ভালোবাসার অনুভূতি – পর্ব ৩

0
976

#ভালোবাসার_অনূভুতি
#লেখিকাঃ_আরভি_আহিয়াদ_তিহু
#পর্ব_3

তারপর আস্তে করে দরজাটা টেনে রুম থেকে বের হয়ে নিচে আসে।নিচে এসে যা দেখে তাতে ধপ করে মাথায় আগুন জ্বলে উঠে।

মিরা রহমান সোফায় বসে আছে আর তার সামনের সোফায় পাশের বাসার কিছু মহিলা বসে আছে।এরা নিশ্চয়ই বিয়ে ভাঙার খবরটা পেয়ে গেছে।তাই কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিতে এসেছে। আসলে প্রতিবেশিদের সংগা হলো

“পরের সুখে জ্বলে বেশি
অন‍্যের দুঃখে খুব খুশি।
শুনে কম রটায় বেশি
আর এদের নাম হল প্রতিবেশি।”

মিহির এসে মিরা রহমান এর পাশে বসে ফোন স্ক্রল করতে লাগল।ওদের মধ‍্যে একজন মহিলা মিরা রহমান কে উদ‍েশ‍্য করে বললেন

” তা ভাবি মেঘনা কে তো দেখতে পাচ্ছি না।মেঘনা কোথায়?”

” উপরে নিজের রুমে আছে।”

আরেক জন মহিলা বিদ্রূপের সুরে বলল

” কী আর বলব ভাবি,, কি দিন কাল পরল,,,, এক বোন আরেক বোনের হবু স্বামীর সাথে প্রেম করছে। কী লজ্জার বিসয় ভাবুনতো। জেরিন কি সুন্দর দেখতে ,,,ওর জন‍্য কি জগতে ছেলের অভাব পরতো কিসের জন‍্য আবিরের সাথে জেরিনের অবৈধ সম্পর্ক করতে হবে। হাজার হোক মেঘনা তো ওর বোন হয়,,,কেউ বোনের এত বড় ক্ষতি করে।”

মিহির দাতে দাত চেপে সব সজ‍্য করছে।ইচ্ছে করছে এদের এক এক জনকে মাথায় তুলে আছাড় মারতে।

মিরা রহমান কথা ঘোরাতে বললেন,,,

“এসব কথা ছারুন ভাবি,,,আপনারা কি খাবেন চা নাকি কফি।”

আরেক জন বললেন

” কিছু খাব না ভাবি,,, আমরা এই মাএ আবিরদের বাসা থেকে খেয়ে এসেছি।
তারপর মহিলাটি বেশ আগ্রহ নিয়ে জিঙ্গেস করল

” তা আপনারা কি সিন্ধান্ত নিলেন,,,,,মেঘনা যে ছেলেটাকে ভালো বাসে ,,,তার সাথে ওর বিয়ে টা দিবেন নাকি?”

মিরা রহমান বলল

“মেঘনা কউকে ভালোবাসে না ভাবি।”

মহিলাটি আবার বললেন

“কি বলেন ভাবি,,,,জেরিন আমাদের এইমাএ ওর ফোনে মেঘনা আর একটা ছেলের কিছু ছবি দেখালো।আমরা সবাই নিজের চোখে দেখলাম।”

মিরা রহমান কথার মাঝে মহিলাটিকে থামিয়ে দিয়ে দৃঢ় গলায় বললেন

“জেরিন আপনাদের কি দেখিয়েছে , আপনারা কি দেখেছেন সেটা আমি জানিনা।আমার মেয়ের উপর আমার পুরো ভরসা আছে।সে এমন কিছু করবে না,,,,যাতে তার বাবা মায়ের সম্মানহানি হয়।”

মহিলাটি আবার বললো

“মেয়েকে এতটাও বিশ্বাস করবেন না ভাবি,,, আজকালকার মেয়ে কখন কি করে বসে,,, আসলে আপনাদের কোনো দোষ নেই,,, আপনাদের অগচরে আপনাদের মেয়ে বাইরে কি করে বেরায় সেটা আপনারা কি করে জানবেন বলুন।”

শেষের কথাটা অনেকটা ব‍্যঙ্গ করে বললেন মহালাটি।মিহির এতক্ষন সব চুপচাপ সহ‍্য করলেও,,,,এবার আর সহ‍্য করতে পারল না । সোফার পাশের টি টেবিলে থাকা ফ্লয়ারভাস টাকে শজোরে ফ্লোরে আছাড় মারল।ঘটনার আকষ্মিকতায় সবাই কেপে উঠল,,,,,তাকিয়ে দেখল মিহির চোখ লাল করে দারিয়ে আছে,,,, পাশে কাচের ফুলদানিটা ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে ফ্লোরে পরে আছে।মিহির জোরে চেচিয়ে বলল

___”what you mean by বাইরে কি করে বেরায়।আপনাদের সাহস তো কম না,,,,আমাদের বাসায় এসে আমার বোনের নামে যা নয় তাই বলছেন।”

কিছু ভাঙার বিকট শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায় মেঘের,,,,,ধরফরিয়ে উঠে বসে মেঘ ,,,নিচ থেকে চেচামেচির আওয়াজ আসছে,,,সে তারাতারি রুম থেকে আসে,,, শিড়ির কাছে আসতেই দেখতে পায় সোফার একপাশে মিহির রাখি লুক নিয়ে দারিয়ে আছে,,,আরেক পাশে কিছু আন্টি বসে আছে,,, আর মিরা রহমান মাথা নিচু করে সোফা ধরে দারিয়ে আছে।মিহির চিৎকার করে বলল

___”এই মূহুর্তে এই বাড়ি থেকে বের হয়ে যান,,,, নাহলে খুব খারাপ হয়ে যাবে।”

সাথে সাথে মহিলা গুলো বসা থেকে দাড়িয়ে গেল।তাদের মধ‍্যে একজন বলল

__”কথায় আছে চোরের মায়ের বড় গলা,,,,, তোমার বোন নষ্টামি করতে পারবে আর আমরা বললেই দোষ।”

আরেক জন রাগি গলায় বললো

___ “এক দম ঠিক বলেছেন ভাবি,,,,তাছাড়া আমরা কি আর এমনি এমনি বলছি জেরিন নিজে আমাদের ওর ফোনের ছবি দেখিয়েছে,,, তাছাড়া ওরা নিজের চোখে নাকি দেখেছে তোমার বোনকে একটা ছেলের সাথে হোটেলে যেতে।”

আরেক জন মহিলা বললো

“আবিরের মা তো বলল তোমার বোনের আরও অনেক ছেলের সাথে সম্পর্ক আছে।”

তারপর মিরা রহমান এর দিকে তাকিয়ে বলল

“‘ অদ্ভুত মহিলা তো আপনি,,,আপনাকে তো এতদিন ভালোই জানতাম,,,,কিন্তু আজ দেখতে পাচ্ছি ছেলেমেয়েকে তো ঠিক ভাবে শিক্ষাটাও দিতে পারেন নি।”

মিরা রহমান এর চোখ থেকে দুই ফোটা পানি গরিয়ে পরল।মিহির এবার রেগে টি টেবিলের উপরে একটা লাথি মারল,,,,টেবিলটা কাত হয়ে পরে গেল।মিহির জোরে চিল্লিয়ে বলল

“আমি কোনো মেয়েদের গায় হাত তুলিনা,,,,তাই আপনারা এখনো অক্ষত অবস্থায় এখানে দাড়িয়ে আছেন,,,নাহয় আপানদের পা ভেঙ্গে হাতে ধরিয়ে দিতাম।”

মিহিরের কথায় মহিলা গুলো ভয় পেয়ে একপ্রকার দৌড়ে চলে গেল।মেঘ আর সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারল না দৌড়ে রুমে চলে গেল।রুমে এসে শুনতে পেল নিচে কেউ খুব জোরে জিনিসপত্র ভাঙচুর করছে।মেঘের বুজতে পারল এটা মিহির করছে।সে গলার নেকলেজ টা ধরে টান মারল,,,নেকলেজটা ছিরে নিচে পড়ে গেল,,,একটা একটা করে সব গয়না গা থেকে খুলে ফ্লোরে ছুরে মারল,,, দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেল,,,, সাওয়ার ছেরে তার নিচে বসে আঝরে কাদতে লাগল।

15 দিন পর……
এই পনেরো দিন ঘর বন্ধি হয়ে ছিল মেঘ।শুরুতে মন ভালো করার জন‍্য,,, মিহিরের জোড়া জোড়িতে একবার বাইরে বের হয়ে ছিল মেঘ,,, কিন্তু লোকজন ওকে নিয়ে বাজে মন্তব‍্য করছে।উল্টো পাল্টা কথা বলেছে হাসাহাসি করেছে,,, তার জন্য মেঘ নিজেকে ঘর বন্ধি করে নিয়েছে,,, রুম থেকে কোখাও বের হয় না,,,,কারও সাথে কথা বলে না,হাসে না,,,,ঠিকমত খাওয়া দাওয়া করে না,,,,চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে,,,,মুখটা সারাদিন মলিন থাকে,,,কেউ কিছু জিঙ্গাসা করলে শুধু হ‍্যা বা নাতে উওর দেয়।যেই বাড়িটা সাড়াদিন দুই ভাইবোনের খুনশুটিতে মেতে থাকত,,, সেই বাড়িটা এখন শান্তপুরি হয়ে গেছে,,,,যেনো এখানে কোনো মানুষ থাকে না ।মিহির তার মা বাবার সাথে এখনো কোনো কথা বলেনি।দুই ভাই বোন দুই রুমে পরে থাকে,,,,মিহির শুধু মাঝে মাঝে মেঘের সাথে কথা বলে,,,,বোনকে খায়িয়ে দেয়,,,চুল বেধে দেয়,,, ঘুম পরিয়ে দেয়,,জোকস বলে হাসানোর চেষ্টা করে। কিন্তু এখন জোকস শুনে মেঘের আর হাসি পায় না,,,সাড়াক্ষন মুখটা মলিন করে বসে থাকে ।মিহিরও হাল ছাড়ার পাএ না সে রোজ নতুন নতুন উপায় খোজে মেঘের মোন ভালো করার জন‍্য।মিরা রহমান এসব ভেবে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।তারপর আজম রহমান কে জিঙ্গেস করলেন

“আমরা ঢাকা যাচ্ছি কবে?”

“আর তিন দিন পর।ওদিকে সব ব‍্যবস্থা হয়ে গেছে। বিজনেস শিফট করে ফেলেছি,,,বাড়ির ডেকরেশনের কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলেছি,,,, সব ফার্নিচার কেনা হয়ে গেছে,,,,,মেঘের কলেজে এডমিশনও হয়ে গেছে,,,,মিহিরের টিসি নিয়ে নিয়েছি ওখানে গিয়েই ভর্তি করে দিব,,,,এই বাড়িটার জন‍্য নতুন ভাড়টেও পেয়ে গেছি ,,আমরা গেলেই ভারাটে উঠবে।(এক দমে কথা গুলো বলল আজম রহমান।)”

মিরা রহমান শান্ত গলায় জিঙ্গেস করলো

“সবাইকে কবে বলবে যে আমরা চলে যাচ্ছি?”

“মেঘ আর মিহির আজ রাতে রাতে বলে দেব। আর বাকিদের যাওয়ার সময় বলে দিলেই হবে। আর যদি নাও বলি তাহলেও মনেহয় না কারো কোনো কিছু আসবে যাবে।”

ব‍্যালকনির ফ্লোরে শুয়ে আছে মেঘ।মিহির এসে আস্তে করে ডাকে

“মেঘ বুড়ি।”…..

মিহিরের ডাকে মেঘ উঠে দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে বসে,,,,মিহির মেঘের পাশে বসে বলে

“রেডি হয়ে নে,,, আমরা বেরোবো।”

মেঘ ভাঙা গলায় বলে

“আমি কোথায়ও যাবো না।”

” ঘুরতে যাচ্ছি না,,, হযরত শাহাজালাল মাঝারে যাব,,,,, তারাতারি রেডি হয়ে নিচে আয় আমি অপেক্ষা করছি।”

মেঘ আর কিছু বললো না,,,সে জানে তার ভাই তার মন ভালো করার চেষ্টা করছে,,,,আর মাঝারের নাম শুনে আর মানা করতে পারল না,,,হয়ত সেখানে গেলে মনটা কিছুটা হলেও ভালো হবে।

গাড়িতে বসে আছে মেঘ এবং মিহির।মিহির ড্রাইভিং করছে,,,আর তার পাশের সিটে মেঘ বসে আছে,,,,গাড়ি চলছে তার আপন গতিতে,,,ঠটাৎ করে মিহির ব্রেক করল,,,আচমকা ব্রেক করায় মেঘ চমকে তাকালো ভাইয়ের মুখের দিকে। মিহির বললো

“বনু আইসক্রিম খাবি?”

মেঘ বিরক্তি নিয়ে বললো

” না আমার এখন আইসক্রিম খেতে ইচ্ছে করছে না।”

” ইচ্ছে করছে না মানে কি? তোর না আইসক্রিম অনেক পছন্দ,,,, একটু বস এখনি নিয়ে আসছি।”

মেঘকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে মিহির গাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল।মেঘ নিজের ফোনের ঘড়িতে একবার টাইম টা দেখে নিল4 :35 P.m.বাজে।তারপর মিহির এখনও আসছে না দেখে গাড়ি থেকে নেমে দাড়ালো,,, দেখলো এটা একটা ছোট মার্কেট ,,, এখানে মেঘ আগে অনেক বার এসেছে ,,, এখানের প্রায় সবাই মেঘকে চিনে,,, তাই সে আর সামনে গেল না,,,কেউ ওকে দেখলেই আবার কথা শোনাবে। তাই চুপচাপ গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে ফোন স্ক্রল করতে লাগল।

মেঘনা বেবি……

কারো ডাকে ফোন থেকে চোখ তুলে সামনে তাকালো মেঘ।আর সামনে তাকাতেই সে চমকে উঠল,,,,ভীষন ভয় পেয়ে গেল সে,,,,তার সামনে সাত জন ছেলে দাড়িয়ে আছে,,,,এদের খুব ভালো করে চেনে মেঘনা,,,,এরা এই এলাকার নামকরা বখাটে ছেলে,,,,মেঘকে একবার টিজ করেছিল এরা,,,,আর সেটা জানতে পারে মিহির,,,তারপর মিহির ও তার বন্ধুরা মিলে এদের খুব মেরেছিল পুরো কলেজের সামনে।এদের দলের লিডার হলো রাকিব,,,,ওর বাবা একজন পলিটিশিয়ান,,,তাই এদের যতবার পুলিশ ধরে নিয়ে যায় ততবারই ওর বাবা ওদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসে।ওদের মধ‍্যে একজন বলল

‘আরে ভাই এত‍ো মেঘ না চাইতেই বিষ্টি,,,,পাখি নিজে আমাদের খাচায় ধরা দিতে এসেছে,,,বলেই একটা বিশ্রি হাসি দিল।”

মেঘ এদের দেখে ভিষন ঘাবরে গেল,,,,তারিতারি করে গাড়ির দরজা খোলার চেষ্টা করল,,,কিন্ত বিপদ যখন আসে সব জায়গা দিয়েই আসে,,,গারির দরজা অটো লক হয়ে গেছে,,,গাড়ির চাবি মিহিরের কাছে,,,কয়েক বার জোরে টানাটানি করতেও দরজা খুলল না।এবার মেঘ কোনো উপায় না পেয়ে জোরে এক দৌড় দিল,,,তখনই রাকিব ল‍্যাং মারল আর মেঘ উপুর হয়ে ধরাম করে মাটিতে পরে গেল।তারপর রাকিব তাকে নিচ থেকে টেনে তুলল মেঘকে আর বললো

“আমার হাত থেকে পালানো এত সোজা না বেবি। ”

কথাটা বলতেই রকিবের নাকের উপর কেউ জোরে ঘুসি মারে।রাকিব মাটিতে পড়ে যায়।মেঘ দেখে মিহির দাড়িয়ে আছে,,,দূরে আইচক্রিম গুলো মাটিতে পরে আছে।মিহির মেঘকে জিঙ্গেস করল
“ঠিক আছিস?”

মেঘ মাথা নাড়িয়ে হ‍্যা সূচক উওর দিল।
ততক্ষণে এখানে লোকজনের ভিড় জমা হয়ে গেল,,,সবাই দাড়িয়ে দাড়িয়ে ফ্রিতে তামাশা দেখছে।

“মিহির রাকিবের কলার ধরে দার করিয়ে বলল তোর সাহস হয় কিকরে আমার বোনকে ছোয়ার।”

রাকিবের কলার ধরায় সে ভিষন রেগে গেল।এক ঝটকায় মিহিরের হাত থেকে নিজের কলার ছারিয়ে,,,কোমর থেকে পিস্তল বের করে মেঘের দিকে পয়েন্ট করে,,,তারপর বলে

“হয় তোর বোনকে আমাদের সাথে যেতে দিবি নাহয় ওকে এখানেই গুলি করে দেব।”

ঘটনার আকষ্মিকতায় মিহির চমকে উঠলো ,,,,মেঘ এবার শব্দ করে কেদে দিল।মিহির কোনো কিছু না ভেবেই,,,রাকিবের থেকে পিস্তল টা নেওয়ার জন‍্য টানাটানি করতে লাগল,,,একপর্যায়ে ওদের দুজনের মধ্যে পিস্তলটা নিয়ে ধস্তাধস্তি শুরু হল,,,,,তারপর খুব জোরে বিকট একটা আওয়াজ হলো।আর মিহির দুই পা পিছিয়ে গিয়ে ধুপ করে মাটিতে পড়ে গেল,,,মেঘ ভাইয়া বলে জোরে চিৎকার দিল,,,মিহিরের বুকে গুলি লেগেছে,,,গলগল করে রক্ত বের হচ্ছে।এটা দেখে রাকিব ভয় পেয়ে যায়,,,আর তার দলবল নিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।মেঘ দৌড়ে মিহিরের কাছে গিয়ে,,, মাটিতে বসে মিহিরের মাথাটা ওর কোলের উপর রেখে চিৎকার করে কাদছে,,,,তার কান্না দেখে ওখানে উপস্থিত থাকা সবার চোখ থেকে পানি পরছে।মেঘের মনে হচ্ছে কেউ ওর কলিজাটা টেনে ছিরে ফেলেছে,,, এখন তার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে,,আল্লাহ তুমি আমায় নিয়ে নাও আমার ভাইটাকে বাচিয়ে দাও প্লিজ,,, আমার ভাইয়ার কিছু হয়ে গেলে আমিও বাচবো না আল্লাহ্।কিন্তু বলতে পারছে না ।গলা দিয়ে কোনো কথাই বের হচ্ছে না।

হাসপাতালের ফ্লোরে বসে একধ‍্যানে ওটির দিকে তাকিয়ে আছে মেঘ,,,তার আশেপাশে কি হচ্ছে সেদিকে তার কোনো খেয়াল নেই,,, দেখে মনে হচ্ছে যেন জীবন্ত লাশ হয়ে গেছে।সারা গায়ে রক্ত লেগে আছে।চোখের পানিগুলো
গালে শুকিয়ে গেছে,,,কাদতে কাদতে চোখদুটো লাল হয়ে গেছে,,,মাথার চুলগুলো এলোমেলো হয়ে আছে।
মিরা রহমান এবং আজম রহমান পাশের সিটে বসে কাদছেন,,,তাদের পাশে বসে আছেন শিহাব রহমান ও তার স্ত্রী সাথি রহমান।

আসলে তখন র্মাকেটের কিছু লোক মিহিরকে ধরে হাসপাতালে নিয়ে আসে।ওখানের প্রায় সবাই আজম রহমান কে চিনে উনি সিলেটের একজন নামকরা বিজনেস ম‍্যান। মিহির আর মেঘকে দেখে ওখানকার অনেকেই চিনতে পারল,,,
দুইজন লোক দ্রুত আজম রহমানের বাড়িতে গিয়ে সবটা খুলে বলে,,,সেখানে শিহাব রহমান এবং সাথী রহমানও ছিল ,,,,সবটা শুনে তারা দেরি না করে দ্রুত এখানে চলে আসে।
এই বিষয় পরিবারের বাকিরা কিছুই জানেন না।আজম রহমান নিজে ইচ্ছে করেই তার অন্য ভাইবোনদের কিছু বলেননি,,,আর শিহাব রহমানকে কিছু বলতে দেননি।
ওটির দরজা খুলে ডাক্তার বের হয়ে এলো,,,ওনারা সবাই গিয়ে ডাক্তারের সামনে দাড়ালো,,,মেঘ ফ্লোর থেকে দাঁড়িয়ে ডাক্তারের দিকে এগিয়ে গেল।

আজম রহমান কাপাকাপা কন্ঠে জিঙ্গেস করল

“আমার ছেলের কি অবস্থা ডাক্তার?”

আমরা রক্ত পড়া বন্ধ করতে পেরেছি,,, but I’m sorry to say Mr Ajom.আমরা ওনার অপারেশন টা করতে পারবো না।বুলেট টা ওনার বুকের হাড্ডি থেকে একটু নিচে লেগেছে।অপারেশনটা করতে একজন দক্ষ সার্জেন লাগবে।আমাদের এখানে ভালো কোনো সার্জেন নেই।তাই আপনারা যত দ্রুত সম্ভব ওনাকে ঢাকায় নিয়ে যান।তাছাড়া ওনার বাচার চান্স খুবই কম,,, এখানে আমরা কেউ রিক্স নিতে চাইছি না।
বলেই ডাক্তার ওটির মধ্যে চলে গেল।
মেঘের মাথা টা ঘুরিয়ে উঠল ,,,, তার কানে শুধু ডাক্তারের বলা শেষ কথাগুলো বাজছে।চোখের সামনে মিহিরের রক্তাক্ত শরীরটা ভেষে উঠল,,,মেঘ আর দারিয়ে থাকতে পারলো না,,, মাথাটা ঘুরে ফ্লোরে পড়ে গেল।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here