ধূসর প্রেমের অনুভূতি – পর্ব ১৬

0
227

#ধূসর_প্রেমের_অনুভূতি
#ফারহানা_ছবি
#পর্ব_১৬
.
.
.
(৩৩)

অপারেশনে সাকসেসফুল হওয়া হেড কোয়াটার্সে সিনিয়র অফিসার তারেক শেখ ছোট্ট করে লাঞ্চের পার্টির ব্যবস্থা করে৷ মেঘের সেদিকে মন নেই ৷ মেঘের মনে ফারহা ফারিহাকে নিয়ে সন্ধেহটা যেন আরো দৃঢ় হয়ে উঠলো৷ খান মন্জিলে ফোন করে ফারহা ফারিহা কাউকে না পেয়ে৷ মেঘ নিজের সন্ধেহ আর কৌতুহল দমিয়ে রাখতে না পেরে তারেক শেখের কেভিনের সামনে গিয়ে নক করে৷

” মে আই কামিং স্যার?”

” আরেহ মেঘ যে, তুমি এখন এখানে? বাহিরে তো পার্টি হচ্ছে সেখানে না থেকে এখানে কেন? সাকসেস পার্টি দেওয়া হয়েছে আর সেখানে দলের লিডার নেই এটা কি করে হয়?”

” স্যার এই অপারেশনে আমরা ফোরটি পারসেন সাকসেস হয়েছি বাকি সিক্সটি পারসেন তো অন্য কেউ সাকসেস পেয়েছে স্যার৷”

মেঘের কথা শুনে তারেক শেখ একটু নরেচরে বসে বললো,” মেঘ তুমি কি বলতে চাইছো? আমি তা বুঝতে পারছি না৷”

মেঘ মেকি হাসি দিয়ে তারেক শেখ কে বলে,” দেখুন স্যার আপনার চিন্তিত মুখটাই বলে দিচ্ছে আপনি সবটাই বুঝতে পারছেন কিন্তু না বোঝার ভান করছেন৷ ”

” ওয়েল মেঘ তুমি ঠিক ধরেছো৷ আমি সবটাই জানি তবে এখন তোমাকে সবটা বলতে পারবো না৷ কারণ তার দিক থেকে নির্দেশ আছে৷”

” ওকে স্যার, আপনি যখন বলতে চাইছেন না৷ আমি আপনাকে জোর করবো না৷ আপনার সময় হলে আমাকে জানাবেন৷ ”

” থ্যাঙ্ক ইউ মেঘ আমাকে বোঝার জন্য, তবে মনে রেখো আড়ালে থেকে যে মানুষটা আমাদের এবং আমাদের মাতৃভূমিকে রক্ষা করছে তাকে এতো সহজে তুমি চিনতে পারবে না৷ ইভেন আমিও আজ পর্যন্ত তাকে দেখেনি আর না কথা বলেছি ৷ যা বলার মেসেজে বলতো আর ইনফরমেশন দিতে হলে পার্সেল পাঠাতো ৷”

” ওকে স্যার আমি না হয় নিজে খুজে বের করবো সেই সুভাকাঙ্খী কে?”

” এ্যাজ ইউর উইস ৷”

” ওকে স্যার এখন আমি বাড়ি ফিরবো৷ আগামিকাল দেখা হচ্ছে৷”

” কিন্তু তোমার তো লাঞ্চ করে যাওয়ার কথা মেঘ?”

” স্যরি স্যার, এখন আমাকে ফিরতে হবে৷ অনেক প্রশ্ন যে মনে জমা হয়ে আছে ৷ সব প্রশ্নের উওর যে আমাকে পেতেই হবে স্যার৷” শেষের কথা গুলো মেঘ আস্তে আস্তে বললো যেটা তারেক শেখের কান অব্দি পৌছায় নি৷

” ঠিক আছে মেঘ, তুমি বাড়িতে গিয়ে রেস্ট নেও ৷ এদিকটা আমি দেখছি৷”

” থ্যাঙ্ক ইউ স্যার৷”

মেঘ হেড কোয়াটার্স থেকে সোজা চৌধুরী ম্যানশনে এসে ফ্রেস হয়ে না খেয়ে আবার বেড়িয়ে পড়ে৷

__________

” তোমরা দু’বোন আসলে কি চাও বলতে পারো আমাকে?” এক প্রকার বিরক্ত হয়ে ফায়েজ খান ফারহাকে প্রশ্ন করলো৷ ফারহা ঠোঁটের কোনে মিষ্টি হাসি এনে ফারহা তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলে,” ড্যাড আমি জানি আমার আর ফারিহার জন্য তুমি চিন্তিত বাট ট্রাস্ট মি ড্যাড আজ থেকে আর তোমাকে আমাদের জন্য চিন্তিত হতে হবে না৷ আমি তোমাদের বাধ্য মেয়ে হয়ে চলবো৷”

ফায়েজ খান তার মেয়ের কথা শুনে বুঝতে পারলো এটা তার বড় মেয়ে ফারহা৷ মেয়ের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে ফায়েজ বলল,” মামুনি এভাবে সারা দিন বাহিরে ঘুরা ফেরা করলে চলে? আজ বাদে কাল তোমাদের দুই বোনের বিয়ে আর তোমরা এভাবে বাহিরে ঘুরে বেড়ানোটা কি ঠিক? আচ্ছা তোমার ঘ্যাড়তেরা বোনটা কোথায়? তাকে কেন দেখছি না? কোথায় গিয়েছে আর ফিরবে কখন?”

ফারহা তার বাবাকে ছেড়ে দিয়ে গম্ভির কন্ঠে বলে ওঠে ,” তোমার ছোট মেয়ে আর ফিরবে না ড্যাড৷ বাই এনি চান্স যদি ফিরেও আসে তাহলে আমি নিজের হাতে ওকে শেষ করে দিবো৷”

মেয়ের মুখে এমন ভয়ংকর কথা শুনে ফায়েজ খান স্তম্ভিত হতবিহ্বল হয়ে তাকিয়ে রইল ফারহার দিকে৷

” ফারহা মা,, মামুনি এই সব কি বলছো? ফারিহা কোথায় আর তোমার কথার অর্থ আমি সত্যি বুঝতে পারছি না৷”

ফারহা তার বাবা ফায়েজ খানের হাত ধরে সোফায় বসিয়ে , ফারহা ফ্লোরে বসে ফায়েজ খানের কোলে মাথা রেখে ফারহা তাদের দু’বোনের লন্ডনে যাওয়ার পর থেকে ঘটা সব ঘটনা এক এক করে বলতে লাগলো৷

এদিকে আইরিন খান তনু আদিল আর রাফিকে খাবার সার্ব করে দিয়ে ফারহাকে খাওয়ার জন্য ডাকতে এসে ফারহার বলা প্রত্যেকটা কথা তার কান অব্দি পৌছে যায়৷ আইরিন খান নিজেকে সামলাতে না পেরে সেখানে বসে পড়ে৷ এদিকে ফায়েজ খানের পুরো শরীর কাঁপছে ৷ তার আদরের ছোট মেয়ে এমন হিংসাত্মক হিংস্র হবে তা ফায়েজ খান কখনো ভাবতে পারেনি৷ ছোট বেলা থেকে দুই মেয়েকে সমান ভালোবাসা দিয়ে এসেছে৷ তাহলে এখন কেন তার আদরের মেয়ে এমনটা হলো?

ফারহা তার বাবার কোলে মাথা রেখে নিঃশব্দে কেঁদে যাচ্ছে৷ ফায়েজ তার মেয়ের মাথায় হাত রেখে কান্না ভেজা গলায় বলল,” ফারহা তুমি যা করেছো তা একদম ঠিক করেছো৷ আর কে তোমার পাশে আছে আমি জানতে চাই না কিন্তু আমি অলয়েজ তোমার পাশে আছি এবং থাকবো৷ তোমার কাজের জন্য যদি আমার কোন সাহায্য সহযোগিতা তোমার প্রয়োজন হয় তাহলে আমাকে বলবে আমি তোমাকে সাহায্য করবো৷ ”

কিছুক্ষণ পর ফারহা কাঁধে আর একটা হাতের স্পর্শ পেতে ঘাড় ঘুড়িয়ে তাকিয়ে দেখে আইরিন খান৷ ফারহা তার মা’কে কান্নারত অবস্থায় দেখে বুঝতে পারলো তাদের বাবা মেয়ের প্রত্যেকটা কথা তার কান অব্দি পৌছে গেছে৷ ফারহা তার বাবার কোল থেকে উঠে তার মাকে জড়িয়ে ধরে হু হু করে কেঁদে ওঠে৷

” মম ফারিহা আমার সাথে এমন জঘন্য কাজটা কেন করলো? আমি তো ওকে কখনো হিংসে করেনি বরং চেষ্টা করেছি তোমাদের মতন করে ওকে আগলে রাখতে কিন্তু কিন্তু ও আমার সাথে এটা কেন করলো?”

” কাঁদে না মা আমার, যে যা করবে সে তার ফল নিশ্চয়ই পাবে৷ ফারিহা ভুল নয় অপরাধ করেছে আর তার শাস্তি তো ওকে পেতেই হবে৷ আমরা ভুলে যাবো ফারিহা নামে আমাদের কোন মেয়ে ছিলো৷ ভুলে যাবো এমন জঘন্য মেয়েকে, আমাদের একমাত্র মেয়ে তুই ৷ ”

আইরিন খানের কথায় ফায়েজ খান সমর্থন করে বলে,” হ্যাঁ আইরিন ফারিহা আজ থেকে আমাদের কাছে মৃত৷ আমাদের একটি মাত্র সন্তান সে হলো আমাদের ফারহা৷ ”

ফারহার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে ফায়েজ খান বলে,” সব তো ঠিক আছে তবে পুলিশ যদি সবটা জানে তাহলে তো ফারহাকে পুলিশ এরেস্ট করবে?”

ফারহা তার বাবার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলল,” নো ড্যাড তোমার মেয়ে কে কোন পুলিশ এরেস্ট করতে পারবে না৷ কারণ পুলিশের কাছে এমন কোন প্রমান নেই যার ধারা আমাকে এরেস্ট করবে৷”

ফারহার কথা শেষ হতে পেছন থেকে কেউ বলে উঠলো ,” কে কাকে এরেস্ট করতে পারবে না ফারুপাখি?”

ফারহা কন্ঠস্বর শুনে বুঝতে বাকি নেই কে এসেছে৷ ফায়েজ খান আইরিন খান চোখের পানি মুছে হাসিমুখে মেঘকে বলে,” কখন এলে মেঘ?”

” মাত্রই এসেনি আন্টি৷ কিন্তু এখানে এসে দেখছি সবাই খুব ইমোশনাল হয়ে আছেন কিন্তু কেন?”

আইরিন খান কথা ঘুড়ানোর জন্য মেঘকে বলল,” আর বলো না বাবা , মেয়ে আমার বিয়ে করবে না বলে কাঁদছে ৷ বলে আমাদের ছেড়ে নাকি কোথাও যাবে না৷ ”

ফারহার মায়ের কথা শুনে মেঘ কটমট করে রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ফারহার দিকে, ফারহা একঝলক মেঘের দিকে তাকাতে তার চোখ জোড়া আটকে যায়৷ মেঘের চোখ জোড়া অসম্ভব লাল হয়ে আছে৷ যেন খুব কেঁদেছে ৷ কিন্তু মেঘ কেন কাঁদবে এটা ভেবেই ফারহা মাথা থেকে এই সব ঝেড়ে ফেলে আইরিনকে বলে,” মম আমি খেতে যাচ্ছি তুমিও এসো৷”

ফারহা যেতে নিলে মেঘ বলে ওঠে ,” আন্টি আমি আজ আপনাদের এখানে লাঞ্চ করবো বলে না খেয়ে এসেছি৷ আর এখানে নতুন জামাইকে খাওয়ার জন্য না সেধে একা একাই খেতে চলে যাচ্ছে ৷ কি রাক্ষসী খাদক বউ আমার৷”

মেঘের কথা শুনে ফায়েজ খান আর আইরিন দুজনে মুখ টিপে হেসে উপরে চলে গেল৷ আর এদিকে রাক্ষুসী বলায় ফারহা বেজায় চটে গেছে৷ দাঁত কটমট করে মেঘের দিকে তাকিয়ে বলে, ” আমি রাক্ষসী তাই না? আজ এই রাক্ষসী তোমাকে গিলে খাবে যাস্ট ওয়েট মিস্টার মেঘ চৌধুরী ৷” ফারহা মেঘের দিকে তেরে এগিয়ে যেতে মেঘ কৌশলে ফারহাকে কোলে তুলে নিয়ে ডাইনিংয়ে এগিয়ে গেল৷

(৩৪)

চোখে মুখে পানির ছিটে পড়তে ফারিহা চোখ পিট পিট করে তাকিয়ে দেখে, একটা রাগি মুখ তার দিকে ঝুকে আছে৷ নেশার ডোজটা বেশি হওয়ায় ফারিহা স্পষ্ট কিছু দেখতে পারছে না৷ সবটাই ঝাপসা ধূসর দেখছে৷ হঠাৎ গলায় দুটো হাতের শক্ত স্পর্শ পেলো ফারিহা৷ শক্ত করে গলা চেপে ধরায় ফারিহা শ্বাস আটকে আসায় ফারিহা সেই শক্ত বাধনের হাত থেকে নিজেকে ছাড়াতে একপ্রকার ধস্তাধস্তি লেগে গেল৷

কিং ফায়ার হ্যারিকে ইশারা করতে হ্যারি ফারিহার গলা ছেড়ে দিয়ে মুখের উপর এক বোতল পানি ঢেলে দেয়৷ তবুও ফারিহার হুস ফেরেনি৷ ফারিহা মুক্তি পেয়ে নিজে নিনে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো,” ছাড়বো না কাউকে ছাড়বো না৷ আমার সাথে বেইমানীর ফল তোদের সবাইকে দিবো৷ ”

কিং ফায়ার ফারিহার মুখের সামনে কান পেতে ফারিহার কথা গুলো শুনে কিং ফায়ার যেন আরো রেগে বোম হয়ে গেল৷

” হ্যারি এই মেয়েটাকে উল্টো করে ঝুলিয়ে সব রকম টর্চার করবে৷ যখন নিশ্বাসটা বন্ধ হয়ে আসবে তার আগে আগে আমার পোষ্য খুদার্থ কুকুর গুলো ওর উপর ছেড়ে দিবে৷”

” ওকে কিং ফায়ার৷ কিং ফায়ার আমি বলছিলাম কি এদেশে আশার উদ্দেশ্যটা তো পূরণ হলো না৷ এবার কি ফিরে যাবেন?”

” হ্যারি উদ্দেশ্য একটা পূরণ হয়নি কিন্তু আমার আরও একটা উদ্দেশ্য পূরণ করা বাকি আছে৷ ”

” কিছু মনে না করলে জানতে পারি কি উদ্দেশ্য?”

” আরু৷”

আরুর নামটা শুনে হ্যারি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বিড় বিড় করে বলতে লাগলো,” কিং ফায়ার এবার নিশ্চিত নিজের মৃত্যুকে দাওয়াত দিতে চাইছে৷ এনি ওয়ে কিং ফায়ার মরলে আমি হবো এই টেরোরিস্ট দলে কিং ৷ আরু কিং ফায়ারের সাথে কি করবে না করবে আমি ভুলেও দেখতে যাবো না কিন্তু এই মারুকে আমি ছাড়বো না৷ এর জন্য কিং ফায়ারের হাতে অনেক মার খেয়েছি ৷ তার প্রতিশোধ তো আমি নিবোই৷ নিজের হাতে কঠিন মৃত্যু দিয়ে৷ ” হ্যারি ফারিহার দিকে তাকিয়ে মুখে শয়তানি হাসি ফুটে উঠলো৷ ফারিহার দিকে এগিয়ে গিয়ে ফারিহার কাঁধে হাত দিলো৷

_____________

দাঁতে দাঁত চেপে মেঘের দিকে কটমট করে তাকিয়ে ভাত মাখিয়ে এক লোকমা মেঘের মুখে তুলে দিলো ফারহা৷ তনু রাফি আদিল খাচ্ছে আর মিটি মিটি হাসছে৷ ফারহা পারে না সব কটার মাথায় ইট মেরে মাথা ফাটিয়ে দিতে৷ মেঘ ফারহাকে কোলে বসিয়ে শক্ত করে কোমর চেপে ধরে আছে৷ ফারহা একের পর এক লোকমা বানিয়ে মেঘকে খাইয়ে দিচ্ছে আর মেঘ এমন ভাবে খাচ্ছে যেন অমৃত৷

ফারহা কিছুটা খাইয়ে দিয়ে মেঘকে বলে,” মেঘ তোমার কথা মতো খাইয়ে দিয়েছি এখন আমাকে ছাড়ো৷ ”

” ফারুপাখি এই টুকু খাবারে যে আমার পেট ভরে নি ৷ আমি আরো খাবো৷” বাচ্চাদের মতো ফেস করে বললো মেঘ ৷ ফারহা এবার রাগে গজ গজ করতে করতে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো,” হু আমাকে বলে রাক্ষসী আর নিজে এত্তো বড় রাক্ষস সে দিকে দিকে খেয়াল আছে? দু প্লেট খাইয়ে দিয়েছি অলরেডি আর বলে এখনো পেট ভরে নি৷ এতো দেখি রাক্ষসদের থেকেও বড় আদি রাক্ষস৷ ”

ফারহার কথা গুলো মেঘ শুনতে পেয়ে বলে, ” ফারুপাখি আমি যদি আদি রাক্ষস হয়ে থাকি তাহলে তুমি আমার অর্ধাঙ্গিনী হলে আদি রাক্ষসী হবে তুমি৷ ”

ফারহা পারে না মেঘকে গিলে খেতে৷ খিদেতে ফারহার পেটের ভিতর ইদুর বিড়াল কাবাডি খেলছে আর মেঘ কিনা ওর সাথে মজা করছে? ফারহার এখন হাত পা ছড়িয়ে কাঁদতে মন চাইছে৷ আচমকা মুখের ভিতর খাবার পুরে দিতে ফারহা মেঘের দিকে তাকিয়ে দেখে মেঘ দাঁত বের করে ওর দিকে তাকিয়ে হাসছে৷

মেঘ তার বা হাত দিয়ে ফারহার কোমর চেপে ধরে খাইয়ে দিতে লাগলো৷ ফারহার প্রচন্ড খিদে পাওয়ায় চুপ চাপ খেয়ে নিলো মেঘের হাতে কারণ মেঘ তাকে না খাইয়ে উঠবে না সেটা খুব ভালো করে জানে ফারহা৷

এদিকে তনু আদিল রাফি খাওয়া শেষ হতে উঠে গেল৷ মেঘ ফারহাকে পুরো খাবারটা খাইয়ে দিতে ফারহা তরিঘরি করে বলে,” মেঘ খাওয়া তো শেষ এবার আমাকে ছাড়ো প্লিজ৷ ভাই দুটোর সামনে এভাবে বেহায়াপনা না দেখালে চলছিলো না বুঝি?”

” উহু ভুল বললে ফারুপাখি৷ তোমার ভাইয়েরা যদি চোখ খুলে আমাদের রোমান্স দেখতে পারে তাহলে আমি কেন দেখাতে পারবো না? আজব! আর কি বললে খাওয়া শেষ? জ্বি না ম্যাম এখনো খাওয়া শেষ হয়নি৷ মিষ্টি খাওয়াটা এখনো বাকি আছে৷”

” ওকে আমাকে ছাড়ো আমি ফ্রিজ থেকে এখুনি মিষ্টি নিয়ে আসছি৷”

” নো ম্যাম এই মিষ্টি ফ্রিজে কেন সারা বিশ্বে পাওয়া যায় না৷ ”

” তাহলে কোথায় পাওয়া যায়? আমাকে বলো আমি নিয়ে আসছি৷”

” বলবো?”

” দয়াকরে বলে আমাকে উদ্ধার করুন মহাদয়া৷”

মেঘ টেডি স্মাইল দিয়ে ফারহার ঠোঁটের ভাজে তার ঠোঁট জোড়া ডুবিয়ে দিলো৷ মেঘের স্পর্শে ফারহার পুরো শরীরে যেন বিদ্যুৎ খেলে গেল৷ মেঘের চুল গুলো হাতের ঘামচে ধরে চোখ জোড়া নিমিশে বন্ধ করে ফেললো ফারহা৷

বেশ কিছুক্ষণ পর মেঘ ফারহার ঠোঁট জোড়া ছেড়ে মুচকি হেসে বললো,” মিষ্টিটা কোথায় পাওয়া যায় এখন নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছো মিসেস ফারহা চৌধুরী?”

ফারহা লজ্জায় মেঘের দিকে তাকাতে পারছে না৷ মেঘ ফারহার লজ্জা মাখা মুখটা দেখে , ফারহার লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া গালে চুমু দিয়ে বলে , এভাবে আমার সামনে এভাবে লজ্জা পেয়েও না জান ৷ তোমার লজ্জা মাখা মুখটা দেখলে আমার যে তোমাকে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে৷ নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি না৷ ”

মেঘের লাগামছাড়া কথা শুনে ফারহা আর এক মুহূর্ত না বসে মেঘের কোল থেকে উঠে দৌড়ে নিজের রুমে যেতে নিলে আচমকা কারো বুকের সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যেতে নিলে সেই মানুষটা ফারহার হাত ধরে টেনে বুকে জড়িয়ে ধরে৷
.
.
.
#চলবে………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here