বিষাক্তময় আসক্তি – পর্ব ২৮

0
709

#বিষাক্তময়_আসক্তি (The Villain😈)
#Sumaiya_Akter_Mim
#পর্ব_২৮……………🌼

ছাদের বেতের সোফায় বসে আছেন জায়েদ আহাম্মেদ!হাতে গমের পেকেট নিয়ে চোখের চশমা ঠিক করে গম ছুড়তে লাগলো মাটিতে।। জায়েদ আহাম্মেদ গম ছুড়ে মারতে একজোড়া পাখি ছাদের রেলিং থেকে নেমে এসে মাটিতে গম খেতে শুরু করে।। জায়েদ আহাম্মেদের মুখে কষ্টের ছাপ বার বার দীর্ঘশ্বাস ফেলে মাটিতে গম ছুড়ে মারছে।।। পাখি দুটো আনন্দের সাথে আহার করছে।।। পাখি দুটো গ্ৰাম থেকে আনিয়েছেন তিনি আয়ানার জন্য।।গত শীতে পাখি দুটোকে জায়েদ আহাম্মেদ তার নানার বাড়ি থেকে আনিয়েছেন।।‌আয়ানার পাখি খুব পছন্দের!তাই এক জোড়া পাখির আবদার করেছিলো বাবার কাছে।।।মেয়ের কোনো ইচ্ছেই অপূর্ণ রাখেনি তিনি।। এটাও না!বড় আদরের যে এই মেয়ে! মেয়ে ছাড়া শ্বাস নিতে ও কষ্ট হয় তার।। বাড়িটা কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে।। প্রতিদিন আয়ানা পাখি দুটোর সাথে সময় কাটায়।। নিজের মিষ্টি মিষ্টি কথায় খুব শীঘ্রই পাখি দুটোকে নিজের বন্ধু করতে সক্ষম হয়।।রোজ বিকেলে পাখি গুলোকে খাবার খাওয়াতে আসলে জায়েদ আহাম্মেদ ও মেয়ের সাথে পাখিদের খাবার খাওয়াতে আসেন দুই বাবা মেয়ে অনেক হাসাহাসি ও মাজার মধ্যে পাখিদের খাবার খাওয়াতো।। পাখি দুটোর সুন্দর নাম ও দিয়েছে সে ইনো আর পিনো।ইনো হচ্ছে ছেলে পাখির নাম পিনো হচ্ছে মেয়ে পাখির নাম।।। পাখি দুটো ও আয়ানাকে খুব ভালোবাসে তাইতো আয়ানা কোথায় গেলে উদাসী হয়ে থাকে।। আজকে ও কোনো প্রানবন্তর নেই অন্য দিনের মতো! ছুটাছুটি করে ও খেলছে না! শান্ত ভাবে খাবার খেয়ে চলছে।।। আজকে মেয়ে নেই একা একা তাকে পাখিদের খাবার দিতে হচ্ছে।।। মেয়েকে বড্ড মিস করছেন তিনি! তাইতো মেয়ের পছন্দের প্রত্যেকটা কাজ করছেন।। চোখের কোণে পানি চিকচিক করছে। চশমা টা ও ছাপসা হয়ে গেছে। জায়েদ আহাম্মেদ চোখের চশমাটা খুলে চোখের বিন্দু পানি গুলো মুছে ফেললো পকেট থেকে রুমাল বের করে চোখের চশমাটা মুছে পুনরায় পরে নিলো।।।কখনো ভাবেনি , এতো দূরে মেয়ের থেকে থাকতে হবে।।। কালকে রাতের ফ্লাইটে বাংলাদেশে ব্যাক করেন সবাই।। অসুস্থ মেয়েকে ফেলে একদম আসতে ইচ্ছে করছিলো না।।আসার সময় মেয়েকে সুস্থ দেখে নিশ্চিন্তে আসেন কিন্তু মেয়ের চোখের পানি গুলো বড্ড পিরা দিচ্ছিলো তাকে।।।বার বার কেঁপে উঠে কাঁদছিলো !মেয়ের চোখের পানি দেখে অপরাধবোধে হচ্ছিলো খুব নিজের কাছে।।। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিয়ে চলে আসেন।।

“তোমার চা! মিসেস শীতল মলিন হেসে স্বামীর হাতে চা দিলেন।।।
চায়ে চুমুক দিয়ে পাশের ছোট টেবিলের উপর কাপ টা রেখে বউয়ের হাত ধরে নিজের পাশে বসান জায়েদ।।। স্বামীর পাশে বসে মাথা এলিয়ে দেন কাঁধে মিসেস শীতল।।।। কিছুক্ষণ দুজনে নিরবতা পালন করে মিসেস শীতল বলে উঠলো,,,
__খুব মনে পরছে মেয়েটাকে!একা একা কী করছে এখন কে জানে! খুব মিস করছে হয়তো আমাদের।।।(কাঁপা কাঁপা গলায় )
__হুম!ছোট একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলো জায়েদ আহাম্মেদ।।
__মেয়েটার সাথে বড্ড অন্যায় হয়েছে।।।আয়ানা কি এসবের জন্য মনে মনে আমাদের দায়ী করবে? আমরা ওর সঠিক আব্বি আম্মি হয়ে উঠতে পারেনি! বলে হাউমাউ করে কান্না করে দিলেন তিনি।। এতোক্ষণের জমানো কষ্ট গুলো পানি হয়ে বের হচ্ছে।।।
জায়েদ আহাম্মেদ বউয়ের মাথা টা বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে তাকে বুঝাতে লাগলো,,
__আমাদের প্রিন্সেস কখনো আমাদের ভুল বুঝবে না।।সে জানে তার আব্বি আম্মি কখনো তার সাথে অন্যায় করবে না।।।
__আয়ানা মানিয়ে নিতে পারবে তো এইসব। খুব কী প্রয়োজন ছিলো এই অল্প বয়সে এমন কিছু হওয়ার! বিধাতা কেন এই ছোট্ট মেয়েটাকে কষ্ট দিচ্ছে।কেন বিধাতা সহায় হচ্ছে না।। কেন বাবা মা হওয়ার শর্তে ও মেয়ের যখন আমাদের বেশি প্রয়োজন তার কাছে থাকতে পারছি না তাকে সাহায্য করতে পারছি না।।কেন সবসময় আগলে রেখে ও এই কষ্টের সময় তাকে একা একা পথ চলতে হবে! বলতে পারো কেন।। বলে আবার ডুকরে কেঁদে উঠেন তিনি।।।।।।।।
__র্ধৈয্য ধারন করো! বিধাতার উপর আস্থা রাখো! বিধাতা নিশ্চয়ই ভালো কিছু রেখেছে প্রিন্সেসের কপালে।।এটাই হয়তো নিয়তি প্রিন্সেসের ভাগ্য।। বিধাতা পরিক্ষা নিতে পছন্দ করেন!আর পরিক্ষা উর্ত্তীন কারিকে সুন্দর পুরষ্কার ও প্রদান করেন!!আয়ানা এখন একা নয় তার সাথে তার জীবন সাথী ও আছে।। বাকি জীবন তার সাথে কাটাতে হবে।।।পথ চলতে হবে।। আল্লাহ যেনো প্রিন্সেসকে সব মানিয়ে নিতে সহায়তা করে।। জীবনের মানে বুঝায় স্বামীর স্ত্রীর মাঝেকার বন্ধন বুঝিয়ে দেয়।।।(আমিন)
স্বামীর কথা শুনে শান্ত হোন তিনি।। তারপর স্বামীর দিকে তাকিয়ে বলেন,,,
__একবার ওই বাড়িতে কল করবে। ইরফানকে বলবে আয়ানাকে নিয়ে একবার এখানে আসতে।।কান্না ভেজা কন্ঠে।।
__এখন না! কিছু দিন যাক তার পর বলবো নিয়ে আসতে! কিছু দিন এখানে থেখে যাবে।।‌
__আচ্ছা ঠিক আছে! বলে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পাখি গুলো খাঁচায় রেখে আয়ানার ঘরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলো !এই গুলো আয়ানার রুমে রাখবে ,তা নাহলে আয়ানা এসে বলবে;
“আম্মি! তুমি আমার অনুপস্থিতিতে আমার পাখি দুটোর স্থান বদলে দিয়েছো! আমার প্রত্যেকটা জিনিস সরিয়ে দিয়েছো তুমি আমাকে একদম ভালোবাসো না বলে মুখ ফুলিয়ে বাবার কাছে নালিশ করতে চলে যাবে!আর তাকে সরি বলে মানাতে হবে মেয়েকে।এমন পিচ্চি মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে সে তার থেকে এখন অনেক দূরে থাকে ভাবতেই বুকটা ফাঁকা ফাঁকা মনে হয়
লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।।

____________________________________

গুরি গুরি স্নো ফল হচ্ছে!হালকা বাতাসের তাল মিলিয়ে উড়ছে আয়ানার লম্বা চুলগুলো আর তার গায়ের উরনাটাও।।আয়ানা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে আজকে আকাশে না আছে তারা দের মেলা আর না আছে ওই আকাশের মধ্যে রুপালি থালার মতো চাঁদ টা ও আজকে নেই ।। আকাশের অবস্থা জানান দিচ্ছে শেষ রাতের মধ্যে ঝড় উঠবে।।আর সেই বিশাল তুষার পাতের কারনে রাস্তা দালান গাছপালা পাহাড় সব বরফে ডাকা পরে যাবে!এই দৃশ্য দেখতে মন্দ লাগে না অসাধারণ সুন্দর লাগে।।।।

__হঠাৎ বকুল ফুলের তিব্র গন্ধে আয়ানা চোখ দুটো বন্ধ করে জোরে নিঃশ্বাস টেনে নেয়।। হঠাৎ শরীরে কিছু জড়ানের আবেশ পেয়ে চমকে চোখ দুটো খুলে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে তাকে বড় কালো জ্যাকেট সহ জড়িয়ে ধরে রেখেছে ইরফান।। মুখটা তার চুলের ভেতরে। ইরফান কে দেখে আয়ানা চমকে যাওয়া চোখ দুটো স্বাভাবিক করে আবার সামনের প্রকৃতি দেখছে।।।ইরফান আয়ানার চুলে মুখ রাখা অবস্থায় বলে,,,

__এতো ঠান্ডার মাঝে এখানে কি করছো আয়ু!আর শরীরে শাল জেকেট কিছুই জড়ানো নেই কেনো?
__আ-আমার ঠান্ডা লাগছিলো না! বলে মাথাটা নীচু করে ফেলে।।।
ইরফান আয়ানার হাত ধরে সামনের দিকে ঘুরিয়ে আয়ানার কোমরে শক্ত করে হাত রেখে রেলিং এর সাথে ঠেসে ধার করিয়ে আয়ানার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করালো। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলতে লাগলো,,,,
__এতো ঠান্ডায় তোমার ঠান্ডা লাগছে না!একদম মিথ্যা বলবে না। তোমার লাল লাল গাল আর টমেটোর মতো নাকটা বলে দিচ্ছে ঠান্ডা লাগছে কিনা? বলে আয়ানার নাকের ডগায় হালকা কামড় দেয়।।কামড় টা হালকা হলে ও বেশ লেগেছে আয়ানার ! মৃদু আওয়াজ করে নাক ঘসতে লাগলো।। ইরফান আয়ানার নাক ঘসা দেখে ফিক করে হেসে দেয় একদম বাচ্চাদের মতো লাগছে আয়ানাকে।।‌ইরফানের হাসি দেখে আয়ানা তো অবাক,এই রাগ চটা ভিলেন হাসতে ও পারে এই কথা মনের ভেতর আওড়াতে লাগলো।। ইরফানের হাসিটা একধম বুকের মাঝে গিয়ে বিঁধছে! ইরফান যখন তার সাদা মনির চোখ দুটো ছোট করে হাসে দুই গালে ছোট দুটো টোল পরে অদ্ভুত সুন্দর দেখতে লাগে তাকে।।আয়ানাকে ইরফানের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে ইরফান মুচকি হেসে আয়ানার আরো কাছে চলে আসে।। ইরফানকে কাছে আসতে দেখে আয়ানা তারাতাড়ি করে নিজের চোখ নামিয়ে চুল গুলো কানের পেছনে গুজে দেয়।। ইরফান আয়ানার গুজে দেওয়া চুল গুলো নিজের হাত দিয়ে সামনে এনে পুনরায় চুল গুজতে গুজতে বলে,,
__তোমার চুল গুজে দেওয়া আমার কাজ দ্বিতীয় বার কখনো চুল গুজবে না!আর আমার দিকে লুকিয়ে না তাকিয়ে সামনাসামনি তাকাও আমি তো সম্পূর্ণ তোমারই বলে দুষ্ট হাসি দেয়।‌‌
ইরফানের কথায় লজ্জায় আয়ানা উরনার কোণায় নিজের আঙ্গুল পেছাতে লাগলো।।। ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে আয়ানার হাত ধরে নিজের কাছে থাকা বকুল ফুলের মালাটা আয়ানার হাতে সুন্দর ভাবে জ
বেঁধে দেয়!আয়ানার হাতে চুমু দিয়ে আয়ানার হাত থেকে বকুল ফুলের ঘ্রাণ নেয় ।। তারপর আয়ানার হাত ধরে ভেতরে নিয়ে যেতে নিলে আয়ানা দাঁড়িয়ে থাকে!তা দেখে ইরফান ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে কী হয়েছে?
আয়ানা আমতা আমতা করে বললো,
__আরেকটু থাকি! রুমের ভেতরে আমার ভালো লাগছে না।। ধিরে গলায় বলল।।
ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে আয়ানার গাঁয়ে মুড়ানো জ্যাকেটাকে খুলে সুন্দর ভাবে পরিয়ে গলা পর্যন্ত চেইন লাগিয়ে দেয় যাতে করে ঠান্ডা না লাগে ভেতর থেকে চাদর এনে মাথা থেকে সারা শরীর ডেকে দেয় যাতে কোনো মতে ঠান্ডা না লাগে!আয়ানা গোল গোল চোখে ইরফানের সব কান্ডকলাপ গুলো কচ্ছপের মতো মাথা বের করে দেখছে।। এতো বড় জেকেটে তার পিচ্চি শরীর টা একটা কচ্ছপের মতোই মনে হচ্ছে একটু জায়গা ফাঁকা রাখে নি। ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করে বললো,,
__ডান! এবার ঠিক আছে।আর ঠান্ডা লাগবে না মাথার চাদরটা টেনে মুচকি হেসে বলল, আমার পিচ্চি বউ।‌ইরফানের মুখে বউ ডাকটা এক অন্যরকম শিহরণ জাগাচ্ছে তাকে।।আয়ানা ইরফানের তাকানো দেখে মাথা নিচু করে ফেলে! ইরফান আয়ানাকে কোলে তুলে মিনি ছাদে রাখা সোফার উপর বসে আয়ানাকে পাশে বসিয়ে জড়িয়ে ধরে।।। পকেট থেকে মোবাইল বের করে একজন র্সাভেন্টকে কল করে একটা ব্লাক কপি নিজের জন্য আর আয়ানার জন্য একটা হট চকলেট নিয়ে আসতে বলে।।।। কিছুক্ষণ আগে ডিনার করেছে এখন আবার হট চকলেট খেতে হবে ভেবে আয়ানার চেহারায় বিষাদের ছায়া নেমে এসেছে।।হট চকলেট তার ভিষন পছন্দের একটা খাবার কিন্তু এখন তা খেতে একদম ইচ্ছে করছে না!কারন ডিনারে ইরফান বেশ কিছু খাবার জোর করে খাইয়েছে যার কারনে পেট একদম ফোল!আয়ানা কাচুমাচু করে বললো,,
__আ-আমি এখন কিছু খাবো না! আমার পেট ফোল হয়ে আছে আর বেশি খেলে ফেটে যাবে! করুন চোখে।।
ইরফান মোবাইল টেবিলের উপর রেখে বলতে লাগলো,,
__কিছু হবে না আয়ু! খাবারের প্রতি এতো অনিহা ঠিক না! অসুস্থ হয়ে পরবে!এতে তোমার কষ্ট হবে আর তোমার কষ্ট আমি একদম সহ্য করতে পারি না।আর না খেতে খেতে একদম চুনুপুটির মতো হচ্ছো পরে আমার ভাড় কী করে সামাল দিবো আয়ু জান বাঁকা হেসে।।।
ইরফানের এতো ভাষণ শুনে আয়ু বেচারি চুপ হয়ে যায় ।। দরজা টুং টুং আওয়াজ হতে ইরফান আয়ানাকে বসিয়ে রুমের ভেতরে চলে যায় দরজা খুলে র্সাভেন্টের হাত থেকে ট্রে এনে দরজা লাগিয়ে আসতে নিবে রুমের ছোট বারের টেবিলের উপর চোখ যায় !রেপিং কাগজে মোড়ানো বিশাল গিফটার উপরে নজর যায়।। ইরফান মুচকি হেসে অন্য হাতে গিফটা তুলে নেয় অনায়াসে।।

__আয়ানা হট চকলেটের মগে চুমুক দিচ্ছে আর আড়চোখে একবার ইরফানের দিকে তো একবার তার পাশের বড় রেপিং কাগজে মোড়ানো জিনিসটির দিকে তাকাচ্ছে।।বড্ড খচখচ করছে মনটা,কী আছে দেখার জন্য! কিন্তু ইরফান বলেছে খাওয়া শেষ না করা অব্দি এটায় যেনো হাত না দেয়।।খারুচ ভিলেন একটা।।আয়ানা মনে মনে ধারণা করতে পারছে কী আছে এতে?যদি যা ভাবছে তা হয় সে অনেক খুশি!!

__________________________________________

ডার্ক নীল আর কফি কালারের কমিনিকেশন গিটারটা আয়ানা নেড়েচেড়ে দেখছে।চোখ মুখে খুশির ঝলক! ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে কফির মগে চুমুক দিচ্ছে।।। আজকে দুপুর বেলায় গার্ডদের দিয়ে এটা কিনিয়ে আনিয়েছে আয়ানার জন্য।।বাজারের সবচেয়ে ভালো ব্রেন্ডের এবং কি নিউ ডিজাইনের গিটার।।আগেরটা থেকে ও খুব সুন্দর নজর কাড়া।।।রেপিং পেপারে মোড়ানো বিশাল জিনিসটা কী তা জানার জন্য তারাতাড়ি করে মগের হট চকলেট শেষ করে আয়ানা তারপর ইরফানের অনুমতি ছাড়াই রেপিং পেপার খুলতে ব্যস্ত হয়ে পরে।। কোনো বিষয়ে খচখচ ভাব তার ভালো লাগে না অধৈর্য হয়ে পড়ে সে।।ইরফান ও আয়ানাকে রেপিং পেপারে খুলতে সাহায্য করে।।রেপিং পেপার খুলে এই চকচকে গিটার দেখে খুশিতে আত্মহারা হয়ে ইরফানকে জড়িয়ে ধরতে গেলে কী করছে মনে পরতে লজ্জায় আবার নিজের কাজ করতে মনযোগী হবে এর আগে আয়ানার হাত ধরে ইরফান আয়ানাকে জরিয়ে ধরে।।‌
__যা করছিলে তা থেকে ফিরে কেনো গেলে? পরবর্তীতে এমন করলে ডাবল রোমেন্স হবে আর এটা আমার প্রাপ্য আমর অধিকার! ভুলে ও আমার প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছো তো তোমাকে এর জন্য ভোগতে হবে পিচ্চি! বলে আয়ানার কপালে ডিপ কিস করে ছেড়ে দেয়।।।।।

__কেমন হয়েছে ?গিফট পছন্দ হয়েছে তো?
আয়ানা মুচকি হেসে বলল,জ্বি অনেক!
__আমি তোমাকে এতো সুন্দর একটা গিফট দিয়েছি এর জন্য একটি ধন্যবাদ আমার প্রাপ্য! তুমি কিন্তু তা দিলে না!এটা কিন্তু ঠিক না আয়ু জান!ইনোসেন্ট ফেইস বানিয়ে।।।
__আ_আপ ধন্যবাদ আপনাকে।।। মাথা নিচু করে।।
এখন তো শুধু শুকনো ধন্যবাদে চলবে আয়ানার কোমরে হাত দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসলো!
ইরফানের কথা শুনে আয়ানা শুকনো ঢুক গিললো।‌আবার তাকে চুমু খেতে বলবে না তো সেই ভয়ে।।। ইরফান আয়ানার ফেইস দেখে মৃদু হেসে আয়ানাকে আরেকটু গভীরভাবে জড়িয়ে ধরলো তারপর আয়ানার গালে নিজের বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে স্লাইট করতে লাগলো লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।আয়ানা চোখ দুটো চেপে বন্ধ করে রেখেছে।। ইরফান আয়ানার কানের কাছে নিজের মুখ নিয়ে স্লো ভয়েসে বললো,,,,

__”তোমাকে আমার সাথে গিটার বাজাতে হবে। বলে আয়ানার মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো!আয়ানা ইরফানের কথা শুনে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে মুচকি হেসে মাথা নাড়ায়।।।।
ইরফান আয়ানাকে নিজের কোলের উপর বসিয়ে দিয়ে হাতের গিটার টা আয়ানার কাছে দিয়ে গিটার সহ আয়ানাকে জড়িয়ে ধরলো! ইরফান নিজের হাতের সাথে আয়ানার হাত গিটারের টুংটাং শব্দ করতে লাগলো।। ইরফান খুব ভালো গিটার বাজাতে পারে সাথে আয়ানাও তাই দুজনে মিলে অসাধারণ সুন্দর সুর তৈরি করলো!ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে দেখলো আয়ানার ঠোঁটে মৃদু হাসি!আয়ানার দিকে তাকিয়ে ইরফান মুচকি হেসে গান গাওয়া শুরু করলো,,

🎶🎶🎶
রুহানি্ সি্ এক সা্ম হোগি্,
হালকি্ তেরি্ উসমে্ আওয়া্জ্ হো্গি্! (2)

তু না্ যা্য়ে্ কা্ভি্ ,
এ্যেতে বা্র কারু্,
তু না্ যায়ে্ কাভি্,
খুদাছে্ এ্যেহি্ কাহু!

মে্ যোভি্ হু্ য্যে্সা্ হু,
তুঝপে রেহতে্ খুতাহু্,
তু মেরা্ আজ্ হে্,
মেরা্ কাল্ হে্ ,
মেরি্ জিনদি্গি কি্ দুয়া! (2)

তু দুয়া হে্,
তু হি্ হে্ মে্রা্ কা্রা্ম,
তু্ঝ্পে্ হি্ শুরু্ ,
তুঝ্পে হি্ খা্তাম্! (2)

শে্হরো মে্,
গ্যালি্ও মে্,
আপনো মে্,
পরারাও মে্
ঢুন্ডা্ তুঝে্! (2)

মিল্ যা্য়ে্ মুঝে,
তু কাহি্ রু্বারু্,
তু হি্ দিখে্ মে্ যাহা রা্হু!

মে্ যোভি্ হু্ য্যে্সা্ হু,
তুঝপে রেহতে্ খুতাহু্,
তু মেরা্ আজ্ হে্,
মেরা্ কাল্ হে্ ,
মেরি্ জিনদি্গি কি্ দুয়া!

তু দুয়া হে্,
তু হি্ হে্ মে্রা্ কা্রা্ম,
তু্ঝ্পে্ হি্ শুরু্ ,
তুঝ্পে হি্ খা্তাম্! (2)

(আমার প্রিয় গায়ক দার্শান রেভেলের গান! আমার খুব পছন্দের আপনারা চাইলে গানটা শুনতে পারেন 😊)

ইরফান সম্পূর্ণ গানটা আয়ানার দিকে তাকিয়ে গাইলো!আয়ানা গিটার বাজানোর পাশাপাশি বার বার আড়চোখে ইরফানকে দেখেছে!এতো সুন্দর করে ইরফান গান গাইতে পারে তার ধারনার বাহিরে! অপরূপ সুন্দর হয়েছে গানটা।আয়ানার ইচ্ছে হলো বলতে আরেক বার গাইবেন প্লিজ অসাধারণ সুন্দর হয়েছে! কিন্তু মুখে কিছু বললো না শুধু মাত্র একটা হাসি ছাড়া! গানের সুর আসে মন থেকে তোমার মন যেমন থাকবে তোমার গানের সুর ও তেমন উঠবে।।সবাই বলে হ্নদয়হীন পাষান মায়াহীন মানুষ যাদের মন বলতে কিছু নেই তার মন থেকে কিছুতে সুর আসবে না! তাহলে ইরফানের এই গানের মানে কী?শুধুই কী ভালোবাসা থেকে এমন সুর তোলা যায় ? না এমন তেমন ভালোবাসা না গভীর ভালোবাসার প্রয়োজন যা একজন ভালো মনের অধিকারী ব্যাক্তির দ্বারা সম্ভব।।ইরফান তাকে পাগলের মতো ভালোবাসে তা সে জানে সে বোকা নয় একজন ব্যাক্তি তার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য ঝটপট করবে আর সে বুঝবে না এতো অবুঝ সে নয়।।। কিন্তু ইরফানের পাগলামো আর তার প্রতি জোর খাটানো গুলো তাকে ইরফানের প্রতি ভয়ের সৃষ্টি করে! কিন্তু এখন যেই ইরফানকে সে দেখছে তার সাথে রাগি ইরফানের মিল নেই যাকে সে খুব ভয় পায় এই যেনো অন্য এক ইরফান। এমন কাউকে তো সব মেয়েরা চায়।সাবার মতো সে ও একজন ! যে তাকে ঠিক এই ভাবে আগলিয়ে রাখবে যে বকবে কিন্তু কখনো ছেড়ে যাবে না!যে শুধু তার ভালোবাসার কারন হবে কষ্টের না।। পারবে কি সে আমার জন্য নিজেকে বদলাতে! আমি যেমন ভাবে বাঁচতে চাই ঠিক সেই ভাবে বাঁচতে দিবে। আমার ছোট ছোট স্বপ্নগুলোকে পূরন করবে ঠিক এখন যেমন করছে।। হঠাৎ ইরফানের ডাকে ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে আয়ানা!সে এতোক্ষণ যা ভাবছিলো তা কখনো হবে না! কখনো না! মনে মনে কথা গুলো ভাবে আয়ানা। ভালোবাসার মানে কি সে জানে না।। কিন্তু এই অদ্ভুত অনুভূতি গুলো যা নতুন নতুন তার ছোট মনে বিস্তার করছে এসবের নাম সে কি দিবে।।।প্রথম দিনের সেই ওয়েটার কে মারা তার পর জিসানকে মারা। এই দুটো জিনিস তাকে ইরফানের প্রতি ভয়ের পরিমাণ সব সময় বাড়িয়ে দেয়!ইরফান কখনো তার মনের মতো হতে পারবে না কখনো না।।।।।
না তাদের পথ এক হবে।সে বুঝতে পারছে না কিছু বুঝতে পারছে না!তার ছোট মাথায় সব গুলিয়ে যাচ্ছে! কোথায় পাবে এতো উত্তর! কোথায় পাবে নিজের সুখের ঠিকানা।।

__অনেক রাত হয়ে গেছে এখন ঘুমাতে হবে আয়ু।।আর ঠান্ডা বেরে যাচ্ছে তোমার জ্বর হয়ে যাবে!চলো বলে আয়ানাকে কোলে তুলে নেয়! রুমের ভেতরে প্রবেশ করে আয়ানাকে বিছানায় সুইয়ে দিয়ে মিনি ছাদের দরজা আটকে দেয় যাতে রুমে বাহিরের ঠান্ডা ভিতরে না ঢুকতে পারে।।। ইরফান রুমে এসে আয়ানার পাশে শুয়ে আয়ানাকে বুকের উপর জরিয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে নেয়!আয়ানা ও ইরফানের বুকে চোখ বন্ধ করে গভীর নিদ্রায় তলিয়ে যায় কিছু সময়ের মধ্যে।।






#To_be_continued………………🌼

( এটা আমার প্রথম গল্প একটু আধটু ভুল হতে পারে তার জন্য আমি আগে থেকে দুঃখ প্রকাশ করছি।।ছোট খাটো ভুল গুলো সবাই সংশোধন করে পরে নিবেন।।আর কেমন হচ্ছে তার গঠন মূলক মন্তব্য করবেন সবাই।। অনেকেই দুটো করে পর্ব চাচ্ছেন কিন্তু আমার কাছে দুটো পর্ব দেওয়া সম্ভব না। তবুও আপনাদের খুশির জন্য একদিন সময় করে বোনাস পর্ব দিবো কিন্তু তার জন্য আমার একটি শর্ত আছে আমার জন্য আমিত্তি(জিলেপি) পাঠাবেন 🤤।।
ধন্যবাদ 😌 )

#happy_reading..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here