিতা

হুম ঠিক বলছো,,, চালিয়ে যাও,,,,, আমি

তারপর কিছুক্ষণ কথা বলে আমার রুমে চলে আসলাম,,, পুরো মাথাটা খারাপ করে দিচ্ছিল,,,, কি মেয়েরে ভাই,,,, এর ক্লাস যে কেমনে নিব আল্লাহপাকই ভাল জানে,,,

দেখতে দেখতে তিন মাস কেটে গেল,,,, এই তিন মাসে আঙ্কেল আন্টি দের কাছে অনেক প্রিয় হয়ে গেছি,,, এখন সব কাজে আমার আমার পরামর্শ চায়,,, এটতে আমার খুব খারাপ লাগে,,,, নিশিতার সাথে ভালো সম্পর্ক হয়েছে,,,,, বলতে গেলে,,, আমিও তাদের পরিবারের একজন সদস্য এখন,,,,

কাল নাকি তাদের বড় মেয়ে আসবে,,,, তাই আঙ্কেল আমাকে,,, এয়ারপোর্টে যেতে বলেছে,,,, আঙ্কেলের নাকি একটা কাজ পড়ে গেছে,,, তাই যেতে পারবে না,,,

তাই সকাল সকাল,, আমি আর নীশিতা,,, গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে,,,,,

চলবে,,,

ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক এবং কমেন্ট করবেন

ধন্যবাদ সবাইকে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here