ভুল -পর্ব ১২

0
185

#ভুল ১২তম পর্ব
#jannat_Nur

পরের দিন সকালে অবন্তী আসলো তার ছোট মামার ফ্ল্যাটে, শাপলার মা কিচেন এ রুটি বানাচ্ছিল। বৃষ্টি এখনো ঘুমাচ্ছে এবং তার মামী ওয়াশরুমে গোসল করছে, এই ফাঁকে অবন্তী শাপলার মার কাছে গিয়ে দাঁড়ালো।

আন্টি রুটি বানাচ্ছেন নাকি, রুটির সাথে আর কি করবেন?

রুটি আর সবজি করবো, সকালে তো তারা এগুলোই খায়। আবার আবার রুটি খাইতে ভালো লাগে না! রাতের ভাত আছে আমি খেয়ে নেব।

আপনি কতদিন ধরে এদের এখানে কাজ করছেন? আগে তো আমাদের গ্রামের বাড়িতেও কাজ করতেন তাই না, অনেক বছর হবে মনে হয়।

হ্যাঁ অনেক বছরই তো হবে তখন আমার শাপলা ছোট ছিল, তখন থেকে কাজ করছি। এখন শাপলাকে বিয়ে দিয়ে বাচ্চা হয়ে গেছে।

আচ্ছা সিরাত ভাইয়া যখন ছোট ছিল তখন থেকে আপনি মনে হয় আমাদের বাসায় ছিলেন।

আরে না সেটা তো আরো অনেক আগের কথা! তোমার জন্মের পর থেকে আমি তোমাদের বাড়িতে আছি, আগে অন্যজন ছিল।

আগে কে ছিল, তাকে কি চিনেন।

ওই যে তোমাদের গ্রামের বাড়িতে মল্লিকার নানী আছে না, ওই মল্লিকার নানী কাজ করতো।

ঠিক আছে আপনি কাজ করেন, আমি বৃষ্টির সাথে দেখা করি, দেখি সে উঠছে কিনা।

অবন্তী বৃষ্টির রুমে গিয়ে তাকে ডাক দিল, বৃষ্টি মেয়েটা সবসময় ঘুমের কাতর, তাই মনে হয় এত মোটা।

কিরে তুই এখনো ঘুমাচ্ছিস, এত ঘুম তোর?
আমি উঠেছি সেই কখন।

অবন্তী সত্যি করে বল তোর কি সিরাত ভাইয়াকে ভালো লাগে, আই মিন পছন্দ করিস।

কেন তুই তাকে পছন্দ করিস নাকি? পছন্দ করলে বল তোদের প্রেম করিয়ে দেই।

অবন্তীর কথা শুনে খুব আফসোসের সুরে বৃষ্টি বলল, এমন একটা স্মার্ট ছেলে আমার মত হাতীকে কি পছন্দ করবে! পছন্দ করলে তোকে করবে।

আরে কি যে বলিস না, আমাকে পছন্দ করবে কেন! করলে তোকে করবে, তোকে তো আমারও পছন্দ হয়।

দুই কাজিন মিলে হাসাহাসি করছিল, অবন্তীর ছোট মামি এসে জিজ্ঞেস করল কি হয়েছে তোমরা এই সকাল বেলা এত হাসছো কেন? দুজনে চুপ হয়ে গেল। অবন্তীর মামি বললেন, মেয়েদের এত হাসাহাসি করা ঠিক না, হাসবে তবে লিমিট থাকবে। বড় ভাই বাসায় আছেন! তার ছেলে এতদিন পরে এসেছে যদি দেখে আমাদের বাড়ির মেয়েরা এরকম ভাবে চিৎকার চেঁচামেচি করে কি মনে করবে, মনে করবে মেয়েদের আমরা নৈতিক শিক্ষা দিতে পারেনি।

অবন্তী মনে মনে বলল, আপনি যে আপনার মেয়েকে সিরাত ভাইয়ের কাছে বিয়ে দিতে চান সেটা ভালো করে জানি! তাই আপনার মেয়েকে ধোয়া তুলসী পাতা সাজিয়ে তাদের কাছে উপস্থাপন করতে চাচ্ছেন। আপনার মেয়ে এই বয়সে তিন চারটা প্রেম করে ছেলেদের ধোঁকা দিয়ে দিয়েছে! আবার নতুন রিলেশনে আছে, আপনি আসছেন আমাদের হাসি নিয়ে কথা শোনাতে।

শোন বৃষ্টি এখন আমি যাই, পরে দেখা হবে! অবন্তী চলে যাচ্ছিল, তার মামি বললেন সকালের নাস্তা করে যাও।

না মামি এখন আর নাস্তা করব না, আমি আসি বলে অবন্তী চলে গেল। তার কথা বলতে হবে সিরাতের সাথে। সকাল সাড়ে আটটা সিরাত এখনো ঘুমাচ্ছে! দরজায় কড়া নাড়ছে অবন্তী। এই সকালে আবার কে ডাকছে সিরাত অসহ্যকর চোখে তাকানো দরজার দিকে। শুনতে পেলে অবন্তীর কন্ঠ, দরজাটা একটু খুলেন আপনার সাথে কথা আছে। অবন্তীর কণ্ঠ শুনতে পেয়ে তাড়াতাড়ি উঠে দরজা খুলে দিল সিরাত।অবন্তী দরজাটা ভিড়িয়ে এসে বসলো সোফায়। সিরাত বলল তুমি বসো আমি একটু ওয়াশরুম থেকে আসি! আসলে আমি এত সকালে ঘুম থেকে উঠি না তাই চোখ মুখে পানি দিয়ে আসতে হবে। আগে যখন ভার্সিটিতে যেতাম তবু ক্লাস মিস হয়ে যেত এই ঘুমের কারণে।

ঠিক আছে আপনি ফ্রেশ হয়ে আসেন আমি ওয়েট করছি।
সিরাত ফ্রেশ হয়ে এসে অবন্তীর কাছে বসলো।

ছোট মামাদের ফ্ল্যাটে যেয়ে শাপলার মায়ের সাথে কথা বলে আসলাম! সে জানালো আমার জন্মের পর থেকে সে আমাদের বাসায় কাজ করছে কিন্তু তার আগে কাজ করতো মল্লিকার নানী নামে এক মহিলা! সেই মহিলা আমাদের গ্রামের বাড়ি পাশেই থাকে। এখন তাহলে তার কাছে যেতে হবে, সে বলতে পারবে তখন কি হয়েছিল।

আমি তো চিনি না কিভাবে যাব?

আপনি কি আমাকে সঙ্গে নিয়ে যেতে চান?

তুমি যদি আমার সঙ্গে যাও তাহলে তো ভালোই হয়।

কয়টার দিকে যাবেন, আমি কলেজের কথা বললে বাসা থেকে বের হব, বের হয়ে ওই রাস্তার সামনে যে দোকানটা আছে সেখানে দাঁড়াবো! আপনি চলে আসবেন সেখানে।

ওকে, তাহলে দশটার দিকে যাওয়া যাক, তুমি যাও ব্রেকফাস্ট করে রেডি হও! ফুপিকে বলো আমাকে ব্রেকফাস্ট দিয়ে যেতে।

অবন্তী তার আম্মুকেকে বলল সিরাত ভাইয়াকে ব্রেকফাস্ট দিয়ে আসো।

সে কি এখন উঠে পড়েছে, ৯ টার আগে তো উঠে না।

আমি তার সাথে কথা বললাম এতক্ষণ, আমাকে বলছে ব্রেকফাস্ট দিতে।

কি নিয়ে কথা বললি? এত সকাল বেলা।

এই তো এমনি ইচ্ছা করছিল গল্প করতে তাই তার কাছে গিয়েছিলাম।

ভালো করেছিস তাকে সময় দিবি তাকে নিয়ে ঘুরতে বের হবি, তাহলে দেখবি তোকে সে পছন্দ করবে।

মায়ের এমন কথা শুনে অবন্তী তার মায়ের দিকে তাকালো, কি বললে মা তুমি চাও সে আমাকে পছন্দ করুক? কেন এমনটা চাও।

শুধু আমি না তোর বাবা চায় সিরাত তোকে পছন্দ করুক।

কেন তোমরা এমনটা চাচ্ছো জানতে পারি।

আমরা চাই সিরাতের সাথে তোকে বিয়ে দিতে।

মায়ের কথা শুনে অবন্তী মনে মনে খুশি হলেও মুখে বিরক্ত প্রকাশ করে বলল, তোমরা চাইলে কি আর সে আমাকে পছন্দ করবে! বিয়ে করতে রাজি হবে।

পছন্দ অবশ্যই করবে, তার সাথে ভালোভাবে কথা বল চলাফেরা কর, তোর প্রতি সে যদি দুর্বল হয়ে পড়ে তখন তোর মামার কাছে বলবো তোদের বিয়ের কথা।

অবন্তী আর কিছু না বলে সিরাতের জন্য ব্রেকফাস্ট নিয়ে তার রুমে দিয়ে আসলো! বলল তাড়াতাড়ি খেয়ে রেডি হোন। সিরাত তার দিকে তাকিয়ে বলল তুমি আমাকে আপনি করে না বলে তুমি করে বলতে পারো! আমরা তো কাজিন, কাজিনদের মাঝে তুমি তুই এগুলো চলে, আপনি বলাটা বেমানান মনে হয়।

আসলে আমরা তো ছোট থেকে একসঙ্গে বড় হইনি তাই তুমি ডাকতে কেমন যেন লাগে।

ও বুঝতে পারছি মানে আমাকে পর মনে হয়, দূর দেশে ছিলাম তাই আপন হতে পারিনি! ঠিক আছে পর করেই রাখো।

আরে না না ভুল বুঝতেছেন, আমি সেটা বলিনি, আমি বলেছি, ছোট থেকে যদি একসঙ্গে থাকতাম তুমি করে ডাকতে সংকোচ বোধ হতো না! এখন তুমি ডাকতে কেমন যেন লজ্জা লাগে।

জোর করব না ইচ্ছে হলে তুমি ডাকতে পারো, আর যদি না ডাকো আমিও এখন থেকে আপনি করে ডাকবো আপনাকে।

অবন্তী বুঝতে পারছে, সিরাতকে তুমি করে না ডাকায় অভিমান করেছে তাই তাকেও আপনি বলছেন।

ব্রেকফাস্ট করে নাও তাড়াতাড়ি হাহাহা।

অবন্তী তাড়াতাড়ি রুম থেকে বের হয়ে গেল সিরাতকে তুমি করে বলে! অবন্তী সিরাতকে তুমি করে বলে খুব লজ্জা পাচ্ছে, আবার অন্যরকম ফিল হচ্ছে।
যাই হোক সিরাত চেয়েছে বলেই অবন্তী তুমি করে বলেছে, আর মায়ের কথাগুলো তার মনে পড়ছে! সত্যি কি সিরাত তাকে পছন্দ করবে তার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়বে, তাহলে তো ভালো হয় পছন্দের মানুষকে জীবনসঙ্গ হিসেবে পাবো, অবন্তী ভাবছে আমি কি সিরাতের প্রেমে পড়ে গেলাম। সে যদি আমাকে ভালো না বাসে তাহলে তো আমি কষ্ট পাবো, না না আমি তার প্রেমে পড়বো না, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে! যখন দেখব সে আমার প্রতি দুর্বল তখনি আমি তাকে ভালোবাসবো।

দশটার আগে ই সিরাত রেডি হয়ে অবন্তীকে কল দিয়ে বলল আমি বের হলাম ওই দোকানে সামনে গিয়ে দাঁড়াবো, তুমি চলে আসো। সিরাতের আর তর সইছে না কখন সে তার মায়ের সম্বন্ধে সত্যিটা জানতে পারবে, তাই সব কিছুতে তাড়াতাড়ি করছে। অবন্তী তার মাকে বলল আমি একটু বের হচ্ছি কলেজে যেতে হবে, ফিরতে টাইম লাগবে চিন্তা করো না, আমার বান্ধবীর বাসায় যাবো তাই লেট হবে! এটা বলে বের হলো অবন্তী

সিরাত দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল অবন্তী সেখানে যেয়ে অটো নিলো, এখান থেকে তাদের গ্রাম ১০ কিলোমিটার! ঘন্টাখানেক পর তাদের গ্রামের বাড়িতে চলে আসলো। গ্রামের বাড়িতে এখন তাদের দূর সম্পর্কের আত্মীয় থাকে, অবন্তীকে দেখতে পেলে তাদের বাসায় বলে দিবে, সে কারণে অবন্তীর বাড়িতে প্রবেশ না করে সরাসরি মল্লিকার নানী কাছে গেল।

আসসালামুয়ালাইকুম নানি কেমন আছেন।

ভালো আছি তুমি কেমন আছো, অনেকদিন পর দেখলাম তোমাকে! তোমার সঙ্গে কে জামাই? বিয়ে হয়েছে তোমার।

আরে নানী কি যে বলেন আমি এখনই বিয়ে করব নাকি, বাচ্চা মেয়ে আমি। এটা আমার কাজিন বড় মামা আছে না, আমিরুল মামা, তার ছেলে সিরাত।

মল্লিকার নানী সিরাতের দিকে তাকিয়ে বলল ওরে বাবা সেই পিচ্চি দেখছিলাম, তার বাবা যখন তাকে নিয়ে বিদেশ চলে যায় তখন মনে হয় দুই তিন বছর ছিল, আর এখন কত বড় হয়েছে।

সিরাত তাকে জিজ্ঞেস করল আমাকে ছোটবেলা আপনি দেখেছেন? আমি দেখতে কেমন ছিলাম।

তুমি দেখতে তোমার মায়ের মত একদম, মায়ের মত হয়েছো।

মায়ের কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে সিরাতের বুকের ভিতর তোলপাড় শুরু হয়ে গেল, তার চেহারা মায়ের মত ছিল এটা কখনো তার বাবা তাকে বলেনি! তাহলে তার মা অনেক সুন্দর ছিল।

আমার মায়ের সঙ্গে আপনার কথা হতো তার কাছে আপনি যেতেন! তখন কি আপনি আমাদের বাসায় কাজ করতেন?

তখন আমি মাঝে মাঝে কাজ করতাম, সেসময় তোমাদের বাসায় তুলি নামের একটা মেয়ে ছিল সেই তোমাকে দেখাশোনা করতো, তোমার মায়ের সাথে তার অনেক মিল ছিল।

আমার আম্মু কি এমন অপরাধ করেছিল যে অপরাধে আমাকে জোর করে রেখে আম্মুকে ডিভোর্স দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

আসলে তখন তো আমি তোমাদের বাড়িতে বেশি যাইনি মাঝে মাঝে যেতাম, শুনেছি তোমার মায়ের রুম থেকে একটা লোক বের হয়েছে সেটা সবাই দেখেছিল! এই অপরাধে তোমার মাকে তোমার বাবা তাড়িয়ে দেয়।

যেদিন আম্মুকে তাড়িয়ে দেয় আমাকে রেখে আপনি তখন সেখানে ছিলেন।

হ্যাঁ চিৎকার চেঁচির শব্দ শুনে আমরা সবাই তখন সেখানে উপস্থিত হই, তোমার মা অনেক কান্নাকাটি করে! তোমাকে দিতে চায়নি, তোমার ফুপি তোমাকে মায়ের কোল থেকে জোর করে কেড়ে নেয়। আসলে আমরা তখন তাদের কথাই বিশ্বাস করেছিলাম ভেবেছিলাম তোমার মা চরিত্র ভালো না। তাই তখন তার সেই কষ্ট দেখে আমাদের খারাপ লাগেনি, কিন্তু এতদিন পরে এসে কেন যেন মনে হয় তোমার মা এটা করতে পারেনা, অনেক ভালো ছিল তিনি।

তুলি আন্টি এখন কোথায় থাকে সেটা আপনি জানেন?

তাদের বাড়ি আমাদের গ্রামের ওই সামনের স্কুলটা দেখছো না, ওই স্কুলের সাথে। ওর বিয়ে হয়েছে কোথায় সেটা আমি জানিনা, অনেকদিন আগে তার সাথে দেখা হয়েছে। তুমি তুলিদের বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞেস করো তার কোথায় বিয়ে হয়েছে, তাহলে জানতে পারবে।

সিরাত আর অবন্তী মল্লিকার নানীর সাথে কথা বলে চলে গেল তুলিদের বাড়িতে। স্কুলের কাছেই তুলির বাড়ি, এক লোক দেখিয়ে দিলেন। তুলিদের বাড়িতে গিয়ে তুলির ভাবীর সাথে কথা হলো, তিনি বললেন তুলির বিয়ে হয়েছে চন্দ্রপুর গ্রামের। সিরাত জানেনা চন্দ্রপুর গ্রাম কোথায়, অবন্তী চিনে তাই তাকে নিয়েই চন্দ্রপুর গ্রামে যেতে হবে। এই গ্রাম থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে চন্দ্রপুর গ্রাম আজকে আর যাওয়া সম্ভব হবে না। অবন্তী তুলির ভাবীর কাছ থেকে ফোন নাম্বার চেয়েছিল তুলির।

তুলির ভাবী বললেন, তুলির জামাইয়ের ফোন নাম্বার আছে তারটা নিলে নিতে পারো। তুলির ভাইয়ের বাড়ি থেকে বের হয়ে অবন্তী সিরাতকে বলল, নাম্বারটা আমি নেয়, তুমি ছেলেমানুষ যদি কল দাও তার স্বামী কি না কি মনে করবে! আমি তাকে বলবো আমি শিকদার বাড়ির মেয়ে তুলি আন্টি আমাদের বাসায় অনেক দিন ছিল তাই তার সাথে কথা বলবো। এটা বললে সে কোন সন্দেহ করবেন না। সিরাত বলল ঠিক আছে তুমি কথা বলে তাদের বাড়ির লোকেশন টা জেনে নাও আমরা কালকে যাব। কালকে আম্মুকে কলেজের কথা বলে যাওয়া যাবে না, তোমার সাথে ঘুরতে যাব এটাই বলতে হবে।

আমার সাথে ঘুরতে যাবে এটা বললে ফুপি যেতে দিবে?

অবশ্যই দিবে আম্মু তোমাকে অনেক পছন্দ করে।

ওকে তাহলে কালকে আমরা চন্দ্রপুর গ্রামে যাচ্ছি তুলি আন্টির বাসায়।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here