কলঙ্কের ফুল – পর্ব ১

0
1213

#কলঙ্কের_ফুল
#পর্ব_১
#Saji_Afroz
.
.
আমজাদ চৌধুরী এর পাশে অনেকক্ষণ যাবৎ বসে আছে আদিয়াত। কিছু কথা বলবে বলে ৩০মিনিট ধরে তিনি আদিয়াতকে ডেকে এনে বসিয়ে রেখেছেন।
.
আদিয়াত….
আমজাদ চৌধুরীর ছেলে। ভালোবেসে সবাই আদি বলে ডাকে। ২ছেলে ১মেয়ের মাঝে এই ছেলেকে নিয়েই বেশি চিন্তায় থাকতে হয়। কেননা বয়সের তুলনায় খুব বেশি বাচ্চা স্বভাবের সে। অথচ পড়ালেখা শেষ তার।
এতোবার করে বলা সত্ত্বেও ভাইয়ের সাথে ব্যবসায় হাত লাগায়নি সে। সারাদিন ল্যাপটপ, মোবাইল, বন্ধুবান্ধব, ঘুরাঘুরি এসব নিয়েই থাকে। তার যে এখন ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে সে খেয়াল নেই।
.
মানুষের জীবনে ৩সেকেন্ড এর কতো দাম!
আর তার বাবা কিনা বিনা কারণে তাকে ৩০মিনিট বসিয়ে রেখেছেন! এসবের মানে হয় কোনো!
আপনমনে এসব বলতে থাকে আদি।
.
সোফায় হেলান দিয়ে আমজাদ চৌধুরী এক মনে পত্রিকা পড়ে চলেছেন।
এদিকে আদি রাগে কটমট করতে থাকে।
আড়চোখে বাবার দিকে তাকিয়ে সাহস করে বলেই ফেলে-
বাবা?
একটু বিরক্তিভাব নিয়েই আমজাদ চৌধুরী বলেন-
আহ পত্রিকা পড়ছিতো!
.
পত্রিকা পড়ছো পড়ো, আমাকে কেনো বসিয়ে রেখেছো!
.
কথাটি সরাসরি বলার ইচ্ছে থাকলেও পেটে হজম করে আদি বলে-
বাবা আসলে আমার একটু কাজ ছিলো। তুমি কিছু বলছোনা, তাই বলছিলাম আমি যাই।
.
ছেলের কথা শুনে হাতের পত্রিকা সামনের টেবিলের উপর রেখে, চোখের চশমাটা ঠিক করে বলেন-
কোথায় যাবি? ল্যাপটপ বা মোবাইল টিপতে? নাকি বাইরে টোটো করতে? এভাবে আর কয়দিন?
.
বাবার কথায় ঢোঁক গিলে আদি বলে-
তুমি বললে সারাদিন তোমার পাশে বসে থাকবো।
.
তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে আমজাদ চৌধুরী বলেন-
তুই আমার কথা এতো মানিস! আহারে আমার ভালো পুত্র। তা আর কয়দিন আমার ঘাড়ে বসে খাবি তুই? পড়ালেখাও করালাম, এখন কি চাইছিস তোর বাচ্চাকাচ্চার পড়াশোনার খরচও আমি চালাই?
.
নিজেকে নিজের কাছে ছোট মনে হলো আদির। এতোটা কড়াভাবে তার সাথে আগে কখনো তার বাবা কথা বলেনি।সে কি ছেলে হয়েও বোঝা হয়ে গেলো তাদের কাছে!
.
ছেলেকে চুপ থাকতে দেখে তিনি ধমকের সুরে বলেন-
চুপ করে আছিস কেনো? চেহারা দেখতে ডেকেছি তোকে?
.
বড়সড় ঝড়ের আগে পরিবেশ ঠাণ্ডা থাকে সে শুনেছিলো এতোদিন। আজ নিজ চোখে দেখলো। বাবা তাকে আজ ঝাড়বে বলেই ৩০ মিনিট নীরব ছিলেন।
.
ভয়ভয় চোখে বাবার দিকে তাকিয়ে আদি বলে-
আমার আসলে কাজ করতে ভালো লাগেনা।
-বসে বসে খেতে ভালো লাগে?

ছেলেকে চুপ থাকতে দেখে তিনি আবার বলেন-
সেটার ব্যবস্থাও আছে।
.
বসে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা! যাই হোক না কেনো এক পায়ে রাজী হয়ে যাবে সে।
.
লোভনীয় দৃষ্টিতে বাবার দিকে তাকিয়ে বলে-
কি বাবা কি?
.
বড়শিতে এবার মাছ আসবেই তিনি জানতেন।
হালকা কেশে বলেন-
সানিয়াকে বিয়ে করে।
.
বাবার কথাটা বুঝে উঠতে ১০সেকেন্ড সময় লাগে আদির।
চোখ দুটো বড় বড় করে তার দিকে তাকিয়ে বলে-
আমাদের সানিয়া?
-হুম।কেনো!আর কোন সানিয়া হবে?
-আমাদের ক্লাসে পড়তো একটা।
.
মুখে বিরক্তিভাব নিয়ে আমজাদ চৌধুরী বলেন-
সে সানিয়া কে আমি কি করে চিনবো!
-সেটাই ভাবছিলাম।
-হু।
-কিন্তু বাবা সানিয়াকে বিয়ে করলে বসে বসে খেতে পারবো কেনো?
-সানিয়া হলো এরশাদের একমাত্র মেয়ে। তুইতো জানিস কিছুর অভাব নেই তাদের। প্রচুর ধন সম্পদের মালিক এরশাদ।
সে একটা ভালো ছেলে চায়।
কিন্তু….
-কি বাবা?
-সানিয়া তোর মতো বাজে ছেলেকে পছন্দ করে এটা তার জানা ছিলোনা।
.
বিষ্মমের দৃষ্টিতে আদি জিজ্ঞেস করে-
আমাকে পছন্দ করে মানে?
-মানে ওই গাঁধী মেয়েটা তোকে বিয়ে করতে চায়।
-এটা ও বলেছে?
-হু। আমি তোর মতামত জানতে তোকে ডাকিনি। পরশু তোর আর সানিয়ার আকদ।
.
ব্যাচেলর লাইফটা এখুনি হারানোর ইচ্ছে নেই আদির। তার উপর ওই সানিয়ার সাথে বিয়ে!!
কিছুতেই না।
তার বাবার ঘনিষ্ট বন্ধুর মেয়ে সানিয়া। ছোট থেকে দেখে আসছে তাকে। কতো ছেলের সাথে যে এই মেয়ে প্রেম করেছে হিসেব নেই,
এতোদিন পর এসে বলে সে নাকি আদিকে পছন্দ করে! দরকার হলে চাষাবাদ করবে সে, তবুও সানিয়াকে বিয়ে করবেনা। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে বাবার দিকে করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে-
বাবা কাল থেকে ভাইয়ার সাথে কাজে হাত লাগাবো।
-বিয়ের কথা উঠতেই দায়িত্ব বুঝতে শিখে গেলো আমার ছেলে! ভালো ভালো। তবে কাল থেকে নয়। আগে আকদ হয়ে যাক।
-না মানে…
-কি?
-আমি এই বিয়েটা করতে পারবোনা।
.
ছেলের কথা শুনে নিজের রাগ সংযত করে তিনি বলেন-
কারণ কি?
-এখন বিয়ে করার ইচ্ছে নেই।
-সেটা বলে লাভ নেই, করতে হবে। বয়স কম হয়নি তোর। এম.এ শেষ করেছিস ২বছর চলছে। আর কোনো কারণ আছে?
-হুম।
-কি?
-সানিয়াকে আমার পছন্দ না।
-কেনো?
-সেই ছোট থেকে দেখছি, চেনা মুখ। অচেনা কেউ হলে ভালো হতো আর কি।
-তা আমাদের মুখও চেনা, অচেনা দেখে বাবা বানিয়ে নিয়ে আয় কাউকে।
-বাবা!
-শোন, তোর জন্য সানিয়ার চেয়ে ভালো মেয়ে খুঁজে পাওয়া যাবেনা। আমি এরশাদকে কথা দিয়ে ফেলেছি। হয় ওকে বিয়ে করবি না হয় বাড়ি ছেড়ে চলে যাবি।
-আমার কথাটা….
-এখন নিজের রুমে যা।
.
বসা থেকে উঠে হনহন করে চলে যেতে থাকলো আদি তার রুমে।
আমজাদ চৌধুরী পত্রিকা হাতে নিয়ে আবার পড়া শুরু করলেন।
.
.
নিজের রুমে পায়চারী করছে আদি। সালেহা চৌধুরী দরজায় দাঁড়িয়ে ছেলের অবস্থা দেখছেন। একপর্যায়ে তিনি ছেলের উদ্দেশ্যে বলেন-
কি এতো ভাবছিস?
মায়ের দিকে তাকিয়ে আদি বলে-
মা তুমি?আসো ভেতরে।
.
সালেহা চৌধুরী ভেতরে ঢুকে বিছানায় বসে বলেন-
আয় আমার পাশে আয়।
.
মায়ের পাশে বসে আদি মায়ের হাত ধরে বলে-
বাবা কি চায় তুমি জানো?
-এটা শুধু তোর বাবার চাওয়া না। আমাদের সকলের চাওয়া।
.
মায়ের কথা শুনে তাজ্জব হয়ে যায় আদি।
মায়ের হাত ছেড়ে বলে উঠে-
এই যুগে এসে এসব কি মা!! আমি সানিয়াকে বিয়ে করতে পারবোনা।
-এই যুগে তোর এই অবস্থা কেনো! ভবিষ্যৎ এর কোনো চিন্তা নেই। সানিয়া মেয়েটা নিজ থেকে বলেছে সে তোকে পছন্দ করে। ওর সাথে বিয়ে হলে কোনো কাজ করতে হবেনা তোকে।
-করবো কাজ আমি, কাজের ভয়ে ওকে আমি বিয়ে করতে পারবোনা।
-কেনো?
-দুনিয়ায় মেয়ের অভাব পড়েছে নাকি? এতোদিনের চেনা মেয়েটাকেই বিয়ে করতে হবে!
-হুম হবে। তোর মতো ছেলের জন্য এর থেকে ভালো অফার আর আসবেনা। একবার বিয়ে হলে সব ঠিক হয়ে যাবে। কাল গিয়ে তোর বড় ভাইয়ার সাথে আকদের বাজার করে আসবি। আর কিছু শুনতে চাইনা।
.
সালেহা চৌধুরী আর কিছু না বলে রুম থেকে বের হয়ে গেলেন।
.
এদিকে আদির মাথা প্রচণ্ড খারাপ। এই ঘরের কেউ কি তার কথা ভাববেনা! শুধুমাত্র কাজ না করার অপরাধে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দিবে তাকে? নাহ কিছু একটা করতেই হবে।
.
.
.
রাত ১০টা…..
আমজাদ চৌধুরীর বাসার একটি কড়া নিয়ম রয়েছে। তা হলো দিনে সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত থাকলেও রাতের খাবার একসাথে বসে সেরে নিতে হবে। আর যে ডাইনিং টেবিলে আসবেনা তার জন্য আলাদাভাবে খাবার পাঠানো যাবেনা।
.
আজ একে একে সবাই আসলেও এখনো আদি খেতে আসেনি।
বাবার দিকে তাকিয়ে আদির বড় ভাই আরিফ বলে-
আদি কি বিয়েতে রাজী হয়েছে?
.
গম্ভীর মুখ নিয়ে আমজাদ চৌধুরী জবাব দেন-
ভেবেছিলাম হবে, কিন্তু সেতো সানিয়াকে পছন্দ করেনা।
.
-এই টাইপের মেয়েগুলার সাথে প্রেম, ঘুরাফিরা এসব করতে ছেলেরা মজা পায়, কিন্তু সহজে বিয়ে কেউ করতে চায়না।
.
কথাটি বলেই জিভে কামড় বসিয়ে মনে মনে মিলি বলে-
হায়রে! বাবার সামনে এটা কি বলে ফেললাম!
.
বউ এর মুখে এমন একটা কথা শুনে পরিস্থিতি সামলাতে আরিফ বলে-
আরেনা, আমাদের সানিয়া ভালো মেয়ে। আর আদি…
.
ছেলেকে আর কিছু বলতে না দিয়ে আমজাদ চৌধুরী বলেন-
থাক…
.
পরিবেশ নীরব হয়ে যায়। নীরবতা ভেঙ্গে আদির ছোট বোন দিবা বলে উঠে-
বাবা আমি বলছিলাম কি, ভাইয়াকে জোর করে বিয়ে দেওয়া ঠিক হবেনা। সানিরার বাবার টাকা থাকলেও আমাদের কি কম আছে বলো?
.
খানিকটা বিরক্ত নিয়ে, ভ্রু কুচকে আমজাদ চৌধুরী তার স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বলেন-
তোমার ছেলেমেয়েরা কি আমাকে এতোটায় নিচু মনের ভাবে যে টাকার জন্য আমি অপছন্দের কারো সাথে তাদের বিয়ে দিতে চাইবো! আমার কি টাকা কম আছে নাকি!
কক্সবাজারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাঝে আমিও একজন।
.
স্বামীর কুঁচকানো ভ্রু এর দিকে তাকিয়ে, তাকে শান্ত করতে সালেহা চৌধুরী বলেন-
দিবা আসলে ভাইয়ের হয়ে কথা বলতে গিয়ে এমনটা বলে ফেলেছে। ছোট মানুষতো।
.
আমজাদ চৌধুরী লম্বা একটা দম ফেলে বলেন-
এই বিয়েটা করানোর আমার ২টা কারণ রয়েছে।
সানিয়া ঠিক আদির মতো। চঞ্চল একটা মেয়ে। বিয়ের কথা উঠতেই সে তার বাবাকে আদির কথা বলে। এখন যদি আদি ওকে ফিরিয়ে দেয় মেয়েটা অপমানে আরো বিগড়ে যাবে। আমি চাইনা এরশাদের মেয়ের সাথে খারাপ কিছু হোক।
এদিকে আদিও ঠিক সানিয়ার মতো। খামখেয়ালী একটা ছেলে সে। নিজের ভবিষ্যৎ এর কোনো চিন্তা নেই। এতোবার করে বললাম ভাইয়ের সাথে কাজে হাত লাগা। না সে লাগাবেনা, ভাই আছে সব সামলে নিবে। ভাই কি তাকে সারাজীবন বসিয়ে খাওয়াবে!
.
কিছুক্ষণ চুপ থেকে তিনি আবার বলতে শুরু করেন-
এরশাদ যখন আমাকে আদির কথা বলে তখন সে জানায় বিয়ের পরেই তার ব্যবসার সমস্ত দায়িত্ব আদিকে দিতে চায়। আমি চিন্তা করলাম আমার ব্যবসায় সে ভাই আছে বলে হাত লাগায় না, কিন্তু এরশাদের সানিয়া ছাড়া কোনো সন্তান আর নেই। সেক্ষেত্রে সে কাজে মন দিতে বাধ্য হবে, দায়িত্ব এড়াতে পারবেনা।
.
স্বামীর কথা শুনে সালেহা চৌধুরী বলেন-
কিন্তু সেতো সানিয়াকে পছন্দ নয় বলেছে।
-হয়ে যাবে। একবার বিয়ে হলে সব ঠিক হয়ে যাবে। যা হচ্ছে তা হতে দাও। সবাই বুঝেছো আশা করি, আদির ভালোর জন্যই এসব করছি আমি।
.
.
.
রাত ১২টা…..
আদি ক্ষিদে সহ্য করতে পারেনা। এদিকে ডাইনিং টেবিলে সবার সাথে খেতে না যাওয়ার অপরাধে তাকে রাতের খাবার দেওয়া হয়নি। এখন এই খালি পেটে ঘুম ও আসছেনা তার।
শোয়া থেকে উঠে পাশে রাখা ছোট টেবিলটার উপর থেকে বোতলটা হাতে নিয়ে ঢকঢক করে পানি খেতে থাকে আদি।তখনি দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ শুনতে পায় সে।
বুঝতে পারে কে এসেছে। দ্রুত পায়ে এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলে বলে-
আয় দিবা।
খাবারের ট্রে হাতে নিয়ে দিবা ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বলে-
মায়ের পাশে বাবা থাকায় মা বাবার জন্য আসতে না পারলেও আমি যে খাবার নিয়ে আসবো তুই জানতি তাইনা ভাইয়া?
.
খাটের উপর বসতে বসতে আদি বলে-
হু, কারণ তোর তো আর জামাই নেই।
-ভাইয়া!
-কোনো খবর জানিস?
-তোর বিয়ের? হু জানিতো।
-বল?
-তোর বিয়েটা কনর্ফাম ওই সানিয়া আপির সাথেই।
-কি!?
-এতো চমকে যাচ্ছিস কেনো! বড় লোকের মেয়ে আছে, বিয়ে করে নে।
-তুই ও!
-আচ্ছা তোর সমস্যাটা কি ভাইয়া?
-ওই মেয়ে কয়টা ছেলের সাথে টানকি মেরেছে আমি জানি। এখন নাকি ওই টানকিবাজ মেয়েরে আমার বিয়ে করতে হবে…
-হু হবে।
-উফ্ফ… যাতো দিবা, এখন যা রুম থেকে।
.
দিবা ভেংচি কেটে ভাইয়ের রুম থেকে বেরিয়ে পড়লো।
.
রাত ২টা…..
ভরা পেটে মাথায় বুদ্ধি আনার চেষ্টা করতে করতে অবশেষে বুদ্ধি পেয়ে যায় আদি।
হুম এখুনি তাকে বাসা ছেড়ে পালাতে হবে। কাল যখন বাসায় কেউ পাবেনা তাকে, বিয়েটা আটকে যাবে। খুব বেশি দেরী হওয়ার আগেই তার পালানো উচিত।
.
ড্রয়ার খুলে আদি ১০হাজার টাকা, নিজের কিছু কাপড়চোপড় একটি ব্যাগে ঢুকিয়ে নেয়। পা টিপে টিপে বের হয় নিজের রুম থেকে।
ডাইনিং রুমে আসতেই টেবিল থেকে একটা পানির বোতল ঢুকিয়ে নেয় ব্যাগে। আস্তে আস্তে বের হয়ে যায় বাড়ি থেকে।
.
দাড়োয়ান ঘুমিয়ে পড়েছিলো ভাগ্যিস, নাহলে বের হতে সমস্যা হতো তার। লম্বা একটা দম ফেলে রাস্তার দিকে পা বাড়ালো আদি।
.
.
নিস্তব্ধ রাত, চারপাশ নিরবতায় আচ্ছন্ন।
পুরো শহর যেনো ঘুমিয়ে আছে।কোথাও কোনো শব্দ নেই। মাঝেমাঝে দূর থেকে ভেসে আসছে জোনাকিপোকার ডাক।
বাড়ি থেকে হুটহাট করে বের হয়ে, কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে আনমনে ফুটপাত ধরে হেটে চলেছে আদি। আর আপনমনে বিড়বিড় করে বলছে,
এই মর্ডান যুগের ছেলে হয়ে বিয়ের ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালাতে হবে ভাবিনি কখনো!!!!!!
.
.
গন্তব্য কোথায় জানা নেই, দিশেহারা হয়ে জড়সড় অবস্থায় রাস্তার ধারের ডাস্টবিনের পাশে বসে আছে মেহেরীকা। ভয়ে তার হাত-পা থরথর করে কাঁপছে। আর এলোমেলো ভাবনায় অস্থির হয়ে আছে তার মন।
কিন্তু এভাবে আর কতক্ষণ! খারাপ লোকের ভয়ে এই রাতে ডাস্টবিনের পেছনে আশ্রয় নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় পায়নি মেহেরীকা।
কিন্তু অসহ্যরকমের দুর্গন্ধ এখানে। মনে হচ্ছে তার শ্বাস আটকে যাবে।
নাহ গন্ধের সাথে যুদ্ধ করে পারা যাবেনা। অন্য কোনো ব্যবস্থা করতে হবে।
মেহেরীকা বসা থেকে উঠে ডাস্টবিনের পাশ থেকে সরে রাস্তার দিকে পা বাড়াতেই মাথাটা ঝিমঝিম করে উঠে তার। মনে হচ্ছে পুরো পৃথিবীটা তার চারপাশে ঘুরছে। কোনোমতে রাস্তার উপরে উঠে সে। কিন্তু নিজেকে আর স্থীর রাখতে পারেনি মেহেরীকা। মাথা ঘুরে লুটিয়ে পড়ে যায় সে।
.
.
এই রাতে বন্ধুর বাসায় আশ্রয় নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছেনা আদি। পকেট থেকে মোবাইল বের করে বন্ধু সিরাজের নাম্বারে ডায়াল করে সে। কিন্তু সামনে চোখ পড়তেই থমকে যায় আদি।
(চলবে)
.
.
.
বি:দ্র: যাদের ভালো লাগবেনা ইগনোর করবেন। পুরো গল্প না পড়ে কেউ বাজে মন্তব্য করবেন না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here