বিষাক্তময় আসক্তি – পর্ব ৩৬

0
1087

#বিষাক্তময়_আসক্তি (The Villain 😈)
#Sumaiya_Akter_Mim
#পর্ব_৩৬………….🌼

“টুপটুপ করে রক্তে লাল হয়ে গিয়েছে সাদা রঙের উরনাটার অনেক অংশ।।‌লাল রক্তের ফোঁটা গুলো গলা বেয়ে টপটপ করে নিচে পরছে।।। কাঁপা কাঁপা ঠোঁট দুটো উঁচিয়ে কিছু বলার অধম চেষ্টা করছে আয়ানা কিন্তু কথা গুলো যেনো ভেতরেই দলাপাকিয়ে যাচ্ছে তাঁর।।।ভয়ে শরীর থরথর করে কাঁপছে, কপালের চুল গুলো লেপ্টে আছে ঘামে।।ডাগর ডাগর চোখ দুটো চিকচিক করছে পানিতে সেই অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকিয়ে আছে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটির দিকে।।।। তাঁর বিশ্বাস সামনের ব্যাক্তিটি তাকে কিছু হতে দিবে না কারন সে যে কথা দিয়েছে তাকে আগলিয়ে রাখবে আর তাঁর সম্পূর্ণ আস্থা আছে সে থাকতে তাঁর কিছুই হবে না তাই তাঁর দিকে তাকিয়ে নিজেকে শান্ত করছে।।।কেউ তাকে বাঁচাতে পারবে না সে ব্যতিত এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি তাকে বিশ্বাস হচ্ছে ইচ্ছে করছে ছোটে তাঁর কাছে চলে যেতে তাঁর বুকে লেপ্টে থাকতে একমাত্র ওইটাই তাঁর নিরাপদ জায়গা ওইটা তাঁর শেষ নীর।।।।”

“সারা বাড়ি জোরে পিন ডপ আওয়াজ নেই! থমথমে পরিবেশ সবার মুখে আতংকের ছাপ।।থরথর করে কাঁপছে সবাই সবার ভয়টা কোথায় তা ইরফানের চোখ মুখ দেখলে আন্দাজ করা যায়।।।আয়ানার গলায় ছুরি ধরা ব্যাক্তিটি ইরফানের দিকে তাকিয়ে ভয়ে কাঁপতে লাগলো ঠিক ভাবে ছুরি ধরতে না পারায় আর ভয়ে আয়ানাকে নিয়ে এদিক ওদিক যাওয়ায় দাঁড়ালো ছুরির আঘাতে আয়ানার গলার উপরের পাতলা চামড়া ছিঁড়ে রক্ত পড়ছে তাঁর সেই ক্ষত স্থানের দিকে স্থীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ইরফান।।।।

“সাদা মুখটা রক্তের ন্যায় লাল হয়ে আছে,চোখ দুটোতে যেনো আগুনের লাভা বের হচ্ছে।। দাঁত খিচে শান্ত ভাবে তাকিয়ে আছে তাঁর প্রেয়সীর দিকে।। তাঁর প্রেয়সীর বড় বড় চোখ দুটোর দিকে একবার ও তাকায় নি সে তাঁর নজর তাঁর প্রেয়সীর গলায় বেয়ে পরা রক্তের উপর স্থির।। কপালে তাঁর ও বিন্দু বিন্দু ঘাম মুখে কোথাও ভয়ের ছাপ নেই কিন্তু তাঁর প্রেয়সী ঠিক বুঝতে পারছে তাঁর এরোগেন্ট ম্যান কতোটা ভয়ে আছে।। দ্যা ইরফান খান ভয় পাচ্ছে তা দেখলে সবাই হাসবে কারন এই কঠিন মনের মানব কখনো ভয় পায়নি কারণ তাঁর এতো দিন হারানোর মতো কিছু ছিল না। মানুষ তখন ভয় পায় যখন তাঁর কিছু প্রিয় জিনিস হারানোর আশঙ্কা থাকে।। ইরফানের এতো দিন ছিল না তাই ভয় ও ছিল না কিন্তু এখন! এখন সম্পূর্ণ আলাদা এখন তাঁর ভয় আছে কারণ তাঁর প্রান ভোমরা আছে। তাঁর আসক্তি তাঁর বেঁচে থাকার , প্রান খুলে শ্বাস নেওয়ার তাঁর জান তাঁর পিচ্চি পরী যাকে হারানোর ভয় তাকে পাথর থেকে পানি করে দেয় তাকে দুমরে মুচড়ে শেষ করে দেয়।। তাঁর ভয় আছে,তাঁর জানকে হারানোর ভয়।।।
আয়ানার শরীরে এক ফোঁটা রক্ত এক ফোঁটা চোখের জল তাঁর ভেতরটাকে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলছে মনে হচ্ছে কেউ ধীরেসুস্থে তাঁর কলিজা পিস্ পিস্ করে কাটছে।। হাজার কষ্ট সে সাদরে গ্রহণ করতে পারবে কিন্তু তাঁর জানের বিন্দুমাত্র কষ্ট সে সহ্য করতে পারবে না।।।।।। ইরফানের শান্ত মুখে হিংস্রতা আভা ছড়িয়ে পড়েছে তাঁর এই হিংস্র রূপ কারোর জন্য ভালো নয় তা দেখে সবাই এই ঠান্ডায় ও ঘামতে লাগলো।।।

—-“কিছুক্ষণ আগে”,বাড়ির ভেতরে সব গার্ডদের আসতে দেখে আয়ানা সাফিয়া সবাই ভরকে যায়।।সারা বাড়ির র্সাভেন্ট মানুষ জন হলরুমে ভির জমিয়ে ফেলেছে।এসব দেখে বাগান থেকে তাড়াহুড়ো করে হলরুমে প্রবেশ করেন আসফিয়া খান সবাইকে এক জোট হয়ে এখানে দেখে তিনি ও ঘাবড়ে যান। তিনি তাড়াতাড়ি করে আয়ানার কাছে যাবে তাঁর আগে শিড়ি বেয়ে দৌড়ে একটি লোককে নিচে নামতে দেখে সবাই তাঁর দিকে তাকালো।লোকটার পেছন পেছন আরো কিছু গার্ড আসছে এমন হট্টগোল দেখে সবাই ভয় পেয়ে যায়। অপরিচিত লোকটি নিচে নেমে এতো গার্ড দেখে ভয়ে উন্মাদের মত এদিক ওদিক দৌড়াচ্ছে তাঁর এমন পাগলামো দেখে আয়ানা ভয়ে সাফিয়ার হাত শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।। লোকটি এদিক সেদিক ঘুরে আয়ানাকে দেখতে পেয়ে দৌড়ে তাঁর কাছে গিয়ে নিজের পকেট থেকে ছোট দাঁড়ালো ছুরিটা বের করে আয়ানার হাত ধরে জোরে টান মেরে এক হাত উল্টো দিকে ঘুরিয়ে আয়ানার গলায় ছুরি চেপে ধরে।।। চোখের পলকে এমন কিছু হয়ে যাবে কেউ ভাবতেও পারেনি।। সবাই আতকে তাকিয়ে আছে।।।

ইরফান নিচে এসে আয়ানাকে এমন অবস্থায় দেখে মাথা খারাপ হয়ে গেছে। হার্টবিট খুব দ্রুত চলছে মনে হচ্ছে তাঁর ভেতরে কেউ ছুরি দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে দিচ্ছে।।রাগে তাঁর মাথা ফেটে যাচ্ছে।। কয়েকজন গার্ড গোল হয়ে লোকটিকে ধরতে যাবে তাঁর আগে লোকটি ভয়ে আয়ানাকে সহ এদিক ওদিক ছুটতে লাগলো আর বলতে লাগলো,,,,,,

—-একদম আমার কাছে কেউ আসবে না। তাহলে এর শরীর থেকে গলা আলাদা করে দিবো।।ভয়ে ভয়ে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে সে।‌ তাঁর কথা শুনে ভয়ে আয়ানা হুহু করে কেঁদে দেয়।। তাঁর চোখে পানি দেখে ইরফানের চোয়ালে শক্ত হয়ে উঠে ইরফান এক পা সামনে বাড়াতে লোকটি আবার চিৎকার করে বললো।
একদম সামনে আসবে না তাহলে কিন্তু আমি শেষ করে দিবো আয়ানার গলায় জোরে চাপ দিয়ে।। জোরে চাপ পরায় আয়ানা চোখ খিচে বন্ধ করে আবার কাঁদতে লাগলো তাঁর কান্নার আওয়াজ শুনে লোকটি আবার বললো, একদম চুপ নাহলে কিন্তু বলে আরো জোরে চাপ দেয় আয়ানা ঠোঁট কামড়ে কান্না আটকিয়ে রাখার বৃথা চেষ্টা করে।।আর অন্যদিকে ইরফান হাত মুষ্টিবদ্ধ করে চোখ বন্ধ করে ঘার একবার এদিকে তো আরেকবার ওইদিকে ঘুরিয়ে সামনের দিকে তাকায়।। তাঁর ভয়ংকর রূপ যে কেমন এখানের প্রত্যেকের জানা।।।লোকটা ইরফানের চোখ দেখে ভয়ে থরথর করে কাঁপছে আর তাঁর সাথে পাল্লা দিয়ে তাঁর ছুরি ধরা হাত ও কাঁপছে যার কারণে ছুরিটা আয়ানার গলায় বারবার আঘাত খাচ্ছে।।‌কেউ ইরফানের দিকে তাকিয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না সবাই সমান তালে থরথর করে কাঁপছে।।আয়ানার গলা থেকে চুঁইয়ে চুঁইয়ে রক্ত পরছে।।রক্তে লাল হয়ে যাচ্ছে শরীরে ছড়ানো সাদা উরনাটা।।ভয়ে এবং চিনচিন ব্যথায় সে কান্না করতে ভুলে গেছে।।। ইরফান এবার দাঁতে দাঁত চেপে সামনের দিকে এগুতে লাগলো লোকটা তাকে এগুতে দেখ দরজার দিকে আয়ানাকে নিয়ে যেতে নিলে গার্ডদের জন্য যেতে পারেনি তাই থেমে আবার জোরে ছুরি চাপ দিয়ে ধরে এতে করে আয়ানার বন্ধ চোখ দুটো বড় বড় হয়ে যায় এখন তাঁর শ্বাস নিতে ও কষ্ট হচ্ছে।।।এতো জোরে ধরায় সাফিয়া মুখে ধরে জোরে চিৎকার করে উঠল।। ইরফানের সামনে এগোনো পা দুটো থেমে গেছে চোখে তাঁর ভয়ের ছাপ।। এতোক্ষণে একটু জিভ দিয়ে ঠোঁট দুটো ভিজিয়ে নিলো।।।।

আসফিয়া খানের ফোন পেয়ে জরুরি বোর্ড মিটিং রেখে দৌড়ে হল রুমে প্রবেশ করলো ইমরান খান।। হলরুমে এমন পরিবেশ দেখে তাঁর ভিপি বেরে গেছে সে সামনে এসে লোকটাকে আয়ানাকে ছারার জন্য বলতে লোকটা বলে উঠলো,,,,

—-আমি আজকে মারা যাবো তা আমি জানি।।কেনো না আমার সাথে এই মেয়েটা ও মরে যাক।।কথা গুলো খুব তোতলিয়ে বললো লোকটি।।লোকটির কথা শুনে ইরফানের রগ গুলো রাগে ফুলে গেছে তাঁর ভেতর থেকে ফুস ফুস আওয়াজ আসছে।। সে মাথার চুল গুলো পেছনে মুচড়ে ধরলো।।। আজকে যদি এখানে আয়ানা না হতো আয়ানাকে না যদি হাতিয়ার বানাতো তাহলে এর (লোকটার) লাশের একটা টুকরা ও কেউ খুঁজে ও পেতো না।।। ইরফানকে একটা টু শব্দ পর্যন্ত করতে কেউ দেখে নি।সে একদম নীরব চোখে তাকিয়ে আছে আয়ানার রক্ত পরা গলার দিকে, চোখ দুটো পাথর হয়ে আছে একবার ও চোখের পলক পরেনি।।।

“বর্তমান”, লোকটি আয়ানাকে নিয়ে অন্যদিকে যেতে নিলে দেখতে পায় ইরফান বাঁকা হেসে ঘারের পেছনে হাত রেখে এদিক ওদিক ঘুরিয়ে তাঁর দিকে এগিয়ে আসছে তা দেখে লোকটি ভিতু গলায় বললো,,,

—-একদম না,একদম কাকছে আসবেন না তা-তাহলে আআমি কিন্তুও আর বলতে পারলো না তাঁর আগে ইরফান হাতে থাকা বন্দুকের গুলি ছুড়ে মারে লোকটার হাতে। লোকটা আহ্হ্হ্হ্ করে চিৎকার করে আয়ানাকে ছেড়ে নিচে পরে যায়।।।। সাথে সাথে গার্ডরা সবাই গোল হয়ে লোকটিকে ধরে ফেলে লোকটি ফ্লোরে পরে কাতরাতে লাগলো ইরফান তাঁর দিকে এগিয়ে আসতে যাবে আয়ানা দৌড়ে এসে ইরফানকে জরিয়ে ধরে।। ইরফান আর সামনে এগোলো না সে স্থির ভাবে দাঁড়িয়ে আছে।।আয়ানা ভিষন ভয় পেয়েছে ইরফান কে শক্ত করে জড়িয়ে হেঁচকি তুলে কান্না করতে লাগলো।।এই জায়গাটা তাঁর সবচেয়ে নিরাপদ এখানে সে সবসময় সুরক্ষিত।।আয়ানাকে দুহাতে আগলিয়ে নিলো ইরফান।।আয়ানার গালে হাত রেখে পাগলের মতো সারা মুখে চুমু খেলো আয়ানা চোখ বুজে নাক টানছে ইরফান আয়ানার চোখের পানি মুছে দিয়ে চোখের পাতায় চুমু খেয়ে আয়ানার গালে হাত রেখে আবেগি গলায় বললো,,,

—-হুস জান আমি আছি তো।এতো ভয় কেনো পাচ্ছো। আমি থাকতে আমার পিচ্চি পরী বউয়ের কিছু হতে দিবো না। তুমি ট্রাস করো তো আমাকে।।।
ইরফানের কথা শুনে আয়ানা উপর নিচ মাথা নাড়িয়ে সায় জানালো।। ইরফান আয়ানার কপালে চুমু খেয়ে আবার জরিয়ে ধরলো।।। ইরফান আয়ানাকে জরিয়ে ধরা অবস্থায় বুঝতে পারলো আয়ানার শরীর ঠান্ডা হয়ে আসছে।। ইরফান ঝটপট আয়ানাকে সোজা করে দেখতে লাগলো আয়ানার গলা বেয়ে এখনো ছিটাছিটা রক্ত পরছে তা দেখে আবারও তাঁর চোয়ালে শক্ত হয়ে গেলো চোখ দুটো রক্তের মতো লাল হয়ে আছে মনে হচ্ছে একটু পর সাদা চোখ দুটো দিয়ে রক্ত ছরে পরবে খুব ভয়ংকর লাগছে তাকে।।। ইরফান লোকটির কাছে যেতে নিবে তখনি আয়ানা ইরফানের হাত টেনে তাঁর বুকে মুখ গুছলো।।।। ইরফান বুঝতে পেরেছে আয়ানা তাকে কিছু করতে দিবে না তাই তাকে আটকাছে।। ইরফান আয়ানাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে, তাঁর ব্যাক সাইডে লোকটিকে ধরে রেখেছে গার্ডরা ইরফান চোখ দিয়ে ইশারা করে তাকে নিয়ে যেতে বলে, মুখে ছিল রহস্যময় হাসি যেই হাসিতে স্পষ্ট হিংস্রতা ফুটে উঠেছে।।। ইরফান বলতে গার্ডরা লোকটাকে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যায়,লোকটা গলা ফাটিয়ে ছুটার জন্য আর্তনাদ করতে লাগলো তাঁর দিকে তাকিয়ে ইরফান বাঁকা হেসে আয়ানার মাথায় চুমু খয়ে আয়ানাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।।।।।

“বাড়ির সবাই এখনো ভয়ে কাঁপছে।।আসল ঝড় উঠা এখনো বাকি সবাই ঘাম মুচছে আর ঢোকের উপর ঢোক গিলছে।। পরিবেশ খুব ঠান্ডা এই বুঝি ঝড় উঠলো।।ইসহাক ভয়ে সাফিয়ার শাড়ির আঁচল ধরে রেখেছে , সাফিয়া ও বারবার ঢোক গিলে নিজের শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাওয়া গলাটাকে ভিজানোর বৃথা চেষ্টা করছে।।আসফিয় আর ইমরান খান সামনে আসতে নিলে ইরফান এক হাত উঁচিয়ে কাছে আসতে না বলে তা দেখে তাঁরা ওইখানেই থেমে যায়।।।। ইরফান আয়ানাকে একটা সোফায় বসিয়ে দেয় তারপর তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পরে একজন গার্ড কে ইশারা করতে সে দৌড়ে গিয়ে একটা ফার্স্ট এইড বক্স আনে।। ইরফান আয়ানার হাত গলা সব জায়গায় ভালো ভাবে চ্যেক করছে আর কোথাও ব্যাথা পেয়েছে কিনা।।।গার্ড ফাস্ট এইড বক্স দিতে ইরফান মেডিসিন বের করে আয়ানার ক্ষত স্থান পরিষ্কার করতে লাগলো।।আয়ানা কাটা স্থানে ঔষধ লাগানোতে ব্যাথায় চোখ খিচে ইরফানের হাত শক্ত করে চেপে ধরলো।আয়ানার নখ ঢেবে গেছে হাতে তাতে বিন্দুমাত্র হুস নেই তাঁর সেই তো তাঁর জানের কষ্ট গুলো দেখছে।। ইরফান দাঁতে দাঁত চেপে নিজের রাগ দমানোর চেষ্টা করছে কিন্তু হচ্ছে না তাঁর চোখ লাল হয়ে চিকচিক পানি দেখা যাচ্ছে।। ইরফান আয়ানার গলায় ফু দিয়ে দিয়ে মেডিসিন লাগাচ্ছে আর বিরবির করে বলছে।

—-এর থেকে দ্বিগুণ কষ্ট পেতে হতে ,খুব বেশি কষ্ট পেতে হবে।ছাড়বো না! কিছুতে ছাড়বো না।।
ইরফানের বিরবির কথা গুলো আয়ানা শুনতে পারেনি সে শুধু চোখ বন্ধ করে ইরফানের হাতের স্পর্শ অনুভব করছে।।‌‌ইরফান মেডিসিন লাগিয়ে আয়ানার গলায় ব্যান্ডেজ করে দিলো।। কাঁটা স্থানে হালকা ঠোঁট ছুঁইয়ে আয়ানাকে মুখ চেপে মেডিসিন খাইয়ে দিলো।।এই মেয়ে এই মুহূর্তে ও মেডিসিন খাবে না বলে জোর করছে।।।।

“আয়ানাকে মেডিসিন খাইয়ে ইরফান সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে সবার উদ্দেশ্যে হুংকার দিয়ে বললো,,,,,

—-এতো গুলো লোক থাকতে ওই পশুটা কি করে আয়ুর কাছে গেলো কেনো অকে স্পর্শ করলো।।
কেনোওওওওওও আমাকে উত্তর দাও বলে সামনের ট্রি টেবিলে জোরে লাথি মারে সঙ্গে সঙ্গে টেবিল নিচে ভেঙ্গে গুড়িয়ে যায়।।‌ইরফানের হুংকারে সবাই কাঁপতে লাগলো।। বেচারি আয়ানাতো ভয়ে দুই পা তুলে সোফায় গুটিসুটি মেরে বসে আছে।।।।
ইরফানের রাগ যেনো জুয়ালামুখীর মতো করে ফেটে পরছে সে একজন গার্ডের হাতে থেকে স্টিক নিয়ে হলরুমের প্রত্যেক জিনিসের ওপর রাগ জাড়তে লাগলো সবাই ভয়ে দূরে সরে গেছে আয়ানা কানে হাত দিয়ে চোখ খিচে বন্ধ করে রেখেছে।। ইসহাক তো ভয়ে সাফিয়ার আঁচলে মুখ লুকিয়ে রেখেছে।। হলরুমের সবার অবস্থা নাজেহাল‌।।।। ইরফান সব ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে।।। হঠাৎ তাঁর নজর আয়ানার উপর পরতে সে হাতের স্টিক ফেলে নিজের চুল মুঠো করে শান্ত করার চেষ্টা করছে নিজেকে।। ইরফান বিরবির করে বলছে,,,,

—-কুল ইরফান কুল আয়ু তোকে ভয় পাচ্ছে।।আয়ু তোকে ভালোবাসবে ভয় না।।।বলে জোরে নিঃশ্বাস ফেলে আয়ানার কাছে যায়।।আয়ানাকে কুলে তুলে নিয়ে শিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে লাগল।‌আয়ানা চোখ খুলে ইরফানের দিকে তাকিয়ে দুই হাত দিয়ে শক্ত করে ইরফানের গলা জরিয়ে ধরলো।। ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে শিড়ি বেয়ে উপরে নিজেদের রুমে চলে গেলো।। আজকে আয়ানার ভয় হচ্ছে না ইরফান কে। অকারণে তাঁর খুব হাসি পাচ্ছে কিন্তু কেনো সে কি ভয়ে পাগল টাগল হয়ে গেলো নাকি।

——-ইরফানকে যেতে দেখে হলরুমে সবাই জোরে নিঃশ্বাস ফেলে নিজেদের ঠিক করে নেয়।। আসফিয়া সবাইকে কিছু উপদেশ বাণী শুনিয়ে যার যার কাজে যেতে বলে।।‌সাফিয়া কপালের ঘাম মুছে ইসহাকের হাত ধরে রুমের দিকে ছুট লাগায়। আজকে আর সে বের হবে না,একটুর জন্য হার্ট অ্যাটাক হতে হতে বেঁচে গেছে সে।।

______________________________

“ইরফান আয়ানাকে রুমে এনে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে তাঁর পাশে বসে আয়ানাকে জরিয়ে ধরে।। ইরফানের বুকে ঢিপঢিপ আওয়াজ বলে দিচ্ছে সে কতো ভয় পেয়েছে।।আয়ানা ইরফানের বুকে মাথা রেখে ধীর কন্ঠে বলল,,

—-আ-আমি ঠিক আছি।। একদম ব্যাথা পায়নি সত্যি।।
ইরফান আয়ানার কথায় কোনো হেলদোল নেই সে মনে মনে ফন্দি করতে ব্যস্ত।।আয়ানা ইরফানের আওয়াজ না পেয়ে আড়চোখে ইরফানের দিকে তাকাতে দেখলো ইরফান অন্যমনস্ক হয়ে আছে তাঁর চোখ দুটো লাল টকটকে হয়ে আছে বুঝতে বাকি নেই ইরফান এখনো অনেক রেগে আছে।।আয়ানা জানে ইরফানের এই রাগ খুব ভয়ংকর কিছু হবে যা সে চায় না।।তাই কাঁপা কাঁপা হাত ইরফানের গালে রাখে এতে করে ইরফান চমকে আয়ানার দিকে তাকালো আয়ানা কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,,,

—–আপনি কী কাউকে মাডার করবেন না মা-মানে ওই লোকটাকে।প্লিজ এমন করবেন না তাকে প্লিজ মাফ করে দেন।।আ আর বলতে পারলো না এর আগে ইরফান আয়ানার ঠোঁট দুটোতে নিজের ঠোঁটে মিলিয়ে দিলো সব রাগ কমাচ্ছে আস্তে আস্তে করে আয়ানার ঠোঁটের স্বাদ নেওয়ার মধ্যে।। আয়ানাতে তাঁর রাগ একদমই টিকে না।।। ইরফান আয়ানার ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে আয়ানার কপালে নিজের কপাল ঠেকিয়ে বলতে লাগলো,,,,

—–তোমার ঠোঁটের স্বাদ পেলে কী আর রাগ থাকে বলো।।এই তোমাতে আমি পরিপূর্ণ।।।রাগ কমানোর সঠিক স্থান আয়ানার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে ডেবিল হেসি দিয়ে বললো।। ইরফানের কথা শুনে আয়ানা লজ্জায় লাল হয়ে গেছে।‌।।। ইরফান আয়ানাকে সুন্দর ভাবে বিছানায় শুইয়ে বুকে জরিয়ে ব্ল্যানক্টে জড়িয়ে দিলো তারপর আয়ানার কপালে চুমু খেয়ে বললো,,

—-লক্ষি মেয়ের মতো ঘুমিয়ে যাও।। অনেক উইক তুমি। আয়না ও চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে ঘুমিয়ে গেলো।।‌বাহিরে খুব জোরে বাতাস বইছে ঝড় উঠেছে।। প্রচন্ড তুষারপাত হচ্ছে।। ইরফান চোখ মেলে সামনের ঘড়ি দিকে তাকিয়ে আছে বিকেল চারটা বাজে।।সকালের খাবার খাওয়ার অনেকক্ষণ পর ঘটনাটি ঘটে তারপর এখন চারটা বাজে ঘড়িতে।।।। ইরফান আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখলো সে ঘুমিয়ে আছে।। ইরফান ধীরেসুস্থে আয়ানার মাথা বালিশে রেখে দিলো।আয়ানার গাঁয়ে ভালো করে ব্ল্যানক্টে জড়িয়ে সাইডে বালিশ রেখে দিলো যাতে পরে না যায় আয়ানা।।। তারপর আয়ানার দিকে গভীর ভাবে তাকিয়ে বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে আয়ানার কাঁটা স্থানে স্পর্শ করে আস্তে আস্তে বলতে লাগলো,,,

—-তুমি খুব চালাক হয়ে গেছো আয়ু। ঠিক ধরেছো আজকে ওই পশুকে আমি মাডার করবো যতো কষ্ট তোমাকে দিয়েছে তাঁর চেয়ে বেশি কষ্ট দিয়ে আমি তাকে মারবো।।জীবত অবস্থায় একটু একটু করে নিখুঁত ভাবে তাকে কষ্ট দিয়ে মারবো আই প্রমিস বলে আয়ানার কপালে চুমু খেয়ে বিছানা ছেড়ে কাবার্ড থেকে কালো রঙের হাঁটু পর্যন্ত লং কোট পরে নেয় মাথায় হেট পায়ে বুট পরে একবার আয়ানর দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে দরজা খুলে বাহিরে চলে যায়।বাহির থেকে দরজা আটকিয়ে বের হয়ে যায় খান ম্যানশন থেকে।।। একদিকে আয়ানা তুলতুলে নরম বিছানায় ঘুমে তলিয়ে আছে আর অন্যদিকে তাঁর বিষাক্ত প্রেমিক বিষাক্ত ছোবল মারতে যাচ্ছে ‌,, নিজের শিকার করতে।।

” বিকেল বেলা ঝড়ের জন্য রাতের মতো অন্ধকার হয়ে আছে।।।এই অন্ধকারে আবারো এক বিষাক্ত প্রেমিকের হিংস্রতা প্রকাশ পাবে।।।।।।

#To_be_continued…..🌼

(সবার গঠন মূলক মন্তব্য আশা করছি ধন্যবাদ ❤️)

#হ্যাপি_রিডিং 🌺

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here