গোধূলি বেলায় তুমি এসেছিলে – পর্ব ৪৬

0
435

#গোধূলি_বেলায়_তুমি_এসেছিলে
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ৪৬

সিঁড়ি যেন শেষ হয় না। মাত্র অল্প কয়েকটাই তো সিঁড়ি তবুও যেন কেন তার অন্ত ঘটছে না কে জানে! রাগিনী জোর কদমে ছুটছে। চোখমুখের উজ্জ্বলতা নিমিষেই হারিয়ে বিবর্ণ রূপ ধারণ করেছে। দম না ফেলে একাধারে বিড়বিড়িয়ে বলে চলেছে, ‘বাবা! বাবা!’

সিঁড়ি দিয়ে উঠতে যাতে কষ্ট না হয় সেকারণে রাগিনী তার বাবাকে নিজে নিচের ঘরে শিফট করে দিয়েছিল। ডান দিক ঘুরে প্রথম ঘরটাই রাশেদ সাহেবের। রাগিনী ঝটপট করে ভিড়িয়ে দেওয়া দরজা খুলতেই দুচোখ ছন্নছাড়া হয়ে খুঁজতে থাকল তার বাবার মুখটা। বিছানায় নেতিয়ে থাকা মানুষটিকে দেখে চমকে উঠল সে। তার পাশে দেখা গেল আরো দুটো চেনা মুখ। অভিরূপ ও নোমান। অভিরূপ নিজের সমস্ত ভর দিয়ে দুহাতের মাধ্যমে রাশেদ সাহেবের বুকে চাপ দিয়ে চলেছে অনবরত। রাশেদ সাহেবের জ্ঞান নেই। নড়চড় নেই। একভাবে পড়ে আছেন বিছানায়। বুক চিনচিন করে ওঠে রাগিনীর। পা আর চলছে না। থমকে রইল দুচোখ। আপাদমস্তক কম্পন দিয়ে উঠল। মুখ থেকে কথা বের হতে চাইল না চাপ দিয়ে তৎক্ষনাৎ চিৎকার করে বলে ওঠে,
“বাবা! আমার বাবা!”

দ্রুত বেগে এগোতেই রাগিনী টাল সামলাতে না পেরে মুথ থুবড়ে পড়ল বিছানায় তার বাবার পাশে। কোনোমতে উঠে অশ্রুসিক্ত নয়নে চেয়ে বলল,
“কী হয়েছে তোমার বাবা? কথা বলো না একটু! আমি আর তোমার অবাধ্য হবো না। সব কথা শুনব। আমার সাথে এমন করো না।”

অভিরূপ নিজ কাজে ব্যস্ত হয়ে জবাব দিল,
“আমার বাবা বলেছিল আঙ্কেলের হার্টের প্রবলেম আছে। সেখান থেকেই হয়ত কিছু একটা ঘটেছে রাগিনী। ইমোশন সামলাও নিজের। কিছু হবে না। প্রে করো, যাতে একটু হলেও আঙ্কেল রেসপন্স করে।”

রাগিনীর বুক ধড়ফড় করছে। সে ছোট থেকেই মাকে পায়নি। বাবা ছিল তার একমাত্র আদর ও আবদার পূরণ করার মানুষ। একা একা মানুষটা কাজ সামলে তাকেও বড় করেছে। আর এত কষ্ট দেখে বড় হওয়ার পর সে কখনোই চায়নি তার বাবাকে কোনো মেন্টাল প্রেশার বা স্ট্রেস দিতে। তাই ছোট ছোট কষ্ট, দুর্ঘটনাগুলো লুকানোর চেষ্টায় থেকেছে সবসময়। তবে শেষমেশ এমন পরিণতি ঘটল, এমন ঘটনায় জড়িয়ে পড়ল যেটার চেয়ে ভয়া’বহ যেন আর কিছুই হয় না। এই টেরো’রিস্টি টিমের সঙ্গে অকারণে রাগিনীর জড়িয়ে পড়া নিয়েই কয়েকদিন চিন্তা করেছেন সেটা বেশ বুঝতে পারছে রাগিনী। গত কয়েকদিন ধরে সে খেয়ালও করেছিল মাঝে মাঝে তার বাবা বুকে হাত দিয়েও কথা বলত। হাঁপাত কথার মাঝে কখনো কখনো। অবশেষে বড় ভয়’ঙ্কর পরিণতি ঘটেই গেল। এভাবে তো সে তার বাবাকে হারিয়ে যেতে দেবে না। রাগিনী কিছু একটা ভেবে আশেপাশে কিছু একটা খুঁজল। একহাতে চোখমুখ ঘষে পানি মুছতে মুছতে বলল,
“ফোন কোথায়, ফোন? এম্বুলেন্স ডাকতে হবে।”

“আমি ডেকে দিয়েছি রাগিনী। চিন্তা করো না।”

নোমানের কথা শুনে ক্ষ্যান্ত হয় না রাগিনী। দ্রুত টেবিল থেকে পানির গ্লাস নিয়ে হাতে পানি দিয়ে বারবার পানি ছিটিয়ে দেয় রাশেদ সাহেবের ওপর। লাভের লাভ কিছুই হয় না। রাগিনী ভেতর থেকে মুষড়ে পড়ে। চোখমুখ খিঁচে বাবার দিকে তাকিয়ে হুহু করে কেঁদে দিয়ে বলে,
“বাবার জ্ঞান ফিরছে না। বাবা তাকাচ্ছে না আমার দিকে।”

“হি ইজ রেসপন্ডিং।”

অশ্রু ভরা চোখে অভিরূপের কথায় বেশ আশা নিয়ে বাবার দিকে তাকাল রাগিনী। রাশেদ সাহেব চোখ বন্ধ করে বড় বড় শ্বাস নিচ্ছেন। অভিরূপ উনার বুকে হাত রেখে আরো জোরে জোরে বুকে চাপ দিতে থাকল। রাগিনীর প্রাণটাই যেন বেরিয়ে এসেছে। কাঁদো কাঁদো হয়ে কোনোরকমে বলল,
“বা…বাবা। তাকাও একটু।”

রাশেদ সাহেব তাকালেন না। আবারও নীরব হয়ে গেলেন। বড় বড় শ্বাস নেওয়া বন্ধ করলেন। রাগিনী আবারও স্তব্ধ হয়ে গেল। টলমল দৃষ্টিটা নিক্ষেপ করল ভাবলেশহীন হয়ে তাকিয়ে থাকা অভিরূপের দিকে। আশেপাশে পিনপতন নীরবতা। চোখ দিয়ে গড়িয়ে গড়িয়ে অনায়াসে পানি পড়েই চলেছে। সব বুঝি শেষ?

রায়ানের জিপ গাড়িটা এসে থামল আহমেদ মেনশনের প্রধান বড় দরজার সামনে। গাড়ি থেকে চাবি খুলে নিয়ে নিজের পকেটে হাত রেখে বুঝে নিলো নয়নতাঁরার ফোনটা ঠিকঠাক আছে কিনা। তারপর নিচে নেমে ধীর পায়ে হেঁটে গেটের কাছে গেল। গেট বন্ধ। কেঁচি গেট দিয়ে দেখা যাচ্ছে দারোয়ানকে। সে মৃদু সুরে ডাকল দারোয়ানকে। গেটের ওপারে থাকা লোকটা ডাক শুনে এগিয়ে এসে রুক্ষ গলায় বলল,
“আপনার পরিচয়? কার সাথে দেখা করতে এসেছেন?”

“আই এম ইন্সপেক্টর রায়ান সিকান্দার। বাড়িতে কি কেউ আছে? যেকোনো কেউ থাকলেই হবে। একটা জিনিস ফেরত দেওয়ার ছিল।”

রায়ানের নাম শুনেই যেন তটস্থ হলো দারোয়ান। দ্রুত গেট খুুলতে খুলতে নরম সুরে বলল,
“আসেন, আসেন। বাসায় নয়নতাঁরা ম্যাডাম আছে। স্যার তো সকাল সকাল বের হয়ে গিয়েছেন।”

রায়ান গেট দিয়ে ঢুকে কংক্রিটের তৈরি রাস্তাটা ধরে হাঁটা ধরল। আশেপাশে এক পলক তাকাতেই পুরোনো স্মৃতিগুলো জীবন্ত হয়ে ওঠে। যেন এইতো কয়েকবছরের আগের কাহিনী! সে আর নির্জন ছোটো ছিল। সবে ক্লাস ফোরে পড়ত। একই স্কুলে পড়ত তারা। পুরো স্কুল জুড়ে তাদের বন্ধুত্ব নিয়ে বেশ চর্চা হতো। হবে না-ই বা কেন! কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সব কাজ করত তারা। একে অপর পরিপূরক ছিল যেন। নয়নের বয়স তখন দুই বছরের কাছাকাছি ছিল। তবে পড়াশোনার চাপে নয়নতাঁরার সঙ্গে সাক্ষাৎ খুব কমই হয়েছে। তবে ছোটবেলায় রায়ান বেশ কয়েকবার কোলে নিয়েছে। তাকে সেটা তার মা বলেছে। বাড়ির বাহিরে ফাঁকা জায়গায় বাকিদের মতো বিভিন্ন ফুলের বাগান করা নেই। শুধু সরু রাস্তার দুপাশে সৌন্দর্যের জন্য দেওয়া পাতাবাহারের গাছ। তাও চারকোনা করে ছেঁটে রাখা। ডান পাশে ফাঁকা স্থানে ঘাসের উপর সাদা রঙের দোলনা। আর বাম পাশে আহামরি কিছু নেই। শুধু সবুজ ঘাস আর দুটো আমগাছ। ব্যস…তাতেই বেশ সুন্দর লাগে। রায়ান কলিংবেল বাজিয়ে অপেক্ষা করল বাহিরে। ঘড়িতে সময় দেখল। হাতে বেশি সময় নেই। অফিসে ছুটতে হবে আবার।

নয়নতাঁরার ঘুমটা সবেমাত্র ভেঙেছে। আলসেমি ভেঙে মুখে ব্রাশ নিয়ে বাড়ির ড্রয়িংরুমের মিউজিক বক্সে অভিরূপের গাওয়া গান ছেড়ে দিয়ে এপাশ-ওপাশ ঘুরছে আর ব্রাশ করছে। কলিংবেলটা বেজে উঠতেই বেশ বিরক্ত হলো সে। ভোরবেলায় কেউ আসে নাকি? কে জানে মানুষের ঘুম আছে কিনা! বিড়বিড় করে আওড়াতে থাকে,
“মেবি আমার বিগ ব্রাদারের ভোর ভোর উঠে কাজে ছোটার রোগটা সবাইকে অ্যা’টাক করছে! কী ভয়ানক ব্যাপার স্যাপার!”

অতঃপরই নয়নতাঁরার মনে হলো এটা নিশ্চয়ই লেহেঙ্গা ডেলিভারিম্যান। এত দেরি হলো আসতে? অর্ডার গতকালকেই আসার কথা ছিল! বিরক্তি মাখা চোখমুখ দিয়ে নয়ন গেল সদর দরজার কাছে। হোল দিয়ে না চেক করেই সরাসরি দরজা খুলেই মুখে ফেনা নিয়ে ধমকে উঠল নয়নতাঁরা।
“আক্কেল জ্ঞান নেই? আক্কেল দাঁত ওঠে নি নাকি? কাল থেকে আমি এক্সাইটমেন্টে পাগল হয়ে যাচ্ছি লেহেঙ্গার জন্য আর আপনি…”

কথাগুলো বলার মাঝপথে বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটাকে দেখে আপনা-আপনি কথা বলা আঁটকে গেল নয়নের। স্বপ্ন দেখছে না তো? নিশ্চয় তাই হবে। ঘুম বাবাজী এখনো তাকে ছাড়েনি। চোখ বুঁজে নিজে নিজে বলল,
“ঘুম বাবা পালাও তাড়াতাড়ি। হুঁশ হুঁশ… ”

বলেই চোখ খুলল নয়ন। একি! এখনো তো একই দৃশ্য দেখছে! কেমন যেন ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রয়েছে মি. ক্রাশ ইন্সপেক্টর তার দিকে। মুখ থেকে আপনাআপনি ব্রাশ খসে পড়ল নয়নতাঁরার। ঘুম থেকে ওঠার পর যে তার অবস্থা ঠিক কেমন আলুথালু মতো হয় সেটা কল্পনা করতেই চোখমুখ অন্ধকার হয়ে এলো। কোনোকিছু না ভেবেই তড়িৎগতিতে সেখান থেকে উধাও হলো সে। রায়ান বিস্ময়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় সে। যেন কিছুক্ষণ আগের দেখা সেই প্লাজু আর শার্ট পরিধান করা, মুখে বাচ্চাদের ন্যায় ব্রাশ নিয়ে চোখ বড় বড় করে দাঁড়িয়ে থাকা নারীটি ভ্রম ছিল। এখন তার কী করা উচিত? এখানে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করবে? নাকি চলে যাবে?

কিছুক্ষণের মধ্যেই তাড়াহুড়ো করে ফ্রেশ হয়ে ফিটফাট হয়ে চুলে কোনোরকম চিরুনি দিয়ে ঠিক করে ড্রয়িংরুমে এলো নয়নতাঁরা। সে ভুলেই গিয়েছে রায়ানকে ও কিছু না বলেই ঘরে দৌড় দিয়েছিল। কী বিশ্রী কান্ড! এই প্রথম মানুষটা তার বাড়িতে এলো। অথচ সে এরূপ ব্যবহার করল? এটা মানা যায়? এবার নয়নের নিজে নিজের কপাল চাপড়াতে ইচ্ছে করছে। ড্রয়িং রুমে এসে দরজা লাগানো দেখতে পেল সে। লক করা নয় ভিড়িয়ে দেওয়া। আশেপাশের রায়ানকে না দেখে দ্রুত বেগে দরজা খুলে চেক করেও রায়ানকে পেল না। লোকটা তবে চলেই গিয়েছে। হতাশ হলো নয়ন। সবই তার দোষ। বিগ ব্রাদার ঠিকই বলে! সে কোনো কাজের না অকাজ ছাড়া। দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঘরে ফিরে এসে দরজা লাগাল সে। হঠাৎ চোখ গেল গোল ছোট টেবিলের উপর শোপিচের নিচে চেপে রাখা একটি কাগজ। কলমের মাথাটা খুলে রাখা। ড্রয়িংরুমে রাখা গতকালকের খাতাটাও খোলা। পৃষ্ঠা ছেঁড়া। তার পাশেই তার ফোন। তড়িঘড়ি করে গিয়ে নিজের ফোন হাতে নিলো সে। ফোনের প্রতি তার আগ্রহ নেই। সে দ্রুত শোপিচ সরিয়ে কাগজ হাতে নিলো। কাগজের একটা ভাঁজ খুলতেই বেরিয়ে এলো ছোট ছোট গোছানো কিছু লেখা। ‘না বলে তোমাদের বাড়ির ভেতরে আসার জন্য আর অনুমতি না নিয়ে এখানকার খাতা আর কলম ব্যবহার করার জন্য সরি। ফোনটা রেখে গেলাম। চেক করে নিও তোমার ফোন কিনা। তোমার ফোনটা দেখে আমার সন্দেহ হলো যে ওটা তোমার নাকি আমার ফোন। ওয়ালপেপারে জ্বলজ্বল করছে আমার ছবি! জানার বেশ কৌতূহল হয়েছিল আমার ছবি রেখেছ কেন? জানা হলো না! তবে, অবশ্যই এবার থেকে দরজা খোলার আগে দেখে নেবে দরজার ওপাশে কে! হুটহাট করে কাউকে ঝেড়ে দিয়ে কিন্তু মা’মলাও খেতে পারো।’

ঢল গিলল নয়নতাঁরা। লজ্জায় গুটিয়ে গেল সে। কোন বিষয় নিয়ে লজ্জা পাবে সেটাও বুঝল না। লোকটা তো শুধু লজ্জাজনক কথাই লেখে রেখেছে। ওয়ালপেপার দেখে ফেলার লজ্জা আর এমন ব্যবহারের লজ্জায় ম’রে না যায়। ঠোঁট উল্টে লজ্জায় কাঁদতে ইচ্ছে করল তার। তবে মানুষটির সাথে দুই দন্ড কথাও হলো না! সব পরিকল্পনা পানিতে গেল!

সারাদিনটা পার হলো নির্জনের কাজ করেই। এই ফাইল, সেই ফাইল ধরতে গিয়ে কোনোরকম অন্য বিষয়ে মন দিতে পারেনি সে। সব জায়গা থেকে কেসের ইনফরমেশন কালেক্ট করতে করতে একদম তেতে উঠেছে। সবশেষে বাড়ি যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে তার। যাওয়ার আগে চেয়ারে একটু দম নিয়ে বসে ছিল চোখ বুঁজে। তখনি ঘটল মেহরাজের আগমন। হুড়মুড়িয়ে এসে ঢুকে পড়ল নির্জনের রুমে। ফট করেই চোখ মেলে তাকিয়ে শক্ত গলায় বলল,
“তোমায় কত বার বলেছি আমার পারমিশন না নিয়ে ঢুকবে না রুমে!”

মেহরাজ হাঁপাতে থাকল। একটু দম নিয়ে কোনোমতে বলল,
“স্যা…স্যার মি. শাহ্ রাশেদ সাহেব মানে রাগিনী ম্যাডামের বাবা হার্ট অ্যা’টাক করেছেন!”

নির্জন যেন কানে ভুল শুনল। ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইল খানিকক্ষণ। উঠে দাঁড়িয়ে টেবিলে থাবা দিয়ে বলল,
“হোয়াট?”

“ইয়েস স্যার! আজ সকালের ঘটনা।”

প্রথমেই নির্জনের মাথায় এলো রাগিনীর কথা। কী অবস্থায় আছে মেয়েটা? নিজেকে সামলে উঠতে পেরেছে? কেমন আছেন রাশেদ সাহেব? এই মূহুর্তে মেয়েটার কাছে যাওয়া ভীষণ প্রয়োজন! নির্জন আর এক মূহুর্ত দাঁড়াল না। দ্রুত হাতে চাবি নিয়ে মেহরাজের পাশ কাটিয়ে রুম থেকে বের হলো।

চলবে….

[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here