ভালোবাসার অনুভূতি – পর্ব ১০

0
808

#ভালোবাসার_অনূভুতি
#লেখিকাঃআরভি_আহিয়াদ_তিহু
#পর্ব_10
: সকালে আর্লামের শব্দে ঘুম ভাঙলো আহির আর মিহিরের।দুজন চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষন বিছানায় মোড়ামোড়ি করে উঠে বসলো।ঘুমু ঘুমু চোখে দুজন দুজনের দিকে তাকাতেই ওদের সব ঘুম উড়ে গেলো।ওরা দুজন দুজনের দিকে কিছুক্ষন স্তব্দ হয়ে তাকিয়ে থেকে জোড়ে আ্ আ্ আ্ বলে একটা চিৎকার দিলো।এতো জোড়ে চিৎকার দেওয়ায় মনে হচ্ছে বাড়ি কেপে উঠেছে। ওদের চিৎকার শুনে মেঘ ঘুমের ঘোড়ে ভয় পেয়ে ধরাম করে বিছানা থেকে পড়ে গিয়ে সেও আ্ আ্ আ্ বলে জোরে চিৎকার দিলো।মিড়া রহমান এবং আজম রহমান আহির আর মিহিরের চিৎকার শুনে দৌড়ে সিড়ি দিয়ে উপড়ে উঠছিলেন তখনি আবার মেঘের চিৎকারও শুনতে পেলেন।ওনারা দুজনই কনফিউসড হয়ে সিড়িতে দাড়িয়ে গেলেন ।ভাবছেন কার রুমে আগে যাবেন? তারপর বেশি কিছু না ভেবে ওনারা মিহিরদের রুমে চলে গেলেন।গিয়ে যা দেখলেন তাতে ওনাদের মুখ হা হয়ে গেলো। ওনারা চোখ বড় বড় করে কিছুক্ষন মিহির আর আহিরের দিকে তাকিয়ে থেকে হু হা করে হেসে দিলেন।মেঘ বিছানা থেকে পড়ে গিয়ে কোমরে ব‍্যাথ‍্যা পেয়ে ওর ঘুম ভেঙে গেলো।ও হাত দিয়ে কোমর চেপে ধরে ভাবছে, চিৎকারটা কে দিলো?পরক্ষনেই ওর কাল রাতের সব কথা মনে পড়ে গেলো।ও কোমরে ব‍্যাথ‍্যা ট‍্যাথ‍্যা সব ভুলে গিয়ে বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে মিহিরের রুমের দিকে দৌর দিলো।মেঘ গিয়ে দেখলো আজম রহমান এবং মিড়া রহমান হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। আর আহির মিহির রেগে বোম হয়ে দাড়িয়ে আছে।মেঘ গিয়ে ওদের সামনে দাড়ালো এবার ও সাজটা ভালো করে দেখতে লাগলো
দুজনের কপালে লাল লিভষ্টিক দিয়ে গোল করে বড় একটা টিপ দেওয়া।ব্রুতে পিঙ্ক লিভষ্টিক দিয়ে আর্ট করা।ঠোটে ব্লাক আই ব্রু দিয়ে আর্ট করা।দুই কালারেল নেলপলিশ দিয়ে দুই গালে ক্রস চিহ্ন দেওয়া।সাড়া মুখে হলুদ কালারের কনসেলার দেওয়া।মেঘ হাসতে হাসতে গিয়ে ওদের বেডের উপর শুয়ে পড়ে। মিহির রেগে চিল্লিয়ে বলে

“যাষ্ট স্টপ ইট”……

মিহিরের ধমকে সবাই চুপ হয়ে যায়।আহীর দাতে দাত চেপে বলে

“মেঘ এটা কোন ধরনের মজা?”

মেঘ বুঝলো তার ভাইয়েরা ভীষন রেগে গেছে।কিন্তু তাতে তার কি? সে একটা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো

“আজব আমি আবার কি করলাম। বাই দ‍্যা ওয়ে, তোমাদের কিন্তু অনেক কিউট লাগছে।”

আহীর বললো

“Didn’t act over smart okey. আমরা জানি এটা তোর কাজ।”

মেঘ অবাক হওয়ার ভান করে বললো

“আমার কাজ? আমার মতো সুইট, কিউট, ইনোসেন্ট একটা মেয়ে এই ধরনের কাজ কখনো করতে পাড়ে।আর তাছাড়া কি প্রমাণ আছে যে এইসব আমি করেছি?”

মিহির রিডিং টেবিল থেকে হাতে একটা স্কেল নিয়ে মেঘের দিকে এগিয়ে গিয়ে রাগি গলায় বললো

“তোর প‍্রমান লাগবে তাই না।দিচ্ছি আমি তোকে প্রমান।”

মেঘ সোয়া থেকে উঠে দাড়িয়ে বললো

“আমাকে একদম মারার চেষ্টা করবি না।আর যদি মাড়িস তাহলে তোদের এই সুন্দর চেহারার কিছু পিক আমার ফোনে আছে।সেগুলো F.B. তে পোষ্ট করে দেবো।আর ক‍্যাপশনে লিখবো আমার দুই কিউট সিষ্টার ।”

বলেই মেঘ একটা ভাব নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।মিরা রহমান এবং আজম রহমানও হাসতে হাসতে বেড়িয়ে গেলো।মিহির আর আহির বোকার মতো কিছুক্ষন মেঘের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।

_________________________

চৌধুরী বাড়ি…….

সাঈফা আর সাড়িকা একে অপরের চুল ধরে টানাটানি করছে ।কারন হলো ওয়াশরুমে আগে কে যাবে।সাঈফা বলছে ও আগে যাবে ।আর সাড়িকা বলছে ও আগে যাবে।শুধু চুল টানাটানি করছে না চিল্লাচিল্লি করে পুরো বাড়ি মাথায় উঠিয়েছে।ওদের ঝগরা শুনে ওদের মা আর চাচি দৌড়ে এলেন।সাঈফার মা একটা ধমক দিয়ে বললেন

“এইটা কোন ধরনের অসভ‍্যতা? তোমরা কি এখনো বাচ্চা? রোজ রোজ কিছু না কিছু নিয়ে যে তোমাদের ঝগড়া করতেই হবে?”

সাড়িকা সাঈফা একে অপরের চুল ছেড়ে দড়জার দিকে তাকালো।ওদের মা আর চাচি রাগি মুড নিয়ে দাড়িয়ে আছে।দুজনেই শুকনো একটা ডোক গিললো। সাঈফা বললো

“আম্মু ঘুম থেকে আগে আমি উঠেছি।তাই আমি আগে ওয়াশরুমে যাবো।”

সাড়িকা বললো

“কিন্তু ও ঘুম থেকে উঠে বেডে শুয়েছিলো।আমি আগে বেড থেকে আগে নেমেছি। তাই আমি আগে যাবো।”

ওদের মা ঝাঝালো গলায় বললো

“গতো বিশ মিনিট ধরে তোমরা ঝগড়া করছো।এতোক্ষনে দুই জনেরই ফ্রেস হওয়া হয়ে যেতো।এই সামান‍্য একটা বিষয় নিয়ে তোমরা কেনো ঝগড়া করছো।আর তাছাড়া এই বাড়িতে প্রায় প্রত‍্যেকটা রুমে একটা করে ওয়াশরুম। তোমাদের দুজনের একজন আমার রুমে বা ছাহীরের রুমের ওয়াশরুমে চলে যাও।”

“সাঈফা জেদি গলায় বললো
আমি আমার ওয়াশরুমেই যাবো।তুমি সাড়িকা কে বলো তোমাদের টায় যেতে।”

সাড়িকাও জেদি গলায় বললো
“আমিও আমার ওয়াশরুমেই যাবো। ”

ওদের চাচি ধমক দিয়ে বললো

“সাট আপ। এই বিষয় নিয়ে আর একটা কথাও বলবে না তোমরা দুজন।আমরা এখন নিচে যাচ্ছি ।এই রুম থেকে যদি আর তোমাদের ঝগরার একটা শব্দও বের হয় ।তাহলে আজকে থাপ্পর একটাও মাটিতে পড়বে না।”

বলেই ওনারা রুম থেকে গটগট করে বের হয়ে গেলেন।সাড়িকা ওর মা চাচির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আনমনে খাটের উপর বসে পড়লো।সেই সুজোগে সাঈফা এক দৌড়ে ওয়াশরুমের ভিতরে ঢুকে গেলো।আর সাড়িকা হা করে ওয়াশরুমের দিকে তাকিয়ে রইলো।তারপর চেচিয়ে বললো

” সাইফার বাচ্চা তোকে একবার হাতের কাছে পাই, থাপ্পর মেরে তোর সব দাত ফেলে দেবো । চিটার একটা”
_________________________

মেঘ ফ্রেস হয়ে রেডি হয়ে নিচে আসলো।এসে দেখলো আজম রহমান আর মিরা রহমান ব্রেকফাস্ট করছে ।মেঘ মিষ্টি হেসে ওনাদের গুড মনিং বললো। বিনিময়ে ওনারাও মেঘকে গুড মনিং বললেন।মেঘ আহির আর মিহিরের কথা জিঙ্গেস করলে মিরা রহমান বলেন ওরা অলরেডি ব্রেকফাস্ট করে অফিসে চলে গেছে।মেঘও আর কিছু না বলে খাওয়া শেষ করলো।তারপর বাইরে বের হয়ে রিকশা নিয়ে ভার্ষিটির উদ‍্যশ‍্যে বেড়িয়ে পড়লো। কিছুক্ষণ পর আজম রহমান তার গাড়ি নিয়ে অফিসের উদ‍্যশ‍্যে বেড়িয়ে পড়লেন। আর মিড়া রহমানও তার গাড়ি নিয়ে হসপিটালের উদ‍্যশ‍্যে বেড়িয়ে পড়লো। ওনি এখন মোনা খানদের হসপিটালের একজন ডাক্তার।তিন বছর আগেই সেই হসপিটালে জয়েন করেছেন।এবং তিনি ওই হসপিটালের বেষ্ট ডাক্তারের মধ‍্যে একজন।
_________________________
মেঘ ভার্ষিটি পৌছে রিকশা থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে গেটের দিকে হাটা দিলো। গেট দিয়ে ভিতরে ডুকতেই ও দেখতে পেলো সাড়িকা সাঈফা দাড়িয়ে দাড়িয়ে একটা ছেলের সাথে কথা বলছে।ছেলেটাকে দেখে মেঘের ঠোটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো।ও ছেলেটার কাছে এগিয়ে গিয়ে জিঙ্গেস করলো

“কেমন আছেন অভি ভাইয়া।”

অভি মৃদু হেসে মেঘকে উদ‍্যেশ‍্য করে বললো

“ভালো আছি মাই কিউট সিসটার।”

মেঘ অভিকে জিঙ্গেস করে

“ভাইয়া আপনি হটাৎ এখানে কেনো, কোনো কাজে এসেছেন?”

“তোমাদের তিন জনকে মিস করছিলাম তো। তাই তোমাদের দেখতে আসলাম।”

মেঘ চোখ ছোটো ছোটো করে বললো

“কি ডাহা মিথ‍্যাকথা।আপনারা বাংলাদেশে আসছেন ছয় মাস হয়ে গেছে। আর এই ছয় মাসে আপনার সাথে আমার মাএ তিনবার দেখা হইছে।একবার আপনাদের এয়ারপোর্টে রিসিভ করতে গেছি তখন, আর দুই বার হসপিটালে হিমা আপুর বেবি হইছে তখন।আপনি একবারও আমার সাথে ইচ্ছে করে দেখা করতে আসছেন।তারপর আবার আপুর বেবি হওয়ার জন‍্য আপনার কাছে ট্রিট চাইলাম ।আপনি কালকে দেবো বলে সেই যে ভেগেছেন এরপর আর আপনাকে খুজেই পেলাম না।”

অভি এতোক্ষন মেঘের দিকে হা করে তাকিয়ে থেকে ওর কথা শুনছিলো।এবার ফিক করে হেসে দিয়ে বললো

“ওরে বাবা আমার নামে এতো অভিযোগ।আই এ‍্যাম ভেরি সড়ি কিউটি।আসলে আমার নিউ জব তো, তাই জন‍্য প্রথম প্রথম বেশি ছুটি ছুটি নিতে পারছি না। এখন থেকে আর ভুল হবে না মাঝে মধ‍্যে তোমাদের সাথে এসে দেখা করে যাবো। আর বাকি রইলো ট্রিট এর কথা ।সেটা তো রিয়ান আমাকে বললো ও তোমাকে আলিশাকে, সাড়িকাকে, সাঈফাকে ট্রিট দিয়েছে।তাই আমাকে আর দিতে হবে না।”

মেঘ রেগে বললো

“রিয়ান ভাইয়া ট্রিট দিয়েছে কারন ওনি বাবুর আব্বু।আর আপনি দিবেন কারন আপনি বাবুর চাচ্চু।”

অভি হেসে বললো
“আচ্ছা ঠিকাছে তাহলে চলো এখন কোনো রেষ্টুরেন্টে যাই।”

“না অন‍্য একসময় যাবো। এখন আমাদের ক্লাস আছে।”

অভি বললো

“okey. As your wish. ”

সাড়িকা অভিকে উদ‍্যেশ‍্য করে জিঙ্গেস করলো

“ভাইয়া আপনি এখানে কোনো এসেছেন সেটাই তো বললেন না।”

“একটা জরুরি কাজে এসেছিলাম আমার এক বন্ধুর কাছে।”

তারপর ওরা আরও কিছুক্ষন টুকিটাকি কথা বলে অভি নিজের কাজে চলে গেলো।আর মেঘ, সাড়িকা ,সাঈফা ভার্ষিটির ভিতরে চলে গেলো।

আসলে ছয় মাস আগে হিমা রিয়ান আর অভি বাংলাদেশে এসে পড়েছে।হিমা তখন চার মাসের প্রেগনেন্ট ছিলো।পনেরো দিন আগে হিমার গ্রিন এভার হসপিটালে সিজাড়িং এ মেয়ে হয়েছে।আহান আর হিয়ান হিমাদের সাথে আসতে পারেনি কারন ওরা বিজনেসের কাজে আটকে গিয়েছিলো।

_________________________

ভার্ষিটি ছুটি হলে মেঘ সাড়িকা সাঈফা একে অপরের থেকে বিদায় নিয়ে যার যার বাসায় চলে যায়। মেঘ বাসায় এসে দেখে দুইজন সাভেন্ট ছাড়া বাসায় আর কেউ নেই।মেঘ ওর কাধের ব‍্যাগটা সোফায় রেখে একজন সার্ভেন্ট এর উদ‍্যেশে জিঙ্গেস করে

“আন্টি মা বাবা ভাইয়া কোথায় ? ওনাদের তো এতক্ষনে এসে পড়ার কথা?আসেনি এখনো?”

মহিলাটি মেঘের দিকে এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিয়ে বললো

“মিড়া ম‍্যাম আর আজম স‍্যার দুজনেই বারোটার দিকে এসেছিলো।তারপর তাড়াহুরো করে রেডি হয়ে আবার বেড়িয়ে গেছে।যাওয়ার আগে বলে গেছে সাঈফা মামুনিদের বাড়ি যাচ্ছে।তোমাকে অনেকবার ফোন করেছে কিন্তু পায়নি।তুমি বাসায় আসলে যেনো তারাতাড়ি রেডি হয়ে ওই বাড়িতে চলে যাও।আর মিহির বাবা অফিস থেকে সরাসরি ওই বাড়িতে চলে যাবে।”

মেঘ পানি খেয়ে গ্লাসটা মহিলাটার কাছে দিয়ে দিলো।তারপর ব‍্যাগ খুলে ফোনটা বের করে দেখে মিরা রহমানের পাচটা মিসড কল। মেঘ জিভ কাটলো ।ক্লাসে ডুকে ফোনটা সাইলেন্ট করেছিলো ।তাই রিংটোন এর শব্দ শুনতে পায়নি।

মেঘ তাড়াতাড়ি মিরা রহমানের নম্বরে ডায়াল করলো। প্রথমবার রিন হয়ে কেটে গেলো দ্বীতিয় বার দুইটা রিন হতেই ফোন রিসিভ করে মেঘকে কিছু বলার সুজোগ না দিয়ে মিরা রহমান ঝাঝালো কন্ঠে বললো

“কি সমস‍্যা তোমার মেঘ? কতোবার কল করেছি একবারও রিসিভ করার প্রয়োজন মনে করোনি? যদি সময় মতো ফোন রিসিভ করতেই না পারো তাহলে ফোন কেনো চালাও?”

মেঘ নিচু গলায় বললো

“আ’ম সরি মা।আসলে ক্লাসে ছিলাম তাই ফোন সাইলেন্ট করে ব‍্যাগের মধ‍্যে রেখেছিলাম দেখতে পাইনি। কিন্তু তুমি ফোন কেনো করেছিলে।”

মিরা রহমান ব‍্যাস্তোতার ভঙ্গিতে বললো

“তোমার হিমা আপুর শ্বশুর বাড়ি থেকে মেহমান আসবে হিমার বেবিকে দেখার জন‍্য। আজকে সকালেই ওনারা ফোন করে জানিয়েছেন।আমরা সবাই তোমার মামাদের বাসায় আছি ।তুমিও এখানে এসে পড়।”

“আমি গিয়ে কি করবো ।তোমরা তো আছো।তাছাড়া আমি অনেক টায়ার্ড এখন যেতে পাড়বো না।”

মিরা রহমান রেগে বললেন

“আমাকে রাগাবে না মেঘ ।চুপচাপ সুন্দর করে রেডি হয়ে এখানে চলে এসো।তোমার কাছে শুধুমাত্র আধঘন্টা টাইম আছে। তার মধ‍্যে তোমাকে আমি এই বাড়িতে আমার চোখের সামনে দেখতে চাই।”

মেঘ ওকে বলে ফোনটা কেটে দিলো ওর ইচ্ছে করছে ফ্লোরে হাত পা ছড়িয়ে চিৎকার করে কাদতে।কিন্তু এখন কাদলে বেশি দেরি হয়ে যাবে।তাই কান্নার প্লান ক‍্যান্সেল করে তারাতাড়ি উপরে ওর রুমে চলে গেলো। রুমে গিয়ে সাওয়ার নিয়ে রেডি হয়ে নিলো।মেঘ গাড় ব্লু রঙের একটা গাউন পড়েছে।গাউনটার উপরে সাদা রঙের পাথর দিয়ে হালকা কাজ করা।সাথে ম‍্যাচিং করা সাদা রঙের ল‍্যাগিন্স, সাদা এন্ড ব্লু রঙের কম্বিনেশনের ওরনা, সাদা রঙের হিজাব। কানে সাদা ষ্টোনের ছোট্ট দুইটা টব পড়েছে।গলায় একটা সাদা ষ্টোনের পেনডেন্ট। একহাতে সাদা ষ্টোনের চওরা একটা বেসলেট। ঠোটে হালকা পিংঙ্ক লিভষ্টিক , চোখে হালকা কাজল।মেঘ রেডি হয়ে নিচে গিয়ে সার্ভেন্টদের বাই বলে বাসার বাইরে আসলো।বাইরে এসে দেখলো ড্রাইবার গাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে মেঘ মুচকি একটা হাসি দিয়ে গাড়িতে উঠে পড়লো।কিছুক্ষন পর গাড়ি এসে মেঘের মামাদের বাসার সামনে থামলো । মেঘ গাড়ি থেকে নেমে বাসার সামনে গিয়ে কলিংবেল বাজালো।কিছুক্ষন পর সাঈফা এসে দরজা খুলে দিলো।তারপর মেঘকে দেখে আপু বলে চিৎকার দিয়ে জড়িয়ে ধরলো।সাঈফাকে দেখে মনে হচ্ছে যেনো ও মেঘকে দেখে হাতে আকাশের চাদ পেয়ে গেছে। মেঘ সাঈফা কে নিজের থেকে ছারিয়ে সন্দীহান চোখে তাকিয়ে জিঙ্গেস করে

“কী ব‍্যাপার বলতো? হটাৎ এতো ভালোবাসার কারন? আমাদের তো একটু আগেই দেখা হলো তখন তো তুই ঠিক ঠাকই ছিলি হটাৎ তোর আবার কি হলো?”

সাঈফা একটা মেকি হাসি দিয়ে মেঘকে হাত ধরে ভিতরে নিয়ে যেতে যেতে বললো

“বলছি আগে ভিতরে এসো।”

মেঘ ভিতরে ডুকেই দেখলো ওর বাবা মামারা সবাই ড্রয়িংরুমে বসে আছে।মেঘ হাটতে হাটতে হটাৎ একজনকে দেখে ওর পা থেমে গেলো।চোখ বড় বড় করে সেই লোকটার দিক তাকিয়ে রইলো।ওর মনে হচ্ছে ও ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখছে।মেঘকে এভাবে দাড়িয়ে যেতে দেখে সাঈফা মেঘের কানে কাছে ফিসফিসিয়ে বললো

“তোমার আবার কি হলো? এভাবে স্টাচু হয়ে দাড়িয়ে আছো কেনো?”

সাঈফার কথায় মেঘের হুস ফেরে ।মেঘও সাঈফার মতো ফিসফিসিয়ে বলে

“সাঈফা আমার না, কালকে রাতে ঘুম হয়নি। তাই মনে হচ্ছে ঘুমের ঘোড়ে চোখের সামনে উল্টো পাল্টা দেখছি।আমার হাতে জোরে একটা চিমটি কাটতো।”

“সেটা নাহয় কাটলাম।কিন্তু তোমার কালকে রাতে ঘুম কেনো হয়নি?”

মেঘ ধীর কন্ঠে ধমক দিয়ে বললো
“সেটা তোকে পড়ে বলছি। তুই আগে চিমটি কাট।”

সাইফা বিরক্তি নিয়ে মেঘকে জোড়ে একটা চিমটি কাটলো। মেঘ আম্মুগো বলে একটা চিৎকার দিলো।হটাৎ মেঘের এরকম চিৎকারে সবাই হকচকিয়ে ওদের দিক তাকালো।কিন্তু মেঘের সেদিকে খেয়াল নেই। মেঘ বুঝলো ও স্বপ্ন দেখছে না এটা সত‍্যি।ও অস্পষ্ট গলায় কন্ঠে বললো

“আ্ আহান ভ্ ভাইয়া।”

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here