অবৈধ_সম্পর্ক
#Part_14 + 15
Writer_Sukhi Akther ✍️
.
.
.
সকালে হাসপাতালে ডাক্তারের চেম্বারে বসে বসে জিমুচ্ছে ইয়াদ ।
প্রচুর ঘুম পাচ্ছে কিন্তুু ঘুমাতে পাচ্ছে না । ডাক্তার সেই যে গেলো ওপারেশন থিয়েটারে আসার কোনো নাম গন্ধ নাই ।
কাল রাতে একটু বেশি হয়ে গেছিলো । তা না হলে এত বড় একটা আপদ কাল রাত থেকে নিজের সাথে করে নিয়ে বেড়াতে হতো না ।
২ঘন্টা পর ডাক্তার আসলো মুখ কালো করে ।মরে গেলো কিনা আল্লাহ ভালো জানে ।এত গাড়ি থাকতে শেষে কিনা আমার গাড়ির সাথে Accident করতে হলো ? (মনে মনে হাজার টা গালি দিচ্ছে মেয়েটা কে )
.
ডাক্তার ::::::::::: রোগীর শরীলের কন্ডিশন বেশি ভালো না । তার উপরে আবার মাথায় চোট পেয়েছে । যদিও এখন বিপদ মুক্ত কিছু দিন রেষ্টে থাকলে সুস্থ হয়ে যাবে ।
.
ডাক্তারের কথা শুনে ইয়াদ যেনো হাফ ছেড়ে বাচঁলো ,যাক বাবা আপদ বিদায় হবে তাহলে ।
.
ইয়াদ ::::::::::: তাহলে আমি কি এখন বাসায় যেতে পারি ?
.
ডাক্তার ::::::::: আপনি তো উনাকে নিয়ে যেতে পারবেন না । তাছাড়া আপনার বাড়ির বাকি সবাই কি জানে উনার Accidentএর কথা ?
.
ইয়াদ যদি এখন বলে মেয়েটি কে সে চিনে না তাহলে Accident এর কারনে পুলিশের ঝামেলায় পড়তে হবে । তারপর আবার অন্য ঝামেলায় পড়া লাগে কিনা ।
ইয়াদ স্বাভাবিক হয়ে ডাক্তার কে বললো ,
.
ইয়াদ :::::::::::: আসলে হয়েছে কি আমার Wife এর মা বাবা কেউ নেই । আর আমার মার হার্টের সমস্যা তাই বাড়িতে কাউকে কিছু জানাই নি । সুস্থ হয়ে গেলে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সবাই কে বুঝিয়ে বলবো ।
.
ডাক্তার :::::::::::: আচ্ছা বলুন তো আপনার ওয়াইফের এমন অবস্থা হলো কি করে ? আপনারা দুজন তো এক সাথে ছিলেন তাই না ?
আপনার সুস্থ বাট আপনার ওয়াইফ মাথায় এমন আঘাত কি করে পেলো ?
.
ইয়াদ এখন ডাক্তার কে কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না । কি করে বলবে নেশা করার কারনে গাড়ি accident করেছে ।
মা কতো বার বারন করেছে আমি যাতে নেশা করে গাড়ি ডাইব না করি । মায়ের কথা না শুনার ফল পাচ্ছি ।
একজন নার্স এসে বললো , ৩৪নাম্বার কেবিনের রোগীর জ্ঞান ফিরেছে ।আমার হঠাৎ মনে হলো ৩৪নাম্বারে তো ঐ মেয়েটা আছে যাকে কাল রাতে আমি হসপিটালে এডমিট করেছি । যাক, বাবা শেষে কিনা মেয়েটা বেচেঁ আছে ।এখন ভালোয় ভালোয় মেয়েটা কে বিদায় করতে পারলেই হলো ।
কি হলো ইয়াদ সাহেব আপনার ওয়াইফের জ্ঞান
ফিরেছে উনার কেবিনে যাওয়া যাক । ডাক্তার সাহেবের কথায় ইয়াদ ভাবনার জগৎ থেকে ফিরলো ।
.
ইয়াদ::::::::::::::: হুম চলুন
.
ডাক্তার :::::::::::: বুঝলেন ইয়াদ সাহেব এখন প্রায়ই দেখা যায় নিজের ওয়াইফ কে খুন করে আবার নিজেই হসপিটালে নিয়ে এসে কান্নাকাটি জুড়ে দেয় ।
.
ইয়াদের এখন রাগই হচ্ছে ডাক্তারের উপর খোচাঁ মারছে তাকে । অন্য সময় হলে দেখতো ইয়াদ কি জিনিস? ভাগ্য ভালো এখন কোনো জামেলা করতে চাচ্ছি না ।কার না কার বউ তাকে আমি কেনো খুন করতে যাবো ? মনে মনে ভাবছে ইয়াদ
.
ডাক্তার সাহেব আর ইয়াদ মেয়েটির কেবিনের সামনে দাড়িয়ে আছে ।
.
ডাক্তার সাহেব মেয়েটি কে চেক করছেন সবকিছু ঠিক আছে কিনা ।
.
ডাক্তার ::::::::::: কেমন ফিল করছেন মিসেস ইয়াদ ?
.
ইসমাত::::::: ইসমাত আমার নাম হুম আগের থেকে এখন অনেক বেটার ফিল করছি । কিন্তুু আমি তো রাস্তায় পড়ে ছিলাম কে নিয়ে আসলো এখানে ?
তার মানে মেয়েটির নাম ইসমাত? নামটার সাথে মেয়েটার চেহারাটাও মাশাআল্লাহ অনেক মিল 😍
তাতে আমার কি 😒
মনে মনে ভাবছে আরাফ
.
ডাক্তার :::::::::: কাল রাতে আপনি আর আপনার হাসবেন্ড গাড়ি করে বাসায় যাচ্ছিলেন তারপর Accident হলো আপনার কি কিছু মনে হচ্ছে না ?
.
ইসমাত::::::::::: কাল রাতে তো কতো গুলা ছেলে তাকে তারা করছিলো তাদের কাছে থেকে বাচাঁর জন্য দৌড় দেওয়ার জন্য গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে রাস্তায় পড়ে যায় । আর কিছু মনে করতে পারছে না ইসমাত । কিন্তুু ডাক্তার কেনো তাকে মিসেস ইয়াদ বলছে ?কেনোই বলছে আমি ঐ লোকটার সাথে ঘুরতে গিয়েছি বাসায় ফিরার পথে accident হয়েছে? কিছু মিলছে না কেনো?
.
ডাক্তার :::::::::: আপনি কি কিছুই মনে করতে পারছেন না মিসেস ইয়াদ সরি ইসমাত?
বুঝলেন ইয়াদ সাহেব আপনার ওয়াইফ তো আপনার পরিচয়ে পরিচিত না হয়ে নিজের পরিচয়ে পরিচিত হতে চান উনি । I like it
ইয়াদ কিছু বলছেনা দাড়িয়ে আছে ডাক্তারের কাছে ।
.
ডাক্তার :::::::::::: ইসমাত সব সময় নিজের উপর বিশ্বাস রাখবেন যে আপনি চেষ্টা করলে নিজের লহ্মে পোছাঁতে পারবেন । নিজের প্রতি আত্ববিশ্বাস হারাবেন না কখনো ।
.
ডাক্তার ::::::::::: ইয়াদ সাহেব আপনার ওয়াইফ এখন ভালো আছে । ঔষধ গুলা ঠিক মতো খাওয়াবেন । আর সব সময় খেয়াল রাখবেন যাকে উনি কোনো প্রকার টেনশন না করে ।
.
ইয়াদ::::::::: জ্বী (হাসি মুখে )
ইসমাত এক পলকে তাকিয়ে আছে ইয়াদের দিকে ।
উনাকে দেখে তো ভদ্র পরিবারের ছেলে মনে হচ্ছে তাহলে কেনো ইয়াদ সাহেব আমাকে উনার ওয়াইফ বলছেন ডাক্তারের কাছে ?কে দিবে সব গুলা প্রশ্নের উওর ? ইসমাতের চোখেঁর সাথে ইয়াদের চোখ পড়তেই ইসমাত চোখঁ সরিয়ে নেয় ।
হঠাৎ কোথায় থেকে দুই থেকে আড়াই বছর হবে একটা ছোটো বাচ্চাঁ দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরলো ইসমাত কে আম্মুু বলে ।
.
.
.অবৈধ_সম্পর্ক
#Part_15
Writer :Sukhi Akther✍️
.
.
.
হঠাৎ কোথায় থেকে দুই থেকে আড়াই বছর হবে একটা ছোটো বাচ্চাঁ দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরলো ইসমাত কে আম্মুু বলে ।
.
সব কিছু সপ্নের মতো লাগছে ইসমাতের কাছে কেনো হচ্ছে এসব কিছু কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না । বাচ্চাটা এমন ভাবে ইমাতের বুকের সাথে মিশে আছে দেখে মনে হচ্ছে আজ কতো কাল পরে সে তার মাকে ফিরে পেয়েছে ।
ইয়াদ পরিস্থিতি বুঝার চেষ্ট করছে। নিশাত কোথায় থেকে আসলো ? আমি যে হসপিটালে এসেছি তা বাসার কেউ জানার কথাও না তাছাড়া নিশাত একা এখানে আসতে পারবে না তাহলে কে আসলো নিশাত কে নিয়ে ?
.
.
তুমি যে এমন একটা কান্ড করবে তা কখনো ভাবি নি ইয়াদ ।
ইসমাত এতহ্মন বাচ্চাটি কে নিয়ে পড়ে ছিলো তার পাশে যে একজন আছে মনে ছিলো না ।
ইসমাত দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে দুজন বয়স্ক মানুষ দাড়িয়ে আছে । মহিলাটির ৫০+ বয়স হবে তার সাথের ভদ্র লোকটির একটু বেশিই হবে বয়স তারা দুজন ইসমাতের কেবিনের কাছে আসলো । ইসমাতের কাছে সব কিছু কেমন যেনো অচেনা লাগছে ।
.
ইয়াদ ::::::::::::::: তোমরা এখানে কেনাে মা ?
.
ইয়াদের মা :::::::::::::::: তুমি আমাদের না জানিয়ে এমনটা করতে পারলে ইয়াদ? আমাদের বললে কি তোমাকে বাধা দিতাম?
.
ইয়াদের বাবা:::::::::::: দেখলে তো তোমার ছেলের কান্ড কারখানা ? তুমি তো তোমার ছেলের চিন্তায় শেষ আর এদিকে তোমার ছেলে বউ কে এক্সিডেন্ট করে হাসপাতালে বসে আছে (একটু রেগে বললে )
.
.
ইসমাতের কাছে এখন বিষয়টা ক্লিয়ার হলো উনারা দুজন ইয়াদ সাহেবের বাবা মা কিন্তুু একটা বিষয় এখনও ক্লিয়ার হচ্ছে না বাচ্চাটা কার? কেনোই বা তাকে আম্মুু বলছে ? বাচ্চাটা যে ভাবে ইসমাত কে জড়িয়ে ধরে আছে যে কেউ দেখলে বলবে বাচ্চাটা ইসমাতের । ইসমাতেরও ছোট নরম তুলতুলে হাতের স্পর্শ অন্য রকম অনুভূতি সৃষ্টি করছে । বাচ্চাটা ইসমাতের গালে কপালে কিস করতে লাগলো । ইসমাতের কাল রাতের ঘটনা টা প্রায় ভুলে বসেছে ।
নিশিতা কে ইসমাতের সাথে এমন ভাব দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছেন ইয়াদের মা বাবা । যেই বাচ্চা কিনা কোনো মানুষ কে তার কাছে আসতে দেয় না সে কিনা অপরিচিত একজনের সাথে একটু সময়ে এতটা ভাব জমিয়ে নিয়েছে।
.
.
ইয়াদের মা ::::::::::::::: এখন কি করবে ভেবে দেখেছো কিছু? তুমি কি এভাবে লুকিয়ে সম্পর্কটা রাখতে চাচ্ছো?দেখ তোমার প্রতি আমার কোনো রাগ নেই তুমি ভালো থাকলে আমার কোনো সমস্যা নাই ।
.
ইয়াদের বাবা:::::::::::: কোন পরিচয়ে আমি আমার বাড়ির বউ হিসেবে মেনে নিবো?
সমাজে আমার একটা পরিচয় আছে যাকে তাকে আমার বাড়ির বউ করবে তোমার ছেলে তাকে মেনে নিবো আমি ? দরকার হলে তোমার ছেলে আলাদা থাকবে বউ নিয়ে , আমার বাড়িতে কোনো জায়গা হবে না তোমার ছেলের ।
.
ইসমাত কিছু বলছেনা চুপ করে সবার কথা শুনে যাচ্ছে।
.
ইয়াদ ::::::::::::: চুপ করবে কি তোমরা দুজন? আমাকে তো কিছু বলতে দিবে নাকি ?সব তো তোমরাই বলছো আমি তো কিছুই বলতে পারছি না চিৎকার দিয়ে বললো ।ইয়াদ তো ভুলেই গিয়েছে সে এখন হসপিটালে রয়েছে চাইলেও এখানে চেচাঁমেচি করা যাবে না উফ, রাগের মাথায় সব কিছু ভুলে গেছে মাথা থেকে । নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছে একটা মেয়ের জন্য আজ তাকে কতো কিছুই না শুনতে হলো শেষে কিনা তার বাবা তাকে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে ?
.
ইয়াদের চিৎকার শুনে আরো শক্ত করে জড়িয়ে দরে আছে ইসমাত কে নিশিতা ।
.
ইয়াদের বাবা:::::::::::::: তুমি আর কি বলবে বলো ? যা করার তো করেই ফেলেছো আর কিছু শুনার নাই তোমার কাছে থেকে ।
ইয়াদের মাথায় এখন রক্ত উঠে যাচ্ছে ।
.
ইয়াদ:::::::::::::::: কিছুই করি নি আমি । কাল রাতের সব কিছু খুলে বললো ইয়াদ তার মা বাবা কে আর এটাও বললো যখন accident হয়েছে তখন পাশের চায়ের টং এ কিছু মানুষ ছিলো যারা ইসমাত কে পড়ে থাকতে দেখে ইয়াদ কে হুমকি দিতে লাগলো যদি সে এখন হসপিটালে না নিয়ে যায় তাহলে ইয়াদ কে তারা এখান থেকে যেতে দিবেন না এক পা । বেচারা ইয়াদ নিজে ঠিক মতো ধারাতে পারছিলোনা তার উপর আবার ইসমাত কে হসপিটালে নিয়ে আসতে কি যে কষ্ট করতে হয়েছে সেটা সে ভালো করে যানে ।
ইয়াদের কথা শুনে ইয়াদে র মা বাবা সাথে ইসমাতও অবাক তার জন্য আজ ইয়াদ কে কতো কথা শুনতে হলো ।
ইয়াদের মা বাবা চুপ । তারা বুঝতে পারছে তারা কতো টা ভুল করেছে ।
.
ইয়াদ:::::::::: তুমি কি যেনো বললে তোমার বাড়ি থেকে আমাকে বের হয়ে যেতে বলেছিলে তাই তো ?
আমি আর যাবো না তোমার বাড়িতে ।
.
ইয়াদ রেগে চলে গেলো রিসিপশনে গিয়ে জানতে পারলো কাল ইসমাত কে রিলিজ দিবে । ইয়াদ রিসিপশনে টাকা জমা দিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে গেলো ।
.
ইসমাত ইয়াদের বাবা মা কে সব কিছু খুলে বললো ।ইসমাতের কথা শুনে ইয়াদের মার চোখঁ দিয়ে পানি পড়ছে মেয়েটা বড্ড অসহায় ।
সকালে❤❤
কলিং বেলের শব্দ পেয়ে দরজা খুলে দিলো কাজের মেয়ে ফুলি । ইয়াদের মা বাবার সাথে ঘরে ডুকলো ইসমাত । বাড়ির বাহির টা দেখতে যতটা আর্কষনীয় তার থেকে বাড়ির ভিতর টা আরও বেশি সুন্দর ।
নিশিতা ইসমাত কে টানতে টানতে তার ঘরে নিয়ে গেলো ।
.
সোফায় বসে আছে ইন্না । নিশিতার সাথে মেয়েটির এত ভাব দেখে রাগে ফুসছে সে । আজ অনেক দিন ধরে চেষ্টা করছে নিশিতার সাথে ভাব জমিয়ে ইয়াদের সাথে বিয়েটা ঠিক করার কিন্তুু কোনো লাভ হচ্ছে না । বাচ্চাটাকে দেখলে গা জ্বলে ইন্নার ।
.
ইন্নাকে নিশিতার রুমের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে মুচকি হাসি দিলেন ইয়াদের মা ।
.
ইন্না :::::::::::: আন্টি মেয়েটি কে ? ফুলি কি বলছে এসব ? ইয়াদ এই মেয়েটিকে বিয়ে করেছে?
আমার কথা এক বারও ভাবলো না ইয়াদ 😡😡
.
.
চলবে ☺
