শবনম (পর্ব২০) সায়লা সুলতানা লাকী

0
147

#শবনম (পর্ব২০)
সায়লা সুলতানা লাকী

দিনের আলোয় আবার সব কিছু সুন্দর মতো চলতে লাগল। শবনম নিজের একাগ্রতা দিয়ে কাজ করে নিজের অবস্থান পোক্ত করতে লাগল। নিজের ব্যবহার দিয়ে চেষ্টা করতে লাগল সহকর্মীদের সাথে সখ্যত গড়ে তুলতে। রোগীদের যে কোন প্রয়োজনেই এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় থাকল।
মাতৃসদনে দিনের বেলায় রোগী বেশি আসে নিয়মিত চেক আপ আর টিকা দিতে। তাই সেই সময়তে কাজের চাপ বেশি থাকে।
দিন শেষে রাত এল। আজ রাতেও এক নবজাতকের জন্ম হল। কিন্তু নবজাতকের পাশে ওর বাবা ছাড়া আর কোন সাহায্যকারী না থাকায় তাদের অনুরোধে ওই রুমেই থাকতে হল শবনমের। তাই ঘুমানো নিয়ে বাড়তি কোন সমস্যা পোহাতে হল না। পরের দিন রোগী ছুটি নিয়ে চলে গেল। নরমাল ডেলেভারীতে রোগী একদিনের বেশি থাকে না। বাচ্চা হওয়ার পর পরই চলে যায়। সারারাত বাচ্চাটাকে বুকে নিয়ে নিজের কষ্ট কিছুটা উপশম হলেও সকালে চলে যেতেই মনটা হুহু করে উঠল বেদনায়। নিজেই আবার মনকে বোঝাল, ওরা এভাবেই আসবে এভাবেই চলে যাবে। এসবে দুঃখ পেলে চলবে না। আবার নতুন করে কাজে লেগে পড়ে ও।
হোটেল থেকে খাবার কিনে খেতে ভালো লাগে না। কিন্তু সাহস করে রান্নার অনুমতিও চাইতে পারে না। যোগাড়যন্ত্র যা প্রয়োজন তা নয়ত একবারেই করে নিলে চলত। কিন্তু দিনের বেলা বড় ম্যাডাম এলেও তার কাছে গিয়ে অনুমতি চাওয়ার সাহস করতে পারে না। প্রায় সময় পাউরুটি আর কলা দিয়েই ক্ষুধা নিবারন করে। গতরাতে বাচ্চার মায়ের জন্য যে খাবার এনেছিল তা শবনমকে খেতে দিয়েছিল বাচ্চার বাবা। মনভরে ভাত খেয়েছিল সে সময়তে। ছোট থেকে যা খেয়ে বেড়ে উঠেছে তার বাহিরে অন্য কিছুতে ঠেকার জীবন চলে যায় কিন্তু মন ভরে না। মনে মনে ঠিক করে আজ রাতে এডমিন স্যারকে বলবে এখানে রান্নার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য যেন একটু অনুমতি চেয়ে দেয় সে শবনমের হয়ে। মানুষটার বড় মায়ার শরীর। তাকে বুঝায়ে বললে নিশ্চয়ই সে এইটুকু সাহায্য করবে শবনমকে।

সন্ধ্যার শিফটেই বাতেন চলে এল ডিউটিতে। তখনই শবনম ওর মনের কথাটা বলে ফেলল। বাতেন শুনে সাথে সাথেই অনুমতি দিল। বলল
“আহা মেয়ে, তুই এখানকার একজন। তুই এমন করলে কী আর চলে? তুই নিজেরটা নিজে রান্না করে খাবি তাতে সমস্যা কী? বল তোর কী কী লাগবে? দে আমিই আনায় দেই মজনুরে দিয়া। তোর জন্য এইটুকু করা কী কোন ব্যাপার হল? এই সবের জন্য বড় ম্যাডামের অনুমতির দরকার নাই। আমি বলছি তাতেই যথেষ্ট। ”
বাতেনের কথায় শবনমের চোখ ভিজে উঠে। এমন আপন করে কথা বলায় ও অভিভূত হল। “দুইন্যায় ভালো মাইনষে আছে বইল্যাই দুইন্যাডা এত সুন্দর।” দুলালের কথাটাই মনে পড়ল তখন ওর।

সাথে সাথে চাল ডাল তেল নুন ইত্যাদির ফর্দ লিখে সাথে টাকাও দিয়ে দিল। বাতেন তখন টাকা নিতে চাইল না কিন্তু শবনমের জোরের কাছে না নিয়ে আর পারল না।

শবনমের চোখে মুখে এখন আনন্দই আনন্দ। বাজার সদাই আসতেই ও লেগে গেল রান্নাবান্নায়।
চটজলদি সবজি খিচুড়ি রেঁধে রাতে ডিউটিতে থাকা সবাইকে শিন্নির মতো একটু একটু করে খেতে দিল। সবাই খেয়ে ওর রান্নার প্রশংসা করল তাতে যেন ওর আনন্দ আরও দ্বিগুণ হয়ে গেল। সব শেষে ও নিজে একটা থালায় খিচুড়ি নিয়ে খেতে বসতেই এডমিন স্যার বাতেন এসে বসল ওর খুব কাছে ঘেঁষেই। এরপর গুটুর গুটুর গল্প জুড়ে দিল। কিন্তু আজ আর শবনমের মনে বিরক্তির জন্ম দিল না প্রথমটায়। বাতেন বসেই ওর রান্নার প্রশংসা করতে শুরু করল–
“শবনম তোর রান্নাতো ফার্স্ট ক্লাস। হবে না কেন, দেখলামতো তুই সৈয়দ বংশের মেয়ে। জাত বংশের একটা আছর থাকে না মানুষের উপর! তোর উপরও আছে, চাকরিটা ছোট হলে কি হবে তুইতো মানুষ হিসেবে খুব ভালো তা আমি বুঝতে পারছি, তাইতো সব বাদ দিয়ে তোর সাথেই একটু মন খুলে টুকটাক কথা বলতে ছুটে এলাম।”
“হ স্যার কন, আপনে আইজকা যা কইবেন আমি তাই শুনুম। আপনে আমার বড় একটা উপকার করছেন। এই রুটি চিড়ায় আর মন লাগতাছিল না। ভাত হইল আসল খাওন আমগো লেইগ্যা। ”

“আহা শবনম ! তুই এখন চাকরি করোস, নানান মানুষের সাথে উঠ বস হবে। তাদের সাথে কথা বলতে হলে একটু সুন্দর করে কথা বলতে শিখতে হবে না? আস্তে আস্তে অন্যদেরটা দেখে শিখে নিবি। ভাষাটা সুন্দর হওয়া খুব জরুরি।”

“হ স্যার, শিখমু। আমিও বুঝতাছিলাম এইডা শিখনের বড় দরকার।”
“আজকে তোর রান্না খেয়ে মনটা উদাস হয়ে গেল। আমার বৌটার রান্না একটুও মজা না। বাড়ি গেলে খেয়ে মনে তৃপ্তি পাই না। কিন্তু কী আর করার ভাগ্য বলে কথা। ভাগ্যের উপর আর কার হাত আছে?”

“না স্যার কারো হাত নাই, তয় রান্দন তেমন কোন কঠিন বিষয় না ভাবিসাবরে শিগাইলেই পারব।”
বাতেন এবার ধপ করে শবনমের হাতটা ধরে বসল এরপর মিষ্টি করে বলল
“তুই যাবি আমার সাথে আমার বাড়ি? যেয়ে ওরে রান্না শিখায়ে আসবি!”
হঠাৎ হাতটা ধরায় শবনম চমকে গেল। খাওয়ার উসিলায় খুব সাবধানে হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে নিজের খাওয়ায় মনোযোগ দিল বাতেনের কথার কোন জবাব না দিয়ে।
বাতেনের আর সেদিকে খেয়াল নাই নিজের দুঃখ এখন উথলায়ে পড়তে শুরু করল–
“বৌরে গ্রামে রেখে আমার থাকতে হয় এই ঢাকা শহরে। টাকার পিছনে ছুটতে গিয়ে নিজের জীবন যৌবন সব মিথ্যা করে ফেলছি। সবই বুঝি কিন্তু শরীর কী আর বোঝে? মনও কী আর সবসময় বোঝে? কেমন যে আনচান আনচান করে তাতো তুই বুঝবি। তোরওতো এই অল্প বয়সে স্বামী মরছে, এমন যৌবনে যদি স্বামীরে না পাওয়া যায় তাহলে শরীরের জ্বালা আর জুড়ায় কীভাবে? এই জ্বালা যে জ্বালা তাতো আমি বুঝি।শোন শবনম তোর যে কোন দরকারে তুই আমারে পাবি। তুই ছোট চাকরি করলেও ভালো ঘরের মেয়ে। একটা ইজ্জত আছে তোর। আমারে পর ভাবিস না। তোর জন্য দরকার হলে আমি প্রতিরাতেই ডিউটিতে থাকব। যখন তোর প্রয়োজন হয় আমারে শুধু একটু ইশারা দিবি।

বাতেনের শেষ কথায় শবনম স্তব্ধ হয়ে যায়। ওর চোখ জোড়ায় জ্বালাপোড়া শুরু করে। নিরব হয়ে শুধু ভাবে “এই দুইন্যায় কী কাওরেই বিশ্বাস করন যাইব না? সবাই কী এমন খাচ্চর, আর এমন শয়তানই হয়? ”
ভাবনায় ছেদ পড়ে বাতেনের কথায়–
“এই যে দেখ আজকে তোর হাতের খিচুড়ি খেয়ে মনটা উদাস হয়ে গেল আমার। এখন দেখ শরীরটা কেমন মেজমেজ করছে, এই অবস্থায় তুই ছাড়া আর কে আমার উপকার করতে পারে বলত শবনম (হঠাৎ করেই খপ করে ওর হাতটা আবার ধরে বলে উঠে)
তুই বড় ভালোরে, দে না আমার শরিরটা একটু টিপে, এই পিঠটা, ঘাড়টা ( উরুর দিকে আঙুল দিয়ে ইশারা করে বলে) এইখানেও কেমনজানি করে। একটু দে না টিপে। তাহলে একটু আরাম পাব একটু শান্তি পাব।”

“ও আল্লাহ স্যার, হাত ছাড়েন। কি করেন আপনে? আমার এইডাতো ঝুডা হাত। আঙুল চাইট্যা সাদা কইরালছি। ছাড়েন যাই হাত ধুইয়া আসি।” বলে আর দাঁড়াল না ওর হাতটা ঝাড়া দিয়ে ছাড়িয়ে উঠে এল থালাটা নিয়ে।

হাত ধুয়ে এবার এসে বসল অন্য আয়াদের মাঝে। ওর মনটা খুব খারাপ হয়েছিল। আয়াদের মাঝে বসেও নিজেকে শান্ত রাখতে পারল না। ডুকরে কেঁদে উঠল নিজের বিশ্বাস ভংগ হওয়ার দুঃখে। ওর কান্না দেখে এবার ফিরোজা জিজ্ঞেস করল
“ও আল্লাহ এই ছেমড়ি দেহি কান্দে? কান্দে ক্যা? এতক্ষণ দেহি এডমিন স্যারের লগে রঙ্গেডঙ্গে গল্প করতেছিলি। আমরাতো হাহা হিহি শুনলাম এইখান থেইক্যাই।”

“বুবুগো, এই স্যার যে এত খাচ্চর তাতো বুঝি নাই। কেমন মায়া লাগাইয়া কতা কইছে। কত আপনগীরি
দেহাইছে। অহন গিয়া হের আসল রুপ বাইর অইছে।কত্তবড় সাহস আমারে কয় আমি বলে হের গতর ডইল্যা দিমু। আমি কী হের বিয়া করা বৌ লাগিনি যে হেয় আমার কাছে এমন আবদার করব?”
“ওই মাইয়া তুইতো আগেই স্যারের কথায় মইজ্যা গেছোস। আমরাতো ভাবছি তুইও বুঝি স্যারের মতোই মাইয়া মানুষ। তাই আর তোরে কিছু কই নাই। আমগো জামাই আছে তাই আর আমগো লগে বাঝে না। ওর আগে আরেক মাইয়া আছিল আবিয়াইত্যা, ওরেও নানান কুকথা কইছে পরে লাগছে কাইয্যা।হেরপর মাইয়াডারে চুরির বদনাম দিয়া চাকরি ডিসমিস কইরা দিছে। বড় মেডাম হের কথাই বিশ্বাস করে হের কথাই শুনে। আমরা হেরে পাইও না কিছু কইতেও পারি না। চাকরি যাওনের ডরে চুপই থাকি।” জহুরা খুব আস্তে করে বলল।
“ও বুবু আমি অহন কী করুম। আমারতো চাকরিডা বড় দরকার।”
“তুই কী করবি হেইডা তুই বুঝবি। আমগো এডির মধ্যে ডাকিস না।”
শবনম বুঝল ওরা কোন উপকার করবে না এই ব্যাপারে শবনমকে। তাই ওখান থেকে উঠে সামনের দিকে গেল।
ও উঠতেই জহুরা বলল
“ওই দিকে কই যাস? স্যারতো এই দিকে?”
শবনম ঘুরে একবার ওদের দিকে তাকিয়ে কোন উত্তর না দিয়ে যেদিকে যাচ্ছিল সেদিকেই হাঁটা দিল।

হাঁটতে হাঁটতে এক রুমে ঢুকল, ওই রুমের রোগীর বাচ্চা এই হয় এই হয় অবস্থা। কিন্তু এখনও ব্যথা শুরু হয় নাই। কী মনে করে যেন এই রাতে এই রুমেই ঢুকল। রোগীর সাথে তার হাসবেন্ড আছে রুমে। শবনম হুট করেই বলে উঠল
“ও আল্লাহ আপা আপনেরতো এখনও ব্যথা উঠে নাই? আপনের চোখমুখতো ঠিকই শুকায় গেছে কিন্তু ব্যথা শুরু অইল না ক্যা? বিষয়ডা মনে অয় জটিলের দিকেই যাইতাছে। ও ভাই আপনে এমনে বইয়া আছেন ক্যা? উডেন, যান স্যাররে কন বড় মেডামরে ডাকতে। হেয় আইসা বিষয়ডা একটু দেহুক। সময় থাকতে নড়বেন না হেরপর সমস্যা অইলে পরে চিক্কুর পাইরা কানবেন।”
শবনমের কথায় এবার রোগী সহ তার হাসবেন্ডও একটু নড়েচড়ে উঠল। রোগী প্রথমেই ভয় পেয়ে কেঁদে উঠল
তখন আবার শবমম বলল
“ও আল্লাহ৷ আপা আপনে কান্দেন ক্যা? মায়েগো এই সময়তে অনেক সাহস রাখতে অয়। আমারও অনেক সাহস আছিল। সমস্যাতো যে কারো অইতে পারে। আর হের লেইগ্যাতো বড় মেডাম আছেওই। ছোট মেডামরা অতকিছু না বুঝলেও বড় মেডাম ঠিকই বুঝতে পারব। তারে ডাকেন তাইলে আর চিন্তার কোন কারন থাকব না। তয় আমি যে কইছি ডাকতে তা কইয়েন না। তাইলে আবার আমারে বকব। আমি কইলাম আপনেগো ভালো হোক হের লেইগ্যা।”
শবনমকে আর কিছুই বলতে হল না। রোগীর হাসবেন্ড গিয়ে বাতেনকে দিয়ে ল্যান্ডফোনে কল দিয়ে বড় ম্যাডামকে আনালেন মাতৃ সদনে ওই রাতেই। রোগির হাসবেন্ডের চিৎকার চেচামেচিতে মোটামুটি সদনের ভেতরটা বেশ সরগরম হয়ে উঠল অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই। এসবের মধ্যে সবার ঘুম গায়েব হয়ে গেল। ডিউটি ডাক্তাররাও রোগীর কেবিনে চলে এল। এদিকে বাতেন ব্যস্ত হয়ে পড়ল ভদ্রলোককে ঠান্ড করতে।

বড় ম্যাডাম এসে দেখলেন বাচ্চা এখনও নিচেই নামে নাই। রোগীর সাথে কথা বলে আনুষাঙ্গিক খোঁজ খবর নিয়ে দেখলেন সবই নরমালে আছে শুধু ব্লাড প্রেশারটা এই মুহুর্তে অনেক হাই। তাই বোঝালেন যে তারা একটা নরমাল ডেলিভারির জন্য আগামীকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন এর মধ্যে যদি কিছু না হয় তবে অন্য ব্যবস্থা নিবেন। আপাতত রোগীকে প্রেশার নিয়ন্ত্রণের জন্য ঔষধের সাথে একটা ঘুমের ঔষধ খাওয়ায় দিয়ে ঘুম পারায় দিতে বলে উনি চলে যেতে চাইলেন ঠিক তখনই শবনম রুম ভরা গিজগিজ করা মানুষের মাঝেই বলে উঠল
“আসসালামু আলাইকুম বড় মেডাম, একটা কতা জিগাই আপনেরে? আপনে কী শুধু বেডি মাইনষের ডাক্তার নাকি বেডা মাইনষের সমস্যারও ঔষধ দেন।”
হঠাৎ করেই শবনমের এমন প্রশ্নে রুমের সবাই তাজ্জব হয়ে গেল।
বড় ম্যাডামও যে অবাক হননি তা নয়। উনিও কিঞ্চিৎ ভুড়ু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলেন
“কেন? তোমার কী দরকার এসব জেনে?”
“না মানে মেডাম, অহনতো আমি এই রুগির মাথা টিপুম, পা টিপুম হের ঘুম পারাইয়া তয় এইহান থেইক্যা যামু। কিন্তু আমগো এডমিন স্যারওতো অসুস্থ। হেরও গতরে অনেক বিষ বেদনা করতাছে৷ খালি বলে মেজমেজ করে বৌ লগে থাকে না হেই কারনে। অহন আমারে ধরছিলো হের গা গতর টিইপ্যা দেওনের লেইগ্যা। কিন্তু অহন আমি কোনডা করুম, কোনডা আমার ডিউটি তাইতো বুঝতাছি না?”

“এই মেয়ে চুপ চুপ, কী বলে এগুলি–” বাতেনকে থামিয়ে দিয়ে শবনম আবার বলে উঠে
“ও স্যার ডরান ক্যা? আমার হাতটা ধইরা আপনে সাহাইয্য চাইছেন আমি ভুলি কেমনে? আপনের চিকিৎসা দরকার। দুইদিন পরপর এমন বেদনা লইয়া চলবেন কেমনে? বড় মেডাম বড় ডাক্তার, হেয় আপনেরে দুইডা শুই দিলেই দেখবেন সব কিছু ঠিক অইয়া যাইব। আপনে আমার এত্ত বড় উপকার করলেন অহন আমারওতো উচিত আপনের উপকার করনের তাই না?
মেডামগো স্যারের বলে খালি—-”

বড় ম্যাডাম যা বোঝার বুঝে গেলেন, তিনি শবনমকে থামিয়ে দিয়ে বাতেনের দিকে একবার তাকালেন। বাতেন লজ্জায় মাথা নিঁচু করে ফেলল। তিনি এবার অন্যদের দিকে ঘুরে ঘুরে তাকালেন। অন্য দুই আয়া মিট মিট করে হাসছে। সিস্টার আর ডাক্তারদের চেহারা দেখে মনে হল তারা এবিষয় সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
তিনি তাৎক্ষণিকভাবে বললেন বাতেন সাহেব এডমিনের যে আরেকটা ছেলে আছে ওকে এখনই খবর পাঠান বলেন এখানই চলে আসতে রাতে ওই থাকুক ডিউটিতে আর আপনি আজ আমার সাথেই বের হয়ে ছুটিতে চলে যান। আগামীকাল সকালে এসে আমার সাথে অফিসে দেখা করবেন।”

বড় ম্যাডাম চলে যেতেই কিছুক্ষণ পর সিকিউরিটির লোকটা দৌড়ে ভেতরে এসে জিজ্ঞেস করল
“করে ফিরোজা ভেতরে কি হইছেরে? বড় মেডাম যাইতে কালে বাতেন স্যাররে আর রাইতে ভিতরে ঢুকতে দিতে নিষেধ কইরা গেল ক্যা?”

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here