কলঙ্কের ফুল – পর্ব ২৭

0
360

#কলঙ্কের_ফুল
#পর্ব_২৭
#Saji_Afroz
.
.
.
মেহেরীকার মুখে তুমি ডাক শুনে ট্যাক্সিতে উঠা ছেলেটি বলে উঠলো-
আহা তুমি! শুনতেও কি আপন আপন লাগছে!
-সরি। আপনি এখানে কি করছেন! নামেন বলছি এখান থেকে।
-নামতেতো উঠিনি আমি!
-দেখুন আমি বুঝতে পেরেছি, সেদিনের রেস্টুরেন্ট এর ঘটনার জন্য হয়তো আপনি রেগে আছেন। আমি দুঃখিত। রাজীবের হয়ে আমি ক্ষমা চাইছি।
-রাজীব! আমার নামের সাথে মিল আছে ব্যাটার। রানা আর রাজীব, একটা মেয়েকে ভোগ করলে কেমন হয়?
-মানে?
.
পকেট একটা রুমাল বের করে আচমকা মেহেরীকার মুখ চেপে ধরে রানা।
ধীরে ধীরে মেহেরীকা তার শরীরের ভার ছেড়ে দিতেই রানা তাকে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে ড্রাইভার এর উদ্দেশ্যে বললো-
যেখানে নিতে বলেছিলাম, সেখানে নিয়ে যাও।
.
কিছুক্ষণ পর মেহেরীকার ফোন বেজে উঠে।
রানা ব্যাগ থেকে তার ফোন বের করে দেখলো রাজীব নামে সেইভ করা নাম্বার থেকে ফোন এসেছে।
.
রানা ফোনটা কেটে দিয়ে একটা মেসেজ লিখে পাঠিয়ে দিলো রাজীবের নাম্বারে-
Tomake ami valobashi na Rajib. Ami onno akjon ke valobese feleci. Aj tar sathei onek dure chole jacci. Khoma koro amay.
.
রাজীবকে মেসেজ পাঠিয়েই ক্ষান্ত হয়নি রানা।
মোবাইল ঘেটে বের করে মেহেরীকার বাবার নাম্বার।
তাকেও একটা মেসেজ পাঠায়-
Rajib ke ami biye korte parbo na baba. Cheleta valona. Tai ami amar rasta beche nilam. Ekane thakle bipode porbo ami.
.
রাজীবের মুখে সেদিন রানা শুনেছিলো মেহেরীকা তার হবু স্ত্রী। তাই খুব সহজেই রানা মেহেরীকার বাবার কাছেও কারণবশত মেসেজ পাঠাতে সক্ষম হয়।
.
মেহেরীকার বাবা আর রাজীবকে মেসেজ পাঠিয়ে তার ফোনটি সুইচড অফ করে দেয় রানা।
.
.
.
কি মেসেজ দিলো মেহের! কার সাথে কোথায় যাচ্ছে সে! ভালোবাসেনা মানে?
নিশ্চয় মজা নিচ্ছে সে।
তার মেহের এমন করতেই পারেনা।
মেহের তাকে কষ্ট দিতেই পারেনা, আর কারো সাথে চলে যাওয়া দূরের কথা।
.
আপনমনে এসব ভেবে রাজীব ডায়েল করে মেহেরীকার নাম্বারে।
.
কিন্তু ফোন বন্ধ পেয়ে তার মনের অস্থিরতা বাড়তে থাকে।
সত্যিই কি মেহের তাকে ঠকালো!
.
.
.
চোখ জোড়া মিটিমিটি করে খুললো মেহেরীকা। কিন্তু অন্ধকারে কিছুই দেখতে পারছেনা সে। তার উপর মাথাটাও ভার হয়ে আছে।
এই কোথায় এসে পড়েছে সে?
তৎক্ষণাৎ মনে পড়ে তার রানার কথা। রানাই কি তাকে এখানে নিয়ে এসেছে? কিন্তু কেনো?
.
ফ্লোরে পড়ে আছে মেহেরীকা। উঠার চেষ্টাও করেও পারছেনা সে। মনে হচ্ছে শরীরের উপর ভারী
কোনো জিনিস আছে। পুরো শরীর তার ব্যথা করছে।
এমন সময় রুমের বাতি জ্বলে উঠলে দেখা পায় সে রানার।
কোনোমতে বসে রানার দিকে অগ্নিদৃষ্টিরে তাকিয়ে মেহেরীকা বললো-
কোথায় নিয়ে এসেছেন আমাকে? কেনো নিয়ে এসেছেন? কি মতলব আপনার?
.
কোনো কথার জবাব না দিয়ে রানা তার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে দেখে মেহেরীকা বললো-
একদম কাছে আসার চেষ্টা করবেন না। প্লিজ আমাকে যেতে দিন।
.
মেহেরীকার খুব কাছে গিয়ে রানা বললো-
যা করার তাতো করেই ফেলেছি।
রাজীবের আগেই তোমাকে ভোগ করেছি আমি।
আমার প্রতিশোধ নেওয়া হয়ে গিয়েছে।
.
.
.
মেহেরীকার বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেই রাজীব দেখা পায় কাসেম আহম্মেদের।
তার দিকে করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রাজীব বললো-
মেহের কোথায় আঙ্কেল?
.
কাসেম আহম্মেদ গম্ভীর গলায় বললেন-
আমার মেয়েটাকে কি করেছো তুমি? যার জন্য সে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে?
.
অবাক চোখে তার দিকে তাকিয়ে রাজীব জিজ্ঞাসা করলো-
আমি কি করেছি মানে?
-মেহেরীকা আমাকে মেসেজ দিয়ে সবটা জানিয়েছে। কিন্তু পোড়া কপাল আমার, মেসেজটা আমি এখন দেখেছি। নাহলে আরো আগে মেয়েটাকে খুঁজতে বের হলে পেয়ে যেতাম আর তোমার হাত থেকে উদ্ধার করতাম তাকে।
-আঙ্কেল আপনি কি বলছেন আমি কিছুই বুঝছিনা!
-আমিও কিছু বুঝছিনা। কি করেছো আমার মেয়ের সাথে তুমি?
রেশমা আহম্মেদ এসে রাজীবের উদ্দেশ্যে বললেন-
তুমিই নিশ্চয় মেয়েটাকে লুকায় রাখছো।
-আমি! আমি কেনো লুকাবো।
ওর সাথে আমার বিয়ে ঠিক আছে! শুধুমাত্র আমি ভালোভাবে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্যই ওকে বিয়েটা করিনি। আম্মা চেয়েছেন আগে আমি নিজে আর্থিকভাবে সফল হই তারপর বিয়েটা করি। এসবতো আপনাদের অজানা নয়!
.
আচমকা কাসেম আহম্মেদ রাজীবের শার্ট এর কলার ধরে বললো-
তাহলে মেহের কেনো বললো, তোমার জন্যই সে বাড়ি ছাড়া হয়েছে? কি করেছো তুমি ওর সাথে?
-মেহের বলেছে এমন?
.
রাজীবকে ছেড়ে কাসেম আহম্মেদ তার ফোন পকেট থেকে বের করে তার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলেন-
এই মেসেজটা এখন পেয়েছি আমি। তোমার কাছেই যাচ্ছিলাম। কিন্তু তুমি চলে এলে। দেখো কি লিখেছে।
.
.
.
কি বলে গেলো রানা?
রাজীবের আগেই সে তাকে ভোগ করেছে? এর মানে কি?
বেঁহুশ থাকা অবস্থায় তার সাথে কি খারাপ কিছু করেছে রানা?
এজন্যই বুঝি তার শরীরটা এমন লাগছিলো!
কি হয়ে গেলো আল্লাহ! এখন আমি কিভাবে এইখান থেকে বের হবো! আর কি জবাব দিবো রাজীবকে? কি জবাব দিবো বাবাকে! এই কলঙ্কের দাগ ঘুচাবো কি করে আমি!
.
আপনমনে এসব ভেবে চিৎকার করে কেঁদে চলেছে মেহেরীকা।
.
.
.
আমার সাথে এতো বড় বিশ্বাসঘাতকতা তুমি করতে পারলে মেহের!
আর কারো হাত ধরে চলে যেতে বুকটা কাঁপলো না তোমার?
কি বলেছো তুমি তোমার বাবাকে?
আমি ছেলেটা ভালোনা? কি করেছি আমি তোমার সাথে?
অন্তত সে জবাবটা দিয়ে যেতে তুমি।
তুমি কি সেদিনের ঘটনার জন্য চলে গিয়েছো?
.
রাজীবের মনে পড়ে যায় তার আম্মা যেদিন তাদের বাসায় একা রেখে তার চাচার বাসায় গিয়েছিলো সেদিনের কথা।
সেদিন সে মেহেরের অনেকটা কাছে চলে এসেছিলো। মেহেরের মাঝে হারিয়ে তার সাথে মিশে যেতে চেয়েছিলো সে। মেহেরের এক একটা নিঃশ্বাস এর শব্দে প্রায় মাতাল হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা ছিলো তার। কিন্তু একপর্যায়ে মেহেরের ফুঁফিয়ে কান্নার শব্দ পায় রাজীব। কান্নার শব্দ পেয়ে সে মেহেরীকার উপর থেকে নিজের শরীরের ভার সরিয়ে তাকে কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করাতে মেহেরীকা বলেছিলো-
বিয়ের আগে এসব আমরা ঠিক করছিনা রাজীব। আমাদের মা বাবারা অনেক বিশ্বাস করেন আমাদের।
.
মেহেরীকার এই কথাটিতেই কষ্ট হলেও রাজীব তাকে ছেড়ে দিয়েছিলো সেদিন।
তারপরেও কেনো মেহের বললো রাজীব ভালো ছেলে নয়!
তাহলে কি মেহের সেদিনের ঘটনার জন্যই রাজীবকে ভুল বুঝেছে? যদিও রাজীব তাকে ছেড়ে দিয়েছিলো কিন্তু মেহের কেঁদে মা বাবার কথাটা না বললে হয়তো আবেগের বশে ভুলটা করে বসতো।
ভালোবাসার মানুষের সাথেইতো মিশে যেতে চেয়েছিলো রাজীব। আর এটাই মেহেরীকার খারাপ লেগেছে যার কারণে সে অন্য একজনের সাথে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে!
কি করে পারলো মেহের এমনটা করতে!
.
নিজেরমনে মেহেরীকাকে নিয়ে এসব ভেবে ভেবে সিগারেট এ আগুন জ্বালালো রাজীব। এই মুহুর্তে এটির খুব প্রয়োজন তার।
.
.
.
৩দিন পর……
মেহেরীকাকে আজ অন্য একটি রুমে শিফট করা হয়েছে।
এই রুমটায় একটি খাট, আলমারি ও একটি টেবিল রয়েছে শুধু। রুমের ভেতরেই একটা ছোট বাথরুম আছে।
.
মেহেরীকা খেয়াল করলো এই রুমে কোনো জানালাই নেই। ছোট একটা দেখা যাচ্ছে কিন্তু তা অনেকটায় উপরে।
আদৌ কি জানালা ছিলোনা নাকি রানা কিছু করেছে মেহেরীকার জানা নেই।
.
-রুম পছন্দ হয়েছে তোমার?
.
রানার কথায় দাঁতে দাঁত চেপে মেহেরীকা বললো-
আপনার আমাকে ভোগ করার ইচ্ছে ছিলো করেছেন। তাহলে আমায় ছাড়ছেন না কেনো এখন?
-সেদিন আমি যা করেছিলাম রাগের বশে করেছিলাম। এখন যা করছি ভালোবাসার টানে।
-মানে?
-মানে তোমাকে আমি বিয়ে করবো মেহের।
-মাথা ঠিক আছে আপনার?
-একেবারেই ঠিক আছে। তবে হ্যাঁ এখন করবোনা। কয়েকটা বড়লোকের মেয়ে পটাতে ব্যস্ত আছি আমি। তাদের পটিয়ে কিছু টাকার ব্যবস্থা করি আগে। তারপর তোমাকে বিয়ে করে দূরে কোথাও চলে যাবো।
-আমি রাজীবকে ভালোবাসি।
-তোমার কি মনেহয়? এই অবস্থায় রাজীব তোমাকে মেনে নিবে?
.
কথাটি বলে রানা হো হো শব্দে হেসে উঠে।
তার হাসিটা দেখতে কোনো শয়তানের চেয়েও কম লাগছেনা মেহেরীকার।
চিৎকার দিয়ে সে বললো-
থামুন!
-আহা সোনা! চিৎকার করে লাভ নেই। তোমার আওয়াজ কেউ শুনবেনা এখানে। জনমানবহীন জায়গা এটা। হাজার চেঁচামেচি করেও লাভ হবেনা।
.
.
.
৮দিন পর…..
রাজীবের বাসায় আসে সুপ্তি।
রাজীবের মায়ের কাছে সবটা শুনেই সে এখানে আসে।
ধীর পায়ে রাজীবের রুমে প্রবেশ করে সে বললো-
রাজীব ভাই আসবো?
-সুপ্তি তুই! কখন এলি?
.
ভেতরে এসে সুপ্তি বললো-
মাত্র এলাম।
-ওহ।
-এ কি অবস্থা করেছো নিজের!
ফুফুর কাছে শুনলাম চাকরীতেও যাওনা তুমি।
-ভালো লাগছেনা কিছু।
-একটা প্রতারক মেয়ের জন্য নিজের জীবনটা নষ্ট করবা তুমি?
-কি করতে বলছিস এখন?
-আমার সাথে চলো আমাদের বাসায়। এখান থেকে দূরে কোথাও গেলে ভালো লাগবে তোমার।
-তোদের বোঝা হওয়ার কোনো ইচ্ছে আমার নেই।
-বোঝা নয় রাজীব ভাই। বাবা তোমার জন্য ভালো চাকরীর ব্যবস্থা করতে পারবেন বলেছে।
আমার মনেহয় তোমার আমার সাথে যাওয়াটায় ভালো হবে। ফুফু একটা তোমাকে নিয়ে চিন্তায় ভেঙ্গে পড়েছেন। তুমি তাদের একমাত্র ছেলে। তুমি যদি….
-আমি যাবো সুপ্তি তোর সাথে। ভুলে যেতে চাই আমি মেহের নামক ওই মেয়েটিকে।
.
.
.
১২দিন পর….
মেহেরীকা হাটতে থাকে তাকে যে রুমে আটকে রাখা হয়েছে সেই রুমে।
এই ২৩দিনে কম পালাতে চেষ্টা করেনি সে।
যতবারই ধরা খেয়েছে নানাভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তাকে। কখনো খাবার দেওয়া হয়নি, কখনো পানি দেওয়া হয়নি, কখনো তাকে বেধে রাখা হয়েছে আবার কখনো তার গায়ে হাতও তুলা হয়েছে।
তবুও সে দমে যায়নি। বারবার চেষ্টা করে চলেছে এই নরক থেকে বের হওয়ার জন্য।
.
হঠাৎ দরজা খুলে ভেতরে আসে রানা।
আলমারির দিকে এগিয়ে এসে মেহেরীকার কাপড় বের করে সে একটা ব্যাগে সেসব ঢুকাতে থাকে।
.
তা দেখে মেহেরীকা বললো-
কি করছেন আপনি?
-জামা কাপড় গুছাচ্ছি।
-কেনো?
-আজই আমরা অন্য জায়গায় যাবো। দূরে কোথাও।
-মানে!
-মানে দূরে কোথাও গিয়ে বিয়ে করবো আমরা।
-আমি কোথাও যাবোনা।
.
মেহেরীকার পাশে গিয়ে রানা তার ঘাড় চেপে ধরে বললো-
এতোদিন তোর ইজ্জত নিয়ে আর খেলিনি কেনো জানিস? বিয়ে করবো বলে তোকে। আর তুই নাকি বলছিস আমার সাথে তুই যাবিনা! চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাক, কথা বললেই বিপদ।
.
রানা আলমারির পাশে গিয়ে তার মাঝে থাকা ছোট ড্রয়ারটা চাবি দিয়ে খুলতে লাগলো।
মেহেরীকা এতোদিন ধরে দেখছে আলমারির ড্রয়ারটা তালা মারা থাকে। কিন্তু তাতে কি আছে তার জানা নেই।
রানা ড্রয়ার খুলতেই মেহেরীকা দেখতে পায় তাতে অনেকগুলো টাকা আর তার ফোনটা রয়েছে।
.
এতো কাছে তার ফোনটা ছিলো! অথচ সে বুঝতেই পারেনি। অবশ্য বুঝেও কি হতো! চার্জতো থাকবেনা ফোনে এতোদিনে।
.
হঠাৎ ফোন বেজে উঠে রানার।
রিসিভ করে ওপার থেকে কথা শুনে বললো-
কি! আমি এখুনি আসছি।
.
তাড়াহুড়ো করে রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় চেঁচিয়ে বলে যায়-
তৌফিক দরজাটা লাগিয়ে দিস, এই মেয়ে যেনো বের হতে না পারে।
.
তৌফিককে ভালোভাবেই চিনে মেহেরীকা। ছোট একটা ছেলে। রানার অবর্তমানে সেই মেহেরীকার খাবার দিয়ে যায়।
কিন্তু আজ সে কোথায়?
দরজা কেনো বন্ধ করতে আসছেনা!
এসব ভেবে মেহেরীকা ধীরে ধীরে রুমের বাইরে পা রাখে।
রুম থেকে বের হয়ে যা দেখে তা দেখে পুরাই চমকে যায় মেহেরীকা।
.
.
.
বাজারে বাজার করছিলেন কাসেম আহম্মেদ। এমন সময় এলাকার এক লোক এসে তার উদ্দেশ্যে বললেন-
আপনার মাইয়ারে দেখিনা কেনো কাসেম সাহেব?
-আছেতো। ও কক্সবাজারের বাইরে আছে আমার এক আত্নীয়ের বাসায়।
-তার না বিয়ে ঠিক ছিলো রাজীবের সাথে?
-হুম।
-কবে দিবেন বিয়া?
.
কিছু বলার আগেই কাসেম আহম্মেদ এর ফোন বেজে উঠে।
বাসা থেকে ফোন এসেছে দেখে রিসিভ করে বললো-
হ্যালো?
.
ওপার থেকে কাঁপাকাঁপা কণ্ঠে মুনিয়া বললো-
আপু বাসায় এসেছে বাবা!
.
.
.
নিশ্চুপভাবে বসে আছে নিজের রুমে মেহেরীকা। আজ পালানোর এতোবড় সুযোগ পাবে তার জানা ছিলোনা।
রানা যখন তৌফিকের উদ্দেশ্যে কথা বলে চলে যায় তখন মেহেরীকা তৌফিক এর কোনো সাড়া না পেয়ে রুমের বাইরে পা রাখে। আর তখনি সে দেখতে পায় সদর দরজাও খোলা। তার মানে তৌফিক বাসায় নেই। এই সুযোগ কাজে লাগায় মেহেরীকা।
আলমারির ড্রয়ার খোলাই ছিলো। তা থেকে নিজের মোবাইলটা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে সে বাসার উদ্দেশ্যে।
যে বাড়িতে তাকে আটকে রাখা হয়েছিলো সেই বাড়ি থেকে বের হয়ে দৌড়াতে থাকে সে। খুব সহজেই মেইন রোড পেয়ে যায় মেহেরীকা। কিন্তু সে বেশ অবাকই হয়। কেননা এই জায়গাটা তাদের বাড়ি থেকে খুব বেশি দূরে নয়। বাড়ির কেউ চেষ্টা করলেই তাকে খুঁজে বের করতে পারতো। তারা কি চেষ্টা করেনি?
.
আর না ভেবে মেহেরীকা বাড়ির উদ্দেশ্যে দ্রুত বেগে দৌড়াতে দৌড়াতে বাড়ি এসে পড়ে।
.
মেহেরীকার দিকে তাকিয়ে মুনিয়া বললো-
আপুই, কই ছিলি তুই এতোদিন?
.
নিশ্চুপ মেহেরীকাকে দেখে রেশমা আহম্মেদ বললেন-
যার সাথে পালায় গেছিলা সে বুঝি তাড়ায় দিছে তোমাকে?
.
ছলছল চোখে মুনিয়ার দিকে তাকিয়ে মেহেরীকা জিজ্ঞাসা করলো-
রাজীবকে একটু বলবি আমি এসেছি?
-উনি এখানে নেই।
-নেই মানে?
-উনি চাকরীর উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের বাইরে আছেন।
.
মুনিয়ার কথার কোনোকিছুই মেহেরীকা বুঝছেনা। কি বলছে সে! এই অবস্থায় রাজীব চাকরীর উদ্দেশ্যে বাইরে গিয়েছে!
এটা কখনো হতে পারেনা। আর কিছু না ভেবে মেহেরীকা ছুটে যেতে থাকে রাজীবের বাড়ি।
.
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here