#বিষ_করেছি_পান(১৩)
(কপি করা নিষেধ)
— ঝিমা বাঁধন ভাইয়ের নাকি বিয়ে? এসব কি শুনছি?
— হ্যারে সত্যি। কার সাথে জানিস? ঐ যে বাসের মেয়েটা। যার নামে তুই এত্তোগুলা খারাপ খারাপ কথা বলেছিস। শোন যা বলার বলেছিস। আর বলিস না। কারন এখন সে আমাদের ভাবী হতে যাচ্ছে। আমার যে কি আনন্দ লাগছে জানিস? খুশিতে মনে হয় আমি পাগল হয়ে যাবো। এতো দিন কত সপ্ন দেখেছি ভাবীকে নিয়ে। একসাথে ঘুরবো মজা করবো ফুসকা খাবো রান্না শিখবো আরো কত কি! বড়বোনের মতো আমাকে আদর করবে। আমার সব স্বাদ পূরণ করবে। ফাইনালি আমি ভাবী পাচ্ছি। তাও আবার এতো সুন্দরী একটা ভাবী।
খুশিতে ঝিমা ছুটির হাত ধরে লাফিয়ে লাফিয়ে বলে যাচ্ছে। ঝিমার খুশিতে ছুটির কষ্ট হচ্ছে। মনে হচ্ছে বুকের বা পাশে কেউ বিষাক্ত তীর ছুঁড়ে মারছে। ছুটির চোখ দিয়ে অনবরত জল গড়িয়ে পড়ছে। হাত পা অসাড় হয়ে গেছে। ঝিমা যেভাবে নাড়াচ্ছে সেভাবেই নড়ছে। বিষয়টা যখন ঝিমা অনুভব করতে পারে তখনি ছুটির দিকে চোখ রাখে। ছুটি তখন কাঁদছে। হিক তুলে কাঁদছে। চোখের পানির ফোয়ারা নেমেছে। ঝিমা অবাকের সর্বোচ্চ চূড়ায়।ছোট থেকেই এক সাথে দুজনার বড় হওয়া। কত দুষ্টুমি কত স্মৃতি কত মজা। ছুটিকে কখনো সত্যি সত্যি কাঁদতে দেখেনি ঝিমা। খুবই শক্ত প্রকৃতির মেয়ে। ছুটি কেঁদেছে তবে সেটা সত্যি কম অভিনয় বেশী। স্যারের কড়া বেতের বাড়ি খেয়েও মুখ থেকে আহ পর্যন্ত ই শুনেছে। কখনো চোখের জল অব্দি দেখেনি।এভাবে আকুল হয়ে কাঁদতে দেখে ঝিমা ঘাবড়ে যায়। অস্থির হয়ে উঠে মনটা। ছুটিকে আঁকড়ে ধরে বলতে থাকে — এই ছুটি কাঁদছিস কেনো? কি হয়েছে? আমাকে বল? হায় আল্লাহ!কি হলো তোর? কেউ কিছু বলেছে? কে কি করেছে তোর সাথে বল? শেষ করে ফেলবো তাকে। বল?
ছুটির কান্নার ধাঁচ আরো বেড়ে যায়। প্রিয় মানুষ মারা গেলেও বোধহয় কেউ এভাবে কাঁদে না। ঝিমা দৌড়ে
গিয়ে দরজা বন্ধ করে আসে। বাইরে কান্নার আওয়াজ গেলে সমস্যা হয়ে যাবে। সবাই কারণ জিজ্ঞাসা করবে। কি উত্তর দিবে? উত্তর তো আগে জানতে হবে। ঝিমা আঁজলা করে ধরে ছুটির মুখখানি। টুসটুসে গাল দুটো সহ পুরো মুখ লাল টকটকে হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে চামড়া ভেদ করে রক্ত বেরিয়ে পরবে।ঝিমা কি করবে বুঝে উঠতে পারেনা। জগ ভরা পানি এনে ফ্লোরে দাঁড়ানো অবস্থায়ই ছুটির মুখ ধুইয়ে দেয়। ভেজা মুখ খানা বুকের মাঝে চেপে ধরে। ছুটির শরীর কাঁপছে। প্রায় মিনিট বিশেক কাঁদার পর ছুটির শরীর কাঁপা বন্ধ হয়ে আসে। ধীরে ধীরে কান্নাও থেমে আসে। ঝিমা একটু ভয় মুক্ত হয়। তবুও বুক ধড়ফড় করছে। ছুটি কে আরো কিছুক্ষন সময় দেয়। কান্না থেমে গেছে হিক উঠা বন্ধ হয়নি। অনেক ক্ষন পর ঝিমা ছুটিকে জিজ্ঞাসা করে,
— ছুটি? বোন আমার। কি হয়েছে বল। কে কি করেছে তোর সাথে? সাংঘাতিক কিছু না হলে তুই এমন করতিনা।
ছুটি মাথা তুলে। ঝিমার চুমসে যাওয়া মুখ। তার মাথায় এখন আকাশ পাতাল ভয়ংকর সব চিন্তা। যা করা অনুচিত জেনেও মাথায় ভর করেছে। ছোট্ট মাথাটা এতো চাপ নিতে পারছেনা। মুখখানা তা প্রকাশ করছে। ছুটি দম ফেলে। চোখ বন্ধ করে বলে,
— প্রতারণা।
— কে?
— আমার মন।
ঝিমা ফুস করে শ্বাস ফেলে। আরেকটু হলে নিশ্চিত হার্ট এটাক করতো। জোরে জোরে শ্বাস নিতে নিতে বলে,
— এটা কি ধরনের মজা?
— মজা না। কষ্ট।
— ছুটি? তুই সিরিয়াস?
— আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে । কেনো হচ্ছে?
— ভাইয়ার বিয়ে। এতো আনন্দের ব্যাপার। তুই কষ্ট পাচ্ছিস কেনো?
— বিয়ের পর নাকি ভাই পর হয়ে যায়? বাঁধন ভাই পর হয়ে যাবে। আমাদের আর আগের মতো ভালোবাসবে না। কেয়ার করবেনা। তাকে আর আমরা পাবো না। জোড়া জোড়া জামা কিনে দিবে না। জুতা কিনে দিবে না। ঘুরতে নিয়ে যাবেনা। খেলবে না। শাসন করবেনা।
— বেঁচে যাবো।
লাফ দিয়ে একহাত দূরে গিয়ে বসে ঝিমা। মুখটা তেতো করে বলে,
— বেঁচে যাবো বুঝলি? কি যে প্যারা! সব কিছু থেকে মুক্তি পাবো। তার সব ঝাঁঝ তখন ভাবীর উপর পড়বে। আমি বিন্দাস হয়ে যাবো। ভাই থাকা কি যে মুসিবতের তুই কি বুঝবি? তোর জন্য ই কি জীবনে কম থাপ্পড় খেয়েছি? তোকে মারলে বিচার বসবে। আমাকে মারলে তো মা বাচা একটা হাঁচিও দিবেনা। তাই সব আমার উপরেই এপ্লাই হয়। আর এর জন্য তুই এভাবে মরা কান্না কাদছিস? ছিহ! তুই আমার বন্ধু নাকি শত্রু?
ঝিমা রাগ দেখিয়ে ঘর ছেড়ে চলে যায়। ছুটি শুকনো হাসে। কথায় বলে কম বয়সের ক্ষত, গভীরতম ক্ষত। এই ক্ষত একবার হলে সারানোর মলম নেই। ছুটি বুঝতে পারছে তার ভেতরে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এই ক্ষতের উপরিভাগ লাল ভেতরটা কাঁটায় বিদ্ধ। ছুটি যতটুকু বোঝদার ঝিমা ততোটা বুঝদার নয়।বয়সের তুলনায় ছুটির মাঝে ম্যাচুরিটি একটু আগেই যেনো পত্র মেলেছে। যতটুকু ছেলেমানুষী তা মূলত ইচ্ছে আর পাগলামী। ঝিমা যদি ছুটির এক আনাও বুঝতো তবে প্রিয় বান্ধবীর হুট করে এতোটা ভেঙে পরা ঠিকই ঠাহর করতে পারতো।
সন্ধ্যার পর ড্রয়িংরুমে আলোচনা বসেছে। কলোনীর কয়েকটা পরিবার চায়ের আড্ডায় একত্র হয়েছে । দিনের বেলা সবাই নিজেদের কাজে ব্যস্ত থাকে তাই সন্ধ্যার পর এই আলোচনা। প্রত্যেক ফেমেলি থেকে প্রধান একজন যাবে মেয়ে দেখতে। মেয়ের বাড়ী কুমিল্লা শহর। এখান থেকে সাড়ে তিন ঘন্টার রাস্তা। রাস্তায় জ্যাম থাকলে সাত – আট ঘন্টার রাস্তা।মেয়ের বড় বোনের শ্বশুরবাড়ি মধুপুর । সেই সুবাদে সেখানে যাত্রা। ভাগ্যক্রমে আলাপচারিতা। শুক্রবার ডেট ফাইনাল হলো। ছুটিদের পরিবার থেকে যাচ্ছেন ছানোয়ার। সে বাড়িতেই রাতের খাবার শেষ করে রুম্পা তাড়া লাগালো। ঘড়িতে বারোটা সতের। ড্রয়িং রুম থেকেই ডাক দিলো।
— ছুটি, তাড়াতাড়ি আয়। নিচে নাম।
ছুটি সিঁড়ি থেকে মুখ বাড়ালো। মিনমিনে গলায় বললো,
— আমি আজ থাকবো মা।
বীনা ও বললো
— ঝিমার কাছে থাক।
সে ছুটি মাঝে মাঝেই ঝিমার সাথে থাকে। সেটা নিয়ে আর রুম্পা কথা বাড়ালো না। বাবা মা চলে যেতেই ছুটি ঝিমার রুমে ঢুকলো। ঝিমা বাথরুমে। দুই নাম্বারে গিয়েছে। ঘড়ি ধরা বিশ মিনিটের আগে সে বের হবেনা। এখন দশমিনিট চলছে। ছুটি গুটি গুটি পায়ে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো। পাশের বারান্দার ফেইড়ি লাইট গুলো জ্বলজ্বল করছে। গ্ৰীলে আরো দুটো মানিপ্ল্যান্টের টব যুক্ত হয়েছে। কি সুন্দর! ছাদ থেকে কি এরপর আর ছুটির দাড়িয়ে দাড়িয়ে এই বারান্দার দিক তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করবে? বারান্দা টা কি এখনের মতোই থাকবে? নাকি নতুন মালির আগমনে পাল্টে যাবে? ছুটির যদি কখনো রাতে দেখতে ইচ্ছে করে তখন সে ছাদে আসবে । তাকিয়ে থাকবে মুগ্ধ হয়ে। বারান্দাটা নিশ্চয় তখন গাছ আর ফেড়ি লাইটে মোড়ানো থাকবে না?থাকবে একজোড়া কপোত কপোতীর উপস্থিতি। হয়তো তারা নিজেদের মধ্যে আলাপচারিতা করবে নয়তো চন্দ্রবিলাস করবে। তখন নিশ্চয় ছুটির চোখে মুগ্ধতা থাকবে না। থাকবে একরাশ তিক্ততা। প্রেমের ব্যথা কেমন হয় ছুটি বুঝে। গতকালকেও কি ছুটি জানতো সে প্রেমে পড়েছে? তাও আবার ষোল বছরের বড় এক প্রতিবেশী বড় ভাইয়ের প্রেমে! সে আবার বান্ধবীর বড়ভাই!
রাতে ছুটির ঘুম হলোনা। ঝিমা নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে। ছুটি এপাশ ওপাশ করছে। একবার ঝিমাকে জড়িয়ে ধরছে আবার ছেড়ে দিচ্ছে। ঝিমা টের না পেয়ে বিভোরে ঘুমুচ্ছে। ফজরের যখন আজান পড়লো তখন ছুটি বিছানা ছাড়লো। ধীর পায়ে ছাদে এসে দাঁড়ালো। পূর্বাকাশে আলোর ছটা ধীরে ধীরে সংকুচিত হওয়া মুগ্ধ চোখে আওডালো। অযাচিত চিন্তার ইতি টানতে জোরে জোরে শ্বাস ছাড়লো। ফলাফল যা এলো তা মনে মনে নয় বেশ জোরে জোরে মুখে মুখেই বললো,
— আমি নির্বোধ, আপনি জ্ঞানী
আপনার প্রত্যেকটা মোড় আমার কাছে বানী।
সম্মানিত পুরুষ, সম্মানেই যার পরিচয়
দুর্ভাগ্য, নাইবা হলো তাহার সনে পরিণয়।
মেয়ে দেখে বিয়ের ডেট ফিক্সড করা হয়ে গেছে। সতের দিন পর বিয়ে। ছুটি আলোচনার মাঝে বসে। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে সবার মুখের কথা শুনে যাচ্ছে। রিতী তো না না করতে করতে লাফাতে শুরু করেছে। কাঁদো কাঁদো ফেসটা নিয়ে ঘোর প্রতিবাদ করে বসে, — কাকী মনি তুমি না বলেছিলে বাঁধন ভাইয়ের বিয়েতে মজা করবো আর সেই তুমিই কিনা বেছে বেছে আমার পরিক্ষার সময়ে ডেইট ফেললে?
— কী করবো মা? একার তো সিদ্ধান্ত না। মেয়ের বাড়ি ছেলের বাড়ি সবাই মিলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রিতী সত্যি সত্যি কেঁদে দিলো। ছানোয়ারের বিরক্ত লাগলো। এতো বড় মেয়ে যদি এখনো ভ্যা ভ্যা করে তাহলে লোকে কি বলবে? ধমকে রিতীকে পড়তে বসতে পাঠায়। ছুটির দিকে চোখ পড়লে ছুটিকেও পড়তে বসতে পাঠায়। ছুটি চুপচাপ উঠে চলে যায়।
বাঁধনকে সেদিনের পর আর ছুটি দেখেনি। আজ স্কুলে যাবার সময় দেখা হয়ে যায়। ঝিমার হাত ধরে এগিয়ে এসে বলে,
— ঝিমাকে সাথে নিয়ে যা। আমি ব্যস্ত আছি যেতে পারছিনা।
ঝিমা দেখি গাল ফুলিয়ে আছে। জিজ্ঞেস করতেই বলে,
— ভাইয়া ভাবীকে নিয়ে শপিং এ যাচ্ছে। আমাকে তার স্কুলে নামিয়ে যাওয়ার ও সময় নেই। বাইকে কতক্ষন লাগতো জোরে টানলে? দশ মিনিট?
— তুই যাচ্ছিস না?
— যেতে চাইলাম। নিলোনা।
ছুটি ঝিমার চোখের পানি মুছিয়ে দেয়। হাসতে হাসতে বলে,
— ডল ডল….ঝিমা বুড়ি কান্না করছে। সবাই দেখে যাও ডল ডল…।
ঝিমা কপট রাগ দেখায়। ছুটির পিঠে শক্ত করে একটা কিল বসিয়ে দেয়। ছুটি আহ করে মৃদু আওয়াজ তুলে। একপা পিছিয়ে গিয়ে ঝাঁঝ নিয়ে বলে,
— মারছিস কেনো? ব্যথা পাইনা?
— আমাকে রাগালে আরো মার খাবি। আয়।
— ঝিমা তোর কপালের ফাটন শুরু। ভাইয়ের থেকে আর কোন আশা রাখিস না।
— কেনো?
— মিন্নি কাকীমা যখন দুই বছর আগে এলো তার আগে উর্বর্শী ফুপি কত হাসি খুশি ছিলো দেখেছিস? উড়ে উড়ে বেড়াতো। এতো সুন্দর করে সেজেগুজে থাকতো যে ছেলেরা তার উপর হুমড়ি খেয়ে পড়তো। বাড়ির রাজকুমারী ছিলো।ভাইয়ের জন্য বেছে বেছে সুন্দরী ভাবী তো সেই আনলো । মাসখানেক যেতে না যেতেই উর্বর্শী ফুপি আমাবশ্যার চাঁদ হতে লাগলো। নরম তুলতুলে হাতদুটোই কাটা কাটা দাগ পড়ে গেলো। কাজের জন্যে হাসি খুশি মুখটাও স্বাভাবিক হয়ে গেলো। পাত্রপক্ষ রা এসে তো শক্ত হাত দেখে খোটাও দিতে লাগলো। পড়াশোনা শেষ আজো বিয়ে হলোনা।
— তুই কি আমার অবস্থাও সভাবে কল্পনা করছিস? কখনোই না। তার মতো কখনোই হবেনা।
— তারমতো হবেনা। তবে আংশিক হবে। মিলিয়ে নিস।
— পারবোনা।
— সরি বেইবি। তবে আই প্রমিজ। আজকের পর থেকে তোকে ছাড়া কখনোই শপিং এ যাবোনা।
ঝিমা ছুটিকে জড়িয়ে ধরে। ছুটি ও ঝিমাকে ধরে। কি একটা ভেবে ডাকে ,
— ঝিমা?
— হু?
— বাঁধন ভাই মেয়েটাকে ভালোবাসে ?
— জানিনাতো। তবে ফোনে কথা হয়।
— একবার জিজ্ঞেস করবি?
— আচ্ছা।
বাঁধন বাসায় ফিরলে ঝিমা এবং মলি বাঁধনের রুমে যায়। পিছু পিছু ছুটিও গিয়ে দাঁড়ায়। বাঁধনের কানে ফোন। কথার ধরন দেখে বোঝা যায় হবু বউয়ের সাথে কথা হচ্ছে। বাঁধন তিনমাথাকে একসাথে দেখে হোল্ড করতে বলে জিজ্ঞেস করে,
— কিছু বলবি?
মলি মাথা নাড়ে। হ্যা বলবে।
— বল।
এবার পড়ে যায় ফ্যাসাদে। বয়সের তুলনায় পাকনা যতই হোক তাই বলে এতোবড় একটা কথা বাঁধনকে বলার সাহস নেই। ঝিমা চোখে ইশারা করে। মলি মাথা নেড়ে ঝিমাকে ইশারা করে। অসহায় দুটো চোখ এবার ছুটির দিকে পড়ে। ছুটি ছাড়া এ অসাধ্য সাধন কেউ করতে পারবেনা। ছুটি গুটি গুটি পায়ে বাঁধনের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। বাঁধন ভ্রু কুচকায়। পরিস্থিতি বুঝে ওদেরকে অভয় দেয়।
— নির্ভয়ে বল। শুনছি।
ছুটি ঝিমা মলির দিকে একবার তাকায়। ভেতর থেকে যুগিয়ে থাকা কথাগুলো ঠোঁট নাড়িয়ে দুইবার আওড়ায়। বাঁধন ছুটির ঠোঁট অনুসরণ করে বোঝার চেষ্টা করে। কিন্তু বুঝতে পারেনা। ছুটি ফুস করে শ্বাস ছেড়ে পড়া মুখস্থ বলার মতো একনাগাড়ে বলে,
— বাঁধন ভাই। আপনি তো আমাদের জন্য ভাবী আনছেন। আপনি কি ভাবীকে ভালোবেসে বিয়ে করছেন?
ভালোবাসা? বিয়ে? পুঁচকে মেয়ের মুখে এ ধরনের প্রশ্ন বাঁধন ঠিক হজম করতে পারেনা। ছুটির প্রতি তার আলাদা সফট কর্ণার তাকে রাগ ও করতে দেয়না। উঠতি বয়স। এসময়ে ছেলেমেয়েদের মনে এধরনের প্রশ্ন জাগতেই পারে ভেবে বিষয়টা নরমাল ভাবে নেয়। সাথে গম্ভীরস্বরে উত্তর টুকুও জানিয়ে দেয়,
— নাহ।
চলবে,
লাবিবা_তানহা_এলিজা~
ছবিয়াল: তরু