#ধূসর_প্রেমের_অনুভূতি
#ফারহানা_ছবি
#পর্ব_০৯
.
.
.
” কনফিউজড্ মানে! কি কারনে কনফিউজড্?”
” আসলে স্যার আমি ফারহা ম্যাডাম কে ফলো করার জন্য খান মন্জিলের বাইরে লুকিয়ে ছিলাম কিন্তু ফারহা ম্যাম আর ফারিহা ম্যাম দুজনে একই রকম ড্রেস মানে শাড়ি পড়েছিলো ৷ আর আমি বুঝতেই পারছিলাম না কে ফারহা ম্যাম আর কে ফারিহা ম্যাম!”
জ্যাকের কথা শুনে মেঘ চোখ বন্ধ করে কিছু একটা ভেবে দ্রুত উপরে নিজের রুমে গিয়ে ফর্মাল ড্রেস পড়ে ,গান লোড দিয়ে , জ্যাক আর আসলামকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে ৷
মেঘ ড্রাইভিং করতে করতে আসলামকে বলে ফারহার নাম্বারটা ট্রেস করতে৷ আসলাম মেঘের কথা মতো ফারহার নাম্বার ট্রেস করে লাস্ট লোকেশন অনুযায়ী আসলাম ফারহার বর্তমান অবস্থানের কথা জানাতে মেঘ ফুল স্পিডে গাড়ি ড্রাইভ করে পৌছে যায় বিশ মিনিটের মাথায় , মেঘ আসলাম জ্যাক দাড়িয়ে আছে বিশাল এক মাঠের সামনে, মাঠ পের হলে বড় দিঘি ৷ মেঘ দূরবীনের সাহায্য দিঘির পাড়ে দু’জন নর-নারীকে দেখে মেঘের বুঝতে বাকি নেই তারা কারা! মেঘ আসলামের কাছে দূরবীনটা দিয়ে বলে,” ছেলেটির পুরো ডিটেইলস আমার চাই আসলাম৷”
” পেয়ে যাবেন স্যার যাস্ট টেন মিনিট’স দিন৷”
আসলাম তার ফোন নিয়ে মেঘের থেকে একটু দুরে সরে ফোনে কারোর সাথে কথা বলছে ৷ পাঁচ মিনিটের মাথায় আসলামের ফোনে কিছু মেসেজ আসতে আসলামের ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো ৷
২১.
” জান তুমি আমাকে বিশ্বাস করছো না কেন? আমি সত্যি বলছি আমি কিছুই করি নি৷ আর না ওই মেয়েটাকে আমি চিনি৷ ” ফারিহার হাত দুটো চেপে ধরে বলল অর্নিল৷
ফারিহা তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে অর্নিলের দিকে তাকিয়ে অর্নিলের হাতের মুঠো থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে দাঁতে দাঁত চেপে কটমট করে তাকিয়ে বলে উঠলো ,” আমি জানি তুমি কিছু করো নি অর্নিল কারণ এই সব কিছু আমি করেছি৷”
ফারিহার মুখে এমন স্বীকারোক্তি শুনে অর্নিল দু’পা পিছিয়ে গেল৷ চোখে মুখে অবিশ্বাসের ছাপ৷ অর্নিল এখনো বিশ্বাস করছে না তার ভালোবাসা তার সাথে এমন বিশ্বাস ঘাতকতা করবে৷
” তু,, তুমি মি,, মিথ্যা বলছো জান তাই না?”
ফারিহা বাঁকা হেসে অর্নিলের উদ্দেশ্য বলে উঠলো , ” মিস্টার অর্নিল আমাকে এখন যেতে হবে৷ আমার ক্লাস নেওয়ার সময় হয়ে গেছে৷ ”
” তুমি নিশ্চয়ই মজা করেছো আমার সাথে তাই না জান?”
ফারিহা অর্নিলের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে,” আমার কিন্তু দেরি হয়ে যাচ্ছে মিস্টার অর্নিল ৷ আমাকে যে…” বাকিটা বলার আগে অর্নিল ফারিহাকে আষ্টে পিষ্টে জড়িয়ে ধরে বলে,
-” ভালোবাসি ফারিহা ভিষণ ভালোবাসি তোমায়৷ আই কান্ট লিভ উইথ আউট ইউ জান ৷ আই কান্ট ৷ প্লিজ আমাকে ভুল বুঝে দুরে চলে যেও না ৷ আই লাভ ইউ ৷ ”
ফারিহা অর্নিলকে নিজের থেকে মটেও সরানোর চেষ্টা করল না বরং স্থির হয়ে দাড়িয়ে ছিলো৷ কিন্তু মেঘ তার রক্ত লাল চোখ জোড়া দিয়ে তাকিয়ে আছে ফারহা আর অর্নিলের দিকে, আসলাম মেঘের পাশে দাড়িয়ে শুকনো ঢোক গিলে মেঘকে বলে,” স্যার বিশিষ্ট শিল্পপতি আমান খন্দকার এর একমাত্র ছেলে অর্নিল খন্দকার ৷ স্যার সব থেকে ইন্টারেস্টিং খবর টা কি জানেন? এই অর্নিলের সাথে ফারিহা ম্যাম এর প্রনয়ের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো এক সপ্তাহের মতো কিন্তু তার পরেই অর্নিল খন্দকার একটা মাডার্র কেসে ফেঁসে যায়৷ সব প্রুফ অর্নিলের বিরুদ্ধে ৷ ”
আসলামের কথা শুনে মেঘ মনে মনে ভাবতে লাগলো , ফারিহার সাথে যদি অর্নিলের সম্পর্ক থেকে থাকে তাহলে ফারহা এখানে কি করছে? ফারিহা সেজে বা এসেছে কেন? নিশ্চয়ই কোন কারণ আছে নাহলে এরা দু’বোন নিজেদের একে অন্যের পরিচয় নিয়ে মানুষকে ঠকাতো না৷
মেঘ রাঙ্গানিত চোখে দুর থেকে অর্নিল আর ফারহার দিকে তাকিয়ে আছে৷ অর্নিল এখনো ফারহাকে জড়িয়ে ধরে আছে৷ যেটা মেঘ কিছুতেই সহ্য করতে পারছে না৷ মেঘের ইচ্ছে করছে এই মুহূর্তে অর্নিলের বুকটা গুলিতে ঝাঝড়া করে দিতে৷ মেঘ অতি কষ্টে নিজের রাগ টা কন্ট্রোল করে জ্যাককে বলে,” জ্যাক এই মেয়েটাকে তোমায় ফলো করতে হবে৷ কোথায় যায় কি করে? কার সাথে দেখা করে এ্যাভরিথিং আমার জানা চাই৷”
” ওকে স্যার তাই হবে৷”
অর্নিল যাকে ফারিহা ভেবে আষ্টে পিষ্টে জড়িয়ে ধরেছে ফারহাকে ছেড়ে দিয়ে বলে,” এখন আর রেগে নেই তো তুমি?”
ফারহা অর্নিলের চোখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল, ” না রেগে নেই তোমার উপর, তবে এখন আমাকে যেতে না দিলে সত্যি রেগে যাবো৷”
অর্নিল হেসে ফেলে ফারিহা অর্থাৎ ফারহার কথা শুনে , ফারহার গাড়ি মাঝ রাস্তায় ফেলে এসেছে ৷ অর্নিল এক প্রকার জোর করে ফারহাকে নিজের গাড়িতে নিয়ে আসে তাই নিজে গিয়ে ফারিহাকে(ফারহা) কলেজে পৌছে দেওয়ার জন্য তার গাড়িতে উঠতে বলে ফারিহাকে(ফারহা) ৷
তবে অর্নিল এখনো ভেবে পাচ্ছে না, ফারিহা এতো শান্ত কি করে হলো৷ তারা যে কয়দিন এক সাথে বের হয়ে ছিলো সে কয়দিন তাদের ভিতর মিনিটে মিনিটে ঝগড়া হতো আর অর্নিল নিজে থেকে তার প্রেয়শীর রাগ ভাঙাতো ৷ সে ছিলো চটপটে আর ভিষণ চঞ্চল প্রকৃতির কিন্তু আর সে মানুষটাকে দেখে অর্নিল অবাক কারণ আগের ফারিহা আর এখনকার ফারিহার মাঝে আকাশ পাতাল তফাৎ ৷
ফারহা অর্নিলের চোখ দেখে মুচকি হেসে মনে মনে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো,” ভালোবাসায় রোদ্দুরে যখন নিজেকে পুড়াতে চাইছো মিস্টার অর্নিল তখন না হয় আমি তোমাকে তোমাকে সাহায্য করবো ভালোবাসার রোদ্দুরে নিজেকে পুড়িয়ে ছাই করতে৷ তৈরি থেকো মিস্টার অর্নিল তোমার ভালোবাসাময় কাটা সহ গোলাপ নিয়ে নিজের জীবনকে কাটাময় করার জন্য, ”
অর্নিল ফারিহাকে (ফারহা) নিয়ে বেড়িয়ে গেল৷ এদিকে মেঘ ফারহার উপর প্রচন্ড রেগে গাড়ির কাঁচে ঘুশি মারতে কাঁচ ভেঙে মেঘের হাত কেটে যায়৷ এটা দেখেও আসলাম জ্যাক কেউ মেঘের কাছে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না৷ মেঘ দরজা খুলে ড্রাইভিং সিটে বসতে আসলাম জ্যাক দুজনে গাড়িতে উঠে বসে ৷ মেঘ গাড়ি স্টাট দিতে যাবে তখনি আসলামের ফোনটা বেজে ওঠে , আসলাম ফোন হাতে নিয়ে দেখে হেডকোয়াটার্স থেকে ফোন এসেছে ৷ আসলাম দ্রুত কল রিসিভ করে ৷
” হ্যালো আসসালামু আলাইকুম স্যার৷”
” ওয়ালাইকুম আসসালাম ৷ আসলাম মেঘ কোথায়? মেঘের ফোন অফ কেন?”
আসলাম মেঘের রক্তিম চোখ জোড়া দেখে কিছু বলার পূর্বে মেঘ ছোঁ মেরে আসলামের হাত থেকে ফোনটা নিয়ে বলে,” ইয়েস স্যার বলুন৷”
” মেঘ! দ্রুত হেডকোয়াটার্সে এসো জরুরী কিছু ইনফরমেশন তোমাকে জানতে হবে৷”
” ওকে স্যার আমি এখুনি আসছি যাস্ট ফিফটিন মিনিট’স ৷”
“ওকে”
কথা শেষে ফোনটা আসলামের হাতে দিয়ে ফুল স্পিডে গাড়ি চালিয়ে চল্লিশ মিনিটের রাস্তা পনেরো মিনিটে চলে আসে৷ গাড়ি থামতে জ্যাক আসলাম দুজনে বুকে হাত দিয়ে জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস নিয়ে দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে গেল৷ মেঘ গাড়ির চাবি আসলামের হাতে দিয়ে দ্রুত ভিতরে চলে গেল৷
২২.
শাড়ির কুচি গুলো সামলাতে সামলাতে ফারিহার এয়ারর্পোটে ঢুকে যায়৷ চারিদিক তাকিয়ে কাঙ্ক্ষিত মানুষটাকে না দেখতে পেয়ে ফারিহা শাড়ির কুচি গুলো ঠিক করে সামনে আগাতে কারো বুকের সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যেতে নিলে সামনে দাড়ানো মানুষটি ফারিহার কোমড় চেপে ধরে৷ ফারিহা চোখ মেলে রাগে কটমট করে তাকিয়ে কিছু বলতে যাবে কিন্তু তার আগে মানুষটার মুখটা দেখে ফারিহার মুখে যেন কেউ সুপার গ্লু আঠা লাগিয়ে দিয়েছে৷ ফারিহার কোমড় জড়িয়ে ধরা মানুষটি এক দৃষ্টিতে ফারিহার দিকে তাকিয়ে থেকে বলে উঠলো ,” কেমন আছো আরু বেবি?”
ফারিহা সেই মানুষটার মুখে আরু বেবি নামটা শুনে দ্রুত নিজেকে সংযত করে সরে দাড়িয়ে বলে ,
-” আ’ম নট আরু কিং ফায়ার ৷ আ’ম মারু ৷”
আরু(ফারহা) এয়ারপোর্টে তাকে রিসিভ করতে আসেনি এটা বুঝে ফর্সা মুখখানা রাগে লাল বর্ণ ধারণ করলো৷ ফারিহা বুঝতে পারলো কিং ফায়ার রেগে গেছে ফারহা না আসায়৷
কিং ফায়ার নাম টা ফরেইনার মনে হলেও মানুষটা খাটি বাঙ্গালী ৷তবে ফেস দেখে এবং নাম শুনে কেউ বলবে না তাকে বাঙ্গালী৷
কিং ফায়ার এবং ফারিহা দুজনে বি এম ডাব্লিউ কারে বসে আছে ৷ কিং ফায়ার এর মুখ এখনো থমথমে কারণটা ফারিহার কাছে পরিষ্কার৷ গাড়িতে কেউ কোন কথা বললো না৷ গাড়ি গিয়ে থামলো শহরের সব চাইতে বড় ফাইভ স্টার হোটেলের সামনে , ফারিহা গাড়ি থেকে নেমে কিং ফায়ার কে কিছু বলতে যায় তখনি কিং ফায়ার বলে ওঠে ,” মারু এখানে আমাকে কিং ফায়ার বলে ডাকবে না ৷ ইমরান বলে ডাকবে গেট দ্যাট?”
” ওকে ইমরান ৷ আপনি ভিতরে চলুন সব কিছু রেডি আছে ৷ আপনি আপনার রুমে গিয়ে রেস্ট নিন৷ আরু রাতে এসে আপনার সাথে মিট করে যাবে৷ এমন নির্দেশনাই আরু আমাকে দিয়েছে৷ ”
কিং ফায়ার ফারিহাকে আর কিছু বললো না ৷ হোটেলের ভিতর ঢুকে গেল৷
” মে আই কামিং স্যার?”(মেঘ)
” ইয়েস কামইন ৷ ”
মেঘ কেভিনের ভিতরে ঢুকতে সিনিয়র অফিসার তারেক শেখ মেঘ কে বসার জন্য ইশারা করতে মেঘ চেয়ারে বসে ৷
” স্যার আর্জেন্ট কল করেছেন৷ কোন ইমার্জেন্সি আছে?”
” মেঘ খবর আছে টেরোরিস্টের প্রধান আজ আমাদের দেশে আসবে ৷ কিন্তু কখন কি রুপে কি নামে এটা কেউ জানে না৷ দেশ এখন বিপদের মুখে যে করে হোক সেই প্রধান কে আমি কারাগারে দেখতে চাই ৷”
মেঘ তার সিনিয়রের কথা শুনে বলে,” ডোন্ট ওয়ারি স্যার , আমি বেঁচে থাকতে দেশের কোন ক্ষতি হতে দিবো না৷ আর এই টেরোরিস্ট যে রূপ যে নামে থাকুক না কেন এই মেঘের হাত থেকে তার এতো সহজে মুক্তি নেই৷ ”
” জীবিত অথবা মৃত যে অবস্থায় থাকুক না কেন টেরোরিস্টকে ধরা চাই মেঘ৷”
” কথা দিচ্ছি স্যার আমি ওই টেরোরিস্টের মূল থেকে উপরে ফেলবো ৷ কাউকে বাচিঁয়ে রাখবো না স্যার কাউকে না৷”
তারেক শেখ একটা ফাইল মেঘকে দিয়ে বলে,” এর ভিতর কিছু প্রয়োজনীয় তোমার কাজে লাগবে এমন কিছু ইনফরমেশন আছে৷”
মেঘ ফাইলটা নিয়ে তারেক শেখ কে ধন্যবাদ জানিয়ে কেভিন থেকে বেড়িয়ে যায়৷
কলেজ থেকে ফিরে ফারহা ওয়াশরুম থেকে ফ্রেস হয়ে রুমে এসে দেখে মেঘ পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে ৷ ফারহা মেঘের দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখে এলোমেলো উস্কসুস্ক চুল , লাল লাল চোখ , শার্টের বোতাম কয়েকটা খোলা ফর্সা বুকের কালো লোম গুলো উকি দিচ্ছে ৷ ফারহা দ্রুত চোখ সরিয়ে ভেজা তোয়ালে ব্যালকনিতে মেলে দিয়ে রুমে এসে নিজের কাজ করতে লাগলো৷ রুমে যে ফারহা ব্যতিত অন্য আর একটি মানুষের উপস্থিতি আছে এটা ফারহা মনে করছে না৷ মেঘ এমনিতে ফারহার উপর রেগে ছিলো আর এখন ফারহার এমন ইগনোরনেসের কারণে আরো রেগে গেলো৷ বেড থেকে উঠে দাড়িয়ে ফারহার হাত হ্যাচকা টান দিয়ে বেডের উপর ছুড়ে মারে মেঘ, ফারহা বেডে হুমড়ি খেয়ে পড়তে মেঘ ফারহার হাত দু’টো নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে কড়া গলায় বললো,” এই হাত এই শরীরে অন্য পুরুষ স্পর্শ করেছে তাই না ফারুপাখি? ”
মেঘের কথা শুনে ফারহা অবাকে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে তাকিয়ে আছে মেঘের দিকে, রাগে রক্ত বর্ণ ধারণ করেছে মেঘের চোখ মুখ, তার চেয়ে বড় কথা মেঘের শরীরের তাপ মাত্রা এতোটাই বেশি যে রিতিমতো ফারহার শরীর গরমে যেন পুড়ে যাচ্ছে৷ মেঘের যে প্রচন্ড মাত্রায় জ্বর এসেছে তা ফারহা মেঘের স্পর্শে বুঝে গেছে৷
ফারহা মেঘকে কিছু বলতে যাবে তার পূর্বে মেঘ ফারহার উপর থেকে উঠে ফারহাকে টেনে ওয়াশরুমে শাওয়ারের নিচে দাড় করিয়ে শাওয়ার অন করে দিলো৷ মেঘ পাগলের মতো সাবান দিয়ে ফারহার হাতে গলায় সবান ঘষতে লাগলো৷ ফারহা কোন রিয়েক্ট না করে মেঘের হাত থেকে সাবান নিয়ে নিজে মাখতে লাগলো৷ দু’ঘন্টা ধরে ফারহা ভিজছে৷ ফারহার তাতে কোন রিয়েকশন নেই৷ হুট করে ফারহা মেঘকে তার পাশে দাড় করিয়ে দেয়৷ ঠান্ডা পানি মেঘের শরীর স্পর্শ করতে মেঘ ঠান্ডায় শিওরে ওঠে ৷ দশ মিনিট মেঘকে শাওয়ারের নিচে দাড় করিয়ে ফারহা শাওয়ার অফ করে ফারহা ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে কাপবোর্ড থেকে নিজের ট্রাউজার নিয়ে মেঘকে দিয়ে বলে ,” মেঘরাজ দ্রুত চেন্জ করে নেও৷ আমি রুম চেন্জ করে নিচ্ছি৷” এতো টুকু বলে ফারহা দরজা বন্ধ করে দিয়ে নিজে দ্রুত চেন্জ করে হলুদ রঙের চুড়িদার পড়ে নিয়ে নিয়ে ভেজা চুলে তোয়ালে পেচিঁয়ে ওয়াশরুমের দরজা খুলে দিয়ে দেখে মেঘ চেন্জ করে দাড়িয়ে আছে৷ ফারহা মেঘের হাত ধরতে বুঝতে পারে মেঘের শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে৷ আগের মতো অসহনীয় তাপমাত্রাটা আর নেই৷
ফারহা মেঘকে রুমে এনে বসিয়ে মেঘের ভেজা চুল গুলো মুছে দিতে লাগলো৷ ফারহা মেঘের এমন পাগলামি আচরনের কারণ জানতে না চেয়ে উল্টো মেঘের জন্য এক গ্লাস গরম দুধ নিয়ে এসে বলে,” মেঘরাজ দ্রুত গ্লাসটা খালি করে বাড়ি ফিরে যাও ৷ ” মেঘ ফারহার দিকে তাকিয়ে ফারহার হাত থেকে দুধের গ্লাসটা নিয়ে ফ্লোরে ছুড়ে মারে , সাথে সাথে গ্লাসটা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়৷
ফারহার রুম সাউন্ডপ্রুফ হওয়ায় গ্লাস ভাঙ্গার শব্দ নিচে কারোর কান অব্দি পৌছায় না৷
ফারিহা মাত্র বাড়িতে ফিরে সারভেন্ট এর কাছে জানতে চায় ফারহা এসেছে কি না? ফারহা এসেছে এটা সারভেন্ট ফারিহাকে জানাতে ফারিহা দ্রুত পায়ে হেসে ফারহার রুমের সামনে দাড়ায় ৷ ফরিহা ফারহার রুমে ঢুকতে নিলে বুঝতে পারে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ তাই বাইরে থেকে ফারিহা আপু আপু করে বেশ কয়েকবার ডেকে সারা না পেয়ে নিজের রুমে চলে যায় এদিকে মেঘ চোখ বন্ধ করতে চোখের সামনে অর্নিল ফারহাকে জড়িয়ে ধরার দৃশ্য চোখের সামনে ভেষে উঠছে৷
মেঘ হুট করে ফারহার হাত টেনে ধরতে ফারহা ব্যালেন্স রাখতে না পেরে মেঘের বুকে হুমরে পরে যায় ফারহা৷ মেঘ ফারহার কোমড় শক্ত করে চেপে ধরে মেঘ ফারহাকে বলে….
.
.
.
#চলবে…………….