বিষাক্তময় আসক্তি – পর্ব ২৭

0
1233

#বিষাক্তময়_আসক্তি (The Villain 😈)
#Sumaiya_Akter_Mim
#পর্ব_২৭…………..🌼

“একা একা রুমে বসে আছে আয়ানা। কিছু ভালো লাগছে না!কার ভালো লাগে এমন বন্দি জীবন।। আগে যে খোলামেলা উড়ে বেড়িয়েছে তা নয়!আগেও তাকে ঘরে এমনভাবে কাটাতে হয়েছে।। কিন্তু তখন ব্যাপারটা ছিলো আলাদা।যেমন, আগে বাবা ছিল মা ছিলো তুতুল ছিলো! তাদের সাথে সময় কাটিয়ে দিতো আয়ানা।একাত্বিত্ত সময় গান গেয়ে নিজের পছন্দের কাজ করে সময় কাটাতো! কিন্তু এখানে একদম বন্ধি করে রেখেছে তাকে !কারোর সাথে মিশতে দেয় না!রুম থেকে বের হতে ও দেয় না।। ইরফান কিছুক্ষণ আগে বাড়িতে নিজেদের কনফারেন্স রুমে চলে গেছে কনফারেন্স করতে ।।যাওয়ার আগে আয়ানাকে বের হতে নিষেধ করেছেন।।।

__ রুমের ভেতরে পায়চারি করছে।।আর ভালো লাগছে না এই বন্দি জীবন।।কারোর সাথে কথা বলতে ও দেয় না শয়তান এরোগেন্ট ম্যান একটা বিরবির করে বলে বারান্দার দিকে যাওয়ার সময় চোখে পরলো ডিভাইনের পেছনে সাদার মধ্যে কালো পাথরের স্টোন বসানো গিটার টার ওপর।। অসম্ভব সুন্দর গিটারটা একদম চকচকে ক্লিন।।আয়ানার গিটারের প্রতি অনেক জোক আর এটা যদি নতুন হয় তবে তো কথাই নেই।।আয়ানা মুখ উজ্জ্বল করে বিশাল হাঁসি দিয়ে গিটার টা হাতের মাঝে তুলে নিলো। এতো সুন্দর গিটারটা এরোগেন্ট ম্যান কেনো এইভাবে ফেলে রেখেছে তা সে জানে না।। আয়ানা গিটারে টুং টাং টং আওয়াজ তুলতে লাগলো।।

__বাহ্ কী দারুণ গিটার টা!এর সুর তুলতে আলাদা প্রশান্তি আছে।।আয়ানা গিটারে সুর তুলতে তুলতে বললো।।
এমন একটা গিটারের অনেক ইচ্ছে ছিলো ! আব্বি বলেছিলো সাফিয়া দির বিয়ে শেষে লন্ডন গেলে এনে দিবে! কিন্তু তা তো আর হলো না ভেবে মন খারাপ করে ফেললো। কিন্তু পরক্ষনে আবার ভাবতে লাগলো!এটা যখন এখানে থাকে তো অবসর সময় এটা বাজাতে পারবে ।।।।বলে গিটার বাজাতে মনোযোগ দিলো।। অনেক দিন পর প্রিয় জিনিস পেয়ে মনটা ভালো হয়ে গেলো।।।
হঠাৎ হাতে জোরে টান পরায় আয়ানা ঘাবড়ে যায়।।। সামনের দিকে তাকিয়ে ভয়ে চুপসে গেছে।। এতোক্ষণের আনন্দ হাওয়া হয়ে গেছে।।

__ইরফান কনফারেন্স শেষ করে তাড়াতাড়ি রুমে চলে আসে।।আয়ানাকে ছাড়া একমিনিট ও থাকা খুব কষ্টকর।।তার উপরে আয়ান একা রুমে বোর হচ্ছে তাই ভেবে তারাতাড়ি কনফারেন্স শেষ করে দেয়।। রুমে প্রবেশ করে ইরফান হাঁসি হাঁসি মুখে আয়ানার দিকে এগুতে নিলে দেখতে পায় আয়ানা পুরাতন গিটার টা হাতে নিয়ে বাজাচ্ছে।।।তা দেখে ইরফানের মাথা খারাপ হয়ে গেছে তার সাথে ভয় ও!আয়ানা যদি চিনতে পেরে যায় তো।।।যাতে আয়ানার চোখে না পরে তাই এটাকে লুকিয়ে রেখেছিলো।।আর ক্লিন বয় কে বলেছিলো রুম ক্লিন করার সময় যেনো এই গিটারটা ও নিয়ে দূরে কোথাও ফেলে দেয়।। কিন্তু ডাফফার ক্লিন বয়ের মনে ছিল না,এর জন্য তাকে শাস্তি পেতে হবে।।। ইরফান কিছুতে অতীত সামনে আসতে দিবে না।।বড় বড় পা ফেলে আয়ানার কাছে গিয়ে আয়ানার হাত ধরে এক ঝাটকায় সামনের দিকে ঘুরিয়ে ফেলে।।আয়ানার হাত থেকে গিটারটা নিয়ে ছুড়ে মারে ফ্লোরে।।।আয়ানা তো থাম করে আওয়াজ হওয়ায় ভয়ে চোখ খিচে বন্ধ করে ফেলে।।। ইরফান আয়ানার দুই বাহু শক্ত করে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে জোরে বলতে লাগলো,,,,,,,

__এটা কেনো ধরেছো তুমি? এতো সাহস কোথায় থেকে আসে জোরে চিৎকার করে!
__আআ-আমি! ভয়ে ঠিক ভাবে কথা বলতে পারছেনা!
__কী আআ-আমি শুরু করেছো! ক্লিয়ার করে কথা বলো (রেগে)
__আমি বুঝতে পারেনি বলে কান্না করে দিলো।।
__একদম কান্না করবে না তাহলে খারাপ হয়ে যাবে! আমি নিষেধ করেছিলাম অপ্রয়োজনীয় কিছুতে হাত না লাগাতে তাহলে এটা কেনো ধরলো!এন্সার মি।।
ইরফানের ধমক শুনে আয়ানা ভয়ে কয়েক পা পিছিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলো।এক হাত দিয়ে কান্না থামানোর চেষ্টা করছে।।।।
আয়ানার কান্নার আওয়াজে ইরফানের বুকে মুচোর দিয়ে উঠলো।।সে রাগের মাথায় কী করছে? নিজের জানকে হার্ট করছে।। ইরফান এক হাত মুঠো করে নিজের রাগটাকে কন্ট্রোল করলো।।। ইরফান এক হাত দিয়ে টান দিয়ে আয়ানাকে জরিয়ে ধরলো!আয়ানা পিছিয়ে যেতে নিলে মৃদু ধমক দিয়ে বলল,,
__পিছিয়ে যাওয়ার দূরসাহস একদম করবে না পিচ্চি! তাহলে এর জন্য তোমাকে শাস্তি পেতে হবে! ইরফানের কথায় আয়ানা চুপচাপ ইরফানের বুকে মাথা রেখে আছে।।। ইরফান আয়ানাকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে রেখেছে।।।আয়ানার ইরফানের ব্যবহারে ভয় লজ্জা দুটোই পেয়েছে।।লজ্জাটা বেশিই।। সামান্য একটা গিটারের জন্য তাকে এইভাবে বকলো।। এইভাবে কখনো তাকে কেউ বকে নি।। সেইখানে এই এরোগেন্ট ভিলেনটা তাকে বকলো।।।কী এমন করেছে ?সামন্য একটা গিটারই তো ধরেছে।।।। তার জন্য বকবে।।আর কখনো তোর কিছুই ছুঁয়বো না এরোগেন্ট ভিলেন মনে মনে বললো আয়ানা।।‌

__ইরফান ভয় পেয়েছে দ্যা ভিলেন ইরফান খান ভয় পেয়েছে ব্যাপারটা ইরফানের কাছে অত্যান্ত হাস্যকর।।তার পর আবার মনে মনে বলতে লাগলো,,
__বউকে ভয় পাবে এটাই স্বাভাবিক।।বাঘ জন্গলের ভেতর যতোই রাজত্ব করোক বাঘিনীর কাছে আসলে সবই হাওয়া।। ভেবে মুচকি হাসলো ইরফান।।‌

“সব ভালোবাসা এমনই হয়!যেই জিনিসটা আমারা বেশি চাই এর জন্য বেশি চিন্তা থাকে হারানোর ভয় থাকে!ভালোবাসাই পারে পাথরের_বুকে_ফুল ফুটাতে।।। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।।

__তোমাকে কখনো জানতে দিবো না অতীতের কথা কখনো না।। ইরফানের বিরবিরিয়ে কথা গুলো আয়ানার কান পর্যন্ত পৌচ্ছাতে পারে নি।।।

ইরফান র্সাভেন্টকে কল করে গিটারটা নিয়ে যেতে বলে! গিটার টা নেওয়ার সময় আয়ানা অসহায়ের মতো তাকিয়ে ছিলো খুব মনে ধরেছিল তার! ইরফান আয়ানাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো,,

__এটা খুব ওল্ড ফেশানের ! আমি তোমাকে এর থেকে সুন্দর বেস্ট গিটার আজকের মধ্যে আনিয়ে দিবো।।
ইরফানের কথা আয়ানা প্রতিবারের মতো চুপচাপ।।‌ইরফান বুঝতে পারছে আয়ানা তার ব্যবহার নিয়ে ভয় পেয়েছে।। ইরফান আয়ানার সম্পর্ক টা একটু ভালো হতে নিলে ইরফান তা বিগড়ে দেয়।। ইরফান দীর্ঘশ্বাস ফেলে আয়ানাকে ছেড়ে দিয়ে আয়ানার হাত ধরে টেনে নিজের দিকে ঘুরিয়ে আয়ানার কোমরে নিজের হাত রেখে আয়ানাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়।।এক ইঞ্চি ও দূরত্ব নেই তাদের মাঝে।। ইরফান আয়ানার চুল গুলো পেছনের দিকে গুজে দিয়ে আয়ানার দিকে তাকিয়ে আছে।।আয়ানা ইরফানের দিকে না তাকিয়ে প্রত্যেকবারের মতো নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।।

__আমার পা কী আমার চেহারা থেকে বেশী সুন্দর যে সবসময় আমার পায়ের দিকে তাকিয়ে থাকো।।।
ইরফানের কথা আয়ানা লজ্জা পেয়ে অন্যদিকে তাকালো।।আয়ানার লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া গালটায় নিজের ঠোঁট ছুয়িয়ে দিলো ইরফান।।আয়ানার কোমর আরো শক্ত করে চেপে ধরে বলল,,,
__আমি যখন সামনে থাকবো তুমি আমার দিকে তাকিয়ে থাকবে অন্যদিকে নয়।আমার দিকে তাকাও আয়ানার গালে ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বললো।।।
আয়ানা ইরফানের দিকে তাকিয়ে আবার চোখ নিচে নামিয়ে নিলো এই নেশা ভরা চোখে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারে না তার উপর তো ইরফানকে দেখলেই তার ভয়ে হাত-পা অবশ হয়ে যায়।।।
__কী হলো আয়ু ? আমি কিছু বলছি!আয়ানার থুতনিতে আঙ্গুল দিয়ে চেপে ধরে।।‌আয়ানা ইরফানের কথায় ইরফানের দিকে ভিতু চোখে তাকায়।।
ইরফান মায়া ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে এই দৃষ্টি উপেক্ষা করা আয়ানার ও সাধ্যি নেই।।সবাই বলে সাদা চোখে নাকি মায়া থাকে না কিন্তু ইরফান চোখে যেনো মায়ার সাগর এই সাগরে ডুবে ও শান্তি আছে।।।‌

__তুমি যদি রুম থেকে বের হতে চাও! তাহলে আমি যা বলবো তা শুনতে হবে?
ইরফানের এহেম প্রশ্নে আয়ানা চমকে যায়! জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে ইরফানের দিকে তাকাতে ইরফান বলে উঠলো,,,,
__তোমাকে রুম থেকে বের হওয়ার অনুমতি দিতে পারি !প্রথমওতো বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে না! তুমি কখনো আমার কাছ থেকে পালাতে পারবে না আর সেইটা তুমি ভালো করে জানো।।বাড়ির হাই গার্ড এর মধ্যে থেকে তুমি পালাতে ও পারবে না।।যদি বিন্দুমাত্র চেষ্টা করো তো আবার এখানে বন্দি করে রাখবো আর শাস্তি ও পেতে হবে! তুমি এই বাড়ির বাহিরে একদম পা রাখবে না।। আমার সাথে রুম থেকে বের হবে আর বাড়ির ভেতরে থাকবে।।।আর আমি যখন বাড়িতে থাকবো তখন সবসময় আমার চোখের সামনে থাকবে।।যদি হেরফের হয় তবে এর শাস্তি পেতে হবে।।আর শাস্তি কেমন হবে তা তোমার জানা আছে। শান্ত গলায় বললো।।।।‌
ইরফানের কথায় আয়ানা ঢুক গিলে! মাথা নাড়িয়ে হ্যা জানায়।।। ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল,,
__গুড গার্ল!আয়ানার হাত ধরে বাহিরে নিয়ে গেলো।।।রুম থেকে বের হতে দিবে যখনই হোক তার চলবে।।‌ইরফান আয়ানাকে নিয়ে শিড়ি বেয়ে নিচে নামতে দেখে ইসহাক ওদের কাছে যেতে নিলে সাফিয়া মাথা নাড়িয়ে না জানায়।।। ইসহাক ও ভালো ছেলের মতো চুপচাপ বসে পরে।।।।ইসহাক এখন আগের থেকে ভালো ভাবে কথা বলতে পারে।। তোতলানোর পরিমাণ টা কিছুটা কমে গেছে এখন ভালো ভাবে কথা বলতে পারে কিছু কথা শুধু আটকে আসে।।গাল বেয়ে ও লালা পরে না।।।সাফিয়ার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল।।।ডাক্তার বলেছে ইসহাক পুরোপুরি সুস্থ না হলে ও একটা সাধারণ জীবন যাপন করতে পারে যদি তার সঠিক খেয়াল রাখা হয় তো শুধু মেডিসিন মানুষ কে সুস্থ করে তুলতে পারে না তার জন্য শারীরিক দিকের সাথে সাথে মানসিক দিকের ও খেয়াল রাখতে হবে সময় দিতে হবে যা আগে কেউ দেয়নি।।। জন্মগত প্রতিবন্ধী হওয়ার ফলে সম্পূর্ণ ভাবে পরিবর্তন না হলে ও একটি ভালো দাম্পত্য জীবন যাপন করতে পারবে।।। কিন্তু হাত গুলো কখনো ঠিক হবে না জানিয়েছেন ডাক্তার এইগুলোর হাড় বাঁকা হয়ে গেছে জম্ম থেকে তাই কোনো মেডিসিন কাজ করতে পারবে না।।যদি ধিরে ধিরে উন্নতি হয় তবে ভবিষ্যতে নিজের হাতে কষ্ট করে খেতে পারবে কিন্তু কখনো রোজগার করতে পারবে না এই হাতে।।।এসব বিষয়ে সাফিয়ার কোনো চিন্তা নেই প্রয়োজন পরলে নিজে ইনকাম করবে আর নিজের অসুস্থ স্বামীর দেখাশোনা করে নিজের বাকি জীবন পার করে দিবে।।স্বামীর প্রতি অল্প দিনের মধ্যে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়েছে।। কখনো ছেড়ে যাওয়ার কথা মনে আসে না।।একেই বলে পাঁজরের টান।।।আর যতো ধন সম্পদ আছে বসে বসে খেতে পারবে ।।।।

__ব-বউ ভাইয়ের ব-বউ টা অনেক সুন্দর তাইনা একদম পুতুলের মতো।। মেডিসিন মুখে নিয়ে বললো।।
__হুম পুতুলের চেয়ে ও সুন্দর! বলে মুচকি হেসে ইসহাকের হাত থেকে পানির গ্লাসটা নিয়ে যায়।।।
__আমার ব-বউ ও অনেক সুন্দর।সাফিয়ার গালে চুমু খেয়ে।।‌
সাফিয়া ইসহাকের কাজে হেসে দিলো।। ইসহাকের হাত ধরে বললো,,
__হুম জনাব আপনার বউ ও খুব সুন্দর!এখন উপরে চলুন পড়তে বসতে হবে।।
__না-না ব-বউ আ-আজকে পরবো না।।হাত ছাড়িয়ে।।।
__কেনো পরবেন না ইসহাক।।আপনার কথা ক্লিয়ার করার জন্য পড়া অনেক জরুরী।।। চলুন আবার হাতে ধরে।।
__রা-রাতে পড়ি! মাসুম ফেইস বানিয়ে বললো।।
__ওকে আপনি রাতে পরুন আমি ও দুপুরের খাবার রাতে খাবো হাত মুছতে মুছতে চলে যেতে নিলে!
আ-আচ্ছা আমি এখন ভালো ছেলের মতো পড়তে বসবো ত_তুমি রাগ করো না।। শাড়ির আঁচলে ধরে।।।
__ঠিক আছে! বলে ইসহাকের হাত ধরে উপরে নিয়ে যায়।।‌‌

______________________________

আয়ানা থরথর করে কাঁপছে তার পেছনে ইরফান আয়ানাকে জরিয়ে ধরে রেখেছে।।। পাশে দুই দিকে গার্ড দাঁড়িয়ে আছে।।ইরফান হাতের ধনুকটা আয়ানার হাতে ভালো করে ধরে আয়ানার কানে কানে স্লো ভয়েসে বললো,,

__এতো ভয় পাচ্ছো কেন মেরি জান সামান্য ধনুকই তো।। সামনের দিকে তাকাও সামনে ইশারা করে।।।আয়ানা ইরফানের কথায় ঢুক গিলে সামনের দিকে তাকাতে ইরফান আয়ানার হাতের ধনুকে নিজের হাত দিয়ে টেনে আয়ানার হাত ইরফানের বুকে ছুয়ালো তাঁর পর ওইভাবে কিছুক্ষণ ধরে রেখে ছেড়ে দেয় ছু মেরে ধনুকটা বোর্ডের মাঝখানে গিয়ে আটকে যায়।‌‌আয়ানা তো হা করে চোখ দুটো বড় বড় করে তাকিয়ে আছে !জিবনের প্রথম ধনুক ছুরায় একদম তীর ঠিক নিশানায় লেগেছে।।‌ইরফান আয়ানার কানে কানে আবার বললো,,

__দেখলে তো শুধু শুধু ভয় পাচ্ছিলে এটা খুব সহজ কাজ বুঝতে পেরেছো মেরি জান বলে আয়ানার নাক টেনে দেয়।।।
আয়ানা নাক ঘসতে ঘসতে বললো,,
__হুম !এটা আমার বা হাতের কাজ।।আয়ানা কথাটা খুব মিনমিনিয়ে বললে ও ইরফান আয়ানার খুব কাছে থাকার কারনে তা শুনতে পেরেছে। ইরফান মুচকি হেসে আয়ানার হাত ধরে বাগানের দিকে নিয়ে গেলো।।।

__ইরফান আয়ানাকে নিয়ে বাড়ির চারপাশটা ঘুরিয়ে দেখাচ্ছে।।।পুরো একটা শহর মনে হচ্ছে বাড়ির চারপাশটা!এতো সুন্দর যে দেখলে দেখতেই ইচ্ছে করবে আর অনেক সময় ধরে ঘুরে ও ঘুরার শেষ হবে না।।। ইরফান আয়ানাকে নিয়ে স্পোর্টস দিকে নিয়ে আসতে আয়ানার নজর ধনুকের দিকে যায়।।এটা বেশ অনেক বার দেখেছে টিভিতে।। তার ধারনা এটা খুব কঠিন কাজ।।ছোট বেলায় হাতের তৈরি গুলতি দিয়ে একবার পাখি ধরতে গিয়েছিল মজার ঝলে কিন্তু সঠিক ভাবে গুলতি না ধরতে পারায় পাথরের খন্ড দিয়ে নাকের বারোটা বাজিয়ে ফেলেছে তখন থেকেই এই জিনিসটা খুব ভয় পায় আর এটা তো ধনুক।।‌ইরফান আয়ানার তাকানো দেখে গার্ডকে ইশারা করতে হাতের ধনুকটা ইরফানের হাতে দেয় ইরফান এটা আয়ানাকে ধরতে বললে আয়ানা মাথা নাড়িয়ে না জানায়।।‌এটা সে ধরবে না।। ইরফান চোখ রাঙ্গিয়ে জোর করে আয়ানার হাতে দিতে আয়ানা ধনুক নিয়ে নিচে পরে যেতে নিলে ইরফান তাকে ধরে ফেলে।।ধনুকটা আয়ানার জন্য ভিষন ভারি হয়ে গেছে তাই ঠিক ভাবে ধরতে পারছিলো না।।। ইরফান আয়ানার হাত ধরে বলতে লাগলো,,,

__তুমি ঠিক আছো আয়ু জান!(উত্তেজিত কন্ঠে)
__জ্বি! আ-আমি এটা চালাতে পারি না। মাথা নিচু করে বললো আয়ানা।।‌
__পারো না পারবে! আমি শিখিয়ে দিবো! বলে আয়ানাকে সোজা করে দাড় করিয়ে পেছন থেকে আয়ানাকে ধনুক সহকার জড়িয়ে ধরে।।।
__আমি সত্যি বলছি আমি পারবো না।কান্না ভেজা কন্ঠে বলল আয়না।। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।
ইরফান উত্তর না দিয়ে ধনুকে নিশানা লাগাতে ব্যাস্ত।।আয়ানা ইরফানের উত্তর না পেয়ে আবার বলতে লাগলো,,
__প্লিজ এটা খুব দাঁড়ালো তীরটাকে উদ্দেশ্য করে বললো! আমি পারবো না এটায় লাগলে ব্যথা পাওয়া যাবে।।।
__হুসসসস কিছু হবে না! আমি আছি তো।।আয়ানার দিকে তাকিয়ে।।‌‌তারপর আয়ানাকে সামনের দিকে তাকাতে বলে তীর ছুড়ে মারলো।।।‌

__________________

নানা রকমের ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত হয়ে আছে চারিপাশ।।তার সাথে দুই মনের অনুভূতি গুলো জেগে উঠেছে।। একজনের ভালোবাসার মানুষটির জন্য আর অপর জনের প্রকৃতির সৌন্দর্যের জন্য।।। আয়ানা আর ইরফান বিশাল বড় বাগানে দাঁড়িয়ে আছে।।রং বেরঙের নানা ধরনের ফুল দিয়ে ভরতি বাগানটি।।।আয়ানা আলতো স্পর্শে ফুল গুলো ছুঁয়ে দিচ্ছে।। মুখে তার ঘায়েল করা হাসি। অপরূপ মনোমুগ্ধকরণ সেই হাসি।।‌ইরফান তা উপভোগ করছে।। হাজার ফুলের মাঝে এই জিবন্ত ফুলটি তার প্রিয় তার প্রিয়তমা।।।যাকে সে মন উজাড় করে ভালোবাসে আর আরো ভাসতে চায়।।‌গভীর থেকে গভীর ভাবে।।‌‌আয়ানা সব ফুল গুলোতে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে হঠাৎ তার নজর যায় বাগানের এক পাশের বড় বকুল গাছটায়।।‌বকুল গাছ দেখে তার খুশি কে দেখে।।
আয়ানার বকুল ফুল ভীষণ পছন্দের বাড়ির সামনে বকুল গাছ লাগানোর কথা বলেছিলো শীতলকে কিন্তু শীতল না করে দিয়েছে বলেছে বকুল গাছে নাকি সাপ জীন পরী থাকে।।‌এসব আগের দিনের কথা হলে কি হবে এগুলো তিনি খুব মানেন।। বাড়িতে সুন্দরী মেয়ে থাকলে এইভাবে ও বেশি জীনের নজরে পরে এমন অনেক কথা।।আয়ানা মাটিতে এতো বকুল ফুল দেখে নিজেকে সামলাতে পারছে না মনটা শুধু আঁকুপাঁকু করছে!আয়ানা একনজর ইরফানের দিকে তাকাতে ইরফান চোখ দিয়ে ইশারা করে।। ইরফানের ইশারা পেতে আয়ানাকে আর পায় কে আয়ানা ছোট লাগায় বকুল গাছের নিচে।। ইরফান এইভাবে ছুটার জন্য বকবে প্রস্তুতি নিচ্ছিলো কিন্তু আয়ানার মুখের হাসি দেখে তা আর হলো না।। একজন মালীকে ইশারা করতে একটা ঝুড়ি নিয়ে হাজির হন।। ইরফান ঝুড়ি হাতে মুচকি হেসে আয়ানার পাশে গিয়ে বসে।।আয়ানা একমনে মাটিতে হাটু ভড় করে বসে বকুল কুড়াতে ব্যস্ত। ইরফান আয়ানার উরনার থেকে বকুল ফুল গুলো ঝুড়িতে নিচ্ছে।। আলাদা প্রশান্তি পাচ্ছে!এমন করে কখনো বকুল কুড়িয়েছে বলে তার মনে নেই।।‌নিজের বউয়ের ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কতো কিছু করছে।হায়! ইরফান ভেবেই আবাক লাগছে।। ইরফান মাথা তুলে পাশে তাকিয়ে দেখলো সবাই আড়চোখে তাকে দেখছে।‌সবার কাছে এটা বাদিয়ে রাখার মতো নিউজ।।। ইরফান কে তাকাতে দেখে সবাই ভয়ে আবার নিচে দিকে তাকিয়ে ফেলে।।।আয়ানা এক ঝুড়ি বকুল কুড়িয়ে ক্ষেন্ত হন!! ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে বললো শেষ?
__আয়ানা তৃপ্তির হাসি ফুটিয়ে মাথা নাড়লো যার অর্থ শেষ তার ফুল কুড়ানো।।‌আয়ানার মুখে তৃপ্তির হাসি দেখে ইরফানের মুখে বিজয়ের হাসি ফুটে উঠে।। ইরফান আয়ানার হাত ধরে উঠিয়ে বাড়ির ভেতরে যাওয়ার পথে রওনা হলো।। একজন মালির হাতে ফুলের ঝুড়ি দরিয়ে দিয়ে ইশারা করে বললো এগুলো দিয়ে তার আয়ু জানের জন্য মালা বানানোর জন্য।।।।

“ভালোবাসি ভালোবাসাকে! ভালোবাসি হ্নদয়মহিনিকে”
ভালোবাসি আমার প্রিয়তমাকে! আমার বৃদ্ধ বয়সের পথ চলার সাথী কে! ভালোবাসি আমার #বিষাক্তময়_আসক্তি কে!”(ইরফানের প্রেমকথন)




#To_Be_Continued………….🌼

(গল্পটা কেমন হচ্ছে সবার গঠন মূলক মন্তব্য আশা করছি।।। এর থেকে বড় পর্ব দিতে পারবো না।।। এতো কষ্ট করে লিখার জন্য সবাই গঠন মূলক কমেন্ট করে আমাকে খুশি করবেন ।। next লিখা থেকে বিরত থাকুন আপনারা না বললে ও আমি next দিবো।।আর আমি নতুন লেখিকা একটু সময় লাগে গল্প লিখতে তাই দেরি করে দেওয়ার জন্য দুঃখিত।। ধন্যবাদ 😌)

#Happy_Reading😊

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here