#একটি_নির্জন_প্রহর_চাই
#WriterঃMousumi_Akter
#পর্ব_৪১
পরের দিন সকালে ঘুম ভাঙতেই ওনার শক্ত বাঁধনে নিজেকে আবিষ্কার করলাম।ওনার বুকের সাথে মিশে আছি।ওনি আমাকে শক্তকরে জড়িয়ে ধরে রেখেছেন।কাল রাতের কথা মনে পড়তেই ভীষণ লজ্জা পেলাম।কী থেকে কী হয়ে গেল!লজ্জায় কেমন একটা লাগছে!আস্তে করে ওনার থেকে নিজেকে ছড়ানোর চেষ্টা করলাম।ওনি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে আছেন।সাত- সকালে ওনার মুখে যেন একরাশ মুগ্ধতা খুঁজে পেলাম।মানুষটার মুখের দিকে তাকালেই অজানা সুখে ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি চলে আসে,তার ছোঁয়ায় সব এলোমেলো হয়ে যায়,তার ঘামের গন্ধও যেন অভ্যাস হয়ে গিয়েছে।
আস্তে করে বিছানা ছেড়ে উঠে ওয়াশ রুমে প্রবেশ করলাম।গোসল সেরে লাল টকটকে একটা শাড়ি পরে নিলাম।শাড়িটা সুতি স্টাইপ করা, তবে এক রঙা।শাড়ি পরে মাথায় টাওয়াল পেঁচিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম।বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছে।নামাজও পড়ে নিলাম।ওনি বোধহয় আজানের আগেই উঠেছিলেন আর নামাজ পড়েই ঘুমোচ্ছেন আবার।কেননা ওয়াশরুমে ভেজা কাপড়।ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে হাতে-পায়ে লোশন লাগাতে লাগাতে আয়নায় ওনার দিকে তাকিয়ে আছি।ঠোঁটে লজ্জামিশ্রিত হাসি নিয়ে ওনাকে দেখছি।
ঠোঁট থেকে হাসি বিলিন হচ্ছে না।মাথার টাওয়াল সরিয়ে চুলে চিরুনি করে টাওয়ালসহ ওয়াশরুমে রাখা আমার ভেজা কাপড়, ওনার ভেজা কাপড়সহ কাল রাতে খুলে রাখা গেঞ্জি প্যান্ট ধুয়ে বালতিতে রাখলাম।এগুলো মেলতে হবে শুকানোর জন্য।বালতি ওয়াশ রুমে রেখেই ঘরের দরজা খুলে বাইরে বেরোলাম।কেউ ঘুম থেকে উঠেনি মনে হচ্ছে।ওশান তো উঠেই না কখনো।জুম্মার নামাজও পড়ে কি-না সন্দেহ।শাশুড়িও ঠিকমতো নামাজ পড়েন না।সারাক্ষণ স্টার জলসা আর জি-বাংলা দেখেন।শ্বশুর খুব ভাল মানুষ। কখনো নামাজ কাযা করেন না।এ বাড়িতে কী হতে চলেছে জানি না।শ্বশুরের কাছেই জিজ্ঞেস করতে হবে;দেখি ওনি কিছু জানেন কি না।তার আগে একটু হাঁটাহাঁটি করে আসি।
পূর্বআকাশে রক্তিম আভা ছড়িয়ে পড়েছে।সূর্যদয়ের পূর্বক্ষণ পূর্বাকাশের এই অপরুপ সৌন্দর্য আগে দেখিনি আমি।গাছের পাতায় পাতায় দূর্বাঘাসে শিশির জমেছে।প্রকৃতির নিয়ম বড়োই সুন্দর। নিয়মমাফিক সূর্য উঠে আবার নিয়মমাফিক অস্ত যায়।এই নিয়মের কোনো হেরফের আজও হয়নি।মানুষ কী তা গভীর ভাবে দেখেছে উত্তম পরিচালনাকারী আমাদের মাথার উপর রয়েছে!সকালের নির্মল বাতাস কিছুক্ষণ গায়ে মেখে রান্নাঘরে প্রবেশ করলাম চা বানাতে।এরই মাঝে বাবা গুনগুন করে জিকির করতে করতে বাড়ির উঠানে প্রবেশ করলেন।পানি গরম করতে দিয়ে মাথায় ঘোমটা টেনে বাবার সামনে গিয়ে বললাম, ‘বাবা,চা খাবেন?’
বাবা অমায়িক হাসি দিয়ে বললেন, ‘মেয়ের হাতের চা বাবা খাবে না তাই কি হয়?যাও মা চা নিয়ে এসো।’
‘আচ্ছা বাবা।’
‘মা শোনো…!’
‘জি বাবা বলুন।’
‘বলছি রোশানকে বোলো আলাদা একটা বাসা নিতে।আমাকে নিয়ে চলো তোমাদের সাথে।’
‘মাকে রেখে আপনি যাবেন বাবা?’
‘হ্যা ‘
‘না বাবা এভাবে যাওয়া ঠিক হবে না।মা ঠিকই তার ভুল বুঝবে একদিন আপনি দেখেন।সব ঠিক হয়ে যাবে বাবা।’
‘আর কী ঠিক হবে!আজ তো তরী আর ওশানের ডিভোর্সের ডেইট।জানো তুমি?’
‘না-তো বাবা।’
বাবা একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন, ‘এখন আর খারাপ লাগে না মা।আমার তরীর ভালো হবে।খারাপ হবে না।আমার যা সম্পত্তি ছিল ভুল করেছি অনেকখানি তোমার মায়ের নামে লিখে দিয়ে।এই ভুলের সংশোধন নেই মা।তবে যা বাকি আছে রোহান আর তরীর নামে অর্ধেক দিব আর তোমার আর রোশানের নামে দিব।’
‘বাবা উত্তম পরিকল্পনা।তবে আমি বা আপনার ছেলেকে কিছুই দিতে হবে না।আমি সম্পত্তি দিয়ে কী করব?রোহানের নামে দিন।বাচ্চাটার জন্য খুব খারাপ লাগে।ওর বাবা আবার বিয়ে করলে আদৌ ওকে দেখবে কী-না তার কোনো ঠিক নেই।’
‘রোহান কে বলব ওই কুলাঙ্গারকে যেন বাবা না ডাকে।’
‘বাবা চায়ের পানি গরম হয়ে গিয়েছে আমি চা নিয়ে আসছি।’
এই মাসের ওদের ডিভোর্সের কথা ছিল।আজ তাহলে ওদের ডিভোর্সের ডেইট পড়েছে!তরীকে আর আমার জা হিসাবে পাব না।এ বাড়ি থেকে তরীর অস্তিত্ব চিরতরে মুছে যাবে।রোহান আর মা-বাবাকে একসাথে পাবে না।একটা সন্তানের জন্য মা এবং বাবা উভয়কেই প্রয়োজন।কী হবে রোহানের!কথাটা ভেবেই বুকটা কেমন হু হু করে উঠল।
বাবার হাতে চা দিয়ে নিজের রুমে গেলাম।বালতির কাপড় বেলকনিতে মেলে দিলাম।
ওনি উপুড় হয়ে ঘুমোচ্ছেন।ওনি অধিকাংশ সময়ই উপুড় হয়ে ঘুমোন।ঘড়িতে সকাল আটটা বাজে।ওনি সকালে চা বিস্কুট ছাড়া খান না।চা বিস্কুট এনে রুমে রাখলাম।কিন্তু উঠছেন না কেন!ওনাকে তো কলেজেও যেতে হবে।আজ কি ছুটি নিয়েছেন!ডাকব না-কি ডাকব না!অনেক ভেবে চিন্তে ওনার কাছে গিয়ে গায়ে হাত দিয়ে বললাম, ‘শুনছেন? কলেজ যাবেন না?’
কয়েকবার ডাকাডাকির পর আমার হাত টেনে ওনার বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে আবার ঘুমোনোর চেষ্টা করলেন।কী করা যায় এই মানুষটাকে নিয়ে!সে-তো উঠছেই না।আমি অন্য হাত দিয়ে ধাক্কা দিয়ে ডাকলাম। ওনি এবার আমার অন্য হাত ধরে সম্পূর্ণ নিজের কাছে টেনে নিলেন।এত জোরে টান দিলেন একদম ওনার কাছে চলে গেলাম।এবার ওনার দুই হাতের বাঁধনে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
”আহা!ঘুমোতে দাও।”
আমি আস্তে করে বললাম,
”দেখুন দরজা খোলা কিন্তু।”
ওনি ঘুম ঘুম কন্ঠে বললেন,
”রুমে বর থাকলে দরজা খোলা রাখতে নেই জানো না?”
‘সারাক্ষণ কী দরজা লাগিয়ে রাখব?’
‘হুম রাখবে।যতক্ষণ আমি বাসায় থাকব। ‘
‘উফফ! ছাড়ুন তো।সত্যি কেউ চলে আসবে কিন্ত।’
‘সমস্ত বউদের কমন ডায়লগ কেউ চলে আসবে।কেউ চলে আসার আগে সবাইকে ডেকে এক জায়গা করে বউকে জড়িয়ে ধরব ভাবছি।’
‘ছিঃ!কী সব কথা।আজ কলেজ যেতে দেরি হলে বুঝবেন!’
‘জব-টব সব ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করছে।জব ছেড়ে-ছুঁড়ে বউ নিয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে।’
‘তাহলে জব ছেড়ে দিন। দেখি কেমন পারেন।’
‘পারব না জানি।জব না থাকলে বউ-এর লিপিস্টিক কিনব কীভাবে?লিপিস্টিক কেনার জন্য হলেও জবটা করতে হবে।’
‘আপনি কবে আমার জন্য লিপিস্টিক কিনলেন?’
‘জানতাম প্রশ্নটা করবে তুমি।’
‘জেনেও এমন বোকার মতো প্রশ্ন করার মানে কী?’
‘মানে হলো। আলমারি খোলো,যাও।’
‘কী আছে আলমারি তে?’
‘তার জন্য আগে আলমারি খুলতে হবে আলমারির ড্রয়ার খোলো যাও।’
‘আমাকে না ছাড়লে যাব কীভাবে?’
‘আচ্ছা যাও।’
আলমারি খুলে, আলমারির ড্রয়ার খুলে দেখলাম একটা রঙিন কাগজে লেখা “বউ আমার, আলমারির এই ড্রয়ারটা আমি ফাঁকা রাখি।এই ড্রায়ারে শুধু তোমাকে মাঝেমধ্যে খুশি করতে গিফট রাখার জন্য বরাদ্দ।”
কাগজটা তুলে দেখি একটা লিপিস্টিকের বক্স।বক্সের ভেতরে দুই ব্রান্ডের দুই ডজন লিপিস্টিক।সেখানেও একটা রঙিন কাগজে চিঠি।
”আমার আদুরে চঞ্চল বউটা। তোমার শ্যামসুন্দর বরের ভালবাসা নিয়ো।জানি আমি ২১-২২ বছরের ছেলেদের মতো রোমান্টিক নই।হুটহাট ভালবাসাও প্রকাশ করতে পারি না।আমার সবটাই অপ্রাকশিত তোমার কাছে।তবে আমার অপ্রকাশিত ভালবাসাটাই ভীষণ গাঢ় আর তীব্র।যা হয়ত মুখে বলে প্রকাশ করা যাবে না।মানুষ সাধারণত গিফট করে বিশেষ দিনে,বিশেষ মুহূর্তে।আজ না কোনো জন্মদিন,না ম্যারেজ ডে,না ভ্যালেন্টাইন্স ডে।এটা জাস্ট একটা সাধারণ ডে।আর এই সাধারণ ডে-কে তোমার জন্য অসাধারণ আর মেমোরেবেল করতে এই চিঠি তোমার জন্য।এমনি ইচ্ছা হলো হুট করে তোমাকে কিছু একটা লিখতে।তোমাকে ভালবাসি বলতেই এই চিঠি লেখা।ভালবাসি প্রিয় বউ,আমার অর্ধাঙ্গী,আমার বামপাজরের হাড়ের অস্তিত্ব।বহুদিন ধরে খেয়াল করে এসছি তোমার লিপিস্টিক পরতে খুব ভালো লাগে।তাই এই লিপিস্টিক তোমার জন্য আনা।রোজ পরার সময় ভাববে তোমার শ্যামসুন্দর পুরুষের দেওয়া লিপিস্টিক।জানি এক মুহূর্তের জন্য হলেও তোমার ওই ঠোঁট তখন আমায় ভেবে হাসবে।ভালবাসি বউ।”
চিঠিটা পড়ে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে মৃদু হাসছি।সত্যি ভালো লাগছে আমার। ভীষণ ভালো লাগছে।এরই মাঝে আড়ষ্ট দুটো হাত আমার কোমর স্পর্শ করল।কোমর জড়িয়ে ধরে কাঁধে থুতনি ঠেকিয়ে উত্তপ্ত নিঃশ্বাস ছাড়ল।ওষ্ঠ ডুবে গেল ঘাড়ে।মুহূর্তের মাঝে অদ্ভুত এক কম্পন হলো শরীরজুড়ে।মাথা হালকা কাত করে ওনার দিকে তাকিয়ে ওনার চুলের মধ্য হাত চালিয়ে ফিসফিস করে বললাম, ”থ্যাংক ইউ শ্যামসুন্দর মানব।”
এরই মধ্য আমার ফোন বেজে উঠল।ফোন বেজে উঠতেই ওনি আমাকে ছেড়ে দিলেন।কলটা বাবার ছিল। বাবার সাথে কথা শেষ করে এসে দেখি ওনি রেডি হয়ে গিয়েছেন।আমি ফ্ল্যাক্স থেকে চা ঢেলে ওনার হাতে দিয়ে বললাম, ”আজ ওদের ডিভোর্সের ডেইট পড়েছে।’
ওনি চায়ে চুমুক দিয়ে বললেন, ”আমি যেতে পারব না।তুমি যেয়ো।কিছু ডিভোর্স অত্যান্ত হৃদয়বিদারক হয়।আর কিছু ডিভোর্স আনন্দের হয়।আমি মনে করছি এটা আনন্দের।তাই তরীর জন্য শুভকামনা।আর কয়েকদিন পরেই ওর ভর্তি, সব কিছু ভালো হবে।বুঝেছ?”
ওনার চা খাওয়া শেষ হলে বলালাম, ”আরেকটু দেব?”
ওনি মৃদু হেসে বললেন, ”না এত নিয়ে পারব না।’
‘নিয়ে পারবেন না মানে?’
‘কাল রাতে অনেক চা খেয়েছি।’
বলেই দুষ্টু হাসি দিয়ে বেরিয়ে গেলেন।কী দুষ্টু এই লোকটা!আবার নিজেকে আনরোমান্টিক ভাবে।আজ রাতে ওনার সাথে একটু দুষ্টুমি না করলেই নয়।অনেক দিন ওনার অদ্ভত চাহনি দেখিনি।
সকাল গড়িয়ে দুপুর হলো।কোর্টে তরী আর মৃন্ময় উপস্থিত।ডিভোর্সের মুহূর্তটা কী বাজে!তরী একটা কথাও বলছে না।ওশানের দিকে ভুলেও তাকাচ্ছে না।মানুষ বেশি আঘাতের পরে একটা সময় সত্যিই পাথর হয়ে যায়।তরীও তাই হয়েছে।তরী কোনো কথা না বলে গম্ভীর ভাবে সাইনটা করে দিল।সাইন করে ধপ করে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
”আমার কি এখানে আর কোনো কাজ আছে?”
বেশ অস্থির দেখাচ্ছে ও-কে।ওশান খুব অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তরীর দিকে।আমি বললাম, ”না তরী আর কোনো কাজ নেই।”
তরী হনহন করে বেরিয়ে এলো।বেরিয়ে আসার সময় চোখ পানিতে টইটুম্বর।তবে ওশানের সামনে বুঝতে দিল না।তরী বাইরে এসে ঘনঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছে।আর তখনই ফোন এলো তরীর নাম্বারে;গহনা সব বিক্রি হয়ে গিয়েছে।তরী চোখের পানি মুছে সাথে সাথে হেসে দিয়ে আমাকে বলল, ”সব গহনা বিক্রি হয়ে গিয়েছে।”
আমি তরীকে জড়িয়ে ধরে বললাম, ”কংগ্রাচুলেশন্স বেবি।এভাবেই এগিয়ে যাও।”
মনের মাঝে কেমন খটকা লাগছে।কে তরীর সব গহনা কিনে নিল!এটা তো আর সিনেমা না যে জসিমের মতো এক রাতে লটারি জেতা যাবে, বা শাবানার মতো একটা সেলাই মেশিন দিয়ে গার্মেন্টস বানানো যাবে।কিন্তু কী হলো এটা!হাউ ইজ ইট পসিবল?৪০সেট গহনা শেষ।কাল রাতে যশোরে এত মানুষের বিয়ে হয়েছে!কে কিনল!
সব ঝামেলা শেষ করে বাসায় ফিরলাম।আগামীকাল পরীক্ষা।অথচ আমার পড়াতেই মন নেই।আগামীকাল পরীক্ষাটা হয়ে গেলেই বাঁচি।কেউ যদি একটু তাবিজ করেও আমাকে পড়তে বসাতে পারত,ভাল্লাগতো!মানুষ পরীক্ষার আগে রিভিশন দেয় আর আমি নতুন বই খুলে দেখি।পরীক্ষার আগের দিন পড়ব ভেবে সব রেখে দিয়েছি। পরীক্ষার আগের দিন সকালে না দুপুরে, দুপুরে না রাতে।রাতে না পরীক্ষার দিন সকালে এইভাবেই পরীক্ষার টাইম চলে আসে।আর আমি ভীষণ সিরিয়াস ছাত্রীর মতো পরীক্ষার হল পর্যন্ত বই ক্যারি করে নিয়ে যায়।মানুষ ভাবে,কী পড়ুয়া মেয়ে!
ওইদিকে রোশান স্যার ওয়ার্নিং দিয়েছেন। ওনি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছেন ল্যাপটপে।একদম কথা বলা যাবে না।আর আমিও যেন চুপচাপ বই পড়ি।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে,যখনই কেউ আমাকে কথা বলতে নিষেধ করবে ঠিক তখনই আমার হাসতে হাসতে ম**রে যেতে ইচ্ছা করবে।একবারেই হুদাই হাসি হাসবে।আজকেও সেই সমস্যা।অকারণ হাসি পাচ্ছে।এখন আমার হাসতে হাসতে ম*রে যে*তে ইচ্ছা করছে।হাসিতে পেট ফেটে যাচ্ছে।এই হাসি চেপে রাখা আমার পক্ষে সম্ভবপর নয়।হাসি চেপে রাখতে রাখতে ফিক করে শব্দ হয়ে উঠল।আমি সাথে সাথে নিজেকে সামলে নিলাম।ওনি হাসির শব্দে আচমকা আমার দিকে তাকালেন।উনার তাকানো দেখে আমি জগ উঁচু করে ঢকঢক করে পানি গিললাম।কিন্তু ওনার চাহনি এখনও আমার দিকে।ওনাকে ওইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে হাসি আর আটকানো গেলে না।হাসি পেট ফেটে বেরিয়ে এলো।মুখের সমস্ত পানি ওনার মুখে গিয়ে লাগল।আমি খিলখিল করে হাসতে হাসতে রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম।কিছুক্ষণ পর দেখলাম ওনিও রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন।ওনাকে বেরোতে দেখে আমি আবার রুমে প্রবেশ করলাম।ওয়াশ রুমে দেখি বালতিতে টাওয়াল ভেজানো।টাওয়াল চিপে হাত-মুখ ধুয়ে,টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছে ভেজা চিপচিপে টাওয়াল বেখেয়ালি ভাবে বিছানায় রাখলাম।টাওয়াল রাখার মিনিট দশেক পরে মনে হলো ভেজা টাওয়াল বিছানায় রেখেছি।দ্রুত উঠাতে উঠাতে দেখি ভিজে গিয়েছে বিছানা।টাওয়াল চেয়ারের সাথে মেলে দিলাম।ওনি এরই মাঝে বাইরে থেকে এসে আবার বিছানায় বসে ল্যাপটপে কাজ করছেন।দু’মিনিট বসার পর আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,”এখানে ভেজা-ভেজা লাগছে কেন?”
‘ভেজা লাগবে কেন?’
‘ভেজাই তো মনে হচ্ছে’
‘দেখি উঠুন তো।’
ওনি বিছানা ছেড়ে নিচে নামলেন।আমি ভেজা জায়গা দেখে বললাম,
‘এম্মা ছিঃ!আপনি বিছানা ভিজিয়ে দিয়েছেন?’
‘হোয়াট?’
‘এই বয়সে এই কাজ কীভাবে বিছানায়!ছিঃ!ছিঃ’!
ওনি সাথে সাথে চোখ নামালেন ওনার প্যান্টের দিকে।ওনি কি এক মুহূর্তের জন্য আমার কথা বিলিভ করে নিলেন!আমি মুখে হাত দিয়ে হেসে যাচ্ছি।ওনি ঘটনা বুঝে উঠতে পারছেন না।এইদিকে বিছানা ভেজা।
আমি হাসতে হাসতে বললাম, ‘এটা কী করলেন আপনি?’
ওনি অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে।কী অদ্ভুত সে চাহনি!জীবনে এমন সিচুয়েশনে বোধহয় ওনি আগে পড়েননি।
চলবে?
(বিয়ের পর জামাই এর সাথে সারাহ’র মতো করব।)
👉পরবর্তী পাট পড়তে পেজটি Follow করুন অবসর সময়ে হ্যাপি রিডিং।