গল্পঃ ভাবি যখন বউ #পর্ব_১৩ (জুয়েল)

0
968

গল্পঃ ভাবি যখন বউ
#পর্ব_১৩ (জুয়েল)

(১২তম পর্বের পর থেকে)

লিমা আমার ডেস্ক থেকে চলে গেলো। আমি অবন্তীকে কল দিলাম। কল দিয়ে কথাটা বললাম, অবন্তী শুনেই বললো….

অবন্তীঃ হইছে আর ঢং করতে হবে না। টাকা হাতে পেলে তারপর বলবে।

এ কথা বলে মোবাইল টা রেখে দিলো। লিমা কিছুক্ষণ পর ম্যানেজার এর রুম থেকে বের হলো….

লিমাঃ এই জুয়েল!

আমিঃ হুম বল।

লিমাঃ আমি ম্যানেজারকে বলে দিয়েছি, দেখ উনি কি বলে।

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে।

লিমাঃ হুম ম্যানেজার হয়তো তোকে ডাকবে, যদি জিজ্ঞেস করে টাকা কেন দরকার তাহলে বলবি যে বাসার কাজ চলতেছে।

আমিঃ ওকে।

লিমাঃ আরো একটা গুড নিউজ আছে!

আমিঃ কি?

লিমাঃ আজকে সানি আসবে, আমি ওরে নিয়ে আসার জন্য যাচ্ছি।

আমিঃ সানি কে?

লিমাঃ তোর দুলাভাই, আমার হবু,,,,,

আমিঃ বাহ! বিয়ের আগেই এতো প্রেম, বিয়ের পর কি করবি?

লিমাঃ তুই আর অবন্তী যেটা করবি আমরাও সেটা করবো।

আমিঃ আমাকে একটু বলিস, তোরা কি কি করস।

লিমাঃ মাইর খাবি ফাজিল। আচ্ছা আমি গেলাম,,,,

আমিঃ ওকে, আল্লাহ হাফেজ,,,

লিমা চলে গেলো। আমি বসে বসে কাজ করতে লাগলাম, দুপুর শেষ হয়ে বিকাল হয়ে গেলো, কিন্তু ম্যানেজারের কোনো খবিশ নাই। আমি ভাবতেছি টাকা হয়তো দিবে না।

ছুটি হওয়ার প্রায় ২০ মিনিট আগে পিয়ন আসলো আমার কাছে।

পিয়নঃ স্যার আপনাকে ডাকছে..

আমিঃ কে?

পিয়নঃ ম্যানেজার স্যার। এখন গিয়ে দেখা করেন।

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে আপনি যান আমি আসছি।

এক বুক আশা নিয়ে ম্যানেজারের রুমে গেলাম,,,

আমিঃ স্যার আসবো?

ম্যানেজারঃ মি.জুয়েল! আসুন ভিতরে আসুন।

আমিঃ থেংক ইউ স্যার।

ম্যানেজারঃ হুম, বসুন।

আমি বসলাম।

ম্যানেজারঃ আপনার নাকি টাকার খুব প্রয়োজন?

আমিঃ জ্বি স্যার।

ম্যানেজারঃ কতো?

আমিঃ ৩ লক্ষ হলে হবে।

ম্যানেজারঃ এতো টাকা দিয়ে কি করবেন?

আমিঃ স্যার বাসার কাজ চলতেছে।

ম্যানেজারঃ কিন্তু মি.জুয়েল আপনি জয়েন করেছেন যে এখনো একমাস হয়নি। আমরা এই মুহূর্তে আপনাকে এতো টাকা দিতে পারি না।

আমিঃ কেন স্যার, অন্যান্য কোম্পানি গুলোতে তো যারা কর্মকর্তা তাদের কে লোন দেয়,আর মাস শেষে বেতন থেকে কেটে নিয়ে যায়। আমার ক্ষেত্রেও একই টা করিয়েন।

ম্যানেজারঃ হুম লোন দেয়, আমরাও দিই। কিন্তু সেটা পুরাতন লোকদের কে। আপনি যে এই অফিসে সারাজীবন কাজ করবেন তার কোনো গ্যারান্টি আছে?

আমিঃ সেটা না হয় ঠিক আছে, কিন্তু আমি তো আর এই মুহূর্তে চলে যাচ্ছি না। আর আমার সব কাগজপত্র আপনাদের কাছে আপনারা ওগুলো না দিলে তো আমি অন্য কোথাও চাকরি করতে পারবো না।

আমি যদি এই অফিস থেকে চলেও যাই তাহলে আপনাদের টাকা শোধ করে তারপরেই যাবো।

ম্যানেজারঃ সেটা নাহয় বুঝলাম। কিন্তু এতো গুলো টাকার জন্য আপনাকে কিছু ডোকোম্যান্ট জমা দিতে হবে।

আমিঃ কি?

ম্যানেজারঃ আপনাদের বাড়ির কাগজপত্র, যদি কোনো কারনে আপনি টাকা না দিয়ে চলে যান আমরা আপনার বাড়ি দখল করবো।

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে দিবো।

ম্যানেজারঃ হুম, আর আপনার বর্তমান বেতন ২৫ হাজার টাকা, আমরা প্রতি মাসে ৫ হাজার কেটে নিবো। বাকি ২০ হাজার পাবেন।

আমিঃ ওকে স্যার।

ম্যানেজারঃ ওকে কালকে আসার সময় বাড়ির কাগজপত্র নিয়ে আসবেন।

আমিঃ আসি স্যার।

সালাম দিয়ে বের হয়ে গেলাম। তারপর বাসায় চলে গেলাম।

রাতে বসে বসে ভাবতেছি কি করে আব্বু আম্মুকে কাগজের কথা বলবো।

খাওয়ার সময় আব্বুকে বলেই দিলাম দলিলের কথা। বাবা কিছুই বললো না খাওয়া শেষ করে আমি রুমে চলে গেলাম।

কিছুক্ষণ পর আব্বু একটা ফাইল নিয়ে আমার রুমে আসলো। আমার হাতে দিয়ে বললো….

আব্বুঃ এখানে সব কিছু আছে। আমি জানি তুই খারাপ কিছু করবি না। আমি তোকে আমানত দিলাম,,,,,,

আমি কিছুই বললাম না। ফাইলটা রেখে দিলাম। অবন্তীকে কল দিলাম। কিছুক্ষণ কথা বলে মোবাইল রেখে দিলাম।

তারপর ঘুমিয়ে গেলাম,সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে অফিসে চলে গেলাম। সোজা ম্যানেজারের রুমে গেলাম। ফাইলটা উনার হাতে দিয়ে আমি আমার ডেস্কে গিয়ে কাজ করতে শুরু করলাম।

১১ টার দিকে পিয়ন এসে ডেকে নিয়ে যায় ম্যানেজার নাকি আমাকে ডাকতেছে।

ম্যানেজার এর রুমে গেলাম। উনি আমাকে একটা চেক কেটে দিলো।

আমি তো খুশিতে শেষ। যাইহোক ম্যানেজার থেকে ১ ঘন্টার জন্য ছুটি নিলাম। নাহলে বিকালবেলা ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাবে। আয়মানকে কল দিয়ে আসতে বললাম তারপর আয়মান আসলো।

ওরে নিয়ে টাকা টা ব্যাংক থেকে নিয়ে আসলাম। তারপর আবার অফিসে চলে গেলাম।

কাজ শেষ করে বাসায় চলে আসলাম। রাতে অবন্তীকে কল দিলাম।

অবন্তীঃ বলেন সাহেব! সারাদিন কোনো খবর ছিলো না আপনার এখন মনে হয়েছে তাই না?

আমিঃ সরি, কাজে ছিলাম তো তাই। তুমিও তো দাও নি

অবন্তীঃ মোবাইলে টাকা ছিলো না। তোমারে তো বলেছিলাম টাকা পাঠাতে বাট তুমি তো পাঠাও নি।

আমিঃ সরি, মনে ছিলো না।

অবন্তীঃ কয়দিন পর দেখা যাবে আমি যে তোমার বউ সেটাও মনে থাকবে না।

আমিঃ সেটা ভুলবো না। আচ্ছা শোনো।

অবন্তীঃ হুম বলো।

আমিঃ কালকে বিকালে একটু দেখা করিও তোমার সাথে খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে

অবন্তীঃ কি কথা এখন বলো।

আমিঃ মোবাইলে বলা যাবে না। সরাসরি বলবো।

অবন্তীঃ আচ্ছা ঠিক আছে। খাইছো?

আমিঃ না মাত্র বাসায় আসলাম। তুমি?

অবন্তীঃ না খাবো,একটু পর। তুমি খেয়ে ঘুমিয়ে যাও।

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে।

তারপর খাওয়াদাওয়া করে ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে ফ্রেশ হয়ে অফিসে চলে গেলাম।

এর মাঝে কয়েকবার অবন্তীকে কল দিলাম ওরে বললাম শাড়ি পড়ে আসতে।

বিকালবেলা আমাদের কলেজের সামনেই আসতে বললাম।

আমি কাজ শেষ করে সোজা কলেজের সামনে চলে গেলাম। কিছুক্ষণ পর অবন্তী আসলো।

আমিঃ কি ব্যাপার এতো দেরি হলো কেন?

অবন্তীঃ এই সরি সরি, আসলে শাড়ি পরতে দেরি হয়ে গেছে।

আমিঃ মানে?

অবন্তীঃ তুমি তো জানো আমি শাড়ি পড়তে পারি না। কারো না কারো হেল্প লাগে। আজকে আম্মুও বাসায় নেই মামার বাড়ি গেছে। একটা কাজিন কে বলেছিলাম আসার জন্য। সে আসতে দেরি করে ফেললো। তাই আমারও দেরি হয়ে গেলো।

আমিঃ এতো কষ্ট হলে শাড়ি পরার কি দরকার ছিলো?

অবন্তীঃ না আসলে তো তোমার চেহারার দিকে তাকানো যেতো না। বলবে যে একটা রিকুয়েস্ট করেছি সেটাও রাখেনি।

আমিঃ আচ্ছা এবার বসো। বলো কি খাবে?

অবন্তীঃ আগে বলো তুমি যে এখানে আসছো আব্বু আম্মুকে বলেছো।

আমিঃ না বলার সময় পাইনি। অফিস থেকে সোজা এখানে চলে এসেছি।

অবন্তীঃ এটা কোনো কথা হলো?

আমিঃ সমস্যা নাই, আমি বাসায় গিয়ে বলে দিবো।

অবন্তীঃ এবার বলো কি এমন কথা যেটা মোবাইলে বলা যাবে না, সরাসরি বলতে হবে!

আমিঃ লোন তো পেয়ে গেছি।

অবন্তীঃ বাহ! আগে বলোনি কেন?

আমিঃ এখন তো বললাম। এখন কথা হচ্ছে আমি কয়দিনের ছুটি নিবো?

অবন্তীঃ ছুটি কেন?

আমিঃ আরে পাগল! বিয়ের জন্য কেনাকাটা করতে হবে, তারপর বিয়ের অনুষ্ঠান কোন দিন হবে সেটা তো ঠিক করতে হবে নাহলে আমি আন্দাজি ছুটি কিভাবে নিবো?

অবন্তীঃ তুমি এক সপ্তাহের জন্য ছুটি নাও।

আমিঃ এতো দিন দিবে না। সর্বোচ্চ দিলে ৩ দিন দিবে।

অবন্তীঃ তাহলে তোমার বিয়ে করার দরকার নেই।

আমিঃ আরে ধুর এগুলো কি বলো।

অবন্তীঃ ঠিকই তো বললাম, আচ্ছা তুমি কালকে অফিস করো। তারপরের কয়েকদিনের জন্য ছুটি নিও।

আমিঃ ওকে, শপিং কোন দিন করবে?

অবন্তীঃ শপিংয়ে যাবো পরশুদিন।

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে।

অবন্তীঃ আচ্ছা শোনো বাসায় কেউ নেই, আমি চলে যাচ্ছি। রাতে মোবাইলে কথা হবে, আর পরশুদিন তো দেখা হচ্ছেই।

আমিঃ এখন চলে যাবা?

অবন্তীঃ হুম।

আমিঃ এই যাওয়ার আগে একটা দিয়ে যাওনা!

অবন্তীঃ কি?

আমিঃ….. (গাল দেখিয়ে দিলাম)

অবন্তীঃ মাইর খাবা, বিয়ের আগে এগুলো কিচ্ছু হবে না। আসি আমি,,,,

অবন্তী চলে যাচ্ছে আমি ওর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি আর ভিতরে ভিতরে হাসতেছি।

তারপর আমিও বাসায় চলে গেলাম। রাতে আব্বু আম্মুকে সব কিছু বললাম…

আম্মুঃ তোর বলা লাগবে না। অবন্তী আমাদের সব বলেছে।

আমিঃ ও, তাহলে তো ভালোই।

আম্মুঃ হুম, তুই ছুটে বেশি করে নিতে পারিস কিনা দেখিস।

আমিঃ এটাও বলেছে?

আব্বুঃ বলবে না কেন, ও কি তোর মতো হারামি নাকি?

আমিঃ আমি হারামি?

আম্মুঃ হুম আমাদের আদরের হারামি। যা বাবা তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যা।

তারপর রুমে গিয়ে কিছুক্ষণ অবন্তীর সাথে কথা বললাম।

তারপর ঘুমিয়ে গেলাম। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে অফিসে চলে গেলাম। সোজা ম্যানেজার এর রুমে গেলাম…

আমিঃ স্যার আসতে পারি?

ম্যানেজারঃ মি. জুয়েল! আসুন।

আমিঃ ধন্যবাদ স্যার।

ম্যানেজারঃ হুম কি অবস্থা বলেন?

আমিঃ এইতো স্যার আছি মোটামুটি।

ম্যানেজারঃ কিছু বলবেন নাকি?

আমিঃ জ্বি স্যার একটা কথা বলার ছিলো।

ম্যানেজারঃ হুম বলেন।

আমিঃ স্যার আমার কয়েকদিন ছুটি লাগবে। আমি দরকার হলে পরের দিন গুলোতে কাজ বাড়িয়ে করে দিবো।

ম্যানেজারঃ সেটা নাহয় বুঝলাম। কিন্তু ছুটি কয়দিনের জন্য চাচ্ছেন?

আমিঃ স্যার ১ সপ্তাহ।

ম্যানেজারঃ এতো দিন কি করবেন?

আমিঃ আসলে স্যার আমার বিয়ে। (মাথা নিচু করে বললাম)

ম্যানেজারঃ congratulations,,,,

আমিঃ থেংক ইউ স্যার।

ম্যানেজারঃ তো বিয়ে কখন?

আমিঃ আপনার ছুটির উপর নির্ভর করবে।

ম্যানেজারঃ আচ্ছা ঠিক আছে দিলাম।

আমিঃ ধন্যবাদ স্যার, আপনার আর আপনার পুরো ফ্যামিলির দাওয়াত রইলো অবশ্যই আসবে। স্যার বিয়ের কার্ড এখনো বানানো হয়নি তাই দিতে পারিনি। আজকে গিয়েই বানাবো আর প্রথমটা আপনাকে দিবো।

ম্যানেজারঃ আচ্ছা ঠিক আছে দিয়েন। (হাসতে হাসতে)

আমিঃ ওকে স্যার আমি আসি তাহলে।

ম্যানেজারঃ আজকে কি কাজ করবেন?

আমিঃ জ্বি স্যার, কালকে থেকেই ছুটি কাটাবো

ম্যানেজারঃ ওকে যান।

তারপর বেরিয়ে গেলাম। নিজের ডেস্কে গিয়ে কাজ করলাম।

কাজ শেষ করে বাসায় চলে গেলাম। মনের মধ্যে অন্যরকম একটা আনন্দ বইতেছে।

রাতে খেয়ে ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে নিলাম।

আয়মানকে কল দিয়ে আমাদের বাসায় আসার জন্য বললাম। আব্বু আম্মুকেও রেড়ি হতে বললাম।

অবন্তীকে কল দিলাম…

অবন্তীঃ হ্যালো জুয়েল! তোমার নাম্বার অফ ছিলো কেন?

আমিঃ রাতে বন্ধ করে ঘুমাইছিলাম। রেড়ি হইছো?

অবন্তীঃ না হইতেছি।

আমিঃ আসার সময় আব্বু আম্মুকে নিয়ে আসিও।

অবন্তীঃ আমার কাজিন প্রেমা আসতে চাইছে।

আমিঃ ওকে নিয়ে আসো।

অবন্তীঃ হুম, কোথায় আসবো?

আমিঃ গ্র্যান্ড হক টাওয়ারের সামনে আসো, আমরা ওখানে থাকবো।

অবন্তীঃ আচ্ছা ঠিক আছে।

আমিঃ ওকে।

কল কেটে দিয়ে আমিও ফ্রেশ হয়ে রেড়ি হয়ে গেলাম। তারপর একটা CNG ডেকে আব্বু আর আম্মুকে পিছনে বসতে দিলাম। আমি আর আয়মান সামনে দিয়ে বসলাম।

তারপর শপিংমলে চলে গেলাম। অনেকক্ষণ ধরে বসে আছি অবন্তীর আসার কোনো খবর নাই। যাইহোক ৩০ মিনিট পর ওরা আসলো। বেয়াই বেয়ান একে অপরকে জড়িয়ে ধরলো, কিছুক্ষণ কথাবার্তা বললো, আমারও ইচ্ছা হয়েছিলো অবন্তীকে জড়িয়ে ধরি কিন্তু পাব্লিক প্লেসে এগুলো করা যাবে না।

যাইহোক তারপর ভিতরে গেলাম। প্রথমে আব্বু আম্মুর জন্য কেনাকাটা শুরু করলাম।

আব্বুর জন্য পাঞ্জাবি, পায়জামা, গেঞ্জি, জুতা আরো কিছু জিনিষ নিলাম। আম্মুর জন্য শাড়ি, ব্লাউজ সহ আরো অনেক কিছু নিয়েছে। শ্বশুর শাশুড়ির জন্যও সেম জিনিষ নিলাম।

তারপর আয়মানকে নিতে বললাম কিন্তু সে নিচ্ছে না। অনেক জোরাজুরি করে একটা পাঞ্জাবি নিলাম, সেম কালারের আমিও একটা নিলাম।

প্রেমাকে বলার আগেই কেনাকাটা শুরু করে দিলো। আসলে মেয়েদের শখ একটু বেশিই, সেটা যদি জামাকাপড় এর উপর হয় তাহলে তো কথাই নাই।

প্রেমাও অনেক গুলো জামা নিলো। এরপর আমার সিরিয়াল আসলো।

আমার জন্য সব কিছু অবন্তী নিজেই চয়েস করলো। আব্বু আম্মুর জন্যও অবন্তী চয়েস করলো।

আমি অল্প কিছু নিলাম কারন টাকা টা হিসাবের মধ্যে রাখতে হবে পরে যাতে টানাটানি না হয়।

এরপর অবন্তীর পালা আসলো।

অবন্তী একটা নীল শাড়ি পছন্দ করলো।

আমিঃ বিয়েতে কেউ নীল পড়ে? বিয়েতে তো লাল পড়ে।

অবন্তীঃ আমার নীল পছন্দ। আর কোথাও লেখা আছে যে বিয়েতে শুধু লাল পড়তে হবে, অন্য কোনো কালারের শাড়ি পড়া যাবে না!

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে যেটা ভালো লাগে সেটাই কিনো।

অবন্তীর জিনিষ কিনতে কিনতে হয়রান হয়ে গেছি। অন্তত ৫০ টা দোকান গেছে। মেয়েদের যে এতো জিনিষ লাগে বিয়ে না করলে বুঝতাম না।

দীর্ঘ ৪ ঘন্টা শেষ অবন্তীর শপিং শেষ হলো। তারপর সবাই মিলে একটা হোটেলে গিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম।

এরপর যে যার মতো বাসায় চলে আসলাম। আগামী কাল মেহমানদের দাওয়াত করতে হবে, পরশুদিন গায়ে হলুদ আর পরের দিন বিয়ে।

বাসায় এসে ঘুমিয়ে গেলাম। সারাদিন ঘুরাঘুরির কারনে ক্লান্ত লাগছিলো তাই শোয়ার সাথে সাথেই ঘুম চলে আসলো।

পরের দিন ঘুম থেকে উঠে আয়মানকে সাথে নিয়ে বিয়ের কার্ড বানাতে গেলাম। তারপর কার্ড গুলো রেড়ি করে আত্নীয় স্বজন, বন্ধু বন্ধক সবাইকে দাওয়াত দিলাম। আব্বুর হাতে অনেক গুলো কার্ড দিয়ে দিলাম উনার পরিচিত যারা আছে তাদের দাওয়ার দেওয়ার জন্য।

আয়মান ডেকোরেশন করার জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা শুরু করে দিলো।

পরের দিন মানে হলুদের দিন, সকাল থেকেই বাসা সাজানো শুরু করে দিলো। চারপাশে লাইট, ফুল দিয়ে বাসাটা অন্যরকম ভাবে সাজানো হলো।

অনেক দিন পর এই বাসায় একটু কোলাহল শুরু হলো। আত্নীয় স্বজনরা এক এক করে আসতে শুরু করলো।

আমি আর আয়মান বাজারে গেলাম। গিয়ে বাজার করে নিয়ে আসলাম।

বিকালবেলা অবন্তীকে কল দিলাম, তারপরেই…….

#চলবে………
To be Continue……..

( ব্যস্ততার জন্য বেশি বড় দিতে পারিনি, কালকে বড় করে দিয়ে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ সবাইকে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here