জীবনসঙ্গী
পর্ব ২২
Writer Tanishq Tani
হ্যালো! হ্যা আমি জুরিখ লেকের সামনে দাড়িয়ে আছি,,
ওকে রাখছি,,অনিকেত কলটা কেটে লেকের পাশের বেঞ্চিটায় বসে,,একটু পর পর চোয়াল টা ফুলে উঠছে,,
অনিকেত!
অনিকেত ডাক শুনে দাড়িয়ে পিছন ফিরে তাকায়,,
আমি বলেছিলাম না শশী তোমার যোগ্য না,,দেখলে তো? বিশ্বাস হলো এবার তোমার,,তোমাকে শুধু আমি ডিজার্ভ করি শশী নয় অনি,,ওর মতো চরিত্রহীনা কুলটা মেয়ে তোমার পায়ের আঙুলেরও যোগ্য না,,
ঠাসসসসস
তোর সাহস কি করে হয়,,আমার শশীকে চরিত্রহীনা কুলটা বলার,,সাত বার জনম নিলেও তুই ওর নখের যোগ্য হতে পারবি না মিলা,,মিলার চুলের মুঠি ধরে কর্কশ স্বরে বলে,,
কত্ত খুশি নিয়ে ঘর থেকে বের হয়েছিলো,,অনি আজ ওর হয়ে যাবে শশী আর রিশাদের ঘনিষ্ট হওয়া ছবি আর ভিডিও দেখে,,
রিশাদ যখন শশীর হাত দেয়ালে হাত চেপে ধরেছিলো ঠিক ঐ সময় ছবি টা তোলে মিলা,,
এতোকিছুর পরও অনিকেত শশীর নাম জপছে,, রেগে আগুন হয়ে আছে অনিকেত,, মিলা কিছুটা ভয় পায়,,
অনিকেত? তুমি আমাকে বিশ্বাস করছ না,,এই ছবিগুলে দেখেও এসব বলছ?
হ্যাঁ বলছি,,আর সারাটা জীবন বলবো,,তুই কি ভেবেছিস? আমার ভালোবাসা এতো ঠুনকো কাঁচের মতো যে তোর মতো যে যা বলবে তাতেই কান দিয়ে নিজের স্ত্রীকে কষ্ট দেবো,,
আমি শুধু চোখ দিয়ে নয় অন্তর দিয়ে দেখেছি আমার শশীকে,,আমার মায়াবতী তোদের নেকা কান্না শুনে দয়া ও ক্ষমা করতে জানে,,কিন্তু তোদের ভেতরের শয়তানী ও দেখতে পায় না,,কারন ওর মনটা সরল,পবিত্র,,তাই সবাইকে ঐরূপই ভাবে,,সরল মানুষকে ঠকিয়ে কি মজা পাস তোরা? মিলাকে ধাক্কা দিয়ে দূরে ঠেলে দেয় অনিকেত,,,,
অনেক কষ্ট পেয়েছে আমার শশী,,আর না,, আজকের পর তুই কিংবা তোর ঐ সাথী রিশাদকে যদি আমাদের আশেপাশেও দেখেছি ছাড়পত্র ছাড়াই গুলি করে লাশ গুম করে দেবো,,কাকপক্ষীতেও টের পাবে না,,
Now get out From here,,
চিৎকার দিয়ে বলে অনি মিলাকে,,,
তুমি আমাকে চেনো না অনি? তুমি আমার হবে যেকোনো মূল্যেই হোক,,তোমার চাওয়া বা না চাওয়াতে কিছু আসে যায় না,, তোমাকে আমার হতে হবে,, তোমার লাশকে নিয়েও যদি বাসর সাজাতে হয় আমি তাতেই রাজি,,তবু তোমাকে আমার চাই,,উন্মাদের মতো চিৎকার করে বলে,,
Are you out of ur mind? কি বলছ বুঝতে পারছ তুমি?তোমার তো পাগলাগারদে থাকা উচিত,,,পুরোপুরি সাইকো তে পরিনত হয়ে গেছো তুমি?রেগে মিলার দিকে এগিয়ে,,
হ্যাঁ হ্যাঁ আমি সাইকো,, তোর প্রেম সাইকো বানিয়েছে আমাকে,,এখন তুই যদি আমার না হোস তো পুরো দুনিয়ায় কেয়ামত ডেকে আনবো আমি,,
ঠিক আছে,,আমিও দেখবো তুই কি করে আমাকে তোর করতে পারিস? তোর মতো পাগলীকে আমি কাজের মেয়েও তো রাখবো না,,আবার প্রেমিকা বানাবো,,যা ফুট এখান থেকে,,মিলার ঘারে ধাক্কা দিয়ে চলে যায় অনিকেত,,,
অনিকেত! অনিকেত! আমাকে এভাবে অপমান করতে পারো না তুমি? তুমি জানো না কি করতে পারি আমি?অনিকেত! এখনো সময় আছে ফিরে আসো বলছি,,
অনিকেত সামনে হাটতে থাকে আর মিলা পেছন থেকে চিৎকার করতে থাকে,,
মিলার চিৎকার অগ্রাহ্য করে হাত ইশারায় বাই বাই দিয়ে চলে যায় অনিকেত,,,
শশী কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে গিয়েছিল,,ঘুমের ঘোরে নিজেকে শূন্যে অনুভব করলো,,
চোখ খুলে তাকাতেই বড় রকমের শকড হলো,,অনিকেত শশীকে কোলে তুলে দাঁত বের করে হাসছে,,
শশীর ভয়ার্ত চেহারা দেখে মনে হয় বেজায় খুশি হয়েছে,,
ছাড়ুন আমাকে!ঘুমাবো আমি,,ছাড়ুন বলছি,,
একদম ছাড়ুন ছাড়ুন করবা না,,ধরেছি ছাড়ার জন্য,, হানিমুন করতে এসে বেগমসাহেবার ঘুম ই যেন যাচ্ছে চোখ থেকে,,একদম ঘুমাবা না বলে দিলাম,,কোলে নেওয়া অবস্থায় শশীর নাকে নাক ঘষে অনিকেত,,,
একশবার ঘুমাবো আমি? তুমি যাও যেখানে গিয়েছিলে,, আমি যা খুশি তাই করবো,,একটু আগেই তো বলে গেলে আমার যা ইচ্ছা,,
ওলে আমার বউটা লে নাগ কলেছে দেকছি,,আসো বউ তোমালে আদল করি,,তোমার নাগ কুমে দাবে,,বাচ্চাদের মতো নেকামি করে অনিকেত শশীকে বলে,,,
আপনি নামান আগে,,আমার কিন্তু ভাল্লাগছে না অনি,,
ঐ আপনি আপনি করছ কেন? আমি কি তোমার ভাসুর লাগি বেয়াদ্দব বউ একটা,,শশীকে কোল নামিয়ে দিয়ে,,
কিইই,,আমি বেয়াদব বউ,,ঠিক আছে,,
থাকবো না আর তোমার মতো ফাজিল স্বামীর সাথে,,চলেই যাবো,,তারপর একটা আদব বউ খুজে সংসার করো,, ভেংচি কেটে খাটে মুখ ঘুরিয়ে বসে থাকে শশী,,
কই যাবা বউ আমাকে একা রেখে?এই রাত্রি বেলা একা পেলে সুইচরা তোমাকে খেয়ে ফেলবে,,শশীর ঘারে আলতো করে কামড় দিয়ে,,,
আহ্! লাগছে তো,,কি বাচ্চামো শুরু করেছ তুমি অনি? ভাল্লাগে না সরো,,
কি করবো তাহলে বলো,,আমার তো আর একটা কিউট গোলুমোলু বাচ্চা নাই, তাই নিজেই বাচ্চা সাজছি,,আজ যদি একটা বাচ্চা থাকতো তাহলে বাপ বেটিতে মিলে কত্ত মজা করতাম,,তখন তোমাকে আমার লাগতোই না,,
ডং,,
ও বউ কথা কও,,,শশীর কোমরে শুরুশুরি দিয়ে,,সুরে সুরে বলে,,
হিহিহি,,কি বলো,,হাসি আসে খুব শশীর অনির বাচ্চামি দেখে,,
কবে হমু আমি বাপ? আমার কানে কইয়া যাও,,
বলবো না যাও ভাগো,,ভেংচি দিয়ে উঠে যেতেই শশীর হাত ধরে ফেলে অনি,,
শশীকে নিজের দুবাহুতে ঘিরে ধরে বসে থাকে অনিকেত
বলো না বউ,,,
বিয়া দুদিন না হতেই কেন করো পাগলামী,,বলেই লজ্জায় অনির বুকে মুখ লুকায় শশী,,,
অনিকেত হেসে শক্ত করে জরিয়ে ধরে শশীকে বুকের মাঝে,,
শশী জানেও না অনিকেতের বুকে অন্য এক ঝড় বইছে,,যে ঝড়ের আভাষ শশীকে পেতে দেবে না অনি,,নিজের জীবন দিয়ে হলেও নিরাপদে আগলে রাখবে শশীকে,,
শশীর সাথে তখন অযথায় রাগ করে,,হঠাৎ করে রিশাদের সাথে শশীকে দেখে মাথা নষ্ট হয়ে যায়,,মনে অনুরাগ জন্মে,,,কেন বললো না শশী ওকে রিশাদের কথা,,শশীকে নিয়ে সন্দেহ করার কথা অনিকেত স্বপ্নেও ভাববে না,,
অনিকেত একটা কথা বলি? শশী অনির বুকে মাথা রেখে মৃদু স্বরে বলে,,,,
বলো,,শশী চুলে নিজের হাত বুলাতে বুলাতে,,,
তুমি রাগ করবে না তো?
না বেগমসাহেবা,,কোনোদিন না,,
আজ রিশাদ এসেছিলো,,আমার খুব ভয় হচ্ছে অনি,,চলো না আমরা দেশে ফিরে যায়,,এখানে আমার একদমি ভালো লাগছে না,,,
হুমমম,,ভয় পেয়ো না,, আমি তো আছি,,আমি থাকতে কার ঘারে কটা মাথা আমার বেগমসাহেবা কে ভয় দেখাবে,,
সত্যি,, কিছু হবে না তো আমাদের,,,
না কিছুই হবে না,,ভরসা রাখ আমার উপর,,ভরসা আছে তো নাকি?
হ্যাঁ আছে,,নিজের চেয়েও বেশি,,জিজ্ঞেস করলে না রিশাদ কি বলেছিলো?
দরকার নেই,,আর এরপর যেন না আশে তোমার সামনে সেই ব্যবস্থাটায় করবো চিন্তা করো না,,
এখন চলো খুব খিদে পেয়েছে,, চলো চলো,,,
শশীকে নিয়ে একসাথে বসে খায় দুজন,,
এদিকে মিলা হোটেল রুমে ঢুকে ওয়াইনের বোতল ছুড়ে মারতে থাকে,,হোটেলের সব কিছু ভাঙতে থাকে,,হোটেল ম্যানেজার বাধ্য হয়ে পুলিশ কে খবর দেয়,,
পুলিশ এসে এ্যারেস্ট করে নিয়ে যাই মিলাকে,,
শশীকে পেছন থেকে জরিয়ে জানালার পাশে একচাদরে জরিয়ে বসে থাকে অনিকেত শশী,,,
এই চাঁদ মুখে যেন
লাগে না গ্রহণ
জোছনায় ভরে থাক
সারাটি জীবন,,,
(গল্প শেষ করে দিবো?
শেষ করে দেইইই???😂😂)
চলবে,,