যাও পাখি বলো তারে – পর্ব ১৭

0
580

#’যাও পাখি বলো তারে’❤
#’লেখাঃ ঈশানুর তাসমিয়া মীরা❤
#’পর্বঃ ১৭
.
কাপ্তাই লেক থেকে রিসোর্টে এসেই সবাই যে যার রুমে গিয়ে রেস্ট নিলাম। আমি এক প্রকার ঘুমিয়েই গিয়েছিলাম। ২-৩ ঘন্টা পর সবার ডাকে ঘুম ভাঙ্গে আমার। তখন আকাশে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। এখন সবাই নিজেদের রুমে হালকা-পাতলা নাস্তা করবো। বড়্গাঙ রিসোর্টের সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার হলো ‘ব্যাম্বু চিকেন!’ বাঁশের ভেতরে মুরগির মাংস ভাব দিয়ে রান্না করা হয়। এটাই সবার জন্য অডার করেছি আমরা। খেতে খেতে অনেক গল্পও করেছি। গল্পের বিষয় হচ্ছে এখানের সৌন্দর্য বর্ণনা আর ইয়াসিন ভাইয়ার মর্মান্তিক অবস্থা। বেচারা এখনো শীতে কাঁপছে। হয়তো শেষ রাতে জ্বরও আসতে পারে। তবে শিক্ষাও হয়েছে তার। সবার এত শত মানা করার পরও সে ঝর্ণার পানিতে ভিঁজেছেনই। এখন এর ফল তো ভোগ করতেই হয়!

নাস্তা করে আমি আবারো ঘুমিয়ে যাই। আজ মনে হয় আমার ঘুমানোর ধুম পড়েছে। একটু পরপরই ঘুমাচ্ছি আমি। ঘুম থেকে উঠতে উঠতে রাত আটটা বেজে যায় আমার। বিছানায় উঠে বসতে না বসতেই মেহেরুন বলে উঠল,

— “উঠেছিস? তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নেয়। রেস্টুরেন্টে যেতে হবে। এখনই আটটা বেজে গেছে। নয়টায় কিন্তু রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেয়। তাই তাড়াতাড়ি।”

কথাটা শুনেও যেন শুনলাম না আমি। ঘুমে এপাশ-ওপাশ ঢোলছি শুধু। মেহেরুন এবার ঢং করে বলল,

— “মহারাণী ভিক্টোরিয়া, উঠে ফ্রেশ হয়ে নিন অনুগ্রহ করে। আমরা কিছুক্ষণ পরই রেস্টুরেন্টে যাবো। আপনার মূল্যবান নিদ্রার জন্য এতক্ষণ যেতে পারি নি। দয়া করে এখন রেডি হয়ে আমাদের ধন্য করুন।”

বিরক্তি নিয়ে মেহেরুনের দিকে তাকালাম আমি। পরক্ষণেই বিছানা থেকে বালিশ নিয়ে ছুঁড়ে মারলাম তার মুখে। এ মেয়ে এটারই যোগ্য!

__________________

রিসোর্টের রেস্টুরেন্টে সবাই বসে আছি এখন। শ্রেয়ারাসহ চাচ্চুরা বড় একটা টেবিলে বসেছেন। তাদের ঠিক পাশের টেবিলে রেয়ান, আবদ্ধ, দীঘি সহ আমরা বসে আছি। ইয়াসিন ভাইয়া আমার পাশেই বসে। অন্য পাশে মেহেরুন আর সবুজ ভাইয়া। আমরা তিনজনেই মুচকি মুচকি হেসে তাকিয়ে আছি ইয়াসিন ভাইয়ার দিকে। উনার চোখ, গাল, ঠোঁট বিশেষ করে নাকটা লাল হয়ে আছে। টিস্যু দিয়ে নাক মুছতে মুছতে বারবার হাচি দিচ্ছেন উনি। আমাদেরকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে কিছু বলবেন তার আগেই পরপর তিনচারটে হাচি দেন উনি। এতে আরো জোড়ে জোড়ে হেসে উঠলাম আমরা। ইয়াসিন ভাইয়া কোনোমতে মুখ কুঁচকে বলে উঠেন,

— “আমার অসহায়ত্বের মজা নিচ্চিস না? খোদা সইবে না এগুলো। আমার মতো নিষ্পাপ শিশুর নিষ্পাপ মন নিয়ে হাসছিস, বেয়াদ্দপ! কোই আমার সেবা করবি তা না, উল্টো মজা করছিস!”

মেহেরুন মুখ বাঁকিয়ে বলল,
— “তোর সেবা করব আমরা? এর চেয়ে ৩২ তালা থেকে লাফ দিয়ে মরে যাওয়াও ঢের ভালো।”
সবুজ ভাইয়া অসহায় মুখ করে বললেন,
— “তাহলে আমার কি হবে মেহু?”
মেহেরুন সবুজ ভাইয়ার গাল টেনে বলল,
— “এটা তো কথার কথা সবুজ। তোমাকে রেখে কি আমি মরতে পারি? মরলে দু’জন একসাথেই মরবো।”

মেহেরুনের এমন আহ্লাদী কথায় সবুজ ভাইয়াও আহ্লাদে গদগদ হয়ে উঠলেন। মুখটাকে একদম বাচ্চাদের মতো করে রেখেছেন উনি। যেন উনার কাছে মেহেরুনের সব কথাই একটা বিরাট কিছু। ওদের এত আহ্লাদীপনা দেখে ইয়াসিন ভাইয়া নাক ছিঁটকে বলে উঠেন,

— “দেখ, দেখ বড় ভাইদের সামনে কি করছে এই মেয়ে। লাজ-লজ্জা কিচ্ছু নেই। নির্লজ্জ! তাও আবার সিঙ্গেলরাও আছে! কতবার বলেছি আমাদের মতো পাবলিকের সামনে এমন চিপকা-চিপকি না করতে। এই মেয়ে শোনে আমার কথা? শুধু শুধু জেলাস ফিল করাচ্ছে যত্তসব!”

একটু থেমে আফসোসের সঙ্গে আবারো বলে উঠলেন,

— “আমার কপালে যে কবে একটা মাইয়া জুটবে? বুঝছিস মীরু, আমার যদি কোনো মেয়ের সাথে রিলেশন হয়েও যায় তাহলে ওই মেয়েকে আগে তিন-চারটা চড় দেবো আমি।”

আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম,
— “কেন?”
— “এত দেড়ি করে আসার জন্য। ওই মেয়ে অনেক অপেক্ষা করাচ্ছে আমাকে। একটু তাড়াতাড়ি আমার জীবনে আসলে তো আমার এমন নিগ্রোদের মতো ঘুড়তে হতো না।”

আমি আবারো প্রশ্ন করলাম,
— “কোন মেয়ে আসলে?”
ইয়াসিন ভাইয়া বিরক্তি নিয়ে বললেন,
— “আরে আমার ফিউচার জিএফ! ওরেই তো চড় মারার জাতীয় অধিকার আছে আমার।”

ইয়াসিন ভাইয়ার এমন অযুক্তিকর কথা শুনে হাসি দমিয়ে রাখতে পারলাম না আমি। শব্দ করে হেসে উঠলাম। আমার হাসি দেখে সবার দৃষ্টি এখন আমার দিকে। আমাদের পাশের টেবিলের চাচ্চুরা সহ আশেপাশের কিছু মানুষও তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। হয়তো একা আমিই হাসার কারণে এভাবে ড্যাবড্যাব করে তাকাচ্ছেন সবাই। লজ্জায় ‘খু-খু’ করে কেশে উঠলাম আমি। কোনো মতে একটু পানি খেয়ে মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে রইলাম। আড়চোখে রেয়ানের দিকে তাকাতেই দেখলাম উনি ডান ভ্রু উঁচু করে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে । লজ্জা যেন প্রচুর গুণে বেড়ে গেল আমার। পাশ থেকে ইয়াসিন ভাইয়া হাচি দিতে দিতে মৃদু কণ্ঠে বলে উঠলেন,

— “তোকে এত সিরিয়াস কথা বলছি আর তুই এভাবে হাসছিস? পাগল হয়ে গেছিস নাকি?”

রাগ যেন মাথায় চড়ে বসল আমার। একে তো তার আজগুবি কথায় হাসার কারণে এমন লজ্জাজনক কান্ডের শিকার হয়েছি আমি। তারওপর আবারো সেই আজগুবি কথা! তাছাড়া কোন এঙ্গেলে তার কথাগুলো সিরিয়াস মনে হয়? কোনোমতে দাঁতে দাঁত চেপে বললাম,

— “আর একটা কথা বলবি না ভাইয়া। নয়তো বদ দোয়া দেবো তোকে। সারাজীবন কুমার থাকার বদ দোয়া!”

আমার কথায় চুপসে গেলেন ইয়াসিন ভাইয়া। টিস্যু দিয়ে নাক মুছতে মুছতে বিড়বিড় করে বলে উঠলেন,

— “বয়সের ছোটরাও এখন ঝাঁটার বাড়ি দেয়। মান-ইজ্জত রইল না আর আমার! এ জীবন রেখে আর লাভ কি?”

এতটুকু বলে আবারো নিজের মতো করে বিড়বিড় করে উঠলেন,
— “উহু! জীবন অনেক মূল্যবান। এখনো কিডনি বেঁচে আইফোন কিনা হয় নি আমার। মেয়ে পাই আর না পাই, এ ইচ্ছে তো পূরণ করতেই হবে। তাই এত তাড়াতাড়ি মরার চিন্তা করে লাভ নেই। এখনো বহুত আকাম করার বাকি আছে আমার।”

তার এমন বিড়বিড় করে বলা কথা স্পষ্ট শুনতে পারছি আমি। রাগ করে থাকতে পারলাম না আর। মুচকি হেসে দিলাম। রেয়ানের দিকে চোখ পরতেই দেখলাম উনি আমার দিকে শান্তভাবে তাকিয়ে আছেন। আমি তাকাতেই তা যেন আরো প্রখর হলো। কেমন অন্যরকম একটা চাহনী তার। গভীর চোখ জোড়া যেন অনেক কিছুই বলে যাচ্ছে মনে মনে। তবে মুখে তার প্রকাশ অব্যক্ত!

________________________

— “শুনছেন, আপনার বোন মেহেরুন কি ওই ছেলেটাকে ভালোবাসে? না মানে, কতক্ষণ ধরে দেখছি কাপলরা যেমন একজন অন্যজনের প্রতি কেয়ারিং থাকে ওরাও তেমন কেয়ারিং বিহেভ করছে। ওরা কি কাপল?”

অতি আগ্রহে ফিসফিসিয়ে কথাটা বলে উঠল দীঘি। দীঘির চোখের ইশারায় মেহেরুন আর সবুজ ভাইয়ার দিকে তাকালো আবদ্ধ। সবুজ মেহেরুনের প্লেটে বার বার এটা সেটা খাবার তুলে দিচ্ছে। মেহেরুন মানা করলে মিষ্টি করে হাসছে সে। এতটুকু দেখেই ভ্রু কুঁচকে দীঘির দিকে তাকালো আবদ্ধ। বিরক্তি নিয়ে বলল,

— “অন্যদের প্রতি এত আগ্রহ কেন তোমার? চুপচাপ নিজের খাবার খাও।”

প্রশ্নের উত্তর না দেওয়ায় রাগ হলো দীঘির। আবদ্ধের পেটে আস্তে করে চিমটি দিতেই চোখ বড় বড় করে দীঘির দিকে তাকালো আবদ্ধ। দীঘি দাঁত কেলিয়ে হেসে বলল,

— “বলুন না প্লীজ!”

আবদ্ধের গম্ভীর কণ্ঠ,
— “একটা শর্তে বলব।”
— “কী শর্ত?”
— “আমি বলার পর আর একটা কথাও মুখ থেকে বের করবে না। চুপচাপ খাবার খাবে। ঠিকাছে?”

দীঘি কিছু একটা ভাবলো। পরপরই মাথা নাড়ালো সে। আবদ্ধ বলে উঠল,
— “হ্যাঁ, ওরা কাপল। আর মেহেরুন যে ছেলেটার সঙ্গে তার নাম সবুজ। রেয়ান ভাইয়ের ফ্রেন্ড!”

আবদ্ধের দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে দীঘি বলল,

— “আপনারা মেনে নিয়েছেন ওদেরকে?”

আবদ্ধ চোখ বড় বড় করে তাকালো দীঘির দিকে। কেননা শর্ত ভঙ্গ করে কথা বলছে দীঘি। ঘটনা বুঝতে পেরে দীঘি তাড়াতাড়ি বলে উঠল,

— “এটাই শেষ! প্লীজ বলুন না। প্লীজ, প্লীজ, প্লীজ!”

আবদ্ধ একটা ছোট্ট নিশ্বাস ফেলে বলল,
— “হ্যাঁ! সবুজ ভাইয়া ভালো ছেলে। আমি নিজে দেখেছি। তাছাড়া উনি রেয়ান ভাইয়ের ফ্রেন্ড। আচারে-আচরণে নম্র-ভদ্র। পরিবারও ভালো। আর কি দরকার?”

দীঘি এমন ভাব করলো যেন সে বিরাট কিছু বুঝে ফেলেছে। তবে অন্যকোনো প্রশ্ন করল না। শর্ত মতে চুপচাপ খাবার খেতে লাগলো।

___________________

রাত প্রায় ১২টা বাজে। ক্লান্তিতে সবাই এখন ঘুমে কাতর হয়ে আছে। একমাত্র আমি ছাড়া। কেনই বা না? কাপ্তাই লেক থেকে আসার পর এতক্ষণ ঘুমিয়েও আবার রেস্টুরেন্ট থেকে এসে আরো কিছুক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি। সেহেতু এখন আর ঘুম আসছে না আমার।

আমাদের কটেজটা হলো টিন আর বাঁশের তৈরি। পাশাপাশি রুম সবার। কটেজের ভেতরটা অনেকটা ভিন্ন। বারান্দাও আছে একটা। সেখানে আছে বাঁশের তৈরি রেলিং, বসার জন্য চেয়ার আর এক,দুটো ফুলের টপ। আপাতত সেখানেই দাঁড়িয়ে আছি আমি। তবে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে ভালো লাগছে না আর। রিসোর্টে বড় খোলা মাঠ আছে। মূলত পিকনিক বা হাঁটাহাঁটির জন্যই ব্যবহার করা হয় এটি। হঠাৎ-ই মনের মাঝে সেখানে যাওয়ার ইচ্ছে পোষণ হলো। ইচ্ছেটা কেন যেন দমিয়ে রাখতে পারলাম না আমি। কনকনে শীতের মাঝে মোটা একটা চাদর শরীরে জড়িয়ে নিঃশব্দে বেড়িয়ে পরলাম কটেজ থেকে। বের হতেই দেখলাম বাহিরে আগে থেকেই দাঁড়িয়ে ছিলেন রেয়ান। তার পরনে টি-শার্ট আর জ্যাকেট। কটেজের বাহিরে দরজায় লাগানো লাইট থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে তার বিরক্তিমাখা মুখ। যেন আমাকে এত রাতে বাহিরে দেখে খুশি নন উনি। তার এসব বিরক্তি উপেক্ষা করে এগিয়ে গেলাম উনার দিকে। সঙ্গে সঙ্গে উনার গম্ভীর কণ্ঠ,

— “এত রাতে এখানে কি? ঘুমাও নি কেন এখনো?”
— “আপনি কেন ঘুমান নি? এখানে কি করছিলেন?”

আমার পাল্টা প্রশ্নে ভ্রুটা কুঁচকে গেল তার। আমার দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন,

— “এমনি ভালো লাগছিল না। শীত বাড়ছে, তোমার কটেজে যাওয়া উচিত..!”

উনি আরো কিছু বলতেন তার আগেই আমি দ্রুত বলে উঠলাম,
— “আমি এখন যাবো না।”
উনি নরম কণ্ঠে বললেন,
— “ঠান্ডা লেগে যাবে মরুভূমি।”

তার এমন আদূরি ডাক কি উপেক্ষা করা সম্ভব? অনতত আমার পক্ষে না। মন খারাপ করে কটেজের উদ্দেশ্যে কয়েক পা এগোতেই পেছন থেকে রেয়ান গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠলেন,

— “তোমার কি ঘুম আসছে না? চাইলে আমার সাথে আশপাশটা ঘুড়ে আসতে পারো।”

চোখ – মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল আমরা। পেছনে ফিরে তার মুখোমুখি দাঁড়ালাম। উনি কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন আমার দিকে। কিছু একটা ভেবে বললেন,

— “কটেজ থেকে আরেকটা চাদর নিয়ে আসো। দু’টো চাদর একসাথে জড়িয়ে নাও। নাহলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।”

আমিও দ্রুত মাথা নাড়ালাম। উনার কথা মতো কটেজ থেকে আরেকটা চাদর নিয়ে দু’টো চাদর একসাথে গায়ে জড়িয়ে নিলাম।

বড়গাঙ রিসোর্টটা বিশাল বড় এক রিসোর্ট। খোলা-মেলা বড় মাঠ, দুইদিকে গাছগাছালি আর মাঝখানে সরু রাস্তা এবং সঙ্গে নদীও আছে বিশাল। সরু রাস্তাটায় অনেকটা দূরত্ব রেখে আমি আর রেয়ান পাশাপাশি হাঁটছি। হাঁটার মাঝে রেয়ান হঠাৎ বলে উঠলেন,

— “তোমার কি শীত লাগছে? লাগলে বলো, আমরা ফিরে যাবো।”

আমি মাথা নাড়ালাম। যার অর্থ ঠিক আছি আমি। উনি এবার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালেন আমার দিকে। ঝাঁঝালো কণ্ঠে বললেন,

— “তুমি বোবা? কথা বলছো না কেন?”

ইগোতে লাগলো কথাটা। এ মানুষটা সবসময় এমন করেন আমার সঙ্গে। আমাকে জ্বালাতে উনার এত কেন ভালো লাগে সেটা আমার অজানা। কিন্তু আজকে জেনেই ছাড়বো আমি। তাই অনেকটা রাগী মুডে বললাম,

— “এভাবে সবসময় আমাকে জ্বালান কেন? আপনার বুঝি বেশ মজা লাগে আমাকে জ্বালাতে?”

উনি মুচকি হেসে বললেন,
— “অবশ্যই।”
— “এতে লাভ?”
— “মনের আনন্দ। আর তোমার ক্ষেত্রে এটা নিঞ্জা টেকনিক হিসেবে কাজ করে।”

বুঝলাম না কথাটা। ভ্রু কুঁচকে বললাম,
— “মানে?”
— “মানে এই টেকনিক ইউস করলে তুমি বকবক করতেই থাকো। যদিও তুমি বকবক এমনিতেই করো, তবে এটা করলে আরো বেশি বেশি করে করো। লাইক, রেগে যাও। যা আমাকে প্রচন্ড আনন্দ দেয়।”

হা হয়ে গেলাম আমি। আস্তে আস্তে তার প্রতি রাগ হতে লাগলো আমার। মৃদু চেঁচিয়ে বললাম,
— “অসভ্য!”
— “ধন্যবাদ মিস।”

____________________

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here