বিষাক্তময় আসক্তি – পর্ব ২২

0
729

বিষাক্তময় আসক্তি (The Villain😈)
Sumaiya Akter Mim
পর্ব ২২………..🌼

“অন্ধকার রুমে হাত পা বাঁধা অবস্থায় একজন মহিলা বসে আছে ! চোখের চশমাটা নিচে পরে আছে।। মাথার কালো হিজাব টা ও এলোমেলো হয়ে আছে।নিভু নিভু চোখে চারিদিকে চোখ বুলাচ্ছেন তিনি। অন্ধকার রুমে শুধু মাথার উপর একসাথে লাগানো দুইটা লাইট জ্বলচ্ছে!নীল আর হলুদ কালারের লাইট দুটোর তিব্র আলোয় রুমের প্রতিটা কোনায় কম বেশি বুঝা যাচ্ছে।। অতিরিক্ত আলোর কারনে মহিলাটি তাকাতে পারছে না সাথে মাথা ব্যাথায় কাতর হয়ে উঠছেন মহিলাটি।।।।‌

______কিছুক্ষন আগে সবার সাথে কথা বলে নিজের রুমে দিকে যাচ্ছিলেন আনিশা বেগম! হঠাৎ পেছন থেকে কেউ তার মুখে রুমাল চেপে ধরে সাথে সাথে তিনি জ্ঞান হারান তার পরে আর কিছু মনে নেই।।যখন জ্ঞান ফিরেছে তখন এইখানে আবিষ্কার করেছেন।।।
খট করে দরজাটা খুলে যেতে রুমের ভেতরে কিছু লোক প্রবেশ করে।। লোক গুলো সারা রুমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, আনিশা বেগম কিছু বলতে যাবে তখন রুমে একজন প্রবেশ করে তাকে দেখে লোক গুলো মাথা নিচু করে নেন। আনিশা বেগমের কাছে লোকটি আগোতে আনিশা বেগম অবাক হয়ে বললো_______

__ইরফান!!!!!
__হুম ফুপস আমি!বলে চেয়ারের উপর পায়ের উপর পা তুলে বসে পরে।।
__আ-আমাকে এইভাবে বেঁধে কেনো রেখেছো? আমি কি করেছি?প্লিজ আমাকে ছেড়ে দাও! আমি আয়ানার ফুফি সেই হিসেবে তোমার ও তুমি আমাকে কেনো আটকিয়ে রেখেছো? ভয়ে ভয়ে বললেন আনিশা বেগম।।
__আরে ফুপস আস্তে! এতো গুলো প্রশ্ন সব কিছুই জানবেন তার আগে আমার কথার জবাব দিতে হবে! আমার প্রশ্নের সঠিক সঠিক উত্তর দিতে হবে আর মিথ্যা বললে কী হবে তা আপনি ভালো করে জানেন।।বলে চেয়ারের উপর হেলান দিয়ে পা দুটো টেবিলের উপর রেখে সিগারেট খাওয়া শুরু করে।।।

“ইরফানের কথা শুনে ভয়ে কাঁপতে লাগলো আনিশা বেগম! কী জানতে চায় ইরফান কিছু বুঝতে পারছে না তিনি! কিন্তু ইরফানের কথার উত্তর না দিতে পারলে তার মৃত্যু নিশ্চিত! তিনি তা ভালো করে জানেন।। আনিশা বেগম গলা খাঁকারিয়ে পরিষ্কার করে ভিতু গলায় বলতে লাগলো,,,,

__কী জানতে চাইছো? আমি সব বলবো !
__আয়ানা ১৫ বছর আগে কখনো কাশ্মীর এসে ছিল!উপরের দিকে দোয়া উরাতে উরাতে বললো ইরফান।
__না মানে হ্যা এসেছিল তখন আয়ানার চার বছর বয়স ছিল।ঢুক গিলে বললেন আনিশা বেগম।।

___আনিশা বেগমের কথা শুনে ইরফান লাল লাল চোখে বললো,,

“তখন আয়ুর সাথে কি হয়েছিল যার কারণে আয়ু তখন থেকে সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকত এবং কি আয়ু অনেক দিন অসুস্থ ও ছিল! ফার্স্ট টু লাস্ট সব বলবেন খবরদার মিথ্যা বলবেন না।।। তাহলে আমি ভুলে যাবো আপনি আয়ানার ফুফি!আর আপনাকে আমি কি করতে পারি তা আপনি ভালো করে জানেন বলে বাঁকা হেসে পুনরায় সিগারেটে টান দিতে থাকে।
ইরফানের চেহারায় হিংস্রতা প্রকাশ পাচ্ছে।। চোখ দুটো রক্ত নেয় লাল হয়ে আছে যা দিয়ে আনিশা বেগমকে ধ্বংস করে ফেলবে।। ইরফানের কথায় আর রাগ দেখে ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে তিনি বলতে লাগলেন,,,,,,

“আয়ানার যখন চার বছর তখন কাশ্মীরে এসেছিল।বেশ কিছু দিন ছিল। আমি আয়ানাকে খুব ভালোবাসি আয়ানা ও আমাকে খুব ভালবাসে।।যখনি কাশ্মীর আসতো তখন আমি আয়ানাকে নিয়ে ব্যাস্ত থাকতাম।।অকে নিয়ে রোজ পার্কের পাশে লেকে যেতাম। তখন আমি লিপা বেলীতে জায়েফ ভাইজানের বাসার পাশে থাকতাম সব কিছুই ঠিক ছিল কিন্তু একদিন এমন একটি ঘটনা ঘটলো তার পর থেকে আয়ানা অসুস্থ হয়ে পরেছে। এখনো মনে পড়ে আমার সেই দিনটির কথা।।
__প্রতিদিনের মতো ওই দিন ও আমি আয়ানাকে নিয়ে পার্কের পাশে লেকে গিয়েছিলাম ! আমি রোজকার মতো আয়ানাকে লেকের পাশে রেখে পার্কে বসে আমার প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলতাম।ওই দিন এক প্রতিবেশীর সাথে কথা বলছিলাম আর আয়ানা সেই প্রতিবেশীর ছেলের সাথে খেলছিল! হঠাৎ করে কোথায় থেকে একটা বারো তেরো বছরের ছেলে এসে আয়ানার সাথে যেই ছেলেটা খেলছিল তাকে মারতে লাগলো। খুবই হিংস্র ভাবে ছেলেটার মুখটা থেঁতলে ফেললো ছেলেটা খনিকের মধ্যে মারা গেছে কেউ ছেলেটাকে আটকাতে পারলো না।।আয়ানা খুব ভয় পেয়েছিলো সাথে আমি ও ।।আয়ানার সারা গায়ে রক্তে লাল হয়ে গেছে আমি ততক্ষণে আয়ানাকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসি।। ছেলেটা রোজ পিছু পিছু আসতো আয়ানার পেছন পেছন ঘুরে বেড়াতো কিন্তু আমি কখনো বুঝতে পারিনি এমন কিছু হবে।।।আয়ানার কন্ডিশন খুব খারাপ ছিল বার বার জ্ঞান হারিয়ে ফেলতো ভয়ের কারণে কথা বলা বন্ধ হয়ে গেছিল। এতো ছোট বয়সে এমন একটা কাজ চোখের সামনে সহ্য করতে পারে নি।‌তাই আয়ানাকে নিয়ে পরের দিন বাংলাদেশ ব্যাক করে জায়েদ সাথে আমি ও চলে যাই যাতে কোনো সমস্যা না হয়।।আয়ানাকে বাংলাদেশ এনে হাসপাতালে এডমিট করাতে হয় তিন দিন কোমায় ছিল আর যখন জ্ঞান ফিরে অনেক দিন কথা বলতে পারেনি!তাই জায়েদ কখনো আর আয়ানাকে নিয়ে কাশ্মীর আসেনি।সবসময় এসব জিনিস থেকে দূরে রেখেছে যা আয়ানা খুব ভয় পায়। আমি ও আর কাশ্মীরের লিপা বেলীতে ফিরে যায় নি। অন্য জায়গায় চলে এসেছি।।। বলে থামলেন আনিশা বেগম।।

_____ইরফান আনিশা বেগমের দিকে তাকিয়ে আছে সম্পূর্ণ মুখ লাল হয়ে গেছে চোখ দুটো ও লাল হয়ে আছে আর তার সাথে চিক চিক করছে পানিতে।। কিন্তু মুখে লেগে আছে আছে তৃপ্তির হাসি আর কিছু পাওয়ার আনন্দ।। ইরফানের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আনিশা সে এখনো বুঝতে পারছে না কেনো তাকে এইভাবে আটকিয়ে রেখেছে ইরফান।।‌হঠাৎ ইরফানের কথায় ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে আনিশা বেগম,,,,,

___আপনি কি জানেন সেই ছেলেটি কোথায় আছে বা কে? বাঁকা হেসে আনিশা বেগমের দিকে ঝুঁকে প্রশ্ন করে ইরফান।।
ইরফানের কথা শুনে মাথা নাড়িয়ে না জানান আনিশা বেগম।।

__আপনার সামনে যে বসে আছে আয়ানার স্বামী আয়ানার ছোট বেলার পাগল প্রেমিক দ্যা ইরফান খান বলে অট্টহাসিতে ফেটে উঠলো ইরফান।।‌

ইরফানের কথা শুনে অবাক প্লাস ভয় দুটোই পেলেন আনিশা বেগম।।যার থেকে এতো বছর পালিয়ে বেড়িয়েছে আজকে তার কাছেই আয়ানাকে ফিরে আসতে হলো!এটা কেমন নিয়তি।। আনিশা বেগম চোখ দুটো বড় করে ইরফানের দিকে তাকিয়ে আছে! তার মাথাটা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে বিশ্বাস হচ্ছে না এই সেই ছেলে।।

__কী ফুপস বিশ্বাস হচ্ছে না তাই না? কিছু করার নেই এটাই সত্যি আমি সেই যে আয়ানাকে ছোট বেলায় ডিস্টার্ব করতো! নাম না জানা ছোট্ট পরীটাকে ভালোবেসে এসেছি যখন ভালোবাসার মানেটাও বুঝতাম না। আমার নেশা আমার ভালোবাসা আমার নাম না জানা পরী।।। একবার হারিয়েছি এবার তো হারানোর আগেই বন্ধি করে ফেলেছি! এবার আর হারাতে দিবো না আর যারা কেড়ে নিতে চাইবে তার জিবন টা আমি কেড়ে নিবো বলে বাঁকা হেসে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পরে ইরফান।।‌ইরফানের কথা শুনে কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন তিনি।। ইরফান মাটির নিচ থেকে চশমাটা তুলে ফু দিয়ে আনিশা বেগমের চোখে চশমা টা পরিয়ে দেয়।। ইরফান আবার বলতে লাগলো,,,

কিসমত সবই কিসমত! নিজের কপালে বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে ঘসে বলতে লাগলো।। আমারা যা থেকে পালিয়ে বেড়াই তার কাছে ফিরে আসতে হয়।যে জিনিসটা সবচেয়ে অপছন্দ করি সেই জিনিসটা আমাদের তাগদিরে থেকে থাকে।।।যেই নাম না জানা ছোট আয়ুকে আমি ভালোবাসতাম।১৩বছরে যার জন্য প্রথম আমি মাডার করেছি।আমার নেশা আমার ছোট পরী সে নিয়তির টানে আবার আমার হয়েছে।।ভাগ্যে সবই ভাগ্যে।। এবার আর আমি আমার জানকে হারানোর রিস্ক নেই নি! সম্পূর্ণ রুপে নিজের করে নিয়েছি!!!
কিন্তু আপনি কিন্তু কাজটা ঠিক করেননি ফুপস! আপনি আমার থেকে আমার জানকে আমার কাছ থেকে দূরে রেখেছেন!এতো বছর আমি আমার ছোট পরিকে খুঁজেছি কিন্তু আপনি তাকে আমার থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছেন এর জন্য আপনাকে শাস্তি তো পেতে হবে ফুপস !!!
ইরফানের কথা শুনে আনিশা বেগম তোতলাতে তোতলাতে বললো,,,

__এমন করো না ইরফান ! আমি আয়ানাকে কিছু বলবো না আর আমি কখনো তোমাকে আয়ানার থেকে দূরে রাখতে চাই না।। আমাকে ছেড়ে দেও প্লিজ।।

__ওহহো ফুপস অন্যায় করলে শাস্তি তো পেতে হবে আর অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সয় দুজনে সমান অপরাধী।আর আপনার অপরাধ তো অনেক বেশি তাই আপনাকে ও শাস্তি পেতে হবে বলে বাঁকা হাসে।

__ইরফান সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পকেটে হাত ঢুকিয়ে বলতে লাগলো,,,
__আপনি আজকে রাতের ফ্লাইটে সহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ডুবাই চলে যাবেন!আয়ানার সাথে সব যোগাযোগ বন্ধ করে দিবেন আর আপনি যদি ভুলে ও আয়ানার সাথে যোগাযোগ করতে চেয়েছেন কিংবা কাউকে কিছু বলেছেন তাহলে আপনি আর আপনার পরিবারের সদস্যদের কেউ প্রানে বাঁচবে না আর আপনি জানেন আমি যা বলি তা করি বলে আনিশা বেগমের চারিদিকে ঘুরতে লাগলো ইরফান।।

__কী বলছো এসব! আমি নিজের পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখবো না আমি তো বললাম আমি আয়ানাকে এবং কি কাউকে কিছু বলবো না প্লিজ এমন করো না বলে কান্না করতে লাগলো আনিশা বেগম।।

ইরফান রেগে চিৎকার করে বলে উঠলো,,

__আমি কারোর কথা কেয়ার করি না! শুধু মাত্র আয়ুকে ছাড়া আর আপনি আমার কথার উপরে কথা বলছেন আপনি ভুলে যাচ্ছেন আপনি কার সামনে বসে আছেন।।কলিজায় মায়া নেই নিজের জিবনের!এক কথা আমি দ্বিতীয় বার উচ্চারণ করি না।। আপনাকে আজকে রাতের ফ্লাইটে ডুবাই পোচ্ছে দিয়ে আসবে আমার লোকেরা সসম্মানে যতোইহোক আমার জানের ফুফি মনি বলে কথা বলে শয়তানি হাসি হাসলো ইরফান।।।

___একজন লোক এসে আনিশা বেগমের দরি খুলে দিল।এরপর তাকে নিয়ে বাহিরে যেতে নিলে ইরফানের কথায় আবার থেমে যায়।।।

লাবিহা এখানে থাকবে তাঁর উপর আমার কড়া নজরদারি থাকবে আপনার একটি ভূলে প্রথমে তার জীবন যাবে তার পর আপনাদের বলে গটা গট রুম থেকে বেরিয়ে যায় ইরফান। ইরফান যেতে শাড়ির আঁচলটা মুখে গুজে জোরে জোরে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো তিনি।। দুজন গার্ড এসে তাকে নিয়ে বাহিরে চলে গেল উদ্দেশ্য এয়ারপোর্ট । প্রথমে সাবিহা আর আনিশা বেগমের স্বামী এয়ারপোর্টে ইরফানের লোক রেখে এসেছে লাবিহা এখানে পড়াশোনা করে তাই এখানকার হোস্টেলে থাকে তাই তাদের সাথে সে যাবে না।এই সব ইরফান কিছুক্ষন আগে প্লেন করে রেখেছে।।

__আনিশা বেগম কখনো ভাবতে পারেনি এমন কিছু হবে।। নিজের আপন জনদের ছাড়া থাকতে তার ভিষন কষ্ট হবে।।‌

___________________________________”

অন্যদিকে ইরফান সুইমিং পুলের সামনে দাঁড়িয়ে একের পর এক সিগারেট ধরিয়ে খেয়ে যাচ্ছে।। বুকের ভেতর হাত দিয়ে পাঞ্জাবির ভেতর থেকে গলার লকেটা বের করলো।লেকটার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলতে লাগলো,,,,

__তুমি শুধু আমার আয়ু জান শুধুমাত্র আমার। তোমাকে যে আমার থেকে দূরে সরাতে চাইবে তাকে আমি শেষ করে দিবো আর নাহলে এমন করে দূরে সরিয়ে দিবো। ট্রাস্ট মি আয়ু জান তোমার ফুপস না হলে আমি দুনিয়া থেকে বিদায় করে দিতাম। কিন্তু তোমার কষ্ট হবে তা আমি করবো না। তুমি কখনো জানবে না আয়ু জান ছোট বেলার আমি টাকে। কখনো জানতে দিবো না । লকেটার দিকে আবার তাকিয়ে তা টান দিয়ে ছিঁড়ে ফেলে।। হাতের মুঠোয় নিয়ে ছুড়ে মারে পানিতে।লকেটা ডুবে যেতে দেখে ইরফান গার বাঁকিয়ে তা দেখে বাঁকা হেসে সেখান থেকে চলে যায় ইরফান তার জানের কাছে।‌‌

“কিছু কিছু রহস্য! রহস্য থাকলে ভালো লাগে।। ইরফানের সেই ছোটবেলার রহস্য রহস্য থেকে যাবে।।রহস্যকে উন্মোচন না করে নতুন ভাবে নতুন জীবনের সূচনা হবে।। সেখানে থাকবে ভালোবাসা পাগলামো দেওয়ানাপান হিংস্রতা আর থাকব #বিষাক্তময়_আসক্তি ।। ভালোবাসার শুরু টা যেমনি হোক শেষ টা সুন্দর হবে।।।

#To_be_continued……🌼

(ইরফানের ছোট বেলার রহস্য আয়ানার কাছে রহস্য থাকবে সে কখনো তা জানতে পারবে না।।।আর আগামী কাল আমি গল্প না ও দিতে পারি ঈদ উপলক্ষে একটু ব্যাস্ত আছি। গঠন মূলক মন্তব্য আশা করছি ধন্যবাদ 😌)

#Happy_Reading

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here