#সুখ
#Part_29
#Written_By_Nilima_Zabin_Tanmona
সাকিবকে নীলিমা মারছে দেখে সাকিব নীলিমার হাত পেছনে নিয়ে নীলিমার ঘাড়ে ইচ্ছেমতো কিস করছে। নীলিমা সরে যায়।
-আমি আপনাকে মারছি আর আপনি আমায় আদর করছেন? (রেগে গিয়ে নীলিমা)
-বউ শুনো! (নরম গলায় সাকিব)
-আমি কারো বউ টউ না। সরেন ঘুমাবো। একটু পর ভোর হয়ে যাবে।
-না ঘুমাইলে হয় না?
-রাত জেগে কি মশা মারবো? আজব কথা!
-আমার ঘরে মশা নেই সো মশা মারতে হবেনা।
-তো কি করব?
-শুনো না! (নীলিমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে)
-হ্যা শুনতেছি।
-আই লাভ ইউ! (নীলিমার চুল খুলে দিয়ে)
-হঠাৎ? (হাসতে হাসতে নীলিমা)
-এই দশ বছর সংসার জীবনে বলিনি নাকি?
-আজ্ঞে না। মুখে বলেন নি। কাজেই দেখিয়েছেন যে ভালবাসেন।
-এখন বলছি আই লাভ ইউ!
-আই লাভ ইউ টু! (সাকিবের দিকে ঘুরে সাকিবের গলা জড়িয়ে ধরে নীলিমা)
-শুনো!
-কি কখন থেকে শুনো শুনো করছেন! বলেন কি শুনবো?
-আসো একটু নাচি।
-মনে কি রঙ লাগছে নাকি?
-প্রচুর রঙ লাগছে।
সাকিব নীলিমাকে নিয়ে নাচতে শুরু করলো। নীলিমা তো হাসছে আর ফুট স্টেপ দিচ্ছে। রাতটা এভাবেই কাটলো সাকিব আর নীলিমার। ভোরের দিকে নীলিমা উঠে নিচে যায়। তুলিকে নিয়ে আজকে বাসায় আসবে সেই আয়োজন করতে করতেই দুপুর হয়ে যায়। তুলিকে আনতে আয়ান, বাঁধন, তিশা আর নিবির যাবে। নীলিমা আর সাকিব বাসাতেই থাকবে। সন্ধ্যাবেলা তুলিকে আর রুদ্রকে নিয়ে আসে ওরা সবাই। নিবির গিয়ে সোজা বাবাইয়ের কোলে উঠলো। নিবিরকে কোলে নিয়ে সাকিব নীলিমার সাথে কথা বলছে।
-বাবাই শুনো!
-হ্যা আব্বু বলো।
-আমার ক্ষুধা লেগেছে!
-কেন খাও নি তুমি? (নীলিমা)
-না।
-কেন?
-মজা না। তোমার রান্না মজা। (নিবির)
-আয়ান ভাতিজাকে নিয়ে গেছো খাওয়াও নাই কেন? আমার ছেলেটা না খেয়ে আছে এতক্ষণ ধরে? (রেগে গিয়ে নীলিমা)
-ভাবি কুল! নিবির বাইরের খাবার কতটুকু খায় তা তো তুমি জানই।
-নিবির আসো আমার কাছে। কি খাবা বলো। আম্মু রান্না করে দেই। (নীলিমা)
-নুডুলস।
-শিখছো তো এইটাই। আপনি ওর জামাকাপড় পালটে নরমাল টি শার্ট পরিয়ে দিন। আমি নুডলস নিয়ে আসছি। (নীলিমা)
রুদ্র আর তুলি এসে সাকিব আর নীলিমাকে সালাম দিল। সাকিব পায়ে হাত দিতে দেয়নি। রুদ্রকে তুলির ঘরে দিয়ে আসলো তিশা। কিন্তু রুদ্র নিবিরের সাথে মজা করতে করতেই দিন পার করে দিল। রাত্রে সবাই যখন আড্ডা দিচ্ছিলো তখন তুলিকে তিশা বলে,
-আপু তোমার কপাল মে বি পুড়লো!
-কেন? (তুলি)
-রুদ্র ভাইয়া দেখছি নিবরকে ছাড়ছেই না। নিবরকে বেশি ভালবাসে তোমার থেকে।
-হাহাহাহা। আমার লক্ষ্মী ভাইটাকে সবাই ভালবাসে। ভাই তুমি খেয়েছো?
-দি ভাই খেয়েছি। তোমার বরটা অনেক ভালো। আমার সাথে খেলা করে। কত খেলনা নিয়ে এসেছে আমার জন্য। (নিবির)
-তোমার কোনটা পছন্দ হয়েছে নিবির? (রুদ্র)
-নিশ্চই প্লেনটাই পছন্দ হয়েছে। আমাদের হিরো পাইলট হবে পাইলট হাহাহা। (নিবিরকে চুমু দিয়ে তিশা)
তুলি আর রুদ্রর ঘর গুছিয়ে দিয়ে নীলিমা নিজের ঘরে চলে এলো। কত শত রান্না করেছে জামাইয়ের জন্য। সারাদিনের ক্লান্তিটাই বড্ড বেশি। বাঁধন না হেল্প করলে নীলিমা একা পারতো ই না। রাতে ঘরে এসে নীলিমা সোজা বিছানায় গা এলিয়ে দেয়। সাকিব অনেকক্ষণ পর ঘরে আসে। এসে দেখে লাইট অফ করা আর দরজা চাপানো। সাকিব ঘরে ঢুকেই লাইট অন করে দেখে নীলিমা ঘুমাচ্ছে। এরপর সাকিব ও দরজা লাগিয়ে চেঞ্জ করে শুয়ে পরে। নীলিমার গায়ে হাত দিতেই নীলিমা জেগে যায় আর ভয় পেয়ে যায়।
-ওই আমি! চিল্লাও কেন? ঘুমাইছো কখন? (সাকিব)
-বদলোক! দিল আমার ঘুমটা নষ্ট করে।
-তো কি আমি তোমায় জড়িয়ে ধরবো না?
-নেন ধরেন। ঘুম তো শেষ।
-এহ চোখ টেনে খুলতে পারছেনা আর বলে ঘুম শেষ। তোমার ছেলে কি করেছে জানো?
-কি?
-রুদ্র আর তুলির ঘরে গিয়ে ঘুমিয়েছে।
-হাহাহা কেন?
-রুদ্রকে ছাড়া ঘুমাবেনা। আর রুদ্র ও আছে নিবিরকে নিয়ে ঘুমাতে চলে গেছে।
-না করলেন না আপনি?
-আমি কিভাবে না করি বলো? কেমন দেখাতো না ব্যাপারটা!
-এই ছেলে সব প্লাস্টিক করে দিবে দেখছি। আরেকটু বড় হলে বুঝতে শিখে যাবে।
-হ্যা তা তো শিখবেই। (নীলিমার উপর হাত ঘোরাতে ঘোরাতে সাকিব)
-এই যে শুরু হয়ে গেলো! আমি আপনার সামনে থাকলেই আপনি আমার সাথে অসভ্যতামী শুরু করেন। কেন?
-আমার বউ যে তুমি তাই। বউকে আদর করব না তো কাকে করব?
-দশটা বছর সহ্য করতেছি আপনার এইসব। আর কত?
-আমৃত্যু জানপাখি।
-কি ভাষা আল্লাহ!
-আদরের ডাক।
-হইছে এখন সরবেন আমার সামনে থেকে। ঘুমাইতাম একটু।
-না আদর করি।
-বাঁচতে চাইলে সরেন।
-ওই চোখের দিকে তাঁকিয়ে মরতে চাই নীলু।
-এত রোমান্স আল্লাহ আপনাকেই দিয়েছে? এত রোমান্স নিয়েও তো বিয়ে করতে চাইছিলেন না। শেষে বিয়ে করে কতগুলা মাস আমায় কষ্ট দিছিলেন। সবই মনে আছে হু।
-কষ্টটাই তো দেখলা। এতগুলা বছর যে সুখ দিলাম সেইটা?
-সেইটার জন্য অশেষ শুকরিয়া।
চলবে