বিষাক্তময় আসক্তি – পর্ব ১০

0
781

বিষাক্তময় আসক্তি (The Villain😈)
Sumaiya Akter Mim
পর্ব ১০………..🌼

চেঞ্জিং রুমের সামনে একপাশে দাঁড়িয়ে কাঁপছে আয়ানা, ভয়ে সারা শরীরের পশম গুলো দাঁড়িয়ে গেছে এতো ভয় জিবনে ও পায়- নি সে।কান্না করতে করতে পাশের স্লেফ ধরে বসে পরে ।দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে কান্না করছে।সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে তার।
তার কিছুটা সামনে ইরফান যে একটা চেয়ারে বসে আছে এক পা উপরে এক পা নিচে কিছুটা স্টাইল করে বসে আছে ।তার তিক্ষন্য দৃষ্টি আয়ানার উপরে।। সবসময়ের মতো কালো ঠোঁট দুটোই ঝুলে আছে হাজার মেয়েকে ঘায়েল করার মতো বাঁকা হাসি।।

“রক্তে টইটই করছে সাদা ফ্লোরটা,আর ওই রক্তের টইটই ফোটা গুলা গভীর স্রোতে পরিনত হচ্ছে।।আর এই রক্তের স্রোত আয়ানার শরীরের ছুঁইছুঁই হতে দেখে ইরফান লাফ দিয়ে উঠে আয়ানাকে ওইখান থেকে সরিয়ে নিয়ে আসে।।আয়ানা বারবার নেতিয়ে পরেছে দেখে ইরফান শক্ত করে ধরে আয়ানাকে বুকে জরিয়ে নেয়।আর আয়ানা তো এখনো ট্রমা থেকে বের হতে পারেনি সে অচেতন ব্যাক্তির মতো ইরফানের গায়ের সাথে লেপ্টে আছে।।”

“ইশ একটুর জন্য ওই জানোয়ারের রক্ত তোমার গায়ে লেগে যেতো । তোমার গায়ে এই জানোয়ার ফকিরের রক্ত লাগতে দিবো না বলে আয়ানার মুখটা সামনে এনে চুমো খেয়ে আবার বলতে থাকে ; তোমার শরীর শুধু আমার প্রত্যেক অঙ্গ ভঙ্গি প্রকাশ করবে আর কারোর না। তুমি শুনছো তুমি কিছুটা ঝাঁকিয়ে সম্পূর্ণ টা আমার ! আমার একদম সহ্য হয় না তোমার শরীর কেউ র্টাচ করলে! আমার রাগে মাথা ফেটে যায় দাঁতে দাঁত চেপে বললো।।”

ইরফানের কথায় আবার ঢুকরে কেঁদে ওঠে আয়ানা , ভয়ে শরীর কেঁপে উঠছে তার, কথা বলার একদম শক্তি নেই।।

কোন হাতে র্টাচ করেছে বলে শক্ত করে আয়ানার হাত চেপে ধরে ইরফান। তারপর সারা হাতে চুমু তে ভরিয়ে দেয় ইরফান।। ইরফানের কান্ডে আরো ভয় পেতে থাকে আয়ানা যতো নিজেকে শান্ত করছে ততো ভয় বেড়ে যাচ্ছে।। ইরফানের চুমুর গতি আস্তে আস্তে বেরে যাচ্ছে।সে যেই জায়গায় র্টাচ লেগেছে সেই জায়গায় কামড় দিলো এতে করে ব্যাথায় আয়ানা চোখ খিচে বন্ধ করে ফেলল ঠোঁট দিয়ে কান্না আটকানোর চেষ্টা করছে।

” ইরফান আস্তে একটা কামড় দিয়ে আবার ও ডিপলি কিস করেছে আয়ানার হাতে।। তাঁর জানকে সে ব্যাথা দিবে না এতে করে সে দ্বিগুণ কষ্ট পায়।। আয়ানার হাতে চুমু দিয়ে আয়ানাকে জরিয়ে দরে আর বার বার সরি বলছে।।।”

হ্যা খুবই হাস্যকর যে ইরফান ভুল করলে শাস্তি হিসাবে মৃত্যু দেয় ।যে ভুল করে ও না আর করলে কখনো ক্ষমাও চায় না ; সে আজ সেকেন্ডে সেকেন্ডে ক্ষমা চাইছে তার ভালোবাসার মানুষটির কাছে।।
হুম এমনই হয় ভালোবাসা , অতিরিক্ত পাগলামো দেওয়ানাপানা আর বিষাক্ত।।। ইরফানের ভালোবাসা ও এমন।।।

আয়ানা খুব করে বুঝতে পারছে এই মানুষটা পাগল তার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য তাকে পাওয়ার জন্য কিন্তু এই বিষাক্ত অতিরিক্ত দেওয়ানা পানা ভালোবাসা সে সহ্য করতে পারবে না!এই নেশা এই বিষাক্ত প্রেম তাকে প্রতিনিয়ত শেষ করে দেবে।। নিজেকে হারিয়ে ফেলবে অন্ধকার।। এটা তাঁর কাছে ভালোবাসা মনে হচ্ছে না তার কাছে এটা বিষাক্ত ছোবল যা তার জীবন থেকে নিজ বলতে কিছু থাকবে না।।

কিছুক্ষণ আগে******
চেঞ্জিং রুম থেকে চেঞ্জ করার পর আয়ানা বের হয়ে দেখল যে বাহিরে কোথাও ইরফান ও তার বডিগার্ড রা নেই।। শুধু ইরফান ও তার বডি গার্ড নয় এই ফ্লোরে অবস্থিত যে কিছু মানুষ ছিল তারা ও কেউ নেই।। তা দেখে ভয় পেয়ে গেলো আয়ানা ! এত অল্প সময়ের মধ্যে সবাই কোথায় চলে গেল সে বুঝতে পারছে না! এটা দেখে দিশেহারা হয়ে আয়ানা সামনের দিকে পা বাড়াতে কোথায় থেকে একটা লোক এসে তার সামনে দাড়ালো।। লোকটিকে এভাবে হঠাৎ করে আসতে দেখেকে কিছুটা চমকে গেল আয়ানা সে কিছুটা পিছিয়ে গেল , সে দেখলো লোকটির মুখে ছিল অদ্ভুত এক হাসি।।

বাহ একদম ফুলপরীর মতো দেখতে তো মাইরি, আজকে আমার কপাল খুলে গেছে এত সুন্দর মেয়ে দেখে।। কী নাম গো তোমার সুন্দুরী??

লোকটির কথা শুনে কিছুটা ভয় পেয়ে গেল আয়ানা আয়ানাকে ভয় পেতে দেখে লোকটি আবার বলতে লাগলো ;;;

“আরেহ এমন ভয় পাচ্ছ কেন আমাকে দেখে কিছুটা কাছে এসে। আমি কি তোমাকে কিছু করব নাকি আমি তো তোমাকে আমার সাথে আমার বাসায় নিয়ে যাব তোমার মত এত সুন্দর পুতুল কে সাজিয়ে রাখতে হবে না নাকি ‌ বলে হাত ধরে টান দিলো।।”

আয়ানার ভয়ে এখন চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে , এটা আবার কোন পাগলের আমদানি হলো!এক পাগলের ভাত নাই আরেক পাগল আসছে।। এটা ভেবে তার বেশি ভয় লাগছে ইরফান দেখতে পারলে লোকটার সাথে সাথে তাকে ও মেরে ফেলবে ।।

“আরেহ ডিয়ার ভয় পাচ্ছো কেনো আমি কি তোমাকে মেরে ফেলবো নাকি আমি তো তোমাকে প্রথম দেখায় ভালোবেসে ফেলেছি যাকে বলে লাভ এট ফাস্ট সাইড।।
লোকটার কথায় আয়ানা লোকটার দিকে তাকায়,
লোকটির কথা গুলো কেমন পাগলের মতো শুনাচ্ছে ভয়ে ব্যাথায় কান্নার পরিমান টা এখন বেরে গেছে তার।লোকটা আবার বলতে লাগলো ,,

“জানো লোক আমাকে কি বলে!সাইকো নীড় বলে।এই পযন্ত আমি বিশটা দর্শন করেছি আর নয়টা খুন করেছি বলে পাগলের মতো হাসতে লাগলো।।”

লোকটার কথা শুনে আয়ানা এবার থরথর করে কাঁপছে।কী বলছে এই সব ? সকল বিপদ কী একবারে আসার ছিল।। এইরকম পরিস্থিতি এই নতুন নতুন পরছে আয়ানা,এর আগে কখনো এমন ঝামেলায় পরেনি। হয়তোবা পরতো কিন্তু কখনো আগে নিজর বাসার বাহিরে বের হয়নি।আর যখন বের হতো তার পাশে তার আব্বি ছিল এখন তো তার আব্বির ও কিছু করার নেই ওই ভিলেনের বিরুদ্ধে যাওয়ার, কিন্তু এখন তাকে কে বাঁচাবে এই সাইকো নীড় এর হাত থেকে।।

“হঠাৎ করে নীড় এর হাত আয়ানার গাল বরাবর আসতে দেখে মাথাটা পিছুবে এমন সময় কেউ ধারালো ছুরি ছুরে মারে একদম নীড়ের হাত বরাবর।এতে করে নীড়ের হাত ছিটকে পড়ে কাপড়ের স্টলের নিচে!তা দেখে আয়ানা জোরে চিৎকার দিয়ে দূরে সরে যায়,আর নীড় মাটিতে পড়ে জোরে জোরে চিৎকার করতে থাকে।।
নীড়কে চারিদিক থেকে ইরফানের গার্ডরা ঘিরে ফেলেছে। একজন এসে টেনে সোজা করে বসিয়ে দে।।। ইরফান এতক্ষণ ঝড় আসার পূর্বাভাস এর মত অপেক্ষা করছিল।। এতক্ষণ সে সব দাঁতে দাঁত খিঁচে সহ্য করে যাচ্ছিল কিন্তু এখন আর না।।

“আয়ানা চেঞ্জিং রুমে যাওয়ার পর ইরফান তার গার্ডদের বলে সারা ফ্লোরের লোকদেরকে বের করে দেয় তারপর অপেক্ষায় থাকে কখন আয়ানা চেঞ্জিং রুম থেকে বের হবে।।

ইরফান নীড়ের সামনে এক হাঁটু বর করে বসে তার মাথার চুল গুলো কে টেনে ধরে ।।

“তোর সাহসের তারিফ করতে হয় ইরফান খানের জানে হাত দিয়েছিস। আবার তাকে ছুঁয়ে দিতে চাস তোর এতো বড় কলিজা!আমি আজ তোকে শেষ করে দেবো বলে জোরে চিৎকার করে নীড়ের অন্য হাত টা যেটা আয়ানাকে স্পর্শ করেছে সেটা কেটে ফেলে।।

আহ্হ্হ্আহ্হ্হ্ করে জোরে আর্তনাদ করে লুটিয়ে পড়ে লোকটা আর অন্য দিকে এই নিম্ম হত্যা দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে না পেরে দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে জোর জোর চিৎকার করছে আয়ানা ! নিজেকে লুকিয়ে রাখার বৃথা চেষ্টা করছে সে ।।

ইরফান গিয়ে। আয়ানাকে টেনে সামনে আনে তার আর দাঁতে দাঁত চেপে বলতে লাগে;;

কান্না কেন করছিলে ওকে মারতে দেখে কষ্ট হচ্ছে নীড় কে দেখিয়ে।।
আজকে তো ওকে আমি মেরে ফেলবো ওর সহস কি করে হয় তোমাকে র্টাচ করার জোরে চিৎকার করে বলে।

“ইরফানের চিৎকার শুনে আয়ানা ভয়ে ইরফানকে জরিয়ে ধরে।। এতে করে ক্ষনিকের মধ্যে শান্ত হয়ে যায়।। ইরফানের মুখে রাগ উদাও হয়ে একচিলতে হাসি ফুটে উঠে।।।”

আয়ানা ভয়ে ইরফানকে জরিয়ে ধরেছে এটা তার বোধগম্য হচ্ছে না সে ভয়ে কি করছে সে যানে না। কিন্তু এই ভয় দূর করতে যেখানে তাঁর সবচেয়ে বেশি ভয় তাঁর বুকে আশ্রয় নিয়েছে।।।

ইরফান আয়ানাকে জরিয়ে ধরে ,আয়ানার কপালে গভীর ভাবে চুমু খেয়ে আয়ানাকে আবার জরিয়ে ধরে। আয়ানা এখনো থরথর করে কাঁপছে। ইরফান আয়ানাকে নিজের সামনে দাঁড় করিয়ে আয়ানার গালে হাত রেখে বলে,,,

“কী হয়েছে আয়ু জান ভয় পেয়েছো?ভয় পেয়ো না মেরি জান আমি আছি তো! তোমাকে কেউ কিছু করবে না। আমি সবসময় আমার বুকের ভেতর তোমাকে আগলে রাখবো বলে হাতে চুমু খেতে যায় এমন সময় দেখতে পায় আয়ানার ফর্শা হাতে আঙ্গুলের ছাপ উঠে গেছে তা দেখে আবার মুখের রং পরিবর্তন হয়ে হিংস্রতা ফুটে ওঠে।। ইরফান গার্ডদের দিকে তাকিয়ে জোরে চিৎকার করে বলে উঠলো,,

এই জানোয়ারটাকে মারতে থাক যতোক্ষন না এর মৃত্যু হয় বলে পাশের কাপড়ের স্টেনে জোড়ে লাথি মারে! তারপর আবার আয়ানার গাল ধরে সারা মুখে চুমু দিতে থাকে পাগলের মতো।। মনে হচ্ছে একটুর জন্য আয়ানাকে হারিয়ে ফেলছিলো সে।।

নীড়কে মেরে আধমরা করে ফেলেছে সারা শরীর ফ্লোরে রক্ত ভেসে যাচ্ছে।তা দেখে আয়ানা কান্না করতে করতে বলল,,,,,,,,,

“প্লি -প্লিজ ওনাকে ছেড়ে দেন ওনি মারা যাবে।আয়ানা কান্না করতে করতে বলে। ইরফান আয়ানাকে সামনের দিকে ঘুরিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল ্্্্্্

নোপ জান একদমই ছাড়া যাবে না , তোমাকে ছোঁয়ার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।।কী বলেছিল তোমাকে নিয়ে যাবে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে যাবে এর এতো সাহস একে তো মরতেই হবে বাঁকা হেসে আয়ানার ঘারে চুমু খেয়ে ঘারে নাক ঘসে।।আর আয়ানা নিজেকে আর আটকাতে পারছে না একটু পর পর নেতিয়ে যাচ্ছে আর ইরফান তো আয়ানাতে মজে আছে !একটু পর পর ছোট ছোট চুমু খাচ্ছে গারে।। তারপর আয়ানাকে ছেরে দিয়ে নীড়ের কাছে যায়।।নীড়ের অবস্থা খুব খারাপ শ্বাস খু খুব ধীরে ধীরে চলছে।। ইরফান নীড়কে ধরে নিজের সাথে উল্টো ভাবে চেপে ধরে গানের শুরে বলতে থাকে।।

“তোররররর মরনের পাখনা গজেছে !! এখন তোকে কে বাঁচাবে।। আমার জানের দিকে বারন্ত তোর জান আমি কেড়ে নিবো 😊 বলে গলার নিচে জ্বকজ্বকা ছুরিটা চালিয়ে দেয় আর নীড় ছটপটাতে থাকে নিজের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার জন্য।।

আয়ানা সেই দৃশ্য দেখে ফ্লোরে ধপ করে বসে পরে , মুখে হাত দিয়ে কান্না আটকানোর বৃথা চেষ্টা করছে।আর ইরফান সে তো আরাম করে চেয়ারে বসে সেই মনোরম দৃশ্য দেখছে।।।

বর্তমানে ইরফান আয়ানাকে ছেড়ে কুলে তুলে নেয় তারপর বাঁকা হেসে আয়ানার মাথাটা বুকের সাথে চেপে ধরে সামনের দিকে পা বাড়ায়।। আজকে তার জানের উপর অনেক বড় ঝড় গেছে সাথে তার মনে ও দুটোকে শান্ত করতে হবে তাও আবার তার ভাষায় ভেবে আয়ানার কপালে চুমু দেয়।।।

To be continued……………🌼
(আজকে দিবো না ভেবেছিলাম তাও দিলাম 🙄 খুব শীঘ্রই আপনাদের ইরফান আর আয়ানার বিয়ের ইনভিটেসনে কার্ড দেবো, সবাই বিয়েতে আসার সময় আমার জন্য গিফট নিয়ে আইসো কেমন😌😌)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here