প্রেমমানিশা – পর্ব ১৬

0
345

#প্রেমমানিশা(১৬)

রাতের আঁধারকে ছাপিয়ে গেছে আসন্ন পূর্ণিমার রাতের নতুন চাঁদ। চাঁদের আলো আলোকিত করেছে নিস্তব্ধ প্রকৃতিকে। প্রকৃতিতে মৃদু মন্দ বাতাস বইছে। চারপাশে ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক। সেই ডাক নিঃশব্দে শুনছে সানাহ্। ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক শুনে তার যেন প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে। অন্য দিনের চেয়ে আজকে যেন নদীর তীর আরও বেশি নিশ্চুপ। কোনো সাড়া শব্দ নেই। এই দিকটায় আজ মানুষের সমাগমও কম। অবশ্য সানার এরকম নিস্তব্ধ প্রকৃতিই পছন্দ।

সানাহ্ নিবিড় হয়ে প্রকৃতির ডাক শুনছে। হালকা মৃদু মন্দ বাতাসে তার খোলা চুল উড়ছে। রাতের আকাশে স্পষ্ট জ্বলজ্বল করছে কিছু তারা। সানাহ্ তাও দেখছে। সানাহ্ এখন জাফলং নদীর উচুঁ টিলার উপর পা ঝুলিয়ে বসে আছে। তার বাতাসে উড়া চুলগুলো টিলার গায়ে ছুঁই ছুঁই অবস্থা। রাতের এই স্নিগ্ধ পরিবেশে সানাহ্কে প্রকৃতি কন্যার চেয়ে কোনো অংশে কম মনে হচ্ছে।

প্রকৃতির মাঝে ডুবে থাকা অবস্থাতেই হঠাৎ সানার কানে এলো সূক্ষ্ম এক আওয়াজ। মনে হচ্ছে জাফলং নদীর থেকে খানিকটা দূরে কেউ গাড়ি থামিয়েছে। সানার হঠাৎ মনে হলো এই সময়ে তো কোনো গাড়ি এই দিকে আসে না তাহলে আজ কি মনে করে এলো ? ঘটনার সত্যতা যাচাই আর নিজের কৌতূহল দমাতে উঠে দাঁড়ালো সানাহ্। যেই দিক থেকে আওয়াজটা এসেছিল সেই দিকে এগিয়ে গেলো। খানিকটা এগোতেই সানাহ্ তার সামনে যাকে দেখলো তারপর সানাহ্ তার চোখ দুটো বন্ধ করে নিলো।

মানুষটাকে দেখে সানাহ্ ঠিক বিশ্বাস করতে পারছেনা যে সে এখানে আসতে পারে। সানাহ্ তার চোখ দুটো বন্ধ করে মানুষটার উপস্থিতি অনুভব করতে লাগলো। হঠাৎ ঘাড়ের উপর কারোর উষ্ণ নিশ্বাস আছড়ে পড়তেই নিজেকে কারোর উষ্ণ বন্ধনে আবদ্ধ অনুভব করলো। মানুষটার সান্নিধ্য পেয়ে সানার শরীরে এক শিরশিরে অনুভুতি হানা দিল। সর্বাঙ্গ জুড়ে এক শীতল স্রোত বয়ে গেলো।

আচমকা মানুষটা সানাহ্কে ছেড়ে দিয়ে সানার হাত জোরে চেপে ধরলো আর সানাহ্কে টানতে টানতে নদীর তীরে নিয়ে এসে সানার হাত ছেড়ে দিলো। সানাহ্ আচমকা মানুষটার এহেন আচরণে ঘাবড়ে গেল। হালকা শুকনো ঢোক গিলে খানিকটা পিছিয়ে গিয়ে টিলার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে পড়লো। জিভ দিয়ে শুষ্ক ঠোঁট জোড়া ভিজিয়ে নিয়ে ভয় মিশ্রিত গলায় বললো ‘ আপনি এখানে কি করছেন কবি সাহেব ? ‘

‘ খবরদার আমাকে ওই নামে ডাকবে না। ওই নামে ডাকার অধিকার তুমি খুইয়েছ। তুমি কি পেয়েছ আমাকে ? যখন ইচ্ছা করবে তখন আমাকে জোর করে বিয়ে করতে চাইবে আর যখন ইচ্ছা করবে তখন আমাকে ছুঁড়ে ফেলে চলে যাবে ? হাউ ডেয়ার ইউ ? তোমার সাহস কি করে হলো আমার মনে তোমার প্রতি অনুভুতি তৈরি করে এভাবে কাপুরুষের মতো পালিয়ে যাওয়ার ? ‘ প্রকৃতির নিস্তব্ধতা কাটিয়ে গর্জে উঠে এগিয়ে এসে সানাহ্কে পাথরের গায়ে চেপে ধরে কথাগুলো বললো ফারহান।

সানাহ্ ফারহানের এহেন গর্জন শুনে নিমেষেই চুপসে গেল। ভয়ে পাথরের গায়ে আরও সিটিয়ে গেলো। ফারহান সানাহ্কে ভয় পেতে দেখে যেন আরও তেতে গেলো। সানার কোমল কাধ দুটো নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বললো ‘ কি হলো ? কথা বলছো না কেন ? ভয় লাগছে ? তাহলে আমাকে ছেড়ে চলে আসার আগে ভাবলে না কেন তোমাকে হাতে পেলে আমি কি করবো ? আমি বলেছিলাম না আমার মানিয়ে নিতে সময় লাগবে ? আমি তো বলেছিলাম আমি অ্যাডজাস্ট করে নিবো তাহলে কেন এতকিছু করলে ? ‘

সানাহ্ রীতিমত ঘামতে শুরু করেছে ফারহানের কথায়। ফারহানের কথা শুনে সে স্পষ্ট বুঝতে পারছে ফারহান খুব রেগে আছে। ফারহান সচরাচর রাগে না। অন্তত সানাহ্ তো কোনওদিন দেখেনি রাগতে। আর সেটাই তো সানার আসল ভয়ের কারণ। যাদের হুটহাট রেগে যাওয়ার অভ্যাস আছে তাদের রাগও খুব তাড়াতাড়ি পড়ে যায়। কিন্তু যেই মানুষ হুটহাট রাগে না সে যদি একবার রেগে যায় তাহলে সেই রাগ ভাঙ্গানো সহজ সাধ্য ব্যাপার না।

আচমকা সানার কাধে চিনচিনে ব্যাথা শুরু হয়ে গেলো। ফারহানের শক্তি লাগিয়ে কাধ চেপে ধরাই সেই ব্যথার কারণ। ব্যথার প্রভাবে সানার চোখ ফেটে কান্না আসতে চাইছে কিন্তু সানাহ্ তার মূল্যবান অশ্রু গড়িয়ে পড়তে দিল না। সানাহ্ আপ্রাণ চেষ্টা করলো তার অশ্রু আটকে রাখার আর তাতে সফলও হলো। সানাহ্ এবার ব্যাথাতুর গলায় বলল ‘ আমার হাতটা ছাড়ুন কবি সাহেব। আমার ব্যথা করছে…. ‘

এবার যেন সানার কোমল গলায় বলা কথা আর রক্ত লাল দৃষ্টিও ফারহানকে টলাতে পারল না। ফারহান আবারও গমগমে সুরে বলল ‘ লাগুক ব্যথা..… ব্যথা পাওয়ার জন্যই এভাবে চেপে ধরেছি। এই ব্যথা তুমি সহ্য করতে পারছ না আর তুমি ভাবছো তোমার দেওয়া ব্যথা আমি সহ্য করে নিবো ? আমাকে কি তোমার মানুষ মনে হয়না ? আমি কি রোবট ? জানো কতদিন ধরে আমার চাকরিবাকরি ছেড়ে হন্যে হয়ে খুঁজছি তোমাকে ? ‘

হঠাৎ সানার অজান্তেই সানার চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ল দু ফোঁটা দুর্বোধ্য অশ্রু। সানার সেই অশ্রুজল চাঁদের আলোয় হীরের ন্যায় চিকচিক করে ধরা পড়লো ফারহানের চোখে। সানার চোখে অশ্রু দেখে এবার যেন ফারহানের সম্বিত ফিরে এলো। ঝট করে সানার হাত ছেড়ে খানিকটা দূরে গিয়ে দাঁড়ালো। ভেবে পেলনা এতক্ষণ ও কি করতে যাচ্ছিল । সানার উপর খবরদারি করছিল ? কিন্তু কোন অধিকারে ? সানাহ্ তো তাকে সেই অধিকার দেয়নি। তার সঙ্গে তো সানার বিয়েই হয়নি।

পরক্ষনেই ফারহানের বিবেক যেন এক কঠিন ধমক লাগলো ফারহানকে। রাগী গলায় বললো ‘ এতে অধিকারের কি আছে ? অধিকার কি দিতে হয় ? অধিকার তো আদায় করে নেওয়ার জিনিস। বিয়ে হয়নি তো কি হয়েছে..…হতে কতক্ষন ? আর সানাহ্ যা করেছে তারপরও কি এরকম করাটা অস্বাভাবিক ? ‘

আবার বিবেককে ধমক লাগিয়ে মন বললো ‘ মন কি এত বাঁধা মানে ? মন তো শুধু ভালোবাসা বুঝে। সানাহ্ যা করেছে তা নিঃসন্দেহে শাস্তি যোগ্য কিন্তু ফারহানের পক্ষে কি সম্ভব তার ভালোবাসার মানুষের উপর এভাবে রাগারাগি করা ? ফারহান তো শুধু ভালোবাসা বোঝে। ভালোবাসার কাঙাল সে…… ‘

বিবেক আর মনের দ্বন্ধে ভুগে ফারহান মনকেই বেছে নিলো। ভীত সানার দিকে এগিয়ে গিয়ে তার কোমল হাত টেনে তাকে জড়িয়ে নিলো নিজের বুকে। মেলে ধরলো তার ভালবাসা পূর্ণ অন্তঃকরণ। ফারহানের বন্ধন আরও নিবিড় হলো। সানাহ্ নিশ্চুপ হয়ে ফারহানের বুকের ধুক পুকানি শুনতে লাগলো। আওয়াজটা শুনতে সানার বেশ ভালই লাগছে। মনে হচ্ছে ফারহানের প্রত্যেকটা হার্ট বিট শুধুই সানাহ্ সানাহ্ করছে।

একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কতক্ষন পেরিয়ে গেলো তার কোনো ইয়ত্তা নেই সানাহ্ আর ফারহানের। তারা এখন ব্যস্ত নিজেদের এত দিন না দেখার খায়েশ মেটাতে। তাদের পক্ষে সম্ভব হলে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে সারাদিন বসে থাকতো। কিন্তু বিবেক জেগে উঠতেই সেটা আর সম্ভব হলো না। ফারহানের বিবেক তাকে জোরসে ধমক লাগিয়ে বললো ‘ এটা তুই কি করছিস ফারহান ? সানাহ্কে এভাবে ধরে রেখেছিস ? মনে আছে তো তোদের বিয়ে হয়নি ? বিয়ে ছাড়া এসব করে তুই সানাহ্কে অপবিত্র করছিস..… ‘

ফারহান তার বিবেকের দংশনে দংশিত হয়ে সানাহ্কে ছেড়ে সরে দাড়ালো। সানাহ্ও ফারহানকে ছেড়ে খানিকটা দূরে গিয়ে পাথরের টিলার উপর পা ঝুলিয়ে বসলো। কিছু মুহূর্ত কেটে গেলো এভাবেই নীরবে। কিছুক্ষণ পর ফারহান এসে সানার থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে আরেক পাথরের টিলায় নিজেও পা ঝুলিয়ে বসলো।

‘ আপনি এখানে কেন এসেছেন ? ‘

আচমকা সানার নীরবতা ভাঙ্গা গলা শুনে অবাক হলো না ফারহান। সানার দিকে এক মুহুর্ত তাকিয়ে আবারও দৃষ্টি নিবদ্ধ করলো রাতের নিকষ কালো আকাশের দিকে। নিরস গলায় বললো ‘ আমার সম্পদ ফিরিয়ে নিতে…. ‘

এবার যেন সানাহ্ আরও অবাক হলো। আজ ফারহানের ব্যবহার তার কাছে কেমন অদ্ভুত লাগছে। এরকম উদভ্রান্তের মতো কথাবার্তা বলতে কখনও শুনেনি ফারহানকে। সানার জানা মতে ফারহান বেশ গোছালো ধরনের মানুষ যে নিজের মনের কথাগুলো গুছিয়ে সবার সামনে প্রেজেন্ট করতে ভালোবাসে এবং খুব মেপে মেপেও কথা বলে। এমনকি সানাহ্কে যে বিয়ে করতে চায়না সেই কথাটাও সে বেশ গুছিয়েই বলেছিল।

তবে ফারহানের এহেন অগোছালো কথাবার্তার অর্থ যে সানাহ্ বুঝেনি তা না। তবে সে চায়না এই সম্পর্ক দ্বিতীয় সুযোগ পাক। সে নিজেকে ফারহানের উপর কিছুতেই চাপিয়ে দিতে চায় না। তাই সে ফারহানকে উদ্দেশ্য করে বললো ‘ যেটা নিজের সম্পদ বলে দাবি করছেন সেটা আদৌ আপনার সম্পদ তো ? ‘

‘ ফারহান ইমতিয়াজ আন্দাজে কোনো কথা বলে না। যাকে নিজের বলে দাবি করছি সে আমার বলেই তাকে দাবি করছি। অযাচিত অধিকার আমি দেখাই না..… ‘ ফারহান ঠান্ডা গলায় বললো।

‘ কিন্তু আপনি যাকে দাবি করছেন সে আপনার হতে রাজি নয়। ‘

‘ রাজি না থাকলে কিছু করার নেই। আজ আমায় কেউ আটকাতে পারবে না। আমার যা তা আমি ছিনিয়ে নিবো তবুও নিজের অধিকার ছাড়বো না। এত বছর জেনে বুঝে নিজের অধিকার ছেড়েছি কিন্তু এখন আর ছাড়বো না। এখন যেটা আমার সেটা আমারই। প্রয়োজনে ছিনিয়ে নিবো…. ‘

ফারহানের শক্ত কথার ধরণেও সানাহ্ কেমন শিউরে উঠলো। ফারহানের কথায় খানিকটা উষ্ণতা অনুভব করলো। নিজে থেকেই কুকড়ে গেলো। তবুও নিজেকে সামলে বললো ‘ আপনি চাইলেই সবকিছু পেয়ে যাবেন না। সবকিছু জোর করে আদায় করা যায় না। অন্তত ভালোবাসা তো নয়ই।আপনি যাকে চান সে আপনাকে চায় না তাহলে কি করবেন ? ‘

আচমকা কি থেকে কি ঘটে গেলো সেটা বুঝতে পারলো না সানাহ্ । সানাহ্ এখন ফারহানের উষ্ণ বন্ধনে আবদ্ধ। ফারহানের গরম নিশ্বাস তার চোখে মুখে আছড়ে পড়ছে। সানার নিশ্বাস যেন এতেই আটকে যাচ্ছে। সানাহ্ কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না। সে কি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেবে ফারহানকে ? কিন্তু সেটা করার ক্ষমতাও তো তার নেই। সানাহ্ কি করবে বুঝতে না পেরে চুপ করে ওভাবেই ফারহানের বুকে সিটিয়ে দাড়িয়ে রইলো।

ফারহান কিছুক্ষণ পর বলতে শুরু করলো ‘ আপনি কেন এতকিছু করেছেন তা আমি জানতে চাইব না। সময় হলে আপনি নিজেই বলবেন। এখন বাড়ি চলুন…. আপনার জন্য এক নতুন সংসার অপেক্ষা করছে। বিয়ের তো আর দুই সপ্তাহ বাকি। ‘

ফারহানের কথা শুনে এবার ফারহানকে ছেড়ে দূরে সরে যেতে চাইলো সানাহ্। তবে ফারহান তার জোর খাটিয়ে সানাহ্কে নিজের সঙ্গে চেপে ধরলো। সানাহ্ বাধ্য হয়ে হাফ ছেড়ে দিয়ে বললো ‘ আপনি কেন এমন অবুঝের মত কাজ করছেন বলুন তো ? আমি তো বলেছি আমি যেতে চাচ্ছি না আপনার সঙ্গে। আমি আমার চিঠিতে আগেই বলে দিয়েছি আমার বিয়ে না করার পিছনে কারণ কি। আপনি কি সেই চিঠি পড়েন নি ? ‘

‘ পড়েছি তবে কারণগুলো নিতান্তই আমার এক্সকিউজ মনে হয়েছে। আপনি আসলে আমাকে বিয়ে না করার জন্য এক্সকিউজ দেখাচ্ছেন। আপনি যেরকম ধরনের মেয়ে তাতে আমার মত সামান্য কবিকে বিয়ে করা আপনাকে মানায় না। আপনার রেজাল্ট,আপনার ব্যক্তিত্ব সব আর্মি মেজর, ডাক্তার আর ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে আপনার জুটি করেছে। সেখানে আমাকে বিয়ে করলে তো আপনি কাউকে মুখ দেখাতে পারবেন না। আমাকে বিয়ে করলে আপনাদের কোটি কোটি টাকার বাড়ি ছেড়ে আমার সামান্য দোতলা বাড়িতে এসে থাকতে হবে। তাই আপনি সেই ভয়ে বিয়ে করতে চাইছেন না। ‘

এবার যেন ফারহানের কথায় সানার মাথায় আগুন ধরে গেল। দপ করে উঠলো সানার রক্তিম চোখ জোড়া। রাগে ফারহানের বুকে তার কোমল হাত দিয়ে কিল বসাতে বসাতে বললো ‘ কি বললি ? তোর কি আমাকে এরকম চিপ মেন্টালিটির সস্তা মেয়ে মনে হয় ? তোর এত বড় সাহস ? তুই আমাকে এই চিনলি ? এই জন্য তুই এত জার্নি করে সিলেট এসেছিস আমাকে নিতে ? আজ তোকে আমি মেরেই ফেলবো..… ‘

সানাহ্কে এভাবে রেগে মারামারি করতে দেখে ফারহান উচ্চস্বরে হেসে উঠে সানাহ্কে জড়িয়ে নিলো নিজের বুকে। সানাহ্কে আবেশে জড়িয়ে ধরে তার মাথায় নিজের হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল ‘ আপনার যদি নিজেকে প্রমাণ করতে হয় তাহলে আমাকে বিয়ে করে দেখান। তখন আমি মানব আপনার সাহস আছে আমার মত সামান্য কবিকে বিয়ে করে গরীবের জীবনের দুঃখ সহ্য করার। ‘

‘ দরকার পড়লে তাই করবো কিন্তু তোকে জিততে দিবো না । কত বড় সাহস আমাকে বলে আমি নাকি তাকে বিয়ে করতে চাইনা বলে চলে এসেছি। নিজে যে আমাকে ফোন করে বললো সে বিয়ে করতে চায়না। তোর ওই কথার কারণেই তো আমার এই অবস্খা। আমি অসুস্থ হয়েছি তোর জন্য। এত বছর আমার এই অসুস্থতা আমার মা বাবা ফেস করেছে, এখন থেকে তুই করবি। ‘ বলে সানাহ্ আরও দু চারটা কিল বসালো ফারহানের বুকে।

ফারহান এবার মুচকি হেসে সানার থুতনিতে হাত রেখে তার মুখটা উচুঁ করে ধরলো। এক মুহূর্তের জন্য সানাহ্ থমকে গেলো কারণ ফারহান তার দিকে এগিয়ে আসছে। সানাহ্ অচঞ্চল চোখে তাকিয়ে রইলো ফারহানের দিকে। ফারহান মুচকি হেসে সানাহ্কে আবারও জড়িয়ে ধরে বলল ‘ আমি তো তার অপেক্ষাতেই আছি ‘। সানাহ্ সেই পরস অনুভব করতে করতেই চোখ দুটো আবেশে বুজে নিলো।

~ চলবে ইনশাআল্লাহ্..…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here